আরমান কবীরঃ টাঙ্গাইলের মধুপুরে মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও মতবিনিময় মতো কর্মসূচিতে দিনব্যাপী ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলা প্রশাসক শরিফা হক।
মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জুবায়ের হোসেনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় সহকারি কমিশনার (ভূমি) রিফাত আনজুম পিয়া, উপজেলা প্রকৌশলী মো. জয়নাল আবেদীন, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহীদুর রহমানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বিকেলে জেলা প্রশাসক শরীফা হক মধুপুর উপজেলা পরিষদ পাবলিক লাইব্রেরি উদ্বোধন করেন।
এর আগে জেলা প্রশাসক শরীফা হক মধুপুর বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ, মধুপুর শহীদ স্মৃতি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের ভবন উদ্বোধন, ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব, বিজ্ঞান ক্লাব উদ্বোধন এবং ওই দুই সংগঠনের মাসিক ম্যাগাজিন প্রকাশ এবং স্থানীয় অনলাইন গণমাধ্যম শালবনবার্তা২৪.কম কেক কেটে উদ্বোধন করেন ।
পরে উপজেলা চত্বরে একটি বকুল গাছ রোপন করেন তিনি।
আরমান কবীরঃ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, হারিয়ে যাওয়া বনভূমি উদ্ধার প্রকৃতি রক্ষায় অত্যন্ত জরুরি।
তিনি জানান, আগামী মার্চ থেকে টাঙ্গাইলের মধুপুর গড়ের শালবন পুনরুদ্ধারে সরকার মাঠে নামবে। দেশের সব বনভূমি রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। শালবন উদ্ধার কার্যক্রমে স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাজধানীর বন ভবনে “সহ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মধুপুর গড়ের শালবন পুনরুদ্ধার” বিষয়ক কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন তিনি।
পরিবেশ উপদেষ্টা জানান, বন নির্ভর জনগোষ্ঠীর প্রয়োজন অনুযায়ী একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা হবে। প্রয়োজন হলে কর্মপরিকল্পনা হালনাগাদ করা হবে। মার্চের মধ্যেই গেজেট নোটিফাই কমিটি গঠন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, বন বিভাগের কাজ হবে বিশেষজ্ঞ ও বন নির্ভর জনগোষ্ঠীকে সহযোগিতা করা। এখানে বন বিভাগ যে ১৫০ একরে বনয়ায়ন করবে। এই বন পুনরুদ্ধারে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। স্থানীয়দের অভিজ্ঞতা, জ্ঞান ও সহযোগিতা ছাড়া এই উদ্যোগ সফল হবে না।
কর্মশালায় প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী সভাপতিত্ব করেন। এতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এ জেড এম মঞ্জুর রশীদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. খালেদ মিসবাহুজ্জামান এবং খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এ কে ফজলুল হক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের মধুপুরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় পিতা-পুত্রের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে উপজেলার মহিষমারা ইউনিয়নের আশ্রা বাজার সংলগ্ন এলাকায় এ দূর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন-মধুপুর উপজেলার মহিষমারা ইউনিয়নের আশ্রা গ্রামের বিশিষ্ট কাঠ ব্যবসায়ী পিতা মজিবুর রহমান(৫৮) এবং তার বড় ছেলে জাহিদ(২৭)।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার দুপুরে ব্যবসায়িক কাজ শেষে পিতা-পুত্র দুজনে মিলে আশ্রা বাজার থেকে মোটরসাইকেল যোগে বাড়ি ফেরার পথে আশ্রা বাজারের পশ্চিম পাশে পৌঁছালে একটি অটোরিক্সাকে সাইড দিতে গেলে বিপরীত দিক থেকে আসা অপর একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই পিতা-পুত্রের মৃত্যু হয়।
মধুপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এমরানুল কবির ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের মধুপুরে বেপরোয়া গতির বিনিময় পরিবহনের বাস ও পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষের ৪ নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে টাঙ্গাইল-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের মধুপুর পৌর শহরের মালাউড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা তারা হলেন- জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামের আক্তার আলীর ছেলে রবিজল সেক (২৮), একই গ্রামের শাহাজল সেক (৪২), পিকআপ চালক একই উপজেলার হেকমত আলীর ছেলে সুজন মিয়া (২৫) ও হেলপার কাশেম আলীর ছেলে আমজাদ হোসেন (২৮)।
নিহতরা সবজি ব্যবসায়ী। তারা সকলেই গত সোমবার(১৮ নভেম্বর )দিবাগত রাতে ঢাকায় সবজি বিক্রি করে পিকআপযোগে বাড়ি ফিরছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, ধনবাড়ী থেকে ঢাকাগামী বিনিময় পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস বিপরীত দিক থেকে আসা জামালপুরগামী পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষে এই ঘটনা ঘটে। এসময় ঘটনাস্থলেই ৩ জন নিহত হন। আহত হয় একজন। পরে তাকেসহ আহতদের উদ্ধার করে মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মধুপুর থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) সত্যতা নিশ্চিত করে রাসেল আহমেদ জানান, মঙ্গলবার ভোরে মধুপুর পৌর শহরের মালাউড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ৪ জনের মৃত্যু হয়। ঘটনাস্থল থেকে দুর্ঘটনা কবলিত গাড়ি দু’টি উদ্ধার করে থানা হেফাজতে আনা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলে দুটি হত্যা ও একটি ভাঙচুর মামলায় সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের ১৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
সোমবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারকরা এ আদেশ দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পিপি শফিকুল ইসলাম রিপন।
তিনি বলেন, সোমবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে মোট তিন মামলায় তার রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
এদিকে সকাল থেকে আদালত প্রাঙ্গণে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেয়। পরে বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে রাজ্জাককে আদালতে তোলার সময়ে তার ওপর ডিম নিক্ষেপ করে শিক্ষার্থীরা। এ সময় বৈষম্যবিরোধী নানা স্লোগান দেন তারা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আল আমিন বলেন, আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা রাজ্জাকের উপযুক্ত বিচার চাই। যারা এখনো বাহিরে তাদের শিগগিরই গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।
এ সময় আদালতে প্রচুর সংখ্যক উচ্ছুক জনতার ভিড় লক্ষ্য করা যায়। সোমবার সকাল থেকেই আদালত প্রাঙ্গন ও এর আশপাশের এলাকায় বিপুল পরিমাণ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়।
একতার কণ্ঠঃ শিক্ষকতা পেশা ছেড়ে সফল কৃষকের খ্যাতি পেয়েছেন টাঙ্গাইলের মধুপুরের মো. ছানোয়ার হোসেন (৫০)।
কলা, আনারস,ভূট্টা, পেঁপে, ড্রাগন ফল ও পেয়ারাসহ বিভিন্ন ধরণের শাকসবজির পর এবার কফি চাষেও সফল হয়েছেন তিনি। গড়ে প্রতি বছর প্রায় ১ টন কফি উৎপাদন করছেন কফি চাষী ছানোয়ার।
কফিসহ কমপক্ষে ১০ ধরনের ফলের চাষাবাদ হচ্ছে তার বাগানে। নিরাপদ ফল উৎপাদনে এলাকার মানুষের কাছে আদর্শ চাষীও এখন ছানোয়ার। অনেকেই গ্রামটিতে আসছেন তার কফি বাগান দেখাসহ চাষাবাদের পরামর্শও নিতে।
শুধু আদর্শ চাষী হিসেবেই স্বীকৃতি পাননি ছানোয়ার, পেয়েছেন সফল কৃষক হিসেবে রাষ্ট্রীয় বঙ্গবন্ধু কৃষি স্বর্ণপদক।
পাশাপাশি জেলার মধুপুর গড়ের উঁচু ও লাল মাটিতে আনারস,কলা,পেঁপের মত কফি চাষের উজ্জল সম্ভাবনাও দেখিয়েছেন তিনি। যার ধারাবাহিকতায় কফি চাষকে এ অঞ্চলের কৃষিতে নতুন ফসল হিসেবে যোগ করতে কাজ শুরু করেছে কৃষি বিভাগ। সম্ভাবনা কাজে লাগাতে এরই মধ্যে কাজুবাদাম এবং কফি গবেষণা উন্নয়ণ ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় কৃষি বিভাগও কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেয়াসহ কফির চারা বিতরণ ও উৎপাদন বৃদ্ধিতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছেন মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাকুরা নাম্নী।
মো. ছানোয়ার হোসেন টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার মহিষমারা গ্রামের জামাল হোসেনের ছেলে। ১৯৮৮ সালে মধুপুরের চাপড়ি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস.এস.সি, ১৯৯০ সালে কালিহাতী কলেজ থেকে এইচ.এস.সি আর ১৯৯২ সালে মধুপুর কলেজ থেকে ডিগ্রী সম্পন্ন করেন মো. ছানোয়ার হোসেন। পরবর্তীতে ১৯৯৩-৯৮ সাল পর্যন্ত সিলেটের রেঙ্গাহাজীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে ইংরেজী শিক্ষক আর পরবর্তী দুই বছর জেলার ঘাটাইলের গারোবাজার সুনামগঞ্জ পাবলিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক এর দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এরপরই শিক্ষকতা পেশা ছেড়ে এসে গ্রামে শুরু করেন চাষাবাদ।
দেবদারু চারার মত অনেকটাই দেখতে কফির চারা। কফির পাকা গুটিগুলো দেখতে টক টকে লাল ও কোন কোনটা কাঁচা হলুদের মতো। কাঁচাগুলো সবুজ। মার্চ থেকে এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে প্রতিটি পরিপক্ক গাছে ফুল ধরা শুরু হয়। কফির পাশাপাশি ২৮০টি ড্রাগন পিলার, ১৯টি সৌদি খেজুর, ৫’শ পেঁপে, এক হাজার মাল্টা, ৫’শ লেবু, আনারস, ঔষধি, কলা, জাম্বুরা গাছে ভরপুর কৃষক ছানোয়ার হোসেনের বাগান। বর্তমানে প্রায় ১৫ একর জমিতে চলছে তার এই চাষাবাদ।
জানা যায়, মে থেকে জুন মাসের মধ্যে ফুল থেকে গুটিতে পরিণত হয়। আগষ্ট মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে গুটিগুলো পরিপক্ক হয়। লালচে হয়ে যাওয়া কফির ফল গাছ থেকে সংগ্রহ করে প্রথমে পরিষ্কার পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিতে হয়। এরপর লম্বা সময় পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হয়। একটু নরম হওয়ার পর কফির ওপরের চামড়া ছাড়িয়ে নিতে হয়। পরে গুটিগুলো রৌদে শুকিয়ে নিতে হয়। বাজারজাত ও কফিপান করার উপযোগী করতে মেশিনের মাধ্যমে গুড়া পাউডারের মতো করে নিতে হয়। আবার কফির বীজ থেকে চারা উৎপাদনও করা যায়।
আরও জানা যায়, ফলন ভাল ও আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে হেক্টর প্রতি ৭৫০ থেকে ১০০০ কেজি এবং বছরে গাছ প্রতি ৫ কেজি কফি পাওয়া সম্ভব। এছাড়াও ফলন দেওয়া শুরু হলে গাছগুলো থেকে একটানা ২০ থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত কফি পাওয়া যায়।
মধুপুর উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, কাজুবাদাম এবং কফি গবেষণা উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় এ পর্যন্ত মধুপুরের ১২০ জন কৃষক ৩৫ হেক্টর জমিতে কফি চাষ শুরু করেছে। চাষাবাদ বৃদ্ধিতে ২০২১-২২ অর্থ বছরে কফি গবেষণা উন্নয়ণ ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেয়াসহ প্রথম পর্যায়ে ৫৩ জন কৃষকের মধ্যে সাড়ে ৭ হাজার কফির চারা বিতরণ করা হয়েছে। সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৭ টি প্রদর্শনী বাস্তবায়ন করাসহ জনপ্রতি ১৩৫ টি করে মোট ৯৪৫ টি কফি চারা দেয়া হয়। কৃষিবিভাগ থেকে এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৮ হাজার কফির চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিশ্বে ৬০ প্রজাতির কফি থাকলেও এ এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে অ্যারাবিকা ও রোবাস্টা জাতের কফি চাষ শুরু হয়েছে। চাষ উপযোগী আবহাওয়া ও জলবায়ু অনুকুল থাকায় মধুপুর পাহাড়ী এলাকায় উন্নতমানের এবং ঘ্রাণের কফি চাষের বিশেষ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। রোবাস্টা জাতের কফি চাষে বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চল ও টাঙ্গাইলের মধুপুর গড়ের আবহাওয়া আর মাটি যথেষ্ট উপযোগী বলেও জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।
কফি চাষী ছানোয়ার হোসেন জানান, ২০১৭ সালে রাঙ্গামাটি জেলার রায়খালী থেকে ২’শ চারা সংগ্রহ করে এ উপজেলায় প্রথম আমি কফি চাষ শুরু করি। চাষ শুরুর দুই বছর পর থেকেই আমি কফি বিক্রি করতে পারছি। বর্তমানে আমার প্রায় ৫০ শতাংশ জমিতে কফির আবাদ রয়েছে। আমার বাগানে অ্যারাবিক ও রোবাস্টা জাতের কফি গাছ আছে। প্রতি বছর আমি গড়ে প্রায় ১ টন কফি বিক্রি করতে পারছি। এছাড়াও কফির বীজ থেকে চারাও তৈরি করছি।
তিনি আরও জানান,বর্তমানে আমার বাগানের ৫’শ কফি গাছে ফলন হচ্ছে। গত সাত বছরে কফি বাগান বাবদ আমার ৩ লাখ টাকার মত খরচ হয়েছে। তবে এরই মধ্যে আমি প্রায় দ্বিগুণ টাকা আয় করতে পেরেছি। এভাবে টানা ২০ বছর আয় হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ছানোয়ার জানান, প্রসাধনী কোম্পানির মাধ্যমে আমি প্রতি কেজি উৎপাদিত গ্রীণ কফি দুই হাজার টাকা মূল্যে বিক্রি করছি। উৎপাদিত কফির মধ্যে ১৮ প্রকারের স্বাদ ও গন্ধ আছে। বাজারজাত ও কফিপান করার উপযোগী করতে মেশিনের মাধ্যমে কফিবীজ গুঁড়া করে নিতে হয়। কফি প্রক্রিয়াজাত করার কাজটিই কঠিন। এ কারণে আমি কফি প্রক্রিয়াজাত করার মেশিন কিনেছি। কফিকে একটি বড় শিল্পে পরিনত করাই এখন আমার স্বপ্ন।
মধুপুরসহ দেশের কয়েকস্থানে শখের বশে ও বাণিজ্যিকভাবে কফির সফল চাষাবাদ হচ্ছে। দেশের মাটিতে কফি চাষের বিরাট সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। কৃষকের আগ্রহ কাজে লাগিয়ে কফি চাষের বিপ্লব ঘটানো সম্ভব বলে মনে করেন ছানোয়ার।
মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাকুরা নাম্নী বলেন, এ উপজেলায় অ্যারাবিক ও রোবাস্টা জাতের কফি চাষ হচ্ছে। কৃষক ছানোয়ার হোসেন এ উপজেলায় ২০১৭ সাল থেকে কফি চাষ শুরু করলেও কাজু বাদাম এবং কফি গবেষণা উন্নয়ণ ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেয়াসহ কফির চারা বিতরণ করেছে কৃষি বিভাগ।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে এ উপজেলা কফি চাষের কৃষক সংখ্যা ১২০জন আর আবাদ হচ্ছে ৩৫ হেক্টর জমিতে। এ উপজেলার কৃষক ছানোয়ার হোসেন ব্যক্তি উদ্যোগে কফি বিক্রি করলেও বাণিজ্যিক ভাবে প্রক্রিয়াজাতকরণ শুরু হয়নি।
তিনি বলেন, সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ৭জন কৃষকের ৭ টি প্রদর্শনী বাস্তবায়ন করাসহ জনপ্রতি ১৩৫ টি করে মোট ৯৪৫ টি কফি চারা দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. কবির হোসেন জানান, মধুপুরের মাটির উর্বরতা শক্তি কফি চাষের উপযোগী। এ এলাকায় সহজে বন্যার পানি ওঠে না, তেমন খরাও হয় না। বৃষ্টিপাত ও মাটির গঠন বিন্যাস মিলে গড় এলাকার লাল মাটিতে কফি চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে।
কফিকে উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কাজু বাদাম ও কফি গবেষণা উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেয়াসহ কফির চারা বিতরণ করা হচ্ছে বলে জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।
একতার কণ্ঠঃ পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ আনারস শুধু ফল হিসেবে নয়, এটির পাতারও ব্যবহার হয় নানান কাজে। অতীতে আনারস ফল তোলার পর পাতা ফেলে রাখা হতো অথবা গরুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার হতো।
কিন্তু বর্তমানে এর পাতা দিয়ে তৈরি হচ্ছে নানান শৌখিন পণ্য। সেই সঙ্গে মিলছে অর্থকড়িও। ক্রমে এর উৎপাদন এবং ব্যবহারেরও প্রসার ঘটছে।
আনারস উৎপাদনে প্রসিদ্ধ টাঙ্গাইলের মধুপুর গড়। এখানকার নারীরা প্রথমে ব্যক্তি উদ্যোগে ঘর-গৃহস্থালির কাজে লাগে এমন কিছু শৌখিন জিনিসপত্র বানালেও পাতা থেকে সুতা উৎপাদনে হাত দেয় ‘মেনোনাইট সেন্ট্রাল কমিটি বাংলাদেশ’ নামের একটি বিদেশি সংস্থা। সেটি তাও ২০০৮ সালের কথা। এ সংস্থার প্রকল্পটি ছিল উপজেলার জলছত্র বাজারে। ২০১৭ সালে এসে বনাঞ্চলের জাঙ্গালিয়া গ্রামে ব্যুরো বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করে একটি হস্তশিল্পের কারখানা। এখানে শতাধিক নারী-পুরুষের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি আনারসচাষিদের ফেলে দেওয়া পাতারও সদগতি হয়েছে। বিনিময়ে তারা আর্থিকভাবেও লাভবান হচ্ছে।
