আরমান কবীরঃ টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে হামলা-মামলা, নির্যাতন ও হয়রানীর অভিযোগ করেছেন সংখ্যালঘু পরিবারের এক নারী।
শনিবার (৮ মার্চ) দুপুরে শহরের একটি চাইনিজ রেস্তোরায় সাংবাদিক সম্মেলনে উর্মিতা সাহা কলি নামের এক নারী অভিযোগ করেন, হামলা-মামলা থেকে রেহাই পেতে স্বামীকে তালাক দেয়ার পরেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেননা তিনি।
লিখিত বক্তব্যে উর্মিতা সাহা কলি জানান, টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে প্রায় ১৪ বছর আগে সোনারতরী নামের একটি এনজি’র কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১৪ সালে তার স্বামী পিন্টু দে সেখানে কর্মী হিসেবে যোগদান করেন। মির্জাপুরের সাবেক সংসদ সদস্য খান আহমেদ শুভ’র ঘনিষ্ট ও আশির্বাদপুষ্ট মো. জাহাঙ্গীর আলম হলেন এই সংস্থার নির্বাহী পরিচালক। সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু গত প্রায় এক বছর আগে গ্রাহকদের সঞ্চয়ের প্রায় চার কোটি টাকা সংস্থার একাউন্ট থেকে উধাও হয়ে যায়। এ ঘটনায় আমার স্বামী পিন্টু দের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের মামলা করেন জাহাঙ্গীর আলম।
তিনি জানান, অর্থ লোপাটের বিষয়টি আগেই জানতে পেরে তার স্বামী পিন্টু দে লোপাটের বিষয়ে জাহাঙ্গীর আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সব কিছুই এমপি সাহেব অবগত আছেন। আপনারা মনোযোগ দিয়ে কাজ করুন। এর কিছুদিন পর জানতে পারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে পিন্টু দের নামে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার পর থেকেই পিন্টু বাড়ি ছাড়া হন। তাকে না পেয়ে জাহাঙ্গীর আলমের লোকজন আমার বাড়িতে এসে হুমকি ধামকি দেয়।
তিনি আরও জানান, এসময় তারা আসবাবপত্র ভাংচুর এবং এক পর্যায়ে আমার ১২ বছরের একমাত্র মেয়ে উপমা দে কে অপহরণের চেষ্টাও করে। এ ঘটনার পর এলাকার লোকজন আমাকে নানা ভাবে ভয়ভীতি দেখায়। আমার নামেও মামলা হবে এমন কথাও বলেন অনেকে। এ অবস্থায় কোন কুল কিনারা না পেয়ে আমি স্বামীকে তালাক দেই। কিন্তু তাতেও আমি রেহাই পাইনি। জাহাঙ্গীর আলমের এনজিওর কিছু গ্রাহক ও ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী দিয়ে আমার বাড়িতে মাঝেমধ্যেই হামলা চালায়। বাড়ির কাছে মন্দিরসহ বিভিন্ন স্থানে লাগানো সিসি ক্যামেরা ভেঙ্গে ফেলে। এবং আমাকে মারধর করে। এক পর্যায়ে আমি হামলা ও ভাঙচুরের মামলা দায়ের করি। কিন্তু তাতেও কোন লাভ হয়নি। এরপর আমি থানায় দুইটি সাধারন ডায়েরি করি।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও জানান, প্রায় চার কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় ছয়মাস আত্মগোপনে থাকার পর পিন্টু দে উচ্চ আদালত থেকে জামিন পায়। উচ্চ আদালতের নির্দেশ মোতাকেব গত ১৫ দিন আগে নিন্ম আদালতে হাজির হতে গেলে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা পিন্টুকে আদালত চত্বর থেকে তুলে নিতে চেষ্টা করে। কিন্তু আশপাশের লোকজনের বাঁধার মুখে তারা ব্যর্থ হয়। মামলায় পিন্টু দে কারাগারে রয়েছে। অজ্ঞাত স্থান থেকে জাহাঙ্গীর আলম ও সাবেক সংসদ সদস্যের সন্ত্রাসীরা আমাকে প্রতিনিয়ত হুমকি ধামকি দিচ্ছে। ফলে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি ।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী উর্মিতা সাহা কলি প্রভাবশালীদের হামলা-মামলা, নির্যাতন ও হয়রানীর হাত থেকে রক্ষা পেতে গণমাধ্যম কর্মীদের সহায়তা কামনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে জেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।