একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের সখীপুরে গর্ভবতী এক মা ও তার গর্ভের শিশুর মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার মা ও শিশু কেয়ার ক্লিনিকে এ ঘটনা ঘটে।
মৃত মাজেদা আক্তার(২৫) উপজেলার কচুয়া গ্রামের মো. আরিফুল ইসলামের স্ত্রী।
মৃত মাজেদার পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গর্ভবতী মাজেদার প্রসব বেদনা শুরু হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উদ্দেশ্যে তাকে নিয়ে রওনা হয় তার পরিবার । উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার আগেই মা ও শিশু কেয়ার ক্লিনিকের দালালদের খপ্পরে পড়েন মৃত মাজেদার পরিবার। পরে মা ও শিশু কেয়ার ক্লিনিকে সোমবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে ভর্তি করানো হয়। উপযুক্ত সময়ে সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে মঙ্গলবার ভোরে ওই গর্ভবতী নারীর মৃত্যু হয়। ওই ক্লিনিকের একমাত্র চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ শামসুল আলম সকাল সাড়ে সাতটার আগে মৃত মাজেদাকে দেখেননি বলেও অভিযোগ করেছে মাজেদার পরিবার।
মাজেদা আক্তারের স্বামী মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, রাতে ভর্তি করানোর পরে ওই ক্লিনিকের কোন চিকিৎসক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে নাই শুধু কয়েকটি স্যালাইন ছাড়া। উপযুক্ত চিকিৎসা না পেয়ে আমার স্ত্রী ও তার গর্ভের সন্তান মারা গেছে, আমি এর বিচার চাই।
এ বিষয়ে ওই ক্লিনিকের ব্যবস্থাপক মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, গর্ভবতী মাজেদা আক্তার রাত তিনটার দিকে আমাদের এখানে ভর্তি হয় । ল্যাব টেকনোলজিস্ট রক্তের গ্রুপ ও পরিমাণ পরীক্ষা নিরীক্ষা করেন। পরীক্ষার ফলাফলে রক্তের পরিমাণ ৮.৬ হওয়ায় রোগীর পরিবারকে রক্তের ব্যবস্থা করতে বলা হয়। পরিবারের লোকজন রক্তের ব্যবস্থা করতে পারেন নাই এবং ডাক্তার সাড়ে সাতটার দিকে এসে রোগীর অবস্থা মুমূর্ষ দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে রেফার্ড করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, রোগী মারা যাওয়ার পর হইহুল্লার সৃষ্টি হয় যার ফলে আসলেও গর্ভের বাচ্চাটির অবস্থা নির্ণয় করা হয়নি এটি আসলেও ভুলবশতই হয়েছে।
মা ও শিশু কেয়ার ক্লিনিকের পরিচালক ও চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ সামছুল আলম বলেন, ওই রোগী রাতে ভর্তি হলেও আমি জেনেছি ভোর রাতে। টেস্টে দেখি রক্তশূন্যতা ও শ্বাস কষ্ট রোগ রয়েছে। পরে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে রেফার্ড করি। রেফার্ডের রোগী অন্য হাসপাতালে নিতে বিলম্ব হওয়ায় রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
জানতে চাইলে এ বিষয়ে সখীপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.রেজাউল করিম জানান, এ বিষয়ে থানায় এখনো কেউ কোনো অভিযোগ করে নাই।
প্রকাশ, গতকয়েক মাস আগেও ওই ক্লিনিকে চিকিৎসকের অবহেলায় এক নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ রয়েছে ।