একতার কণ্ঠঃ উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা ভারি বর্ষণে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীতে কয়েক সপ্তাহ ধরে অস্বাভাবিক হারে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার নিম্ন অঞ্চলের প্রায় শতাধিক এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে। এতে করে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন চরাঞ্চলসহ হাজার হাজার মানুষ।
এদিকে, পানি বৃদ্ধির ফলে উপজেলার যমুনার চরাঞ্চলসহ কৃষকের প্রায় ১ হাজার হেক্টর জমির ফসল পানিতে ভাসছে ও তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এনিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। এরমধ্যে উপজেলার গাবসারা, অর্জুনা, নিকরাইল ও গোবিন্দাসী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কার্যালয় জানিয়েছে, চলমান বন্যায় অর্জিত ৮৯০ হেক্টর জমির আউশ ধানের মধ্যে তলিয়ে ও পচে গেছে ৫৮০ হেক্টর জমি, অর্জিত পাট ২ হাজার ৮৩৫ হেক্টর জমির মধ্যে তলিয়ে গেছে ২৮০ হেক্টর জমি, অর্জিত ১ হাজার ৬১০ হেক্টর তিলের মধ্যে তলিয়ে গেছে ১০ হেক্টর, অর্জিত ৩২০ হেক্টর জমির মধ্যে তলিয়ে গেছে ২০ হেক্টর ও অর্জিত ৫১০ হেক্টর বোনা আমনের মধ্যে তলিয়ে গেছে ২০ হেক্টর জমির ফসল।
গাবসারা ইউনিয়নের কালিপুর গ্রামের সফিকুল ইসলাম বলেন, গেল কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর সবচেয়ে বেশি বন্যা হয়েছে। ইতোমধ্যে আমাদের চরাঞ্চলের তিল, পাট, আউশ ধানসহ বিভিন্ন সবজি পানিতে তলিয়ে পচে নষ্ট হয়ে গেছে। চারদিকে পানি আর পানি। এসব ফসল তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকরা ক্ষতির মুখে পড়েছে।
গোবিন্দাসী ইউনিয়নের কয়েড়া গ্রামের মজিবুর রহমান বলেন, ১ বিঘা জমিতে উন্নত জাতের ঢেঁড়শ, মরিচ, পুঁইশাক ও পাটশাকসহ অন্যান্য সবজি চাষ করেছিলাম। মুহুর্তেই পানিতে তা তলিয়ে পচে যাচ্ছে। এসব ফসল তলিয়ে যাওয়ার কারণে অবশিষ্ট আর কিছু রইল না। ঘুরে দাঁড়াতে কৃষি প্রণোদনা দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মোখলেছুর রহমান জানান, টানা ভারি বর্ষণ ও উজানের ঢলে চলতি মৌসুমে প্রায় ১ হাজার হেক্টর জমির আউশ ধান, তিল, পাট ও বোনা আমনসহ বিভিন্ন ফসল নিমজ্জিত হয়েছে এবং বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের কৃষি প্রণোদনা দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।