একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের কালিহাতিতে ট্রাক চাপায় এক মোটরসাইকেল চালক নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (২৬ আগস্ট) সকাল ৮টার দিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের জোকারচর এলাকার ১৮নম্বর ব্রিজের উপর এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। দুর্ঘটনার কারণে মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ মরদেহ ও দুর্ঘটনা কবলিত মোটরসাইকেলটি ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নিলে যান-চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে।
নিহত ওই মোটরসাইকেল চালকের নাম সাজেদুল ইসলাম (৪৫)। সে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার শাহাপুর এলাকার আতাতুল্লাহ ফকিরের ছেলে। তিনি গাজীপুরের ভাওয়াল গড়ে চাকরি করতেন।
বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থানার এসআই নাজমুল ইসলাম জানান, সোমবার সকালে সাজেদুল মোটরসাইকেল যোগে গাজীপুর থেকে ঈশ্বরদী যাচ্ছিলেন। এসময় ঘটনাস্থলে পৌঁছালে একটি বাস মোটরসাইকেলটিকে চাপা দিলে মোটরসাইকেলটি ব্রিজের উপর পরে যায়। পরে পেছনে থাকা একটি ট্রাক মোটরসাইকেলটির উপর দিয়ে চলে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই সাজেদুলের মৃত্যু হয়।
তিনি আরও জানান, খবর পেয়ে মরদেহ ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থানায় নিয়ে রাখা হয়েছে। নিহতের পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। তারা এলে আইনগত প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ-ঘটনায় বাস ও ট্রাকটিকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহাদাত হুসেইনের বদলির আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে উপজেলা পরিষদে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (২৫ আগস্ট) সকালে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তালা ঝুলিয়ে দেওয়ায় উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা পরিষদের দৈনন্দিন কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে।
জানা গেছে, কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হুসেইনের বদলির আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা রবিবার সকালে উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসনের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এতে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা পরিষদের কোন কর্মকর্তা কার্যালয়ে প্রবেশ করতে পারেননি। এদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্থানীয় বিভিন্ন স্কুল-কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে সমবেত হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকে।
এ সময় কালিহাতীর ইউএনও শাহাদাত হুসেইনের বদলির আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থী রাসেল, আল আমিন, সাব্বির, রাশেদুল, রিফাত, আশরাফুল, কবির, হৃদয়, শাওন, হাবিব, সাজিদ প্রমুখ হ্যান্ড মাইকে নানাবিধ স্লোগান দেন ও বক্তব্য রাখেন।
তারা দাবি করেন, কালিহাতীর ইউএনও একজন কর্মমুখি-শিক্ষাবান্ধব ও ন্যায়-নীতিবান ভালো মানুষ। তার বদলির আদেশ তারা মানেন না। তার বদলির আদেশ প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
কালিহাতী উপজেলা সমাজসেবা অফিসার শহিদুজ্জামান মাহমুদ, কৃষি অফিসার ফারহানা মামুন, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শিল্পী দে, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. সেহাব উদ্দিন, হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মো. লিয়াকত হোসেন, পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন সহ অন্যান্য কর্মকর্তারা জানান, বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। শিক্ষার্থীরা উপজেলা প্রশাসনের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ায় তারা স্ব স্ব কার্যালয়ে ঢুকতে পারছেন না। এতে দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত হচ্ছে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিফাত বিন সাদেক জানান, ভাগ্যক্রমে তাঁর কার্যালয়টি উপজেলা কমপ্লেক্সের বাইরে থাকায় তিনি তালাবদ্ধের আওতায় পড়েননি। তবে উপজেলা প্রশাসনের মূল ফটকে তালা দেওয়ায় প্রতিদিনের কাজ ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়টি নিয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছেন।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. কায়ছারুল ইসলাম জানান, ইউএনও’র বদলির বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের। তিনি সার্বক্ষণিক কালিহাতীর উদ্ভুত পরিস্থিতির খোঁজখবর নিচ্ছেন এবং তা যথাযথভাবে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করছেন।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সন্ধ্যায় কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হুসেইনের বদলির আদেশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে শিক্ষার্থীরা মশাল মিছিল নিয়ে বিক্ষোভ করতে করতে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করেন। পরদিন শুক্রবার (২৩ আগস্ট) একই দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। এদিন শিক্ষার্থীরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইউএনও’র বদলির আদেশ প্রত্যাহার না করা হলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার হুশিয়ারী দেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের সিনিয়র সচিব সাগুফতা হক স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বদলি করে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নির্বাহী অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে বঙ্গবন্ধু টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অধ্যক্ষ মো. বখতিয়ার হোসেন পারিবারিক ও ব্যক্তিগত সমস্যার কারণ দেখিয়ে অধ্যক্ষের (অতিরিক্ত দায়িত্ব) পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন।
রবিবার (১৮ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টায় শিক্ষার্থীরা তাঁর কার্যালয়ে গেলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে বস্ত্র অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করে একটি কপি শিক্ষার্থীদের প্রদান করেন তিনি।
পদত্যাগী বিটেক অধ্যক্ষ মো. বখতিয়ার হোসেন জানান, ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সমস্যায় পদত্যাগ করেছি। সোমবার (১৯ আগস্ট) স্বশরীরে বস্ত্র অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মহদোয়ের নিকট পদত্যাগপত্রটি দাখিল করবো।
জানা যায়, তাঁর বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের নানা অভিযোগ ছিলো। অভিযোগগুলো হলো, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-ছাত্রীদের সহায়তা না করা, আন্দোলনে বিভিন্নভাবে বাধা প্রদান করা।
ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তাা না করে জোরপূর্বক হল ত্যাগে বাধ্য করা। দায়িত্ব গ্রহনের পর বাজেট থাকার পরও আবাসিক হল, ৬ দফা চত্বর, একাডেমিক ভবন, সাবস্টেশন, সোলার, জেনারেটর ইত্যাদির কোন ধরনের উন্নয়ন কাজ না করা।
প্রতি বছর ২টি মিল পরিদর্শন আবশ্যক থাকার পরও এখন পর্যন্ত কোনও ব্যাচের মিল পরিদর্শন করাতে পারেননি ও এ খাতের সকল টাকা কুক্ষিগত করে রাখা। দায়িত্ব গ্রহণের পূর্ববর্তী বছরে বুটেক্সের সকল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজসমূহের মধ্যে ফলাফলে ১ম হলেও পরবর্তী সময়ে সেশনজট, ফলাফল বিপর্যয় এবং নিয়মিত ইয়ারলস স্বাভাবিক হয়ে দাড়ালেও তা নিরসনে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহনের ব্যর্থতা।
ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক খাতে শিক্ষার্থী ও সরকার থেকে প্রাপ্ত টাকার যথাযথ ব্যবহার না করা এবং হিসাব জানতে চাইলে পরোক্ষভাবে ইয়ারলসের হুমকি দেওয়া। প্রিন্সিপালের অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে কথা বললেই গোপন সিন্ডিকেটের মাধ্যমে একাডেমিক ও মানসিকভাবে হয়রানি এবং ব্যক্তিগত প্রতিহিংসায়ও ইয়ারলসের পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষকদের কম নম্বর প্রদানে বাধ্য করা। ক্যাম্পাস ও ছাত্রীহলের নিরাপত্তা প্রদানে ব্যর্থতা।
