একতার কণ্ঠঃ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেছেন, আজকে দেশে একটি রাজনৈতিক দল উন্মাদনা এবং আগুন সন্ত্রাস করছে৷ নির্বাচন করতে দিবে না, সংবিধান অনুযায়ী দেশ চলবে না৷ আমি মনে করি, তারা দেশের মঙ্গল ও কল্যাণ চায় না৷ তারা বিগত সময়ে যেভাবে আগুন দিয়েছিল তা বর্বরোচিত। আমরা দেখেছি ১৪ থেকে ১৫ সালে তারা গাড়ি পুড়িয়েছে, রেল লাইন তুলেছে, বিদ্যুতের লাইন কেটেছে এবং জীবন্ত মানুষকে গাড়িতে পুড়িয়েছে৷ ২৮ আগস্ট একই কায়দায় বর্বরোচিতভাবে পুলিশকে হত্যা করেছে৷
শুক্রবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার মুসুদ্দি উত্তর পাড়া গ্রামে খামারি মোবাইল অ্যাপের কার্যকারিতা যাচাই ও উচ্চ ফলনশীল আমন ধানের ফসল কর্তন ও কৃষক সমাবেশে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলেন৷
তিনি আরও বলেনে, আমরা যদি দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রাখতে চাই, তাহলে দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা দরকার৷ দেশে শান্তি দরকার এবং সুন্দর ও সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দরকার। সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে সরকার জাতির কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। বিএনপি আগুন সন্ত্রাস সহিংসতা পথ ছেড়ে, তারা আবার নির্বাচনে আসবে এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, বিএনপিকে ধরপাকড় করা হচ্ছে না। তাদের কর্মীদেরকে প্ররোচিত করা হচ্ছে আগুন সন্ত্রাস করার জন্য। সেটি কোন ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়৷ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব মানুষের জানমাল নিরাপত্তা দেওয়া। তাদের গাড়িগুলোর নিরাপত্তা দেওয়া। দোকানপাট খুলে ব্যবসা বাণিজ্যকে অব্যহত রাখা। দোকান বন্ধ থাকলে কর্মচারীরা না খেয়ে মারা যাবে। সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে । শান্তিপ্রিয় কোন বিএনপি নেতা-কমীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না।
মন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ ঘনবসতির দেশ। জমি কমে যাচ্ছে। ৭ কোটির মানুষ এখন ১৭ থেকে ১৮ কোটি৷ এই মানুষকে খাওয়াতে হলে আরও উন্নত জাতের ফলনশীল উৎপাদন করতে হবে৷ সে লক্ষ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী দুটি কাজ করছেন৷
কৃষি মন্ত্রালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তারের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ সাজ্জাদ, কৃষি মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব রহুল আমিন তালুকদার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মাসুদ করিম, বাংলাদেশ মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক জালাল উদ্দীন, বাংলাদেশের পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক আবদুল আউয়াল প্রমুখ৷
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলে গত কয়েক দিন ধরে বেড়েই চলেছে আলু, পেঁয়াজসহ বিভিন্ন ধরনের সবজির দাম। বাড়তি দামে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে সাধারণ ক্রেতাদের। জেলায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে বাজার মনিটরিং কমিটি থাকলেও তাদের কোন দৃশ্যমান কার্যক্রম নেই। বাজারে নেই জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের জেলা শাখার তৎপরতা।
তবে ব্যবসায়ীদের দাবি, সর্বশেষ বৃষ্টিতে সবজি খেত নষ্ট এবং হরতাল-অবরোধের কারণে আমদানি কমে যাওয়ায় আলু, পেঁয়াজসহ বিভিন্ন সবজির দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ব্যবসায়ী নেতাদের দাবি, টাঙ্গাইলের ব্যবসায়ীরা উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে সবজি কিনে আনেন। সেখানে দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এখানেও পাইকারি ও খুচরা বাজারে সবজির দাম বেশি। দাম বৃদ্ধির ব্যাপারে টাঙ্গাইলের ব্যবসায়ীদের কোনো হাত নেই।
ব্যবসায়ীরা জানান, টাঙ্গাইলের প্রধান পাইকারি কাঁচা বাজার পার্কবাজারে প্রতিদিন মধ্যে রাত থেকে পাইকারি দরে আলু-পেঁয়াজসহ বিভিন্ন সবজি বিক্রি করা হয়। শহরসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলা এবং কালিয়াকৈর, গাজীপুর ও মানিকগঞ্জের বিভিন্ন হাট বাজারের ব্যবসায়ীরা এখান থেকে পাইকারি দরে আলু-পেঁয়াজসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি কিনে নিয়ে যান। এই বাজারে খুচরা মূল্যে বগুড়া, রাজশাহী, নাটোর দিনাজপুরসহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে আলু-পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। কেনার দামে নির্ভর করে বিক্রির দাম নির্ধারণ করেন পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা। পণ্যে গুলোর দাম বাড়ায় বিক্রি কমে গেছে বলেও জানালেন তারা।
