একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের কাগমারা এলাকায় ৬ষ্ঠ শ্রেণি পড়ুয়া এক মেয়ের বাল্যবিয়ের আয়োজন করা হয়। এ বিয়ে আটকাতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রানুয়ারা খাতুন। এ সময় তিনি পরিবারের সদস্যদের কাছে কনে সম্পর্কে জানতে চাইলে মেয়ের বাবা প্রতারণার আশ্রয় নেন। তিনি মেয়েকে মেজিস্ট্রেটের সামনে হাজির না করে তারই এক তালাকপ্রাপ্ত আত্মীয়কে কনে সাজিয়ে হাজির করেন।
পরে বিষয়টি জানাজানি হলে মেয়ের বাবা ও তালাকপ্রাপ্ত ওই নারীকে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। শনিবার (৯ অক্টোবর) বিকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ম্যাজিস্ট্রেট রানুয়ারা খাতুন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, টাঙ্গাইল পৌরসভার ৩নং ওর্য়াডের কাগমারা এলাকার গাড়ি চালক আব্দুস ছাত্তারের মেয়ে ও স্থানীয়ে একটি বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী সাদিয়ার বিয়ে ঠিক হয়। এমন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার (৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ওই মেয়ের বাড়িতে যাওয়া হয়। এ সময় মেয়ের বাবা প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে তারই এক তালাকপ্রাপ্ত আত্মীয় এনি আক্তারকে মেয়ে সাজিয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করেন। এনি আক্তারের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে তার বয়স দেখা যায় ২১ বছর। এনি দাবী করেন শুক্রবার তারই বিয়ে হচ্ছে।
পরবর্তিতে ম্যাজিস্ট্রেট ওই বাড়ি থেকে চলে যান। কিন্তু পরে খোঁজ খবর নিয়ে রানুয়ারা খাতুন জানতে পারেন সাত্তার তাঁর ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে সাদিয়ার বিয়ে দিচ্ছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে পুনরায় সাত্তারের বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করেন তিনি। এ সময় সরকারি নির্দেশ অমান্য করায় মেয়ের বাবাকে ৭দিন এবং প্রতারণা করে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করা এনি আক্তারকে ৫দিনের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রানুয়ারা খাতুন বলেন, ৬ষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীর বিয়ে হচ্ছে এমন সংবাদ পেয়ে কনের বাড়িতে হাজির হয়েছিলাম। প্রথমে তারা একজন তালাকপ্রাপ্ত মেয়েকে হাজির করে বলেন তার বিয়ে হচ্ছে। পরে তার কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে চলে আসি। কিন্তু পরবর্তিতে খবর পাই তারা প্রতারণা করেছে। পরে আবারও বিয়ে বাড়িতে হাজির হই। তবে খবর পেয়ে বর পক্ষ বিয়ে বাড়িতে হাজির হয়নি। মেয়ের বাবা মেয়েকে বাল্য বিয়ে দেবেন না মর্মে মুচলেকা দেন। পরে মেয়ের বাবা ও তালাকপ্রাপ্ত ওই নারীকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।