আরমান কবীরঃ টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে মাদকবিরোধী অভিযানে গিয়ে টাকা লুটের অভিযোগে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বিভাগের তিন কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
বরখাস্ত কর্মকর্তারা হলেন, পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম, উপ-পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান ও সহকারী উপ-পরিদর্শক জিয়াউর রহমান।
জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল হোসেন মঙ্গলবার (৮ জুলাই) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ওই তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, গত ১৮ জুন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বিভাগের কর্মকর্তারা সাবেক কাউন্সিলর সালেহা বেগমের বাড়িতে অভিযানে গিয়ে সাড়ে ৮ লাখ টাকা লুট করেছেন।
উপ-পরিচালক আবুল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত করা হয়েছে। তদন্তে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় তাদের সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। দোষী প্রমাণ হলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সালেহা বেগম তার অভিযোগে বলেছেন, কর্মকর্তারা তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে কোনো মাদকদ্রব্য না পেয়ে গাড়ির জ্বালানি খরচ বাবদ ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। তিনি তাদের ১০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। পরে তারা ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর শুরু করে। সে সময় তারা ঘরে থাকা প্রায় সাড়ে ৮ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়।
সাহান হাসানঃ টাঙ্গাইলের গোপালপুরে প্রতিপক্ষের হামলায় হত্যা, চাঁদাবাজিসহ প্রায় দেড় ডজন মামলার আসামি জাহাঙ্গীর মণ্ডল ওরফে চাকমা জাহাঙ্গীর (৪৫) নিহত হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ১৮টি মামলা রয়েছে।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাত ৮ টার দিকে উপজেলার নলিন বাজারে ফেরার পথে শাখারিয়া স্লুইস গেট এলাকায় প্রতিপক্ষের হামলায় তিনি নিহত হন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশের ধারণা, মূলত মাদক, বালু ব্যবসা এবং চাঁদাবাজির টাকা ভাগবাটোয়ারার দ্বন্দ্বে তাকে খুন করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে গোপালপুর, ভূঞাপুর ও মির্জাপুর থানায় মাদক, চাঁদাবাজি, নারী নির্যাতন ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ১৮ টি মামলা রয়েছে।
নিহত জাহাঙ্গীর মণ্ডল ওরফে চাকমা জাহাঙ্গীর গোপালপুর উপজেলার হেমনগর ইউনিয়নের মধ্য শাখারিয়া গ্রামের নাজিম উদ্দীনের ছেলে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার রাতে চাকমা জাহাঙ্গীর অজ্ঞাত স্থান থেকে ঝাওয়াইল ইউনিয়নের সোনামুই বাজারে আসে। সেখান থেকে নলিন বাজারের ফেরার পথে শাখারিয়া স্লুইস গেট এলাকায় তারপর ওপর হামলা চালায় অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা। এসময় কুপিয়ে তাকে মারাত্মক জখম করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান স্থানীয়রা। সংকটাপন্ন অবস্থায় সেখান থেকে তাকে নেওয়া হয় টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক জাহাঙ্গীরকে মৃত ঘোষণা করেন ।
হেমনগর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ উমর আলী জানান, জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে অন্তত দেড় ডজন মামলা রয়েছে। তাছাড়া যমুনার ঘাটে অবৈধ বালু ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ, মাদক ব্যবসা, ছিনতাই, সড়ক পথে ডাকাতি, নারী নির্যাতন ও চাঁদাবাজির সংঘবদ্ধ একটি গ্যাং চালাতো চাকমা জাহাঙ্গীর। এদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য টাঙ্গাইল ও জামালপুরের যমুনা তীরের জনপদ অশান্ত হয়ে উঠেছিল।
গোপালপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)গোলাম মুক্তাদির আশরাফ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বহু মামলার আসামি সন্ত্রাসী চাকমা জাহাঙ্গীরের নাগাল পাচ্ছিল না পুলিশ। পরে প্রতিপক্ষের হাতে তিনি খুন হন। তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। এ ঘটনায় এখনো কেউ অভিযোগ করেনি।
আরমান কবীরঃ টাঙ্গাইলে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে সদর উপজেলার বাঘিল ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সামাউন কবিরকে অন্যত্র বদলির জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন ১২ জন ইউপি সদস্য।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) দুপুরে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন করেন ইউপি সদস্য মোছা. কল্পনা বেগম, মোছা. নুরনাহার বেগম, মোছা. ছবিয়া বেগম, মো. সুমন খান, মো. লুৎফর রহমান, মো. নয়ন মিয়া, মো. হারুন অর রশিদ, ইয়াছিন, মোহাম্মদ কায়সার আহমেদ, মো. ফরমান আলী, মো. মনিরুজ্জামান ও মো. আক্তার হোসেন।
ইতিপূর্বে ঈদ ঘিরে ভিজিএসফের চাল আত্মসাদসহ নানা অনিয়ম, দুর্নীতি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছিলো সামাউন কবিরের বিরুদ্ধে।
লিখিত আবেদন থেকে জানা যায়, টাঙ্গাইল সদর উপজেলাধীন ৮নং বাঘিল ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সামাউন কবির যোগদানের পর থেকে ইউপি সদস্যদের অবমূল্যায়নের পাশাপাশি সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে আসছে। ইউপি সদস্যদের সাথে পরামর্শ না করে সামাউন কবির তার মতো স্থানীয় প্রভাবশালীদের সাথে আতাত করে পরিষদের সকল কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।
ইউনিয়নের জনসাধারনের জন্ম/মৃত্যু নিবন্ধনসহ যে কোন কাজে আসলে তাদেরকে আইনের ভয় দেখিয়ে তাদের নিকট থেকে সরকারী ফি’র বাহিরে অতিরিক্ত টাকা গ্রহন করেন তিনি। এতে জনসাধারণ সরকারি সেবা থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি সাধারন জনগন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ বিষয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে মৌখিক ভাবে জানানো হলেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি।
ইউপি সদস্যরা জানান, সামাউন কবির বাঘিল ইউনিয়নে আসার পূর্বে যে সকল ইউনিয়নে চাকরি করেছে প্রত্যেকটি ইউনিয়নের একই ধরনের আচারন করেছেন। নানা অনিয়মের অভিযোগে ইতিপূর্বে কয়েকবার শারিরীকভাবে লাঞ্চিত হয়েছেন তিনি। তার মতো দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মচারি দিয়ে পরিষদের কাজ চালানো সম্ভব নয়। তাই তাকে ধনবাড়ী বা পার্শ্ববর্তী কোন উপজেলায় বদলি করা যেতে পারে। বাঘিল ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম সুন্দরভাবে পরিচালনা করার জন্য প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সামাউন কবিরকে বদলি করার জোর দাবি করেন ইউপি সদস্যরা।
বাঘিল ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সামাউন কবিরের সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বাঘিল ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক মো. মেহেদী হাসান বলেন, পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সামাউন কবিরের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতির বিষয়ে লিখিত আবেদনের বিষয়ে আমি কিছু জানি না।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক শরীফা হক ও স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক মো. শিহাব রায়হানের সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।
আরমান কবীরঃ টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে নকল সরবরাহের অভিযোগে কলেজ শাখা ছাত্রদলের সভাপতি মৃদুল হাসানকে আটক করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১ জুলাই ) এইচএসসির ইংরেজি দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষা চলাকালে জেলার কালিহাতী শাহজাহান সিরাজ কলেজ কেন্দ্র থেকে তাকে আটক করে পুলিশ।
আটক মৃদুল হাসানের বাড়ি কালিহাতী পৌরসভার সাতুটিয়া গ্রামে। তিনি শাজাহান সিরাজ কলেজের ডিগ্রি ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী।
কালিহাতী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ সিফাত বিন সাদেক আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, পরীক্ষা চলাকালীন আমি আশপাশের পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করি। পরীক্ষা কেন্দ্রের গেটের ভেতরে তাকে ঢুকতে দেখে দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আটক করতে নির্দেশ দিই। তার কাছে নকলের কাগজপত্র পাওয়া গেছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাকির হোসেন বলেন, মৃদুল হাসান আমাদের হেফাজতে আছেন। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটো বলেন, কালিহাতীতে দলের নাম ভাঙিয়ে কেউ অপরাধের সঙ্গে জড়িত হলে বিএনপি তার দায় নেবে না। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। অভিযোগের ভিত্তিতে ওই ছেলেকে ইতোমধ্যে জেলা ছাত্রদল থেকে শোকজ করা হয়েছে। দোষ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরমান কবীরঃ টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে দুটি অবৈধ সীসা তৈরির কারখানা উচ্ছেদ করে দিয়েছে প্রশাসন।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) বিকেলে উপজেলার সাগরদীঘি ইউনিয়নের কামালপুর পাহাড়ি এলাকার গজারি বনের ভেতর এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযান পরিচালনা করেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবু সাঈদ।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সাঈদ বলেন, উপজেলার সাগরদীঘি ইউনিয়নের কামালপুর পাহাড়ি এলাকার গজারি বনের ভেতর কারখানা স্থাপন করে একটি চক্র পুরনো ব্যাটারি আগুনে পুড়িয়ে সীসা তৈরি ও বিক্রি করে আসছিল। যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর ও হুমকি স্বরূপ। একপর্যায়ে এলাকাবাসী বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে জানালে মঙ্গলবার বিকেলে টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসকের নির্দেশে অবৈধ সীসা কারখানায় এই অভিযান চালানো হয়। এ সময় কারখানা দুটি এস্কেভেটর (ভেকু) দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
তিনি আরও জানান, বন ও পরিবেশ রক্ষায় এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এই উচ্ছেদ অভিযানে সহায়তা করেন, টাঙ্গাইল জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সঞ্জীব কুমার ঘোষ ও পরিদর্শক বিপ্লব কুমার সূত্রধর।
এ সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও বন বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরমান কবীরঃ টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলায় সাবেক বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটুর কথিত দেহরক্ষী হিসেবে পরিচিত ইয়াকুব ওরফে সিয়ামকে গ্রেপ্তার করেছে দেলদুয়ার থানা পুলিশ।
সোমবার (২৩ জুন) দিবাগত গভীর রাতে সদর উপজেলার সিলিমপুর ইউনিয়নের সিলিমপুর পেট্রোল পাম্পের কাছের একটি বাসায় আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় সিয়ামকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তার বিরুদ্ধে টাঙ্গাইল সদরসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
অত্যন্ত দুর্ধর্ষ ইয়াকুব ওরফে সিয়ামকে দিয়ে সাবেক বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু নির্বাচনের সময় প্রতিপক্ষের উপর সংঘঠিত হামলাগুলো পরিচালনা করাতেন।
ফ্যসিস্ট আওয়ামী লীগ শাসনামলে সিয়ামের নেতৃত্বে দেলদুয়ার উপজেলায় একটি শক্তিশালী মাদকের সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছিল। আগ্নেয়াস্ত্র ও মাদকসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে একাধিকবার আটক হলেও সাবেক প্রতিমন্ত্রী টিটুর সুপারিশে প্রতিবারই পার পেয়ে যায় সিয়াম।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর সে সম্ভাব্য গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে ছিল।
