আরমান কবীরঃ টাঙ্গাইলে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিসি) ইফতার মাহফিলে ও কেন্দ্রীয নেতাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (২২ মার্চ) বিকালে টাঙ্গাইলে শিশু একাডেমী অডিটোরিয়ামে এ সংবর্ধনা ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, জাতীয় নাগরিক পার্টির সিনিয়র যুগ্ম মূখ্য সংগঠক সাইফুল্লাহ হায়দার, যুগ্ম মূখ্য সংগঠক আলী নাসের, মুখ্য যুগ্ম সংগঠক অলিক, সংগঠক আজাদ খান ভাসানী, কেন্দ্রীয় সদস্য মেজর সালাউদ্দিন, সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, দেশকে এগিয়ে নিতে হলে আগামী দিনে অবশ্যই নাগরিক পার্টির বিকল্প নেই। তাই আগামী দিনে সবাই পার্টির পাশে থাকবেন।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন, জাতীয় নাগরিক পার্টির টাঙ্গাইল জেলার সংগঠক মাসুদুর রহমান রাসেল।স
আরমান কবীরঃ ফিলিস্তিনের গাজায় গণহত্যা ও ভারতের নাগপুরে মুসলিম নিপীড়নের প্রতিবাদে টাঙ্গাইলে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (২১ মার্চ) দুপুরে জুমার নামাজের পর টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় মিছিলে তৌহিদি জনতার ব্যানারে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিস ও সাধারণ ছাত্র-জনতা।
বিক্ষোভ মিছিলে স্লোগান দেওয়া হয়, ফিলিস্তিনের গাজায় হামলা কেন, জাতিসংঘ জবাব চাই, ভারতের নাগপুরে মুসলিম নিপীড়ন কেন, জাতিসংঘ জবাব চাই? বয়কট বয়কট ইসরায়েল বয়কট, বয়কট বয়কট ভারত বয়কট।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, খেলাফতে মজলিসের টাঙ্গাইলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আনসার আলী, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির কল্যাণ ও অর্থ সম্পাদক এস এম কামরুল ইসলামসহ তৌহিদি জনতা।
এদিকে ফিলিস্তিনের সাধারণ অধিবাসীদের ওপর ইসরাইলের নৃশংস হামলা ও হত্যার প্রতিবাদে টাঙ্গাইলে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির।
শুক্রবার (২১ মার্চ) বাদ জুমা জেলা ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে শহরের কলেজ মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সামনে এসে সমাবেশে মিলিত হয়।
এতে বক্তব্য রাখেন, ইসলামি ছাত্রশিবিরের জেলা সভাপতি মাজহারুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, অর্থ সম্পাদক আব্দুল আলিম প্রমুখ। এসময় ছাত্রশিবিরের অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আমরা কবীরঃ টাঙ্গাইলে ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের করা মামলায় হাইকোর্টের রায়ের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের সদর উপজেলার রাবনা বাইপাস এলাকায় দুপুর পৌনে ১২টা থেকে শুরু করে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিক্ষোভ কর্মসূচি চলছে।
এই মহাসড়ক অবরোধের কারণে ঢাকা ও উত্তরবঙ্গমুখী দু’পাশে প্রায় ২০ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, মঙ্গলবার হাইকোর্ট ৩০ শতাংশ পদ দিয়ে ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের পদন্নোতির পক্ষে রায় দিয়েছেন। এতে তারা প্রমোশন পেয়ে জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর হবে। আর এই পদটি হচ্ছে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের জন্য। যারা ডিপ্লোমা পাস করে বের হবে তাদের চাকরির শূন্য পদ ৩০ শতাংশ কমে গেল। হাইকোর্টের এমন রায় টাঙ্গাইল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সেই সঙ্গে আমরা টাঙ্গাইল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীদের সব ক্লাস এবং চলমান পর্ব মধ্য পরীক্ষা পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বর্জন করছি। দাবি না মানলে মহাসড়ক থেকে অবরোধ প্রত্যাহার করব না।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করছেন জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
আরমান কবীরঃ টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ছানোয়ার হোসেনকে সোমবার (১৭ মার্চ) দুপুরে চার মামলায় মোট ১৯ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
টাঙ্গাইল সদর আমলী আদালত একটি হত্যাসহ তিনটি মামলায় ১৪ দিন এবং মির্জাপুর আমলী আদালত একটি হত্যা মামলায় ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছানোয়ার হোসেনকে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকা মহানগরীর ভাটারা থানার পুলিশ বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। ভাটারা থানায় দায়েরকৃত একটি মামলায় তাকে রিমান্ডে নিয়ে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে। রিমান্ড শেষে কেরানিগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন তিনি।
সোমবার দুপুরে তাকে প্রথমে টাঙ্গাইল সদর আমলী আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় টাঙ্গাইল সদর থানায় স্কুল ছাত্র মারুফ হত্যা মামলা এবং আরও দুইটি ভাঙচুর ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের উপর হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এ সময় মামলাগুলোতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ ৭ দিন করে রিমান্ড আবেদন করে। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক গোলাম মাহবুব খাঁন মারুফ হত্যা মামলায় ও দ্রুতবিচার আইনে দায়েরকৃত মামলায় ৫ দিন করে এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের উপর হামলা মামলায় ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
পরে তাকে মির্জাপুর আমলী আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে নিহত কলেজ ছাত্র মারুফ হত্যা মামলায় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করে। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক মোছা: রুমি খাতুন ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
টাঙ্গাইলের কোর্ট ইন্সপেক্টর মো: লুৎফর রহমান ১৯ দিন রিমান্ড মঞ্জুরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানবীর আহম্মদ জানান, সোমবার থেকেই ছানোয়ার হোসেনকে তারা জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করবেন।
উল্লেখ্য, ছানোয়ার হোসেন ২০১৪ ও ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিজয়ী হন। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তিনি আত্মগোপনে চলে যান।
আরমান কবীরঃ টাঙ্গাইলে বেসরকারী সংস্থা সোনিয়া ফাউন্ডেশনের স্বত্বাধিকারী সোনিয়া আক্তারের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়া লোক পাঠানোর নাম করে কোটি কোটি টাকা প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ এর অভিযোগে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
রবিবার (১৬ মার্চ) সকালে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সামনে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে দুই ঘন্টা ব্যাপী ওই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন, টাঙ্গাইল সদর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও সরকারি এমএম আলী কলেজের সাবেক ভিপি অ্যাডভোকেট আজীম উদ্দিন বিপ্লব, ভাসানী পরিষদের খোদা-ই-খেদমতগারের হাসরত খান ভাসানী, টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর রকি হায়দার, জোবায়ের হোসেন প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, বেসরকারি সংস্থা সোনিয়া ফাউন্ডেশনের স্বত্বাধিকারী সোনিয়া আক্তার আস্ট্রেলিয়ায় ভালো বেতনে চাকুরি দেওয়ার কথা বলে টাঙ্গাইলসহ দেশের বিভিন্ন জায়গার মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। দীর্ঘদিন যাবত অস্ট্রেলিয়া নিতে না পারায় ভুক্তভোগীরা টাকা ফেরত চাইলে নানা তালবাহানা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। সম্প্রতি সোনিয়া টাঙ্গাইল পৌরসভার সন্তোষ এলাকার সাজু মিয়ার নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে গ্রেফতার করিয়েছেন। অবিলম্বে সাজুর মুক্তির দাবি জানান তারা। বক্তারা অনতিবিলম্বে সোানিয়াকে বিচারের আওতায় আনার দাবিও জানান মানববন্ধন থেকে।
মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল প্রেস ক্লাব থেকে শুরু হয়ে শহরের নিরালা মোড় হয়ে পুনরায় প্রেসক্লাবের সামনে এসে শেষ হয়।
এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয় পাঁচ শতাধিক নারী-পুরুষ অংশ গ্রহণ করে।
সাহান হাসানঃ টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য জোয়াহেরুল ইসলামের বাড়ি দখল করে ‘পাগলের আশ্রম’ চালু করার ঘটনায় ছাত্র প্রতিনিধি মারইয়াম মুকাদ্দাসকে (মিষ্টি) গ্রেপ্তার করেছে টাঙ্গাইল সদর থানা পুলিশ।
রোববার (৯ মার্চ) দিবাগত রাত ১২টার দিকে আকুরটাকুর পাড়া হাউজিং এলাকায় তার নিজ বাসা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এর আগে শনিবার (৮ মার্চ) রাতে সাবেক সংসদ সদস্য জোয়াহেরুল ইসলামের স্ত্রী রওশন আরা খান বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এতে আসামি হিসেবে মারইয়াম মুকাদ্দাসের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া তাঁর সহযোগী অজ্ঞাতনামা আরও আট থেকে নয়জনকে আসামি করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত মারিয়ামের স্বামীর নাম শাহ্ আলমাস, বাবার নাম মাজাহারুল ইসলাম। তাঁদের গ্রামের বাড়ি বাসাইল উপজেলার ফুলকি ইউনিয়নের যশিহাটী গ্রামে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, শনিবার (৮ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে টাঙ্গাইল শহরের আকুরটাকুরপাড়া ছোট কালীবাড়ি সড়কে জোয়াহেরুল ইসলামের পাঁচতলা ভবনের কেঁচিগেটের ছয়টি তালা ভেঙে মারইয়াম মুকাদ্দাস মিষ্টি অজ্ঞতনামা আরও আট থেকে নয়জনকে সঙ্গে নিয়ে ভবনে ঢোকেন। তাঁরা ৫ লাখ টাকা ও ১০ ভরি স্বর্ণালংকার চুরি করে নিয়ে যান। এ ছাড়া আসবাবপত্র ভাঙচুর করে আনুমানিক ৫০ লাখ টাকার ক্ষতিসাধন করেন। পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাঁরা ১৭ জন মানসিক ভারসাম্যহীন ছিন্নমূল মানুষকে ভবনের কক্ষে প্রবেশ করিয়ে বাইরে থেকে তালাবদ্ধ করে রাখেন। এ ঘটনার খবর পেয়ে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাদী (রওশন আরা খান) বাসায় গিয়ে মারইয়াম মুকাদ্দাসকে ঘটনার বিষয় জিজ্ঞাসা করেন। এ সময় মারিয়াম ক্ষিপ্ত হয়ে রওশন আরাকে বলেন, এ বাড়িতে বসবাস করতে হলে ১০ কোটি টাকা চাঁদা দিতে হবে। অন্যথায় আগামী সাত দিনের মধ্যে বাড়িটি পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন।
টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানবীর আহম্মদ বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আসামি মারিয়ামকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে তাঁকে সোমবার (১০ মার্চ) সকালে আদালতে পাঠানো হয়েছে। মামলার অজ্ঞাতনামা আসামিদের শনাক্তসহ গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, মারইয়াম মুকাদ্দাসের নেতৃত্বে গত ৬ ফেব্রুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগের সদ্য প্রয়াত সভাপতি ফজলুর রহমান খান, সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম ও সাবেক পৌর মেয়র জামিলুর রহমানের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। তিনি আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ি দখল করে বৃদ্ধাশ্রম, পাগলদের আশ্রম, পশু আশ্রয়কেন্দ্র গড়ে তোলার ঘোষণা দেন।
শনিবার (৮ মার্চ) জোয়াহেরুল ইসলামের বাড়ি দখল করে ছিন্নমূল মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষদের ওঠানো হয়। পরে সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুহুল আমিন শরিফের নেতৃত্বে ১৭ জন ছিন্নমূল মানুষকে উদ্ধার করে দখল হওয়া বাড়িটি খালি করা হয়। শনিবার রাত দুইটার দিকে মুচলেকা নিয়ে মারিয়ামকে ছেড়ে দেওয়া হয়। উদ্ধার করা ১৭ জন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সমাজসেবা বিভাগের মাধ্যমে ময়মনসিংহের ধলা ও গাজীপুরের কাশিমপুর আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হয়।
