একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে জমি-জমা সংক্রান্ত পূর্ব শত্রুতার জেরে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে জয়নাল মিয়া নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে।
দায়ের করা মিথ্যা মামলায় শিকার হয়েছেন উপজেলার বাঁশতৈল ইউনিয়নের পাঁচগাও গ্রামের মৃত ইব্রাহিম খাঁর ছেলে মো. শুকুর আলী ও লালু শিকদারের ছেলে আব্দুল আজিজ।
জানা গেছে, গত ৩০ এপ্রিল রাত ৮ টার দিকে উপজেলার বাঁশতৈল ইউনিয়নের বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়ির সামনে সামাদ দেওয়ানের মুদির দোকানে রাতের বেলায় রাস্তায় টর্চ জালানোকে কেন্দ্র করে মামলার বাদী জয়নাল মিয়ার ছেলে চাঁন মিয়ার সাথে স্থানীয় মো. রাব্বেস মিয়ার সাথে বাকবিতন্ডা হয়।
বাকবিতন্ডতার এক পর্যায়ে তা হাতাহাতিতে রুপ নেয়। সেখানে উপস্থিত বাদী জয়নাল মিয়ার হাতে থাকা টর্চ লাইট নিয়ে তাঁর ছেলে চাঁন মিয়ার মাথায় আঘাত করে অভিযুক্ত রাব্বেস। পরে স্থানীয়দের হস্তক্ষেপে পরিবেশ শান্ত হয়। ঘটনায় সামান্য আহত চাঁন মিয়াকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে জামুর্কী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চাঁন মিয়া বাড়ী চলে যায়।
পরে শুক্রবার (১০ মে) মির্জাপুর থানায় মো. রাব্বেস মিয়া, মো. শুকুর আলী ও মো. আব্দুল আজিজকে হত্যা চেষ্টা ও টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগে অভিযুক্ত করে জয়নাল মিয়া বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে মুদি দোকানদার সামাদ দেওয়ান বলেন, ঘটনার দিন রাতের বেলা অভিযুক্ত রাব্বেস তার মুদি দোকানের সামনে রাখা চেয়ারে বসেছিলো। হঠাৎ চাঁন মিয়া ও তার চাচাতো ভাই কালাম রাব্বেসকে বলে তুই আমার বাবার সাথে বেয়াদবি করেছিস কেন। তারপর হঠাৎ করেই রাব্বেসকে চাঁন মিয়া ও কালাম অতর্কিত কিল, ঘুষি মারতে শুরু করে। মারতে মারতে তাকে পাশের টিউবওয়েল পারে নিয়ে ফেলে দেয়। এসময় রাব্বেস আত্মরক্ষার্থে তার পাশে উপস্থিত চাঁন মিয়ার পিতা জয়নালের হাতে থাকা টর্চ নিয়ে চাঁন মিয়াকে আঘাত করে দৌড়ে পালিয়ে যায়। মারামারির সময় শুকুর আলী ও আব্দুল আজিজ কেউ সেখানে উপস্থিত ছিলোনা।
মামলার বাদী জয়নাল মিয়া বলেন, ঘটনার সময় বিদ্যুৎ না থাকায় মামলায় অভিযুক্ত শুকুর আলী ও আব্দুল আজিজ উপস্থিত ছিলো কিনা আমি দেখি নাই। তবে আমার মনে হয়েছে পাশেই অন্ধকারে তারা দাঁড়িয়ে ছিল এবং মারামারিতে তাদের ইন্ধন ছিল। এজন্যই মামলার এজাহারে তাদের নাম দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় ২নং ওয়ার্ড মেম্বার লতিফ রানা বলেন, মারামারির ঘটনা ঘটেছে এটা ঠিক। কিন্তু ঘটনাস্থলে শুকুর আলী ও আব্দুল আজিজ কেউ উপস্থিত ছিলোনা। তাদেরকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো সঠিক হয়নি।
বাঁশতৈল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হেলাল দেওয়ান বলেন, ঘটনার দিন আমি মোটরসাইকেল নিয়ে সামাদ দেওয়ানের দোকানের সামনের রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম, এসময় দোকানের সামনে লোকজনের জটলা দেখতে পাই। পরে আমি বাসার দিকে রওনা হই। কিছুদূর যাওয়ার পর লোকজনের ধর ধর চিৎকারে আমি মোটরসাইকেল থামালে রাব্বেসকে দৌড়িয়ে পালিয়ে যেতে দেখি। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে জানতে পারি রাব্বেসের সাথে চাঁন মিয়া ও কালামের মারামারি হয়েছে। পরে স্থানীয়রা চাঁন মিয়াকে আহতাবস্থায় উদ্ধার করে জামুর্কী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায়।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানতে পারি মামলার অভিযুক্ত শুকুর আলী ও আব্দুল আজিজ মারামারিতে জড়িত ছিলোনা। পূর্ব শত্রুতার জেরেই তাদেরকে এই মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে।