একতার কণ্ঠঃ আসন্ন পবিত্র রমজান ও ঈদুল-ফিতরে ঢাকা-টাঙ্গাইল বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে টাঙ্গাইল অংশে যানজট নিরসন ও দুর্ঘটনা রোধে সাংবাদিকদের সাথে ট্রাফিক পুলিশের এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২১ মার্চ) সকালে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা ট্রাফিক পুলিশ বক্সে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ট্রাফিক ইন্সেপেক্টর (প্রশাসন, টাঙ্গাইল উত্তর) মো. রফিকুল ইসলাম সরকার,বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ট্রাফিক ইন্সেপেক্টর হারুণ অর রশীদ, সার্জেন্ট জামিউল ইসলাম প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ট্রাফিক ইন্সেপেক্টর (প্রশাসন, টাঙ্গাইল উত্তর) মো. রফিকুল ইসলাম সরকার বলেন, পবিত্র ঈদুল ফিতরে নাড়ীর টানে বাড়ি ফেরা যাত্রীদের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে টাঙ্গাইল পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ এখন থেকেই সক্রিয় রয়েছে। এলেঙ্গা উত্তর বঙ্গের প্রবেশদ্বার হওয়ায় প্রতিবছর ঈদে ঘরমুখো মানুষের ব্যবহিত যানবাহনের প্রচন্ড চাপ থাকে। এবছর গোড়াই থেকে এলেঙ্গা বাসষ্ট্যান্ড পর্যন্ত ৬৫ কি.মি. ফোরলেনের কাজ সম্পন্ন হওয়ায় যানজট তুলনামুলকভাবে কম হবে বলে আশা করছি।
তিনি আরো বলেন, টাঙ্গাইলের মাননীয় পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সারের নির্দেশনায় টাঙ্গাইল ট্রাফিক বিভাগ ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের টাঙ্গাইল অংশে যানজট নিরসনে কাজ শুরু করেছেন। দুরপাল্লার যানবাহন যেন অযথা পুলিশের হয়রানীর শিকার না হয় সে লক্ষে কাজ করে যাচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ। যাত্রা পথে যেন দুর পাল্লার যানবাহন চাদাঁবাজির শিকার না হন সে লক্ষেও কাজ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, মহাসড়কে ধীরগতির যানবাহন (অটোরিক্সা-সিএনজি) কোনভাবেই যেন প্রবেশ করতে না পারে সে ব্যাপারে এখন থেকেই মনিটরিং করা হচ্ছে। মহাসড়কে হেলমেট বিহীন মোটরসাইকেল কোনভাবেই চলাচল করতে দেওয়া হবেনা। এ ছাড়াও তিনি মহাসড়ক পারাপারের ক্ষেত্রে স্থানীয় ফুটওভারব্রিজ ব্যবহারের জন্য পথচারিদের নির্দেশনা প্রদান করেন। ঈদের পুর্বেই এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে পথচারি পারাপারের জন্য মহাসড়কে জেব্রাক্রসিং করে দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইল জেলা সদরের আদালত চত্বর এলাকায় ভুয়া কাজির ছড়াছড়ি হওয়ায় অবাধে চলছে বাল্যবিবাহ। অধিক লাভের আশায় এসব ভুয়া কাজিদের পরোক্ষ মদদ দিচ্ছে একটি প্রভাবশালী চক্র। তাদের আশ্রয় প্রশ্রয়ে প্রকাশ্যে বাল্য বিয়ে পড়াতে সমর্থ হচ্ছে এসব কাজিরা।
টাঙ্গাইল জেলা রেজিষ্ট্রার মো. মাহফুজুর রহমান খান জানান, এ বিষয়ে লিখিতসহ একাধিক মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মহাদয়ের পরামর্শক্রমে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এই এলাকার জন্য নির্ধারিত নিবন্ধন প্রাপ্ত কাজির ডিআর বই ব্যবহার না করে অন্য এলাকার কাজির ডিআর বই নিয়ে অপ্রাপ্ত বয়স্কদের বিয়ে পড়ানো হচ্ছে হরহামেশাই। তাদের দৌরাত্ব্যে বঞ্চিত হচ্ছে অত্র এলাকার জন্য নিবন্ধন প্রাপ্ত কাজি।