পাইকারি ব্যবসায়ী আলী আকবর ও হাফিজ মিয়া বলেন, বর্তমানে টাঙ্গাইলের বাজারে নিজস্ব কোনো আলু নেই। সব আলু উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে আমদানি করতে হয়। পাইকারি দরে প্রতি কেজি আলু ৬৫ টাকা ও পেঁয়াজ প্রতি কেজি ১৩৫ টাকা দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। আমাদের যেমন কেনা, তেমন বিক্রি করছি। আমাদের কেউ দাম বাড়ায় না।
খুচরা বিক্রেতা নাজমুল মিয়া বলেন, আলু ৭৫ টাকা, পেঁয়াজ ১৩৫ টাকা, বেগুন ৮০ টাকা, ফুল কপি ৫০ টাকা, শসা দেশী ৮০ টাকা, কচুর মুখি ৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১৬০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
বুধবার (১ নভেম্বর) সকালে পার্ক বাজারে কথা হয় অটোরিক্সা চালক মজিবুর রহমানের সাথে। তিনি জানান, আধা কেজি পেঁয়াজ ৭০ টাকা ও আধা কেজি আলু ৪০ টাকা দিয়ে কিনলাম । নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার কারণে আমাদের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। সবজিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের নজরদারি বাড়ানোর জোর দাবি করছি।
বাজারে সবজি কিনতে আসা সহকারী অধ্যাপক মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, আমরা বেসরকারি চাকরি করি। সব কিছুর দাম দিনের পর দিন বেড়েই চলছে। আগে যে বাজার করতে সর্বোচ্চ দুই হাজার টাকা লাগতো, এখন সেই বাজার করতে চার হাজার টাকার বেশি লাগে। এই অতিরিক্ত টাকার যোগান দেওয়া আমার জন্য কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
পার্কবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুর বারেক মিয়া বলেন, এই বাজারে প্রতিদিন প্রায় ১০০টন করে আলু-পেঁয়াজ বিক্রি হয়। এখানে কয়েক জন ব্যবসায়ী ভারত থেকে এলসি করেও পেঁয়াজ আনেন। হরতাল ও অবরোধের প্রভাব পড়েছে এই সব পণ্যের উপর।কয়েক দিন ধরে হরতাল অবরোধের কারণে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব পণ্যের দাম বৃদ্ধিতে টাঙ্গাইলের ব্যবসায়ীদের কোনো হাত নেই।
কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আবু জোবায়ের উজ্জ্বল একতার কণ্ঠকে জানান, গত বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) আমাদের সংগঠনের উদ্যোগে জেলা ভোক্তা অধিকারের সহকারী পরিচালক সিকদার শাহিনুর আলম ও জেলা কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের সিনিয়র কৃষি কর্মকর্তা ফারজানা খানের সঙ্গে কৃষি পণ্য ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তারা বাজার মনিটরিংয়ের মাধ্যমে পণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখার আশ্বাস দিয়েছেন।
টাঙ্গাইল জেলা ভোক্ত অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সিকদার শাহিনুর আলম একতার কণ্ঠকে জানান, কৃষি পণ্য আলু ও পিঁয়াজের দাম বৃদ্ধি মনিটরিংয়ের দায়িত্ব কৃষি বিপণন ও সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের । এই অধিদপ্তরের কর্মকর্তাগন বিষয়টি দেখাশোনা করে থাকেন।
জেলা কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের সিনিয়র কৃষি কর্মকর্তা ফারজানা খান একতার কণ্ঠকে জানান, জেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে নিয়মিত বাজার মনিটারিং করা হয়। তবে আলু ও পিঁয়াজের ক্ষেত্রে এই কৃষি পণ্য দুটি জেলার মোট চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কম হওয়ায় উত্তরবঙ্গ থেকে আমদানি করতে হয়। ফলে টাঙ্গাইলে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ের এই পণ্য দুটির দাম বেশি হয়ে যায়।
একতার কণ্ঠঃ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেছেন, ২৮ অক্টোবর আন্দোলনের নামে বিএনপি যদি সন্ত্রাসের পথে যায় ও আক্রমণাত্মক হয়, তাহলে আওয়ামী লীগ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করবে না। বিএনপি হুমকি দিচ্ছে ২৮ অক্টোবর দেশকে অচল করে দিবে, ঢাকাকে সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিবে, দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে। বিএনপি যতোই হুমকি দিক, আমি মনে করি, ২৮ তারিখ তারা কিছুই করতে পারবে না। আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অনেক সক্ষমতা অর্জন করেছে, তারাই বিএনপিকে কঠোরভাবে মোকাবেলা করবে। আর বিএনপি যদি আন্দোলনের নামে সন্ত্রাসের পথে যায়, আক্রমণাত্মক হয়, গাড়িতে আগুন দেয়, বিদ্যুতের লাইন কাটে, রেললাইন তুলে, তাহলে আওয়ামী লীগ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করবে না। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপিকে সমুচিত জবাব দেয়া হবে।
বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলা অডিটোরিয়ামে ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন অঞ্চলে ধানের ও তেল ফসলের উচ্চ ফলনশীল জাতের সম্প্রসারণ ও উৎপাদন বৃদ্ধিতে করণীয় শীর্ষক আঞ্চলিক কর্মশালায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, নির্বাচন যথাসময়ে হবে এবং তা সুষ্ঠু, সুন্দর ও সবার নিকট গ্রহণযোগ্য হবে। নির্বাচনে কারা আসল, কারা আসল না, সেটি কোন বিষয় না। তবে আমি আশা করি, বিএনপি’র শুভ বুদ্ধির উদয় হবে ও তারা নির্বাচনে আসবে। রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করে বিএনপি দেশকে বিদেশের উপর নির্ভরশীল করতে চায়। কারণ বিএনপি’র প্রভু হলো পাকিস্তান। এখনো পাকিস্তানের মায়া তাদের কাটে নি। তারা এখনো পাকিস্তানের ধারায়, পাকিস্তানের পথে ফিরে যেতে চায়। সেজন্য তাদের লক্ষ্য নির্বাচন বানচাল করা।
কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, ভবিষ্যতেও যাবে। এটি মানবতার দেশ। এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোন জায়গা নেই। ধর্ম নিরপেক্ষতাই আমাদের আদর্শ।
তিনি বলেন, বিএনপি’র শাসনামলে দেশে দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছিলো। তারা সার দিতে পারেনি। সার চাইতে গিয়ে ১৮ জন মানুষকে জীবন দিতে হয়েছে। ১৮ জন কৃষককে তারা গুলি করে হত্যা করেছে। দেশে বর্তমানে দুর্ভিক্ষ নেই।
উচ্চ ফলনশীল স্বল্প জীবনকালীন ধানের ও সরিষার জাতগুলোকে দ্রুত সম্প্রসারণের জন্য কর্মশালায় উপস্থিত কৃষির মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের তাগিদ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, দেশে ক্রমশ কৃষি জমি কমছে, মানুষ বাড়ছে। এ অবস্থায় ১৭ কোটি মানুষের খাদ্যের যোগান দেয়া খুবই কঠিন। সেজন্য, কম সময়ে অধিক ফলন ও একই জমি থেকে বার বার ফসল ফলানোর উপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। আমাদের বিজ্ঞানীরা স্বল্পজীবনকালীন উন্নত জাতের ধানের ও অন্যান্য অনেক ফসলের জাত উদ্ভাবন করেছে। যা চাষের মাধ্যমে বছরে ০১ টি অতিরিক্ত ফসল ফলানো সম্ভব হচ্ছে। একইসঙ্গে, ফলনও অনেক বেশি। এই জাতগুলোকে কৃষকের নিকট দ্রুত জনপ্রিয় করতে হবে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাহবুবুল আলম পাটোয়ারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ, টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের এমপি, বিনার মহাপরিচালক মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক শাহজাহান কবীর, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক দেবাশীষ সরকার, বিএডিসির সদস্য পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান, মধুপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীমা ইয়াসমিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলে একদিনের ভারী বৃষ্টির ফলে ভেসে গেছে মাছের পোনা। এতে করে ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন মৎস্য চাষীরা। দিশেহারা হয়ে পড়েছেন নতুন মৎস্য উদ্যোক্তারা। সরকারিভাবে প্রণোদনা সহায়তা না পেলে ঋনের বোঝা নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হবে বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্থ মৎস্য চাষিরা। এদিকে, বৃষ্টির পানিতে নদী-নালা, খাল-বিলসহ ফসলি জমির ধানও তলিয়ে নিমজ্জিত হয়েছে।
জেলা মৎস্য অফিস সূত্র জানিয়েছে, কয়েকদিন আগে টানা ভারী বৃষ্টির কারণে জেলার ১২ টি উপজেলায় ৩’শ ৬৭টি পুকুর তলিয়ে যায়। তারমধ্যে টাঙ্গাইল সদরে ৩০ জনের ৫০টি পুকুর, মির্জাপুরে ৫০ জনের ৫০ টি পুকুর, নাগরপুরে ৪৫ জনের ৪৫ টি পুকুর, সখীপুরে ৬২ জনের ১৬৭ টি পুকুর এবং ঘাটাইলে ৫৫ জনের ৫৫ টি পুকুর তলিয়ে যায়। এসব পুকুর থেকে ৮২ লাখ পোনা মাছ বেরিয়ে গেছে। যার মূল্য ৮ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।
নতুন মৎস্য উদ্যোক্তা ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের কয়েড়া গ্রামের মো. হযরত আলী। কথা হয় তার সাথে। তিনি বলেন, প্রথমবারের মতো বাড়ির পাশে এবার ২ বিঘা জমিতে মাছ চাষ করেছিলাম। দু’মাসে বিভিন্ন প্রজাতের মাছের পোনা অবমুক্ত করি। গত কয়েকদিন আগে একদিনের বৃষ্টির পানিতে পুকুর তলিয়ে সব পোনা বের হয়ে যায়। এনজিও থেকে ঋন করে মাছ চাষ করেছিলাম। আমার লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
ঘাটাইল উপজেলার লক্ষিন্দর এলাকার মাছ চাষী মজিবুর রহমান, কদ্দুস মিয়া ও হুমায়ন কবীর বলেন, আমরা এ বছর ব্যক্তি মালিকানাধীন পুকুরে মাছ চাষ করেছিলাম। মাছের মধ্যে পাঙ্গাস, তেলাপিয়া, সরপুঁটি ও মিনার কার্ফসহ অন্যান্য প্রজাতির মাছ চাষ করি। সেগুলো বেশ বড় হয়েছিল। কিছুদিন আগে হঠাৎ করে ভারী বৃষ্টিতে পুকুর তলিয়ে প্রায় অর্ধকোটি টাকার পোনা মাছ লোকালয়ে বের হয়ে গেছে। পুকুর নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল। বৃষ্টির পানিতে স্বপ্নগুলো ভেসে গেছে।
