একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলে চাঁদার দাবিতে সৌদি প্রবাসী এক নারীর বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (১৩ এপ্রিল) রাতে পৌর শহরের ৬নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ কলেজ পাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
এবিষয়ে সৌদি প্রবাসী এই নারী হেনা বেগম (৩৮) শনিবার রাতেই টাঙ্গাইল সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এছাড়া সোমবার (১৫ এপ্রিল) হেনা বেগম টাঙ্গাইলের র্যাব-১৪ সিপিসি-৩ এর কোম্পানি কমান্ডারের বরাবর আরও একটি লিখিত অভিযোগ জমা দেন।
অভিযোগ থেকে জানা যায়, মোছা. হেনা বেগম টাঙ্গাইল শহরের দক্ষিণ কলেজপাড়া এলাকার মৃত হায়াত আলীর মেয়ে। সে ও তার স্বামী দীর্ঘ ৮ বছর যাবত সৌদি প্রবাসী। ঈদুল ফিতর উদযাপনের জন্য সম্প্রতি ২ মাসের ছুটি নিয়ে দেশে আসেন তিনি। তার স্বামী এখনো সৌদি আরবে থাকায় তিনি তার বাবার বাড়ি দক্ষিণ কলেজ পাড়ার বাসায় ওঠেন। হেনা বেগমের কাছে প্রতিবেশী মো. মুন্না, মো. আকাশ, মো. হিটলু, মো. মোজাম্মেল, হাসি বেগম ও মুন্নি ঈদ উপলক্ষে ২ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। হেনা বেগম চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় বিবাদীগণ একজোট হয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শনিবার রাত ৯টার দিকে তার ও তার ভাই বিজিবিতে কর্মরত মো. জহিরুল ইসলামের বসত বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। এসময় ঘরে রক্ষিত আসবাবপত্র ভাঙচুর ও ঘরে থাকা স্টিলের আলমারি ভেঙে নগদ ৪০ হাজার টাকা ও স্বর্ণের কানের দুল, গলার চেইন ও হাতের আংটি ছিনতাই করে নিয়ে যায়। এসময় হেনা বেগমের নানু নুরজাহান বেগম বাধা প্রদান করলে তাকেও অস্ত্রের মুখে জিম্মি করা হয়। যাওয়ার সময় তারা হুমকি দিয়ে যায় দাবিকৃত চাঁদা না দিলে হেনা বেগমের পরিবারের সকল সদস্যকে মেরে গুম করে ফেলা হবে।
এ প্রসঙ্গে মোছা. হেনা বেগম বলেন, আমি ও আমার স্বামী দীর্ঘ ৮ বছর যাবত সৌদি প্রবাসী। আমরা বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সরাসরি ভূমিকা রাখছি। অথচ আমি আমার একমাত্র মেয়েকে নিয়ে বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। বিবাদীগণ প্রকাশ্যে আমাকে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। যেকোনো সময় তাঁরা আমাদের উপর আবার হামলা চালাতে পারে। থানায় অভিযোগ দায়েরের পর তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
তিনি আরও বলেন, একজন রেমিটেন্স যোদ্ধা হিসেবে বাংলাদেশ সরকারের কাছে আমি ও আমার পরিবারের নিরাপত্তা দাবি করছি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মো. মুন্না, মো. আকাশ, মো. হিটলু, মো. মোজাম্মেল, হাসি বেগম ও মুন্নি পলাতক থাকায় তাদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো: মামুন জামান (সজল) বলেন, বিষয়টি আমি জানি। বাদী ও বিবাদীগণ পরস্পরের আত্মীয় হওয়ায় নিজেদের মধ্যে বসে মীমাংসা করার জন্য বলা হয়েছে। মীমাংসার সময় আমার তরফ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।
অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা টাঙ্গাইল সদর থানার সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) ইমানুর রহমান জানান, এবিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বর্তমানে বিষয়টির তদন্ত চলছে। অভিযোগের সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।