একতার কণ্ঠঃ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মুল্য স্থিতিশীল রাখা ও বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রেনে টাঙ্গাইলে বাজার পরিদর্শন করছে জেলা প্রশাসনের দ্রব্যমুল্য পর্যালোচনা তদারকির বিশেষ টাস্কফোর্স টিম।
শুক্রবার (১১অক্টোবর) সকালে শহরের সবচেয়ে বড় পাইকারী বাজার পার্ক বাজারে এই তদারকি শুরু করা হয়।
এসময় বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মধ্যে চাল, ডাল, ডিম, মাছ, মাংস ও মুরগীর বাজার তদারকি করা হয়।এতে মুরগী, ডিম ও মাছের ‘বাজার মুল্যে’ তালিকা টানানো সহ পণ্যের ক্রয়ের রশিদ খতিয়া দেখা হয়।
বাজার তদারকিতে নেতৃত্ব দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও দ্রব্যমুল্য পর্যালোচনা তদারকির বিশেষ টাস্কফোর্সের আহবায়ক মো.জিয়াউল ইসলাম চৌধুরী।
এসময় উপস্থিত ছিলেন,টাঙ্গাইলের জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন টাঙ্গাইল এর সহকারী পরিচালক ও বিশেষ টাস্কফোর্সের সদস্য সচিব সিকদার শাহীনুর আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও বিশেষ টিমের সদস্য মো.সোহেল রানা, কৃষি কর্মকর্তা ও সদস্য ফারজানা, ক্যাবের জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক ও সদস্য মো.আবু জুবায়ের উজ্জল, উপজেলা প্রানী সম্পাদ কর্মকর্তা ও সদস্য মো.মেহেদী হাসান, উপজেলা সিনিয়র মৎস কর্মকর্তা মো.আইয়ুব আলী, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শেখ মো.মুসা প্রমুখ ।
এছাড়াও ছাত্র প্রতিনিধি ও বিশেষ টাস্কফোর্সের সদস্য মনিরুল ইসলাম ও মো.আল আমিন বাজার পরিদর্শনের সময় উপস্থিত ছিলেন।
একতার কণ্ঠঃ অতিরিক্ত দামে ডিম বিক্রি ও মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করায় তিন ব্যবসায়ীকে দুই লাখ ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, টাঙ্গাইল।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কুতুবপুর ও বড়চওনা বাজারে অভিযান চালিয়ে এ জরিমানা করা হয়।
এ প্রসঙ্গে ভোক্তা অধিদপ্তরের টাঙ্গাইল জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শিকদার শাহীনুর জানান, খামারি ও ডিমের পাইকারি আড়তে তদারকি করে বিক্রয় রশিদে মূল্য উল্লেখ না করা, ক্রয় রশিদ সংরক্ষণ না করা, সরকার নির্ধারিত যৌক্তিক দামের অতিরিক্ত দামে ডিম বিক্রি করা ও মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করায় কুতুব বাজারের মেসার্স রবিউল ট্রেডার্সকে ৮০ হাজার, একই অপরাধে মেসার্স এসএসএস এন্টারপ্রাইজকে ৮০ হাজার ও বড়চওনা বাজারের জাকিয়া এন্টারপ্রাইজকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
তিনি আরও জানান, এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
একতার কণ্ঠঃ পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ আনারস শুধু ফল হিসেবে নয়, এটির পাতারও ব্যবহার হয় নানান কাজে। অতীতে আনারস ফল তোলার পর পাতা ফেলে রাখা হতো অথবা গরুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার হতো।
কিন্তু বর্তমানে এর পাতা দিয়ে তৈরি হচ্ছে নানান শৌখিন পণ্য। সেই সঙ্গে মিলছে অর্থকড়িও। ক্রমে এর উৎপাদন এবং ব্যবহারেরও প্রসার ঘটছে।
আনারস উৎপাদনে প্রসিদ্ধ টাঙ্গাইলের মধুপুর গড়। এখানকার নারীরা প্রথমে ব্যক্তি উদ্যোগে ঘর-গৃহস্থালির কাজে লাগে এমন কিছু শৌখিন জিনিসপত্র বানালেও পাতা থেকে সুতা উৎপাদনে হাত দেয় ‘মেনোনাইট সেন্ট্রাল কমিটি বাংলাদেশ’ নামের একটি বিদেশি সংস্থা। সেটি তাও ২০০৮ সালের কথা। এ সংস্থার প্রকল্পটি ছিল উপজেলার জলছত্র বাজারে। ২০১৭ সালে এসে বনাঞ্চলের জাঙ্গালিয়া গ্রামে ব্যুরো বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করে একটি হস্তশিল্পের কারখানা। এখানে শতাধিক নারী-পুরুষের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি আনারসচাষিদের ফেলে দেওয়া পাতারও সদগতি হয়েছে। বিনিময়ে তারা আর্থিকভাবেও লাভবান হচ্ছে।
ফাইবার এক্সট্রাকশন মেশিনের মাধ্যমে আনারস পাতা থেকে আঁশ বের করা হয়। তারপর ভাঙা প্লেট ও নারিকেলের খোল দিয়ে ঘষে পাতা থেকে আঁশ বের করে পানিতে ধুয়ে নেওয়া হয়। এরপর সেগুলো রোদে শুকাতে দেওয়া হয়। এক কিলোগ্রাম পাতা থেকে ৬০ সেন্টিমিটার লম্বা শক্ত সুতা পাওয়া যায়। আঁশ বের করার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ৩০ জন মানুষের সাহায্য লাগে। ১০০০ কেজি পাতা থেকে ১০০-১৫০ কেজি আঁশ পাওয়া যায়। এ সুতার বিভিন্নমুখী ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বিশেষ করে সুতাগুলো হাতে রশি পাকিয়ে হস্তশিল্প ও গৃহসজ্জার নানান রকম জিনিসপত্র বানানো যায়। এ ছাড়া সুতা থেকে উন্নতমানের কাপড়ও বানানো যায়। আশার বিষয়, আনারস পাতা থেকে উৎপাদিত সুতা দিয়ে উন্নতমানের লেদার বানানোর কাজে এটি দেশের বাইরে রপ্তানি করা হচ্ছে।
