একতার কণ্ঠঃ সাম্প্রদায়িক আধিপত্য ও উগ্র সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসী কর্তৃক সংগঠিত ধারাবাহিক অপরাধ ষড়যন্ত্র, অবৈধ সমাবেশ, হুমকি, দোকান ভাংচুর ও বন্ধকরণ, একঘরে করণ, ঈদের নামাজ ও কুরবানী নিষিদ্ধকরণ, চুরি, ডাকাতি, চাদাদাবী, হামলা, মিথ্যাচার, অপপ্রচার, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, সংবাদপত্রে প্রকাশিত মিথ্যা সংবাদ এর প্রতিবাদে গত ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২১ ও ১২ ই মার্চ ২০২২ ইং তারিখে ভূক্তভোগী পরিবারের পক্ষে মৃত্তিকা বিজ্ঞানী ও কৃষিবিদ মো. দুলাল মিয়া টাংগাইল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। উক্ত সংবাদ সম্মেলনের বিবৃতি ও বাস্তবসম্মত সংবাদ বিভিন্ন পত্রিকা ও টিভি চ্যানেলে প্রকাশিত, প্রচারিত হয়।
সন্ত্রাসীদের অপকর্ম ও আইন বিরোধী আচরণের সংবাদ ইতোপূর্বে ১১, ২০ ও ২২ ডিসেম্বর, ২০২১ ইং তারিখে পাঁচটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সন্ত্রাসীরা মিথ্যা তথ্য প্রচার করতে থাকে।
নিরুপায় ও অসহায় হয়ে এসবের প্রতিকার চেয়ে গত ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২১ ইং তারিখে মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ ও মহাপরিচালক, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদপ্তর, বাংলাদেশ বরাবর মেছের আলী আবেদন করেন।
দুলাল মিয়া বলেন, মেছের আলীর মামলায় সদ্য জামিনে মুক্ত আসামীরা তাদের অপকর্ম ধামাচাপা দিয়ে ভয়ংকর অপরাধ সংগঠনের উদ্দেশ্যে এবং সমগ্র দেশব্যাপী সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির ষড়যন্ত্র পূর্বক, গত ২২ ই ডিসেম্বর, ২০২১ ইং তারিখে সকাল ১১ টায় সিংজুরী নাট মন্দিরের সামনে প্রকাশ্য জনসম্মুখে অবৈধ সমাবেশের মাধ্যমে উগ্র সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টি করে সাংবাদিকদের শতভাগ মিথ্যা তথ্য দিয়ে পাঁচটি পত্রিকায় শতভাগ মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করায়। মানববন্ধন ইস্যুতে উক্ত অবৈধ সমাবেশে দুলাল মিয়া, মেছের আলী ও তাদের পরিবার সম্পর্কে মিথ্যা, বানোয়াট, মানহানিকর বিবৃতি প্রদান করে সন্ত্রাসীরা এবং বিভিন্ন সাংগঠনিক পরিচয়ে সন্ত্রাসীরা তাদের অপকর্মের সমর্থন চেয়ে সাংবাদিক ও দেশবাসীকে উদ্ধাত্তভাবে আহবান করে। সন্ত্রাসীদের উগ্রতা, মিথ্যাচারের ভিডিও, পত্রিকায় প্রকাশিত মিথ্যা সংবাদ ফেসবুকে পোস্টিং, লাইক, কমেন্ট এবং শেয়ারিং এর মাধ্যমে সমগ্র দেশে প্রচার করার চেষ্টা করে সন্ত্রাসীরা। সন্ত্রাসী কর্তৃক সংগঠিত ধারাবাহিক অপরাধ ও সৃষ্ট উগ্র সাম্প্রদায়িকতার কারণে মেছের আলীসহ প্রায় ২০০ (দুইশত) টি পরিবারের ২০০০(দুই হাজার) জন ব্যক্তি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
লিখিত বক্তব্যে দুলাল মিয়া বলেন, টাংগাইলের মির্জাপুর উপজেলার সিংজুরী গ্রামের আশুতোষ সরকার, গৌড় সরকার, নুরুল ইসলাম এর নেতৃত্ত্বে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম ও মেম্বার নাজিম উদ্দিন সহ স্থানীয় ৩০-৩৫ জন একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী চক্র গড়ে তুলেছে যা সাংগঠনিকভাবে দেশব্যাপী বিরাজমান।
তিনি আরও বলেন, এই সকল সন্ত্রাসীরা নিজ নিজ ধর্ম অনুযায়ী একজন অপরজনের সহিত আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ। এদের অনেকে আত্মীয়তার সূত্রে অন্যত্র হতে এসে অত্র গ্রামে স্থায়ীভাবে বসবাস করছে। নৈতিকতা বিরোধী অপরাধের জন্য এদের অনেকের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে একাধিক গ্রাম্য সালিস হয়েছে। চক্রটির অনেকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা সহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে। চক্রটির অনেকে অবৈধ ড্রেজার ব্যবসায় জড়িত। শান্তি, সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠাপূর্বক স্বাধীন, স্বাভাবিক ও নিরাপদ জীবন যাপন নিশ্চিতকল্পে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ আবশ্যক মর্মে তিনি বিবৃতি প্রদান করেন।
লিখিত বক্তব্যে দুলাল মিয়া আরও বলেন, সন্ত্রাসী চক্রটি সংঘবদ্ধভাবে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নৈকট্য লাভ করে এলাকায় বিশেষ আধিপত্য বিরাজ করে আসছে। অপরদিকে, সংখ্যা লঘু আইনের প্রচার এবং অপকৌশল ব্যবহার করে মন্দিরে নিয়মিত সমাবেশ করে ধারাবাহিক অপরাধ করছে। হিন্দু ইজম, হিন্দু আধিপত্য, ভীতি সৃষ্টি, অবৈধ চুক্তি এবং অবৈধ তদবীরের মাধ্যমে তারা পারিপার্শ্বিক সব নিয়ন্ত্রণ করছে। সাংবাদিক প্রশ্নের জবাবে দুলাল মিয়া বলেন, সন্ত্রাসীদের সকল অপকর্মের প্রতিবাদ করায় মেছের আলীর একমাত্র আশ্রয় আমাকে নির্ণয় করে আমাকে হয়রানী করছে সাংগঠনিকভাবে। আমার উপর দোষ চাপানোর ষড়যন্ত্র চলছে, আমি অন্যয়ের প্রতিবাদ করছি, সত্য এবং ন্যায়ের পক্ষে আছি, থাকবো, আমার প্রতিবাদ ন্যায় সঙ্গত, বিধি সম্মত। তিনি আরও বলেন, সমস্যার শুরুতেই আমরা জনপ্রতিনিধিদের সাথে যোগাযোগ করেছি, সবাই জানে সমস্যাটা কোথায়, তাই হয়তো কেউ প্রকাশ্যে কিছু বলেন না, কিন্তু বাস্তবতা সবাই বুঝেন। শান্তি সমাধানের জন্য সন্ত্রাসীদের সাথেও যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি কিন্তু তারা আলোচনা প্রত্যাখ্যান করেছেন। উগ্রবাদী সন্ত্রাসীদের কৌশল হলো, বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিকে তাদের সাথে সম্পৃক্ত করা এবং আমাদের প্রতিপক্ষ করা, যাতে কেউ আমাদের নৈতিক সমর্থন না করে। সবাইকে প্রতিপক্ষ হিসেবে চাই না, এটা সম্ভব না, যদিও ইউনিয়ন পরিষদ কে আমাদের প্রতিপক্ষ করেছে।
