একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা পৌরসভার মহেলা এলাকার পুংলি নদী পাড়ের বালু মাটি কেটে অবৈধভাবে বিক্রি করছে স্থানীয় প্রভাবশালী মো. শাহ্আলম।
এই নদী পাড়ের বালু কেটে বিক্রি করায় একদিকে যেমন শহর রক্ষা বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে, অন্যদিকে হুমকিতে রয়েছে রেলসেতু। এছাড়াও ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে স্থানীয় প্রায় পাঁচ শতাধিক পরিবার।
মাঝেমধ্যে প্রশাসন লোক দেখানো অভিযান পরিচালনা করলেও কোন ভাবেই বন্ধ হচ্ছে না অবৈধ এ বালু বিক্রি। ফলে সরকার বঞ্চিত হচ্ছে বিপুল পরিমান রাজম্ব থেকে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখাযায়, মহেলা গ্রামের পুংলি নদীতে ৬টি স্থানে ভেকু মেশিন বসানো হয়েছে। এই ভেকু মেশিন গুলোর সাহায্যে প্রায় ৫০টির অধিক ড্রাম ট্রাক দিয়ে দিনরাত উত্তোলনকৃত বালু বিক্রি করে আসছে ওই প্রভাবশালী শাহ্আলম।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পুংলি নদীর মহেলা অংশের প্রথম ঘাট চালায় এলেঙ্গা পৌরসভার স্থানীয় কাউন্সিলর মো. নুর আলমসহ শাহ্আলম, কাদের, জলিল, একাব্বর, মনির, আফজাল মোল্লা, মাজেদুল ও আফজাল প্রামানিক।
দ্বিতীয় ঘাট চালায় স্থানীয় মামুনসহ সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল বারেক, মো. জহুরুল ও শরীফ ।
এছাড়া তৃতীয় ঘাট চালায় ব্যাংকার মহসিনসহ শহিদউজ্জামান, আয়নাল ও তোফাজ্জল হোসেন।
স্থানীয়রা আরও জানায়, দিনরাত বালুভর্তি ড্রাম ট্রাক চলাচলের কারণে টাঙ্গাইল শহর রক্ষা বাঁধ ও ওই এলাকার একমাত্র যাতায়াতের রাস্তাটির চরম বেহাল দশা হয়েছে। সামনেই বর্ষা মৌসুম। এলাকাবাসীর ধারণা এভাবে দিনরাত বালুভর্তি ড্রাম ট্রাক চলাচল করলে এই বর্ষা মৌসুমেই ভেঙে পড়তে পারে রেল সেতু ও সড়ক সেতুসহ টাঙ্গাইল শহর রক্ষা বাঁধ।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানায়, মো. শাহ্আলম স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় দাপটের সহিত চলাফেরা তার। এছাড়াও রয়েছে তার বিশাল বাহিনী। সে সবসময় বাহিনী নিয়ে চলাফেরা করে। তার ভয়ে এলাকার কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। প্রতিবাদ করলে তার উপর হামলা চালায়। ইতোপুর্বে তার বাহিনীর হামলার শিকার হয়েছে এলাকার অনেকেই।
তারা আরও জানায়, প্রশাসনের সাথে সখ্যেতা রয়েছে শাহ্আলমের। প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই পুংলি নদী থেকে কোটি কোটি টাকার বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে সে। মাঝেমধ্যে প্রশাসন দায় এড়ানোর জন্য আসে। আসার আগেই খবর পেয়ে যায় তারা। প্রশাসন ঘুরে চলে যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই আবার শুরু হয় অবৈধ বালু উত্তোলন।
বালুভর্তি ট্রাক রেল সেতুর নিচ দিয়ে চলাচল করায় ইতোপুর্বেও রেল সেতুটির গার্ডার ধসে পড়েছিলো। পড়ে টনক নড়ে প্রশাসনের। কিছুদিন পূর্বে রেল সেতুর নিচ দিয়ে যেন কোন ধরনের যানবাহন চলাচল করতে না পারে সেজন্য কর্তৃপক্ষ পিলার দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। সম্প্রতি ওই বালু ব্যবসায়ীরা ওই পিলার তুলে ট্রাক চলাচলের রাস্তা বানিয়েছে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে মো. শাহ্আলম মুঠোফোনে বলেন, তিনি নদী থেকে বালু মাটি কাটেননা। তিনি তার বাবার পৈত্রিক সম্পত্তির বালু মাটি কেটে বিক্রি করছে।
এ বিষয়ে কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহাদাৎ হুসেইন বলেন, তিনি উপজেলা সহকারী কর্মকর্তা (ভুমি) এসিলেন্ডকে বলে দিয়েছে, তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।