একতার কণ্ঠঃ বন্ধুত্ব আমাদের মন ভালো রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ একাকিত্ব আমাদের টেনে নিয়ে নিয়ে যায় বিষণ্নতার দিকে। আমাদের ভালো রাখতে এবং ভালো থাকতে সাহায্য করে বন্ধুত্ব। আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যে বন্ধুত্বের প্রভাব নিয়ে বিভিন্ন সময়ে হয়েছে গবেষণাও।
২০১৮ সালে বন্ধুত্বের ওপর একটি গবেষণা করা হয়েছিল। যেখানে দেখা যায়, বন্ধুকে জড়িয়ে ধরলেই দুশ্চিন্তা ও অ্যাংজাইটি অনেকটা কমে যায়। অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরেও কি আমাদের জীবনে বন্ধুত্ব একইভাবে প্রভাব ফেলে? চলুন জেনে নেওয়া যাক-
বন্ধু কেন প্রয়োজন?
বন্ধুত্ব তৈরি হলে আমাদের অনুভূতি নিয়ন্ত্রণ করা অনেকটাই সহজ হয়। এটি নিজের প্রতি বিশ্বাস তৈরি করে। কমে যায় হতাশা কিংবা বিষণ্নতার উপসর্গও। বিষণ্নতা ও হতাশা কিন্তু অনেক বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, ২৭ শতাংশ মানুষ যাদের জীবনে ভালো বন্ধু ছিল, তাদের জীবনে অ্যাংজাইটি কম। তাই জীবনে ভালো থাকতে হলে বন্ধুত্ব করা জরুরি।
গবেষণায় উঠে এসেছে যে তথ্য
ফোর্বসের তরফে বন্ধুত্ব নিয়ে একটি গবেষণা করা হয়েছিল। সেখানে দেখা গেছে, যাদের তেমন ভালো কোনো বন্ধু নেই বা যাদের সামাজিক যোগাযোগ অনেকটা কম, বেশিরভাগ সময়ে তারা একাকিত্বে ভোগেন। যাদের জড়িয়ে ধরার মতো একজন বন্ধু আছেন, তাদের জীবনে দুশ্চিন্তা জায়গা পায় না। যখন আপনার নিজেকে ভীষণ একা লাগে বা আপনি একাকিত্বে ভোগেন, নিজেকে তা থেকে মুক্তি দিন। মন ভালো রাখে এমন কাজ করুন। আপনার জীবনে যদি ভালো বন্ধু থাকে তবে তাদের সঙ্গে সময় কাটানোর চেষ্টা করুন। এতে সমস্যা অনেকটাই মিটে যাবে।
নিজেকে ভালো রাখতে
আপনার প্রতিদিনের কাজগুলোই আপনার মনে প্রভাব ফেলে সবচেয়ে বেশি। সম্প্রতি দ্য এশিয়া পেসিফিক জার্নাল অফ ম্যানেজমেন্ট রিসার্চ অ্যান্ড ইনফর্মেশনে একটি স্টাডি প্রকাশ করা হয়। সেখানে উল্লেখ করা হয় এমনই একটি বিষয়। যেখানে বলা হয়, যখন কেউ তার সমস্যার কথা বন্ধুদের সঙ্গে ভাগাভাগি করেন, তখন জীবনে তার পজিটিভ প্রভাব পড়ে। নিজেরাই নিজেদের সমস্যা মিটিয়ে নেওয়া সহজ হয়। এ কারণে ভালো বন্ধু তৈরি করা জরুরি।
আড্ডা দিন
আড্ডা দেওয়াটাকে হালকা ভেবে উড়িয়ে দেবেন না। কারণ এই আড্ডার ফলে কমে যেতে পারে আপনার খারাপ লাগা, বিষণ্নতা। কমে যেতে পারে অস্বস্তি। অনেক বন্ধু থাকেন যারা বন্ধুর জন্য নানাভাবে কষ্ট করেন, সঠিক পথ দেখান। অনেক সমস্যার সমাধান করে দেন। বন্ধু, সে যে বয়সীই হোক না কেন, সে তো আপনার বন্ধুই! তাই মন খুলে তার সঙ্গে কথা বলুন, আড্ডা দিন। এতে ভালো থাকবে মানসিক স্বাস্থ্য।
একতার কণ্ঠঃ পাকস্থলীর রোগের মধ্যে ক্যান্সার অন্যতম। এ রোগটি প্রাথমিক অবস্থায় নির্ণয় করা গেলে বড় বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ক্যান্সার আক্রান্ত স্থান ফেলে দিলে রোগী সুস্থ হয়ে যেতে পারে।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন বৃহদন্ত্র ও পায়ুপথ সার্জারি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. একে এম ফজলুল হক।রোগের প্রাথমিক অবস্থায় হজমক্রিয়ার গোলযোগ বা খাদ্যগ্রহণের পর পেটে অস্বস্তি অনুভুতি ছাড়া আর তেমন কোনো উপসর্গ থাকে না। এ সমস্যাগুলোকে রোগী তেমন গুরুত্ব দেন না, মনে করেন গ্যাস্ট্রিক হয়েছে।
কোনো কোনো ক্ষেত্রে গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খেয়ে সাময়িক আরাম অনুভব করেন। ফলে ক্যান্সার পাকস্থলী থেকে শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ পায়। রোগটি ছড়িয়ে পড়লে যে উপসর্গ দেখা দেয়-
* অল্প খেলে তৃপ্তি চলে আসে * পেট ফেঁপে ও ফুলে থাকে * বমি হয় * রক্তস্বল্পতা দেখা দেয় * খাদ্যগ্রহণের পর খাদ্যনালীতে ব্যথা হয় * শরীরের ওজন কমে যায় * বমির সঙ্গে রক্ত কিংবা কালো পায়খানা হতে পারে
এ সমস্যাগুলো হলে অপারেশন করালেও রোগীর আয়ুকাল খুব বেশি বাড়ানো যায় না। সাধারণত চল্লিশোর্ধ্ব বয়সে এ ক্যান্সার বেশি হয়ে থাকে। নারীদের চেয়ে পুরুষরা বেশি আক্রান্ত হন। যে কারণে পাকস্থলীতে ক্যান্সার হয়, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-
* হেলিকোব্যাকটর পাইলোরি নামক এক প্রকার জীবাণুর আক্রমণ
* প্রচুর পরিমাণে মদপান
* অত্যধিক লবণ আছে এমন খাবার গ্রহণ করা
* সংরক্ষিত টিনজাত খাবার
* অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের অভাব রয়েছে এমন খাবার গ্রহণ করা
* যারা ধূমপায়ী এবং ধুলাবালি স্থানে বাস করে তাদের মধ্যেও এ ক্যান্সার হতে পারে
* বংশগত কারণেও পাকস্থলীতে ক্যান্সার হয়
এক সময়ে জাপানে পাকস্থলী ক্যান্সারের কারণে অনেক লোক মারা যেত। বর্তমানে চল্লিশোর্ধ্ব বয়সের পর যাদের হজমক্রিয়ার গোলযোগ হচ্ছে তাদের এন্ডোস্কোপি করে প্রাথমিক অবস্থায় রোগ নির্ণয় করে অপারেশনের মাধ্যমে ক্যান্সারের চিকিৎসা করা হয়।
আমাদের দেশে রোগীরা যখন ডাক্তারের শরণাপন্ন হন তখন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ক্যান্সার পাকস্থলীর বাইরে ছড়িয়ে পড়ে, এরফলে চিকিৎসা করা দুরূহ হয়ে পড়ে। এ জন্য উপরের সমস্যাগুলো দেখা দেয়া মাত্রই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।
একতার কণ্ঠঃ সারাদেশের মতো টাঙ্গাইলেও শনিবার(২৫জুন) বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উদযাপন করা হয়েছে।
সকালে পৌর শহরের শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানের মুক্তমঞ্চে টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসন বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বিটিভির মাধ্যমে বড় পর্দায় সম্প্রচার করা হয়।উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরে জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের শিল্পীদের সমন্বয়ে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।
অনুষ্ঠানে জেলা পরিষদের প্রশাসক ফজলুর রহমান খান ফারুক, জেলা প্রশাসক ডঃ মোঃ আতাউল গনি, পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সারসহ বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষার্থী এবং সকল পেশার লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
দিনব্যাপী অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল বিশেষ দোয়া, মোনাজাত, প্রার্থনা, অসহায় মানুষের মাঝে উন্নত মানের খাদ্য পরিবেশনসহ আরো নানা আয়োজন।
এছাড়াও জেলার সকল উপজেলায় দিনব্যাপী বর্নাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
একতার কণ্ঠঃ বাজারে পাওয়া যাচ্ছে মৌসুমি ফল রসালো আম। বাহারি জাতের আমের মৌ মৌ গন্ধ বাজার জুড়ে। আমের সঙ্গে একটু দুধ হলে যেন ভাত পায় পূর্ণতা। অনেকেরই আমের সঙ্গে দুধ-ভাত না হলে খাওয়াই জমে ওঠে না। আম ও দুধকে পুষ্টিকর খাবার হিসেবেই রাখেন খাদ্য তালিকায়।
এদিকে অনেকেই আবার মনে করেন, আম ও দুধ একসঙ্গে খাওয়া ক্ষতিকর। আমের সঙ্গে দুধ মেশালে হজমের সমস্যা হতে পারে বলে অনেকেরই মত।
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টিবিদ জাহানারা আক্তার সুমি জানান, আম যেমনি পুষ্টিকর একটি ফল, তেমনি শক্তির অনেক বড় একটা উৎস। আম অল্প ক্যালরিসমৃদ্ধ হলেও এতে অন্যান্য পুষ্টি উপাদান যেমন শর্করা, আমিষ, আশ, ভিটামিন ও প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদান রয়েছে। ভিটামিনের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, বি ভিটামিন। খনিজ উপাদানের মধ্যে রয়েছে পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, কপার, ফোলেট- যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে, চোখের সুস্বাস্থ্য রক্ষায়, রক্তসল্পতা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে থাকে।
এই পুষ্টিবিদ আরও বলেন, আম নানাভাবেই খাওয়া যায়। তার মধ্যে সবচেয়ে প্রচলিত আর জনপ্রিয় হলো আম দিয়ে দুধ-ভাত। (আম+ভাত+ চিনি) এই তিনটি খাবারই শর্করা বা গ্লুকোজ জাতীয়। দুধ একটি আদর্শ খাবার, যাতে সব ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে। আম অল্প ক্যালরি সমৃদ্ধ হলেও দুধ, চিনি এবং ভাত কিন্তু উচ্চ ক্যালরিসমৃদ্ধ খাবার। তাই যখন আম দিয়ে দুধ-ভাত খাওয়া হয়, তখন তার পুষ্টিগুণ যেমনি বেড়ে যায় ঠিক তেমনি ক্যালরির পরিমাণ বহুগুণ বেড়ে যায়।
আমের সঙ্গে দুধ খাওয়া ক্ষতিকর নয় উল্লেখ করে এই পুষ্টিবিদ জানান, আম-দুধ-ভাত ক্ষতিকর কোনো খাবার নয়। যাদের দুধ খেলে সমস্যা হতে পারে, তারা ছাড়া কারো এসব ক্ষেত্রে হজমের সমস্যা হয় না। কিন্তু যেহেতু এটি একটি মিক্সড খাবার এবং উচ্চ শর্করা ও উচ্চ ক্যালরিযুক্ত, তাই যারা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত যেমন ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, ওজনাধিক্য তাদের আম-দুধ- ভাত খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক হতে হবে। না হলে রক্তে গ্লুকোজ এর মাত্রা বেড়ে যেতে পারে, সেই সঙ্গে রক্তের ট্রাইগ্লিসারাইডও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর ফলে অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের ঝুঁকি দেখা দিতে পারে।
শিশু, যুবক, তরুণ-তরুণীদের খাওয়ার ক্ষেত্রে তেমন কোনো সমস্যা নেই। তারা আম-ভাত মূল খাবার হিসেবে খেতে পারবে আবার অন্য খাবারের সঙ্গেও গ্রহণ করতে পারবে। কিন্তু বয়স্করা যদি খেতে চায় তাহলে চর্বি ছাড়া দুধ ও চিনিটা বাদ দিয়ে খাওয়া উচিত। তাহলে রক্তে গ্লুকোজ এর মাত্রা বাড়ার ঝুঁকি থাকবে না। সেই সঙ্গে আম বেশি খেলে অবশ্যই আমাদের প্রতিদিনের ব্যায়ামের পরিমাণ বাড়াতে হবে।
একতার কণ্ঠঃ আমাদের দৈহিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য ঘুম অপরিহার্য। পর্যাপ্ত ও আরামদায়ক ঘুম আমাদেরকে সক্রিয় ও সতেজ করে তোলে। সাধারণভাবে স্বাস্থ্যকর ঘুম বলতে প্রতি রাতে একটি নির্দিষ্ট সময় ঘুমকে বুঝানো হয়। একে অনেকে ঘুমের পরিমাণ হিসাবে ধরে নেয়। যদিও ঘুমের পরিমাণ অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একটি ভালো ঘুমের জন্য এর পরিমাণ যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি গুরুত্বপূর্ণ হলো গুণগত মান। নিয়মিত আরামদায়ক ও সামঞ্জস্যপূর্ণ ঘুম আমাদের সামগ্রিক সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য প্রয়োজন। এ বিষয়ে বিস্তারিত লিখেছেন রাজধানীর ইনজিনিয়াস পালমো ফিটের স্লিপ কনস্যালট্যান্ট ডা. ফাতেমা ইয়াসমিন
ঘুমের পরিমাণ কী?
ঘুমের পরিমাণ বলতে বোঝায় আপনি প্রতি রাতে কত ঘণ্টা ঘুমান। বয়সভেদে মানুষের ঘুমের সময় তারতম্য হয়।
* বয়স : ঘুমের চাহিদা (২৪ ঘণ্টায়)
* নবজাতক (০-৩ মাস) : ১৪-১৭ ঘণ্টা
* শিশু (৪-১২ মাস) : ১২-১৬ ঘণ্টা
* বাচ্চা (১-২ বছর) : ১১-১৪ ঘণ্টা
* প্রি-স্কুল (৩-৫ বছর) : ১০-১৩ ঘণ্টা
* স্কুল বয়সের শিশু (৬-১২ বছর) : ৯-১২ ঘণ্টা
* কিশোর (১৩-১৮ বছর) : ৮-১০ ঘণ্টা
* প্রাপ্তবয়স্ক (১৮-৬৪ বছর) : প্রতি রাতে ৭-৯ ঘণ্টা
* প্রাপ্তবয়স্ক (৬৫+ বছর) : প্রতি রাতে ৭-৮ ঘণ্টা
এটি একটি সাধারণ নির্দেশিকা করা হয়েছে। এমন অনেক লোক রয়েছে যাদের তাদের বয়সের জন্য প্রস্তাবিত পরিমাণের চেয়ে বেশি বা কম ঘুমের প্রয়োজন। এমনকি কিছু নিয়মের ব্যতিক্রমগুলো বিবেচনা করেও এমন অনেক লোক রয়েছে যারা নিয়মিত তাদের প্রয়োজনীয় পরিমাণ ঘুমায় না। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ৫০ থেকে ৭০ মিলিয়ন আমেরিকানরা কোনো না কোনো ধরনের ঘুমের রোগে ভুগছেন এবং প্রায় ৩৫ শতাংশ আমেরিকান প্রাপ্তবয়স্করা প্রতি রাতে প্রয়োজনীয় সাত ঘণ্টার চেয়ে কম ঘুমায়। অপর্যাপ্ত ঘুমে সড়ক দুর্ঘটনা, কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা এবং জটিল রোগের ঝুঁকিগুলোও দেখা যায়। অপর্যাপ্ত ঘুমের প্রভাব আমাদের মস্তিষ্কের উপর সরাসরি পড়ে। হার্ভার্ড মেডিকেলের গবেষণায় দেখা গেছে যারা পাঁচ ঘণ্টা ঘুমান তাদের মৃত্যুর ঝুঁকি শতকরা ১৫ ভাগ বৃদ্ধি পায়। অপর্যাপ্ত ঘুমের কারণে আমাদের শরীরে কর্টিসল নামক একটি হরমোনের পরিমাণ বেড়ে যায়। যার প্রভাব পড়ে আমাদের উচ্চ রক্তচাপ ও রক্তের উচ্চ মাত্রার গ্লুকোজের উপর। অপর্যাপ্ত ঘুমের প্রভাবে মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায় এবং দ্রুত মুড পরিবর্তন হয়।
ঘুমের গুণগত মান কী
ঘুমের গুণমান বলতে বোঝায় আপনি কতটা ভালো ঘুমান।
সঠিক মানের ঘুমের জন্য রয়েছে ৫টি উপকরণ :
* ঘুমিয়ে পড়ার সময় : আপনি কত দ্রুত এবং কত সহজেই ঘুমিয়ে পড়তে পারেন। সাধারণত বেশিরভাগ মানুষ বিছানায় যাওয়ার ২০-২৫ মিনিটের মধ্যে ঘুমিয়ে পড়তে সক্ষম হয়।
* ঘুমের ধারাবাহিকতা বজায় : একবার ঘুমিয়ে পড়লে একটানা আপনার ঘুমিয়ে থাকার ক্ষমতা। ভালো মানের ঘুম হয় ক্রমাগত, রাতে বারবার ঘুম ভেঙে যায় না।
* ঘুমের কার্যকারিতা : ঘুমের কার্যকারিতা মানে আপনি কতটা সময় ঘুমিয়েছেন বনাম আপনি কতটা সময় ঘুমানোর জন্য বিছানায় কাটিয়েছেন। সঠিক মানের ঘুমের জন্য ঘুমের কার্যকারিতা মোট সময়ের অন্তত ৮৫ শতাংশ মানদণ্ড হিসাবে ধরা হয়।
* ঘুমের সময় : ঘুমের সময় বলতে বোঝায় যখন প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময় ঘুমানো। আমাদের শরীরের অভ্যন্তরীণ ঘড়ি নির্দেশ করে প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমানো এবং জেগে ওঠা।
* ঘুমের তৃপ্তি : ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ লাগা ও সারা দিন উদ্যমী থাকা। এভাবে ঘুমের পরিতৃপ্তি পরিমাপ করা হয়।
খারাপ মানের ঘুমের ক্ষতি কী?
খারাপ মানের ঘুমের স্বল্পমেয়াদি এবং দীর্ঘমেয়াদি উভয় ক্ষেত্রেই গুরুতর স্বাস্থ্য ঘাটতি দেখা যায়। যেমন-কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া, ভুলে যাওয়া প্রবণতা, মনোযোগ কমে যাওয়া, মানসিক চাপ বৃদ্ধি, বিষণ্নতা এবং উদ্বেগ দেখা দেয়। সকালে ঘুম থেকে উঠতে সমস্যা হচ্ছে অথবা খিটখিটে মেজাজ নিয়ে ঘুম থেকে ওঠা, সারা দিন ক্লান্তি ভাব থাকা, দিনের বেলা ঘুমানো, দিনে অনেক বেশি ঘুমানো। এ ছাড়া ওজন বৃদ্ধি এবং স্থূলতা, ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কলস্টেরল, হৃদরোগ এবং স্ট্রোক হয়।
রাতের আরামদায়ক ঘুমের পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর ঘুমের কিছু চিহ্ন আছে। যেমন-
* সকালে ঘুম থেকে উঠেই সতেজ অনুভূতি
* সারা দিন সতেজ থাকা
* ভালো মেজাজে থাকা
* পরিষ্কার-মাথা অনুভব করা
কীভাবে ঘুমের পরিমাণ এবং গুণগত মান উন্নত করা যায়
ভালো ও স্বাস্থ্যকর ঘুম পেতে আপনি যে পদক্ষেপগুলো নিতে পারেন তার মধ্যে রয়েছে-
* ঘুমের সমস্যা নির্ণয় করা : আপনি যদি মনে করেন যে আপনার ঘুমের সমস্যা আছে যা আপনার ঘুমকে প্রভাবিত করছে, তাহলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আপনার ডাক্তারের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত।
* জীবনযাত্রায় পরিবর্তন করুন : যদিও আপনার জীবনের কিছু অংশ অন্যদের তুলনায় পরিবর্তন করা কঠিন হতে পারে, আপনি কিছু পদক্ষেপ নিতে পারেন যা সম্ভবত আপনার ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে এবং আপনার ঘুমকে ব্যাপকভাবে উন্নত করতে পারে। যেমন-নিয়মিত ব্যায়াম করা, ধূমপান, অ্যালকোহল এবং ক্যাফেইন বাদ দিন।
* ঘুমের পরিবেশ নিশ্চিত করুন : বেশিরভাগ লোক তাদের ঘুমের পরিবেশের গুরুত্বকে অবমূল্যায়ন করেন। যদিও প্রত্যেকেরই নিজস্ব পছন্দ রয়েছে, মানুষ সাধারণত অন্ধকার, শান্ত, আরামদায়ক পরিবেশে ঘুমাতে পছন্দ করে।
* ফোন ও ট্যাব বন্ধ : গবেষণায় দেখা গেছে শোওয়ার সময় ফোনের ব্যবহার ঘুমের ব্যাঘাত হয়। বিছানায় ফোন এবং অন্যান্য ডিভাইস ব্যবহার করায়, ঘুমের সময়ের গতি হারাতে পারেন এবং আপনার প্রকৃত শোওয়ার সময় উল্লেখযোগ্যভাবে দেরি হতে পারে।
স্বাস্থ্যকর ঘুমের অভ্যাস কীভাবে প্রয়োগ করবেন তা আপনি নিশ্চিত না হলে, আপনার ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
একতার কন্ঠ: অনেক সময় এমন হয় যে কাউকে ভালোবেসে ফেলেছেন নাকি শুধুই বন্ধুত্বের টান বা পছন্দ, সেটা নিয়ে দ্বিধার সৃষ্টি হয়। নিজের মনে এই দ্বিধার কারণে সেই মানুষটিকে ভালোবাসার কথা জানাতেও সাহস হয়ে ওঠে না। অনেক সময় পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া কোনো ছেলে বা মেয়েকে দেখে প্রথম দর্শনেই ভালোবেসে ফেলা যায়। যাকে বলে প্রথম দেখায় প্রেম। আবার অনেক দিনের চেনা জানা বন্ধুর প্রতিও হঠাৎ ভালোবাসার অনুভূতি তৈরি হতে পারে। একজনকে ভালো লাগার পর নিজের মনে শুধুই প্রশ্ন জাগে, এই অনুভূতি কি শুধুই ভালো লাগা, নাকি ভালোবাসা।
কিভাবে বুঝবেন আপনি প্রেমে পড়েছেন-
১. ‘বাটারফ্লাইস ইন স্টোমাক’ : প্রেমে পড়লে ছেলে-মেয়ে সবারই শরীরের ভেতরে এক ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। যাকে ভালোবেসে ফেলেছেন তাকে দেখলে পেটে ও বুকের ভেতর এক অদ্ভুত চাপ অনুভূত হয়। তার সাথে কথা বলার সময় কিংবা তাকে ফোন করার আগে প্রচণ্ড আবেগের একটি অনুভূতির সৃষ্টি হয়। এই অনুভূতিকেই ইংরেজিতে বলা হয় ‘বাটারফ্লাইস ইন স্টোমাক’ বা পাকস্থলীতে প্রজাপতি। এই অনুভূতির কারণ ব্যাখ্যা করেছেন বিজ্ঞানীরা। তারা বলছেন, নার্ভাস হয়ে যাওয়ার কারণে শরীর থেকে একটি বিশেষ হরমোন নিঃসৃত হয়। আর এই হরমোনের কারণে পাকস্থলীর এই অনুভূতি সৃষ্টি হয়।
২. হঠাৎ আনন্দের অনুভূতি: প্রেমে পড়লে মনের স্থিরতা থাকে না। হঠাৎ করেই মন ভালো হয়ে যায় এই সময়ে। বাঁধভাঙ্গা সেই হাসির অনুভূতিতে আপনি হয়তো নিজেও জানবেন না আপনি আনমনে হাসছেন। প্রিয় মানুষটির কথা মনে পড়লেই নিজের অজান্তেই আপনার মুখে হাসি ফুটে উঠবে। এই সময়ে নিজের ভেতরে একটি অন্যরকম ভালোলাগার অনুভূতি সৃষ্টি হয়। তখন আপনার কাছে সবকিছুই ভালো লাগবে।
৩. সহজেই মন খারাপ: প্রেমে পড়লে হঠাৎ করেই মন ভালো হওয়ার মতোই সহজেই মন খারাপ হয়ে যায়। পছন্দের মানুষটি ফোন না ধরলে কিংবা তার সাথে দেখা না হলে মনের ভেতর খারাপ লাগার অনুভূতি সৃষ্টি হয়। একটুখানি দূরত্বকেই তখন অবহেলা মনে হতে থাকে।
৪. সারাক্ষণ একজনকে নিয়েই ভাবা: কিছুটা দিবাস্বপ্ন দেখার মতোই পরিস্থিতি হয় প্রেমে পড়লে, চিন্তা ভাবনা সারাক্ষণ একজনকে ঘিরেই ঘুরপাক খায়। যাকে পছন্দ, আপনার মন কিছুতেই যেন তার কথা ভুলতে পারে না।
৫. শারীরিক আকর্ষণ অনুভব করা: যার প্রেমে পরেছেন তার প্রতি স্বাভাবিক ভাবেই শারীরিক আকর্ষণ বোধ করবেন আপনি। আর এ কারণেই তার সান্নিধ্য উপভোগ করবেন। তার পাশে বসা, হাতের একটু খানি ছোঁয়া কিংবা সামান্য ধাক্কাতেও শিহরিত হয়ে ওঠাই তখন স্বাভাবিক।
৬. হারিয়ে ফেলার ভয়: প্রেমে পড়লে প্রতিমুহূর্তে আপনার প্রিয় ব্যক্তিটিকে হারিয়ে ফেলার ভয় পাবেন। সর্বক্ষণ আপনার মনে এই সংশয় ঘুরপাক খাবে। আপনি এমন কিছু করবেন না বা চাইবেন না মানুষটি এমন কিছু করুক, যাতে আপনি তাকে হারিয়ে ফেলেন। এই হারানোর ভয় যদি আপনার মধ্যে থাকে, তাহলে সত্যি সত্যি আপনি প্রেমে পড়েছেন।
৭. মনের কথা একজনকেই বলতে ইচ্ছা হয়: এ কথা সত্য যে, সব কথা সবাইকে বলা যায় না। কিন্তু কেউ কি আছে, যার সঙ্গে আপনি নির্দ্বিধায় সব কথা বলতে পারছেন। আপনি দেখবেন, কোনো প্রকার জড়তা ছাড়াই কোনো একজনের সঙ্গে গোপন বা মনে লুকানো কথাগুলো বলতে পারছেন। আপনি আপনার কাজে তার সাহায্য আশা করবেন আর চাইবেন এই মুহূর্তে আপনার করণীয় কী হতে পারে, তা-ও বলে দেবে আপনার প্রিয় এই মানুষটি।
এ লক্ষণগুলোর সাথে যদি আপনার মিলে যায় তাহলে আর কিছুই নয়, প্রেমে পড়েছেন আপনি। ধীরে সুস্থে ভালবাসার মানুষটিকে জানান মনের কথা। তবে প্রেমে পড়ার শুরুর দিকে একটা দোটনা থাকা খুবই সাধারণ ও স্বাভাবিক একটি বিষয়। মনের মধ্যে বারবার একটি প্রশ্ন উঁকি দেয়, আমি যাকে ভালোবাসি সেও কি আমাকে ভালোবাসে?
এবার তাহলে জেনে নিন সে-ও আপনাকে ভালবাসে কি না-
১. আপনার শত্রু মানে তারও শত্রু। যখন দেখবেন কোনো কারণ ছাড়াই আপনার পছন্দের মানুষটি আপনার শত্রুকে নিজেরও শত্রু ভাবতে শুরু করেছে, শুধু আপনি তাকে পছন্দ করেন না বলে সেও তাকে ঘৃণা করতে শুরু করেছে, তখন বুঝবেন সে-ও আপনার প্রেমে পড়েছে।
২. খুব সাধারণ বিষয়েও সে আপনার প্রতি তার আবেগ প্রকাশ করবে, যাতে আপনি বুঝতে পারেন আপনার প্রতি সে কতটা দুর্বল।
৩. আপনার সঙ্গে দেখা হওয়ার কোনো সুযোগই সে হাতছাড়া করতে চায় না। যত ঝামেলাই থাকুক না কেন ঠিক সে কোনো না কোনো উপায় খুঁজে বের করে।
৪. যেকোনো সমস্যার কথা সবার আগে আপনাকে বলার চেষ্টা করে। হয়তো আপনি কোনো সমাধানই দিতে পারেন না, তবুও সে আপনাকে বলে শান্তি পায়।
৫. কেমন জীবনসঙ্গী চায় সেই বিষয়গুলো যদি বারবারই আপনাকে বলে এবং আপনার কাছ থেকে কোনো উত্তর আশা করে, তাহলে বুঝবেন সে আপনাকে বোঝাতে চাচ্ছে যে, তার আপনার মতোই সঙ্গী প্রয়োজন।
৬. আপনি অনেক আনন্দে থাকলেও সে বুঝতে পারে, আবার খুব কষ্টে থাকলেও সে বুঝতে পারে। আপনার সব আচরণ সে যখন আয়ত্ব করে ফেলছে, আর আপনিও তার কাছে কিছু লুকিয়ে রাখতে পারছেন না, বুঝবেন সে প্রেমে পড়েছে।
৭. সে আপনার সম্বন্ধে সবই জানে। আপনার কী ভালো লাগে, কী অপছন্দ, কোন খাবার পছন্দ, কিসে বিরক্ত হন সবই সে জানে। এটাই তার প্রেমে পড়ার অনেক বড় একটা লক্ষণ।
৮. তার কাছে আপনার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ আর কোনো বিষয় নেই। আপনি যখন কথা বলতে আসেন তখন আপনার কথাকে বেশ মূল্যায়ন দিয়েই সে শোনে।
৯. ভালোলাগার মানুষটিকে অকারণে ফোন করতে ইচ্ছা করে। আর যদি দেখেন আপনার পছন্দের মানুষটি আপনাকে অকারণেই ফোন করে তাহলে বুঝবেন সে আপনার প্রতিই আকর্ষিত হচ্ছে।
সংগৃহীত
একতার কণ্ঠঃ রমজান মাসে রোগীদের খাদ্যব্যবস্থাপনা, ব্যায়াম, জীবনাচরণে পরিবর্তন আনতে হয়। হঠাৎ দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার কারণে শরীরে নানা জটিলতা দেখা দিতে পারে। নিয়মমাফিক চললে এসব জটিলতা এড়ানো সম্ভব।
হৃদরোগে যারা আক্রান্ত তাদের হঠাৎ রোজায় রক্তচাপ কমে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমতাবস্থায় করণীয় নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল ও ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ উল্লাহ ফিরোজ।
যারা উচ্চ রক্তচাপ বা হৃদরোগে ভুগছেন তারাও পবিত্র রমজান মাসে রোজা রাখতে চান এবং সাধারণত জানতে চান-রোজা রাখতে পারবেন কি না, ওষুধগুলো কীভাবে খাবেন, খাদ্যাভ্যাস এবং শারীরিক পরিশ্রম কেমন হবে।
যেসব রোগীর রক্তচাপ এবং হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণে আছে তাদের ক্ষেত্রে অধিকাংশ সময় রোজা রাখার জন্য কোনো রকম জটিলতা হয় না। যাদের হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণে নেই বিশেষ করে হার্ট ফেইলিউরের জন্য শ্বাসকষ্ট হয় অথবা গত তিন মাসের মধ্যে হার্ট অ্যাটাক হয়েছে তাদের জন্য রোজা রাখা ঝুঁকিপূর্ণ।
হৃদরোগ এবং উচ্চ রক্তচাপের ওষুধগুলো দিনে একবার, দু’বার বা তিনবার খেতে হয়। রোজার সময় চেষ্টা করতে হবে যেসব ওষুধ দিনে একবার বা দু’বার খাওয়া যায় সেগুলো দিয়ে রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। এ ব্যাপারে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। দিনে দু’বার খাওয়া ওষুধগুলো ইফতার এবং সেহরির সময় খাবেন। দিনে একবার খাওয়া ওষুধগুলো রাতের যে কোনো সময় খেতে পারেন।
ডাইউরেটিক বা শরীরের পানি কমার ওষুধ ইফতারের সময় খাবেন। এ ধরনের ওষুধের পরিমাণ কমাতেও হতে পারে। চর্বি জাতীয় খাবার এবং অতিরিক্ত লবণ দেওয়া খাবারগুলো পরিহার করবেন। একসঙ্গে অনেক খাবার না খেয়ে অল্প করে বারবার খাবেন। রাতের বেলা প্রয়োজনমতো পানি এবং তরল জাতীয় খাবার খাবেন।
শারীরিক ব্যায়াম দিনের বেলায় না করে রাতে করার চেষ্টা করুন। খাবার পরপরই ব্যায়াম করবেন না। এ মাসের জন্য ত্রিশ মিনিট হাঁটাই ভালো ব্যায়াম।
রোজার সময়ে দিনের বেলা রক্তচাপ বেশি কমে যেতে পারে এবং শরীরে লবণের পরিমাণ কমে যেতে পারে। এ পরিস্থিতিতে অবশ্যই পানি বা তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে এবং ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
আপনার ওষুধ বা ওষুধের মাত্রা পরিবর্তন করতে হতে পারে। রোজার সময় কোনোরকম জটিলতা দেখা দিলে, যেমন-শ্বাসকষ্ট বা বুকে ব্যথা বা অজ্ঞান হলে বা রক্তচাপ কমে গেলে, বিলম্ব না করে নিকটস্থ হাসপাতালে যোগাযোগ করবেন।
মনে রাখবেন-সময়মতো চিকিৎসা না নিলে মৃত্যু ঝুঁকি বেড়ে যাবে। যেসব রোগীর পেসমেকার বা ভাল্ব প্রতিস্থাপন করা আছে অথবা বাইপাস অপারেশন বা এনজিওপ্লাস্টি করা আছে তারাও রোজা রাখতে পারবেন। তবে বাইপাস অপারেশন বা এনজিওপ্লাস্টি করার পর প্রথম তিন মাস রোজা রাখা কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ।
সংবাদ সূত্র-যুগান্তর অনলাইন
একতার কণ্ঠঃ সাধারণত ডায়াবেটিসে নিউরোলজিক্যাল সমস্যাকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। একটি হচ্ছে— পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি। পায়ে-হাতে যে সমস্যাটি হয়। আরেকটা হচ্ছে— ইন্টার্নাল অর্গানের নার্ভ যখন যুক্ত হয়, সেটাকে বলা হয় অটোনোমিক নিউরোপ্যাথি। এর ফলে দেহের ভিতরের অনেক অঙ্গপ্রত্যঙ্গের সমস্যা হতে পারে।
আরো পড়ুনঃ শিশুদেরও কি ডায়াবেটিস হয়?
এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানিয়েছেন বারডেম জেনারেল হাসপাতাল ডায়াবেটিস ও হরমোন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. ফারিয়া আফসানা।
পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি
সাধারণত রোগীর কিছু নিউরোপ্যাথলজিক্যাল উপসর্গ (হাতে-পায়ে ঝি ঝি করা, জ্বালাপোড়া করা, ব্যথা করা, অলটার সেন্সেশন বা হেঁটে যাচ্ছেন পায়ের তলায় নরমাল একটা সেনসেশন হচ্ছে) দেখা দিতে পারে।
অটোনমিক নিউরোপ্যাথি
অটোনমিক নার্ভ আক্রান্ত হলে দেহের ভিতরের অনেক অঙ্গপ্রত্যঙ্গের সমস্যা হতে পারে। যেমন আমাদের হৃদপিণ্ড ও রক্ত পরিবহন তন্ত্র আক্রান্ত হলে হৃদপিণ্ডের গতি বেড়ে যায়। শোয়া বা বসা থেকে উঠে দাঁড়ালে রক্তচাপ কমে যায় ও মাথা ঘোরে। অনেকসময় পরিপাক তন্ত্রেরও সমস্যা হয়। ফলে মনে হয় পেটের মধ্যে খাবার জমে আছে।
তাছাড়াও যৌন ক্ষমতাও অনেক সময় কমে যায়। প্রস্রাব ও মল ত্যাগে নানারকম সমস্যা দেখা যায়। শরীরের নীচের অংশে ঘাম কম তৈরি হয়। ফলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। এর ফলে পা ফেটে যায় ও পায়ে আলসার হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।
সবচেয়ে ভয়ের ব্যাপার অনেক ক্ষেত্রে অটোনোমিক নিউরোপ্যাথি রোগী হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা রক্তে গ্লুকোজ কমে গেলে বুঝতে পারে না। যার ফলে তার গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণের সময় অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হয়।
বিশেষ করে কার্ডিয়াক বা হার্টের সমস্যা নিয়ে, যেমন- পুসচারাল ড্রপ বা পুসচারাল হাইপারটেনশন নিয়ে প্রেজেন্ট করতে পারে।
ইউরোলজিক্যাল বা ইউরিনারি ব্লাডারের সমস্যা হলে- প্রস্রাবের কিছু সমস্যা হতে পারে। (রিটেনশন হয়ে যাওয়া, প্রস্রাব আটকে থাকা, কন্ট্রোলে না থাকা) এই ধরনের সমস্যা ডায়াবেটিসে নিউরোপ্যাথি নিয়ে আসতে পারে।
তাহলে এই নিউরোপ্যাথির উপসর্গগুলো কিন্তু আমাদের আসলে কো-রিলেট করতে হবে। ডায়াবেটিস রোগীর যখন অর্গানের জটিলতা শুরু হয়, তখন সার্চ করতে হবে অন্যান্য অর্গানের নিউরোপ্যাথি আছে কি না? সেটাও দেখে নিতে হবে। সাধারণভাবে পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি বা হাতে-পায়ের এই উপসর্গগুলো নিয়েই কিন্তু বেশি পেশেন্ট এসে থাকে নিউরোলজিক্যাল উপসর্গ নিয়ে।
সেই ক্ষেত্রে আমরা নিউরোলজিক্যাল কিছু পরীক্ষা আছে সেটার মাধ্যমে ডায়াগনোসিস করি। রোগীর নিউরোপ্যাথি আছে কি না। আর ইন্টার্নাল অর্গানে বা অটোনোমিক নিউরোপ্যাথি যেগুলো, সেগুলো একটা অর্গানে যদি নিউরোপ্যাথি থাকে, তাহলে আমরা ধরে নেই অন্যান্য অর্গানেও নিউরোপ্যাথি হয়েছে। সেই হিসেবে সব অর্গানের চিকিৎসা করতে হবে।
ডায়াবেটিসে আরও যেসব সমস্যা হতে পারে?
ডায়াবেটিসজনিত চোখের সমস্যা বা রেটিনোপ্যাথি, ডায়াবেটিসজনিত কিডনি বা নেফ্রোপ্যাথি, এবং ডায়াবেটিসজনিত পায়ের নার্ভ বা নিউরোপ্যাথিক সমস্যা হতে পারে। এই প্রধান সমস্যাগুলো আমরা মাইক্রোভাস্কুলার কম্প্লিকেশন হিসেবে পেয়ে থাকি।
আরেকটা জটিলতা হচ্ছে ম্যাক্রোফেস্কুলার বা বড় বড় রক্তনালীগুলো যখন ইনভলভ হয়। যেমন- স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক অথবা পায়েল রক্ত চলাচলে সমস্যা, পেরিফেরাল ভাস্কুলার ডিজিজ নিয়েও আসতে পারে। মোটামুটি ভাবে এইগুলোই বড় কম্প্লিকেশন।
অবশ্যই মনে রাখতে হবে, এই জটিলতাগুলো শুনে ভয় পাওয়ার কিছু নাই। যদি ডায়াবেটিস সুনিয়ন্ত্রিত থাকে অবশ্যই আমরা জটিলতা থেকে মুক্ত থাকতে পারি।
সংবাদ সূত্র-যুগান্তর অনলাইন
একতার কণ্ঠঃ সুস্থতার জন্য কিডনির সুস্থতা জরুরি। শিশুদের অনেকেই এখন কিডনি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আবার যে কোনো গুরুতর অসুখ অথবা ওষুধের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার কারণেও শিশুদের কিডনি সহজেই ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই শিশুর কিডনির বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
রক্তের মধ্যে জমে থাকা দূষিত পদার্থ বের করা ও প্রয়োজনীয় পদার্থ ধরে রাখা; শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা; বিভিন্ন হরমোন তৈরি করা ও তৈরিতে সাহায্য করা; রক্তের কণিকা তৈরিতে সাহায্য ও শরীরের হাড়কে সুস্থ রাখা ইত্যাদি কাজ করে কিডনি। প্রতিটি কাজই মানব শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং কিডনি সুস্থ না থাকলে এসব কাজে বিঘ্ন ঘটে ও শারীরিক বিপর্যয় দেখা দেয়। বিশেষ করে শিশুদের ঝুঁকি বেশি।
শিশুদের কিডনি সমস্যা নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন এভারকেয়ার হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক্স অ্যান্ড নিউনেটোলজি ডিপার্টমেন্টের সিনিয়র কনসালটেন্ট এবং কো-অর্ডিনেটর ডা. সাবিনা সুলতানা।
শিশুর কিডনি রোগের লক্ষণ
ঘন ঘন প্রস্রাব করা, প্রস্রাবে ইনফেকশন হওয়া; ফোঁটা ফোঁটা প্রস্রাব করা, বিছানায় প্রস্রাব করা (৬ বছরের অধিক বয়সে), প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়া, প্রস্রাবের সময় তলপেট/কোমর ব্যথা করা, শরীরে পানি আসা/ফুলে যাওয়া, প্রস্রাব কমে যাওয়া, কিডনিতে পানি জমা হওয়া, কিডনি ছোট-বড় হওয়া, উচ্চরক্তচাপ দেখা দেওয়া, কিডনিতে জম্মগত ত্রুটি থাকা- এসব লক্ষণ দেখা গেলে, পরিবারের কারও কিডনি রোগ থাকলে, শিশু সময়ের আগে জন্মগ্রহণ করলে, জন্মের পর শিশুর ওজন স্বাভাবিকের তুলনায় কম হলে দেরি না করে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে হবে।
শিশু যদি ক্রনিক কিডনি ডিজিজ বা সিকেডিতে আক্রান্ত হয়, কিডনি পুরোপুরি অক্ষম হয়, ডায়ালাইসিস বা কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হয় তবে চিন্তার কিছু নেই। দেশেই এখন কিডনি রোগের সুচিকিৎসা সম্ভব। এছাড়া নিয়মিত ফলো-আপ, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, সঠিক খাদ্যাভ্যাস, শারীরিক চর্চা ইত্যাদির মাধ্যমে দীর্ঘদিন সুস্থভাবে বেঁচে থাকা সম্ভব।
শিশুর জন্মগত কিডনি রোগ আলট্রাসনোগ্রাফির মাধ্যমে ধরা পড়ে। মূত্রনালি ও মূত্রাশয়ের গঠনগত সমস্যা; মূত্রপথের ভাল্বের কার্যক্রমে বাঁধা; কিডনি থাকা না থাকা; বিভিন্ন আকারে অর্থাৎ ছোট-বড় থাকা; ঠিক জায়গা মতো না থাকা; কিডনি ফোলা থাকা ইত্যাদি সমস্যা সম্পর্কে আলট্রাসনোগ্রাফির মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যায়।
শিশুর মূত্রনালির সংক্রমণ (ইউটিআই) শিশুদের অন্যতম প্রধান একটি রোগ। অনেক ক্ষেত্রেই এ রোগের সঠিক নির্ণয় ও চিকিৎসা নিয়ে অবহেলা করা হয়। ফলে বার বার সংক্রমণের দরুন শিশুর কিডনি নষ্ট হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। পাশাপাশি ভবিষ্যতে উচ্চরক্তচাপের ঝুঁকি বেড়ে যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সঠিক চিকিৎসার অভাবেই শিশুদের কিডনির কার্যকারিতা নষ্ট হয়।
এসব বিষয়ে অভিভাবকদের বেশি সচেতন থাকতে হবে। শিশুদের প্রস্রাবের সংক্রমণ অবহেলা না করে সঠিক সময়ে যথাযথ চিকিৎসা গ্রহণে কিডনির রোগ প্রতিরোধ বা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
সংবাদ সূত্র-যুগান্তর অনলাইন
একতার কণ্ঠঃ ডায়াবেটিস সর্বগ্রাসী রোগ। এ রোগ একবার কারো হলে শরীরে নানা জটিলতা বাড়তে থাকে। মধ্যবয়সে সাধারণত ডায়াবেটিস ধরা পড়ে। তবে বর্তমানে তরুণ বয়সেও অনেকে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়। শিশুদেরও ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি আছে কিনা এমন প্রশ্ন জনে জনে।
আরো পড়ুনঃ কিডনি রোগের লক্ষণ, প্রতিরোধে কী করবেন?
মূলত মানসিক দুশ্চিন্তা, ওজন বেড়ে যাওয়া, কায়িক শ্রমের ঘাটতি, বংশীয় কারণ, খাদ্যাভ্যাস ও জীবন পদ্ধতির পরিবর্তন এসব কারণে ডায়াবেটিস হয়ে থাকে। ডায়াবেটিস ধরা পড়ার আগেই সতর্ক থাকতে হয়।
শিশুদের ডায়াবেটিস রোগের ঝুঁকি নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ও পেডিয়াট্রিক কার্ডিয়াক সোসাইটি অব বাংলাদেশের অধ্যাপক ডা. মনজুর হোসেন।
শিশুদের মধ্যেও ডায়াবেটিসের প্রকোপ বাড়ছে। বেশিরভাগ শিশু শৈশবে টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়। তবে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। আগে চিকিৎসকরা জানতেন যে বাচ্চারা কেবল টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয় এবং একে দীর্ঘকাল ধরে কিশোর ডায়াবেটিস (Juvenile Diabetes) নামে নামকরণ করা হতো। শিশুদের মধ্যে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের একক প্রধান কারণ হলো অতিরিক্ত ওজন। যখন কোনো শিশুর ওজন খুব বেশি বেড়ে যায়, তখন তাদের ডায়াবেটিস হওয়ার আশংকা দ্বিগুণ হয়।
শিশুদের টাইপ-১ ডায়াবেটিস অবস্থায় শরীরে ইনসুলিন উৎপাদনে ঘাটতি দেখা দেয়। এক্ষেত্রে বেঁচে থাকার জন্য ইনসুলিনের দরকার পড়ে। ইনসুলিনের ঘাটতি বা অভাবকে ইনসুলিন ইঞ্জেকশন বা পাম্পের মাধ্যমে পূরণ করা হয়। অগ্ন্যাশয় ইনসুলিন তৈরির ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে কারণ ইনসুলিন উৎপাদনকারী কোষগুলো ধ্বংসের কারণে এমনটি হয়। কেন এমনটি ঘটে তা সঠিকভাবে কেউ জানেন না, তবে বিজ্ঞানীরা মনে করেন এটা জিনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। টাইপ-১ ডায়াবেটিস সম্ভবত ভাইরাসের সংক্রমণের কারণেও হয়ে থাকে। অন্যদিকে, টাইপ-২ ডায়াবেটিসে, অগ্ন্যাশয়ের ইনসুলিন তৈরিতে কোনো ব্যাঘাত হয় না। তবে শরীর এক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবে সাড়া দেয় না বা প্রতিক্রিয়া দেখাতে ব্যর্থ হয়। ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স্ (Insulin Resistance)-এর কারণে এ সমস্যা দেখা দেয় যখন গ্লুকোজ কোষগুলোতে প্রবেশ করতে পারে না এবং শক্তি সরবরাহ করার সক্ষমতা কমে যায়। এ কারণে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়, ফলে পর্যায়ক্রমে অগ্ন্যাশয় আরও বেশি বেশি ইনসুলিন তৈরি করতে সচেষ্ট হয়। অবশেষে, এক সময় অগ্ন্যাশয় রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে পর্যাপ্ত ইনসুলিন উৎপাদন করতে ধীরে ধীরে অক্ষম হয়ে পরে।
টাইপ-২ ডায়াবেটিসের জন্য বাচ্চাদের ঝুঁকির তিনটি কারণ-
* পরিবারের একজন সদস্যের টাইপ ২ ডায়াবেটিস থাকলে।
* মায়ের গর্ভকালীন ডায়াবেটিসসহ (গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস) জন্ম নেওয়া শিশুদের।
* যদি সন্তানের ওজন বেশি হয় এবং ওপরের দুটি ঝুঁকির কারণ থাকে।
ডায়াবেটিসের লক্ষণ : রক্তে উচ্চমাত্রার শর্করার জন্য ঘনঘন প্রস্রাব হয় এবং খুব তৃষ্ণার্ত থাকে বিধায় প্রচুর পানি পান করতে হয়। ক্লান্তি বা অবসাদ বোধ থাকে। কারণ শরীর শক্তির জন্য গ্লুকোজ সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারে না। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত শিশু এবং কিশোরদের ক্ষুধা বাড়তে পারে তবে ক্ষুধার্ত কোষগুলোকে জ্বালানি সরবরাহ করার প্রয়াসে শরীর পেশি ভেঙে ফ্যাট সংরক্ষণ করে যার জন্য ওজন হ্রাস পায়।
ডায়াবেটিসের চিকিৎসা : শিশুর টাইপ-১ বা টাইপ-২ ডায়াবেটিস আছে কিনা তা নির্ণয় করা আবশ্যক। কারণ ডায়াবেটিসের নিয়ন্ত্রণ এবং চিকিৎসা টাইপের ভিত্তিতে পৃথক হয়। মেটফরমিন নামে একটি ওষুধ গ্রহণের প্রয়োজন হতে পারে। এটি এবং ইনসুলিন হলো ১৮ বছরের চেয়ে কম বয়সি শিশুদের জন্য রক্তে শর্করার হ্রাসকারী দুটি ওষুধ মাত্র।
চিকিৎসা অর্থাৎ লক্ষণগুলো হ্রাস করার জন্য ভালো ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, স্বাস্থ্য সমস্যা প্রতিরোধ এবং শিশু যাতে স্বাভাবিকভাবে তার শারীরিক, মানসিক, সংবেদনশীলতা বজায় রেখে সামাজিক বৃদ্ধি এবং বিকাশে সম্ভব হয়। আর এর জন্য, বাবা-মাকে লক্ষ রাখতে হবে শিশুর রক্তের শর্করার মাত্রা যতটা সম্ভব লক্ষ্য সীমার মধ্যে রাখা।
ডায়াবেটিসের কোনো নিরাময় নেই, ডায়াবেটিসের জন্য আজীবন চিকিৎসা প্রয়োজন। টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত শিশু-কিশোররা তাদের রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে প্রতিদিন ইনসুলিন ইনজেকশন বা ইনসুলিন পাম্পের ওপর নির্ভর করে। শিশুদের মধ্যে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে লক্ষণ ধীরে ধীরে বিকাশ লাভ করে এবং প্রথম দিকে কোনো লক্ষণই থাকে না। কখনো নিয়মিত চেক-আপের সময় এই ব্যাধিটি শনাক্ত করা হয়।
ডায়াবেটিস থেকে জটিলতা
অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসে ভবিষ্যতে হৃদরোগ, অন্ধত্ব দেখা দিতে পারে এবং কিডনি অকার্যকর হওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। এমনকি অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসে মৃত্যুঝুঁকিও বেড়ে যায়। এছাড়া ডায়াবেটিসে পরবর্তী জীবনে সরু রক্তনালি, উচ্চরক্তচাপ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। স্নায়ু বা নার্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
প্রতিরোধ
তরুণদের মধ্যে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের সমস্যা বাড়ছে। বাবা-মায়ের স্বাস্থ্য সচেতনতা ও জীবনধারা পরিবর্তনের মাধ্যমে এ ভয়াবহ অবস্থার প্রতিরোধ সম্ভব। স্থূলতা বা যাদের ওজন বেশি-বিশেষ করে যদি তাদের পেটের চর্বি বেশি থাকে-তাদের ইনসুলিন অকার্যকর বা প্রতিরোধ (Insulin Resistance) হওয়ার আশংকা বেশি থাকে, তাই টাইপ-২ ডায়াবেটিসের জন্য ইনসুলিন প্রতিরোধ একটি প্রধান ঝুঁকির কারণ। ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সের সাধারণত কোনো উপসর্গ থাকে না, যদিও কিছু বাচ্চার ত্বকে ঘন, গাঢ়, কাল মখমল প্যাঁচ তৈরি হয় যাকে অ্যাক্যানথোসিস নিগ্রিকানস (Acanthosis Nigracans) বলা হয়, সাধারণত ঘাড়ের পেছনে বা বগলের মতো শরীরের ক্রিজ এবং ভাঁজগুলোতে।
সংবাদ সূত্র-যুগান্তর অনলাইন
একতার কণ্ঠঃ ডায়াবেটিস ও কিডনি রোগ হচ্ছে নীরব ঘাতক। যাদের এ দুটোর কোনো একটি স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেয় তাদের যাতনার শেষ নেই। চলাফেরা, জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাসে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে হয়। বিভিন্ন কারণে কিডনির কার্যকারিতা কমে গেলে একজন মানুষ নানাবিধ শারীরিক জটিলতার মুখে পড়েন। এমনকি কিডনি একেবারে অকার্যকর হয়ে গেলে মৃত্যু সুনিশ্চিত।
কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিরোধের উপায়গুলো জানা থাকলে অনেক সময় সুস্থ জীবন যাপন করা সম্ভব। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন ইনোভেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট একশনের (ক্রিডা) ডা. সুপ্রিয় পাল।
মানবদেহের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ হলো কিডনি (বাংলায় বৃক্ক বলা হয়)। কিডনি রক্তে উপস্থিত দূষিত পদার্থগুলো পরিশোধন করে এবং মূত্র তৈরি করে সেগুলো দেহ থেকে বের করে দেওয়ার ব্যবস্থা করে। একটি অসুস্থ বা অকার্যকর কিডনির কারণে একজন মানুষ দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে ধুকে ধুকে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হয়। এজন্য অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সুস্থ রাখার পাশাপাশি কিডনি সুস্থ রাখা অত্যন্ত জরুরি।
কিডনি রোগের উপসর্গ ও লক্ষণ
প্রাথমিক পর্যায়ে কিডনি রোগের তেমন কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায় না। ধীরে ধীরে কিডনির কার্যক্রম ক্ষমতা কমতে থাকলে লক্ষণগুলো প্রকাশ পেতে শুরু করে। ক্ষুধামন্দা, শরীরে ওজন হ্রাস পাওয়া, শরীরের বিভিন্ন অংশে (হাত, পা, মুখ) পানি জমে ফুলে যাওয়া, প্রস্রাবের পরিমাণ হ্রাস পাওয়া বা প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়া, শরীরে ক্লান্তিভাব আসা, ঘুম কম হওয়া, অসুস্থ বোধ করা, শরীরের বিভিন্ন অংশে চুলকানি হওয়া, মাঝে মাঝেই মাথাব্যথা হওয়া ইত্যাদি লক্ষণ ক্রনিক কিডনি ডিজিসের শেষ পর্যায়ে প্রকাশ পেতে শুরু করে।
কিডনি রোগের ঝুঁকির কারণ
ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, হৃদরোগ, কিডনি রোগের পারিবারিক ইতিহাস, শরীরের অতিরিক্ত ওজন, ধূমপান, কিডনির জন্য ক্ষতিকর এমন ওষুধ সেবন, জন্মগত কিডনির সমস্যা, ৬০ বছরের ঊর্ধ্ব ব্যক্তি, প্রভৃতি কিডনি রোগের ঝুঁকির জন্য অন্যতম।
প্রতিরোধে করণীয়
কিডনি রোগের অন্যতম ঝুঁকির কারণ ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপ। সুতরাং যাদের দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপ আছে, তাদের নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন ও ওষুধ সেবন করা বাধ্যতামূলক, যেন ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ সবসময় নিয়ন্ত্রণে থাকে।
নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে এবং শরীরের অতিরিক্ত ওজন দ্রুত কমিয়ে ফেলতে হবে। যারা ধূমপান করে, তাদের জন্য ধূমপান ত্যাগ করার অন্যতম একটি কারণ হতে পারে। খাবার পাতে অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। রক্তে কলস্টেরল যেন সবসময় স্বাভাবিক মাত্রায় থাকে, সেদিকে লক্ষ্য রাখা উচিত। প্রতিদিন বেশি পরিমাণে শাকসবজি ও ফলমূল খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। তবে যাদের কিডনি রোগ আছে, তাদের ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ না নিয়ে ফলমূল খাওয়া যাবে না। কিডনি রোগীদের ক্ষেত্রে নিয়মিত ওষুধ সেবন এবং রুটিন চেকআপ করানো আবশ্যক।
সংবাদ সূত্র-যুগান্তর অনলাইন
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে ব্যতিক্রমী শিশুমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) সকালে শহরের হাতেখড়ি প্রি-প্রাইমারী স্কুল কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
জানা যায়, শহরের হাতেখড়ি প্রি-প্রাইমারী স্কুল প্রাঙ্গণে আয়োজিত মেলায় শিশুরাই ক্রেতা ও বিক্রেতার ভূমিকায় ছিল। এই মেলায় একাধিক স্টলে শিশুরা বিভিন্ন খাবার ও খেলনা সামগ্রী নিয়ে বসে। তবে এই খাবার সামগ্রীগুলো বিনামূল্যে অন্যান্য শিশুরা সংগ্রহ করে। মেলা উপলক্ষে শিশুরা মেতে ওঠে আনন্দে-উল্লাসে। দীর্ঘদিন পর বিদ্যালয় খোলার শুরুতেই এমন আয়োজন দেখে শিশু-শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি মুগ্ধ অভিভাবকগণ।
এদিকে, মেলায় জিলাপি, আকরি, চিনি সাঁজ, কদমা, চিতই পিঠা, তেলের পিঠা, কুলি পিঠা, খাজা, পোড়াবাড়ির চমচম, মাটির খেলনা, হাড়ি-পাতিলসহ নানান কিছুর পসরা সাজিয়ে আনন্দে দোকান করে তারা। মেলায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনও করা হয়। তবে অনুষ্ঠানে ছিলো না কোনও বড় অতিথি অথবা শিল্পী। এদিন সব দাঁয়িত্ব ও অতিথির আসনেও বসেছিল এই শিশুরাই।
অভিভাবক সামিমা সিথি বলেন, ‘বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এমন আয়োজনকে আমরা সাধুবাদ জানাই। দীর্ঘদিন পর বিদ্যালয় খুলেছে। শিক্ষার্থীদের মনটাও ভালো ছিল না। তারা গম্ভিরভাবে দীর্ঘদিন বাসায় আটকা ছিল। সম্প্রতি বিদ্যালয় খুলেছে। বিদ্যালয় খুলেই এমন আয়োজন দেখে শিশুরা অনেক খুশি হয়েছে। যান্ত্রিক এবং প্রতিযোগিতার বাজারে বেড়ে ওঠা শিশুদের মানসিক বিকাশে এমন আয়োজন আরও হওয়া উচিত।’
অভিভাবক সুমাইয়া পারভীন শিলা বলেন, ‘সত্যিই এটা একটা ব্যতিক্রমী আয়োজন। আর শিশুরাই আমাদের ভবিষ্যৎ। এদিন শিশুরা অনেক আনন্দে কাটিয়েছে। শিশুমেলায় উৎসবমূখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। আনন্দ-উল্লাসে মেতে ওঠে শিশুরা।’
হাতেখড়ি প্রি-প্রাইমারী স্কুলের চেয়ারম্যান সাংবাদিক নওশাদ রানা সানভী বলেন, ‘আমরা বরাবরই বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান আয়োজন করে থাকি। এবার একটু ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। করোনাকালে বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় শিশুরা তাদের বাসায় দীর্ঘদিন আটকে ছিল।
তিনি আরো বলেন, অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সাথে মেশার সুযোগ ছিল না। এজন্য আমরা শিশুদের মাঝে তার সহপাঠীর সঙ্গে আরও বন্ধুত্বপূর্ণ ভালোবাসা সৃষ্টির লক্ষে এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের জন্মদিন ও শিশু দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য আমরা এই শিশুমেলার আয়োজন করেছি। এই বিশেষ দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে ও শিশুদের মাঝে আনন্দ দিতে এবং গ্রামীণ ঐতিহ্য তুলে ধরতেই আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস।