একতার কণ্ঠঃ কোটা বাতিলের দাবিতে পুলিশের তৈরি করা ব্যারিকেড ভেঙে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক দেড়ঘন্টা অবরোধ করে রাখে আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দুপুর ১টার দিকে মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারী এমএমআলী কলেজের ছাত্রছাত্রীদের নেতৃত্বে শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৫ সহস্রাধিক শিক্ষার্থীরা মহাসড়কের নগরজলফৈ বাইপাসে অবস্থান নেয়। এ সময় মহাসড়কের দু’পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। অবরোধ স্থলে এ সময় বিপুল সংখ্যক আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য উপস্থিত ছিল। পুলিশ বার বার শিক্ষার্থীদের অবরোধ তুলে নেওয়ার অনুরোধ করলেও সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের কর্মসুচিতে অনড় থাকে। দুপুর ২টা ৩০মিনিটে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নিলে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়।
এদিকে পূর্ব নির্ধারিত কর্মসুচি পালন করতে বেলা ১০টা ৩০মিনিটের দিকে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে শহরের নিরালা মোড়ে শহীদ মিনার চত্বরে আসার সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। এতে তিনজন ছাত্র আহত হয়। তাদেরকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে পৌঁছালে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
এরপর আন্দোলনকারীরা টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সামনে সমবেত হয়। সেখানে শিক্ষার্থীরা ঘন্টাব্যাপী সমাবেশ করে।। পরে সেখান থেকে শিক্ষার্থীরা মহাসড়কের দিকে আগাতে থাকলে প্রেসক্লাবের সামনে ও পুরাতন বাসষ্ট্যান্ডে পুলিশ বাঁধা প্রদান করে। পুলিশের বাঁধা উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে মহাসড়কের নগরজলফৈ বাইপাসে যাওয়ার সময় মহাসড়কের প্রবেশ পথে তিনটি বালু ভর্তি ট্রাক দিয়ে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে। সেখানে ভূয়া-ভূয়া স্লোগান দিয়ে ছাত্ররা ট্রাক ভাঙচুরের উদ্যোত হলে পুলিশ সরে যায়। ট্রাকে থাকা চালক ট্রাক তিনটি সরিয়ে নেয়। পরে হাজার-হাজার শিক্ষার্থীরা মহাসড়কে অবস্থান নেয়।
অবরোধ কালে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলেন, যে পরিমাণ কোটা, তাতে দেশের মেধাবীরা চাকরি না পেয়ে দেশের বাইরে চলে যাবে, দেশে সরকারি চাকরি করারও আগ্রহও হারাবে। বৈষম্যমূলক কোটার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অন্যায় করা হচ্ছে। এ বৈষম্য দূর না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব আমরা। এই আন্দোলন কোনো সরকার বিরোধী আন্দোলন না, এই আন্দোলন আমাদের সকলের ভবিষ্যৎ নিশ্চিতের আন্দোলন।
পরে দুপুর ২টা ৩০মিনিটের দিকে মঙ্গলবার দিনের অবরোধ কর্মসূচি শেষ করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা মহাসড়কের অবরোধ তুলে যার যার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরে যায়।
এসময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, মহাসড়কে কোন প্রকার জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হলে পুলিশ ব্যবস্থা নিবে। অন্যথায় শান্তিপূর্ন ভাবে আপনারা আন্দোলন করেন রাস্তা ছেড়ে দিয়ে।