একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া ইউয়িনের ভাতকুড়া গ্রামে ব্যাপক উত্তেজনার মধ্য দিয়ে তাবলিগ জামাতের সাদপন্থীদের জেলা ইজতেমা শান্তিপূর্ণভাবে শুরু হয়েছে।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানান, বিশৃংখলা এড়াতে শহরে ও ইজতেমাস্থলে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিবেশ স্বাভাবিক রয়েছে।
বৃহস্পতিবার(১৬ ফেব্রুয়ারি) ফজরের নামাজের পর আম বয়ানের মধ্য দিয়ে এই ইজতেমা শুরু করা হয়।
অপরদিকে জুবায়েরপন্থীরা স্থানীয় প্রশাসনের সাথে আলোচানার পর বুধবার(১৫ ফেব্রুয়ারি) রাতেই শহরের মারকাজ মসজিদের অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত করেছেন।
জানা যায়, তাবলিগ জামাতের জেলা ইজতেমার আয়োজনকে ঘিরে সাদ ও জুবায়েরপন্থীদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। জুবায়েরপন্থীরা স্থানীয় প্রশাসনের কাছে এই আয়োজন বন্ধের দাবি জানায়। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দেয়।
টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে জুবায়েরপন্থীরা অভিযোগ করেন, ভাতকুড়া এলাকার ইজতেমায় নানা বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হবে। তাই তারা ইজতেমার বন্ধের দাবি জানান।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সদর উপজেলার ভাতকুড়ায় গিয়ে দেখা যায়, বিশাল মাঠজুড়ে প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে। সেখানে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আসা কয়েক হাজার মুসল্লি অবস্থান করছেন। নিরাপত্তার জন্য সেখানে পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে। পুরো এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে।
ইজতেমা আয়োজক কমিটির খাদেম মুফতি মোস্তফা খলিল চৌধুরী জানান, বৃহস্পতিবার ফজরের নামাজের পর থেকে ইজতেমার মূল আমল শুরু করা হয়েছে। ফজর থেকে সকাল আটটা পর্যন্ত তিনি প্রথমে বয়ান করেন। এরপর সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত তালিমের মৌজ নিয়ে আলোচনা করেন মুফতি শহিদুল্লাহ। এরপর বিদেশি মেহমানেরা পুরো ইজতেমা মাঠকে ২০ ভাগে ভাগ করে আলাদা আলাদা তালিম করেছেন। জোহরের পর সৌদি আরবের মেহমান শেখ মোহাম্মদ আল খামিদ বয়ান করেন। আসরের নামাজের পর ঢাকার মাওলানা এহসান বয়ান করছিলেন।
তিনি আরো জানান, মাগরিবের নামাজের পর ঢাকার মুফতি ওসামা ইসলাম বয়ান করবেন। ইজতেমার প্রধান মাঠে ১২ হাজার মুসল্লি রয়েছেন। এছাড়া আশপাশের মাঠে আরও তিন হাজার মুসল্লিকে জায়গা দেওয়া হয়েছে। আগামিকাল শুক্রবার(১৭ ফেব্রুয়ারি) জুমার নামাজে ১৫ হাজারের বেশি মুসল্লি অংশগ্রহণ করবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।
অপরদিকে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে জুবায়েরপন্থী ও টাঙ্গাইল জেলা কওমী ওলামা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুফতি শামছুল হক কাসেমী জানান, নেজামউদ্দিন অনুসারী সাদ পন্থীরা তাবলীগ জামাতের নামে ইসলামের অপব্যাখ্যা করে মুসলমানের মাঝে বিশৃংখলা সৃষ্টি করছে। এছাড়াও পুলিশ প্রশাসনের দায়িত্বশীল কিছু কর্মকর্তা তাদের সঙ্গে পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে। এতে তাদের দাওয়াতি কাজকর্ম ব্যপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এই বিষয়গুলোর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য তিনি প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
এদিকে সাদপন্থী তাবলীগ জামাতের জেলার জিম্মাদার এনামুল হক জানান, তাদের যেসব সদস্য টঙ্গী ইজতেমায় যেতে পারেনি তাদের জন্য মূলত ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে তিন দিনব্যপী ইজতেমা শুরু হয়েছে। এখানে ৯টি দেশের তাবলীগ জামাতের সদস্যরা অংশ নিচ্ছে। তারা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে ইজতেমার আয়োজন করেছেন। মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট তথ্য দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও অপপ্রচার চালাচ্ছে কওমী ওলামা পরিষদ।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানান, জোবায়েরপন্থী কওমী ওলামা পরিষদের লোকজন তার কাছে গিয়েছিলেন। তাদেরকে শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠান পালনের জন্য বলা হয়েছে। তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কোন ধরণের সংঘর্ষে জড়াবেন না। তারপরও বিশৃংখলা এড়াতে শহরে ও ইজতেমাস্থলে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিবেশ স্বাভাবিক রয়েছে।
একতার কণ্ঠঃ বর্ণাঢ্য আয়োজনে টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ১০ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে।
বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক ভবনের সামনে কেক কেটে প্রতিষ্ঠা বার্ষির্কী উদ্যাপন কর্মসূচির উদ্বোধন করেন ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. ফরহাদ হোসেন।
পরে একটি বার্ণাঢ্য আনন্দ র্যালি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে। এই র্যালিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো. সিরাজুল ইসলাম, ডিন ও বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সঞ্জয় কুমার সাহা ও বিভাগের অন্যান্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশ গ্রহণ করেন।
এছাড়া ১০ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিকেলে খেলাধুলা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে বাবা আউয়ালকে ভাড়াটিয়া খুনি দিয়ে হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি আসাদুজ্জামান মিয়াকে (৫০) আটক করেছে টাঙ্গাইল র্যাব-১৪, সিপিসি-০৩ এর সদস্যরা।
বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও থানাধীন মোগরাপাড়া এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়েছে।
২০১৩ সালে বাবা আউয়ালকে ভাড়াটিয়া খুনি দিয়ে তার ছেলে আসাদুজ্জামান হত্যা করিয়েছিল। সাক্ষী-প্রমাণ শেষে ২০২০ সালে আসামিকে মৃত্যু দণ্ডাদেশ দেন বিচারক।
টাঙ্গাইল র্যাব-১৪ এর কোম্পানি কমান্ডার রফিউদ্দীন মোহাম্মদ যোবায়ের বুধবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, ২০১৩ সালের টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর থানার চাঞ্চল্যকর আউয়াল হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও থানাধীন মোগরাপাড়া এলাকায় আত্মগোপনে আছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার সকালে অভিযান পরিচালনা করে আটক করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আসামি নিজের বাবাকে হত্যার উদ্দেশে চারজন ভাড়াটিয়া খুনির সঙ্গে অর্থের বিনিময়ে চুক্তি করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৩ সালের ৩০ জুন রাত ১টার দিকে আসামির বসতবাড়ির দক্ষিণ-পূর্ব পাশের বারান্দা চৌকির ওপর তার বাবা আউয়ালকে গলা কেটে হত্যা করে। এ ঘটনায় পরদিন মির্জাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শ্যামল কুমার দত্ত বাদী হয়ে ১টি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
তিনি আরো জানান, হত্যা মামলায় বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ, ২য় আদালত, টাঙ্গাইল বিচার শেষে গত ২০২০ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি আসামিকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেন। মামলার বিচারকাল থেকে আসামি পলাতক ছিলেন।
র্যাব-১৪ এর কোম্পানি কমান্ডার রফিউদ্দীন মোহাম্মদ যোবায়ের জানান, ‘আসামিকে সংশ্লিষ্ট আদালতে সোপর্দ করে মির্জাপুর থানায় হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন।’