ইতঃপূর্বে ছাত্রী হলে চুরির ঘটনার সুষ্ঠু সমাধানে ব্যর্থতা। ল্যাবগুলোর অচলতা নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থতা। কোনও প্রয়োজনে শিক্ষার্থীদের সাক্ষাতের অনুমতি প্রদান না করা।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইল জেলার কয়েকটি উপজেলায় বাড়ি-ঘর, হাট-বাজার, মসজিদ, মন্দির, ফসলি জমিসহ অন্যান্য স্থাপনা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে দুর্গম চরাঞ্চলে ৩৬ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে।
জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি কোথাও অপরিবর্তিত, আবার কোথাও অবনতি হয়েছে। জেলার কয়েকটি উপজেলাতে বিস্তির্ন জনপদের বাড়ি-ঘর, হাট-বাজার, ফসলী জমিসহ অন্যান্য স্থাপনা এখনও বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে।
সোমবার (৮ জুলাই) টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ঝিনাই ও যমুনা নদীর পানি সামান্য কমলেও অন্য সব নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ঝিনাই নদীর পানি জোকারচর পয়েন্টে ৩ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৯৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে ও যমুনা নদীর পানি পোড়াবাড়ি পয়েন্টে ৩ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধলেশ্বরী নদীর পানি এলাসিন পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ২৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়াও ফটিকজানি নদীর পানি নলচাপা ব্রীজ পয়েন্টে ১৭ সেন্টিমিটার, বংশাই নদীর পানি কাউলজানী পয়েন্টে ৮ সেন্টিমিটার, মির্জাপুর পয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার এবং মধুপুর পয়েন্টে ১২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে।
ভুয়াপুর উপজেলার ফরমান, সাইফুলসহ কয়েকজন বলেন,আমরা যমুনা তীরের মানুষ। প্রতিবছরই যমুনা নদীর সাথে যুদ্ধ করে চলতে হয়। এবারের বন্যায় আমাদের অনেক ক্ষতি করেছে। বন্যার পানির স্রোতে আমাদের কারো বাড়ির আঙিনা আংশিক করে ভেঙে গেছে। গত পাঁচ থেকে সাতদিন ধরে পানিতে বন্দি রয়েছে।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. কায়ছারুল ইসলাম জানান, জেলায় ৩৬ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। বন্যা কবলিত এলাকায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তা সামগ্রী হিসেবে চাল, ডাল, তেল, চিনি মসলাসহ সাড়ে চৌদ্দ কেজি ওজনের প্যাকেট, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও পানির পাত্র বিতরণ করা হয়েছে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে বাস ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে মোটরসাইকেল চালক নাহিদ ইসলাম (২৫) নামে এক যুবক নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
রবিবার (৭ জুলাই) সন্ধ্যায় টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উপজেলার ইছাপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী আরও একজন আহত হয়েছেন।
নিহত নাহিদ ইসলাম কালিহাতী উপজেলা এলেঙ্গা পৌরসভার মশাজান গ্রামের কাঠ ব্যবসায়ী নজরুল ইসলামের ছেলে।
স্থানীয়রা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিহত নাহিদ ইসলাম এক বন্ধুসহ মোটরসাইকেল যোগে ঘুরতে কালিহাতীর দিকে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে উপজেলার ইছাপুর এলাকায় পৌঁছালে শেরপুর থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী আজমেরী ট্রাভেলসের একটি বাসের সাথে মোটরসাইকেলটির মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই নাহিদের মৃত্যু হয়। পরে স্থানীয়রা মোটরসাইকেলে থাকা অপর আরোহী নিহত নাহিদের বন্ধুকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে পাঠায়।
এলেঙ্গা হাইওয়ে থানার এসআই সাকিব হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঢাকাগামী বাসের সঙ্গে বিপরীতমুখী মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংর্ঘষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই মোটরসাইকেল চালক নাহিদ ইসলাম নিহত হয়।
তিনি আরও বলেন, বাসটি জব্দ করা হয়েছে। তবে চালক হেলপার পালিয়ে গেছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
একতার কণ্ঠঃ টানা বৃষ্টির সঙ্গে পাহাড়ি ঢলে টাঙ্গাইলে যমুনা ও ঝিনাই নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীগুলোর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার তিন উপজেলার কয়েকটি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়েছেন।
