এবার রাবেয়া আক্তার কলির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা


০৬:০৪ পিএম, ২১ অক্টোবর ২০২৪
এবার রাবেয়া আক্তার কলির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা - Ekotar Kantho
রাবেয়া আক্তার কলি

একতার কণ্ঠঃ এবার চাঁদাবাজির অভিযোগে রাবেয়া আক্তার কলির বিরুদ্ধে নারায়নগঞ্জ আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে ভুক্তভোগী মেরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে নারায়নগঞ্জ বিজ্ঞ আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় রাবেয়া আক্তার কলিকে ২নং আসামি করা হয়।

অভিযুক্ত রায়েবা আক্তার কলি, ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার মানিকারহাট বাজার সংলগ্ন পেটমানিকা গ্রামের হানিফ মিয়ার মেয়ে। বর্তমানে কলি ঢাকা মহানগরের ডেমরা থানার মুসলিম নগর এস. এম. সি. স্পেশাল প্রাইভেট হাসপাতাল সংলগ্ল জুলেখার বাড়ীর ২য় তলায় দক্ষিণ পাশের ফ্ল্যাটের সাবলেট ভাড়টিয়া হিসেবে বসবাস করছেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।

নারায়নগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার পাঁচ বিবি গ্রামের ওয়াজিউদ্দিন আহম্মেদের ছেলে মেরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে নারায়নগঞ্জ বিজ্ঞ আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নং ২১৭/২৪।যাহার ধারা গুলো হচ্ছে: ৩৬৫/৩৪২/৪৪৮/৩৩২/৩৮৫/৩৮৬/৩৭৯/৩৮০/৩০৭/৫০৬


মামলা সুত্রে জানা যায়, রাবেয়া আক্তার কলির ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে গত ২০২৩ সালের ২ মে রেজিস্ট্রিকৃত ভাবে বিবাহ হয় মামলার বাদীর সাথে। বিবাহের পর থেকেই বাদীর কাছ থেকে ব্লাকমেইলের মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ করার নেশা ছিল রাবেয়া আক্তার কলির। তাদের বনিবনা না হওয়ায় গত ২০২৩ সালের ২৮ আগস্ট দেনমোহর পাওনা বাবদ ৬ লক্ষ টাকা পরিশোধ করার মাধ্যমে বিবাহ বিচ্ছেদ হয় তাদের। বিবাহ বিচ্ছেদের চুক্তি নামায় কারো বিরুদ্ধে কোন পক্ষই কোন মামলা অথবা প্রতারণার আশ্রয় নিতে পারবে না বলে অঙ্গীকার নামা লেখা হয়।

মামলার বাদীর কাছ থেকে চুক্তি অনুযায়ী ধার নেওয়া ২০ লাখ টাকা রাবেয়া আক্তার কলির ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও অঙ্গীকারনামা অনুযায়ী বাদীর পাওনা ২০ লক্ষ টাকা যড়যন্ত্র মুলক মামলার ২নং আসামি রায়েয়া আক্তার কলিসহ সকল আসামীরা ওই টাকা আত্মসাৎ করেন।

মামলা সূত্রে আরও জানা যায় ,এছাড়া গত ২ জানুয়ারি রাত ৩টা ১৫ মিনিটে মামলার ১ং আসামি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার ও স্পেশাল ক্রাইম(দক্ষিণ) এর ইন্সপেক্টর মুহাম্মদ গোলাম নবী শেখ এর সাথে যোগ সাজসে কলি নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াই হাজার উপজেলায় পাঁচরুথী থানাপাড়া এলাকার বাদীর বসত বাড়িতে গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করিলে মামলা ১ ও ২ নং আসামি সহ মামলার উল্লেখিত ৫ জন‌ আসামী তাকে মারধর শুরু করে। ১ নং আসামি তার কোমর থেকে তার সার্ভিস পিস্তল বের করে বাদীকে হত্যার হুমকি দেয় অন্যথায় বাদীকে মিথ্যা মামলায় হয়রানি অথবা ক্রসফায়ারে গুলি করিয়া মারিয়া ফেলার হুমকি দেয়। পরে আসামিগন তাকে অপহরণ করে একটি হাইস মাইক্রোবাসে ঢাকার মিন্টু রোডের ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে আসে। পরদিন সকাল ১১টায় ডিবি কার্যালয়ের একটি বদ্ধ রুমে তাকে গুম করিয়া হত্যার প্রস্তুতি নিলে নিরুপায় হয়ে বাদি ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দিতে রাজি হয়। পরে মামলার ২ ও ৪ নং সাক্ষীকে টেলিফোনের মাধ্যমে জানালে, তাঁরা অনেক কষ্টে ৩০ লাখ টাকা যোগাড় করে মিন্টু রোডের ডিবি কার্যালয়ের নিয়ে আসে। পরে আসামিগণের দাবিকৃত বাকি ২০ টাকা দিতে পারবে না বলিয়া অপারগতা প্রকাশ করিলে আসামি গণ তাকে মিথ্যা মামলায় দিয়ে কোর্টে চালান করে। যাহা ডেমরা থানার মামলা নং ২৫(১১) ২০২৩। এ ছাড়া মামলার জামিনে মুক্তি পেয়ে টাকা দাবি করলে তাকে আরও মিথ্যা মামলায় জড়ানো হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়।

এ সময় বাদির কাছে থাকা তিনটি মোবাইল ফোন যথাক্রমে ১ টি কালো রংয়ের Apple কোম্পানির আইফোন ৭+ যাহার মূল্য আনুমানিক ৬৫ হাজার টাকা, একটি ছাই রংয়ের Oppo মোবাইল যাহার অনুমানিক মূল্য ৩৫ হাজার টাকা ও একটি Realme RMX 3771 মডেলের মোবাইল যাহার অনুমানিক মূল্য ৩৫ হাজার টাকা জোর পূর্বক রাখিয়া দেয়। এ সময় বাদির হাতে থাকা একটি Rado ঘড়ি যাহার অনুমানিক মূল্য ৩২ হাজার টাকা ও মানিব্যাগে থাকা নগদ ৫৫ হাজার টাকা জোর পূর্বক নিয়ে যায় আসামিগণ।

মামলার বাদী মেরাজুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, মামলার ২নং আসামি রাবেয়া আক্তার কলির একাধিক বিবাহ হয়। ইতিপূর্বে কলি তার প্রথম স্বামী রুবেল নামক যুবকের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়। কাবিনের সিরিয়াল অনুযায়ী তিনি ৩নং স্বামী ছিলেন। বর্তমানে আবুল কালাম আজাদ নামক যুবককে স্বামী দাবী করে কলি। আবুল কালাম তার ৪নং স্বামী। রাবেয়া আক্তার কলির বর্তমান দাবীকরা স্বামীও প্রতারনা মামলার আসামি।

তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, তার কাছ থেকে নেওয়া ৩০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করতে রাবেয়া আক্তার কলির বর্তমান স্বামী পরিচয় দানকারী আবুল কালামসহ সকল আসামিরা ষড়যন্ত্রমূলক সাইবার নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করেন তার বিরুদ্ধে।

শেখ হাসিনার সাথে ছবি উঠিয়ে এই ছবি দেখিয়ে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন লোকজনকে ভয় দেখিয়ে রাবেয়া আক্তার কলি এবং আবুল কালাম আজাদ মিলে চাঁদা বাজি করতো।গত ৫ ই আগষ্টে ছাত্র জনতার ভয়ে শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর আবুল কালাম আজাদও বিদেশে চলে যায়।

কলির গ্রামের বাড়ি ভোলা জেলার মানিকারহাট বাজার এলাকার স্থানীয়রা জানান, ট্রাক চালকের মেয়ে কলি বর্তমানে ঢাকায় থাকেন। প্রাইভেটকার যোগে আসতেন ঢাকা থেকে তার গ্রামের বাড়িতে। হঠাৎ আনুমানিক ২৩ বছরের কলি এত টাকা কোথায় পেলেন এমন প্রশ্ন তাদের। রাবেয়া আক্তার কলি ঢাকায় কি কাজ করছেন? জানতে চান তাঁরা

অভিযোগ প্রসঙ্গে রাবেয়া আক্তার কলির কাছে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ মিথ্যা দাবী করেন।
তিনি আরও বলেন, মিরাজ নামক ব্যক্তির বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেছেন বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, মানহানি করার জন্য এই ধরনের সাজানো মামলা তার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে।


খবরটি শেয়ার করুন

কপিরাইট © ২০২২ একতার কণ্ঠ এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি ।