একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার আসামি সাবেক পৌর মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তির জামিন আবেদন বৃহস্পতিবার( ২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে আবার নামঞ্জুর করেছেন আদালত। এ নিয়ে ১৫ বারের মতো তাঁর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করলেন আদালত।
সহিদুর রহমান সাবেক সাংসদ আমানুর রহমান খানের ভাই ও টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের আওয়ামী লীগের সাংসদ আতাউর রহমান খানের ছেলে। ৯ মাস ধরে তিনি কারাগারে রয়েছেন। গত ১৮ আগস্ট সকালে অসুস্থ হওয়ার পর তাঁকে জেলা কারাগার থেকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তাঁকে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
টাঙ্গাইলের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) এস আকবর খান জানান, টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বৃহস্পতিবার ছিল ফারুক হত্যা মামলার ধার্য তারিখ। রাষ্ট্রপক্ষ মামলার সাক্ষী পুলিশের কনস্টেবল হারুন অর রশিদকে হাজির করে। কিন্তু মামলার অন্যতম আসামি সহিদুর রহমান হাসপাতালে থাকায় তাঁকে হাজির করা হয়নি। তাই সাক্ষ্য গ্রহণও হয়নি।
সহিদুরের আইনজীবীরা তাঁর জামিন আবেদন করেছিলেন। তাঁরা যেকোনো শর্তে সহিদুরের জামিন প্রার্থনা করেন। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক মাসুদ পারভেজ আবেদন নামঞ্জুর করেন। আগামী ১১ অক্টোবর এই মামলার সাক্ষী গ্রহণের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে।
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বুকের ব্যথা নিয়ে সহিদুর হাসপাতালে ভর্তি হন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য সাত সদস্যবিশিষ্ট মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। তাঁর হৃদ্যন্ত্রে কোনো সমস্যা পাওয়া যায়নি। তবে থাইরয়েড ও কিডনিতে কিছু সমস্যা পাওয়া যায়। হাসপাতালে থাকতেই তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। তিন দিন আগে তিনি করোনামুক্ত হন। কোমরে ব্যথার জন্য হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার পর দীর্ঘ ছয় বছর পলাতক থেকে গত ২ ডিসেম্বর সহিদুর টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন মুক্তি। আদালত তাঁর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়ে দেন। তার পর থেকে তিনি টাঙ্গাইল জেলা কারা হেফাজতে রয়েছেন।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইল পৌরসভার কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ নেতা আতিকুর রহমান মোর্শেদের বিরুদ্ধে প্রায় পাঁচ বছর আগে স্ত্রী সৈয়দ আমেনা পিংকিকে হত্যা এবং লাশ গুমের অভিযোগে টাঙ্গাইল থানায় মামলা করা হয়েছে।আদালতের নির্দেশে মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে মামলাটি রেকর্ড করা হয়।
টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোশারফ হোসেন মামলা করার বিষয় নিশ্চিত করে জানান, এ হত্যা মামলায় মোর্শেদকে ‘শোন অ্যারেস্ট’ দেখানোর জন্য বৃহস্পতিবার(২৩ সেপ্টেম্বর) আদালতে আবেদন করা হবে।
মোর্শেদকে পুলিশ গত ১৯ আগস্ট একটি চাঁদাবাজি মামলায় গ্রেপ্তার করে। পরে ওই দিনই তার বাড়িতে তল্লাশী চালিয়ে দুইটি পিস্তল, ম্যাগাজিন ও গুলি উদ্ধার করা হয়। তিনি অস্ত্র ও চাঁদাবাজি মামলায় বর্তমানে টাঙ্গাইল কারাগারে রয়েছেন।
মোর্শেদ ছাড়াও হত্যা মামলার অন্য আসামিরা হলেন, মোর্শেদের প্রথম স্ত্রী সোমা ওরফে মনা, মুন্সি তারেক পটন ও তার স্ত্রী লিনা, পারভেজ খান রনি, সোহেল ওরফে বাবু, অনন্ত সুত্রধর, রাফসান ও আয়নাল মিয়া। এরা সবাই শহরের বিশ্বাস বেতকা এলাকার বাসিন্দা। মামলায় এছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরও তিন চারজনকে আসামি করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, মোর্শেদের দ্বিতীয় স্ত্রী সৈয়দ আমেনা পিংকির বাবা সৈয়দ শরিফ উদ্দিন বাদি হযে গত ২৪ আগস্ট টাঙ্গাইল জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন।
মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, ২০১২ সালের জুন মাসে তার মেয়ে সৈয়দ আমেনাকে মোর্শেদ অপহরণ করে বিয়ে করেন। তাদের ছয় বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। দুই স্ত্রী থাকায় মোর্শেদের পরিবারে মাঝে মধ্যে ঝগড়ার সৃষ্টি হয়। এর জের ধরে ২০১৭ সালের ২৬ জানুয়ারি রাতে ওই এলাকার এক বাসায় দাওয়াতের কথা বলে মোর্শেদ আমেনাকে নিয়ে যান। সেখানে নিয়ে অন্য আসামিদের সহযোগিতায় মোর্শেদ তাকে হত্যা করে মরদেহ গুম করেন। মোর্শেদের ভয়ে তিনি মামলা করতে সাহস পাননি। পরে মোর্শেদ ১৯ আগস্ট গ্রেপ্তার হওয়ার পর আদালতে মামলা দায়ের করেন।
আদালত এ হত্যার বিষয়ে থানায় কোন মামলা বা সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছিল কিনা তার প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য টাঙ্গাইল সদর থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। কোন মামলা বা জিডি হয়নি বলে টাঙ্গাইল সদর থানার ওসি মীর মোশারফ হোসেন আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। পরে আদালত মামলা করার জন্য টাঙ্গাইল থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোশারফ হোসেন জানান, এ হত্যা মামলায় মোর্শেদকে গ্রেপ্তার দেখানোর পর তদন্তের প্রয়োজনে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চাওয়া হতে পারে। এছাড়া অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
প্রসঙ্গত, মোর্শেদ টাঙ্গাইল শহর ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। পরে জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে দলীয় পদ না থাকলেও শহর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে নিয়মিত অংশ নিতেন। পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী মোর্শেদের বিরুদ্ধে করা ছাত্রদল নেতা রেজা হত্যা মামলা ২০১৩ সালে রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। তার বিরুদ্ধে দুই যুবলীগ নেতা হত্যা, ব্যবসায়ী তুহিন হত্যা মামলাসহ চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী এক ডজন মামলা হয়েছে বিভিন্ন সময়। গত জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত পৌরসভা নির্বাচনে তিনি টাঙ্গাইল পৌরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন।
একতার কণ্ঠঃ সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ২০১৫ সালে যাত্রা শুরু করে ‘রিং আইডি’। ফেসবুকের মতো এ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমেও বিনামূল্যে ভয়েস ও ভিডিও কল, মেসেজিং ও গোপন চ্যাটিং করা যায়। কানাডায় নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান হলেও এর প্রায় সব কার্যক্রম বাংলাদেশ ঘিরে। আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম বলা হলেও মূলত বাংলাদেশিদের জন্যই তৈরি হয়েছে রিং আইডি। এখানে সোশ্যাল কমার্স (সামাজিক বাণিজ্য) নামে গ্রাহকদের কাছে পণ্য বিক্রি করা যায়। এসব পণ্যের দাম বাজারমূল্যের চেয়ে বেশি বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে চলতি বছরের মার্চে আয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অর্থের বিনিময়ে ব্যাপক পরিসরে গ্রাহক বানানোর কাজ শুরু করলে দেখা দেয় সন্দেহ।
অর্থ আয়ের লোভনীয় অফার দিয়ে তরুণ, ছাত্র ও গৃহিণী, বিশেষ করে বিশাল বেকার জনগোষ্ঠীকে সহজেই আকৃষ্ট করছে কথিত সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্মটি। অর্থের বিনিময়ে ‘এজেন্ট’ ও ‘ব্র্যান্ড প্রমোটার’ নামে সদস্য বানিয়ে এরই মধ্যে হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। গ্রাহকের এ টাকা লোপাট হওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, এটিও এক ধরনের পঞ্জি স্কিম। এদের কাজের ধরন বহু স্তর বিপণনের (এমএলএম) সঙ্গে মিলে যায়। রিং আইডি কয়েক মাস আগে একটি ‘সেবা’ চালু করেছে, যার মাধ্যমে শুধু বিজ্ঞাপন দেখেই আয় করা যায়। এ জন্য যারা বিজ্ঞাপন দেখে আয় করতে চান, তাদের একটি আইডি কিনতে হয়। এদের বলা হয় ব্র্যান্ড প্রমোটার। আর এই প্রমোটার সংগ্রহের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয় এজেন্ট। এজেন্টদেরও নিয়োগ পেতে বড় অঙ্কের টাকা দিতে হয়। এজেন্টরা পান বিভিন্ন ধরনের কমিশন।
