সেই  আ’লীগ নেতার টাকা ফেরত দিচ্ছেন ভোটাররা!


১০:৩৯ পিএম, ২০ অক্টোবর ২০২২
সেই  আ’লীগ নেতার টাকা ফেরত দিচ্ছেন ভোটাররা! - Ekotar Kantho
পরাজিত প্রার্থী রফিকুল ইসলাম সংগ্রাম

একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইল জেলা পরিষদ নির্বাচনে বাসাইলের পরাজিত সদস্য প্রার্থী মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামের বিতরণকৃত টাকা ফেরত দিচ্ছেন ভোটাররা।

বুধবার (১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যা পর্যন্ত ভোটাররা নিজ উদ্যোগে ভোটের আগে গ্রহনকৃত টাকা ফেরত দিতে শুরু করেন।

বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) সকাল পর্যন্ত প্রায় ২ লাখ টাকা মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম সংগ্রাম ফেরত পেয়েছেন। তিনি বাসাইল সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম-আহবায়ক।

20230826-141431

মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) সকালে ভোটের আগে বিতরণকৃত টাকা ফেরত চেয়ে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। মূহুর্তের মধ্যে স্থানীয় পর্যায়ে তা ভাইরাল হয়। পরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার ও প্রকাশ হয়। এরপর থেকে পরাজিত ওই প্রার্থীকে টাকা গ্রহনকারী ভোটাররা (জনপ্রতিনিধি) নেওয়া টাকা ফেরত দিয়ে তাদের নাম প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করেন।

জানা যায়, টাঙ্গাইল জেলা পরিষদ নির্বাচনে ১১ নং ওয়ার্ড (বাসাইল) সদস্য পদপ্রার্থী মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম ভোটের আগে তাকে ভোট দেওয়ার জন্য উপজেলার ফুলকি ইউপির ৮ জন, হাবলা ইউপির ৫, পৌরসভার ৫, সদর ইউপির ১১, কাউলজানী ইউপির ৯, কাঞ্চনপুর ইউপির ৫ ও কাশিল ইউপির ৭ জনপ্রতিনিধিকে টাকা প্রদান করেন।

ওই পরাজিত প্রার্থী প্রত্যেক ভোটারকে (জনপ্রতিনিধি) ১০ থেকে ৩০ হাজার টাকা করে মোট ১০ লাখ টাকা বিতরণ করেন। তাদের মধ্যে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার ও প্রকাশ হওয়ার পর বুধবার(১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় হাবলা, সদর, কাঞ্চনপুর, কাউলজানী ও ফুলকি ইউপির অন্তত ৭ জন ভোটার দুই লাখ টাকা ফেরত দিয়েছেন। আগামী দুই দিনের মধ্যে সকল ভোটাররা টাকা ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তারা নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করেন।

পরাজিত প্রার্থী রফিকুল ইসলাম ভোটের আগে কেন টাকা বিতরণ করেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে জানান, ভোটাররাই একা দেখা করার কথা বলে বিভিন্ন অংকের টাকা দাবি করেছিলেন। নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার জন্য তাই তিনি ভোটারদের মাঝে টাকা বিতরণ করেছিলেন। তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ ও প্রচার হওয়ার পর পর সকলেই নেওয়া টাকা ফেরত দিচ্ছেন।

এ বিষয়ে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডক্টর উমর ফারুক জানান, নির্বাচনে ভোট কেনা জঘন্য অপরাধ। এটা অন্যের অধিকার টাকা দিয়ে হরণ করা। একজন মানুষের মানবিক সত্ত্বাকে হরণ করার সামিল। এক সময় যারা ভোট কিনতেন বা বিক্রি করতেন তারা এটা নিয়ে লজ্জাবোধ করতেন। এখন ওই মূল্য বোধগুলো অনেকটা নষ্ট হয়ে গেছে। ভোট কেনা-বেচায় আইনের যথাযথ প্রয়োগ না থাকায় নির্বাচন কেন্দ্রীক এমন অপরাধের প্রবণতা বাড়ছে।

প্রসঙ্গত, টাঙ্গাইল জেলা পরিষদ নির্বাচনে ১১ নং ওয়ার্ড (বাসাইল) মোট ভোটার ৯৪ জন। ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে ৩ প্রার্থীরই জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। ওই সদস্য পদে মো. নাছির খান ৫৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মোহাম্মদ হোসাইন খান পেয়েছেন ২১ ভোট, মিজানুর রহমান খান পেয়েছেন ১১ ভোট, মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম পেয়েছেন ৭ ভোট ও আতিকুর রহমান কোন ভোটই পাননি।


পাঠকের মতামত

-মন্তব্য সমূহ পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

নিউজটি শেয়ার করুন

কপিরাইট © ২০২২ একতার কণ্ঠ এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি ।