একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলে লাইসেন্স ব্যতিতই চলছে প্রায় দুই শতাধিক বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। নানা প্রক্রিয়ায় বিপুল সংখ্যক ওই ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার চলমান থাকলেও লাইসেন্স নবায়ন না থাকার অজুহাতেই সিলগালা করা হয়েছে আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক শামসুল হকের নামকরণের হসপিটালটি।
জাতীয় নেতার নামে গড়ে উঠা শামসুল হক মেমোরিয়াল হসপিটালটি সিলগালা করার ঘটনায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরাসহ সাধারণ মানুষ। আওয়ামীলীগ কে বিতর্কিত করতেই ও অদৃশ্য কোন মহলের প্ররোচনায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক এর নামের হসপিটালটি সিলগালা করেছে এমন অভিযোগ স্থানীয় নেতাকর্মীদের। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জেলার সাধারণ মানুষও।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ৩৫০টিরও বেশি রয়েছে ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এর মধ্যে বৈধ কাগজ পত্র রয়েছে ৮৯টির আর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে ৫৮টির।
স্থানীয়দের অভিযোগ, আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক শামসুল হকের নামে পরিচালিত হচ্ছে এই হসপিটাল। এখানে বিনা পয়সা গরীব রোগীদের চিকিৎসা দেয়াসহ খুব অল্প টাকায় নানা ধরণের জটিল অপারেশন করে থাকেন হসপিটাল কর্তৃপক্ষ। এতে অন্যান্য ক্লিনিকের ব্যবসা নষ্ট হচ্ছে। এ ক্ষোভেই ওই ক্লিনিক মালিকরা ষড়যন্ত্র করে হসপিটালটি বন্ধ করিয়েছেন। জেলায় অবৈধভাবে অসংখ্য ক্লিনিক পরিচালিত হলেও লাইসেন্স নবায়ন না থাকার মত কারণে আওয়ামীলীগের মহান নেতা শামসুল হকের নামে প্রতিষ্ঠিত এ হসপিটালটি সিলগালা করার ঘটনাটি রহস্যজনক বলে দাবি করেছেন তারা। দ্রুত হসপিটালটি খুলে দেয়ার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনাও করেছেন তারা।
১৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আব্দুল মালেক তপু’র অভিযোগ , মহান নেতার নামে প্রতিষ্ঠিত হসপিটালটিকে বিতর্কিত করাসহ টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামীলীগের ইতিহাস ঐতিহ্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করা চেষ্টা চলছে। যে হসপিটালটি প্রতিষ্ঠান লগ্ন থেকে লাইসেন্সসহ সকল প্রকার বৈধতা নিয়ে গরীব অসহায় মানুষের সেবা চালিয়ে যাচ্ছে, করোনা এই দূর্যোগে সেই প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্স নবায়ন করতে না পারার বিষয়টি সিলগালা করার মত অপরাধ ? জেলায় যেখানে অবৈধভাবে চলছে প্রায় দুই শতাধিক ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এই বিপুল সংখ্যক ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার যদি অবৈধভাবে চলতে পারে সেখানে মহান নেতার নামে প্রতিষ্ঠিত শামসুল হক মেমোরিয়াল হসপিটালটির অপরাধ কি ? এটি সিলগালা করার বিষয়টি কি রহস্যজনক নয় ? আমার ধারণা জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের জামায়াত শিবিরের কতিপয় কর্মকর্তা কর্মচারি বর্তমান সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলতে হসপিটালটি সিলগালা করার মত ঘটনাটি ঘটিয়েছেন। ঘটনাটি তদন্তে জেলা প্রশাসনের উচ্চতর কমিটি হস্তক্ষেপ ও জড়িতদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।
টাঙ্গাইল শহর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আসাদুজ্জামান খান শাকিব বলেন, মহান নেতার নামে প্রতিষ্ঠিত শামসুল হক মেমোরিয়াল হসপিটালটি ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ অঞ্চলের গরীব অসহায় মানুষকে বিনা পয়সা সেবা দিয়ে আসছে। এছাড়াও মহান নেতার নাম উজ্জল করতে এই হসপিটালে হয়ে আসছে অল্প টাকায় নানা ধরণের অপারেশন। জেলায় অসংখ্য ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার অবৈধভাবে পরিচালিত হলেও প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই লাইসেন্সসহ সকল প্রকার বৈধতা নিয়েই পরিচালিত হয়ে আসছিল এ হসপিটালটি। সম্প্রতি জানতে পারলাম লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ণ, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও দায়িত্বরত ডাক্তার না থাকায় হসপিটালকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করাসহ সিলগালা করা হয়েছে। এ অপরাধে হসপিটালটির জরিমানা বিষয়টি মেনে নেয়া গেলেও সিলগালা করার বিষয়টি আমি মানতে পারছিনা। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ কারো প্ররোচনায় এটি করছেন কিনা এ নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ আমি। মহান নেতার নামে প্রতিষ্ঠিত হসপিটাল সিলাগালা করাটা কতটা যৌক্তিযুক্ত সে বিষয়টি দেখতে জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
সরকারি এম এম আলী কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি ও আওয়ামীলীগ নেতা বিপ্লব আরেফিন খান বলেন, অভিযানের দিন আমি হসপিটালে উপস্থিত ছিলাম। মহান নেতার নামে প্রতিষ্ঠিত এ হসপিটালটিতে বিনা পয়সায় চিকিৎসাসহ অল্প টাকায় নানা ধরণের অপারেশনের সুবিধা পায় সাধারণ মানুষ, এ বিষয়টি আমি ভ্রাম্যামান আদালত কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছিলাম। হসপিটালটি সিলগালা না করে ত্রুটি সংশোধনের জন্য আমি সময় দেয়ার জন্যও অনুরোধ করেছিলাম, কিন্তু কর্তৃপক্ষ আমিসহ স্থানীয় অন্যান্যদের অনুরোধ না রেখে হসপিটালটি সিলগালা করেছেন।
তিনি বলেন, যে অপরাধে মহান নেতা শামসুল হকের নামে প্রতিষ্ঠিত হসপিটালটি সিলগালা করা হয়েছে, তার থেকে অনেক বেশি অপরাধ নিয়ে এই শহরেই চলছে অসংখ্য ক্লিনিক। অবৈধ ওই ক্লিনিক গুলো সচল রেখে শামসুল হক মেমোরিয়াল হসপিটাল সিলগালা করাটি খুবই দুঃখজনক। এছাড়াও ওই দিনের পরিচালিত অভিযানে আরো কয়েকটি ক্লিনিককে সময় দেয়া হলেও সিলগালা করা হয় শামসুল হক মেমোরিয়াল হসপিটারটি। দ্রুত প্রতিটি অবৈধ ক্লিনিককে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
শামসুল হক মেমোরিয়াল হসপিটাল সূত্রে জানা গেছে, ২০০৭ সালে লাইসেন্সসহ সকল প্রকার সরকারি নির্দেশনা মেনে টাঙ্গাইল পৌর শহরের থানাপাড়া শান্তি কুঞ্জের মোড়ে যাত্রা শুরু করে শামসুল হক মেমোরিয়াল হসপিটাল। ১৯১৬; ৪২২২ রেজিস্ট্রেশনকৃত ১০ শষ্যার এই হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করছেন তিনজন চিকিৎসক, একজন মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট, চারজন নার্স, একজন ল্যাব টেকনেসিয়ানসহ তিনজন আয়া।
শামসুল হক মেমোরিয়াল হসপিটাল এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ডা. মো. সাইফুল ইসলাম স্বপন বলেন, ২০২০সালের জুন পর্যন্তÍ লাইসেন্স নবায়ন ফি জমা দেয়া আছে। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে সংশ্লিষ্ট অফিস কার্যক্রম এখনও আমি নবায়নের কাগজ হাতে পাননি। এর ফলে চলতি বছরের নবায়নও করা যায়নি। দ্রুতই চলতি বছরের নবায়ন করা হবে। আবেদন ও নবায়ন ফি জমা দেয়ার বিষয়টি জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ অবগত ছিল। এরপরও নবায়নের জন্য সাতদিনের সময় চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাকে সে সময়টুকু না দিয়ে হসপিটালের অপারেশন থিয়েটার, কেবিন, ওয়ার্ড সিলগালা করা হয়েছে। এরপরও হসপিটাল ভবনের ৪র্থ তলায় একজন স্টাফ সন্তান নিয়ে থাকেন তাকেও সেখান থেকে নামিয়ে দেয়া হয়েছে। যদিও ৪র্থ তলাটি হসপিটালের কোন অংশ না।
