একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলায় কাশিল ইউনিয়নের নাকাসিম এলাকায় ১০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের সরকারি অনুমোদি মিলেছে।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে বুধবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে দুইটি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়।
এর মধ্যে টাঙ্গাইলের বাসাইলে একটি ও কক্সবাজার সদরে একটি।এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র দুটির ট্যারিফ অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান বৈঠক শেষে বুধবার দুপুরে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
সাঈদ মাহবুব খান জানান, টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ পেয়েছে যৌথভাবে রিনিউবেল এনার্জি ইউকে লিমিটেড, বাদল কনস্ট্রাকশন ও জি-টেক সলিউশন লিমিটেড কনসোর্টিয়াম। প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা ১০ টাকা ৯৯ পয়সা হিসাবে সরকার তাদের আনুমানিক ৩ হাজার ৫৬১ কোটি ৬০ লাখ টাকা পরিশোধ করবে।
তিনি আরো জানান,কক্সবাজার সদর উপজেলায় সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজ পেয়েছে যৌথভাবে কেএআই বাংলাদেশ অ্যালুমিনিয়াম লিমিটেড ও অলটেক অ্যালুমিনিয়াম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কনসোর্টিয়াম। প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা ১০ টাকা ৯৮ পয়সা হিসাবে তাদের সরকার পরিশোধ করবে ৩ হাজার ৫৫৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
এ প্রসঙ্গে কাশিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ রমজান মিয়া বলেন, কাশিল ইউনিয়নের নাকাসিম গ্রামের সায়ের মৌজার এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অনুমোদন আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে স্থানীয় বেশ কিছু লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এ ছাড়াও উপজেলার লোকজনের বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণ ভুমিকা রাখবে বলে আমি আশাবাদী।
বাদল কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকার মোঃ বাদল মিয়া জানান, ইতিমধ্যে প্রকল্পটি সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ট্যারিফ অনুমোদন দিয়েছে। বিশ্বব্যাপি পরিবেশ রক্ষায় সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে জোর দেয়া হচ্ছে। উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও জ্বালানি আমদানি কমাতে সরকারও এখাতে জোর দিয়েছে। যার গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হলো বাদল কনস্ট্রাকশনের।এটা অত্যন্ত আনন্দের বিষয়।
তিনি আরও জানান,তবে এখনও অনুমোদনের লিখিত কাগজ হাতে পাইনি। কাগজ হাতে পেলে বিস্তারিত বলবো। তবে এটা বলতে পারি, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে, কাশিল তথা বাসাইল উপজেলায় অনেক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
একতার কণ্ঠঃ আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য প্রার্থী হয়েছেন টাঙ্গাইলের আলোচিত সিদ্দিকী পরিবারের সহোদর ৩ ভাই। জেলার চারটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তারা। নির্বাচনে অংশ নেয়া আসন গুলোর মধ্যে রয়েছে টাঙ্গাইল-৩,৪,৫ ও ৮।
সিদ্দিকী পরিবারের প্রার্থীরা হলেন, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের বহিষ্কৃত প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম আর ছোট ভাই সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মুরাদ সিদ্দিকী।
এর মধ্যে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী টাঙ্গাইল-৮ ও ৩ দুটি আসন, মুরাদ সিদ্দিকী টাঙ্গাইল-৪ ও ৫ দুটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এছাড়া টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) একটি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী।
তবে টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর প্রতিদ্বন্দ্বি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী মোজহারুল ইসলাম তালুকদার ঠান্ডু ছাড়াও সহোদর ছোট ভাই স্বতন্ত্র প্রার্থী মুরাদ সিদ্দিকী, স্বাধীনতার ইস্তেহার পাঠক ও বিএনপি’র সাবেক মন্ত্রী শাহজাহান সিরাজের মেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার সারওয়াত সিরাজ ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার মো. লিয়াকত আলী।
বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) সিদ্দিকী পরিবারের সহোদর এই ৩ ভাই স্ব স্ব আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
সিদ্দিকী পরিবারের ৩ সহোদর ভাইয়ের নির্বাচনে অংশ নেওয়া আসন গুলোর মধ্যে টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনে কৃষক শ্রমিক জনতালীগ প্রার্থী বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর প্রতিদ্বন্দ্বি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান, আওয়ামীলীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আমানুর রহমান খান রানা। অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বির মধ্যে রয়েছেন- আজিজ খান (জাকের পার্টি) আব্দুল হালিম (জাতীয় পার্টি), মো. হাসান আল মামুন সোহাগ (এনপিপি), চৌধুরী হাবিবুর রহমান (স্বতন্ত্র) ,মো. জাকির হোসেন (বিএনএম), ফরিদা রহমান খান (স্বতন্ত্র), মো. সাখাওয়াত খান সৈকত (বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল)।
টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর প্রতিদ্বন্দ্বি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী মোজহারুল ইসলাম তালুকদার ঠান্ডু ছাড়াও সহোদর ছোট ভাই স্বতন্ত্র প্রার্থী মুরাদ সিদ্দিকী, স্বাধীনতার ইস্তেহার পাঠক ও বিএনপির সাবেক মন্ত্রী শাহজাহান সিরাজের মেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার সারওয়াত সিরাজ আর জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার মো. লিয়াকত আলী।
অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বিরা হলেন- মোন্তাজ আলী (জাকের পার্টি), শহিদুল ইসলাম (তৃণমূল বিএনপি),এস এম আবু মোস্তফা (জাসদ), মো.শুকুর মাহমুদ (বিএসপি), সাদেক সিদ্দিকী (জাতীয় পার্টি জেপি)।
টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মুরাদ সিদ্দিকীর প্রতিদ্বন্দ্বি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট মো. মামুনুর রশিদ, বর্তমান সংসদ সদস্য আলহাজ্ব ছানোয়ার হোসেন, টাঙ্গাইল পৌরসভার তিনবারের নির্বাচিত সাবেক মেয়র জামিলুর রহমান মিরণ, কেন্দ্রীয় বিএনপি থেকে সদ্য বহিষ্কৃত স্বতন্ত্র প্রার্থী খন্দকার আহসান হাবিব, জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. মোজাম্মেল হক।
এই আসনে অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বিরা হলেন- বাংলাদেশ আওয়ামী মহিলালীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক স্বতন্ত্র প্রার্থী মেহেরনিগার হোসেন তন্ময়, মো. তৌহিদুর রহমান চাকলাদার( বিএনএম), মো.দুলাল মিয়া (জাকের পাার্টি), হাসরত খান ভাসানী (ন্যাপ ভাসানী) ও মো.শরীফুজ্জামান খান (তৃনমুল বিএনপি)।
টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনে কৃষক শ্রমিক জনতালীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম এর প্রতিদ্বন্দ্বি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী অনুপম শাহজাহান জয়।
অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বিরা হলেন- মো. আবুল হাসেম (বাংলাদেশ বিকল্পধারা), আ.জলিল (জাকের পার্টি), শাম্বুল (তৃনমুল বিএনপি) আর রেজাউল করিম (জাতীয় পার্টি)।
আওয়ামী রাজনীতির এক সময়ের জেলার পরিচয়বহণ করা সিদ্দিকী পরিবারের বড় ছেলে ও বাংলাদেশ আওয়াশীলীগের বহিষ্কৃত প্রেসিডিয়াম মেম্বার আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসন থেকে একাধিকবার এমপি নির্বাচিত হয়ে মন্ত্রী হয়েছেন। ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে একটি সভায় হজ, তাবলিগ জামাত ও প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করে মন্ত্রিত্ব হারান। এরপর তাঁকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়। দেশে ফেরার পর তাঁকে কারাগারেও যেতে হয়। পরে তিনি সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন। সর্বশেষ ২০১৮ সালেও তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে পরবর্তীতে নির্বাচন থেকে সরে যান। দ্বাদশ নির্বাচনে আবার তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
মুক্তিযুদ্ধের জীবন্ত কিংবদন্তি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দলের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় ১৯৯৯ সালে জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন। ১৯৯৯ সালে আওয়ামী লীগ ত্যাগ করে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ গঠন করেন। এরপর নিজ দল কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ থেকে ২০০১ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক ছাত্র নেতা মুরাদ সিদ্দিকী কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতালীগে যোগ দেন। ২০০১ ও ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রার্থী হিসেবে টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তিনি। এরপর ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর মুরাদ সিদ্দিকী কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন। ২০০৯ সাল থেকে মুরাদ সিদ্দিকী আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ২০০৯ সাল থেকে মুরাদ সিদ্দিকী অদ্যবধিও আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করেন।
২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে উল্লেখযোগ্য ভোট পেয়ে পরাজিত হন মুরাদ সিদ্দিকী।
একতার কণ্ঠঃ প্রধানমন্ত্রীর অধীনে নির্বাচনে যাইনি, যাচ্ছি না। নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন হবে এটা স্বত:সিদ্ধ কথা। বিএনপি এখন দেশের কথা ভাবছে না। তারা আন্তর্জাতিক ক্ষমতা দ্বারা সরকারে যেতে চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম।
বুধবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনে সখীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। পরে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ভোট কেন্দ্রে ভোটার না এলে নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। আর প্রচুর পরিমান ভোটার এলে গ্রহনযোগ্যতা পাবে। কোন দল এলো আর কোন দল এলো না এটা আমার কাছে বড় কথা না। বড় কথা হচ্ছে সরকারি প্রভাব মুক্ত স্বত:স্ফুর্ত নির্বাচন হলো কি না। ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোট কেন্দ্রে এসে তাদের ইচ্ছেমত প্রার্থীদের ভোট দিতে পারলো কি না এটাই হচ্ছে আমার কাছে বড় কথা। দেশের আজকে অস্থিতিশীল অবস্থা। এখান থেকে পরিত্রাণ পাওয়া দরকার।
এসময় কৃষক শ্রমীক জনতা লীগের জেলা ও উপজেলা শাখার নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
একতার কণ্ঠঃ ঘূর্ণিঝড় মিধিলি’র প্রভাবে দমকা হাওয়ায় টাঙ্গাইলের বাসাইলে গাছের ডাল পড়ে রাজ্জাক মিয়া (৪০) নামের এক কাপড় ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে বাসাইল উপজেলা পরিষদের গেটের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত রাজ্জাক মিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের মিরিকপুর গ্রামের কুসুম মিয়ার ছেলে। তিনি বাসাইলের কোটিপতি মার্কেটে কাপড়ের ব্যবসায়ী ছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, জুমার নামাজ পড়ে মোটরসাইকেলে বাসার দিকে যাচ্ছিলেন। তিনি উপজেলা পরিষদের গেটের সামনে পৌঁছালে ঝড়ো বাতাসে গাছের ডাল ভেঙে মাথায় পড়লে সঙ্গে সঙ্গে তার মৃত্যু হয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মরত মেডিকেল অফিসার ডা: নাঈম আব্দুল্লাহ বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।
বাসাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পাপিয়া আক্তার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমরা নিহতের পরিবারের পাশে আছি।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের বাসাইলে ঝিনাই নদীর তীরবর্তী আদাজান গ্রামের ৮’শ মিটার রাস্তার নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের আদাজান উত্তর পাড়ার স্থানীয় ডা. শহিদের বাড়ির সামনের রাস্তা থেকে আওয়ালের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তার কাজটির উদ্ভোধন করা হয়।
৮’শ মিটার এই রাস্তার কাজ শেষ করতে প্রায় ১০ লক্ষ টাকার প্রয়োজন হলেও (কাবিটা ১ম পর্ব) মাত্র ৩ লক্ষ টাকা নিয়ে এই কাজ শুরু করা হয়েছে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানাযায়, নারীনেত্রী রেখা বেগম দীর্ঘদিন ধরে টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্যের কাছে তদবিরের মাধ্যমে বাসাইলের বিভিন্ন এলাকায় বেশ কিছু প্রকল্পের মাধ্যমে উন্নয়ন কাজ করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় রাস্তার এই কাজটি শুরু করা হয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক মেম্বার আমির আলীসহ গ্রামের বয়োজেষ্ঠরা জানান, স্বাধীনতা পরবর্তী ৫১ বছরে এই এলাকার সাধারণ মানুষ এই রাস্তা টুকুর জন্য বছরের ৭ থেকে ৮ মাস যাতায়াতে ভোগান্তির শিকার হয়েছে। এই রাস্তার কাজ সমাপ্ত হলে স্থানীয় ৪শ পরিবারসহ পার্শ্ববর্তী ৪টি গ্রামের মানুষ যাতায়াতের সুফল ভোগ করবে।স্থানীয় প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং মাদ্রাসার প্রায় ৭ থেকে ৮’শ শিক্ষার্থীরাও এই রাস্তার সুফল ভোগ করবে।
রাস্তার কাজ উদ্ভোধন অনুষ্ঠানে কাঞ্চনপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মামুন, ৯নং ওয়ার্ড মেম্বার আশরাফ উদ্ জামান বক্তার, ওয়ার্ড আ’লীগ সভাপতি সাহেব আলী মিয়া, পরেশ চন্দ্র মন্ডলসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের বাসাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী অলিদ ইসলামের আয়োজনে সরকারের উন্নয়নমূলক শোভাযাত্রার প্রস্তুতি সভাকে ঘিরে চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। শনিবার (১৪ অক্টোবর) বিকালে প্রস্তুতি সভাকে ঘিরে এ উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
জানা যায়, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী অলিদ ইসলাম বাসাইল পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সরকারের ১৫ বছরের উন্নয়নমূলক শোভাযাত্রার প্রস্তুতি সভা আহবান করেন। এক পর্যায়ে সভা শুরুর পূর্বে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী মতিয়ার রহমান গাউস ও সাধারণ সম্পাদক মির্জা রাজিকের নেতৃত্বে একটি মিছিল শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বাসাইল পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। এক পর্যায়ে প্রস্তুতি সভার আয়োজনে ব্যবহৃত চেয়ার ভাংচুর করা হয়। এ সময় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে উন্নয়ন প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সভায় সাবেক এমপি অনুপম শাহজাহান জয় অংশ নেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী মতিয়ার রহমান গাউস বলেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী অলিদ ইসলাম বিএনপি-জামায়াতের লোকজন নিয়ে সরকার বিরোধী কর্মকান্ডের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। খবর পেয়ে আমরা তা প্রতিহত করেছি।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি কাজী অলিদ ইসলাম বলেন, আমাদের সভা শুরুর দেড় ঘণ্টা পূর্বে সভাপতি মতিয়ার রহমান গাউস ও সাধারণ সম্পাদক মির্জা রাজিকের নেতৃত্বে বিএনপি নেতা বাদলের লোকজন ১০ থেকে ১৫ টি চেয়ার ভাংচুর করে। এ সময় আমাদের লোকজন উপস্থিত হলে তারা চলে যায়। পরে আমরা যথারীতি প্রস্তুতি সভা করেছি।
বাসাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল আমিন জানান, দু’গ্রুপের উত্তেজনার খবর পেয়ে আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনি। এর পূর্বে কয়েকটি চেয়ার ভাংচুর করা হয়েছে বলে শুনেছি।
একতার কণ্ঠঃ আবহমান বাঙালি জাতির ঐতিহ্য ও শতবর্ষের প্রাচীন সংস্কৃতির অন্যতম অনুষঙ্গ নৌকা বাইচ। নদীমাতৃক এ দেশের গ্রামীণ লোক সংস্কৃতির সেই ঐতিহ্যকে বুকে ধারণ করে দেশের বিভিন্ন নদ-নদী ও বিল-বাঁওড়ে আয়োজন করা হয় নৌকা বাইচের।
থৈ থৈ জলে, ঢাক-ঢোলের তালে তালে গ্রাম বাংলার গান আর মাঝি-মাল্লার বৈইঠার ছন্দ মাতিয়ে তোলে বাসুলিয়ার চাপড়া বিলের শান্ত জলের ঢেউকে। আর সেই তালে তাল মেলাতে নৌকা বাইচ দেখতে বিশাল বিস্তৃত টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার বাসুলিয়ায় (চাপড়া) বিলের বুকে হাজারো মানুষের ঢল নামে।
এরই ধারাবাহিকতায় বাসাইলের দিগন্ত বিস্তৃত জলভরা দৃষ্টিনন্দন বাসুলিয়ায় উৎসবমুখর পরিবেশে শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শুক্রবার বিকেলে দৃষ্টিনন্দন ও নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি চাপড়া বিলে অনুষ্ঠিত হয় গ্রাম-বাংলার শত বছরের ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ। জেলার অন্যতম বিনোদনমূলক এ প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে জলপথে নৌকা আর সড়কপথে যানবাহনে প্রায় হাজারো মানুষের সমাগম হয়।পুরুষের পাশাপাশি নারীদের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো।
প্রতি বছরের মতো এবারও বর্ণিল এ নৌকা বাইচের আয়োজন করেন প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক মিয়া স্মৃতি সংসদ।
প্রতিযোগিতায় নারায়ণগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, পাবনা ও টাঙ্গাইলে কয়েকটি উপজেলা থেকে আল্লাহ ভরসা, মায়ের দোয়া, সোনার তরী, ফুলের তরী, হীরার তরী, আদর্শ তরী, ময়ূর পঙ্খী, পঙ্খীরাজ ও জলপরীসহ বাহারী নাম ও রঙের ডিঙি, কুশা, সিপাই, খেলনা, অলংগাসহ কয়েক ক্যাটাগরির প্রায় অর্ধশতাধিক নৌকা অংশগ্রহণ করে। ছোট, বড় ও মাঝারি নৌকা পৃথক পৃথক কয়েকটি রাউন্ডে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিযোগিতার চুড়ান্ত রাউন্ডে বিজয়ী হয়েছে পাটুলি গ্রামের মায়ের দোয়া নৌকা। রানার্সআপ হয়েছে বাসাইল উপজেলার কাশিলের চাচা-ভাতিজা নৌকা। পরে অতিথিবৃন্দ বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন। এ সময় চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপসহ অংশগ্রহণকারী প্রত্যেকটি নৌকাকেই আকর্ষণীয় পুরষ্কার দেওয়া হয়।
এতে প্রধান অতিথি থেকে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা উপভোগ করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য এডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের।
প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আখতার হোসেন।
টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক কায়ছারুল ইসলামের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মফিজ উদ্দিন আহমেদ, টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার, জাতীয় শ্রমিক লীগের সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম খান, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জামিলুর রহমান মিরন, সাইফুজ্জামান সোহেল, জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ও বিশিষ্ট শিল্পপতি খালিদ হোসেন খান পাপ্পু, টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি এ্যাডভোকেট জাফর আহমেদ প্রমুখ।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ-অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব আমিন শরীফ সুপন। শুভেচ্ছা বক্তব্যে দেন বাসাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পাপিয়া আক্তার।
নৌকা বাইচের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী মতিয়ার রহমান গাউস ও সাধারণ সম্পাদক মির্জা রাজিক ।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাসাইল সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও নৌকা বাইচ বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব সোহানুর রহমান সোহেল।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের সখীপুরে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় অপর মোটরসাইকেলের আরোহী মুনিয়া মুক্তি (২১) নামে এক কলেজ ছাত্রী নিহত হয়েছেন। বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে সখীপুর-বাসাইল আঞ্চলিক সড়কের বাসুলিয়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত মুক্তি জেলার সখীপুর উপজেলার গজারিয়া গ্রামের মজিবুর রহমানের মেয়ে।
বুধবার টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে তার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। নিহত মুনিয়া মুক্তি টাঙ্গাইলের সরকারি সা’দত কলেজের রসায়ন বিভাগের (অনার্স) শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
নিহত মুনিয়ার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বুধবার জরুরি কাজে বাড়ি এসে সন্ধ্যায় মোটরসাইকেলযোগে কলেজের আবাসিক হলে ফিরছিলেন সে। বাসাইলের বাসুলিয়া এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বেপরোয়া মোটরসাইকেল তাঁদের ধাক্কা দেয়। তাতে মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়েন মুনিয়া। স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাঁকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।
নিহত মুনিয়ার চাচাতো ভাই আমিনুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে মুনিয়ার লাশ সখীপুরে তাদের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রেজাউল করিম জানান, দুর্ঘটনাস্থল আমাদের উপজেলার বাইরে। তাই এ বিষয়ে আমাদের কেউ কিছু জানায়নি।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের বাসাইলে নিষিদ্ধ চায়না জালের বিরুদ্ধে অভিযানে নেমেছে উপজেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর ) সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত উপজেলার সদর ইউনিয়নের মিরিকপুর বিলে অবৈধ চায়না জাল বিরোধী অভিযান পরিচালনা করা হয়।
বাসাইল উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সৌরভ কুমার দে জানান, নিষিদ্ধ চায়না জাল যত্রতত্র ব্যবহার রুখতে অভিযান চালিয়ে ১১টি চায়না জাল আটক করে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়।
বাসাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পাপিয়া আক্তার জানান, চায়না জাল দিয়ে মাছ শিকার করা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। ছোট মাছ, মা মাছ রক্ষার্থে এবং মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির স্বার্থে মৎস্য সম্পদ ধ্বংসকারী অবৈধ এ ধরনের জালের ব্যবহার বন্ধে নিয়মিতভাবে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
একতার কণ্ঠঃ স্কুলে যাওয়া-আসার পথে প্রায়ই উত্ত্যক্তের শিকার হতো এক শিক্ষার্থী। উল্টো তার ঘাড়েই দোষ চাপাতেন শিক্ষকরা। করতেন বকাঝকা। এসব সইতে না পেরে চিরকুট লিখে আত্মহত্যা করেছে ভুক্তভোগী ছাত্রী। বুধবার (৩০ আগস্ট) বিকেলে টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার হাবলা ইউনিয়নের মটরা সাহাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী আলিফা খানম জুঁই বাসাইল উপজেলার লৌহজং উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
অভিযুক্ত বাঁধন ওরফে পিচ্চি বাঁধন টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া ইউনিয়নের বীরপুশিয়া নয়াপাড়া গ্রামের প্রবাসী কামরুল ইসলামের ছেলে।
এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) রাতে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে চারজনের বিরুদ্ধে মামলা কারেছেন নিহত ছাত্রীর দাদা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাইয়ুম।
আসামিরা হলেন, বাঁধন ওরফে পিচ্চি বাঁধন, লৌহজং উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আরজু জমাদার, সহকারী শিক্ষক আব্দুল লতিফ ও সহকারী শিক্ষক তাছলিমা খাতুন ছবি।
জানা গেছে, মেয়েটির মা-বাবা ঢাকায় থাকেন। গ্রামের বাড়িতে দাদা-দাদির কাছে থেকে লেখাপাড়া করতো সে। বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার পথে দীর্ঘদিন ধরে উত্ত্যক্ত করে বাঁধন ওরফে পিচ্চি বাঁধন। সম্প্রতি উত্ত্যক্তের মাত্রা বেড়ে যায়। এসিড দিয়ে ছাত্রীর মুখ ঝলসে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে গত বুধবার বিকেলে বাঁধনসহ তার পরিবার এবং ছাত্রীসহ তার পরিবারকে ডেকে নেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। সেখানে বাঁধনকে শাসিয়ে দেওয়া হয়। ছাত্রীর ওপর দোষ চাপিয়ে বকাঝকা করা হয়। বিদ্যালয় থেকে বাড়িতে ফিরে ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দেয় সে। পাশেই একটি চিরকুট পাওয়া যায়। তাতে লেখা ছিল ‘আমি দোষী নই।’ খবর পেয়ে লাশটি উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায় বাসাইল থানা পুলিশ।
শিক্ষার্থীর মা রূপা বেগম বলেন, বখাটে বাঁধনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আরজু জমাদার বলেন, আমরা দুই পরিবারের লোকজন নিয়ে বসেছিলাম। সেখানে বাঁধনকে শাসিয়ে দেওয়া হয়। তারপরও মেয়েটি কেন আত্মহত্যা করল আমরা বুঝতে পারছি না।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মতিউর রহমান খানের ভাষ্য, খবর পেয়ে মেয়েটির বাড়ি ও বিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন। বখাটে বাঁধনের উত্ত্যক্তের বিষয়টি সত্য। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।
বাসাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেস্তাফিজুর রহমান জানান, বিদ্যালয়ে পড়াশোনার জায়গা, বিচারের জন্য নয়। প্রধান শিক্ষক বিষয়টি প্রশাসন অথবা পুলিশকে জানাতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। উল্টো ওই ছাত্রীকেই বিচারের নামে বহু মানুষের সামনে দোষারোপ করেছেন। অপমান সইতে না পেরে সে চিরকুট লিখে আত্মহত্যা করেছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পাপিয়া আক্তার জানান, উত্ত্যক্তের বিষয়টি আমাদের আগে জানানো হয়নি। জানলে হয়তো ব্যবস্থা নিতে পারতাম। যেহেতু মামলা হয়েছে, তাই পুলিশ ঘটনার তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বলে আমি আশা করি।
একতার কণ্ঠঃ গৃহবধূ ধর্ষণ মামলায় টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি সাকিব মিয়াকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বুধবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে টাঙ্গাইলের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মাহাবুবুর রহমান এ আদেশ দেন।
সাকিব মিয়া বাসাইল পৌর ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বাসাইল দক্ষিণপাড়া গ্রামের মনু মিয়ার ছেলে।
জানা যায়, চলতি বছরের ১৪ মে দিবাগত রাতে ওই গৃহবধূ ও তার স্বামী ঘুমিয়ে পড়েন। রাত সাড়ে ১২টার দিকে বাসাইল পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি সাকিব মিয়া একজন অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যাবে বলে ওই গৃহবধূর স্বামীর মোটরসাইকেল নিতে আসে। মোটরসাইকেল নেওয়ার কিছুক্ষণ পরই গৃহবধূর স্বামীকে মোটরসাইকেল ত্রুটির কথা বলে ডেকে নেন। এরই ফাঁকে তার সহযোগি সাইদুল মিয়া ও শাহেদ মিয়ার সহযোগিতায় সাকিব মিয়া ওই গৃহবধূকে কৌশলে ওড়না দিয়ে মুখ বেঁধে ধর্ষণ করেন। এ ঘটনায় গত ১৬মে ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে সাকিব ও তার দুই সহযোগী সাইদুল ও শাহেদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এরপর তারা উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তাহের জন্য জামিন নেন। জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় সাকিব মিয়া আদালতে হাজির হন। পরে আদালতের বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
বাদিপক্ষের আইনজীবী জিনিয়া বখশ বলেন, মামলার প্রধান আসামি সাকিব মিয়া আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। পরে বিচারক জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরআগে মামলার বাকি দুই আসামি সাইদুল ও শাহেদ ১৫দিন কারাভোগের পর নিম্ন আদালত থেকে ২৩ জুলাই ফের জামিন পান।
একতার কণ্ঠঃ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে টাঙ্গাইল জজ কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল বাছেদের (৭৫) মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (১৮ আগস্ট) সকালে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
আব্দুল বাছেদের মেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মহসিনা আক্তার আঁখি জানান, তার বাবা টাঙ্গাইল শহরের সাবালিয়াস্থ বাসায় থেকে টাঙ্গাইল জজ কোর্টে নিয়মিত প্র্যাকটিস করতেন। গত ১৪ আগস্ট ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হন তিনি।
তিনি আরও জানান, প্রথমে তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকার শ্যামলীতে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হসপিটালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সকাল ৮টায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
এদিন জুমার নামাজের পর টাঙ্গাইল কোর্ট চত্বরে প্রথম এবং বাদ আছর বাসাইল উপজেলার আইসরায় নিজ গ্রামে দ্বিতীয় জানাজা শেষে সামাজিক গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
উল্লেখ্য, তিনি মৃত্যুকালে স্ত্রী, তিন ছেলে ও চার মেয়ে রেখে গেছেন।