একতার কণ্ঠ ডেস্কঃ গোটা মানবজাতি বিশেষ করে মুসলিম জাতির ক্ষেত্রেও এটি বড় কঠিন ও পরীক্ষাসম একটি বিষয় যে, তারা মানবসুলভ আচরণের কারণে অভ্যাস ও ইবাদত উভয়টিকে একসঙ্গে সংমিশ্রণ করে ফেলে।
দুটির মাঝে পার্থক্য সাধন করতে পারে না। অনেক সময় এমন হয় ইবাদত অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়। এ কথা মস্তিষ্কে থাকে না যে, আমরা কেন ইবাদত করছি? কার জন্য করছি?
এমনকি নামাজগুলোও কখনও কখনও একেবারে অভ্যাসেরই রূপ ধারণ করে বসে। নামাজ পড়ার অভ্যাস হয়ে গেছে। তাই সময় হলেই পড়তে গেলাম। কিন্তু এটা আমাদের মস্তিষ্কে থাকে না যে, মসজিদপানে গমনে প্রত্যেক কদমে কদমে কী পরিমাণ সাওয়াব পাওয়া হচ্ছে!
কতটুকু দূর অতিক্রম করছি! মসজিদে পৌঁছে দোয়া পড়ার সময় ধারণা এমন রাখা উচিত যে, আমি আল্লাহতায়ালার রহমতের চাদরে আবৃত হয়ে গেছি। রহমত ও বরকতের স্থানে এসে উপস্থিত হয়েছি। আমার জন্য রহমত ও বরকতের সকল দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু এমনটি আমাদের জীবনে হয় না। মনে হয় এটি একটি রীতি মাত্র। যার ফলে ধর্মীয় জীবনযাপনকেও রীতি মনে হয়। সব কিছুই আপন আপন স্থানে ঠিক আছে। নির্ধিষ্ট সময় অনুযায়ী হচ্ছে । কিন্তু অনুভূতি হয় না।
সওয়াব প্রাপ্তির নিয়ত মনে থাকে না। ঠিক রোজার ক্ষেত্রেও প্রথমত কথা হলো— আমাদের মস্তিষ্কে এ কথা বদ্ধমূল করে নেওয়া যে, রোজা একমাত্র আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার লক্ষ্যে পালন করছি। লোক দেখানোর জন্য নয়, প্রথাগত কোনো অনুসরণে নয়।
লোকলজ্জার ভয়েও নয় যে, লোকে কী বলবে! রোজা রাখে না ! রোজার দিনে পানাহার করছে এই ভয়েও নয়! বরং এই নিয়ত রাখা যে, আল্লাহকে রাজি খুশি করার জন্য রোজা রাখছি।
মস্তিষ্কে এ কথার উপস্থিতি থাকা যে, হাদিসে আছে— হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি আস্থাশীল হয়ে, তার প্রতিশ্রুতিসমূহের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাসী হয়ে, তার পক্ষ হতে প্রতিদান ও সাওয়াব প্রাপ্তির লোভে রোজা রাখবে তার পিছনের সকল গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। (সহিহ বুখারি, হাদিস নং ২০১৪)
সর্বদা মনে প্রাণে এই বিশ্বাস রাখা এবং মস্তিষ্ককে এ কথায় তরুতাজা রাখা যে, আমি একমাত্র আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে রোজা পালন করছি। এ জন্য পালন করছি যে, রোজা পালন আল্লাহর পক্ষ থেকে আমার ওপর ফরজ বিধান।