একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে যৌতুকের দাবিতে প্রিয়াঙ্কা কর্মকার (২৮) নামে এক গৃহবধূকে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামী বুদ্ধু কর্মকারের (৩৬) বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (৭ অক্টোবর) রাতে পৌর এলাকার সরিষাদাইর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
প্রিয়াঙ্কা কর্মকারের বাবা জয়কৃষ্ণ সরকার শনিবার (৮ অক্টোবর) মির্জাপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি মির্জাপুর উপজেলার লতিফপুর ইউনিয়নের সেওড়াতৈল গ্রামের বাসিন্দা।
লিখিত অভিযোগ থেকে জানা গেছে, নয় বছর আগে তার মেয়ে প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে পৌর এলাকার সরিষাদাইর গ্রামের সুধীর কর্মকারের ছেলে বুদ্ধু কর্মকারের সামাজিকভাবে বিয়ে হয়। বর্তমানে তাদের ঘরে দুটি সন্তান রয়েছে। বিয়ের কিছুদিন পার হতেই তার স্বামী যৌতুকের দাবিতে মেয়েকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছিল। এ নিয়ে মাঝেমধ্যেই স্থানীয়ভাবে সালিশ হয়েছে।
সবশেষ বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) বিদেশে যাওয়ার জন্য তার মেয়ের কাছে মোটা অঙ্কের অর্থ দাবি করে। মেয়ে অপারগতা প্রকাশ করলে তাকে নির্যাতন করা হয়। খবর পেয়ে পরদিন সকালে জয়কৃষ্ণ সরকারের স্ত্রী (নিহতের মা) পুষ্পরানী মেয়ের বাড়িতে যান।
এ সময় জামাইয়ের কাছে তার মেয়েকে নির্যাতনের কারণ জানতে চাইলে জামাই বুদ্ধু কর্মকার ক্ষিপ্ত হয়ে শাশুড়ি পুষ্পরানীকেও মারতে তেড়ে আসে। একপর্যায়ে পুষ্পরানীকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।
পরে সন্ধ্যায় মেয়ের জামাইবাড়ির প্রতিবেশীদের মাধ্যমে খবর পাওয়া যায়, তার মেয়ে ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। প্রিয়াঙ্কার বাড়ির লোকজন গিয়ে তাকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। তার মেয়েকে শারীরিক নির্যাতনের পর হত্যা করে মরদেহ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে বলে জয়কৃষ্ণ সরকার শনিবার থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
জয়কৃষ্ণ সরকার জানান, প্রিয়াংকার স্বামী বুদ্ধু কর্মকার যৌতুকের দাবিতে মাঝেমধ্যেই প্রিয়াঙ্কাকে শারীরিক নির্যাতন করত। প্রিয়াঙ্কা চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি তার স্বামীর বিরুদ্ধে মির্জাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছিলেন।
এ বিষয়ে মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আবু সালে মাসুদ করিম জানান, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এখন অপমৃত্যু মামলা হবে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।