আরমান কবীরঃ টাঙ্গাইলে ধর্ষনের সর্বোচ্চ বিচার ও নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
রবিবার (৯ মার্চ) বিকেলে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সামনে নারী ও শিশু যৌন নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চ এই কর্মসূচির আয়োজন করে।
এতে বক্তব্য রাখেন, টাঙ্গাইল জেলা ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি ফাতেমা রহমান বীথি, সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন, জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় সংগঠক আজাদ খান ভাসানী, শিক্ষক ও ক্রীড়া সংগঠক মোনালিসা মুন্নি, সমাজকর্মী নাহার চাকলাদার, সাংবাদিক রতন সিদ্দিকী ও আলমগীর হোসেন, জেলা ছাত্র ফেডারেশনের প্রচার সম্পাদক তাওহীদা সপ্নীল, দপ্তর সম্পাদক প্রেমা সরকার, পৌর কমিটির আহবায়ক আদিবা হুমায়রা, সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মুনঈম, সদস্য শিশির প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের আকাঙ্খা ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা কিন্তু অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশ ঠিক তার উলটো পথে হাঁটছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কেবল খান দান আর ঘুমান আর মধ্য রাতে তামাশার প্রেস বিজ্ঞপ্তি করেন। আমরা এই ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ চাই এবং আছিয়াসহ সকল ধর্ষণের বিচার চাই।
তারা আরও বলেন, ২৪-এর ছাত্র শ্রমিক জনতার অভ্যুত্থানের পরেও বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত নারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। আমরা মাগুরায় ৮ বছরের শিশু আসিয়াকে ধর্ষিতা হতে দেখলাম। আমরা মির্জাপুরের ১০ বছরের শিশুকে ধর্ষিতা হতে দেখলাম।
আরমান কবীরঃ ছাত্র প্রতিনিধি ও সমন্বয়ক পরিচয়ে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলামের ৬ তলা বিশিষ্ট একটি ভবন দখল করে ১৭ জন মানসিক ভারসাম্যহীন রোগীকে আবাসনের চেষ্টা করেছেন মারইয়াম মুকাদ্দাস মিষ্টি। এ ঘটনায় শনিবার (৮ মার্চ) রাতে মুচলেকার মাধ্যমে ক্ষমা চেয়ে ছাড়া পান তিনি।
রবিবার (৯ মার্চ) দুপুরে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট রুহুল আমিন শরিফ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে শনিবার (৮ মার্চ) রাতে বাড়ি দখলের খবর পেয়ে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. রুহুল আমিন শরিফের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী যৌথভাবে এ অভিযান পরিচালনা করে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বাসাটি দখলমুক্ত করতে সক্ষম হন।
মুচলেকায় মারইয়াম মুকাদ্দাস মিষ্টি বলেন, আমি আইনি অধিকার ব্যতিরেকে অন্যের ব্যক্তিগত বাড়িতে মানসিক ভারসাম্যহীন ১৭ জন নারী-পুরুষকে আবাসনের চেষ্টা করে অপরাধ করেছি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমার পোস্টের কারণে ক্ষেত্র বিশেষে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হয়েছে তার দায় আমার ওপর বর্তায়। আমি আমার নেতিবাচক ও বে-আইনি কৃতকর্মের জন্য মানবিক বিবেচনায় ক্ষমাপ্রার্থী। ভবিষ্যতে সামাজিক অস্থিরতা তৈরি হয় এমন ফেসবুক পোস্ট করা এবং ব্যক্তিগত বা সরকারি সম্পদ দখল বা ভাঙচুর করাসহ অন্য কোনো প্রকার অপরাধে লিপ্ত হব না। আমি প্রদত্ত মুচলেকা ভঙ্গ করলে প্রচলিত আইনে আমার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিলে তার বিপরীতে আমার কোনো আপত্তি গ্রহণযোগ্য হবে না।