দেলদুয়ার উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা ক্লিনিক মালিক সমিতির সভাপতি লায়ন এম শিবলী সাদিক বলেন,পরিচালিত অভিযানের বিষয়ে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ আমাদের কিছুই অবগত করেননি। লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ণ, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও দায়িত্বরত ডাক্তার না থাকার অপরাধে মহান নেতার নামে প্রতিষ্ঠিত শামসুল হক মেমোরিয়াল হসপিটালের জরিমানা করার বিষয়টি ঠিক ছিল। তবে সিলগালা না করে বৈধ কাগজ পত্র করার সময় দেয়াটাই যৌক্তিক ছিল বলে মনে করেন তিনি।
এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা. আবুল ফজল মো. সাহাবুদ্দিন খান বলেন , লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ণ, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও দায়িত্বরত ডাক্তার না থাকায় শামসুল হক মেমোরিয়াল হসপিটালকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করাসহ সিলগালা করার নির্দেশ দিয়েছেন ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক। সেটি শুধুই ভ্রাম্যমান আদালতের বিষয়। ওই নির্দেশের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য বিভাগের কিছুই করার নেই। এরপরও হসপিটাল কর্তৃপক্ষ আমার কাছে এসেছিলেন আমি তাদের কাগজপত্র ঠিক করে আসতে বলেছি। কাগজপত্র ঠিক হলেই হসপিটাল চালু করার অনুমতি দেয়া হবে। এছাড়াও জেলায় অবৈধভাবে যে সকল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিচালিত হচ্ছে সেগুলোতেও ধারাবাহিকভাবে অভিযান পরিচালিত হবে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট রানুয়ারা খাতুনের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরিচালিত হয়। লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ণ, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও দায়িত্বরত ডাক্তার না থাকায় শহরের শামসুল হক মেমোরিয়াল হসপিটালকে ১৫ হাজার টাকা ও সোনার বাংলা ক্লিনিক মালিককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে দুটি ক্লিনিকই সিলগালা করা হয়। এ ছাড়াও ফাতেমা ক্লিনিক ও রোকেয়া আইকেয়ার সেন্টারকে ১৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করে বৈধ কাগজ পত্র করার জন্য সাত দিনের সময় দেয়া হয়েছিল।
একতার কন্ঠঃ টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর-বাসাইল) আসনের সাবেক সাংসদ ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তিনি বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় দলটির যুগ্ম-সম্পাদক প্রিন্সিপাল ইকবাল সিদ্দিকী এ তথ্য জানান।
ইকবাল সিদ্দিকী বলেন, গত মঙ্গলবার পেটে ব্যথা শুরু হলে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দকী বীরউত্তমকে অধ্যাপক এমএস আরাফাতের তত্ত্বাবধানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করা হয়। তাঁর আল্ট্রাসনোগ্রাম করার পর গল-ব্লাডারে পাথর ধরা পড়ে। বর্তমানে তিনি জেনারেল সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক এএইচএম তৌহিদুল আলমের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন আছেন। তিনি সুস্থতার জন্য সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন।
এ বিষয়ে যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক হাবিবুন্নবী সোহেল মুঠো ফোনে বলেন, বঙ্গবীরের চিকিৎসা নিয়ে আগামীকাল(বৃহস্পতিবার) মেডিকেল বোর্ড বসার কথা রয়েছে। সেখানেই তাঁর অস্ত্রোপচারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বর্তমানে তিনি মোটামুটি সুস্থ রয়েছেন।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলে ডাক্তার ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের অবহেলায় রিনা বেগম (২৬) নামের এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার( ১০ সেপ্টেম্বর) টাঙ্গাইল জেনারেল হাসাপাতালের দক্ষিন পার্শ্বে(সাবালিয়া) অবস্থিত নূরুল আমিন খান মাল্টিপারপাস মেডিক্যাল সেন্টারে সকাল ১০ টার দিকে তার মৃত্যু হয়। রিনা বেগম টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কাকুয়া ইউনিয়নের রাঙাচিরা গ্রামের ইসরাইল মিয়ার স্ত্রী।