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচিতে হামলার অভিযোগ উঠেছে। বিএনপির নেতা–কর্মীদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের কর্মীরা হামলার সঙ্গে জড়িত। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি )দুপুরে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার মগড়া ইউনিয়নের ছোট বাসালিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে সদর উপজেলার করটিয়া মসজিদ রোড এলাকায় বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচি থেকে সরকারি সা’দত কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাদিদুল ইসলাম ও যুবদল কর্মী মাকসুদকে আটক করেছে পুলিশ।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল জানান, শনিবার দুপুরে মগড়া ইউনিয়নের ছোট বাসালিয়া এলাকায় বিএনপির নেতা–কর্মীরা পদযাত্রা কর্মসূচি শুরু করেন। এ সময় আওয়ামী লীগের কর্মীরা তাঁদের ওপর হামলার করেন। এতে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে প্রতিপক্ষের হামলায় যুবদল কর্মী জীবন ও ছাত্রদল কর্মী সিদ্দিক হোসেন আহত হন। তাঁদের স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
বিএনপির দুই কর্মী আটক প্রসঙ্গে ফরহাদ ইকবাল আরো জানান, সদর উপজেলার করটিয়া মসজিদ রোড থেকে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচি উপলক্ষে মিছিল বের করার চেষ্টা করেন। পাশেই শহীদ মিনারে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ চলছিল। বিএনপির মিছিলটি বের হওয়ার পরই পুলিশ তাদের বাধা দেয়। পরে ওই মিছিল থেকে সরকারি সা’দত কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাদিদুল ইসলাম এবং যুবদল কর্মী মাকসুদকে পুলিশকে আটক করে। এর আগে শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি ) রাতে সরকারি সা’দত কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদুল মান্নানকে পুলিশ আটক করে।
বিএনপির নেতা–কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে মগড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা ফরহাদ হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।
টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুস সালাম মিয়া জানান, করটিয়া থেকে শুক্রবার রাতে আটক একজন ও শনিবার দুপুরে আটক দুজনকে পূর্বের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে পূর্বেই নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে মামলা ছিল।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (মাভাবিপ্রবি) এ র্যাগিং এ জড়িত থাকার অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের ১৩ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ পর্ষদ রিজেন্ট বোর্ডের ২৩ জানুয়ারির ২২৯তম সভায় কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের ২০১৯- ২০২০ শিক্ষাবর্ষের নাফিসুজ্জামানকে (শিক্ষার্থী আইডি -সিই ২০০৩৮) পরবর্তী ৪ সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
এছাড়া মিসাইল হোসেন আসিফকে (শিক্ষার্থী আইডি সিই- ২০০৩৯) ২ সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। মো. ফাহিম আল হাসানকে (শিক্ষার্থী আইডি সিই -২০০৩০) ১ সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার, রাফিয়া জামান মুক্তিকে (আইডি সিই ২০০১৭) ১ সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার, মাহবুবা আক্তারকে (শিক্ষার্থী আইডি সিই ২০০১১) ১ সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার, রূপা রানীকে (শিক্ষার্থী আইডি-সিই ২০০২৫) ১ সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
উপরোক্ত ছয়জনের বাইরেও কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের আরো সাত শিক্ষার্থীকে মুচলেকা দিতে বলা হয়েছে। তারা হলেন, আশিকুর রহমান আকিব (সিই-২০০০৯), হুসনে বানু বৃষ্টি (সিই- ২০০১৪), সৈয়দ মাহিদ ফয়সাল (সিই-২০০০৫), সিফাইত সারোয়ার (সিই-২০০৪২), নাইমুর রহমান (সিই-২০০০৬), ওয়াসিফ বিন জহির (সিই ২০০২২) ও মনির হোসাইন (সিই-২০০০২)।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ পর্ষদ রিজেন্ট বোর্ড থেকে উপরোক্ত সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মোহা. তৌহিদুল ইসলাম।
প্রসঙ্গত, শাস্তিপ্রাপ্ত ১৩ জন শিক্ষার্থীই বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের ২০১৯- ২০২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
একতার কণ্ঠঃ নানা আয়োজনে টাঙ্গাইলে মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর “ঐতিহাসিক কাগমারী” সম্মেলনের ৬৬ বছর উদযাপন করা হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে শহরের ভিক্টোরিয়া রোডস্থ টাঙ্গাইল সাধারণ গ্রন্থাগার মিলনায়তনে মওলানা ভাসানী ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,মওলানা ভাসানী ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা কবি বুলবুল খান মাহবুব।
মওলানা ভাসানী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান খন্দকার নাজিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব মাহমুদুল হক সানুর সঞ্চালনায় মূখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, প্রাবন্ধিক, কবি ও সমাজ বিশ্লেষক অধ্যাপক শংকর দাস, মওলানা ভাসানী ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা হারুন অর রশিদ, টাঙ্গাইল সাধারণ গ্রন্থাগারের সাধারণ সম্পাদক কবি মাহমুদ কামাল প্রমুখ।
সভায় ভাসানী ছাত্র, যুব ও সাংস্কৃতিক ফাউন্ডেশনের নেতৃবৃন্দসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ গ্রহণ করে । পরে একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এছাড়া ঐতিহাসিক এই দিবসটি উপলক্ষে টাঙ্গাইলের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করে।
উল্লেখ্য,১৯৫৭ সালের ৬, ৭ ও ৮ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইলের কাগমারীতে মওলানা ভাসানী ৫৪টি তোরণের মধ্য দিয়ে ‘ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলন’ উদ্বোধন করেন। কাগমারী সম্মলনে পশ্চিম পাকিস্তানিদের ‘ওয়ালাইকুম আসসালাম’ বলে পূর্ব পাকিস্তানের (বাংলাদেশ) স্বায়ত্তশাসনের দাবি উত্থাপন করেন তিনি। সম্মেলনে মওলানা ভাসানী স্বায়ত্তশাসনের যে দাবি জানিয়েছিলেন তারই ধারাবাহিকতায় পরবর্তীতে স্বাধীনতার আন্দোলন দানা বাঁধে।
কাগমারী সম্মেলনেই মওলানা ভাসানী সর্বপ্রথম বিশ্ববাসীর মনে পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষের স্বাধিকার আন্দোলন সম্পর্কে ধারণা দেন। কাগমারী সম্মেলনে মওলানা ভাসানীর দাবিকৃত স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনই পর্যায়ক্রমে স্বাধীনতা আন্দোলনে রূপ নেয় এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে।
একতার কণ্ঠঃ মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল থেকে বহিরাগত কালীচরন দাস ওরফে কেডি (২৫) নামে এক উত্যক্তকারীকে আটক করা হয়ছে।
মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিকালে তাকে আটক করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসা হয়। এর আগে ওই ছাত্রীকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে কেডি ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
আটককৃত কালীচরণ দাস (২৫) সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার আনন্দ কুমার দাসের বড় ছেলে। সে এবছর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রফেশনাল এমবিএ কোর্সে ভর্তি হয়ে অধ্যয়নরত রয়েছেন।
জানা যায়, কালীচরন দাস (২৫) বিগত ৩ বছর ধরে ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি বিভাগের এক ছাত্রীকে মোবাইল ফোন কলে, মেসেজে নানাভাবে উত্যক্ত করে আসছিলেন। এর প্রেক্ষিতে মেয়েটি ওই ছেলের ৯০টিরো অধিক নাম্বার ব্লক করে রাখে। তবুও সে মেয়েটিকে বিভিন্ন নাম্বার থেকে ফোন করে হুমকি দেয় যে সে তার ক্যাম্পাসে এসে মেয়েটিকে দেখে নেবে।
এরই ধারাবাহিকতায় আটকের দুইদিন আগে কালীচরণ দাস ওরফে কেডি ভাসানী ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। ক্যাম্পাসে তার এলাকার পরিচিত বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৪১৪-(গ) সিটে সুজন কুমার দাস নামে এক শিক্ষার্থীর নামে বরাদ্দকৃত সিটে বহিরাগত এই কালীচরণ দাস অবস্থান করে আসছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানা যায়, ক্যাম্পাসে প্রবেশের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী সুজন চন্দ্র দাসসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মেয়ের অবস্থান সম্পর্কে তথ্য আদান প্রদান করে। পরে মেয়েটির সাথে তার নানারকম সম্পর্ক আছে বলে অপবাদ ছড়ায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থানকালে বিভিন্নভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি বিভাগের ওই ছাত্রীকে ফলো করে উক্ত্যক্ত করার চেষ্টা করে। কালী চরণ দাসের ক্যাম্পাসে অবস্থান এবং মেয়েটির ব্যাপারে নানারকম অপবাদ ছড়ানোর বিষয় আইসিটি বিভাগের ওই মেয়ে জানতে পেরে তার সহপাঠীদের জানায়। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিষয়টি জানতে পেরে উত্ত্যক্তকারীকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল থেকে আটক করে প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মীর মো. মোজাম্মেল হক জানান, ভুক্তভোগী ছাত্রীর বক্তব্য শুনে সত্যতাও পাওয়া যায়। সেই সাথে তদন্ত সাপেক্ষে জানা গেছে বিভিন্ন অবৈধ হোটেল ব্যবসার সাথে কালী চরন দাসের সম্পৃক্ততা রয়েছে। তার পিতা আনন্দ কুমার দাস তার পুত্র কালীচরন দাস ভবিষ্যতে এই ধরনের কোন কাজ করবে না এই মর্মে মোবাইল কোর্টকে মুচলেকা দিয়েছেন। আনন্দ দাসের মুচলেকায় আমরা তার ছেলেকে ছেড়ে দিয়েছি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শামীম আল মামুন জানান, হল কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কাউকে হলে রাখা হলের আইনের পরিপন্থি।
তিনি আরো জানান, হল কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিরেকে কোন বহিরাগত হলে রাখলে তার সিট তৎক্ষনাৎ বাতিলসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলে বাবার লাশ বাড়িতে রেখে এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়া সানজিদা আক্তার উত্তীর্ণ হয়েছে। বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, তিনি জিপিএ ৪.৭৫ পেয়েছেন।
তার বাবা শামীম আল মামুন গত ১২ নভেম্বর রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। বাবার লাশ বাড়িতে রেখে পর দিন রোববার (১৩ নভেম্বর) ইংরেজি দ্বিতীয় পর্বের পরীক্ষা দেন তিনি।
সানজিদা আক্তারের বাড়ি সদর উপজেলার দাইন্যা ইউনিয়নের বাইমাইল গ্রামে।
সানজিদা টাঙ্গাইল শহরের সরকারি কুমুদিনী কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি শহরের সরকারি শেখ ফজিলাতুননেসা মুজিব মহিলা মহাবিদ্যালয়ের কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নেন।
সানজিদা আক্তারের বড় ভাই ইমরান হোসেন জানান, গত ১৬ সেপ্টেম্বর বাবা পাকস্থলীর সমস্যা নিয়ে টাঙ্গাইল শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চার দিন চিকিৎসা নেন। পরবর্তীতে কিডনিতে সমস্যা দেখা দিলে তাকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১২ নভেম্বর রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
তিনি আরও জানান, সকালে বাবার লাশ বাড়িতে আনা হয়। বাবার লাশ রেখে ছোট বোন সানজিদা এইচএসসি পরীক্ষা দিতে যায়। পরে বাইমাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে পার্শ্ববর্তী কবরস্থানে তার বাবাকে দাফন করা হয়।
সানজিদা আক্তার জানান, ‘আমি বাবাকে খুব ভালোবাসতাম’। তার নির্দেশনা মোতাবেক মনোযোগ দিয়ে লেখাপড়া করতাম। আমার বাবার জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।’
তিনি আরো জানান, বড় হয়ে ডাক্তার হতে চান সানজিদা। সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন তিনি।
একতার কণ্ঠঃ দেশের ৬৪টি জেলার অভ্যন্তরে প্রবাহমান ছোট নদী, খাল ও জলাশয় পূনঃখনন প্রকল্পের (১ম পর্যায়) (২য় সংশোধিত) প্রকল্পের আওতায় টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া এলাকায় সুন্দরী খাল পূনঃখনন কাজ বন্ধ এবং ক্ষতিপূরণের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার হাবলা ইউনিয়নের ছয়শত ও সোনালীয়া গ্রামের ভুক্তভোগীরা এ মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে।
মানববন্ধনে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, আমাদের নিজ নামে রেকর্ডের জমিতে খাল খনন করা যাবে না। আমরা এই জমিতে আবাদ করি। আমরা যদি ফসল আবাদ করতে না পারি তাহলে আমাদের না খেয়ে থাকতে হবে। আমাদের জমিতে সরিষা রোপন করেছি। এই রেকর্ডের জমি কেটে ফসলের উপর মাটি ফেলে ফসল নষ্ট করছে। আমরা এর ক্ষতিপূরণ চাই। এই খাল খনন বন্ধ করা হোক।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- হাবলা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান নাদু, ইউপি সদস্য সুজন, ফজলুল হক, জমির মালিক বিমলা রানী সরকার, সূর্য বানু, সুরেশ চন্দ্র মন্ডল, মো: আলী আযমসহ অনান্য ভুক্তভোগী জমির মালিকরা।
উল্লেখ্য, পানি সম্পদ মন্ত্রনালয় ও বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের আত্ততাধীন ৬৪টি জেলার অভ্যন্তরে প্রবাহমান ছোট নদী, খাল ও জলাশয় পূনঃখনন প্রকল্পের (১ম পর্যায়) (২য় সংশোধিত) প্রকল্পের আওতায় টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া এলাকায় সুন্দরী খাল ও সুন্দরী শাখা খাল পূনঃখনন চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি শুরু হয়। এ কাজের প্রাক্কালিত মূল্য ধরা হয়েছে ১ কোটি ৫৬ লাখ, ৯৩ হাজার ৩৪০ টাকা। মের্সাস এম রহমান নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান খাল পূনঃখননের কাজটি পেয়েছে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইল পৌর এলাকার ছোট কালীবাড়ি নিবাসী সাবেক প্রফেসর সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান আর নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ১২.৩০ মিনিটে ঢাকার এভারকেয়ার হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্হায় তিনি মৃত্যুবরন করেন।মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর।
মৃত্যুকালে স্ত্রী, ৫ ছেলে, ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন তিনি।
সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বাদ জোহর ঢাকা উত্তরা ১০ নং সেক্টর কেন্দ্রীয় মসজিদে নামাজে জানাজা শেষে ঢাকা ১২ নম্বর সেক্টর কেন্দ্রীয় গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনাসহ শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেছেন আত্মীয়-স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীগণ।
উল্লেখ্য, তার বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনে তিনি টাঙ্গাইল কাগমারী কলেজ, করটিয়া সাদত কলেজ এবং ঢাকা বিজ্ঞান কলেজে অত্যন্ত সততা ও সুনামের সাথে শিক্ষকতা করেছেন।
সর্বশেষ তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে অবসরে যান।
একতার কণ্ঠঃ বর্ণাঢ্য আয়োজনে টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের একযুগ পূর্তি উদযাপন করা হয়েছে।
এ উপলক্ষে সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ডক্টর মো. ফরহাদ হোসেনের নেতৃত্বে একটি র্যালি একাডেমিক ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে।
র্যালী শেষে ১২-তলা একাডেমিক ভবনের সামনে যুগপূর্তির কেক কাটা হয়।
এসময় বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের অধীনে বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিভাগ, হিসাববিজ্ঞান বিজ্ঞান বিভাগ ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের আলোচিত সিদ্দিকী পরিবারের সন্তান মুরাদ সিদ্দিকীর আওয়ামী লীগে যোগদান ও জেলা কমিটিতে পদ পাওয়ার বিষয়ে ব্যাপক গুঞ্জন চলছে। তাঁকে জেলা কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করতে দলের কেন্দ্র থেকে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে বলে জেলা আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন। তবে মুরাদ সিদ্দিকীকে দলে নেওয়ার ঘোরবিরোধী জেলার কয়েকজন সংসদ সদস্য এবং আওয়ামী লীগ নেতাদের একটি অংশ।
মুরাদ সিদ্দিকী কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল কাদের সিদ্দিকী এবং আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর ভাই। আগামী দু-এক দিনের মধ্যেই জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি চূড়ান্ত করা হবে। এ অবস্থায় মুরাদ সিদ্দিকী জেলা আওয়ামী লীগে পদ পাচ্ছেন, নাকি এবারও দলে ঢুকতে ব্যর্থ হচ্ছেন—এ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা চলছে।