সখীপুর উপজেলার ইউসুফ হায়দার ও মন্টু সিকদারসহ আরও একাধিক মাছ চাষীরা বলেন, গত কয়েকতিন আগে হঠাৎ করে টানা ভারী বৃষ্টির পানিতে পুকুর তলিয়ে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছি। এরআগে এমনভাবে কখনো ক্ষতি হয়নি। কিভাবে এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠব কিছু বুঝতে পারছি না। তাছাড়া এ পর্যন্ত মৎস্য অফিস থেকে কেউ খোঁজ-খবর নেয়নি। ক্ষতি কাটিয়ে উঠার লক্ষ্যে মৎস্য অফিস থেকে সরকারি প্রণোদনা ও সহযোগিতা কামনা করছি।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, গত কয়েকদিন আগে টানা বৃষ্টির পানির কারণে জেলার ৩৬৭টি ছোট-বড় পুকুর তলিয়ে ৮২ লাখ পোনা মাছ লোকায়ের খাল-বিলের পানিতে ভেসে গেছে। এতে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৯ কোটি টাকা। ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ মাছ চাষীরা যদি ব্যাংক ঋণের জন্য সহযোগিতা চায় তাহলে দ্রুত তা ব্যবস্থা করার চেষ্টা করব।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনের সাবেক এমপি’র পাঁচ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পতিত জমিতে হচ্ছে ড্রাগন ফল চাষ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পড়ে থাকা পতিত জমিতে লাগানো ড্রাগন ফল থেকে প্রতি মৌসুমে আয় হচ্ছে লাখ লাখ টাকা। লাভের সেই টাকা ব্যয় হচ্ছে নিজ উদ্যোগে নির্মিত এতিমখানায়। এতে সুরক্ষিত হয়েছে এতিমখানাসহ শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ।
একান্ত সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনের সাবেক এমপি আলহাজ্ব মো. আবুল কাশেম।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দেলদুয়ার উপজেলায় দেউলি ইউনিয়নের আলালপুর গ্রামে পাশাপাশি কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। বোরহানুল উলুম আহমাদিয়া ইয়াছিনিয়া ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসা, সুফিয়া কাশেম বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, আবুল কাশেম ট্রাষ্ট মসজিদ, আল জামিয়াতুল কাছেমিয়া ও জামেরুন্নেছা এতিমখানা, কমিউনিটি ক্লিনিক, পোস্ট অফিস ও সামাজিক কবরস্থান। প্রায় ১৮ একর জমির উপর গড়ে উঠা প্রতিষ্ঠানগুলো ১০ একর পতিত জমিতে চাষ করা হয়েছে ড্রাগন ফল।
বাগানের কৃষক মো. আব্দুল কাদের বলেন, ১০ একর জমির উপর এই ড্রাগন বাগান করা হয়েছে। বাগানে ড্রাগনের চারা রয়েছে পনের হাজার। আমাদের বাগানে লাল, গোলাপী, বেগুনী, হলুদ ও সাদা জাতের ফল রয়েছে।
তিনি বলেন, এখন ড্রাগন ফলের মৌসুম। তবে আমাদের বাগানে ফল বেশি বড় হচ্ছে না। কেজিতে ধরছে পাঁচ ছয়টা।
তিনি আরও বলেন, ড্রাগন ফল বাজারজাত করতে কোন কষ্ট হয় না। আমরা স্থানীয় পাইকারীদের কাছে বিক্রি করে থাকি। এছাড়াও নিজস্ব খরচে ঢাকায় পৌছিয়ে দিলে পাইকারীরা ন্যয্যমুল্যে দিয়ে থাকেন। প্রতিদিন প্রায় ৬শ থেকে ৮শ কেজি ড্রাগন ফল উত্তোলন করা যায়। তবে আমরা তা না করে মাসে মাসে উত্তোলন করছি। মাঝে মাঝে স্থানীয় পাইকারদের দাবির কারণে এর আগেও উত্তোলন করে বিক্রি করি। স্থানীয় পাইকারদের কাছে প্রতি কেজি দুই থেকে আড়াইশ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে আমাদের ড্রাগন ফল।
বোরহানুল উলুম আহমাদিয়া ইয়াছিনিয়া ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী কবিরসহ কয়েক জন জানায়, ড্রাগন ফলের বাগানে সজ্জিত আমাদের বিদ্যাপিঠ। এই বাগান দেখে শুধু আমরাই আনন্দ পাইনা, বিভিন্ন এলাকা থেকেও বাগানগুলো দেখতে মানুষ আসছেন। এছাড়াও আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি অনেক জায়গায় থাকায় পর্যাপ্ত আলো বাতাস পাওয়া যায়। শিক্ষা ব্যবস্থাও ভালো বলে জানান তারা।
আল জামিয়াতুল কাছেমিয়া ও জামেরুন্নেছা এতিমখানার মুহতামিম হাফেজ ইমরান হোসেন বলেন, এতিমখানা ও হিফজ শাখায় বর্তমানে অধ্যায়ন শিক্ষার্থী সংখ্যা ৪২জন। অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীদের খানাপিনা ভোরণ পোষণের দায়িত্ব পালন করছেন প্রতিষ্ঠাতা টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনের সাবেক এমপি আলহাজ্ব মো. আবুল কাশেম।
তিনি আরও বলেন, এতিমখানার শিক্ষার্থীদের ভোরণ পোষণের চাহিদা মেটাতে তিনি ১০ একর পতিত জমিতে ড্রাগন বাগান করেছেন। ওই ফল বিক্রির টাকা ব্যয় হচ্ছে এতিমখানার শিক্ষার্থীদের পিছনে বলেও জানান তিনি।
বোরহানুল উলুম আহমাদিয়া ইয়াছিনিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো. ইব্রাহিম খলিল বলেন, আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চারদিকে ড্রাগন ফলের বাগান। বাগানটি দেখতে অসাধারণ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীরা প্রকৃতির মনোরম পরিবেশে বেড়ে উঠছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠান গুলোর প্রতিষ্ঠাতা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়েই এই ড্রাগন বাগান করেছেন। উনার অবর্তমানে প্রতিষ্ঠানগুলো যেন বন্ধ না হয়, সে লক্ষেই উনার এই বাগান করা। বাগান থেকে উপার্জিত টাকা এতিমখানাসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালনায় ব্যয় করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও আবুল কাশেম ট্রাষ্ট বোর্ডের চেয়ারম্যান টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মো. আবুল কাশেম জানান, ১৯৭৩ সালে আমার পিতা ইন্তেকাল করেন। উনার রুহের মাগফিরাতের জন্য ওই সালেই আমি এখানে একটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করি। আমার প্রতিষ্ঠিত বোরহানুল উলুম আহমাদিয়া ইয়াছিনিয়া ফাজিল মাদ্রাসাটি বর্তমানে ডিগ্রী মাদ্রাসার উন্নিত হয়েছে। এর পাশাপাশি এখানে প্রতিষ্ঠা করেছি সুফিয়া কাশেম বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, আবুল কাশেম ট্রাষ্ট মসজিদ, আল জামিয়াতুল কাছেমিয়া ও জামেরুন্নেছা এতিমখানা, কমিউনিটি ক্লিনিক, পোস্ট অফিস আর একটি সামাজিক কবরস্থান। এই প্রতিষ্ঠাগুলোর পরিচালনার ব্যয় মিটাতে আমার এই ড্রাগন বাগান করার উদ্যোগ।
তিনি জানান, আমার ১৮ একর জমির ৮ একর জমিতে প্রতিষ্ঠানগুলো নির্মিত হয়েছে। বাকি ১০ একর পতিত জমিতে ড্রাগন বাগান করা হয়েছে। আমার এই ড্রাগন বাগানের বয়স প্রায় দেড় বছর। এ বছর আমি প্রায় ১৩/১৪ লাখ টাকার ফল বিক্রি করতে পেরেছি। ড্রাগন ফল বিক্রির টাকা এতিমখানাসহ প্রতিষ্ঠানগুলোর পিছনে ব্যয় করা হচ্ছে। ওই টাকা আমি আমার ব্যক্তিগত কোন কাজে খাটাই না। আমার ইচ্ছে আমার সকল সম্পতি আমি ট্রাস্টের নামে দিয়ে যাবো। সম্পতির সকল আয়ে চলবে আমার প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানগুলো।
তিনি আরও জানান, আগামীতে প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে পরনির্ভরশীল না হয় সেই লক্ষেই আমার এই বাগান করার উদ্যোগ। আমার প্রতিষ্ঠিত এতিমখানায় যাতে দুই থেকে তিনশ এতিম সন্তান থাকতে পারে। তাদের আর্থিক কোন কষ্ট না হয় সেটিকেই প্রাধান্য দিয়ে আমি ড্রাগন চাষে এগিয়ে যাচ্ছি। বাগানটি করতে আমাকে দেশের অনেক জায়গাতে ঘুরতে হয়েছে। সর্বশেষ নাটোর থেকে এই ড্রাগনের চারা এনে বপন করা হয়েছে।
একতার কণ্ঠঃ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, এই বছরের বাজেটে কৃষিকে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছি। বিনামূল্যে না হলেও অনেক সহযোগিতা দিয়ে কৃষির বিভিন্ন যন্ত্রপাতি কম্বাইন হারভেস্টার আমরা দিচ্ছি। গ্রামীণ ও পল্লী বাংলাদেশের মানুষের জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন করার জন্য এই বাজেটকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (২ জুন)দুপুরে টাঙ্গাইলের মধুপুর রাণী ভবানী মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ফ্রী মেডিকেল ক্যাম্পে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, বাজেট বিষয়ে বিএনপির নেতা কর্মীরা গত ১৪ বছর যাবতই বলেন এটা উচ্চ বিলাসী বাজেট, অবাস্তব বাজেট, কল্পনা ভিত্তিক বাজেট। কল্পনা ভিত্তিক বাজেট হলে পাঁচ লাখেরও কম চার লাখ ৮৪ হাজার কোটি টাকা জাতীয় আয় ৪৪ লাখ হতো না। এটাই প্রমাণ প্রতি বছরই আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ ও আধুনিক বাংলাদেশ করার লক্ষ্য নিয়ে বাজেট দিয়েছি। সেই লক্ষ্যে অদম্য গতিতে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। বিদেশি বিভিন্ন পত্র পত্রিকা বলে অদম্য বাংলাদেশ। সেই অদম্য বাংলাদেশে অপ্রতিরোধ্য গতি। আমরা উন্নয়নের মহাসড়কে। এই গতিকে আমরা আরও বেগবান করবো। এই বাজেটের মাধ্যমে উন্নয়নকে আর গতিময় করবো।
বিরোধী দলকে উদ্দেশ্য করে কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিরোধী দল বলে উচ্চ বিলাসী, শেখ হাসিনা উচ্চ বিলাসী। বাংলাদেশের মানুষকে আরও উন্নত করতে চায়। আমরা বলছি, এই বাজেট বাস্তব সম্মত। অতিতেও আমরা সফল হয়েছি। আগামী দিনেও এই বাজেট প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে সফল হবো। আগে বাংলাদেশ চার লাখ ৮৪ কোটি টাকা ছিলো মোট আয়। সেটা বেড়ে হয়েছে ৪৪ লাখ। আগামী বছর আরও বেশি হবে। বাংলাদেশের আয় আমরা নয় গুণ বৃদ্ধি করেছি। এই বাজেট প্রণয়ন হলে এটি আরও বৃদ্ধি হবে।
কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, আওয়ামী লীগ মোটেই বিচলিত নয়, কোন স্যাংশন দিয়ে এ উন্নয়ন ব্যাহত করতে পারেব না। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে ব্যাহত করতে পারবে না। আপনারা যত ধরনের স্যাংশনই দেন তা মোকাবেলা করার মতো যোগ্যতা বাংলাদেশের আছে।
মধুপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শামীমা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন পৌর মেয়র সিদ্দিক হোসেন খান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খন্দকার শফি উদ্দিন মনি, সাবেক পৌর মেয়র মাসুদ পারভেজ প্রমুখ।
ফ্রী মেডিকেল ক্যাম্পে ১০০ জন ডাক্তার দিন ব্যাপী প্রায় ১০ সহস্রাধিক রোগীদেরকে সেবা প্রদান করবেন।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে অভ্যন্তরীণ বোরো ধান ও চাল সংগ্রহ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ মে) সকালে উপজেলা খাদ্য বিভাগের আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে খাদ্যগুদামের ফিতা কেটে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ হাছান ইমাম খান সোহেল হাজারী এম.পি।
এসময় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনছার আলী বি.কম।
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক এন.এম রফিকুল আলম, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক কোষাধ্যক্ষ ও কালিহাতী পৌরসভার কাউন্সিলর অজয় কুমার দে সরকার লিটন, কালিহাতী পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল মালেক তালুকদার, সহ-সভাপতি মিন্টু সরকার, সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন, উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম সুমন ও কালিহাতী খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরিফ রব্বানী প্রমুখ।
উপজেলা খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৩০ টাকা কেজি দরে ১ হাজার ৫৬৩ মেট্রিকটন ধান ও ৪৪ টাকা কেজি দরে ১২ হাজার ৫৮৩ মেট্রিকটন চাল ক্রয় করা হবে।
একতার কণ্ঠঃ দেশব্যাপী অসহায় কৃষকের সহায়তায় ধানকাটা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ। এরই ধারাবাহিকতায় টাঙ্গাইলে অসহায় এক কৃষকের ধান কেটে দিলেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ইসতিয়াক আহমেদ রাজিব।
সোমবার (৮ মে) দুপুরে সদর উপজেলার দাইন্যা ইউনিয়নের বাসা-খানপুরের কৃষক মো.মহর উদ্দিনের দুই বিঘা জমির ধান কেটে ঘড়ে তুলে দেন তিনি।
কৃষক মো.মহর উদ্দিন বলেন,ধান কাটার কামলার যে দাম। এ কারণে কামলা নিয়ে ধান কেটে ঘড়ে নেয়া আমার জন্য অসম্ভব হয়ে উঠেছিল। ফেসবুকে আমার ছেলের সাথে রাজিব ভাইয়ের কথা হয়। পরে আমার ছেলে বলে বাবা চিন্তা করো না। ব্যবস্থা একটা হবে। সোমবার রাজিব ভাই তার নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে আমার দুই বিঘা জমির ধান কেটে ঘড়ে তুলে দিয়েছেন। আল্লাহ্তালা যেন তার ভালো করেন।
এ বিষয়ে ইসতিয়াক আহমেদ রাজিব বলেন, ধানের বাম্পার ফলন হলেও তীব্র গরম, শ্রমিক ও আর্থিক সংকট,অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের শঙ্কায় ধান কাটা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন অনেক কৃষক।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। কৃষিই বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান চালিকা শক্তি। অসহায় কৃষকের পাশে দাঁড়াতে বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশে অসহায় কৃষকের ধান কেটে মাড়াই করে ঘরে তুলে দেওয়ার জন্য দেশব্যাপী যুবলীগের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামছ পরশ ও সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো.মাইনুল হোসেন খান নিখিল।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন সৈনিক হয়ে অসহায় কৃষকের ধান কেটে ঘরে তুলে দিতে পেরে আমি আনন্দিত।
একতার কণ্ঠঃ আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষি মন্ত্রী ড.আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেছেন,পৃথিবীর কোথাও তত্ত্বাবধায়ক সরকার নেই,ইলেকশন করবে নির্বাচন কমিশন,দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের তারা সকল দায়িত্ব পালন করবে,জননেত্রী শেখ হাসিনা শুধু প্রধানমন্ত্রী থাকবে। জাপান,শ্রীলংকা সহ বিভিন্ন দেশেও কোন তত্ত্বাবধায়ক সরকার নেই। এই সময় ক্ষমতা থাকবে না প্রধানমন্ত্রীর তবে দায়িত্ব থাকবে। আর্মি চীফ, আইজিপি সহ সকল দায়িত্ব কর্মকর্তারা নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণ থাকবে বলে মন্ত্রী মন্তব্য করেন।
রবিবার(২ এপ্রিল) দুপুরে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলা অডিটোরিয়ামে মধুপুরের গড় এলাকার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক ১৫শত জন কৃষকের মাঝে ১ লক্ষ টাকা করে ৪% স্বল্প সুদে ঋণ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, স্বাধীনতা দিবসে তারা বলছে জয় বাংলা বলবে না। বিএনপি জামাত জয় বাংলা বলবে না,আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম জয় বাংলা বলে।
তিনি আরো বলেন,আমি মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম। দেশের একটি পত্রিকা বলছে যে স্বাধীনতা দরকার নাই আমি না খেয়ে থাকি,খুব কষ্ট লাগে এসব কথা শুনলে। ১০ বছরের শিশুকে ১০ টাকা হাতে দিয়ে ছবি তোলে বলে স্বাধীনতার দরকার নেই। এখনো যারা বলে স্বাধাীনতা দরকার নাই তারা পাকিস্তানের সহচর।
কৃষি ঋণ বিতরণ অনুষ্ঠানে এবি ব্যাংকের প্রসিডেন্ট ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আফজালের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য দেন টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার,মধুপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছারোয়ার আলম খান আবু, ধনবাড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মীর হারুনির রশীদ হীরা প্রমূখ।
পরে মধুপুর গড় এলাকার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের কৃষি ফসল উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়ক হিসেবে এবি ব্যাংক স্বল্প সুদে ১ হাজার ৫’শ জন কৃষকের মাঝে কৃষি ঋণ বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।
মধুপুরে ১২’শ ও ধনবাড়ি উপজেলার ৩’শ জন কৃষকদের মাঝে এ স্বল্প সুদে এ কৃষি ঋণ বিতরণ করা হবে।
অনুষ্ঠানে এবি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারী, জনপ্রতিনিধি, কৃষক, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
একতার কণ্ঠঃ নতুন প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন কৃষি মন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি।
তিনি শুক্রবার (১৭ মার্চ) সকালে টাঙ্গাইলের মধুপুরে বঙ্গবন্ধুর ১০৩তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশুদিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির ভাষণে এ মন্তব্য করেন।
মন্ত্রী আরো বলেন, দেশের প্রতিটি শিক্ষার্থীকে বঙ্গবন্ধুর মতো দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হবে। দেশের কল্যাণে নিবেদিত থাকতে হবে। প্রতিটি মুহুর্ত সমাজের জন্য দেশের মানুষের জন্য কাজ করে যেতে হবে।
ড. রাজ্জাক আরো বলেন, বাঙালী-অবাঙালী সকলে সম্মিলিতভাবে দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করতে হবে। মুসলমান-হিন্দু- বৌদ্ধ-খৃষ্টান সকল ধর্মের মানুষের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠায় সকলকে কাজ করতে হবে। বঙ্গবন্ধু সকলকে নিয়ে দেশকে উন্নত রাষ্ট্র করার পরিকল্পনা করেছিলেন। তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার গ্রাম আমার শহর বাস্তবায়নে নিবেদিত রয়েছেন। সকলের সহযোগিতায় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়ন করতে হবে।
মধুপুর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে শিশু দিবসের আলোচনা ও পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীমা ইয়াসমিন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মধুপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছরোয়ার আলম খান আবু, মধুপুর পৌর মেয়র সিদ্দিক হোসেন খান, মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাজহারুল আমিন, ভাইস চেয়ারম্যান যষ্ঠিনা নকরেক ও শরীফ আহমেদ নাসিরসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, প্রশাসনিক কর্মকর্তাবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিজয়ী শিশুদের মাঝে পুরষ্কার বিতরণ করা হয়।
এর আগে মন্ত্রী উপজেলা পরিষদ চত্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে জন্মদিনের কেক কাটা এবং দেশ ও জাতির কল্যাণে মোনাজাতে অংশ নেন।
একতার কণ্ঠঃ কম খরচে অধিক ফলন হয় সূর্যমুখীর। তেল জাতীয় এ বীজ চাষ ভালো হওয়ায় সূর্যমুখীর হাসিতে হাসছে টাঙ্গাইলের কৃষক এবং গ্রাম-বাংলার ফসলি জমি। ভোর হলেই মিষ্টি সোনা রোদে ঝলমল করে উঠে সূর্যমুখী ফুলগুলো। দেখে মনে হয় সবুজ পাতার আড়াল থেকে মুখ উঁচু করে হাসছে সূর্যমুখী। সূর্যমুখী দেখতে কিছুটা সূর্যের মতো। সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে বলে এ ফুলের নাম সূর্যমুখী ফুল। সূর্যমুখীর বাগানে প্রায় প্রতিদিন চলে প্রজাপতি আর মৌ-মাছির মেলা। নয়ন জুড়ানো এ দৃশ্যে খুশি কৃষক, তেমনি মোহিত করছে ফুলপ্রেমী মানুষকে।
সূর্যমুখী শুধু দেখতেই সুন্দর নয়, এর রয়েছে অনেক গুণাগুণ। বাজারেও রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। কৃষি প্রণোদনার আওতায় টাঙ্গাইলে চাষ হয়েছে তেলজাতীয় ফসল এই সূর্যমুখী। আবহাওয়া অনূকুলে থাকায় গতবারের ন্যায় এবারও সূর্যমুখীর ফলন ভালো হয়েছে এ জেলায়। এতে খুশি চাষিরাও। তা ছাড়া বর্তমানে আকাঁশ ছোয়া তেলের দাম বৃদ্ধিতে ভোজ্য তেলের চাহিদাও পূরণ করবে এ হাইব্রিড জাতের সূর্যমুখী। তাই কম খরচে ভালো ফলন হওয়ায় দিন দিন সূর্যমুখী চাষে ব্যাপক আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের।
টাঙ্গাইল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে টাঙ্গাইলের ১২টি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ২৩০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আরও ১২ হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছে সূর্যমুখী। এনিয়ে জেলায় মোট ২৪২ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষ করা হয়েছে। ১২টি উপজেলার মধ্যে- টাঙ্গাইল সদরে ৪৫, বাসাইলে ৩৫, কালিহাতী ২০, ঘাটাইলে ১৫, নাগরপুরে ১৫, মির্জাপুরে ১৫, মধুপুরে ২০, ভূঞাপুরে ২০, গোপালপুরে ১২, সখীপুরে ১২, দেলদুয়ারে ১৫ ও ধনবাড়ীতে ১৫ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষ করা হয়।
গোপালপুর পৌরসভার ভূয়ারপাড়া এলাকার বয়োবৃদ্ধ নূরুল ইসলাম, তুলা মিয়া, হাসমত আলী, রাশিদা, জমিলা, রত্নাসহ অনেকেই জানান, জবরদখল হওয়া ১০ একর জমি উদ্ধার করেছে জেলা প্রশাসন। সেখানে সূর্যমুখী চাষ করা হয়েছে। আরও দখলে খাকা জমিগুলো স্থানীয় প্রভাবশালীদের জবরদখলে থাকায় উদ্ধার করতে পারেনি।
