একতার কণ্ঠঃ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন টাঙ্গাইল দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে শহরের মেইন রোডে অবস্থিত দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসার সামনে ঘন্টাব্যাপী এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ ও অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মো. সোহরাব হোসেন এবং পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি কুদরত-ই-এলাহীর অপসারণের দাবি করা হয়।
মানববন্ধনে নিয়ম বর্হিভুত ভাবে দীর্ঘদিন অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) ও পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির দায়িত্বপালনসহ নজিরবিহীন দূর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন বক্তারা। দ্রুত তাদের অপসারণসহ শিক্ষার সুষ্ঠ পরিবেশের দাবি করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষকসহ শিক্ষার্থীরা।
এ সময় বক্তব্য রাখেন, টাঙ্গাইল দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসার আরবী বিভাগের সহকারি অধ্যাপক এনামুল্লাহ্ খান, ইংরেজি প্রভাষক তানসিনা আক্তার লিপি প্রমুখ।
মানববন্ধনে মাদ্রাসার ইংরেজি বিভাগের সহকারি অধ্যাপক আনোয়ারুল হাবিব, আরবী বিভাগের সহকারি অধ্যাপক শওকত আলী, পদার্থ বিভাগের সহকারি অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমানসহ প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলে কুমুদিনী কলেজ-রামপুর শাখা সিএনজি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. আমিনুল শিকদারের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে সরকারি কুমুদিনী মহিলা কলেজের সামনে ঘন্টাব্যাপী এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, কুমুদিনী কলেজ-রামপুর সিএনজি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. হাসান আলী, কার্যকরী সভাপতি মো. শাহিন মিয়া, সহ-সভাপতি মো. সেলিম মিয়া, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, রাজিব হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নাসির আহমেদ প্রমূখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গত ১৪ আগস্ট বিকালে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. আমিনুল শিকদারকে ঘারিন্দা ইউনিয়নের সুরুজ বাজারে মো. রুহুল কুদ্দুসের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী ব্যাপক মারধোর করে। সন্ত্রাসীরা সংগঠনের নেতাকর্মীদের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। এছাড়া ১৬ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। এ ব্যাপারে ইতিমধ্যে মামলা দায়ের করা হলেও পুলিশ আসামি ধরতে ব্যর্থ হয়েছে। অবিলম্বে ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয় মানববন্ধন থেকে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলে সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক ও বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল হক টিটুসহ ৫৬ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।
সোমবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) লোকমান হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শিক্ষার্থী-জনতার আন্দোলনে টাঙ্গাইল শহরে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. মারুফের মা মোরশেদা বেগম বাদী হয়ে রবিবার (১৮ আগস্ট) রাতে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশত্যাগের পর টাঙ্গাইল শহরে বিজয় মিছিল বের করা হয়। ওই মিছিলে শাহীন স্কুল এন্ড কলেজের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মারুফ মিয়া অংশগ্রহণ করে। মিছিলটি শহরের মদের ঘর মোড় এলাকায় গেলে আসামিরা বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে হামলা করে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
এসময় শহরের শহীন স্কুলের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মারুফ প্রাণ বাঁচাতে শহরের সিটি ব্যাংকের দ্বিতীয়তলায় গিয়ে আশ্রয় নিলে সেখানে গিয়ে আসামিরা গুলি করলে সে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়ে। পরে তাকে মিছিলের শিক্ষার্থীরা উদ্ধার করে টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মারুফ হত্যা মামলার প্রধান আসামি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এসএম সিরাজুল ইসলাম আলমগীর, টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর-গোপালপুর) আসনের সংসদ সদস্য ছোট মনির, তার ভাই শহর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা বাস কোচ মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিব গোলাম কিবরিয়া বড় মনির, সাবেক বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, সাবেক এমপি হাসান ইমান খান সোহেল হাজারী, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুজ্জামান সোহেল, টাঙ্গাইল সদর আসনের সাবেক এমপি ছানোয়ার হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও সাবেক এমপি জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আশরাফুজ্জামান স্মৃতি, মির্জাপুর আসনের সাবেক এমপি খান আহম্মেদ শুভ, টাঙ্গাইল পৌরসভার কাউন্সিলর আতিকুর রহমান মোর্শেদ, সাবেক পৌরসভার মেয়র জামিলুর রহমান মিরন, টাঙ্গাইলের বিবেকানন্দ স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি আনন্দ মোহন দে, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এডভোকেট মামুনুর রশীদ মামুন, জেলা যুবলীগের সভাপতি মাসুদ পারভেজ, সাধারণ সম্পাদক আবু সাইম বিপ্লব, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান, সাধারন সম্পাদক ইলিয়াস হোসেনসহ ৫৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) লোকমান হোসেন জানান, স্কুল শিক্ষার্থী মারুফের মা বাদী হয়ে সাবেক এমপি মন্ত্রীসহ ৫৬ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে বঙ্গবন্ধু টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অধ্যক্ষ মো. বখতিয়ার হোসেন পারিবারিক ও ব্যক্তিগত সমস্যার কারণ দেখিয়ে অধ্যক্ষের (অতিরিক্ত দায়িত্ব) পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন।
রবিবার (১৮ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টায় শিক্ষার্থীরা তাঁর কার্যালয়ে গেলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে বস্ত্র অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করে একটি কপি শিক্ষার্থীদের প্রদান করেন তিনি।
পদত্যাগী বিটেক অধ্যক্ষ মো. বখতিয়ার হোসেন জানান, ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সমস্যায় পদত্যাগ করেছি। সোমবার (১৯ আগস্ট) স্বশরীরে বস্ত্র অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মহদোয়ের নিকট পদত্যাগপত্রটি দাখিল করবো।
জানা যায়, তাঁর বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের নানা অভিযোগ ছিলো। অভিযোগগুলো হলো, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-ছাত্রীদের সহায়তা না করা, আন্দোলনে বিভিন্নভাবে বাধা প্রদান করা।
ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তাা না করে জোরপূর্বক হল ত্যাগে বাধ্য করা। দায়িত্ব গ্রহনের পর বাজেট থাকার পরও আবাসিক হল, ৬ দফা চত্বর, একাডেমিক ভবন, সাবস্টেশন, সোলার, জেনারেটর ইত্যাদির কোন ধরনের উন্নয়ন কাজ না করা।
প্রতি বছর ২টি মিল পরিদর্শন আবশ্যক থাকার পরও এখন পর্যন্ত কোনও ব্যাচের মিল পরিদর্শন করাতে পারেননি ও এ খাতের সকল টাকা কুক্ষিগত করে রাখা। দায়িত্ব গ্রহণের পূর্ববর্তী বছরে বুটেক্সের সকল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজসমূহের মধ্যে ফলাফলে ১ম হলেও পরবর্তী সময়ে সেশনজট, ফলাফল বিপর্যয় এবং নিয়মিত ইয়ারলস স্বাভাবিক হয়ে দাড়ালেও তা নিরসনে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহনের ব্যর্থতা।
ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক খাতে শিক্ষার্থী ও সরকার থেকে প্রাপ্ত টাকার যথাযথ ব্যবহার না করা এবং হিসাব জানতে চাইলে পরোক্ষভাবে ইয়ারলসের হুমকি দেওয়া। প্রিন্সিপালের অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে কথা বললেই গোপন সিন্ডিকেটের মাধ্যমে একাডেমিক ও মানসিকভাবে হয়রানি এবং ব্যক্তিগত প্রতিহিংসায়ও ইয়ারলসের পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষকদের কম নম্বর প্রদানে বাধ্য করা। ক্যাম্পাস ও ছাত্রীহলের নিরাপত্তা প্রদানে ব্যর্থতা।
ইতঃপূর্বে ছাত্রী হলে চুরির ঘটনার সুষ্ঠু সমাধানে ব্যর্থতা। ল্যাবগুলোর অচলতা নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থতা। কোনও প্রয়োজনে শিক্ষার্থীদের সাক্ষাতের অনুমতি প্রদান না করা।
একতার কণ্ঠঃ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সময় টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের গোড়াই এলাকায় গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থী মো. ইমন (১৯) মারা গেছেন।
রবিবার (১৮ আগস্ট) সকাল ৮টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
ইমনের বন্ধু মো. সাইফুল বলেন, ইমন গোপালপুর উপজেলার হেমনগর ইউনিয়নে ছাত্র অধিকার পরিষদের সমন্বয়ক ছিলেন। গত ৪ আগস্ট বিকেলে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের গোড়াইতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ইমন গুলিবিদ্ধ হন।
পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে তার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার সকাল পৌনে ৮টার দিকে আইসিইউর ১০ নম্বর বেডে তার মৃত্যু হয়।
তিনি আরও জানান, ইমন টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর উপজেলার হেমনগর গ্রামের মো. জুলহাস মিয়ার ছেলে। চার ভাই-বোনের মধ্যে ইমন সবার বড় ছিলো।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে অবগত করা হয়েছে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় ছাত্রলীগের এক সদস্য, দুই কর্মীসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে মির্জাপুর থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, ছাত্রলীগকর্মী আপন মাহমুদ, ইফতেখার সাইম, আবিদুর রহমান ও ব্যবসায়ী বজলুর রহমান। আপন মাহমুদ, ইফতেখার সাইম, আবিদুর রহমানকে বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) দুপুরে এবং বজলুর রহমানকে রাতে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি হিসেবে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে মির্জাপুর শহীদ ভবানী প্রসাদ সাহা সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থান করছিল।
দুপুর পৌনে ১২টার দিকে উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য সীমান্ত শিকদার ও ছাত্রলীগকর্মী আপন, ইফতেখার সাইম ও আবিদুর রহমানের নেতৃত্বে দেশীয় ধারালো অস্ত্রসহ ১৫ থেকে ২০ জনের একটি দল বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে তিন সমন্বয়ক মোজাহিদ (১৮), ইমন সিদ্দিকী (২৩) ও জাকির হোসেন (২৪) গুরুতর আহত হন। সমন্বয়ক মোজাহিদকে ঢাকা ও জাকির হোসেনকে ঘাটাইল সিএমএইচে এ ভর্তি করা হয়েছে।
মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সালাহ উদ্দিন জানান, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, শুক্রবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাদের জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
একতার কন্ঠঃ টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ছাত্রলীগের হামলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন সমন্বয়ক আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) দুপুরে মির্জাপুর শহীদ ভবানী প্রসাদ সাহা সরকারি কলেজে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা সকাল ১০টা থেকে কলেজের ইনডোর মাঠে অবস্থান করছিল। দুপুর পৌনে বারোটার দিকে উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য সীমান্ত ও ছাত্রলীগ কর্মী আপনের নেতৃত্বে দেশীয় দাড়ালো অস্ত্রসহ ১৫ থেকে ২০ জনের একটি দল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। এতে তিন সমন্বয়ক আহত হয়।
আহতরা হলেন, সমন্বয়ক মোজাহিদ (১৮), ইমন সিদ্দিকী (২৩) ও জাকির হোসেন(২৪)।
আহত শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের মধ্যে সমন্বয়ক মোজাহিদের অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। চিকিৎসক জানিয়েছেন, তার গলায় ধারলো অস্ত্রের আঘাতে গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে।
এব্যাপারে মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সালাহউদ্দিন আহমেদ জানান, ছাত্রলীগ নেতা সিমান্তের নেতৃত্বে হামলার ঘটনা ঘটেছে।পুলিশের পক্ষ থেকে হামলাকারীদের আটকের চেষ্টা চলছে।
উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সাজেদুল ইসলাম নিঝুম জানান, হামলার ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের নামে মামলার প্রস্তুতি চলছে। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় যারা জড়িত তাদের অনতিবিলম্বে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।
এদিকে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির শিশু বিষয়ক সম্পাদক ও টাঙ্গাইল-৭ আসনের সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, উপজেলা জামায়াতের আমীর ইয়াহ ইয়াহ খান মারুফ।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের জনপ্রিয় ‘ভাদাইম্যা’খ্যাত অভিনেতা আহসান আলীর কৌতুক পরিচালক ও টিকটকার মোতালেব হোসেনকে (৪৫) কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) সকালে তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে পুলিশ।
নিহত মোতালেব টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বাঘিল ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের আমজাদ হোসেনের ছেলে।
টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. লোকমান হোসেন জানান, মোতালেব কৌতুক ও টিকটক করতেন। বুধবার (১৪ আগস্ট) রাত সাড়ে ১১টার দিকে এক বন্ধুর সঙ্গে মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। এ সময় কৃষ্ণপুর গ্রামে পৌঁছালে ১০ থেকে ১৫ জন অস্ত্রধারী মোটরসাইকেলটির গতি রোধ করে। এ সময় মোতালেব দৌড়ে পাশের একটি কচুখেতে পড়ে গেলে সেখানে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে দুর্বৃত্তরা চলে যায়।
তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কেউ মামলা দায়ের করেনি।
একতার কণ্ঠঃ যারা সাধারণ ছাত্র ও জনসাধারণকে গুলি করে হত্যা করেছে, তাদের প্রত্যেককেই আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) সকালে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীর বিলকুকডি গ্রামে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত সাজিদের জানাজায় অংশ নিতে এসে এসব কথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, আজ সাজিদের আত্মত্যাগের কারণে আমরা নতুন স্বাধীনতা পেয়েছি। সাজিদের এই আত্মত্যাগ বাংলাদেশের মানুষ কোনোদিন ভুলবে না। সাজিদ দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন। আজ থেকে তার পরিবারের সব দায়িত্ব আমি নিলাম।
প্রকাশ,জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইকরামুল হক সাজিদ ৪ আগস্ট ঢাকায় আন্দোলনে অংশ নিয়ে পুলিশের গুলিতে আহত হন। পরে ১৪ আগস্ট ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
একতার কণ্ঠঃ ছাত্র-জনতার ওপর গুলি এবং গণহত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীদের বিচারের দাবিতে টাঙ্গাইল জেলা বিএনপি দুই দিনের অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা করেছে।
টাঙ্গাইল শহরের শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে জেলা বিএনপি’র আয়োজনে বুধবার (১৪ আগস্ট) ও বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) দুই দিনের অবস্থান কর্মসূচি চলবে। এ সময় তারা শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করে।
অবস্থান কর্মসূচিতে জেলা বিএনপি’র সভাপতি হাসানুজ্জামীল শাহিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফরহাদ ইকবালের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, সহসভাপতি জিয়াউল হক শাহিন, সাবেক সহসভাপতি অমল ব্যানার্জী, সাবেক সদস্যসচিব মাহমুদুল হক সানু, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফ পাহেলী, প্রচার সম্পাদক এ কে এম মনিরুল হক মনিরসহ অন্যান্য অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা।
জেলা বিএনপি’র সাবেক সদস্যসচিব মাহমুদুল হক সানু জানান, জেলা বিএনপি’র অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা অনুযায়ী সকাল থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলবে। এদিকে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে সকাল থেকেই তৃণমূল বিএনপি’র অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে সমবেত হন ।
সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট. ফরহাদ ইকবাল বলেন, টাঙ্গাইলে এখনো বিভিন্ন মহল্লায় সন্ত্রাসীরা ঘুরে বেড়াচ্ছে। এদের গ্রেপ্তারে প্রশাসনকে জেলা বিএনপি’র পক্ষ থেকে সাত ঘণ্টা সময় দেওয়া হলো।
তিনি আরও বলেন, এই সময়ের মধ্যে টাঙ্গাইল থেকে এসব সন্ত্রাসীদের বিতাড়িত করা না হলে এর জবাব বিএনপি’র নেতাকর্মীরা দেবেন।
একতার কণ্ঠঃ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে টাঙ্গাইলে পুলিশের গুলিতে নিহত মারুফ মিয়ার পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করে সমবেদনা প্রকাশ করেছে জেলা প্রশাসন।
বুধবার (১৪ আগষ্ট)বেলা ১১টায় পৌর শহরের সাবালিয়া এলাকায় মারুফের পরিবারের লোকজনের সাথে সাক্ষাৎ করেন জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন এবং সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা।
মারুফের পরিবারের পক্ষ থেকে তার হত্যার বিচার দাবি ও শহরের কুমুদিনী কলেজ গেট থেকে ঘারিন্দা রেল স্টেশন সড়কটি মারুফের নামে করার দাবি জানানো হয়।
এসময় জেলা প্রশাসক কায়ছারুল ইসলাম সমবেদনা প্রকাশ করে মারুফের মা-বোনকে শান্তনা দেন।
এছাড়াও পরিবারের নিরাপত্তা দেয়াসহ সহযোগিতার আশ্বাস দেন তারা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রশাসক কায়ছারুল ইসলাম, পুলিশ সুপার গোলাম সবুর, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরফুদ্দীন, সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন শাওন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসান বিন মুহাম্মাদ আলী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী আব্দুল নুর তুষার, আল আমিন, ইফফাত রাইসা নূহা, তাওহীদা ইসলাম স্বপ্নীল প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, ৫ আগস্ট (সোমবার) বিকেলে শিক্ষার্থীদের মিছিল নিয়ে শহরের প্রধান সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় টাঙ্গাইল সদর থানা এলাকায় পুলিশের সাথে সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশের গুলিতে মারুফ নিহত হন।
পরদিন টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় ঈদগাঁ ময়দানে নামাজে জানাজা শেষে মারুফের গ্রামের বাড়ি বাসাইল উপজেলার জশিহাটি গ্রামে দাফন করা হয়।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইল পৌরসভার অচলাবস্থা কাটিয়ে তোলার লক্ষ্যে ৯ সদস্যের আহ্বায়ক পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়েছে। নবগঠিত পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক হয়েছেন মেহেদী হাসান আলিম।
মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে নবগঠিত কমিটির দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি। মেহেদী হাসান আলী টাঙ্গাইল পৌরসভার ১১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর।
কমিটির সদস্য সচিব পৌরনির্বাহী কর্মকর্তা শাহনেওয়াজ পারভীন।
অন্যান্য সদস্যরা হলেন, নির্বাহী প্রকৌশল মো. মিজানুর রহমান, কাউন্সিলর আব্দুল্লাহ আল মামুন বাদশা, মো. রুবেল মিয়া, খালেদা আক্তার স্বপ্না, রকি হায়দার, আবুল কালাম আজাদ ও সেলিনা আক্তার।
টাঙ্গাইল পৌরসভার প্যানেল মেয়র তানভীর হাসান ফেরদৌস নোমান বলেন, পৌরসভার অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠতে সর্বসম্মতিক্রমে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি দ্বারা সকল কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
নবগঠিত পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক মেহেদী হাসান আলিম জানান, নাগরিক সেবা সচল ও ভঙ্গুর পৌরসভার ভবন পুনঃনির্মাণে কমিটি মঙ্গলবার থেকেই কাজ শুরু করেছে। সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি।
এর আগে ১০ আগস্ট টাঙ্গাইল পৌর পরিষদের সর্বসম্মতিক্রমে নয় সদস্যের ওই আহ্বায়ক পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়।
উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে কয়েক দফা হামলার শিকার হয় টাঙ্গাইল পৌরসভা ভবন। এর ফলে বন্ধ হয়ে যায় পৌরসভার সকল কার্যক্রম।