তিনি আরও বলেন, মেছের আলীর ক্রয়সূত্রে রেজিস্ট্রি দলিলমূলে ২৭ বছরের স্বত্ব দখলীয় ভূমি বেআইনীভাবে একই গ্রামের রতন বিশ্বাস কে দখল বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য সাংগঠনিক এজেন্ডায় ইস্যু তৈরী করে। পারিপার্শ্বিক সকল কিছু সন্ত্রাসীরা নিয়ন্ত্রণপূর্বক, মেছের আলীর একমাত্র আশ্রয় আমাকে নির্ণয় করে আমাকে এবং মেছের আলী কে হয়রানী করে আসছে সাংগঠনিকভাবে।
লিখিত বক্তব্যে দুলাল মিয়া বলেন, ২০২১ সালের ৪ মার্চ ও ৩১ মার্চ মেছের আলী ভূমি বিষয়ে ১৪৪ ধারা ও ঘোষণামূলক মামলা দায়ের করলে বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক দখলাবস্থা বজায় রাখার আদেশ হয়। উক্ত আদেশের প্রেক্ষিতে ২৪ এপ্রিল/২১ মির্জাপুর থানা কর্তৃক শান্তি শৃংখলা বজায় রাখার নোটিশ জারী করা হয়। গত ২৪ শে মার্চ/২১ রতন বিশ্বাস বাদী হয়ে হুমকির মিথ্যা একটা মামলা দায়ের করে। গত ৯ মে/২১ মেছের আলী বাদী হয়ে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে চুরি, চাদাদাবীর মামলা দায়ের করেন। পাঁচবারের সকল তদন্তে মেছের আলীর দাবী এবং অভিযোগের সত্যতা মিলে, নামজারী ও তদন্ত প্রতিবেদনসহ ভূমি বিষয়ক কর্মকর্তার চারটি প্রতিবেদন মেছের আলীর পক্ষে, বিজ্ঞ আদালতের চারটি মামলার সকল আদেশ মেছের আলীর পক্ষে। রতন বিশ্বাস কর্তৃক দায়েরকৃত হয়রানীমূলক হুমকির মামলায় গত ১৪ ই ফেব্রুয়ারী/২২ মেছের আলীসহ চারজন অব্যাহতি পেয়েছে। মির্জাপুর থানার দুটি তদন্তে সন্ত্রাসীরা অপকর্মের স্বীকারোক্তি দিয়ে আপোষ মীমাংসার অজুহাতে বিজ্ঞ আদালতের আদেশ ও মির্জাপুর থানার নোটিশ অমান্য করে সন্ত্রাসীরা ধারাবাহিকভাবে অপরাধ করেছে। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মির্জাপুর থানায় একাধিক জিডি, অভিযোগ, আবেদন করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ভূমি বিষয়ে মেছের আলীর দায়েরকৃত তিনটি মামলা, থানায় দায়েরকৃত জিডি, অভিযোগ যৌক্তিক, প্রাসঙ্গিক, আবশ্যকীয়। রতন বিশ্বাসের দায়েরকৃত হয়রানীমূলক হুমকির মামলার আর্জির বিবৃতি শিষ্টাচার বহির্ভূত, প্রত্যেকটি বক্তব্য মিথ্যা, ধারাবাহিক অসৎ উদ্দেশ্য প্রণোদিত। চক্রটি কর্তৃক অদূর ভবিষ্যতে খুন, জখম, অপহরণের ইঙ্গিত বহন করে। বিজ্ঞ আদালতে রতন বিশ্বাস গং যে জবাব দাখিল করেছে, তাতে প্রত্যকটি বিবৃতি মিথ্যা। সন্ত্রাসীরা সাংবাদিকদের শতভাগ মিথ্যা তথ্য দিয়ে যেসকল পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করিয়েছে, তার প্রত্যেকটি বক্তব্য মিথ্যা। সকল মিথ্যাচার, অপপ্রচার, ষড়যন্ত্র, অপকর্ম কে প্রতিরোধ করে সত্য স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তিনি বিবৃতি প্রদান করেন।