কানাডাপ্রবাসী বাংলাদেশি শরিফ ইসলাম ও আইরিন ইসলাম দম্পতি রিং আইডির প্রতিষ্ঠাতা। প্রতিষ্ঠানটির একমাত্র অফিস ঢাকার গুলশানে; যেখানে ৫০ জনের মতো কর্মী কাজ করছেন। রিং আইডি কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের প্ল্যাটফর্মে দুই কোটির বেশি সক্রিয় ব্যবহারকারী রয়েছেন, যাদের ৯৫ ভাগই বাংলাদেশি।
চলতি বছরের ২৮ মার্চ ‘কমিউনিটি জব’ নামে বিশেষ সেবা চালু করে রিং আইডি। এর আওতায় এজেন্ট ও ব্র্যান্ড প্রমোটার নিয়োগ শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। এরই মধ্যে কয়েক হাজার এজেন্টের পাশাপাশি পাঁচ লক্ষাধিক ব্র্যান্ড প্রমোটার যুক্ত হয়েছেন প্ল্যাটফর্মটিতে। এজেন্ট ও ব্র্যান্ড প্রমোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এজেন্ট হতে একেকজনকে এক থেকে পাঁচ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হয়েছে। এজেন্টদের কাজ ব্র্যান্ড প্রমোটার নিয়োগ করা; তার বিনিময়ে কমিশন নেওয়া। ব্র্যান্ড প্রমোটারের দুটি ক্যাটাগরি- গোল্ড ও সিলভার। যথাক্রমে ২২ ও ১২ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে ব্র্যান্ড প্রমোটার হতে পারেন গ্রাহকরা।
সংশ্নিষ্টরা বলছেন, এরই মধ্যে গোল্ড ক্যাটাগরিতে চার লাখ ব্র্যান্ড প্রমোটার নিয়োগ দিয়ে ৮৮০ কোটি টাকা তুলেছে রিং আইডি। পাশাপাশি এজেন্টসহ অন্যান্য ক্যাটাগরিতে আরও অন্তত ২০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে।
“আমাদের একটা শ্রেণি বিনা পরিশ্রমে কাঁড়ি কাঁড়ি অর্থ আয়ের স্বপ্ন দেখে, কেউ যদি এরকম কোনো অফার দেয়, তারা লুফে নেয়। কিন্তু যাচাই করে না কিংবা বোঝে না, এভাবে বৈধভাবে কেউ দিনের পর দিন অর্থ দিতে পারে না। একটা সময় ওই কোম্পানি উধাও হয়ে যায়। তখন সবাই হায় হায় করতে থাকে”
যা করছে রিং আইডি :তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে রিং আইডি খানিকটা ভিন্ন আঙ্গিকে এমএলএম পদ্ধতির ব্যবসাই করছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটিতে তিন ক্যাটাগরিতে এজেন্ট হওয়া যায়। এর মধ্যে ডায়মন্ড ক্যাটাগরির এজেন্ট হতে পাঁচ লাখ টাকা, গোল্ডেন দুই লাখ টাকা এবং সিলভার ক্যাটাগরির এজেন্ট হতে এক লাখ টাকা দিতে হচ্ছে। এজেন্ট হওয়ার পর তারা রিং আইডির অফিসিয়াল প্রতিনিধি হিসেবে ব্র্যান্ড প্রমোটার নিয়োগ করতে পারেন। ১২ হাজার টাকায় সিলভার এবং ২২ হাজার টাকায় গোল্ড ক্যাটাগরির ব্র্যান্ড প্রমোটার নিয়োগ করেন তারা। এ ছাড়া এক বছরের জন্য ২৫ হাজার টাকায় ভিভিআইপি এবং ১৫ হাজার টাকায় ভিআইপি সদস্যপদ দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রবাসী ক্যাটাগরিতে বিনিয়োগ করেও প্রতিদিন এক হাজার টাকা আয়ের লোভনীয় অফার রয়েছে। এ ছাড়া ‘সোশ্যাল কমার্স’ নামে পণ্য বেচাকেনায়ও এসব এজেন্ট ও ব্র্যান্ড প্রমোটারদের জন্য রয়েছে কমিশন। ব্র্যান্ড প্রমোটারদের লেনদেনের অধিকাংশই হচ্ছে বিকাশ ও নগদের মতো ওয়ালেটে।
লোভের ফাঁদে বেকার ও তরুণরা :রিং আইডির অফারে দিনে সর্বোচ্চ ১০০টির মতো বিজ্ঞাপন দেখলেই মিলছে ৫০০ টাকা! প্রতিটি বিজ্ঞাপন দেখার বিনিময়ে পাঁচ টাকা আয় করতে পারছেন ব্র্যান্ড প্রমোটাররা। গোল্ড ক্যাটাগরিতে প্রতিদিন সর্বোচ্চ ১০০টি এবং সিলভার ক্যাটাগরিতে প্রতিদিন ৫০টি বিজ্ঞাপন দেখার সুযোগ রয়েছে। এভাবে গোল্ড ব্র্যান্ড প্রমোটাররা দিনে ৫০০ টাকা এবং সিলভাররা ২৫০ টাকা আয় করেন। এজেন্টদের বিনিয়োগ বেশি, আয়ও বেশি।
প্রতি ব্র্যান্ড প্রমোটার নিয়োগে এজেন্টরা পান ৮ শতাংশ কমিশন। এভাবে রেফার সিস্টেমে ব্র্যান্ড প্রমোটারদেরও আয়ের সুযোগ রয়েছে। একজন গোল্ড প্রমোটার নিয়োগ করলে কমিশন বাবদ এজেন্ট পায় এক হাজার ৭৬০ টাকা। ব্র্যান্ড প্রমোটাররা বিজ্ঞাপন দেখে অর্জিত অর্থ এজেন্টের মাধ্যমে তুললে তারা পান ৪ শতাংশ কমিশন। তেমন কোনো পরিশ্রম ছাড়াই অর্থ আয়ের লোভে একেকজন সদস্য ৫-১০টা, এমনকি ৫০টা পর্যন্ত ব্র্যান্ড প্রমোটার আইডি কিনছেন। অনেকেই একাধিক এজেন্ট আইডি কিনছেন।
গোল্ড ক্যাটাগরির ৫০টি আইডি কিনেছেন দিনাজপুরের এক যুবক। তিনি জানান, রিং আইডিতে গত এপ্রিল মাসে তিনি ১১ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। ৫০টা আইডিতে তার প্রতিদিন ২৫ হাজার টাকা আয় হওয়ার কথা। শুরুতে মাস দুয়েক ঠিকঠাক টাকা তুলতে পেরেছেন। কিন্তু এখন ঝামেলা হচ্ছে। এজেন্টরা চাহিদা মতো ক্যাশআউট দিচ্ছে না। সরাসরি অফিসিয়াল ক্যাশআউট করতে গেলে রিং আইডির সার্ভার ব্যস্ত দেখাচ্ছে।
টাকা তুলতে এমন নানা ঝামেলার কথা সমকালকে জানিয়েছেন অনেকেই। টাকা ফেরত পাওয়া নিয়েও অনেকে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাগুরার এক ডায়মন্ড এজেন্ট জানান, তিনি ১০ লাখ টাকায় দুটি ডায়মন্ড এজেন্ট আইডি নিয়েছেন। তাদের সরাসরি কোনো অর্থ দেয় না রিং আইডি। ব্র্যান্ড প্রমোটার নিয়োগ করে প্রাপ্ত কমিশন থেকে তাদের অর্থ তুলতে হয়।
রিং আইডি প্রতারণা করতে পারে কিনা- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, খুব তাড়াতাড়ি এমনটা হবে না। এর মধ্যেই বিনিয়োগ লাভসহ উঠিয়ে আনা যাবে।
শরিফ-আইরিন দম্পতি :ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্ম শরিফ ইসলামের। তার পরিচিতজনরা জানায়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক করা শরিফ ইসলাম ২০০৫ সালে পিআর (পারমানেন্ট রেসিডেন্স) ভিসায় কানাডায় যান। আইরিন ইসলাম কানাডার কনকর্ডিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে ব্যাচেলর ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। ওই সময় বিয়ে করেন তারা। কানাডায় চাকরির পাশাপাশি আইরিন শরিফ ইসলামের সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক নানা উদ্যোগ শুরু করেন।
আইজিডব্লিউ এবং আইসিএক্স প্রতিষ্ঠান খুলে কল জালিয়াতিসহ বিভিন্ন অবৈধ উপায়ে কোটি কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ রয়েছে এই দম্পতির বিরুদ্ধে। কল জালিয়াতি, সরকারের বকেয়া পরিশোধ না করা এবং আইজিডব্লিউ প্রতিষ্ঠান ভিশনটেল ও আইসিএক্স প্রতিষ্ঠান ক্লাউডটেলের বিরুদ্ধে করা একাধিক মামলায় আইরিন ইসলাম ও শরিফ ইসলাম ২০১৬ সালে জেল খেটেছেন। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) মামলায় ২০১৬ সালের ২০ ডিসেম্বর এই দম্পতিকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আইজিডব্লিউ প্রতিষ্ঠান ভিশনটেল এবং আইসিএক্স প্রতিষ্ঠান ক্লাউডটেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরিফ ইসলাম এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আইরিন ইসলাম। ২০১৫ সালের ১৬ জুন ভিশনটেলের লাইসেন্স বাতিল করে কমিশন।
বিটিআরসি সূত্র সমকালকে নিশ্চিত করেছে, শরিফ-আইরিন দম্পতি ২০১৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি উচ্চ আদালত থেকে মামলাটির স্থগিতাদেশ (স্টে অর্ডার) নেয়। বিটিআরসি এরপর স্থগিতাদেশ বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করলেও এ মামলায় পরবর্তী শুনানি হয়নি।
বিজ্ঞাপন দেখে আয়ের সুযোগ কতটা :বিজ্ঞাপন দেখে বৈধ পথে আয়ের সুযোগ আছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত ফ্রিল্যান্সার ও অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার আল আমীন কবির সমকালকে বলেন, কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান তার পণ্যের প্রচারণার জন্য বিনিয়োগ করতে পারে। অনলাইন বিজ্ঞাপন প্রদর্শনে বিশ্বজুড়ে সিপিএম (কস্ট পার মিল বা প্রতি হাজারে খরচ) স্বীকৃত পদ্ধতি। নির্দিষ্ট পণ্য কিংবা ওয়েবসাইটের ভিজিটর বাড়াতে এ ধরনের পদ্ধতি ব্যবহূত হয়। এটা বৈধ, স্বল্প পরিসরে এটা হয়। তবে একটি প্রতিষ্ঠান হাজার হাজার মানুষকে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে প্রতিদিন ৫০০ কিংবা এক হাজার টাকা আয়ের সুযোগ করে দেবে- এটা বাস্তবতা বিবর্জিত। যখন কোনো প্রতিষ্ঠান এ ধরনের কর্মকাণ্ড করবে, তখন বুঝতে হবে কোথাও গলদ আছে।
দেশের অন্যতম শীর্ষ ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান ক্রিয়েটিভ আইটির কর্ণধার মনির হোসেন বলেন, দক্ষতা অর্জন ছাড়া বিজ্ঞাপন দেখে আয় করার অফার একমাত্র প্রতারণার উদ্দেশ্যেই দেওয়া যায়। আমরা এক সময় ডুল্যান্সার নামে একটি কোম্পানির এ ধরনের অপতৎপরতা দেখেছি। তারা একটা সময় পর গ্রাহকের কোটি কোটি টাকা লোপাট করে পালিয়েছে। রিং আইডি এখন যা করছে, তা কোনোভাবেই বাস্তবসম্মত নয়।
রিং আইডি কর্তৃপক্ষের বক্তব্য :প্রায় দুই মাস ধরে রিং আইডির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরিফ ইসলাম এবং প্রধান নির্বাহী আইরিন ইসলাম কানাডায় রয়েছেন। রিং আইডির বিষয়ে শরিফ ইসলামের সঙ্গে কয়েক দফায় মেসেঞ্জার কলে কথা হয়। তিনি বলেন, তাদের প্ল্যাটফর্মে দুই কোটিরও বেশি সক্রিয় ব্যবহারকারী রয়েছেন, যার মধ্যে দুই লাখ ব্র্যান্ড প্রমোটার আর এজেন্ট রয়েছেন ৫০০ থেকে ৬০০ জন। কর্মী আছেন ৫০ জন।
দুই কোটিরও বেশি ব্যবহারকারীর প্ল্যাটফর্ম এত কম সংখ্যক কর্মীতে কীভাবে চলে- এমন প্রশ্নের জবাবে শরিফ বলেন, বিনিয়োগ না পাওয়ায় অর্থ সংকটে আছি। জাপানসহ একাধিক বিদেশি বিনিয়াগকারী গ্রুপের সঙ্গে আলাপ চলছে। অচিরেই নতুন বিনিয়োগ ঢুকবে বলে আশা করছি।
কমিউনিটি জব প্রসঙ্গ তুললে তিনি বলেন, ‘এটা সাময়িক, আমরা নতুন এজেন্ট ও ব্র্যান্ড প্রমোটার নেওয়া দ্রুত বন্ধ করে দেব।’
বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন :বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন, সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্মের আড়ালে কেউ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে কিনা কিংবা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করছে কিনা তা সরকারের সংশ্নিষ্ট কর্তৃপক্ষকে খতিয়ে দেখা উচিত। প্ল্যাটফর্মটি কোনো রকম অবৈধ পন্থা অবলম্বন করলে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। আর যদি বৈধভাবে সব কিছু হয়ে থাকে, তবে জবাবদিহি নিশ্চিত করে নজরদারির মধ্যে রাখতে হবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাফিজুর রহমান সমকালকে বলেন, রিং আইডির বিষয়ে বিস্তারিত জানা নেই। তবে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের আড়ালে গ্রাহকের অর্থ হাতিয়ে নিলে পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, রিং আইডির বিষয়ে আমাদের কাছে এখনও কোনো অভিযোগ আসেনি। এখানে অবৈধ কিছু ঘটে থাকলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিষয়টি দেখবে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, আমাদের একটা শ্রেণি বিনা পরিশ্রমে কাঁড়ি কাঁড়ি অর্থ আয়ের স্বপ্ন দেখে, কেউ যদি এরকম কোনো অফার দেয়, তারা লুফে নেয়। কিন্তু যাচাই করে না কিংবা বোঝে না, এভাবে বৈধভাবে কেউ দিনের পর দিন অর্থ দিতে পারে না। একটা সময় ওই কোম্পানি উধাও হয়ে যায়। তখন সবাই হায় হায় করতে থাকে।
সংবাদ সূত্র- সমকাল অনলাইন
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলে কালিহাতী উপজেলায় যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে ছায়েদ আলী খান (৬০) নামে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২০ জন।মঙ্গলবার( ২১ সেপ্টেম্বর) ভোরে ভুঞাপুর-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কালিহাতী উপজেলার নারান্দিয়া ইউনিয়নের যদুরপাড়া এলাকায় ওই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ছায়েদ আলী খান নওগাঁ জেলার পোরশা উপজেলার কোচপুর গ্রামের মৃত নূর মোহাম্মদের ছেলে।
নিহতের ভাতিজা ও বাসযাত্রী আমিনুল ইসলাম বলেন, চাচাসহ তিনজন ঢাকা যাওয়ার জন্য রাতে নওগাঁ থেকে রওনা দিই। বাসটি বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়ে মহাসড়ক দিয়ে না গিয়ে ভুঞাপুর হয়ে ঢাকার দিকে যাচ্ছিল। গাড়ি ঠিকভাবে চালাতে চালককে বারবার সতর্ক করা হচ্ছিল। পরে বাসটি সড়কের বাঁক ঘুরতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদের পানিতে পড়ে যায়।
বাসযাত্রীরা জানান, চালক ঘুমন্ত অবস্থায় বাস চালাচ্ছিলেন। বারবার সতর্ক করা হয়। দুর্ঘটনার পর চালক, সুপারভাইজার ও হেলপার পালিয়ে গেছে।
টাঙ্গাইল ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মো. আলাউদ্দিন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বাসটি সড়কের বাঁক ঘুরতেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদের পানিতে পড়ে যায়।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর দেওয়ার কথা বলে এক নারীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী ওই নারী টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেছেন। সোমবার(২০ সেপ্টেম্বর) সকালে ধনবাড়ী প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে ওই তথ্য জানিয়েছেন ভুক্তভোগী নারী।