এ বিষয়ে দেলদুয়ার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোহেব খান বলেন, নানা অপকর্মের হোতা ইয়াকুব ওরফে সিয়ামকে গভীর রাতে সিলিমপুর ইউনিয়নের পেট্রোল পাম্পের কাছের একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নিয়মিত মামলায় মঙ্গলবার (২৪ জুন) সকালে তাকে টাঙ্গাইল আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
আরমান কবীরঃ টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে হনুফা বেগম (৬৫) নামে এক বৃদ্ধাকে গলাকেটে হত্যার পর লুট করা হয়েছে শরীরে থাকা স্বর্ণালংকার।
শুক্রবার (২০ জুন) রাতে উপজেলার মানাজী শিকদার বাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
শনিবার (২১ জুন) সকালে পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।
নিহত হনুফা বেগম ওই গ্রামের আব্দুল গফুরের স্ত্রী।
নিহতের পরিবার জানায়, প্রতিদিনের মতো শুক্রবার রাতে খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন হনুফা বেগম। শনিবার ভোরে ঘর থেকে বের না হওয়ায় পরিবারের সদস্যরা তার খোঁজ নিতে যান।
এ সময় ঘরের দরজা ভেতর থেকে খোলা ছিল। পরে ঘরে গিয়ে বিছানায় তার গলাকাটা মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন তারা। হনুফার গলায় তিন ভরি স্বর্ণালংকার ছিল। সেই স্বর্ণের চেইনটি পাওয়া যায়নি। বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করলে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে ঘাটাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মীর মোশারফ হোসেন বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রাথমিক সুরতহাল রিপোর্ট করা হয়েছে। নিহতের গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, এছাড়া স্বর্ণালংকার লুটের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
সাহান হাসানঃ টাঙ্গাইলের নাগরপুরে হত্যা মামলার পলাতক ৩ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাতে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার বটতলা দিঘীরপাড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
বুধবার (১৮ জুন) সকালে র্যাব-১৪, সিপিসি-৩ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, জেলার নাগরপুর উপজেলার মামুদনগর ইউনিয়নের সুদামপাড়া গ্রামের মৃত সিরাজ উদ্দিনের ছেলে আব্দুল মান্নান (৪৫), একই এলাকার আব্দুল মান্নানের স্ত্রী আকলিমা বেগম (৩৫) ও রাবেয়া বেগম (৪৫)।
র্যাব-১৪, সিপিসি-৩ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, নিহত আব্দুর জব্বার মিয়ার (৭০) সাথে গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের দীর্ঘদিন যাবত জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। সোমবার (১৯ মে) জেলার নাগরপুর উপজেলার মামুদনগর ইউনিয়নের সুদামপাড়া চৌরাস্তা মোড়ে নিহত জব্বার মিয়ার সাথে আসামিদের কথা কাটাকাটি হয়। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে আব্দুল মান্নান, আকলিমা বেগম ও রাবেয়া বেগম নিহত জব্বার মিয়া ও তার ও পরিবারের উপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এঘটনায় আব্দুর জব্বার গুরুত্বর আহত হয়। পরে তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে নাগরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে সোমবার সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ঘটনার পর নিহতের ছেলের বউ পলী আক্তার (৩০) বাদী হয়ে নাগরপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের নাগরপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
আরমান কবীরঃ টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে আপত্তিকর অবস্থায় পরকীয়া প্রেমিকসহ মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রী রেহানা পারভীন (৩৮) জনতার হাতে আটক হয়েছেন। বর্তমানে তার প্রেমিকসহ তিনি ভূঞাপুর থানা হেফাজতে রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) ভূঞাপুর থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) একেএম রেজাউল করিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আটক আওয়ামী লীগ নেত্রী রেহানা পারভীন উপজেলার নিকরাইল ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি পলশিয়া গ্রামের শাহ আলমের স্ত্রী এবং তার পরকীয়া প্রেমিকের নাম বাবলু মিয়া (৪৫)।
বাবলু একই গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে। বাবলু মিয়া ৪ ছেলে ও এক মেয়ে সন্তানের বাবা এবং রেহেনা পারভীন ৩ সন্তানের মা। গত বুধবার রাতে উপজেলার সিরাজকান্দি গ্রামে ওই নারী নেত্রী রেহানার নিজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসীরা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে নিকরাইল ইউনিয়ন নারী নেত্রী রেহানা পারভীন এবং বাবলুর মধ্যে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। প্রায়ই বাবলু রেহানার বাড়িতে আসা-যাওয়া করতো।
বুধবার রাতে রেহানার বাড়িতে তারা একত্রিত হলে, অপেক্ষায় থাকা স্থানীয় কিছু ব্যক্তি তাদের আটক করে। এ সময় উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এবং কিছু মানুষ উত্তেজিত হয়ে তাদের মারধরও করেন। পরে খবর পেয়ে ভূঞাপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদেরকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
রেহেনা পারভীনের ছেলে আব্দুল্লাহ জানায়, বাবলু মিয়ার সাথে তাদের পারিবারিক এবং ধারদেনা সম্পর্ক রয়েছে। এর বাইরে কোনো সম্পর্ক নেই, এটি ষড়যন্ত্র।
ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) একেএম রেজাউল করিম বলেন, স্থানীয়রা তাদের আটক করে পুলিশকে খবর দেয়। পরে ঘটনাস্থল থেকে তাদেরকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে আনা হয়। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।
আরমান কবীরঃ টাঙ্গাইল শহরের কান্দাপাড়া এলাকার যৌনপল্লিতে বাসনা আক্তার (১৯) নামে এক যৌনকর্মীর রহস্য জনক মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে।
মঙ্গলবার (১০ জুন) বিকেল আনুমানিক ৫ টার দিকে এই ঘটনাটি ঘটে। তবে যৌনকর্মীদের অভিযোগ বাসনা আক্তারকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে তার কথিত প্রেমিক মাসুদ।
তবে পুলিশ বলছে, মৃত্যুর প্রকৃত কারণ এখনো জানা যায়নি। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। ঘটনাটির বিষয়ে বর্তমানে তদন্ত চলমান রয়েছে।
জানা গেছে, বাসনা আক্তারের মা-বাবা নেই। ছোটবেলা থেকেই শহরের কান্দাপাড়া যৌনপল্লিতে বড় হয়েছে সে। পরে সেখানেই যৌনকর্মী হিসেবে যোগ দেন তিনি। টাঙ্গাইল সদর উপজেলার মগড়া ইউনিয়নের চর খিদিরপুর গ্রামের মৃত মোঃ লাল মিয়ার ছেলে মাসুদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন বাসনা। মাসুদ পেশায় একজন রিকশাচালক।
ঘটনা প্রসঙ্গে কর্মরত যৌনকর্মীরা জানায়, প্রতিনিয়তই বাসনার ঘরে যাতায়াত করতেন মাসুদ। তাদের মধ্যে প্রায় সব সময়ই ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকতো। মঙ্গলবার দুপুরে মাসুদকে বাসনা কয়েকবার ফোন দিয়ে আসতে বলেন। বারবার ফোন দেওয়ার ফলে মাসুদ সেখানে আসতে বাধ্য হয়। পতিতালয়ের পাশেই বিক্রি হয় রেক্টিফাইড স্পিরিট। সেই দোকান থেকে মাসুদ রেক্টিফাইড স্পিরিট নিয়ে আসেন। তারপর তারা বেশ কিছুক্ষণ বাসনার ঘরে অবস্থান করেন। কিছুক্ষণ পরে মাসুদ ডাক চিৎকার শুরু করেন। তার ডাক চিৎকারে আশেপাশের যৌনকর্মীরা বাসনার ঘরের কাছে ছুটে আসেন। তারা এসে বাসনাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। পরে তারা মাসুদকে ঘরের বাহিরে এনে হাত-পা বেঁধে মারধর করেন। ঘরের মালিক টাঙ্গাইল সদর থানায় খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ অভিযুক্ত মাসুদকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে আনেন।
টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ তানবীর আহাম্মেদ মুঠোফোনে বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটা একটি আত্মহত্যার ঘটনা। তবে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ এখনো জানা যায়নি। ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের মরদেহ টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। বর্তমানে তদন্ত চলমান রয়েছে।
তিনি আরও জানান, বাসনা আক্তারের কথিত প্রেমিক মাসুদকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এই ব্যাপারে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
আরমান কবীরঃ টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার বাঁশতৈল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হেলাল দেওয়ানকে আটক করেছে হযরত শাহজাহাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর পুলিশ।
মঙ্গলবার (৩ জুন ) সকালে থাইল্যান্ড যাওয়ার পথে ইমিগ্রেশন পুলিশ বিমানবন্দরে তাকে আটক করে। গ্রেপ্তারকৃত হেলাল দেওয়ান বাঁশতৈল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, গত ৪ আগষ্ট ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক সংলগ্ন গোড়াই হাইওয়ে থানার সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচী চলছিল। ওই সময়ে দুস্কৃতিকারীরা হাইওয়ে থানায় হামলা করে। এসময় পুলিশের গুলিতে গোড়াই লালবাড়ি এলাকার কিশোর হিমেলের দুচোখ অন্ধ হয়ে যায় । ওই ঘটনায় হিমেলের মা নাসিমা বেগম বাদী হয়ে মির্জাপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় উপজেলার বাঁশতৈল ইউপি চেয়ারম্যান হেলাল দেওয়ান তালিকাভুক্ত আসামী। ওই মামলার আসামী হিসেবে ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে আটক করে।
মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম ইউপি চেয়ারম্যান হেলাল দেওয়ানকে ইমিগ্রেশন পুলিশ আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, হিমেলের মায়ের করা মামলার তিনি তালিকাভুক্ত আসামী। তাকে বিমান বন্দর থেকে আনতে মির্জাপুর থানা পুলিশ রওনা হয়েছে।
আরমান কবীরঃ টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ইউক্যালিপটাস গাছ কাটার সময় বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে চাপা পড়ে আসাদ মিয়া (৭৫) নামে এক বৃদ্ধ নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
রবিবার (১ জুন) দুপুরে মির্জাপুর পৌরসভার পাহাড়পুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত আসাদ মিয়া পাহাড়পুর এলাকার নবাব আলীর ছেলে। সে পেশায় একজন সবজি বিক্রেতা ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মির্জাপুর পৌরসভার পাহাড়পুর এলাকার নুরুল হক ভূইয়ার স্ত্রী মিনু বেগম তার বাড়ির বড় ইউক্যালিপটাসসহ কয়েকটি গাছ দেওহাটা বাজারের তিনজন কাঠ ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করেন। শ্রমিকরা গত এক সপ্তাহ ধরে গাছগুলো কাটার কাজ করছিলেন। রবিবার দুপুরে প্রায় ১০০ ফুট দীর্ঘ একটি গাছ কাটার সময় সেটি বিদ্যুতের তারের ওপর পড়ে যায়। এতে সঙ্গে সঙ্গে দুটি খুঁটি ভেঙে পড়ে। ঠিক সেই সময় রাস্তা দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন আসাদ মিয়া। খুঁটির নিচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। নিহত আসাদ মিয়া সাহাপাড়া বাবুবাজারে সবজি বিক্রি করে বাড়ি ফিরছিলেন।
খবর পেয়ে মির্জাপুর ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে।
স্থানীয় সাবেক দুই কাউন্সিলর আজম খান ও শামীম খান বলেন, রাস্তার পাশে গাছ কাটার সময় প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করা হয়নি। বিশাল আকৃতির গাছ এভাবে কাটার আগে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল।
এ বিষয়ে পল্লী বিদ্যুৎ মির্জাপুর জোনাল অফিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মো. মোকলেছুর রহমান জানান, ঘটনাস্থলে তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম জানান, আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।