দুলাল মিয়া বলেন, গত ৩০ ডিসেম্বরের সংবাদ সম্মেলনের খবর প্রকাশিত হলে, সন্ত্রাসীরা হুমকি দেয় দে, তারা মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে পরবর্তী উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ করবে, প্রয়োজনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাবে। গত বছরের ২ মে থেকে বন্ধ মুদি দোকানের ডিসেম্বর/২১ পর্যন্ত ভাড়া পরিশোধ করেও নিরুপায় হয়ে সিংজুরী নতুন ব্রিজ সংলগ্ন ভূমিতে মেছের আলী দোকান চালু করেন। গত ০৩ জানুয়ারী, ২০২২ রাতে সন্ত্রাসীরা উক্ত দোকানের সামগ্রী ভাংচুর করে। গত ৫ ই ডিসেম্বর র্যাব, মহাপরিচালক বরাবর মেছের আলী আবেদন করেন। মেছের আলীর জমিতে কোনো কৃষি শ্রমিক, ট্রাক্টর যাতে যেতে না পারে সেমর্মে আসামীরা এলাকায় ভীতিকর পরিস্থিতি করেছে। আমিসহ মেছের আলী ও তার পরিবার, আত্মীয়স্বজন কে হয়রানী করার জন্য আসামীরা নিয়মিত ষড়যন্ত্র করছে, হুমকি প্রদান করছে, ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে। অদ্যাবধি সন্ত্রাসীদের মোট আট টি লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করলেও সন্ত্রাসীরা কোনো জবাব দেয় নাই, সংশোধন হয় নাই, সতর্ক হয় নাই, ধারাবাহিকভাবে বহুমুখী অপরাধ করে যাচ্ছে।
লিখিত বক্তব্যে দুলাল মিয়া বলেন, হুমকি, ভয়ভীতি প্রদর্শন, নাটকীয়তা, হঠকারীতা, মিথ্যাচার, উৎপাত, উগ্র সাম্প্রদায়িকতা, প্রতারণা, অপপ্রচার, মিথ্যা স্বাক্ষ্য প্রদান, কুপরামর্শ, পরোচনা, অপ্রাসঙ্গিকতা, বিশিষ্ট ব্যক্তির রেফারেন্স ব্যবহার ও বিভ্রান্তিকর প্রচারনা, দায়িত্বশীল ব্যক্তির ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে অবৈধ প্রভাব ও আধিপত্য বিস্তারসহ বহুমুখী কৌশল ব্যবহার করে সন্ত্রাসীরা অপরাধ করে আসছে। খুন, জখম, গুম, ছিনতাই, অপহরণ, চাকরিচ্যুতি, সাসপেন্ড, ডিমোশন, পোস্ট ব্লক ইত্যাদির হুমকি দিয়ে আসছে। এসিড নিক্ষেপ, অগ্নি সংযোগ, গণধর্ষণ, মন্দির ভাঙ্গার কেস, সংখ্যা লঘু নির্যাতন সহ বিভিন্ন রকম হয়রানী মামলা দায়ের করবে মর্মে হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছে সন্ত্রাসীরা। এছাড়াও সন্ত্রাসীরা আরও কিছু নোংরা কৌশল ব্যবহার করে সংখ্যাধিক্য ও অনৈতিক সমর্থন নেয়ার কাজ করছে যা প্রকাশ করা যাবে না। সন্ত্রাসীদের কৌশল কিছুটা পরিবর্তিত হয়েছে। মির্জাপুর থানায় আপোস মীমাংসার মাধ্যমে রতন বিশ্বাস কে জমির দখল বুঝিয়ে না দিলে, হয়রানীমূলক মামলা দেওয়া হবে মর্মে সন্ত্রাসীদের পক্ষ হতে হুমকি দেয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ইতোপূর্বে গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে রতন বিশ্বাস কে দখল বুঝিয়ে দিতে বাধ্য করার জন্য রতন বিশ্বাস কে বাদী করিয়ে সন্ত্রাসীরা হয়রানীমূলক হুমকির মামলা দায়ের করায়। ১৮ জন বাদী হয়ে ১৮ টি হুমকির মামলা দায়ের করে একতরফা ডিক্রি নিবে মর্মে সন্ত্রাসীরা হুমকি দেয়। সন্ত্রাসীদের অপকর্মের বিরুদ্ধে স্বাক্ষ্য প্রদান বাধাগ্রস্থ করার জন্য একঘরে করে, নিজ সমাজ সহ আশেপাশের যেকোনো মসজিদে মেছের আলীর ঈদের নামাজ ও কুরবানী নিষিদ্ধ করে, অতঃপর তা বাস্তবায়ন করে। অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করার জন্য মেছের আলীর মুদি দোকান সন্ত্রাসীরা বন্ধ করে দেয়। দুলাল মিয়া আরও বলেন, মেছের আলীর দলিল নাই মর্মে সন্ত্রাসীরা অপপ্রচার করেছে, প্রকৃতপক্ষে রতন বিশ্বাসের কোনো দলিল নাই। গত তদন্তে প্রথমবারের মতো রতন বিশ্বাস একটা দলিল প্রদর্শন করেছে যা প্রতারণামূলক প্রমাণ করার জন্য বিজ্ঞ আদালতের শরনাপন্ন হওয়া আবশ্যক। সিএস রেকর্ডীয় মালিক হতে বিগত আশিবছরে মালিকানা ও দখল হস্তান্তরের মাধ্যমে চতুর্থ ব্যক্তি হিসেবে বিগত ২৮ বছর যাবত মেছের আলী ভোগদখল করছে যা অদ্যাবধি চলমান, বিরাজমান, দৃশ্যমান, সর্বজন জ্ঞাত, সন্ত্রাসীরা অবগত। প্রকৃতপক্ষে, মেছের আলী জবরদখলকারী নন। মিথ্যা স্বাক্ষী ও বিবৃতির মাধ্যমে সন্ত্রাসীরা সত্যকে চাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। রতন বিশ্বাস সিএস মালিকের ওয়ারিশ না হয়েও আশিবছর পরে এসে নিজেকে সিএস রেকর্ডীয় মালিকের ওয়ারিশ দাবী করছে। রেকর্ডসূত্রে রতন বিশ্বাস জমি দাবী করলেও রেকর্ড সংশোধনের ঘোষণামূলক মামলায় মেছের আলী স্থিতিবস্থা আদেশ পেয়েছে যা এক প্রকার অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা। সন্ত্রাসীরা অপপ্রচার করছে এই মর্মে যে, মেছের আলী নিষেধাজ্ঞা পায় নাই, কোর্ট থেকে রতন বিশ্বাস দখল পেয়েছে। বেআইনী দখলের উদ্দেশ্যে সন্ত্রাসীরা অবৈধ সমাবেশের ষড়যন্ত্র করছে। সকল দ্বিধা, দ্বন্দ, বিভ্রান্তি স্থায়ীভাবে নির্মূল আবশ্যক মর্মে দুলাল মিয়া বিবৃতি প্রদান করেন।
দুলাল মিয়া আরও বলেন, সন্ত্রাসীরা একাধিক ধারাবাহিক অসৎ উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও কর্মজীবনে মেছের আলীসহ আমাকে হয়রানী, হেয় ও ক্ষতিগ্রস্থ করার জন্য সাংগঠনিকভাবে দীর্ঘবছর যাবত ষড়যন্ত্র করে আসছে। অনৈতিক কাজের কোনো ইতিহাস আমার নাই। আমার পরিবার সম্পর্কে যারা মিথ্যা, বানোয়াট, অগ্রহণযোগ্য, মানহানিকর বক্তব্য প্রদান করেছে, মহান মুক্তিযুদ্ধ হতে শুরু করে এযাবতকাল তারাও আমার পরিবারের কাছে নিরাপদ আশ্রয় পেয়েছে। স্বার্থান্বেষী মহলের প্ররোচনায় তারা বিপদগামী হয়েছে। সাংবাদিক প্রশ্নের জবাবে দুলাল মিয়া বলেন, ভূমি বিরোধ এখানে মূল বিষয় নয়, এটা শুধুমাত্র একটা ইস্যু, মূল কারণ উগ্র সাম্প্রদায়িকতা। বিজ্ঞ আদালতের সকল মামলায় সন্ত্রাসীরা নিয়মিত সময়ের আবেদন করে থাকে, অপরদিকে বিজ্ঞ আদালতের আদেশ এবং থানার নোটিশ অমান্য করে সন্ত্রাসীরা প্রতিনিয়ত ধারাবাহিকভাবে বহুমুখী অপরাধ করছে, যা পূর্বপরিকল্পিত। তাদের সব অপরাধ মামলায় আনা সম্ভব না, জনসচেতনতা দরকার। শুধুমাত্র জরুরী এবং আবশ্যিক বিষয়েই মামলা করা হচ্ছে।
সাংবাদিক প্রশ্নের জবাবে দুলাল মিয়া আরও বলেন, আমরা অতিরজ্ঞিত কিছুই করি নাই। সাম্প্রদায়িক ইস্যুটা সন্ত্রাসীরাই সামনে এনেছে। এখানে অনেকগুলো ইস্যু আছে যা সেনসিটিভ, আমাদের এখন ভাবার সময় এসেছে। আমরা শুধু বাচার জন্য ডিফেন্স করছি। নিরীহ সংখ্যালঘু গৃহবধু শব্দগুলো তারাই ব্যবহার করেছে বিশেষ অপকৌশল হিসেবে। রতন বিশ্বাস মামলার আর্জি ও জবাবে পরিচয় ও পেশা হিসেবে নিরীহ সংখ্যালঘু ব্যবহার করেছে। ২য় পক্ষগণ এলাকার হিন্দুদের জায়গা জমি জোরপূর্বক দখল করার চেষ্টা করে মর্মে রতন বিশ্বাস আর্জিতে বিবৃতি দিয়েছে। আমরাও নোটিশে প্রতিবাদ করেছি, বিজ্ঞ আদালতে জবাব দিয়েছি। সাম্প্রদায়িক ইস্যু এখানে লুকোচুরি নয়, অপেন সিক্রেট বিষয়। বিজ্ঞ আদালত পর্যন্ত চলে গেছে। সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে ঘোষণা দিচ্ছে যে, তারা খুন করলেও তাদের বিচার হবে না। দেশের কালচার অনুযায়ী, এসকল অপরাধ সংগঠিত করতে বিপুল পরিমান অর্থের প্রয়োজন হয়। সন্ত্রাসীরা নিজেরাও বলছে, টাকায় সব হয়। সন্ত্রাসীদের এই অর্থের উৎস্য কোথায় ? তাদের এই শক্তির উৎস্য কোথায়? তিনি আরও বলেন, মেছের আলীর আইনগত উদ্যোগ এবং আমার প্রতিবাদের সহিত কোনো সংগঠনের সংশ্লিষ্টতা নাই, সম্পূর্ণ ব্যক্তিগতভাবে নিজস্ব অর্থায়নে স্বতন্ত্র ও একক আইনী লড়াই। কোনো নিষিদ্ধ ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, সংগঠনের সহিত আমাদের কোনো সম্পৃক্ততা নাই। কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে আমরা নৈতিক ও যথার্থ জীবনযাপন করি। যেকোনো প্রকার শান্তি সম্প্রীতি শৃংখলা ভংগের বিন্দুমাত্র মনোভাব আমাদের কখনও ছিল না, এখনো নাই। আমরা অধিকারের জন্য লড়ছি, অন্যায়ের প্রতিবাদ করছি, একই সঙ্গে সমাজ, দেশ ও জনস্বার্থ বিবেচনা করেই সত্যটা প্রকাশ করে চূড়ান্ত ঝুঁকি বহন করার মানসিকতা নিয়ে জীবনযাপন করছি।
লিখিত বক্তব্যে দুলাল মিয়া বলেন, নিরুপায় ও অসহায় হয়ে এসবের প্রতিকার চেয়ে গত ২৮ শে ফেব্রুয়ারী মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ, মহাপরিচালক জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদপ্তর এবং সরকারের দায়িত্বশীল একাধিক ব্যক্তি ও সংস্থা প্রধান বরাবর মেছের আলী দ্বিতীয় বারের মত একাধিক আবেদন করেছেন।
তিনি আরও বলেন, দেশ ব্যাপী তৃণমূল হতে পাবলিক সার্ভিস, জনপ্রতিনিধি সর্বত্র সক্রিয় সদস্য বিদ্যমান। এই সন্ত্রাসী চক্রটির পরিচয় হলো তারা দেশবিরোধী মনোভাব সম্পন্ন কিছু সংখ্যক ব্যক্তি, যারা নীতি নৈতিকতা বিবর্জিত, মারাত্মক হিংসাপরায়ণ, সুযোগ সন্ধানী, স্বার্থান্বেষী, বহুজাতীয় কিন্তু দুষ্টু প্রকৃতির সমচরিত্রের বটে। চক্রটির পরিবারের নারী ও শিশু সদস্য সন্ত্রাসী কাজে সক্রিয় অংশগ্রহণ করে থাকে। তাদের অপকর্ম প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে বিস্তার করছে। বিভিন্ন শ্রেণী, পেশা, বয়স ও ধর্মের কিছু সংখ্যক ব্যক্তি সমন্বয়ে হিন্দু আধিপত্য উগ্র সাম্প্রদায়িক চক্রটি গঠিত হয়েছে। বিষয়টি দেশ ও জনগুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
সন্ত্রাসী কর্তৃক সংগঠিত অপরাধের পুনরাবৃত্তি রোধকরণ, ভবিষ্যতে সংগঠিতব্য অপরাধ রোধকরণ, সুশাসনের অন্তরায় চিহ্নিতকরণ ও স্থায়ী নিমূল, মৌলিক অধিকার নিশ্চিতকরণ, সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস প্রতিরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টিকরণ এবং পরিচ্ছন্ন আগামী প্রজন্ম গঠনে জনসাধারণ, সুশীল সমাজ, বিজ্ঞানী, গবেষক, সাংবাদিক, কলামিস্ট, সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, দেশ ও জনস্বার্থে তিনি সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করেছেন বলে জানান।
স্থানীয়রা জানান, কৃষিবিদ দুলাল মিয়ার জন্যই সন্ত্রাসীরা আগাতে পারে নাই। সন্ত্রাসীরা অপকর্ম ধামাচাপা দিতে বিভিন্ন মহলে তদবির চালিয়ে যাচ্ছে। মেছের বহুকাল ধরেই জমি ভোগ দখল করছে। রতন আর বলরামের বংশ আলাদা, রতন ওয়ারিশ হয় কিভাবে? হঠাৎ করেই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাকে তারা প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং ভবিষ্যতেও প্রত্যাখ্যান করবেন। এইরকম ঘটনা এলাকার ইতিহাসে কখনও ঘটে নাই। এলাকায় ভাল লোকের সংখ্যা বেশি। গুটি কয়েক দুষ্ট লোক এলাকায় সিন্ডিকেট করে ত্রাস আর সন্ত্রাসের রাজত্ব করেছে। সন্ত্রাসীদের শক্তি আসে টেলিফোনে আর ফান্ডের টাকায়। শান্তিভঙ্গ করলে পুরস্কার হিসেবে টাকা পায়, ভাগাভাগি করে, এটা এদের পেশা। রতন ইস্যু শেষ হলে আরেকটা ইস্যুতে জড়িয়ে পড়বে। এলাকাবাসী অতি দ্রুত এলাকায় শান্তি শৃংখলা দেখতে চান। এজাতীয় সামাজিক অপরাধ যাতে আর না ঘটে, সে মর্মে তারা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।