ভূঞাপুর উপজেলার গাড়াবাড়ি এলাকার চাষি মুশফিকুর রহমান বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় ১০ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছি। প্রতিদিন বিকেল বেলায় আমার জমিতে ফোটা সূর্যমুখী ফুল দেখার জন্য দূর-দূরান্ত হতে অনেক দর্শনার্থীরা দেখতে আসত। সূর্যমুখী ফুলের সঙ্গে ছবি তুলে সময় কাটান বিনোদনপ্রেমীরা। তা দেখে আমার আনন্দ লাগে। তা ছাড়া আমাকে দেখে এলাকার অনেক কৃষকরা সূর্যমুখী ফুলের চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এ বছর সূর্যমুখী চাষে ভালো সফলতা আসবে এবং অনেক লাভবান হতে পারব বলে আশা করছি।
সূর্যমুখীর মাঠে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী ও বিনোদনপ্রেমীরা ভিড় করেছেন সূর্যমুখীর মাঠে। সূর্যমুখী ফুলের সঙ্গে কেউ ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছে। স্থানীয় কৃষকরা চাষিদের সঙ্গে কথা বলে সূর্যমুখী চাষের জন্য নানা ধরনের পরামর্শ নিচ্ছেন। এ ছাড়া স্থানীয় কৃষি বিভাগ কৃষকদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করছে।
টাঙ্গাইল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক আহ্সানুল হক বাশার বলেন, চলতি মৌসুমে জেলার ২৩০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আরও ১২ হেক্টর জমি বেশি হওয়ায় জেলায় মোট ২৪২ হেক্টর জমিতে সূর্যমূখীর চাষ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ১৪ হেক্টর বেশি। প্রণোদনার আওতায় বিনামূল্যে সূর্যমুখীর বীজ ও সার দেওয়া হয়েছিল। গত বছর ৪৩৫ মেট্রিকটন সূর্যমুখীর বীজের ফলন পেলেও এ বছর ২৪২ হেক্টর জমি থেকে ৪৪২ মেট্রিকটন সূর্যমুখীর বীজের ফলন পাব বলে আশা করছি।
তিনি আরও জানান, এ বছর জেলায় সূর্যমুখী বেশিরভাগই চাষ করা হাইব্রিড জাতের এবং বাংলাদেশ গবেষণাগার থেকে বারি-১৪ সূর্যমুখীর উৎপাদন বেশি হয়। আর তেলের পরিমাণও বেশি থাকে। সব দিক বিবেচনা করে তেলের চাহিদা পূরণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী ডাক দিয়েছেন যে, আমাদের দেশীয় তেল স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে হবে। সে লক্ষে প্রধানমন্ত্রী ও কৃষিমন্ত্রীর দিক-নির্দেশনায় আমরা টাঙ্গাইলে কাজ করে যাচ্ছি এবং সরিষার পাশাপাশি স্বাস্থ্যসম্মত তেল জাতীয় সূর্যমুখীর চাষ বৃদ্ধির প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের গোপালপুরে ৭০ বছর ধরে বেদখল হওয়া ১০ একর সরকারি ভূমি উদ্ধার করেছে উপজেলা প্রশাসন। এক ইঞ্চি জমিও খালি রাখা যাবে না, প্রধানমন্ত্রীর এমন নির্দেশনা কাজে লাগিয়ে সেই ভূমিতে সূর্যমুখী চাষ করে অপার সম্ভাবনার স্বপ্ন দেখছেন উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ।
উৎপাদিত সূর্যমুখী বীজ সারা দেশে ছড়িয়ে দিয়ে সূর্যমুখী চাষের বিপ্লব শুরু করা সম্ভব বলে মনে করছেন তারা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ৭০ বছরের বিস্তীর্ণ গো-চারণ ভূমিতে সবুজের সমারোহ, বাতাসে দোল খাচ্ছে সূর্যমুখী গাছের সবুজ পাতা, দেখে বোঝাই যায় না এ ভূমি এক বছর আগেও অনাবাদি পড়ে ছিল।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ঘোষণা আসে দেশের এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদী না থাকে। ঘোষণার পর থেকেই নড়েচড়ে বসে জেলা প্রশাসন। এরই ধারাবাহিকতায় গোপালপুর উপজেলার গোপালপুর মৌজার ভুয়ার পাড়া এলাকায় ৭০ বছর ধরে বেদখল হয়ে থাকা ১০ একর সরকারি ভূমি উদ্ধার করে উপজেলা প্রশাসন।
এরআগে জমিটি স্থানীয় লোকজন বেদখল করাসহ গো-চারণ ভূমি হিসেবে ব্যবহার করত। কৃষি অধিদফতরের পরামর্শক্রমে সেই জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করা হয়েছে। এরইমধ্যে সূর্যমুখীর সবুজ পাতা বাতাসে দোল খাচ্ছে। বিস্তীর্ণ এলাকায় সবুজের সমারহ দেখে যেনো চোখ জুড়িয়ে যায়। সূর্যমুখী চাষে একদিকে যেমন দেশে তেলের চাহিদা পূরণ হবে, অপর দিকে এ সব জমিতে কাজ করে স্থানীয় অনেক কৃষকের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামীমা আক্তার জানান, আশানুরূপ ফলন পেলে আগামীতে আরও ব্যাপকভাবে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. পারভেজ মল্লিক জানান, একইঞ্চি জমিও খালি রাখা যাবে না, প্রধানমন্ত্রীর এমন ঘোষণার পর থেকেই ব্যক্তি মালিকানা অনাবাদি ভূমি মালিকদেরও বিশেষ কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। অন্যদিকে সরকারি জমিতে কৃষি বিভাগের মাধ্যমে বিভিন্ন ফল ও শাক সবজি আবাদ করা হচ্ছে। যাতে ভূমির শ্রেণী অনুযায়ী অনাবাদই জায়গাগুলো আর অনাবাদী না থাকে।
তিনি আরো জানান, চলতি বছরে ১০ একর জায়গা থেকে উৎপাদিত সূর্যমুখী বীজের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ১০ মেট্রিকটন। দেশে সরিষা আবাদে দ্বিতীয় বৃহত্তর জেলা টাঙ্গাইল, সূর্যমুখী ফলনে দেশসেরা জেলা হওয়ার লক্ষে কাজ করা হচ্ছে।