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. রুহুল আমিন শরিফ বলেন, মারইয়াম মুকাদ্দাস মিষ্টি নামে এক নারী সাবেক সংসদ সদস্যের বাসাটি অবৈধভাবে দখল করে মানসিক ভারসাম্যহীন ১৭ জন নারী-পুরুষকে আবাসনের চেষ্টা করে। পরে তাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে নেওয়া হয়। বাড়িটি কয়েক ঘন্টার মধ্যে অবৈধ দখলমুক্ত করা হয় এবং মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিদের উদ্ধার করা হয়। তাদেরকে সরকারের ব্যবস্থাপনায় স্থায়ীভাবে পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, অভিযুক্ত নারী এ ধরণের কর্মকাণ্ড করে অপরাধ করেছেন মর্মে মুচলেকা দিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের অপরাধ করবেন না মর্মে প্রত্যয়ন দেন। মুচলেকায় তার স্বামীসহ মোট ৫ জন সাক্ষী স্বাক্ষর করেন। বিশ্ব নারী দিবস ও আত্মশুদ্ধির মাস রমজান বিবেচনায় ভুল শুধরে নেওয়ার একটি সুযোগ দিতে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এরূপ পোস্ট করলে এবং সরকারি বা বেসরকারি সম্পদ ভাঙচুর বা দখলসহ অন্য কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত হলে আইনগভাবে অধিকতর কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অপরদিকে, জেলার বেশ কয়েকজন ছাত্র প্রতিনিধি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ঘটনার বিষয়ে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেন। তারা মিষ্টির কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই বলে বিবৃতি প্রদান করে। পাশাপাশি চাঁদাবাজি ও অবৈধ দখলের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানান তারা।
এদিকে, ঘটনাস্থল শহরের ছোট কালিবাড়ীর এলাকাবাসী জবরদখলের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন এবং ভবিষ্যতে এই ধরণের কর্মকাণ্ড ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিহত করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
সাহান হাসানঃ ‘অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন-নারী ও কন্যার উন্নয়ন’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে টাঙ্গাইলে ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ উদযাপন করা হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
শনিবার (৮ মার্চ) সকালে জেলা প্রশাসন, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর ও জাতীয় মহিলা সংস্থার যৌথ আয়োজনে জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বরে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শেষে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক শরীফা হক।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আব্দুল্যাহ আল মামুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম, টাঙ্গাইল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদা আক্তার, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর টাঙ্গাইলের উপ-পরিচালক জাকির হোসেন, টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট জাফর আহমেদ প্রমুখ।
আরমান কবীরঃ টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) জোয়াহেরুল ইসলামের বাড়ি দখল করে ‘পাগলের আশ্রম’ চালু করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক পরিচয়ধারী এক তরুণী।
শনিবার (৮ মার্চ) দুপুরে প্রায় ২৫ জন ছিন্নমূল মানসিক প্রতিবন্ধীকে নিয়ে এই আশ্রম চালু করেন তিনি।
ওই তরুণীর নাম মারইয়াম মুকাদ্দাস ওরফে মিষ্টি। তিনি নিজেকে আল মুকাদ্দাস ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সংগঠক হিসেবে পরিচয় দেন। তিনি বলেন, বাসাইল উপজেলার ফুলকি ইউনিয়নের যশিহাটি গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মাজহারুল ইসলামের মেয়ে তিনি। স্নাতক করেছেন ঢাকার শান্তা মারিয়াম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ে। কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত নন বলে দাবি করেন তিনি।
শনিবার দুপুর ১২টার দিকে জোয়াহেরুল ইসলামের শহরের ছোট কালিবাড়ী এলাকার বাড়িটি দখলের সময় সেখানে সাবেক এই সংসদ সদস্যের পরিবারের কেউ উপস্থিত ছিলেন না।
বেলা তিনটার দিকে শহরের ছোট কালিবাড়ী এলাকায় জোয়াহেরুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ছয়তলা ভবনের নিচতলায় বিভিন্ন বয়সের ১১ জন মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষ অবস্থান করছেন। আরও লোকজন ছিলেন ভবনটির তৃতীয় তলায়। সেখানে অবস্থান করছিলেন মারইয়াম মুকাদ্দাস নামের ওই তরুণী। এসময় তিনি বলেন, তার এই আশ্রম সদর উপজেলার খেজুরতলা এলাকায় ছিল। শনিবার দুপুরে জোয়াহেরুল ইসলামের বাড়িতে এটি স্থানান্তর করা হলো। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ নেতারা জনগণের টাকা লুটপাট করে বাড়িঘরসহ এসব সম্পদ করেছিলেন। তাই এগুলো এখন জনকল্যাণে ব্যবহার করা হবে।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ৬ ফেব্রুয়ারি মারইয়াম মুকাদ্দাসের নেতৃত্বে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান খান, সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম, সাবেক পৌর মেয়র জামিলুর রহমানের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
দুই দিন আগে মারইয়াম মুকাদ্দাস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে লিখেছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলামের বাসা পাগলের আশ্রম, প্রয়াত সভাপতি ফজলুর রহমান খানের বাসা প্রতিবন্ধীদের আশ্রম, সাবেক এমপি তানভীর হাসান ওরফে ছোট মনিরের বাসা অ্যানিমেল শেল্টার, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুজ্জামান সোহেলের বাসা বৃদ্ধাশ্রম, সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের বাসা এতিমখানা এবং আওয়ামী লীগ অফিস পাবলিক টয়লেট করা হবে। সেখানে তিনি আরও লিখেছিলেন, ‘আরও নাম সাজেস্ট করুন, তথ্য দিন। একেক করে সমাজের ও টাঙ্গাইলের উন্নয়নের কাজে লাগুক আওয়ামী লীগের অবৈধ সম্পদ।’
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জোয়াহেরুল ইসলাম আত্মগোপনে চলে গেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে দুটি হত্যাসহ অর্ধ ডজন মামলা আছে। তাঁর বাড়ি দখলের বিষয়ে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাঁকে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে তাঁর মেয়ে জাকিয়া ইসলাম বলেন, ঘটনার সময় তাঁদের বাড়িতে কেউ ছিলেন না। তাঁদের পরিবারের প্রায় সবার নামেই মামলা থাকায় বাড়িতে থাকছেন না। তিনি আরও বলেন, ‘দেশে আইন নেই, প্রশাসন নেই, তাই এমন অরাজকতা হচ্ছে।’
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের টাঙ্গাইল শাখার সদস্যসচিব আবু আহমেদ শেরশাহ বলেন, ‘মারইয়াম মুকাদ্দাস বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটিতে নেই। ওনার কোনো কর্মের দায় আমরা নেব না। আন্দোলনের সময় অনেকেই সক্রিয় ছিল।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের টাঙ্গাইল শাখার আহ্বায়ক আলামিন তাঁর ফেসবুকে ওয়ালে লিখেছেন, মিষ্টি আপুর বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের বিষয়ে আমি অবগত নই; এবং আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি, আমার সহযোদ্ধারাও অবগত নন। তাঁর কর্মকাণ্ডের প্রতি আমার কোনো ধরনের সমর্থন নেই।
টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভীর আহম্মেদ বলেন, এ বিষয়ে তাঁর কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। তিনি লোকমুখে শুনেছেন।
আরমান কবীরঃ টাঙ্গাইলে অপহরণের পর বিকাশের মাধ্যমে চাঁদা দাবির অভিযোগে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (৭ মার্চ) দুপুরে তাদের টাঙ্গাইল আদালতে পাঠানো হয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) রাতে শহরের থানাপাড়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এসময় মোমিনুল ইসলাম (৩৩) নামে অপহৃত একজনকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ব্রাহ্মণ কুলিয়া এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে আল আমিন তালুকদার (৩২) ও দেলদুয়ার উপজেলার ডুবাইল গ্রামের মিজান মিয়ার ছেলে কুতুব উদ্দিন রনি (২৮)।