অভিযুক্ত ইউপি সদস্যের নাম ওসমান গণি। তিনি উপজেলার মুশুদ্দি ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তার বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছেও ভুক্তভোগী অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগীর বক্তব্য ও মামলার বিবরণে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেতে ইউপি সদস্য ওসমান গণির কাছে ধর্ণা দেন ওই নারী। ঘর পাইয়ে দিতে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন ওসমান। পরে মৌখিক চুক্তির পর ২৭ হাজার টাকা দেন ভুক্তভোগী। কিন্তু দীর্ঘদিন হয়ে গেলে ঘর না পাওয়ায় ইউপি সদস্যকে চাপ দেন ওই নারী। এ সময় ওই ইউপি সদস্য নতুন শর্ত জুড়ে দেন। তিনি ওই নারীকে কুপ্রস্তাব দেন।
কু-প্রস্তাবে রাজি না হয়ে ওই নারী ঘর পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়ে নিজের টাকা ফেরত পাওয়ার চেষ্টা করেন। তিনি ওসমান গণির কাছ থেকে টাকা ফেরত চান। অবশেষে গত ২৭ আগস্ট সকাল ১০টার দিকে ওসমান টাকা ফেরত নিতে তার বাড়িতে আসতে বলেন। কথা অনুযায়ী সেখানে গেলে ওই নারীকে যৌন নির্যাতন করেন ওসমান গণি। ঘটনাস্থলে তার স্ত্রী ফাহিমা উপস্থিত হয়ে উল্টো ওই নারীর ওপর পড়াও হন। তারা ওই নারীকে বেধড়ক মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইউপি সদস্য ওসমান গণি। তিনি বলেন, ‘একটি মহল আমাকে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করতে মিথ্যা অভিযোগ ও আদালতে মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।’
এ ব্যাপারে মুশুদ্দি ইউনিয়নের (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ঘর প্রদানে টাকা লেদদেনের কথা তিনি শুনেছেন। ইউপি সদস্য ওসমান গণি দুই নারীসহ আরও কয়েকজনের কাছ থেকে ঘর দেওয়ার কথা বলে অর্থ নিয়েছেন বলেও অভিযোগও রয়েছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মৎস্য অফিসের যৌথ উদ্যোগে সোমবার(২০ সেপ্টেম্বর) দিনভর কাশিল ও ফুলকী ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ চায়না জাল জব্দ করেছে। পরে জব্দকৃত নিষিদ্ধ চায়না জালগুলো পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়।
বাসাইল উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সৌরভ কুমার দে জানান, উপজেলার কাশিল ও ফুলকী ইউনিয়নের বিভিন্ন জলাশয়ে অভিযান চালিয়ে প্রায় ৭৫ হাজার টাকা মূল্যের চায়না জাল জব্দ করে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়।
এ সময় উপজেলা মৎস্য অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইল শহরের কলেজ পাড়া (মুচিপট্টি) এলাকায় সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে অভিযান চালিয়ে ১০০ লিটার চোলাই মদ সহ দুই বিক্রেতাকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছেন- পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কলেজ পাড়া (মুচিপট্টি) এলাকার মৃত শিবু রবি দাসের ছেলে লিটন রবি দাস (৩০) ও একই এলাকার মৃত দুলাল রবি দাসের স্ত্রী বীনা রবি দাস (৪২)।
র্যাব-১২ জানায়, সিপিসি-৩ টাঙ্গাইলের কোম্পানী কমান্ডার লে. কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে একদল র্যাব গোপনে খবর পেয়ে মুচিপট্টিতে অভিযান চালায়। এ সময় ১০০ লিটার চোলাই মদ সহ উল্লেখিত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হয়। টাঙ্গাইল সদর থানায় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করে গ্রেপ্তারকৃতদের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
একতার কণ্ঠঃ: টাঙ্গাইল শহরের রেজিষ্ট্রিপাড়া ও বাস টার্মিনাল এলাকায় রোববার(১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে আলাদা অভিযান চালিয়ে মাদকদ্রব্য সহ ছয় ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন(র্যাব-১২)।
গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছেন- টাঙ্গাইল শহরের আকুর টাকুরপাড়ার স্বর্গীয় হরিদাস সরকারের ছেলে গোবিন্দ সরকার(৪২), সদর উপজেলার আগবেথৈর গ্রামের মৃত আব্দুল বারেকের ছেলে মো. আলমগীর হোসেন(৪৫), ভূঞাপুর উপজেলার পাথাইলকান্দি গ্রামের মৃত বাদশা মিয়ার ছেলে মো. রাশেদুল ইসলাম(৩১), রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলার মহদীপুর গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে রাজিব আহাম্মেদ(৩১), একই জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার মহিশালবাড়ী গ্রামের মৃত শাজাহান আলীর ছেলে আব্দুল ওয়াদুদ(৩৫) ও একই এলাকার মৃত এলাহী বক্সের ছেলে মো. মানিকুল ইসলাম(৪৫)।