আবার যেসব পাতা থেকে সুতা তৈরি করা যায় না, সেগুলো থেকে জুয়েলারি বক্স, টেবিল ম্যাট, ফ্লোর ম্যাট, ফ্লাওয়ার বক্স, ওয়াল হ্যাঙ্গিং, চাবির রিংসহ নানান পণ্য বানানো হয়। আকর্ষণীয় এসব পণ্য যাচ্ছে চীনসহ উন্নত দেশগুলোতে। এখানে কাজ করে অনেক নারীই হয়ে উঠছেন স্বাবলম্বী। আগে যেসব নারী বনে ও আনারসের জমিতে কাজ করে যে টাকা পেত, তার চেয়ে বেশি টাকা পাচ্ছেন এ হস্তশিল্পের কাজ করে। ফলে সংসারের অভাব মিটিয়ে তারা এখন অনেকটা সচ্ছল জীবনযাপন করছেন। কথা হয় উপজেলার বেরীবাইদ গ্রামের ফিরোজ মিয়ার সঙ্গে। তিনি এখানে প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ করছেন। এ শ্রমিক জানান, আনারসের পাতা থেকে এত সুন্দর পণ্য তৈরি হতে পারে তা আগে জানতাম না। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সব জানতে পেরেছি। তার মতো আরও অনেক শ্রমিক এখানে কাজ করছেন। তারা আনারস চাষের পাশাপাশি বাড়তি উপার্জন করতে পার্টটাইম কাজ করছেন।
আনারসচাষী রাজ্জাক মিয়া বলেন, একটি পরিপূর্ণ আনারস গাছে ৩৬টি পাতা হয়। একটি গাছে একবারই ফল ধরে। ওই গাছের গোড়ায় নতুন গাছ জন্মায়। আনারস কাটার পর ওই গাছের অন্তত ১৫-২০টি পাতা কেটে ফেলা হয়। আর নতুন গাছ হওয়ার পর সব পাতাই কাটা যায়। এই পাতাগুলো নিচে পড়ে নষ্ট হয়। মাটিতেই পচে মিশে যায়। কেউ কেউ গবাদিপশুর জন্যও নিয়ে যান। কিন্তু কয়েক বছর ধরে আমরা বিক্রি করছি। আনারস বেচার টাকার পাশাপাশি বাড়তি টাকা পাচ্ছি পাতা বিক্রি করে।
ব্যুরো বাংলাদেশের হস্তশিল্পের কারখানার এজিএম আমীর হামজা বলেন, নারীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে বিভিন্ন শৌখিন জিনিসপত্র তৈরি করা হচ্ছে। এতে তারা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। আগে যারা বন, আনারস বাগানে কাজ করতেন সেসব নারী আমাদের এখানে কাজ করছেন। এখানে ৭০ শ্রমিক নারী-পুরুষ কাজ করছেন। এর মধ্যে অধিকাংশ নারী আছে। যারা সুধিবাবঞ্চিত নারী, স্বামী পরিত্যক্তা নারীরাই এখানে বেশি কাজ করেন। এখানে প্রায় চারশ শ্রমিককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এখানে মজুদ আছে অনেক পণ্য সে কারণে এখন আমরা উৎপাদন আপাতত কমিয়ে দিয়েছি। তবে আমরা একটি কম্পমেস কারখানা তৈরির প্রকল্প হাতে নিয়েছি।’ এ উপজেলায় বিভিন্ন স্থানের বাগানগুলো যদি সরকারের পক্ষে আমাদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করে তাহলে উৎপাদিত পণ্য গ্রাহকদের কাছে সরবরাহ করা যেত বলে জানান এ কর্মকর্তা। স্থানীয় শ্রমিক শ্রেণির মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের প্রশিক্ষণের সময় দুই থেকে তিন মাস সময় লাগায় তারা তেমনটি আগ্রহ প্রকাশ করে না এ কাজে। এজন্য শ্রমিকদের শিক্ষানবিশকালীন তাদের ভাতা বা প্রণোদনার ব্যবস্থা থাকলে তারা আগ্রহী হয়ে উঠবে এ পেশায়।
নারী উদ্যোক্তা ও ব্যুরো ক্রাফটের পরিচালক রাহেলা জাকির বলেন, ‘এ উপজেলায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বসবাস বেশি। অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া এই মানুষদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে মধুপুরে এ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।’ এ উদ্যোক্তা আরও জানান, চীনের একটি মেলায় তারা অংশগ্রহণ করে এসব পণ্যের বেশ সাড়া পেয়েছেন। এ ছাড়া আরও অনেক দেশই হস্তশিল্পের এ পণ্যের প্রতি আগ্রহের কথা জানিয়েছে। আনারসের কিছু পাতা আছে যেগুলো দিয়ে আঁশ বানানো সম্ভব হয় না সেগুলো দিয়ে আমরা টিস্যু পেপার তৈরি করছি। অর্থাৎ আনারসের কোনো জিনিসই আর ফেলনা নয়। তাদের ওয়ান টাইম প্লেট ও গ্লাস তৈরির পরিকল্পনা চলছে। পরিত্যক্ত প্রাকৃতিক কাঁচামাল দিয়ে তৈরি পরিবেশবান্ধব এসব পণ্যের দেশের বাইরে চাহিদা রয়েছে বলে জানান তিনি।
একতার কণ্ঠঃ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে টাঙ্গাইলে নিহত স্কুল ছাত্র মারুফ হাসানের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে ছাত্র হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত এক ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতাকে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে টাঙ্গাইল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাসান বিন মোহাম্মদ আলীকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আয়োজিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শহীদ পরিবার ও আহতদের চিকিৎসার জন্য আর্থিক অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও করটিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা খালেকুজ্জামান চৌধুরী মজনুর বক্তব্য দেওয়াকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত হয়।
পরে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কায়সারুল ইসলাম উপস্থিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু উপস্থিত শিক্ষার্থীরা মজনু চৌধুরীর গ্রেপ্তারের দাবি ও হত্যাকাণ্ডে জড়িত ইউপি চেয়ারম্যানকে শহীদ মারুফের মা মোর্শেদা বেগমের উপস্থিতিতে বক্তৃতা দেওয়ার সুযোগ দেওয়ার জন্য সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের প্রত্যাহার দাবি করে স্লোগান দিতে শুরু করে। এক পর্যায়ে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের জেলা প্রশাসক তার কার্যালয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন।
এসময় শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে অনুষ্ঠানে উপস্থিত কাতুলি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. ইকবাল হোসেন, পোড়াবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহাদাত হোসেন, মগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মোতালিব হোসেন, সিলিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সুজায়েদ হোসেন দ্রুত অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করে উপজেলা পরিষদে গিয়ে আশ্রয় নেন।
পরে দুপুরে ছাত্র-ছাত্রীরা জেলা প্রশাসক কার্যালয় সম্মেলন কক্ষে না গিয়ে কার্যালয়ের সামনে বসে পরে বিক্ষোভ করতে থাকে। সেখানে জেলা প্রশাসক উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের জানান, টাঙ্গাইল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাসান বিন মোহাম্মদ আলীকে টাঙ্গাইল থেকে প্রত্যাহার করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। তার বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় নেবে। কিন্তু উপস্থিত ছাত্ররা হাসান বিন মোহাম্মদ আলীকে সেখানে উপস্থিত হয়ে শহীদ মারুফের মা মোর্শেদা বেগমের কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানান।
ছাত্র-ছাত্রীদের প্রচন্ড বিক্ষোভের মুখে প্রত্যাহারকৃত ইউএনও সেখানে উপস্থিত হয়ে মারুফের পরিবার ও উপস্থিত সকলের কাছে ঘটনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে বলেন, তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে ভুলটি করেননি। তার পরও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ও আহতদের আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যানকে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার ঘটনায় তিনি নিঃশর্তভাবে ক্ষমাপ্রার্থনা করেন।
তিনি আরও বলেন, এই ঘটনার জন্য তিনি একক ভাবে দায়ী। টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসনের অন্য কেউ এই ঘটনার সাথে যুক্ত নয়। বৈষম্যেবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত সকল শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করছি ও তাদের প্রতি রইল বিনম্র শ্রদ্ধা।
এসময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বেশ কিছুসংখ্যক সদস্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
একতার কণ্ঠঃ আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় টাঙ্গাইলে চলতি বছর পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রথম দিকে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের অভাবে পাট আবাদ করতে সমস্যা হলেও মৌসুমের শেষ দিকে এসে বৃষ্টি হওয়ায় পাটের আবাদ বৃদ্ধি পায়। নিবিড় পরিচর্যা আর কৃষি অফিসের পরামর্শের কারণে পাটের তেমন কোনো রোগবালাই নেই। পাটের বাজারদর ভালো হওয়ায় হাসি ফুটেছে কৃষকদের মুখে।
পাট চাষিরা বলছে, পাটের ভাল দাম পেতে শতভাগ পলিথিনের বস্তা পরিহারের পাশাপাশি দেশের সকল পাটকল চালু ও বিদেশে রপ্তানির উদ্যোগ নিতে হবে সরকারকে।
টাঙ্গাইলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, দাম ভাল পাওয়ায় জেলায় প্রতিবছরই বাড়ছে সোনালী আঁশ চাষ। গত ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ১৯ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে ২ লাখ ৫২ হাজার ৫৫৮ বেল উৎপাদন হয়েছে। চলতি মৌসুমে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে ১৯ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে ২ লাখ ৩০ হাজার ৬৯০ বেল পাট উৎপাদন হবে। চলতি বছরের পাট আবাদের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৯ হাজার ৬’শ হেক্টর। লক্ষমাত্রার চেয়ে ৫০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ বেশি হয়েছে। চলতি বছর জেলায় ৬ হাজার ২’শ জন কৃষককে এক কেজি করে পাটের বীজ বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, জেলার ১২টি উপজেলায় পাটের আবাদ করা হয়েছে। চাষিরা এখন ব্যস্ত জাগ দেওয়া পাটের আঁশ ছাড়াতে। বেশিরভাগ জমির পাটই কাটা শেষ হয়ে গেছে। এর অধিকাংশই জাগ দেওয়া হয়ে গেছে। অনেকে পাট থেকে আঁশ ছাড়াচ্ছেন। কেউ বা পাটশোলার আঁটি বেঁধে রোদে শুকাচ্ছেন। কেউ আবার পাট ভাঁজ করে রোদে মেলে দিচ্ছেন। পাট ও পাটশোলার বাজার দরও ভালো। মণ প্রতি সাড়ে তিন হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পাটের আঁশ বিক্রি করে যেমন কৃষক টাকা পায় তেমনি পাটের কাঠি জ্বালানি হিসেবে, ঘরের বেড়া দেওয়ার কাজে ব্যবহার করা হয়। ধীরে ধীরে আবার সোনালী আঁশের রাজত্ব ফিরে আসছে এ জেলাতে।
পাট চাষিরা জানান, দেশি, তোষা, কেনাফ, রবি-১ ও ভারতীয় বঙ্গবীর জাতের পাট সব থেকে বেশি আবাদ হয়। পাট অফিস ও কৃষি অফিস থেকে প্রায় প্রতিবছর পাটের বীজ ও সার বিনামূল্যে দেওয়া হয়। কিন্তু এই বীজ গুলো সময় মতো আমাদের কাছে পৌঁছায় না। এতে পাটের আবাদ ব্যাহত হয়। সময় মতো পাট বীজ হাতে পেলে আবাদ অনেক অংশে বৃদ্ধি পাবে।
দেলদুয়ার উপজেলার দেউলী ইউনিয়নের আগ দেউলী গ্রামের কৃষক শাহাদৎ হোসেন বলেন, পাট আবাদের প্রথম দিকে বৃষ্টি না থাকায় সেচ দিয়ে পাট বপণ করেছিলাম। যে পাট গুলো বীজ বপন করেছিলাম সেগুলো চার হাজার টাকা মণ বিক্রি করেছি। পরে পাট গুলো ৩৪০০ থেকে ৩৫০০ টাকা মণ বিক্রি করেছি। এখনো আমার কিছু পাট কাটা বাকি রয়েছে। সেগুলোর দাম কেমন পাবো এখনো বুঝা যাচ্ছে না। তবে পাটের যে ফলন হয়েছে এখন যে দাম রয়েছে তাতে আমরা অনেক খুশি।
একই গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, এবছর আমি ৪ বিঘা জমিতে পাট আবাদ করেছি। প্রতি বিঘায় সাত মণ ফলন হয়েছে। ৪ বিঘা জমির পাট ৩৪০০ টাকা মন হারে বিক্রি করে ৯৫ হাজার টাকা পেয়েছি। ৪ বিঘা জমির পাট আবাদ করতে আমার খরচ হয়েছে ৪০ হাজার টাকা। এতে আমার ৫৫ হাজার টাকার উপরে লাভ হয়েছে।
কৃষক ছানোয়ার হোসেন বলেন, আমি ১০ শতাংশ জমি বর্গা নিয়ে পাট চাষ করেছিলাম। এতে তিন মণ পাট পেয়েছিলাম। প্রথমে যে বাছ পাট পেয়েছিলাম সেগুলো ২৪০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করেছি। পরের পাট ৩৮০০ টাকা মণ বিক্রি করেছি।
দেলদুয়ার উপজেলার ছিলিমপুর হাটের পাট ব্যবসায়ী মনিরুল ইসলাম বলেন, আমরা স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে পাট কিনে বাংলাদেশের বিভিন্ন মিল পার্টির কাছে বিক্রি করি। এছাড়া প্রতি শুক্রবার ছিলিমপুর হাটে কৃষকদের কাছ থেকে পাট কেনা হয়। হাটের দিনে প্রায় ৫’শ থেকে ৬’শ মণ পাট কেনাবেচা হয়। এ বছর ৩৫০০ থেকে ৩৮০০ টাকা মণ দরে পাট কিনছি। মণে ৮০ থেকে ১০০ টাকা দরে লাভ করে বিভিন্ন মিল পার্টির কাছে বিক্রি করি।
জেলা পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা ওয়াহিদুজ্জামান খান জানান, পাট অধিদপ্তর থেকে চলতি বছর জেলার ১২টি উপজেলার ৩৬ হাজার কৃষককে এক কেজি পাট বীজ ও ১২ কেজি করে সার বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও তালিকাভুক্ত ৯’শ জন কৃষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
টাঙ্গাইলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার দুলাল উদ্দিন বলেন, পাট চাষিদের সুদিন ফিরেছে। পাটের দাম বেড়ে যাওয়ায় এবার পাট চাষে ঝুঁকেছে কৃষক। পাট চাষ করে কৃষক এখন অনেক লাভবান হচ্ছেন। কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলে দেশের অন্যতম বৃহৎ যমুনা সেতুর টোল ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পেয়েছে নতুন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ করপোরেশন (সিআরবিসি)। কোম্পানিটি এখন থেকে অনলাইনে টোল আদায় করবে, এতে কমবে যানজট। আগামী পাঁচ বছর প্রতিষ্ঠানটি নিজস্ব জনবলে এই দায়িত্ব পালন করবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
শনিবার (৩১ আগস্ট) দায়িত্ব পেয়ে রাত ১২টা ১ মিনিটে তারা সেতুর দায়িত্ব বুঝে নিয়ে দায়িত্ব পালন শুরু করে। এতে প্রাক্কলিত মূল্য থেকে প্রায় ১৫ কোটি টাকা কমে দরদাতা হিসেবে চায়না রোড ও ব্রিজ করপোরেশন (সিআরবিসি) যমুনা সেতুর টোল আদায় ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজের অপারেটর হিসেবে দায়িত্ব পায়।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রোড ও ব্রিজ করপোরেশন (সিআরবিসি) কোম্পানিকে ৫৯ কোটি ৬৩ লাখ ৯৬ হাজার ৫০৪ দশমিক ১৪ টাকা মূল্যে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। এতে ওই কোম্পানি পরবর্তী পাঁচ বছর সেতুর টোল আদায় ও পরিচালনা কার্যক্রম তাদের নিজস্ব জনবল দ্বারা পরিচালনা করবে।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের যমুনা সেতুর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন বলেন, কম টাকায় দরপত্র দেওয়া হলেও টোল কমানোর কোনো সুযোগ নেই। সরকার নির্ধারিত টোল আদায় করতে হবে। ডিজিটাল সফটওয়্যারের মাধ্যমে টোল আদায় করা হবে। ফলে টোল আদায়ের কারণে কোনো যানজট সৃষ্টি হবে না।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের যুগ্ম সচিব আলতাফ হোসেন শেখ বলেন, ইতিমধ্যে কার্যাদেশ পেয়ে রাত ১২টার পর থেকে নতুন কোম্পানি টোল আদায় শুরু করেছে। প্রাক্কলিত মূল্য থেকে প্রায় ১৫ কোটি টাকা সাশ্রয় মূল্যে পাঁচ বছরের জন্য বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তারা চুক্তি সম্পন্ন করেছে। এই কোম্পানির ব্যবস্থাপনা এবং সফটওয়্যারের মাধ্যমে টোল আদায় করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে গাড়ি পারাপার করা যাবে। এখানে অনলাইনে টোল দিয়ে যাতায়াতের জন্য প্রত্যেকটা লাইনে ব্যবস্থা থাকবে। ব্যবহারকারী যদি টোল কালেকশন সিস্টেমে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করেন, তাহলে টোল পারাপারের সময় তাঁরা অনলাইনে টোল দিতে পারবেন। সরাসরি টোলের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকাটা জমা হয়ে যাবে। এতে টোলে কোনো ট্রাফিক জ্যাম হবে না। একদিকে, সরকারের ১৫ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। অন্যদিকে জনগণও কম সময়ে দ্রুততার সহিত টোল প্লাজা দিয়ে পার হয়ে যেতে পারবে।
উল্লেখ, গত ২০১৮ সাল হতে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বিবিএ) ২০২৪ আগস্ট পর্যন্ত যমুনা সেতুর টোল আদায় ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ছিল। দীর্ঘ ছয় বছর পর নতুন কোনো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দিল সরকার।
একতার কণ্ঠঃ দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে টাঙ্গাইলের বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা সোসাইটি ফর সোসাল সার্ভিস (এসএসএস)।
প্রাথমিকভাবে বন্যাদুর্গত মানুষের জন্য সংস্থাটি ৬ কোটি টাকার প্রাথমিক তহবিল নিয়ে বন্যার্তদের সহায়তার জন্য কাজ শুরু করেছে। প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ১ দিনের বেতন ১ কোটি টাকার চেক অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে প্রদান করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এসএসএস’র কর্মকর্তারা।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে টাঙ্গাইল শহরের ময়মনসিংহ রোডে অবস্থিত এসএসএস’র ফাউন্ডেশন অফিসে সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির সিনিয়র পরিচালক (ঋণ) সন্তোষ চন্দ্র পাল এই সব তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ভয়াবহ বন্যার কবলে দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। বিশেষ করে ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর ও আশপাশের জেলার বেশিরভাগ এলাকা এখন বন্যার পানির নিচে। এসব এলাকার এসএসএসের ১৫৩ টি শাখার ১০৭ টি শাখার প্রায় দেড় লক্ষাধিক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত। পাশাপাশি সংস্থার উদ্বৃত্ত তহবিল থেকে ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অতিরিক্ত পাঁচ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। বরাদ্দকৃত টাকার মধ্যে দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে বন্যার্তদের ত্রাণ সহায়তার জন্য চাল, ডাল, চিড়া, আলু, তেল, খেজুর, লবণ, চিনি, গ্যাস লাইট, মোমবাতি, ওরস্যালাইন, গুঁড়া দুধ, বিস্কুটের প্রাথমিকভাবে ১লক্ষ প্যাকেট বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণ হিসেবে প্রদানের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এছাড়া বন্যা কবলিত এলাকায় জনগণের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে সংস্থায় কর্মরত মেডিকেল অ্যাসিস্টেন্টদের মাধ্যমে ২০টি মেডিক্যাল ক্যাম্প আয়োজন ও বিনামূল্যে ওষুধ প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ইতিমধ্যে, লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসন স্থানীয়ভাবে ত্রাণ কার্যক্রম সমন্বয়ের জন্য সদর উপজেলায় এসএসএস-কে দায়িত্ব প্রদান করেছে।
তিনি আরও জানান, ত্রাণ কার্যক্রমের পাশাপাশি বন্যাদুর্গত এলাকায় সংস্থার সমিতিভুক্ত সদস্যদের চাহিদা অনুযায়ী পুনর্বাসনের কৃষি, মৎস্য, প্রাণিসম্পদ, ঘর মেরামত, ওয়াটার, স্যানিটেশন প্রভৃতি বিষয়ের জন্য সংস্থা সাড়ে তিন কোটি টাকা অনুদান প্রদানের জন্য অর্থ বরাদ্দ করেছে। এছাড়া চলমান ক্ষুদ্র অর্থায়ন ঋণের পাশাপাশি দুর্যোগ কাটিয়ে ওঠার জন্য অত্যন্ত সহজশর্তে ৩০ কোটি টাকা দুর্যোগকালীন/সাহস ঋণ প্রদানের পরিকল্পনা রয়েছে সংস্থাটির।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এসএসএসের যুগ্ম পরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম খান, উপ পরিচালক এসএম ইয়াহিয়া, সহকারি পরিচালক শামছুল আরেফীন ও ফয়সাল আহমেদ, টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি জাফর আহমেদ, সহ-সভাপতি কাজী জাকেরুল মওলা প্রমুখ।
পরে সংবাদ সম্মেলন শেষে উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের তাদের প্রাণ কার্যক্রম ঘুরিয়ে দেখানো হয়। এসময় সরেজমিন দেখা যায়, এসএসএস ভবনের কর্মকর্তার-কর্মচারীগণ শুকনা খাবারসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য প্যাকেটজাত কাজে নিয়োজিত রয়েছে। এরমধ্যে পাঁচ কেজি চাল, তিন কেজি আলু, এক কেজি ডাল, এক লিটার তেল, চিনি, চিড়া, লবন, বিষ্কুট, খেজুর, শিশুদের জন্য গুড়া দুধ, খাবার স্যালাইন, মোমবাতি ও লাইটার রয়েছে। পরে তা বিতরণের জন্য ট্রাকে তুলে বন্যা উপদ্রুত জেলা গুলোর উদ্দেশ্যে পাঠানো হচ্ছে।
একতার কণ্ঠঃ দেশের দারিদ্র্য বিমোচন ও নারীর ক্ষমতায়নে ক্ষুদ্রঋণের ভূমিকা অপরিসীম। বর্তমানে দেশে সাত শতর বেশি প্রতিষ্ঠান এ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত। ক্ষুদ্রঋণের অগ্রযাত্রা ও প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকাণ্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন। এ বিষয়ে বুরো বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক ও চেয়ার, এনজিও ফেডারেশন জাকির হোসেনের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন প্রথম আলোর প্রতীক বর্ধন।
প্রথম আলো: ক্ষুদ্রঋণ বাংলাদেশের দারিদ্র্য বিমোচনে বড় ভূমিকা পালন করেছে। গত ৫৩ বছরে এনজিওগুলোর ভূমিকা কীভাবে দেখছেন?
জাকির হোসেন: ৫৩ বছরে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। ১৯৭০ সালে দেশে মাথাপিছু আয় ছিল ১০০ মার্কিন ডলার আর বর্তমানে প্রায় ২ হাজার ৮০০ মার্কিন ডলার। উপার্জন বরাবরই উৎপাদনের সঙ্গে সম্পর্কিত আর এই উৎপাদন ও উপার্জনপ্রক্রিয়ার বিকাশে শুধু সরকার নয়, সরকারের অংশীদার হিসেবে এনজিও-এমএফআই (ক্ষুদ্র ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান) খাত নিভৃতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে। এ খাত স্বাধীনতা-পরবর্তী দরিদ্র ও হতদরিদ্র-অধ্যুষিত বাংলাদেশে প্রাথমিকভাবে দারিদ্র্য নিরসন ও আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির দিকে বেশি নজর দিয়েছে। পরবর্তীকালে দেশে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যায়ে ক্ষুদ্র শিল্পের বিকাশ ঘটিয়ে অর্থনৈতিক বৈচিত্র্য নিশ্চিত করেছে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতেও এনিজওগুলোর ভূমিকা পালন করছে। আমাদের এই খাতের মাধ্যমে সাড়ে তিন কোটি মানুষের মধ্যে প্রায় পৌনে তিন লাখ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে।
প্রথম আলো: কয়েক বছর ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে দারিদ্র্য পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে এনজিওগুলোর কী ভূমিকা রাখতে পারে?
জাকির হোসেন: বিগত দশকগুলোয় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক যে উন্নয়ন ঘটেছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে, ২০৩৩ সাল নাগাদ আমরা বিশ্বের ২৪তম বৃহত্তম অর্থনীতির স্বীকৃতি অর্জন করতে সক্ষম হব। তবে এ দুই সময়ের মধ্যবর্তী ভূরাজনৈতিক ও প্রাকৃতিক ঘটনাগুলোর প্রভাবের কথাও আমাদের বিবেচনায় রাখতে হবে। এ ধরনের সংঘাত-সংঘর্ষ কিংবা দুর্যোগ গভীরভাবে দেশীয় অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির জন্য অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার পাশাপাশি এগুলোও দায়ী। তবে আমাদের দেশীয় অব্যবস্থাপনা থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নেওয়ার সুযোগ নেই।
প্রথম আলো: কয়েক বছর ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে দারিদ্র্য পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে এনজিওগুলোর কী ভূমিকা রাখতে পারে?
জাকির হোসেন: বিগত দশকগুলোয় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক যে উন্নয়ন ঘটেছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে, ২০৩৩ সাল নাগাদ আমরা বিশ্বের ২৪তম বৃহত্তম অর্থনীতির স্বীকৃতি অর্জন করতে সক্ষম হব। তবে এ দুই সময়ের মধ্যবর্তী ভূরাজনৈতিক ও প্রাকৃতিক ঘটনাগুলোর প্রভাবের কথাও আমাদের বিবেচনায় রাখতে হবে। এ ধরনের সংঘাত-সংঘর্ষ কিংবা দুর্যোগ গভীরভাবে দেশীয় অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির জন্য অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার পাশাপাশি এগুলোও দায়ী। তবে আমাদের দেশীয় অব্যবস্থাপনা থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নেওয়ার সুযোগ নেই।
প্রথম আলো: শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের টেকসই উন্নয়নে এনজিওগুলো অনেক দিন ধরে কাজ করছে। এ খাতে নতুন আর কী কী করার আছে বলে মনে করেন।
জাকির হোসেন: আপনি ঠিকই বলেছেন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে দীর্ঘদিন ধরেই এনজিও-এমএফআইগুলো কাজ করে যাচ্ছে। তবে এ দুই খাতে আমাদের কাজগুলো প্রাথমিক ও মাঠপর্যায়ের। সম্প্রতি দু-একটি এনজিও বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজসহ হাসপাতাল স্থাপন করে সাধারণ মানুষকে সেবা দিচ্ছে, যদিও এর ব্যাপকতা তেমন একটা নয়। সরকারি হাসপাতাল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো যে মান ধরে রাখতে পারেনি, আমরা তা পেরেছি। পাশাপাশি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা পর্যায়ে এনজিও-এমএফআই খাতের অনেকেই মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়ার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। ব্র্যাক, আশা, বুরো বাংলাদেশ, টিএমএসএস—এগুলোর সবারই কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল কিংবা মেডিকেল কলেজ আছে।
প্রথম আলো: ক্ষুদ্রঋণের সেবা ডিজিটালাইজেশনের প্রয়োজনীয়তা বোধ করছেন কি?
জাকির হোসেন: বুরো বাংলাদেশসহ বেশ কয়েকটি এনজিও-এমএফআই এ ক্ষেত্রে অনেক দূর এগিয়েছে। আরও অনেক প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল যাত্রায় সংযুক্ত হওয়ার জন্য কাজ করছে। বুরো বাংলাদেশসহ দেশের শীর্ষ কয়েকটি উন্নয়ন সংস্থা শাখাগুলোয় শতভাগ অটোমেশন সম্পন্ন করে পরিপূর্ণ ডিজিটালাইজেশনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বুরো বাংলাদেশ গ্রাহকদের জন্য ডিজিটাল মাধ্যমে ঋণ ও সঞ্চয় সেবা দেওয়া শুরু করে ২০১৯ সালে।
প্রথম আলো: আপনাদের প্রতিষ্ঠান এ পর্যন্ত কী পরিমাণ ক্ষুদ্রঋণ দিয়েছে? এর কী প্রভাব পড়েছে বলে মনে করছেন?
জাকির হোসেন: আমরা গ্রাহকদের এ পর্যন্ত ৯৪ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়েছি। এই ঋণের অর্থে অনেক মানুষ, যাঁদের অধিকাংশই নারী, নিজেদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন, কেউ উদ্যোক্তা হয়ে উঠেছেন, কেউ তাঁর সন্তানকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলেছেন, কেউ কেউ বংশানুক্রমিক পেশা সচল রেখেছেন, কেউবা ছোট ব্যবসা বড় করেছেন। পরিবারে সচ্ছলতা এসেছে। তাঁরা অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন এবং অনেক মানুষকে উদ্যোক্তা হওয়ার সাহস জুগিয়েছেন। সমাজে এর প্রভাব বিপুল। ক্ষুদ্র ও মাঝারি পরিসরে তাঁরা অর্থনীতিতে যে অবদান রাখছেন, তার উৎসে আছে বুরো বাংলাদেশের ঋণসহায়তা।
জাকির হোসেন
প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক, বুরো বাংলাদেশ
একতার কণ্ঠঃ ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের খরিপ-২/২০২৪-২৫ মৌসুমের উফশী আমন আবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় টাঙ্গাইলের সদর উপজেলার ১ হাজার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকালে সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা প্রশাসন ও সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে এ বীজ ও সার বিতরণ করা হয়।
এই বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মো. ছানোয়ার হোসেন।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসান-বিন-মুহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. লোকমান হোসেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রুমানা আকতার, করটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খালেকুজ্জামান চৌধুরী মজনু, মাহমুদনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসলাম হোসেন শিকদার, ছিলিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুজায়েত হোসেন প্রমুখ।
প্রকাশ, প্রণোদনা কর্মসূচিতে সদর উপজেলার ১ হাজার কৃষককের মধ্যে রোপা আমন ধানের বীজ ৫ কেজি, ডিএপি সার ১০ কেজি ও এমওপি সার ১০ কেজি মোট ২৫ কেজি করে বিতরণ করা হয়।
একতার কণ্ঠঃ: টাঙ্গাইল পৌর এলাকার বেড়াডোমায় লৌহজং নদীর ওপর নির্মাণাধীন ব্রিজ ভেঙে হেলে পরার ঘটনায় পৌরসভার মেয়রসহ ৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) দুপুরে দুর্নীতি দমন কমিশন টাঙ্গাইল জেলা শাখার সহকারী পরিচালক বিপ্লব হোসেন বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
মামলায় আসামিরা হলেন- টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এস এম সিরাজুল হক আলমগীর, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিক্সস অ্যান্ড ব্রিজেজ লি. এবং দ্য নির্মাতা (জেভি) স্বত্বাধিকারী মোস্তফা মোহাম্মদ মাসুদ, প্রকল্প পরিচালক এ কে এম রশীদ আহমেদ, পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশরী শিব্বির আহম্মেদ আজমী, সহকারী প্রকৌশলী রাজীব কুমার গুহ এবং উপসহকারী প্রকৌশলী এ কে এম জিন্নাতুল হক।
মামলা সূত্রে জানা যায়, টাঙ্গাইল পৌর এলাকার বেড়াডোমা লৌহজং নদীর ওপর এলজিইডির অর্থায়নে নির্মাণাধীন এ সেতুটি বাস্তবায়ন করছিল টাঙ্গাইল পৌরসভা। ব্রিজের নির্মাণ ব্যায় ধরা হয় ৩ কোটি ৬০ লাখ ১৮ হাজার টাকা। ৪০ মিটার দৈর্ঘ্য আর ৮ মিটার প্রস্থের ব্রিজটি সেতুটি ২০২০ সালের ১২ নভেম্বর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের চুক্তি অনুযায়ী সেতুটির কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের ১১ মে।কিন্তু নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগেই ওই বছর ১৬ জুন রাতে পানির স্রোতে নির্মাণাধীন সেতুর পশ্চিমপাশের বাঁশ ও কাঠের খুঁটিগুলো সরে গিয়ে একাংশ ডেবে যায়। পরে দুদকসহ বিভিন্ন সংস্থা তদন্ত শুরু করে। নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ও কতৃপক্ষের গাফিলতির কারণেই ৩ কোটি ৬০ লাখ ১৮ হাজার টাকা ব্যায়ে নির্মিত গুরুত্বপূর্ণ ব্রিজটি ডেবে যায় বলে দুদকের মামলায় উল্লেখ করা হয়।
টাঙ্গাইল পৌর মেয়র এসএম সিরাজুল হক আলমগীর দেশের বাহিরে (অস্ট্রেলিয়ায়) থাকায় তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
একতার কণ্ঠঃ আর মাত্র ৮ দিন পরেই পবিত্র ঈদ উল আজহা। ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে কোরবানির পশুবাহী ও পণ্যবাহী যানবাহনের চাপ আগের তুলনায় বেড়েছে। কিন্তু স্বাভাবিক গতিতে যানবাহন চলাচল করছে।
রবিবার (৯ জুন)দুপুর পর্যন্ত ঢাকা-টাঙ্গাইল- বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে কোথাও যানজটের খবর পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু সেতু সাইট অফিস সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাত ১২টা থেকে শনিবার রাত ১২ টা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে ২৩ হাজার ২৭৬টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এ থেকে টোল আদায় হয়েছে ২ কোটি ১৩ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। এর মধ্যে টাঙ্গাইলের বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব অংশে ১১ হাজার ২৯৮টি যানবাহন পারাপার হয়। এ থেকে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৪ লাখ ২৪ হাজার ৬’শ টাকা। সিরাজগঞ্জে সেতুর পশ্চিম অংশে ১১ হাজার ৯৭৮টি যানবাহন থেকে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৯ লাখ ১৮ হাজার ৪’শ টাকা।
বঙ্গবন্ধু সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল বলেন, অন্য সময়ে চেয়ে মহাসড়কে পশুবাহী ও পণ্যবাহী যানবাহনের চাপ আগের তুলনায় বেড়েছে। কিন্তু স্বাভাবিক গতিতেই যানবাহন চলাচল করছে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার পাইকড়া ইউনিয়নের খরশিলা-রোয়াইয়াল গ্রামীণ রাস্তাটি ৩৫ বছরেও সংস্কার হয়নি। ফলে পাইকড়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান আজাদ হোসেনের বাড়ি সংলগ্ন ২০ লাখ ১২ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি ব্রিজ গ্রামবাসীর কোন কাজেই আসছে না।
এর ফলে কৃষি জমির ফসল ঘরে তোলাসহ যাতায়তে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৮ সালে এই ব্রিজটির নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করেছিল উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় (পিআইও)। ২০১৯ সালে এই ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শেষ হলেও ব্রিজটির দুই পাশের এপ্রোচের মাটি না ফেলায় স্থানীয়দের কোনো কাজেই আসছে না। গত পাঁচ বছর ব্যবহারের অনুপযোগী থাকায় স্থানীয় হাজারো মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন। এছাড়া এই ব্রিজ নির্মাণে সরকারের ব্যয় করা ২০ লাখ ১২ হাজার টাকা এক প্রকার অপচয়ে পরিণত হয়েছে।
কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবেই ব্রিজটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে বলে দাবি স্থানীয়দের।
স্থানীয় খরশিলা গ্রামের বাসিন্দা মাসুদ মিয়া জানান, দুটি গ্রামের বেশির ভাগ মানুষ কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। ব্রিজ থাকা সত্ত্বেও উৎপাদিত ফসল নিয়ে যেতে সমস্যা হচ্ছে। ব্রিজটি কোনো কাজেই আসছে না আমাদের। এছাড়া গত ৩৫ বছরে খরশিলা-রোয়াইয়াল সড়কটির কোন ধরণের উন্নয়ন না হওয়ায় দুটি গ্রামের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে।
স্থানীয় রোয়াইয়াল গ্রামের বাসিন্দা আজাহার আলী বলেন, দুই গ্রামে দুটি স্কুল এবং দুই গ্রামের পাশে দুটি হাট-বাজার রয়েছে। জেলা সদর এবং উপজেলায় যাতায়াতের সহজ রাস্তা দুই কিলোমিটারের রোয়াইল-খরশিলা কাঁচা রাস্তাটি। দুই কিলোমিটার রাস্তার জন্য ৪ থেকে ৫ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে যেতে হয়। এই রাস্তার ওপর পাকা ব্রিজটি নির্মাণে এলাকাবাসী খুব খুশি হয়েছিলেন। কিন্তু ঠিকাদার কোনো রকমে ব্রিজটি নির্মাণ কাজ শেষ করলেও ব্রিজের দুই প্রান্তে মাটি না ফেলায় এই ব্রিজের ওপর দিয়ে এলাকার জনসাধারণ যাতায়াত করতে পারছে না। আমরা দ্রুত ব্রিজের দুই পাশের এপ্রোচে মাটি ফালানোর দাবি করছি।
স্থানীয় আরেক বাসিন্দা হাসান মিয়া বলেন, ফসলের মাঠ অনেক দূরে হওয়াতে ফসল বাড়িতে নেওয়া অনেক কষ্ট হচ্ছে। রাস্তাটা ভালো হলে আমাদের জমির ফসল ভ্যান বা যানবাহনের মাধ্যমে অতি সহজে বাড়ি নেওয়া যাবে, কষ্ট কমে যাবে।
কালিহাতি প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সেহাব উদ্দিন জানান, আমি কালিহাতীতে যোগদান করার আগেই প্রকল্পটির বাস্তবায়ন হয়েছিল। ব্রিজের এপ্রোচের মাটি সরে গেছে, বিষয়টি আমার জানা ছিলো না।
তিনি আরও বলেন, এখন ধান কাটার মৌসুম চলছে। ধান কাটা শেষ হলেই ব্রিজের দুই পাশের এপ্রোচে মাটি ফেলে রাস্তাটি চলাচলের জন্য উপযোগী করে তোলা হবে।