পুলিশ জানায়, অপহৃত মোমিনুল ইসলাম দীর্ঘদিন যাবত একটি ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় কর্মকর্তা হিসেবে টাঙ্গাইল শহরের রেজিস্ট্রি পাড়ায় কর্মরত ছিলেন। এ সুবাদে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে রিয়া মনি নামে এক নারীর সঙ্গে পরিচয় হয় তার। বুধবার (৫ মার্চ) রাতে রিয়া মনি মোমিনুলকে শহরের শান্তিকুঞ্জ মোড়ে ডেকে আনেন। পরে তার সঙ্গে থাকা দুইজন মোমিনুলকে জোরপূর্বক শহরের থানাপাড়ার একটি ফ্ল্যাটে নিয়ে আটকে রেখে মারধর করে। একপর্যায়ে অপহরণকারীরা দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।
পরবর্তীতে তারা বাড়ি থেকে নগদ টাকা নিয়ে আসার জন্য চাপ দেয় পরিবারকে। অপহরণকারীরা মোমিনুল ইসলামের সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে বলে বাড়িতে ফোন করে বিকাশের মাধ্যমে ২০ হাজার টাকা দিতে বলে। পরে মোমিনুলের বাবা মোহাম্মদ আলী প্রথমে বিকাশে পাঁচ হাজার টাকা দেন। পরে তার স্ত্রী বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) বিকাশের মাধ্যমে আরও ১০ হাজার টাকা দেন। বাকি টাকার জন্য তারা মোমিনুল ইসলামকে মারধর ও নির্যাতন করে। এভাবে বিকাশের মাধ্যমে ৪০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। বাকি টাকা দিতে হুমকি দেয় অপহরণকারীরা। বিষয়টি পরিবারের লোকজন পুলিশকে জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মোমিনুল ইসলামকে উদ্ধার করে। এসময় দুইজনকে আটক করা হয়। অন্যরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানবীর আহমেদ জানান, এ ঘটনায় মোমিনুল ইসলাম রাতে বাদি হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। গ্রেপ্তারকৃতদের শুক্রবার দুপুরে টাঙ্গাইল আদালতে পাঠানো হয়েছে। জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
আরমান কবীরঃ টাঙ্গাইলের প্রধান সরকারি কৌঁসুলি (জিপি) ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নবনির্বাচিত সদস্য আব্দুল বাকী মিয়ার (৭৩) দাফন সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার (৫ মার্চ) বিকালে দ্বিতীয় জানাজা শেষে টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার ফুলকি ইউনিয়নের যশিহাটী গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
এর আগে বুধবার দুপুরে তার মরদেহ টাঙ্গাইল কোর্ট চত্বরে আনা হয়। সেখানে অনুষ্ঠিত জানাজায় অংশগ্রহণ করে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. নাজিম-উদ্দৌলা, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তফা শাহরিয়ার খান প্রমূখ।
জানাজায় আরও উপস্থিত ছিলেন, নারী ও শিশু দমন নির্যাতন ট্রাইবুনালের বিচারক (জেলা জজ) কাউসার আহমেদ, টাঙ্গাইল বারের সভাপতি মুহম্মদ জহুর আজহার খান, সাধারণ সম্পাদক এ.কে.এম রফিকুল ইসলাম রতন, পিপি শফিকুল ইসলাম রিপন , নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি ওমরাও খান দিপুসহ বারের সিনিয়ার ও জুনিয়র আইনজীবীগণ।
এছাড়া কেন্দ্রীয় বিএনপি’র প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু এবং জেলা বিএনপি’র সভাপতি হাসানুজ্জামিন শাহীন, জেলা বিএনপি’র সাধারণল সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফরহাদ ইকবাল, জেলা বিএনপি’র সাবেক সদস্য সচিব মাহমুদুল হক সানু ও অন্যান্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ জানাযার নামাজে অংশগ্রহণ করে।
এর আগে বুধবার সকালে টাঙ্গাইল শহরের সাবালিয়া এলাকার নিজ বাসভবনে অসুস্থ হয়ে পড়েন প্রবীণ আইনজীবী আব্দুল বাকী মিয়া। গুরুত্বর অসুস্থ অবস্থায় তাকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়ার পথে সকাল ১০টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, তিন মেয়েসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।
উল্লেখ্য, আব্দুল বাকী মিয়া ১৯৭৮ সালে আইনজীবী হিসেবে টাঙ্গাইল বারে যোগদান করেন। তিনি প্রধান সরকারি কৌঁসুলি (জিপি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এ ছাড়া ২০০১ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ছিলেন। টাঙ্গাইল জেলা এ্যাডভোকেট বার সমিতির সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া ‘ব্লাস্ট’ টাঙ্গাইল ইউনিটের পরিচালনা কমিটির সভাপতি ছিলেন।