র্যাব-১২ প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানায়, গোপনে খবর পেয়ে সিপিসি-৩ টাঙ্গাইলের কোম্পানী কমান্ডার লে. কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মামুন(জি)বিএন এর নেতৃত্বে র্যাবের একটি দল টাঙ্গাইল শহরের রেজিস্ট্রি পাড়াস্থ ভিক্টোরিয়া রোডে স্যামসাং শো-রুমের পাশে অভিযান চালায়। এ সময় ৬ ক্যান বিয়ার, ৬ বোতল দেশি মদ, পাঁচটি মোবাইল ও পাঁচটি সিম কার্ড এবং নগদ দুই হাজার ১০০ টাকা সহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব-১২ জানায়, একই দিন সকালে বাসটার্মিনালে সোনিয়া নার্সিং হোমের পাশে অভিযান চালিয়ে ৫০ গ্রাম হোরোইন, দুইটি মোবাইল ফোন ও দুইটি সিমকার্ড এবং নগদ তিন হাজার ১৭০টাকা সহ দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের নামে টাঙ্গাইল সদর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের শীর্ষ সন্ত্রাসী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান ওরফে কোয়ার্টার রনিকে গ্রেপ্তারের পর এক দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। একটি ছিনতাই মামলায় রবিবার(১৯ সেপ্টেম্বর) টাঙ্গাইল চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাঁর এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। শনিবার(১৮ সেপ্টেম্বর) রাতে তাঁকে ঢাকার মোহম্মদপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত আতিকুর রহমান টাঙ্গাইল শহরের দেওলা মিল্ক ভিটা সড়কের সি অ্যান্ড বি কলোনির বাসিন্দা। পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী। টাঙ্গাইলের অপরাধ জগতে তিনি কোয়ার্টার রনি নামে পরিচিত। গত সেপ্টেম্বরে পুলিশ তালিকাভুক্ত অপর শীর্ষ সন্ত্রাসী পৌরসভার কাউন্সিলর আতিকুর রহমান মোর্শেদকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তারের পর রনি আত্মগোপনে চলে যান।
রবিবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় জানান, টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোশারফ হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঢাকার মোহম্মদপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে রনিকে শনিবার রাতে গ্রেপ্তার করে। তাঁর বিরুদ্ধে দুটি হত্যা, চারটি অস্ত্র মামলাসহ নয়টি মামলা আছে। শহরের তালিকাভুক্ত অন্যান্য শীর্ষ সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে জেলা পুলিশ জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে।
ওসি মীর মোশারফ হোসেন বলেন, সদর থানার একটি ছিনতাই মামলায় আতিকুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করে রবিবার টাঙ্গাইল চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। আদালতের বিচারক ফারজানা হাসানাত শুনানি শেষে এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালে কোয়াটার রনি ও তার সহযোগীরা টাঙ্গাইলের পিচুরিয়া এলাকা থেকে শামীম ও মামুন নামের দুইজনকে অপহরণের পর খুন করে লাশ গুম করার ঘটনায় সদর থানায় একটি মামলা দায়ের হয়। সেই মামলায় রনির বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি হয়। কোয়াটার রনির বিরুদ্ধে দুইটি খুন, ৪টি অস্ত্র মামলাসহ আরো তিনটি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এছাড়াও সে সদর থানায় দায়ের হওয়া ছিনতাই মামলার সন্ধিগ্ধ আসামী।
একতার কণ্ঠঃ বঙ্গবন্ধু সেতু-ঢাকা মহাসড়কে থ্রি হুইলার চলাচল বন্ধ করতে প্রচারণা চালাচ্ছে এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ। তিন চাকার গাড়ি চলাচল বন্ধে কঠোর অবস্থান নিয়ে শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দিনব্যাপী অভিযান চালিয়ে ১২টি থ্রি হুইলার (তিন চাকার গাড়ি) আটক করে মামলা দিয়েছে এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ।
জানাগেছে, মহাসড়কে থ্রি হুইলার বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশ রয়েছে। তারপরও মহাসড়কে থ্রি হুইলার চলাচল অব্যাহত থাকায় হাইওয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দিকনির্দেশনায় মাঠ পর্যায়ে অভিযানে নামে হাইওয়ে পুলিশ।