এ বিষয়ে তদারকির জন্য জেলা রেজিস্ট্রারের উপর দায়িত্ব থাকলেও অজ্ঞাত কারণে জেলা রেজিস্ট্রার কার্যকরী পদক্ষেপ নেয় না বলে অভিযোগ রয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সখিপুর উপজেলার নলুয়া বাছেদ খান উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনীর এক ছাত্রীর বিয়ে পড়াচ্ছেন মো. শাহীন মিয়া নামের এক কাজি। তিনি দীর্ঘ পনের বছর যাবত কোন রকম বৈধ কাজির সনদ ও কাগজপত্র ছাড়াই কোর্ট চত্বরে বিয়ে পড়িয়ে আসছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনি টাঙ্গাইল সদর উপজেলার গালা ইউনিয়নের আব্দুল হাই কাজির ডি আর বইসহ মধুপুর, মির্জাপুর ও সখিপুরের ডিআর বই ব্যবহার করে অধিক টাকার বিনিময়ে অপ্রাপ্ত বয়স্কদের বিবাহ পড়াচ্ছেন। এসব বাল্যবিয়ে পড়িয়ে টাঙ্গাইল শহরের একটি ক্লিনিকের অংশীদারসহ কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন তিনি।
তার ছত্রছায়ায় একাধিক কাজি কোর্ট চত্বরে দেদারছে চালাচ্ছে বিবাহ রেজিস্ট্রি ও তালাক নিবন্ধন। অধিক মুনাফার আশায় আদালত চত্বরে কর্মরত বেশ কিছু আইনজীবী তাদের সেরেস্তা ব্যবহার করতে দিচ্ছেন এই সব ভুয়া কাজিদের। ফলে আইনজীবীদের সেরেস্তা ব্যবহার করেই এসব বাল্যবিবাহ পড়ানো হচ্ছে।
কোর্ট চত্বর এলাকা ব্যবহার করে অবাধে চলছে ভুয়া জন্মসনদ, নকল কাবিননামা আর জাল সিল-স্বাক্ষরে বিয়ে ও তালাক রেজিস্ট্রি।
জেলার বিভিন্ন উপজেলাসহ প্রত্যান্ত অঞ্চল থেকে আসা অপ্রাপ্ত বয়স্কদের নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে এফিডেফিট করে প্রাপ্তবয়স্ক বানিয়ে বিয়ে রেজিস্ট্রি সম্পন্ন করা হচ্ছে।
গ্রাম অঞ্চলে এক শ্রেনীর দালালদের মাধ্যমে গুঞ্জণ আছে কোর্ট চত্বরে গেলে অভিভাক ছাড়াই বিয়ে পড়ানো যায়। এর সুযোগ নিচ্ছে অপ্রাপ্ত বয়স্ক কিশোর-কিশোরী ও ঘর পালানো প্রেমিক-প্রেমিকারা।
এসব কাজি তাদের প্রয়োজনে নকল কাবিননামা, তালাকনামা ও বয়স প্রমানের এফিডেফিটের ঘোষণাও দিচ্ছেন। এতে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে যেমন আতঙ্কে রয়েছেন তেমনি পরকীয়ার বলি হচ্ছে রেমিটেন্স যোদ্ধা (প্রবাসীদের) সংসার।
অভিযোগ প্রসঙ্গে মো. শাহিন মিয়া জানান, তার কোন বৈধ কাজির কিম্বা বিবাহ পড়ানোর অনুমোদন নেই। তিনি সাব-কাজি হিসেবে কাজ করেন। অপ্রাপ্ত বয়স্কদের বিবাহ পড়ান তিনি,তবে বয়স প্রমানের কাগজপত্র জমা না দিলে কাবিনের সার্টিফাইড কপি দেন না তিনি।
তিনি আরো জানান, আমি ছাড়াও আরো অনেকেই কোর্ট চত্বরে বিয়ে পড়াচ্ছে, তারা হচ্ছে-মো. জয়নাল আবেদিন, মো. হামিদুল ইসলাম,আকরাম হোসেন ও কায়সার আহম্মেদ সহ আরো অনেকেই।
টাঙ্গাইল জেলা সদরের ১নং ওয়ার্ড ও কোর্ট চত্বর এলাকার ভারপ্রাপ্ত কাজি আব্দুল সামাদ জানান, এ বিষয়ে জেলা রেজিষ্ট্রার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি। তিনি আশা করেন, জেলা রেজিষ্ট্রার যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করিবেন।
টাঙ্গাইল জেলা রেজিষ্ট্রার মো. মাহফুজুর রহমান খান জানান, এ বিষয়ে লিখিতসহ একাধিক মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মহাদয়ের পরামর্শক্রমে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
“একতার কণ্ঠ-এক্সক্লুসিভ”