শুক্রবার (৫ জুলাই) সকালে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার, ঝিনাই নদীর পানি বিপৎসীমার ৭৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্য থেকে আরও জানা যায়, গত ২৪ ঘন্টায় ঝিনাই নদীর পানি জোকারচর পয়েন্টে ৪১ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি পোড়াবাড়ি পয়েন্টে ৩৮ সেন্টিমিটার, ধলেশ্বরী নদীর পানি এলাসিন পয়েন্টে ৪১ সেন্টিমিটার, ফটিকজানি নদীর পানি নলচাপা ব্রীজ পয়েন্টে ৩০ সেন্টিমিটার, বংশাই নদীর পানি কাউলজানী পয়েন্টে ১০ সেন্টিমিটার, মির্জাপুর পয়েন্টে ১৩ সেন্টিমিটার, এবং মধুপুর পয়েন্টে ২৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে।
এরফলে নদী তীরবর্তী চরাঞ্চলের নিচু এলাকার ফসলি জমির পাট, তিলসহ বিভিন্ন ফসল পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। পানি বৃদ্ধির কারণে জেলার ভুঞাপুর ও কালিহাতী এবং সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নদী ভাঙন আরও তীব্র হয়েছে।
টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, আমরা সব সময় শুকনো মৌসুমে কাজ করে থাকি, তবে এ সময়ে যে সব উপজেলায় পানি বেড়ে ভাঙন শুরু হয়েছে সে এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলা হবে বলে জানান তিনি।
টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. কায়ছারুল ইসলাম বলেন, উজানের পানি নেমে আসায় ভাটিতে পানি বাড়ছে। ভূঞাপুরের অর্জুনা ইউনিয়নের কিছু ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছে। পার্শ্ববর্তী নিকরাইল ও গাবসারা ইউনিয়ন আজকালের মধ্যে প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বন্যার্তদের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত ত্রাণ প্রস্তুত আছে। এছাড়াও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া আছে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের কালিহাতীর এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থিত বঙ্গবন্ধু ব্রিজ এলেঙ্গা রিসোর্টে অনৈতিক কার্যক্রম চলছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তিন খদ্দেরসহ সাত নারীকে আটক করেছে পুলিশ।
রবিবার (৩০ জুন) গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে রিসোর্টের বিভিন্ন রুম থেকে তাদেরকে আটক করা হয়।
সোমবার (১ জুলাই) সকালে এ ঘটনায় মানবপাচার আইনে মামলা দায়ের করে আটককৃতদের আদালতে পাঠিয়েছে কালিহাতী থানা পুলিশ।
কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামরুল ফারুক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আটককৃত পুরুষরা হলো, পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার মুলাডুর গ্রামের মৃত আ. করিমের ছেলে মো. মোজাম্মেল (৫৮), টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার ব্রাহ্মণশাসন গ্রামের রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে আফজাল হোসেন (৩৫) ও বগুড়া সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের রেজাউল করিমের ছেলে কনক ইসলাম(৩০)।
আটককৃত নারীরা হলো, টাঙ্গাইল শহরের বোয়ালী মধ্যপাড়ার মৃত আবু সাঈদের মেয়ে হাফিজা ওরফে হাবিবা (২৫), একই শহরের অলোয়াভবানী এলাকার আ. করিমের মেয়ে শিউলী (২৪), একই জেলার গোপালপুর উপজেলার নরিল্যা গ্রামের আ. কাদেরের মেয়ে কুলসুম (১৯), টাঙ্গাইল শহরের বিশ্বাস বেতকা (সৃষ্টিস্কুল রোড) এলাকার মো. সিদ্দিকুর রহমানের মেয়ে সারিয়া রহমান জাকিয়া(২১), শহরের বটতলা এলাকার মরহুম ফজলুর রহমানের (ব্রিগেডিয়ার) মেয়ে ফারজানা (৩২), একই জেলার মির্জাপুর উপজেলার কুরণী গ্রামের মৃত কদ্দুছ খানের মেয়ে ঈশা ওরফে শাহনাজ (২৭) ও যশোর জেলার মনিরামপুর উপজেলার বাঙালিপুর গ্রামের আশরাফ গাজীর মেয়ে মুক্তা(৩০)।
স্থানীয়রা জানান, ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের পাশেই এলেঙ্গা রিসোর্টে রেস্টুরেন্টের আড়ালে যৌন ব্যবসা পরিচালনা করা হয়। রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ খদ্দের সংগ্রহ করে যৌনকর্মীদের ভাড়া করে আনে। যৌন ব্যবসা ছাড়াও রিসোর্টে মাদকের ব্যবসা করা হয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে। এর আগেও কয়েকবার খদ্দেরসহ যৌনকর্মীদের আটক করেছিল পুলিশ। তবে রিসোর্টের কাউক আইনের আওতায় আনা হয় না। প্রতিবারই তাদের ছাড় দেওয়া হয়।
কালিহাতী থানার এসআই সাজ্জাদ হোসেন জানান, রবিবার গভীর রাতে গোপণে অসামাজিক কার্যকলাপের সংবাদ পেয়ে এলেঙ্গাস্থ বঙ্গবন্ধু ব্রিজ এলেঙ্গা রিসোর্টে অভিযান চালিয়ে উল্লেখিত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় রিসোর্টের মোসলেম উদ্দিন(৫৫), ফাহাদ (৩৫) ও সিরাজুল(৩৫) সহ আরও ৩ থেকে ৪ জন দৌঁড়ে পালিয়ে যায়।
কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামরুল ফারুক জানান, গোপণ সংবাদের ভিত্তিতে এসআই সাজ্জাদ হোসেন অভিযান পরিচালনা করে তিন খদ্দেরসহ সাত নারীকে আটক করে। পরে পুলিশ বাদি হয়ে ১৩ জনের নামে মানবপাচার আইনের ১২ ও ১৩ ধারায় মামলা দায়ের করে। গ্রেপ্তারকৃতদের সোমবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে। পলাতকদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে অজ্ঞাত গাড়ী চাপায় এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হওয়ার ঘটনা হয়েছেন।
বুধবার (২৬ জুন) বিকালে উপজেলার টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কের কালিহাতী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন সাতুটিয়া ব্রিজের উপর এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত মোটরসাইকেল আরোহীর নাম দুলাল হোসেন (৬৫)। সে সখিপুর উপজেলার সাপিয়াচালা গ্রামের মৃত হাফেজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি কালিহাতীতে স্থায়ীভাবে বসবাস করতেন।
এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির এসআই সাইরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, নিহত দুলাল হোসেন মোটরসাইকেলযোগে সখিপুর থেকে কালিহাতীর দিকে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে আঞ্চলিক মহাসড়কের উপজেলার সাতুটিয়া ব্রিজের উপর পৌঁছালে পেছন থেকে একটি অজ্ঞাত গাড়ি মোটরসাইকেলটিকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
তিনি আরও জানান, পরে হাইওয়ে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে আসে। মরদেহটি আইনগত প্রক্রিয়া শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। দুর্ঘটনার পর অজ্ঞাত গাড়ীর চালক গাড়িটি নিয়ে পালিয়ে গেছে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার মো. খায়রুল বাশার ভূঁইয়া পাভেলের দুর্নীতির সংবাদ করতে গিয়ে উপস্থিত সাংবাদিকরা সাব-রেজিস্ট্রার কতৃক তার কার্যালয়ে অবরুদ্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) দুপুরে উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার অফিস কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুরে সাব-রেজিস্ট্রার মো. খায়রুল বাশার ভূঁইয়া পাভেলের পক্ষে কর্মচারী আরতি রানীর ১২ লাখ টাকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে স্বপক্ষে বক্তব্য নিতে গেলে সাব রেজিস্ট্রার খায়রুল বাশার ভূঁইয়া পাভেল দরজা বন্ধ করে দিতে বলেন। এর প্রতিবাদে সাংবাদিকরা তার এজলাসের সামনে অবস্থান গ্রহণ করেন। এ ঘটনায় কালিহাতীতে কর্মরত সকল সাংবাদিক কালিহাতী প্রেসক্লাব ও কালিহাতী রিপোর্টার্স ইউনিটির সদস্যরা একাত্মতা ঘোষণা করে অবস্থান নেন।
সাংবাদিকরা জানান, সাব রেজিস্ট্রার অফিসের কর্মচারী আরতি রানীর বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে তার স্বপক্ষে বক্তব্য নেওয়ার জন্য গেলে সাব রেজিস্টার খাইরুল বাশার ভূইয়া পাভেল উত্তেজিত হয়ে বলেন, আপনারা এখানে প্রবেশ করেছেন কেন? মন্ত্রনালয়ের লিখিত অনুমতি নিয়ে আপনারা এখানে প্রবেশ করবেন। এক পর্যায়ে সাব-রেজিস্ট্রার জানান, আপনারা দলিল চুরি করতে এসেছেন। এছাড়াও রাষ্ট্রের ক্ষতি সাধন হতে পারে বলে তিনি হুমকি দেন।
এক পর্যায়ে কর্মচারীদের গেইট বন্ধ করার নির্দেশ দেন। পরে তার নির্দেশ মোতাবেক কর্মচারীরা গেইট বন্ধ করে দেয়। ফলে উপস্থিত সাংবাদিকরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। কিছুক্ষণ পরে গেইট খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু উপস্থিত সাংবাদিকরা এর প্রতিবাদে সাব-রেজিস্ট্রারের এজলাসের সামনে অবস্থান নিয়ে বসে পড়েন।
পরে বিকেলে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট জাফর আহমেদের পরামর্শক্রমে কালিহাতী প্রেসক্লাবের সভাপতি রঞ্জন কৃষ্ণ পন্ডিত ও টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের কার্যকরী সদস্য মামুনুর রহমান মিয়া মঙ্গলবার সাংবাদিকদের এই কর্মসূচির সমাপ্ত ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানানো হয়।
এ প্রসঙ্গে কালিহাতী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোল্লা মুশফিকুর মিল্টন বলেন, চরম দুর্নীতিবাজ সাব-রেজিস্টার খাইরুল বাশার ভূইয়া পাভেল এ ঘটনায় ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত এবং তার শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।
কালিহাতী রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক এম এম হেলাল বাদশা বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের সূতিকাগার দেশবরেণ্য মুক্তিযোদ্ধা, সংগঠক, সাহিত্যিকদের সমৃদ্ধ কালিহাতী থেকে অভদ্র, অশোভন সাব-রেজিস্টারের প্রত্যাহার ও শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত সকল স্বেচ্ছাসেবী এবং সুশীল সংগঠন আন্দোলন চালিয়ে যাবে বলে ঘোষণা দেন।
এর পূর্বে মঙ্গলবার দুপুর ১২ টায় নিজস্ব কার্যালয়ে সাব-রেজিস্ট্রার মো. খায়রুল বাশার ভূঁইয়া পাভেলের প্রত্যাহারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেন কালিহাতী দলিল লেখক কল্যাণ সমিতি।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে চারদিন অবস্থানের পর প্রেমিকা শান্তা আক্তার (২৩) নামে এক সন্তানের জননী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করার ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার (২২ জুন) রাত সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলা খালুয়াবাড়ী গ্রামে প্রেমিক সোহাগের ঘরে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে ভুক্তভোগীর প্রেমিক সোহাগ পলাতক রয়েছেন।
প্রেমিক সোহাগের মা ছোবুরা বেগম ও বাবা নুরুল ইসলামকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়েছে বলে কালিহাতী থানার এসআই মিন্টু চন্দ্র ঘোষ জানিয়েছেন।
মৃত শান্তা আক্তার কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার অলুয়া গ্রামের মোখলেছুর রহমানের মেয়ে। তার একটি ছেলে সন্তানও রয়েছে।
প্রেমিক সোহাগ (২৪) কালিহাতী উপজেলা খালুয়াবাড়ী গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে।
জানা গেছে, প্রায় বছর খানিক আগে মোবাইলে ফোনে সোহাগের সঙ্গে পরিচয় হয়। এর পর থেকে তাদের দুজনের মোবাইল ফোনে কথা হয়। কথা বলার এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে যান তারা। এ সময় বিয়ের আশ্বাসে তাদের মধ্যে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক হয়। পরে বিয়ের জন্য ওই নারী সোহাগকে চাপ দিতে থাকেন। তখন নানা তালবাহানা শুরু করেন সোহাগ। এছাড়াও তার কাছ থেকে সোহাগ দুই লাখ টাকাসহ তিন ভরি স্বর্ণালঙ্কার নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
বিষয়টি স্থানীয় মাতাব্বর ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানালেও কোনো প্রতিকার পাননি শান্তা আক্তার। এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি। একপর্যায়ে শনিবার রাত সাড়ে ৭ টার দিকে প্রেমিক সোহাগের টিনসেড বাড়ির একটি ঘরে প্রবেশ করেন শান্তা। পরে ওই ঘরের ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেন বলে জানা গেছে।
কালিহাতী থানার এসআই মিন্টু চন্দ্র ঘোষ বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে । ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হবে। নিহতের স্বজনদের জানানো হয়েছে। স্বজনরা আসলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
একতার কণ্ঠঃ ঈদের বাকি আর মাত্র একদিন। তাই ঈদের আনন্দ পরিবার ও প্রিয়জনদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে ঝুঁকি নিয়ে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছেন ঘরমুখো মানুষজন। বাস ভাড়া বেশি হওয়ায় প্রচন্ড রোদে ট্রাক-পিকআপের যাত্রী হয়েও যাচ্ছেন শিশু, বৃদ্ধ বয়সের নারী ও পুরুষ।
সন্দেশ আলী নামের এক পিক-আপের যাত্রী বলেন, ঢাকা থেকে বাসে দুইগুণেরও বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। এজন্য ঝুঁকি নিয়ে ৩০০ টাকা ভাড়া দিয়ে প্রচন্ড রোদে ট্রাকে এসেছি।
