একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইল শহরের প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত পাঁচআনী-ছয়আনী বাজার সাধারণ ব্যবসায়ী মালিক সমিতির নির্বাচনকে ঘিরে সাধারণ ব্যবসায়ীদের মাঝে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
আগামী ১১ আগস্ট অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে প্রকাশিত নতুন ভোটার তালিকা নিয়ে এ উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, পাঁচআনী- ছয়আনী বাজার ব্যবসায়ী সমিতির পূর্বের ভোটার ছিল ১০৩৭জন। গত ১৮ মার্চ অনুষ্ঠিত সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভায় সিদ্ধান্ত মোতাবেক সদস্য যাচাইবাছাই কমিটি ৯৪৭ জনের একটি নতুন ভোটার তালিকা প্রকাশ করেন। এই নতুন ভোটার তালিকায় পূর্বের তালিকা থেকে সমিতির ৯৮ জন প্রকৃত ভোটার বাদ পড়েন। এই বাদ পড়াকে কেন্দ্র করে সাধারণ সদস্যদের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। এই নতুন তালিকাকে প্রত্যাখ্যান করে যাচাইবাছাই কমিটির একজন ও সমিতির উপদেষ্টা মো: মশিউর রহমান হিরন ইতিমধ্যে পদত্যাগ করেছেন। এছাড়া উক্ত সমিতির আরো দুইজন উপদেষ্টা মো শহিদুর রহমান ও হরি প্রসাদ পোদ্দার পদত্যাগ করেছেন। নতুন এই তালিকায় সিরাজ উদ্দিন মার্কেটের মালিক মো: রফিক আহমেদ, আসলাম খান জনি, আর রহমান খান টুটুল, শহিদুজ্জামান শহিদ, রাশেদুজ্জামান রাশেদসহ আরো অনেক প্রকৃত ব্যবসায়ী বাদ পড়েছেন।
এছাড়া সমিতির গঠনতন্ত্র মোতাবেক গোডাউন মালিক, মাংসের দোকান, মুরগির দোকান, চৌকি দোকানদার, এনজিও অফিস, স্যালুন ও ফুটপাতের দোকান মালিকরা সদস্য হওয়ার এখতিয়ার রাখে না। নতুন ভোটার তালিকায় এই শ্রেণীর বেশ কয়েকজন মালিককে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যেটা এই ক্ষোভকে আরো ঘনীভূত করেছে।
এই প্রসঙ্গে সাবেক সাধারণ সদস্য আসলাম খান জনি ও রফিক আহমেদ বলেন, এই নতুন ভোটার তালিকায় নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই সস্পূর্ণ গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী একটি কারচুপির নির্বাচন করার জন্য একজন সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী তার নিজস্ব লোকজনদের ভোটার বানিয়ে প্রকৃত সাধারণ ব্যবসায়ীদের ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন।
সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহসান খান আছু বলেন, নতুন তালিকাকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই নতুন ভোটার তালিকায় সমিতির গঠনতন্ত্রকে উপেক্ষা করে বেশ কয়েকজন মাংসের দোকানদার ও স্যালুন মালিককে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অথচ প্রকৃত ব্যবসায়ীদের বাদ দেওয়া হয়েছে। টাঙ্গাইলের ক্ষমতাসীন দলের একজন প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ সমিতিকে কুক্ষিগত করার জন্য এই পকেট তালিকা তৈরি করেছে। আমি এই পকেট তালিকা প্রত্যাখ্যান করে এর তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি।
সমিতির সাবেক সভাপতি শাহানুর রহমান রঞ্জু বলেন, সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একটি প্রহসনের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এই তালিকায় অনেক প্রকৃত ব্যবসায়ী বাদ পড়েছেন। যেটি অত্যন্ত নিন্দনীয়।
সমিতির সাবেক উপদেষ্টা ও যাচাইবাছাই কমিটির থেকে পদত্যাগকারি সদস্য মো: মশিউর রহমান হিরন বলেন, যাচাইবাছাই করে আমরা যে তালিকা প্রণয়ন করেছিলাম পরবর্তীতে সেই তালিকা পরিবর্তন করে তাদের পছন্দের ব্যবসায়ীদের অন্তর্ভুক্ত করে তালিকা প্রকাশ করায় আমি এই সমিতির উপদেষ্টা ও যাচাইবাছাই কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছি।
উপরোক্ত অভিযোগের বিষয়ে পাঁচআনী-ছয়আনী ব্যবসায়ী সমিতির আহবায়ক আরফান আলী খান বলেন, বিষয়গুলো সমিতির প্রধান উপদেষ্টা সংসদ সদস্য আলহাজ্ব ছানোয়ার হোসেন ও যাচাইবাছাই কমিটির অন্যতম সদস্য শামসুর রহমান ( শাসছু) জানেন বলে প্রসঙ্গটি এড়িয়ে যান।
অভিযোগের বিষয়ে পাঁচআনী-ছয়আনী বাজার ব্যবসায়ী সমিতির প্রধান উপদেষ্টা ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সানোয়ার হোসেন বলেন, সদস্য যাচাই বাছাই কমিটিকে তিনি অন্তর্ভুক্ত নন। যাচাই-বাছাই কমিটির পাঁচজন সদস্য তার সামনে স্বাক্ষর করে নতুন ভোটার তালিকা জমা দিয়েছেন। এরপর কেন তারা পদত্যাগ করল সেটা আমার বোধগম্য নয়। এছাড়া বাদ পড়া সদস্যদের আপিল করার সুযোগ রয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব সমিতির উপদেষ্টাদের নিয়ে নতুন তালিকা বিষয়ে সভা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।