নিহতের স্বামী ইসরাইল মিয়া জানান, প্রসব ব্যাথা শুরু হলে বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে নূরুল আমিন খান মাল্টিপারপাস সেন্টারে রিনা বেগমকে ভর্তি করা হয়। পরে গাইনী ডাক্তার ডা. সাদিয়া আফরিনের নেতৃত্বে অস্ত্রপাচারের (সিজার) মাধ্যমে রিনা বেগম কন্যা সন্তান জন্ম দেয়। পরে তাকে কেবিনে আনার পর রাত থেকে প্রচুর পরিমাণ রক্ত পড়তে থাকে। বিষয়টি ক্লিনিকের নার্সকে জানানো হয়। পরে সেই নার্স ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ও ডাক্তারকে অবগত করে। তাদের একাধিকবার ফোন করার পরও তারা রোগীকে দেখতে আসেনি। পরে শুক্রবার সকালে রিনা বেগমের অবস্থার অবনতি হলে ক্লিনিকের পক্ষ থেকে রিনা বেগমকে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে নেয়ার পথে মৃত্যু হয়।
ক্লিনিকের দায়িত্ব প্রাপ্ত নার্স অনামিকা সরকার বলেন, আমি সকাল থেকে দায়িত্ব পালন করছি। রাতে ও বৃহস্পতিবার কি হয়েছে আমি তা জানি না।
রিনা বেগমের মা চায়না বেগম বলেন, সিজার ভালভাবে করা হয়নি। সিজার করার পরপরই পেট ফুলতে থাকে। পেটের দুই পাশ দিয়ে রক্ত পড়া শুরু হলেও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ও ডাক্তার কোন ব্যবস্থা নেয়নি। আমার মেয়ে বারবার ডাক্তারের কথা বলেছে। কিন্তু ডাক্তার দেখতে আসেনি। ডাক্তারের অবহেলায় আমার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। আমাকে যারা সন্তানহারা করলো আমি তাদের কঠিন শাস্তি দাবি করছি।
নিহতের স্বামী ইসরাইল মিয়া আরও বলেন, ডাক্তার ও ক্লিনিক মালিক কর্তৃপক্ষের অবহেলায় আমার মেয়ে এতিম হয়েছে। আমার মেয়েকে যে এতিম করলো আমি ওই ডাক্তার ও ক্লিনিক মালিকের শাস্তি দাবি করছি।
নূরুল আমিন খান মাল্টিপারপাস মেডিক্যাল সেন্টারের মালিক সরোয়ার হোসেন খান বলেন, আমি খবর পেয়ে ক্লিনিকে এসে জানতে পারি ডা. সাজিয়া আফরিন রোগিকে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে রেফার্ড দিয়েছে। রোগির আত্মীয় স্বজন গাড়ীর সাথে যেতে রাজি না হওয়ায় আমার ক্লিনিকের ৩ জন স্টাফ দিয়ে মির্জাপুর পাঠানোর ব্যবস্থা করি।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডাক্তারই ভালো জানেন রোগিকে কোথায় রেফার্ড করবেন। এবিষয়ে ক্লিনিক মালিক কিছু বলতে অধিকার রাখে না।
একতার কণ্ঠঃ যমুনা, ধলেশ্বরী, ঝিনাই নদীর পানি কমায় টাঙ্গাইলের কয়েকটি উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে নিন্মাঞ্চল হওয়ায় বাসাইল উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত আছে। এ উপজেলার অধিকাংশ এলাকা এখনও বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে। এদিকে,পানি কমতে থাকায় এ উপজেলায় নদী ভাঙ্গন আবারো তীব্র আকার ধারন করেছে। বন্যা কবলিত এলাকার গ্রামীণ কাঁচা-পাকা সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় উপজেলার প্রায় প্রতিটি গ্রামের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বানভাসি মানুষগুলো গবাদিপশু নিয়ে পড়েছেন মহাবিপাকে।
পানিতে নিমজ্জিত হয়ে গেছে বীজতলা, রোপা আমন ধান ও সবজি খেত। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কালভার্ট। ভেঙ্গে গেছে রাস্তা-ঘাট। বানভাসিদের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পারাপারের জন্য নৌকা কিংবা কলাগাছের ভেলাই একমাত্র ভরসা। শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে বেশ কিছু এলাকায়।