অভিযানের পাশাপাশি সড়ক পরিবহন আইনে অপরাধ ও শাস্তির পরিমাণ সম্পর্কে অবগত করার জন্য থ্রি হুইলার চালক ও মালিকদের সাথে মতবিনিময় করা হয়। এছাড়া পথসভা, মাইকিং, সেমিনার ও লিফলেট বিতরণ করার মধ্য দিয়ে ধারাবাহিকভাবে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ ইয়াছির আরাফাত জানান, গত দেড় মাসে শতাধিক ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, সিএনজি, নসিমন/ভটভটি আটক করে মামলা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এলেঙ্গা থেকে টাঙ্গাইল শহর পর্যন্ত মহাসড়কের দুই পাশেই সার্ভিস লেন রয়েছে। মহাসড়কের মূল ডিভাইডারের পাশে ডব্লিউ বিম বসানোর কাজ শেষ হয়নি। তাই এখনও কোন কোন থ্রি হুলার চালক সার্ভিস লেন থেকে সুযোগ বুঝে মহাসড়কে উঠে পড়ছে। এজন্য মহাসড়কে অভিযান চালানো হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গাজীপুরের চন্দ্রা থেকে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা পর্যন্ত মহাসড়কের এক পাশে সার্ভিস লেনের কাজ শেষ হলেও অপর পাশে কাজ চলছে। এ কারণে এখনও একপাশে থ্রি হুইলার চললেও অপর পাশে মহাসড়কে উঠে পড়ছে। এছাড়া এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত মহাসড়কে সার্ভিস লেন না থাকায় মহাসড়কে অবাধে থ্রি-হুইলার চলছে।
প্রকাশ, দেশের সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে ২০১৫ সালের ১ আগস্ট থেকে দেশের ২২টি মহাসড়কে থ্রি-হুইলার, অটোরিকশা, অটোটেম্পো ও অযান্ত্রিক যানবাহনের চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার ডুবাইল গ্রাম থেকে রত্না বেগম নামে এক বৃদ্ধার অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃদ্ধা রত্না বেগম(৫০) বাড়িতে নিজের ঘরে একাই থাকতেন।
প্রতিবেশিরা জানায়, কয়েকদিন যাবত রত্না বেগমকে দেখতে না পেয়ে শুক্রবার(১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে প্রতিবেশিরা তার ঘরের সামনে গিয়ে ছিটকিনি আটকানো দেখতে পান। ঘরের ভেতর থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল।
পরে তারা ঘরের দরজা খুলে দেখেন রত্না বেগমের অর্ধগলিত মরদেহ মেঝেতে পড়ে রয়েছে। তার মুখের ভেতরে কাপড় গুঁজে দেওয়া ছিল। খবর পেয়ে পুলিশ শুক্রবার রাতেই মরদেহ উদ্ধার করে।
দেলদুয়ার থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মো. সাজ্জাদ হোসেন জানান, ধারণা করা হচ্ছে- কোন এক সময় রত্না বেগম(৫০) নিজের ঘরে খুন হয়েছেন। থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ময়না তদন্তের জন্য তার মরদেহ টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে স্বামীর হাতে অন্তসত্ত্বা স্ত্রী খুনের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে উপজেলার এলাসিন ইউনিয়নের নয়াচর গ্রামে। নিহতের নাম দীপালী দাস (২৩)।এ ঘটনায় রাতেই নিহতের স্বামী রামু চন্দ্র মনি দাসকে গ্রেফতার করা হয়েছে।নিহতের লাশ উদ্ধার করে বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।দেলদুয়ার থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) সাজ্জাদ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত দিপালী দাস কালিহাতি উপজেলার সালেঙ্গা গ্রামের দুলু চন্দ্র মনি দাসের মেয়ে।
নিহতের বাবা দুলু চন্দ্র মনি দাস জানান, প্রায় ৫ বছর আগে নয়াচর গ্রামের রামু চন্দ্র দাসের সাথে দিপালী দাসের বিয়ে হয়। তাদের ঘরে ৪ বছর বয়সী একটি মেয়ে আছে। বর্তমানে দিপালী দাস ২ মাসের অন্তসত্ত্বা। পারিবারিক কলহের কারণে দিপালী দাসকে তার স্বামী মারপিটের পর শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করেছে বলে তিনি দাবি করেন।
এ বিষয়ে দেলদুয়ার থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) সাজ্জাদ হোসেন জানান, তিনি প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছেন পারিবারিক কলহের কারণে দিপালী দাসকে তার স্বামী শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করেছে। বুধবার দিবাগত রাত ৩ টার দিকে তিনি ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। নিহতের বাবা দুলু চন্দ্র মনি দাস বাদী হয়ে দেলদুয়ার থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। নিহতের স্বামী রামু চন্দ্র মনি দাস পালানোর চেষ্টা করলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।