একতার কণ্ঠঃ বিয়ে ও সংসার করার দাবিতে টাঙ্গাইলে একত্রিত হওয়া দুই কিশোরীকে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে বিদায় বেলায় বিচ্ছেদে কাতর দুই জনই কান্নায় ভেঙে পড়ে। অশ্রুসজল বিদায়ের মধ্য দিয়ে মঙ্গলবার (২২ মার্চ) সন্ধ্যায় টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার ফুলকী ইউনিয়ন পরিষদে তাদের নিজ নিজ অভিভাবকের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে, রবিবার (২০ মার্চ) সন্ধ্যায় প্রেমের টানে বিয়ে ও সংসার করতে সুদূর নোয়াখালী থেকে টাঙ্গাইলের কিশোরী প্রেমিকার বাড়িতে ছুটে আসে এক কিশোরী। তবে তাদের প্রেম ও এমন দাবি মেনে নিতে নারাজ পরিবার। প্রেম ও সম্পর্কে অনড় দুই কিশোরী। প্রয়োজনে গার্মেন্টে কাজ করে হলেও এক সংসার করতে চায় দুই জন। বিষয়টি নিয়ে বাসাইল উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও দুই পরিবার পড়েন চরম বিপাকে।
বাসাইল উপজেলার ফুলকী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সামছুল আলম বিজু বলেন, ‘ইউএনও আমাকে বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। পরে দুই কিশোরীর অভিভাবকের সঙ্গে বৈঠকে বসা হয়। সেখানে মুচলেকা রেখে দুই জনকে পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই দুই কিশোরী যাতে আর যোগাযোগ করতে না পারে সে বিষয়ে তাদের পরিবারকে নির্দেশ নেওয়া হয়েছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদা পারভীন বলেন, ‘নোয়াখালী সদরের ইউএনও-র সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই কিশোরীর পরিবারকে খুঁজে বের করা হয়। এরপর ফুলকী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে বিষয়টি নিয়ে সমাধানের জন্য বলা হয়। তিনি তাদের অভিভাবকদের কাছ লিখিত রেখে পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দিয়েছেন।’
উল্লেখ্য, ফেসবুকে নোয়াখালী সদর ও টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার দুই কিশোরীর প্রায় দুই বছর আগে পরিচয় হয়। সেই থেকে ফেসবুক মেসেঞ্জারে নিয়মিত যোগাযোগ হতো তাদের। এরই ধারাবাহিকতায় তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেমের টানে তারা প্রায় দুই মাস আগে ঢাকার সাভারে এক আত্মীয়ের বাসায় একসঙ্গেও থাকে। এরপর সেখান থেকে আনোয়ার নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে তারা সিরাজগঞ্জের চৌহালী গিয়ে সময় কাটায়। সেখানে স্থানীয়দের কাছে দুই কিশোরীর আচরণ সন্দেহজনক হলে বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হয়। একপর্যায়ে স্থানীয়দের উপস্থিতিতে দুই জনকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
সর্বশেষ রবিবার তাদের মোবাইল ফোনে কথা হয়। এরপর সন্ধ্যায় নোয়াখালীর কিশোরী টাঙ্গাইল শহরে চলে আসে। পরে বাসাইল থেকে গিয়ে তাকে নিয়ে আসে অপর কিশোরী। ‘তারা একে অপরকে বিয়ে করতে চায়’ বিষয়টি ওই রাতেই এলাকায় জানাজানি হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। তাদের দেখতে লোকজন বাড়িতে ভিড় জমান। তাদের এমন সিদ্ধান্তে স্বজনরাও হতভম্ব। অবশেষে ১৫ ও ১৭ বছর বয়সী দুই কিশোরীকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।