ফাইবার এক্সট্রাকশন মেশিনের মাধ্যমে আনারস পাতা থেকে আঁশ বের করা হয়। তারপর ভাঙা প্লেট ও নারিকেলের খোল দিয়ে ঘষে পাতা থেকে আঁশ বের করে পানিতে ধুয়ে নেওয়া হয়। এরপর সেগুলো রোদে শুকাতে দেওয়া হয়। এক কিলোগ্রাম পাতা থেকে ৬০ সেন্টিমিটার লম্বা শক্ত সুতা পাওয়া যায়। আঁশ বের করার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ৩০ জন মানুষের সাহায্য লাগে। ১০০০ কেজি পাতা থেকে ১০০-১৫০ কেজি আঁশ পাওয়া যায়। এ সুতার বিভিন্নমুখী ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বিশেষ করে সুতাগুলো হাতে রশি পাকিয়ে হস্তশিল্প ও গৃহসজ্জার নানান রকম জিনিসপত্র বানানো যায়। এ ছাড়া সুতা থেকে উন্নতমানের কাপড়ও বানানো যায়। আশার বিষয়, আনারস পাতা থেকে উৎপাদিত সুতা দিয়ে উন্নতমানের লেদার বানানোর কাজে এটি দেশের বাইরে রপ্তানি করা হচ্ছে।
আবার যেসব পাতা থেকে সুতা তৈরি করা যায় না, সেগুলো থেকে জুয়েলারি বক্স, টেবিল ম্যাট, ফ্লোর ম্যাট, ফ্লাওয়ার বক্স, ওয়াল হ্যাঙ্গিং, চাবির রিংসহ নানান পণ্য বানানো হয়। আকর্ষণীয় এসব পণ্য যাচ্ছে চীনসহ উন্নত দেশগুলোতে। এখানে কাজ করে অনেক নারীই হয়ে উঠছেন স্বাবলম্বী। আগে যেসব নারী বনে ও আনারসের জমিতে কাজ করে যে টাকা পেত, তার চেয়ে বেশি টাকা পাচ্ছেন এ হস্তশিল্পের কাজ করে। ফলে সংসারের অভাব মিটিয়ে তারা এখন অনেকটা সচ্ছল জীবনযাপন করছেন। কথা হয় উপজেলার বেরীবাইদ গ্রামের ফিরোজ মিয়ার সঙ্গে। তিনি এখানে প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ করছেন। এ শ্রমিক জানান, আনারসের পাতা থেকে এত সুন্দর পণ্য তৈরি হতে পারে তা আগে জানতাম না। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সব জানতে পেরেছি। তার মতো আরও অনেক শ্রমিক এখানে কাজ করছেন। তারা আনারস চাষের পাশাপাশি বাড়তি উপার্জন করতে পার্টটাইম কাজ করছেন।
আনারসচাষী রাজ্জাক মিয়া বলেন, একটি পরিপূর্ণ আনারস গাছে ৩৬টি পাতা হয়। একটি গাছে একবারই ফল ধরে। ওই গাছের গোড়ায় নতুন গাছ জন্মায়। আনারস কাটার পর ওই গাছের অন্তত ১৫-২০টি পাতা কেটে ফেলা হয়। আর নতুন গাছ হওয়ার পর সব পাতাই কাটা যায়। এই পাতাগুলো নিচে পড়ে নষ্ট হয়। মাটিতেই পচে মিশে যায়। কেউ কেউ গবাদিপশুর জন্যও নিয়ে যান। কিন্তু কয়েক বছর ধরে আমরা বিক্রি করছি। আনারস বেচার টাকার পাশাপাশি বাড়তি টাকা পাচ্ছি পাতা বিক্রি করে।
ব্যুরো বাংলাদেশের হস্তশিল্পের কারখানার এজিএম আমীর হামজা বলেন, নারীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে বিভিন্ন শৌখিন জিনিসপত্র তৈরি করা হচ্ছে। এতে তারা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। আগে যারা বন, আনারস বাগানে কাজ করতেন সেসব নারী আমাদের এখানে কাজ করছেন। এখানে ৭০ শ্রমিক নারী-পুরুষ কাজ করছেন। এর মধ্যে অধিকাংশ নারী আছে। যারা সুধিবাবঞ্চিত নারী, স্বামী পরিত্যক্তা নারীরাই এখানে বেশি কাজ করেন। এখানে প্রায় চারশ শ্রমিককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এখানে মজুদ আছে অনেক পণ্য সে কারণে এখন আমরা উৎপাদন আপাতত কমিয়ে দিয়েছি। তবে আমরা একটি কম্পমেস কারখানা তৈরির প্রকল্প হাতে নিয়েছি।’ এ উপজেলায় বিভিন্ন স্থানের বাগানগুলো যদি সরকারের পক্ষে আমাদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করে তাহলে উৎপাদিত পণ্য গ্রাহকদের কাছে সরবরাহ করা যেত বলে জানান এ কর্মকর্তা। স্থানীয় শ্রমিক শ্রেণির মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের প্রশিক্ষণের সময় দুই থেকে তিন মাস সময় লাগায় তারা তেমনটি আগ্রহ প্রকাশ করে না এ কাজে। এজন্য শ্রমিকদের শিক্ষানবিশকালীন তাদের ভাতা বা প্রণোদনার ব্যবস্থা থাকলে তারা আগ্রহী হয়ে উঠবে এ পেশায়।
নারী উদ্যোক্তা ও ব্যুরো ক্রাফটের পরিচালক রাহেলা জাকির বলেন, ‘এ উপজেলায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বসবাস বেশি। অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া এই মানুষদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে মধুপুরে এ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।’ এ উদ্যোক্তা আরও জানান, চীনের একটি মেলায় তারা অংশগ্রহণ করে এসব পণ্যের বেশ সাড়া পেয়েছেন। এ ছাড়া আরও অনেক দেশই হস্তশিল্পের এ পণ্যের প্রতি আগ্রহের কথা জানিয়েছে। আনারসের কিছু পাতা আছে যেগুলো দিয়ে আঁশ বানানো সম্ভব হয় না সেগুলো দিয়ে আমরা টিস্যু পেপার তৈরি করছি। অর্থাৎ আনারসের কোনো জিনিসই আর ফেলনা নয়। তাদের ওয়ান টাইম প্লেট ও গ্লাস তৈরির পরিকল্পনা চলছে। পরিত্যক্ত প্রাকৃতিক কাঁচামাল দিয়ে তৈরি পরিবেশবান্ধব এসব পণ্যের দেশের বাইরে চাহিদা রয়েছে বলে জানান তিনি।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নাজমুল হাসান (২০) নামে এক কলেজ ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে।
রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার লক্ষিন্দর ইউনিয়নের মুরাইদ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত নাজমুল হাসান উপজেলার লক্ষিন্দর ইউনিয়নের মুরাইদ গ্রামের গোলাম মোস্তফা ফকিরের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, রবিবার সন্ধ্যায় নিজ বাড়ির পাশে ডিজিটাল স্কেল মেশিনের ঘরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে আহত হন নাজমুল। পরবর্তীতে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় গারোবাজার নিউ পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাম (ইসিজি) পরিক্ষার মাধ্যমে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে।
নিহত নাজমুলের বন্ধু আল আমিন জানান, মধুপুর শহীদ স্মৃতি স্কুল থেকে ২০২১ সালে এসএসসি পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হয় সে। পরে বিএফ শাহীন কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে অনার্সে এডমিশন নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো নাজমুল। এমতাবস্থায় তার বন্ধুর মৃত্যুর খবর শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. নাজমুল ইসলাম জামাল মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সন্ধ্যার পরে ওদের নিজস্ব ডিজিটাল স্কেল মেশিনের ঘরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নিহত হন নাজমুল। নাজমুলের অকাল মৃত্যুতে তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন তিনি।
ঘাটাইল থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মো. রকিবুল ইসলাম জানান, এ ব্যাপারে নিহতের পরিবারের সদস্যরা থানায় কোনো অভিযোগ দেয়নি।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের মধুপুরে বাস ও সিএনজি সংঘর্ষে আনোয়ার হোসেন (৬৫) নামে এক বৃদ্ধ নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৪ জন।
সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুরে টাঙ্গাইল-জামালপুর মহাসড়কের মধুপুর উপজেলার গোলাবাড়ী এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত আনোয়ার হোসেন মির্জাপুর উপজেলার ঘৌহাতলী গ্রামের হাজী শুকুর মিয়ার ছেলে।
আহতরা হলেন- নিহতের স্ত্রী শাহনাজ বেগম (৫৫), নিহত আনোয়ারের ভাইয়ের বউ সেলিনা (৩৩), ভাইয়ের ছেলে সিফাত (৫), জামুরিয়া গ্রামের আজগর আলীর ছেলে আবুল কালাম (৩৫)। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, শেরপুর থেকে মধুপুরের দিকে যাচ্ছিল যাত্রীবাহী একটি সিএনজি। অপরদিকে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা মহাখালী ট্রাভেলসের একটি বাস ধনবাড়ীর দিকে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে গোলাবাড়ি এলাকায় পৌঁছালে বাস ও সিএনজির সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে একজনের মৃত্যু হয়। আহতদের উদ্ধার করে মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। পরে এ ঘটনায় টাঙ্গাইল ও ধনবাড়ী মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে স্থানীয়রা। এ সময় পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
মধুপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোল্লা আজিজুর রহমান বলেন, নিহতের মরদেহ আইনি প্রক্রিয়া শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাসটি মহাসড়কের ভাইঘাট এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় বাসের সুপারভাইজার ও এক নারী নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার (৩ জুলাই) সকালে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের উপজেলার গােড়াই শিল্প অঞ্চলের মিলগেইট এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
মির্জাপুরের গােড়াই হাইওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনিসুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন, নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার রামডাঙা গ্রামের মৃত দুলাল হাসেনের স্ত্রী ফরিনা বেগম (৫৫) ও বাসের সুপারভাইজার একই জেলার বাবুরহাট গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে মুগনী (৩৫)।
পুলিশ জানান, নীলফামারী থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা অনিতা পরিবহনের একটি বাস বুধবার সকালে মহাসড়কের গােড়াই মিলগেইট এলাকায় পৌঁছালে সেখানে পল্লীবিদ্যুতের খুঁটি বােঝাই পূর্ব থেকেই থেমে থাকা একটি ট্রাকের সাথে থাক্কা লাগে।
এতে বাসের সামনের গ্লাস ভেঙে পল্লীবিদ্যুতের খুঁটি বাসের ভিতর ঢুকে গেলে ওই দুই জন ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। এ ঘটনায় আরও দুই যাত্রী আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মির্জাপুরের গােড়াই হাইওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনিসুজ্জামান জানান, বাস ও ট্রাকটি আটক করা হয়েছে। আইনী প্রক্রিয়া শেষে নিহতের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের মধুপুরে প্রাইভেটকার ও মাহিন্দ্রার মুখোমুখি সংঘর্ষে দুজন নিহত ও আটজন গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (২১ জুন) সকালে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কের মধুপুর পৌর এলাকার মালাউড়িতে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মধুপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোল্লা আজিজুর রহমান।
এই দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই মারা যান কামরুল ইসলাম। তাঁর বাড়ি গাজীপুরের শ্রীপুর থানার জয়নাবাজার এলাকায়। তিনি ওই এলাকার একটি ভাতের হোটেলের কর্মচারী। অপরজন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা গেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও মধুপুর থানা সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মধুপুর পৌরশহরের মালাউড়ি এলাকায় পৌঁছালে টাঙ্গাইলগামী প্রাইভেটকারের সঙ্গে মধুপুরগামী যাত্রীবাহী মাহিন্দ্রার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। উভয় যান দ্রুতগতিতে থাকায় মাহিন্দ্রা ভেঙে লন্ডভন্ড হয়ে যায়। প্রাইভেটকার সড়কের কয়েক গজ দূরে গিয়ে থমকে দাঁড়ায়। মাহিন্দ্রার যাত্রীরা ছিটকে সড়কে পড়েন।
স্থানীয় বাসিন্দা মিলন হোসেন বলেন, ‘বিকট শব্দ শুনে আমরা এগিয়ে এসে আহতদের উদ্ধার করে মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠাই। অপরদিকে প্রাইভেটকারের চালক দ্রুত পালিয়ে গেলেও ভেতরে আটকা পড়া এক যাত্রিকে কাচ ভেঙে উদ্ধার করা হয়।’
প্রাইভেটকার থেকে উদ্ধার করা যাত্রীর নাম চিকিৎসক আদনান আহসান চৌধুরী। তাঁকে বের করার পরপরই প্রাইভেটকারটিতে আগুন ধরে যায়। এ সময় মধুপুর থানা-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা এসে উদ্ধার তৎপরতা চালান বলে জানান মিলন হোসেন।
মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সাজ্জাদ হোসেন মানিক জানান, হাসপাতালে আনার আগেই একজনের মৃত্যু হয়েছে। ৯ জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
দুর্ঘটনায় আহতরা হলেন, নেত্রকোনার ইমাম হোসেনের ছেলে আব্দুল হাশেম (৫৫), নেত্রকোনার বারহাট্টা এলাকার সুমন খানের ছেলে আব্দুল কদ্দুস, ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার আহাম্মদ আলীর ছেলে সাইফুল ইসলাম (৩৫), মাহিন্দ্রা চালক মধুপুর উপজেলার লুচিয়া নগরবাড়ী এলাকার আরফান আলীর ছেলে মো. জালাল হোসেন (৩০), ধনবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার আদনান আহসান চৌধুরী, গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার জয়নাতলী গ্রামের শহর আলীর ছেলে রুবেল মিয়া (৪০), একই উপজেলার নগর হাওলা গ্রামের রইজ উদ্দিনের ছেলে মঞ্জুরুল ইসলাম (৪০) ও জয়নাবাজার এলাকার মইন উদ্দিনের ছেলে মো. সেলিম মিয়া।
এ প্রসঙ্গে মধুপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোল্লা আজিজুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযানে অংশ নেই। আহতদের মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থলে একজন ও ময়মনসিংহে নেওয়ার পথে আরেকজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের আইনি প্রক্রিয়া শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
একতার কণ্ঠঃ বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর বলেছেন, দেশে এখন চালের পুষ্টি ও গুণগত মানের কথা চিন্তা করে ধানের নতুন নতুন জাত উদ্ভাবন করা হচ্ছে। স্বল্প জীবন কালের উচ্চ ফলনশীল জাত নিয়ে গবেষণা করে যাচ্ছে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট। খরা সহিষ্ণু জাত, লবানাক্ততাসহ বিভিন্ন সহনশীল জাত উদ্ভাবন করা হচ্ছে। যে কারণে ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
অল্প সময়ে একই জমিতে বছরে অধিক ফসল উৎপাদন করে কিভাবে কৃষকরা লাভবান হবে, সে কথা চিন্তা করে ধানের জাত নিয়ে গবেষণা করছি। এখন চালের পুষ্টি, জিংক সমৃদ্ধ চাল উৎপাদনে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। বঙ্গবন্ধু ব্রি-১০০,১০৪ ও ১০৫ জাতের ধানের কথা উল্লেখ করে বলেন, এ ধানের পুষ্টিমান বেশি, উৎপাদন বেশি। এ ধানের চাল ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও উপকারী।
এ সব জাতের ধান উৎপাদনের মধ্যে দেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি পুষ্টির চাহিদাও পূরণ হবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) দুপুরে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ির মুশুদ্দি গ্রামে সরিষা অন্তভুক্তির মাধ্যমে দুই ফসলী শস্য বিন্যাসকে তিন ফসলী বিন্যাসে উন্নয়ন প্রদর্শনীর বঙ্গবন্ধু ধান ব্রি- ১০০ ব্রি-ধান ১০৪ ও ১০৫ জাতের ধানের মাঠ দিবস ও মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ধনবাড়ির মুশুদ্দি গ্রামে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় বাংলাদেশ ধান গবেষনা ইনস্টিটিউটের রাইস ফার্মিং সিস্টেমস বিভাগ এ মাঠ দিবস ও মতবিনিময় সভা বাস্তবায়নে গাজীপুরের ব্রি আরএফএসর বিভাগের সিএসও ড. মো. ইব্রাহীম এর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. কবির হোসেন, ধনবাড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান, ধনবাড়ী প্রেসক্লাবের সভাপতি আনছার আলী, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফরিদ হোসেন প্রমুখ।
এ সময় কৃষক-কৃষাণী কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারী ও বিভিন্ন গণমাধ্যমের সংবাদকর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।
পরে মুশুদ্দি গ্রামের বটতলায় সরিষা অন্তভুক্তির মাধ্যমে দুই ফসলী শস্য বিন্যাসকে তিন ফসলী বিন্যাসে উন্নয়ন প্রদর্শনীর বঙ্গবন্ধু ধান ব্রি- ১০০ ব্রি-ধান ১০৪ ও ১০৫ জাতের মাঠ দিবসে ধান কর্তন করা হয়। পরে বিভিন্ন প্রদর্শণী পরিদর্শন করেন তিনি।
এর আগে সকালে মধুপুরে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট গাজীপুরের বোরো ২০২৪ মৌসুমে স্থাপিত এসপিডিপি প্লটে চাষকৃত ব্রির ধান ১০২ জাতের ফসল কর্তণ ও মাঠ দিবস করেছে ফলিত গবেষনা বিভাগ ব্রি গাজীপুর।
মধুপুর কৃষি সম্প্রসারণের সহযোগিতায় মাঠ দিবসে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ব্রি ফলিত গবেষনা বিভাগের উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. হুমায়ুন কবির। মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাকুরা নান্মির সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তাজবি নুর রাত্রি, মধুপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি হাবিবুর রহমানসহ কৃষকরা এসময় বক্তব্য রাখেন। এসময় মাঠ দিবসে কৃষক কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারি উপস্থিত ছিলেন।