শনিবার (১৫ জুন) দুপুরে ঢাকা-টাঙ্গাইল ও বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের এলেঙ্গা বাস স্টেশন, রাবনা বাইপাস, আশেকপুর বাইপাস ও কালিহাতী উপজেলার সল্লা এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
সন্দেশ আলী সিরাজগঞ্জের গ্রামের বাড়িতে সন্তান ও স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, আমি চাকরি করি পোশাক কারখানায়। এবার বেতন-বোনাসসহ আমি ২০ হাজার টাকা হাতে পেয়েছি। ঢাকা আব্দুল্লাহপুর থেকে ২৫০ টাকা ভাড়ায় ব্যক্তিগত কাজে আশেকপুর বাইপাস এলাকাতে নেমেছি। আমি এ ঈদে স্বজনদের জন্য কেনাকাটায় ব্যয় করেছি ১২ হাজার টাকা। বাকি ৮ হাজার টাকা দিয়ে ঈদ খরচ ও ছুটি শেষে আমাকে ঢাকায় ফিরতে হবে। এ টাকা বাঁচাতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রাকে করে এসেছি।
আশেকপুর বাইপাস এলাকায় কথা হয় সুমন মিয়ার সাথে। তিনি বলেন, ২৫০ টাকার বাস ভাড়া ৫০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। ঈদে বাড়ি ফিরতে হবে এ জন্য অতিরিক্ত ভাড়া নিলেও কিছু করার নেই। পরিবারের সাথে ঈদ করতেই হবে।
ট্রাকচালক সোহাগ রহমান বলেন, আমি সব সময় বালু পরিবহন করি। এবার ঈদে গরু নিয়ে গাবতলী গরুর হাটে এসেছিলাম। ট্রাকে যাত্রী নেওয়ার কোন চিন্তা ভাবনা ছিল না। ফেরার পথে দুই যাত্রী থামিয়ে তাদের দুঃখের কথা বলেন। এজন্য ফ্রিতে তাদের ট্রাকে উঠাই। পরে স্ট্যান্ডে এলাকায় আসামাত্র যাত্রীরা তাড়াহুড়ো করে ট্রাকে ওঠেন। নামতে বললে তারা আমার উপর রেগে উঠে বলেন, আমরা তো ফ্রিতে যাবো না, ভাড়া দিব। পরে ভাড়া মিটিয়ে রওনা করেছি।
নাম প্রকাশ না শর্তে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা সুমন পরিবহনের এক বাস চালক বলেন, ঈদের ছুটিতে যাত্রীদের চাপ ও মহাসড়কে যানজট সৃষ্টি হয়। এ জন্য একটু বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে বলে স্বীকার করেন তিনি।
এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মীর সাজেদুর রহমান বলেন, পিক-আপ ও খোলা ট্রাকের ছাদে করে যেন যাত্রী না নেয়া হয় সেজন্য বাঁধা দেয়া হচ্ছে। যারা কথা শুনছেন না তাদের বিরুদ্ধে মামলাও দেয়া হচ্ছে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলে পৃথক পৃথক স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪ জন নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আহত হয়েছেন অন্তত আরও ৫ জন।
শুক্রবার (১৪ জুন) ভোরে কালিহাতী উপজেলার বাগুটিয়া এলাকায় বঙ্গবন্ধু টেক্সটাইল কলেজের সামনে ভোররাতে ট্রাক ও প্রাইভেটকারের মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রাইভেট কারের চালকসহ ২ জন নিহত ও ৪ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
এদিকে সকাল ৯টার দিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কালিহাতী উপজেলার পুংলী এলাকায় উত্তরবঙ্গগামী একটি সিমেন্ট বোঝাই ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ৫ জন আহত হয়েছেন। পরে তাদের উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত অন্যান্যদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে
একই সময়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুরে ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গগামী একটি মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের আইল্যান্ডের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে চালক ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন।
এলেঙ্গা হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মীর মো. সাজেদুর রহমান বলেন, মাঝ রাতের কোন এক সময় কালিহাতী উপজেলার বাগুটিয়া এলাকায় একটি গরু বোঝাই ট্রাকের সাথে একটি প্রাইভেটকারের সংঘর্ষ ঘটে। পরে ঘটনাস্থল থেকে গুরুতর অবস্থায় টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ৬ জনকে নেওয়া হয়।
এ সময় জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ৬ জনের মধ্যে দুইজনকে মৃত ঘোষণা করেন বলে নিশ্চিত করেছেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। এখনো নিহত দুইজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি বলেও জানান তিনি।