স্থানীয় লোকজন জানান, ১৯৯৯ সালে কাদের সিদ্দিকী আওয়ামী লীগ ছেড়ে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ নামে নতুন দল গঠন করেন। মুরাদ সিদ্দিকী তখন ভাই কাদের সিদ্দিকীর দলে যোগ দেন। ২০০১ ও ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রার্থী হিসেবে টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তিনি। এরপর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের রাজনীতি থেকে নিষ্ক্রিয় হয়ে যান। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি টাঙ্গাইল-৫ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তবে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রার্থী হিসেবে নয়, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে।
মূলত ২০০৯ সাল থেকে মুরাদ সিদ্দিকী আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করছেন। ২০১৫ সালে মুরাদ সিদ্দিকীর অনুসারী টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র জামিলুর রহমান ওরফে মিরনসহ অনেকেই আওয়ামী লীগে যোগ দেন। তাঁরা পরবর্তী সময় জেলা আওয়ামী লীগে পদ-পদবিও পান। কিন্তু মুরাদ সিদ্দিকী যোগ দিতে ব্যর্থ হন। দলে ঢুকতে না পারলেও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচি এবং দলীয় কার্যালয়ে মুরাদ সিদ্দিকী যাতায়াত শুরু করেন।
গত ৭ নভেম্বর টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়। সেখানে মুরাদ সিদ্দিকী বড় মিছিল নিয়ে অংশ নেন। সম্মেলনে ফজলুর রহমান খানকে সভাপতি এবং সংসদ সদস্য জোয়াহেরুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। তবে এখনো কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হয়নি।
মুরাদ সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগের আদর্শের বাইরে কেউ নই। সব সময়, সব অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করেছি। আওয়ামী লীগের সম্মেলনসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছি। দল যদি আমাকে কোনো দায়িত্ব দেয়, তা পালন করার জন্য প্রস্তুত আছি। এ জেলার কৃতী সন্তান দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক, জেলা শাখার সভাপতি ফজলুর রহমান খান, সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলামের নেতৃত্বে আমি কাজ করতে চাই।’
জেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে জেলার নেতাদের বলা হয়েছে মুরাদ সিদ্দিকীকে জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে রাখার জন্য। কিন্তু জেলা আওয়ামী লীগের বড় একটি অংশ এবং কয়েকজন সংসদ সদস্য চান না মুরাদ সিদ্দিকী আওয়ামী লীগে পদ পাক। তাঁরা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে দেখা করে মুরাদ সিদ্দিকীর পদপ্রাপ্তি ঠেকাতে চেষ্টা করছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা আওয়ামী লীগের নেতা ও একাধিক সংসদ সদস্য বলেন, অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে জেলা আওয়ামী লীগ ভালো চলছে। মুরাদ সিদ্দিকীকে দলে পদ দেওয়া হলে আবার একটি নতুন বলয় সৃষ্টি হতে পারে। তাই তাঁরা এ মুহূর্তে মুরাদ সিদ্দিকী দলে আসুক, তা চান না। তিনি দলে এলে টাঙ্গাইল সদর অথবা কালিহাতী আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন চাইতে পারেন। এ ক্ষেত্রে তাঁর যোগদান ওই আসন দুটির বর্তমান সংসদ সদস্যদের জন্য অস্বস্তির কারণ হতে পারে।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম বলেন, ‘মুরাদ সিদ্দিকী দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগে যোগদানের চেষ্টা করছেন, এটা সত্য। এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম “আলোচনা সাপেক্ষে তাঁকে নেওয়া যেতে পারে” বলে কিছুটা সম্মতি দিয়েছেন। আগামী দুই একদিনের মধ্যে আমরা বসব। দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রাজ্জাক, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান খান সাহেব আছেন। কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’