উপজেলার বন্যাকবলিত এলাকার মধ্যে বেশি দুর্ভোগের শিকার কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের আদাজান, কোদালিয়াপাড়া, যৌতুকি,জিকাতলী পাড়া, মটেশ্বর, তারাবাড়ি, সৈদামপুর পুর্বপৌলী, সিঙ্গারডাক, কালাচান পাড়াসহ ইউনিয়নের বেশিরভাগ গ্রাম। হাবলা ইউনিয়নের টেংগুরিয়াপাড়া, ছয়শত, জীবনেশ্বর, থুপিয়া, গুল্লা, বয়রা। ফুলকী ইউনিয়নের ফুলকী দক্ষিণপাড়া, বালিয়া, খাটরা, নিড়াইল, করোটিয়াপাড়া, ময়থা। কাশিল ইউনিয়নের ফুলবাড়ি, বাঘিল, স্থলবল্লা। কাউলজানী ইউনিয়নের বাদিয়াজান, সুন্না, বার্থা, গিলাবাড়ি, ডুমনীবাড়ি, কাঙ্গগাগলীছেও, এবং বাসাইল সদর ইউনিয়নের মিরিকপুর, রাশড়া, ইশ্বরগঞ্জ, হান্দুলী। এসব এলাকার মানুষের নৌকা ছাড়া যাতায়াতের কোন উপায় নেই।
বন্যা দুর্গত এলাকার কমলা রানী বলেন, গরু-বাছুর, হাস-মুরগী নিয়ে আমরা অনেক কষ্টে আছি। সবচেয়ে বেশি চিন্তা শিশু বাচ্চাদের নিয়ে। সব সময়ই আতংকে দিন কাটছে।
অসহায় ভূক্তভোগীরা জানান, করোনার ধকল না কাটতেই বন্যার জলে বন্ধি আমরা। কামাই-রোজি একবারে বন্ধ। অনেকেরই ঘরে চুলা জ্বলছে না। করোনার লকডাউন, আবার বন্যার পানি । জীবন আর চলে না।
কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মামুন অর রশিদ জানান আমার ইউনিয়নে প্রায় প্রতিটি গ্রামের মানুষ পানি বন্ধি হয়ে পড়েছে। পাকা কাঁচা রাস্তাগুলো তলিয়ে গেছে। কালর্ভাট ভেঙ্গে গেছে। রাস্তা ভেঙ্গে অনেকে জায়গায় বড়বড় খাদের সৃষ্টি হয়েছে। নৌকা ছাড়া চলাই যায় না।
বাসাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মনজুর হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ হতে আমরা বন্যা দুর্গত এলাকায় গিয়ে ত্রান পৌছে দিচ্ছি। ৩৩৩ নম্বরে কল দিলেও আমাদের পক্ষ হতে খাদ্য সামগ্রী প্রদান করা হয়।ত্রাণের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা উপজেলা প্রশাসনের রয়েছে।
বাসাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী অলিদ ইসলাম বলেন, ভৌগলিক ভাবে বাসাইল একটি নীচু এলাকা। তাই প্রতি বছরই বন্যার সঙ্গে যুদ্ধ করেই বাঁচতে হয়। এবারও উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নেই মানুষ পানি বন্ধি হয়ে পড়েছে। রাস্তা ঘাট ভেঙ্গে গ্রামীণ অবকাঠামোগত ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। পানি-বন্ধি সহায়তার জন্য ত্রাণ কার্যক্রম চলছে। এলাকায় আরও পর্যাপ্ত ত্রাণসহযোগিতার জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে ১৪২ পিস ইয়াবা সহ রাজিব মিয়া (৩৫) নামে এক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। মঙ্গলবার(৭ সেপ্টেম্বর) ভোরে উপজেলার পাথরাইল ইউনিয়নের শুভকী পুটিয়াজানী গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। র্যাব-১২, সিপিসি-৩ টাঙ্গাইলের কোম্পানী কমান্ডার লেঃ কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মামুন(বিএন) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।
গ্রেপ্তারকৃত রাজিব মিয়া উপজেলার পাথরাইল ইউনিয়নের মঙ্গলহোড় গ্রামের শরিফ মিয়ার ছেলে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব কমান্ডার লেঃ কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মামুন(বিএন) জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার(৭ সেপ্টেম্বর) ভোরে দেলদুয়ার উপজেলার পাথরাইল ইউনিয়নের শুভকী পুটিয়াজানী গ্রাম থেকে রাজিব মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ১৪২ পিস ইয়াবা একটি মোবাইল ফোন, একটি সিম কার্ড এবং নগদ ৩ হাজার টাকা সহ তাকে হাতেনাতে আটক করা হয়। তার বিরুদ্ধে দেলদুয়ার থানায় মাদকের মামলা দায়ের করা হয়েছে।
একতার কণ্ঠঃ নানা জটিলতায় প্রায় দুই যুগ ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সিজারসহ সব ধরনের অপারেশন কার্যক্রম বন্ধ ছিল। অবশেষে দীর্ঘ ২১ বছর পর সিজার অপরেশন শুরু হয়েছে। এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ভূঞাপুরবাসী। রবিবার( ৫ সেপ্টেম্বর) দু’টি সিজারের মাধ্যমে এ কার্যক্রম শুরু হয়।
প্রথম দিনে করা দু’টি সিজারের দু’জনেই সুস্থ আছেন। তাঁরা দু’জন হলেন, উপজেলার পূর্ব ভূঞাপুরের আসাদুজ্জামানের স্ত্রী হ্যাপি আক্তার (২৫) এবং পাশের ঘাটাইল উপজেলার যোগিহাটি গ্রামের মোস্তফার স্ত্রী তাহমিনা খাতুন (২০)।
সিজার দুটি সম্পূর্ণ করেন ডা. মোছা. সালমা জাহান। এ সময় তাঁকে সহযোগিতা করেন শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. খন্দকার সাঈদ হোসেন, অ্যানেসথেসিয়া ডা. মো. আজিজুল হক, আরএমও ডা. এনামুল হক ও ডা. নিশাদ সাইদা।
সিজারিয়ান দম্পতি ও তাঁদের পরিবার সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, বাইরের অন্যান্য ক্লিনিকের চেয়ে এখানে টাকা কম খরচ হয়েছে ও সিজারের সময়ও কম লেগেছে। মা ও নবজাতক দু’জনেই সুস্থ আছেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. এএফএম সাহাবুদ্দিন ও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মহীউদ্দিন প্রমুখ।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলে এক মাস পর টানা চার দিন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কেউ মৃত্যুবরণ করেনি। গত সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার( ২৬ আগস্ট) পর্যন্ত এই চার দিনে আক্রান্তের হারও অনেক কম। চার দিনে ১৯৭ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।বৃহস্পতিবার( ২৬ আগস্ট) দুপুরে টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. আবুল ফজল মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, বুধবার সকাল ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৩১৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৫১ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে টাঙ্গাইল সদরে ১৯, মধুপুরে ১১, গোপালপুরে ৬, কালিহাতীতে ৪, ভুঞাপুর ও ধনবাড়িতে ৩ জন করে, দেলদুয়ার ও নাগরপুরে দুজন করে ও বাসাইলে একজন রয়েছেন। আক্রান্তের হার ১৬ দশমিক ২৯ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের মোট রোগীর সংখ্যা ১৬ হাজার ২৭৫ জন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় কেউ মারা যায়নি। এ পর্যন্ত মারা গেছেন ২৫১ জন। আরোগ্য লাভ করেছেন ১০ হাজার ৯৬৭ জন। হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা এক হাজার ৪৯৫ জন।
এর আগে করোনায় মৃত্যু শূন্য ছিল গত ২২ জুলাই। তার আগে মৃত্যুশূন্য দিন ছিল এক জুলাই। জেলায় প্রথম করোনা শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ এপ্রিল। করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম মৃত্যুবরণ করে ওই বছরের ২০ এপ্রিল।
গত এপ্রিল থেকে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়। জুন মাস থেকে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকে। জুলাই মাসে সর্বাধিক ছয় হাজার ৩০ জন শনাক্ত হন এবং ১০৫ জন মৃত্যুবরণ করেন।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার আসামি সাবেক পৌর মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি কারাগারে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তির পর করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মঙ্গলবার(২৪ আগস্ট) টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক খন্দকার সাদিকুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সহিদুর সাবেক সাংসদ আমানুর রহমান খান রানার ভাই ও টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের আওয়ামী লীগের সাংসদ আতাউর রহমান খানের ছেলে। আট মাস ধরে তিনি কারাগারে।
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত বুধবার (১৮ আগস্ট) বুকে ব্যথা অনুভব করায় সহিদুর রহমানকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর পরীক্ষা–নিরীক্ষায় হৃদ্যন্ত্রে কোনো সমস্যা পাওয়া যায়নি। তবে থাইরয়েড ও কিডনিতে কিছু সমস্যা পাওয়া যায়। তাঁর চিকিৎসার জন্য একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী গতকাল সোমবার করোনা পরীক্ষার জন্য তাঁর নমুনা নেওয়া হয়। পরীক্ষায় করোনা পজেটিভ হন তিনি।
টাঙ্গাইল আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি মনিরুল ইসলাম খান জানান, চিকিৎসার জন্য সহিদুরের আইনজীবীরা বৃহস্পতিবার ও গতকাল সোমবার দুই দফা টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে অন্তর্বর্তী জামিন আবেদন করেন। তাঁরা সহিদুরের চিকিৎসার জন্য যেকোনো শর্তে জামিন প্রার্থনা করেন। আদালতের বিচারক মাসুদ পারভেজ দুই দিনই তাঁর আবেদন নামঞ্জুর করেন।
প্রকাশ, ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় অভিযুক্ত হয়ে দীর্ঘ ছয় বছর পলাতক থাকার পর গত বছরের ২ ডিসেম্বর সহিদুর টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তাঁর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। তার পর থেকেই তিনি টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে। এ পর্যন্ত ১৩ বার আদালতে জামিন আবেদন করে প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে চার জন ও উপসর্গ নিয়ে দুই জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এদিন জেলায় নতুন ৩২৪টি নমুনা পরীক্ষায় ৭২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ২২ শতাংশ। বুধবার (১৮ আগস্ট) দুপুরে টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. আবুল ফজল মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন খান বিষয়টি নিশ্চি করেছেন।
তিনি জানান, জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ৭২ জনের শরীরে করোনা শনাক্তের মধ্যে টাঙ্গাইল সদর উপজেলায় ৫০ জন, দেলদুয়ারে ছয় জন, কালিহাতীতে দুই জন, ঘাটাইলে সাত জন, মধুপুরে চার জন ও ভূঞাপুর উপজেলায় তিন জন রয়েছেন।
তিনি আরও জানান, এ পর্যন্ত জেলায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ১৫ হাজার ৮৩৯ জন। আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ্য হয়েছেন ৯ হাজার ৯৩৭ জন। এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে মোট ২৪৪ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে চার জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে দিন জন ও উপসর্গ নিয়ে এক জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এদিন জেলায় নতুন ৩৮৫টি নমুনা পরীক্ষায় ৪৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ১১ দশমিক ১৬ শতাংশ। শনিবার(১৪ আগস্ট) দুপুরে টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. আবুল ফজল মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, এ পর্যন্ত জেলায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ১৫ হাজার ৫১৭ জন। আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৯ হাজার ২১৮ জন। এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন মোট ২৩৩ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্তদের মধ্যে টাঙ্গাইল সদর উপজেলায় ৯ জন, নাগরপুরে এক জন, দেলদুয়ারে এক জন, মির্জাপুরে ১৮ জন এবং মধুপুর উপজেলায় ১৪ জন রয়েছেন।
একতার কণ্ঠঃ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ(ওএসসি, এনডিইউ, পিএসসি) বলেছেন, সারা বাংলাদেশের মতো টাঙ্গাইল জেলায়ও করোনা পরিস্থিতি এখন উন্নতির দিকে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সরকার একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে- আপাতত লকডাউন শিথিল করা হচ্ছে। সেনাবাহিনীর পেট্রোল কার্যক্রমও সেইভাবে পুনর্বিন্যাস করা হবে।
তিনি বলেন, আবারও যদি করোনা পরিস্থিতি খারাপের দিকে যায়, সরকার যদি আবারও কঠোর লকডাউন দেয় তাহলে সেনাবাহিনী তার কার্যক্রম চালাবে। মঙ্গলবার(১০ আগস্ট) সকাল ১১টার দিকে টাঙ্গাইলে সেনাবাহিনীর অপারেশন কোভিড শিল্ড(পর্ব-২) এর আওতায় টহল কার্যক্রম পরিদর্শনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
সেনাবাহিনী প্রধান আরও বলেন, সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টায় করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে। যে সহযোগিতা সবার কাছ থেকে পেয়েছি তাতে আমি খুব খুশি। বেসামরিক প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সবার সাথে মিলে সেনাবাহিনী কিন্তু এবার অত্যন্ত ভালোভাবে কাজ করেছে। সব থেকে ভালো লাগছে যে সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টার ফলে আমরা কিন্তু করোনা পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছি।
আমরা যদি এইভাবে সবাই মিলে কাজ না করতাম এই পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারতো। তারপরও করোনা পরিস্থিতি তেমনটা ভালো হয়নি। তবে ইনশাল্লাাহ আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি আমরা সবাই একসাথে কাজ করলে এবং জনগণ যদি সবাই সচেতন থাকে আমাদের এই পরিস্থিতি দ্রুত অনেক উন্নতি হবে।
এর আগে তিনি হেলিকপ্টারযোগে টাঙ্গাইল স্টেডিয়ামে অবতরণ করেন। সেখান থেকে সেনা কর্মকর্তাদের নিয়ে শহরের নিরালামোড় ও ভিক্টোরিয়া রোডে টহলরত সেনাসদস্যদের কার্যক্রম পরিদর্শন ও কুশল বিনিময় করেন। এছাড়াও তিনি টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ডক্টর মো. আতাউল গনি, পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়, পৌর মেয়র এসএম সিরাজুল হক আলমগীর ও টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি জাফর আহমেদের সাথে লকডাউনের বিষয়ে কথা বলেন।
এ সময় ১৯ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল সৈয়দ তারেক হোসেন, ৯৮ সংমিশ্রিত বিগ্রেড বিগ্রেডিয়ার জেনারেল এসএম আসাদুল হক পিএসসি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
একতার কন্ঠঃ টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সিরিঞ্জে করোনার ভ্যাকসিন রেখে সূচ পুশ করার ঘটনায় সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক সাজেদা আফরিনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. আবুল ফজল মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন খান মঙ্গলবার(৩ আগস্ট) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, টাঙ্গাইলের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মো. শামীম, জেলা ইপিআই কর্মকর্তা মো. সোলাইমান ও দেলদুয়ার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডা. শামিম সমন্বয়ে গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন পেশ করে। তদন্ত প্রতিবেদনে সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক সাজেদা আফরিনের নামে আনিত অভিযোগের সত্যতা
নিশ্চিত হয়ে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের সুপারিশ করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদন পেয়ে তিনি মঙ্গলবার সকালে সুপারিশ করে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন।
প্রকাশ, রোববার(১ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে দেলদুয়ার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ২নং বুথে টিকা দিচ্ছিলেন সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক সাজেদা আফরিন। এ সময় সাজেদা আফরিন টিকা গ্রহণকারীদের শরীরে ভ্যাকসিন প্রবেশ না করিয়ে শুধু সূচ পুশ করে সিরিঞ্জ ফেলে দিচ্ছিলেন। বিষয়টি স্থানীয় এক যুবকের নজরে আসে। তিনি ঘটনাটি আবাসিক চিকিৎসক ডা. শামিমকে জানালে তিনি পরিত্যক্ত সিরিঞ্জগুলো বাছাই করে ২০টি সিরিঞ্জের ভেতর সম্পূর্ণ ভ্যাকসিনের উপস্থিতি দেখতে পান। সূচ পুশ করা হলেও শরীরে ভ্যাকসিন প্রবেশ করানো হয়নি বলে তিনি নিশ্চিত হন।
এ ঘটনায় সোমবার(২ আগস্ট) তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।