আরমান কবীরঃ টাঙ্গাইল শহরের ফুসফুস খ্যাত শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানের ৭টি শতবর্ষী রেইনটি গাছ কাটার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (২২ এপ্রিল) সকালে শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) টাঙ্গাইল শাখা ও সবুজ পৃথিবী নামের দুটি সংগঠনের উদ্যোগে এই ঘন্টা ব্যপী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
বাপা টাঙ্গাইল শাখার সভাপতি ও মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডঃ এএসএম সাইফুল্লাহ’র সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ডঃ মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, ইব্রাহীম খা সরকারী কলেজের সহযোগী অধ্যাপক অনিক রহমান বুলবুল, বীরমুক্তিযোদ্ধা রঘুনাথ বসাক, বাপা টাঙ্গাইল শাখার সহ-সভাপতি মোঃ আজাহারুল ইসলাম খান, যুগ্ম-সম্পাদক মোহাম্মদ মাসুদ রানা, মোঃ এরফানুজ্জামান রুনু, সাংগঠনিক সম্পাদক নুর আলম সিদ্দিকী, আওয়াল মাহমুদ, ডাঃ আজিজুল হক, সবুজ পৃথিবী মির্জাপুর শাখার সভাপতি মোঃ আনোয়ার হোসেন নবীন, কালিহাতী শাখার সভাপতি মোঃ বুলবুল হোসেন, সবুজ পৃথিবীর পরিচালক সারমিন আলম।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) জাতীয় কমিটির সদস্য ও টাঙ্গাইল শাখার সাধারণ সম্পাদক, সবুজ পৃথিবীর প্রতিষ্ঠাতা সহিদ মাহমুদের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তারা বলেন,
টাঙ্গাইল শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানের এইসব শতবর্ষী গাছ রক্ষায় আমাদের আন্দোলন চলবে। প্রয়োজনে আমরা এইসব গাছ পাহারা দিবো। কোন অবস্থাতেই এই ৭টি শতবর্ষী রেইনটি গাছ কাটা চলবে না। এই গাছ গুলো রক্ষার টাঙ্গাইলে ক্রিয়াশীল পরিবেশবাদী সংগঠন ও সচেতন নাগরিক সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য ,শনিবার (২০ এপ্রিল) সকালে টাঙ্গাইল পৌরসভা কর্তৃপক্ষ হঠাৎ টাঙ্গাইল শহরের ফুসফুস খ্যাত শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানের ৭টি প্রাচীন রেইন টি গাছ কাটতে শুরু করে। কোন রকম টেন্ডার প্রক্রিয়া ছাড়াই মেয়রের একক সিদ্ধান্তে শুরু হয় প্রাচীন এইসব বৃক্ষ নিধন। মূহুর্তের মধ্যেই সেই খবর ছড়িয়ে পড়ে। পরে বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মী, মানবাধিকার কর্মী, সচেতন নাগরিক সমাজের প্রতিবাদের মুখে গাছ কাটা বন্ধ হয়। খবর পেয়ে টাঙ্গাইল পৌর মেয়র এস এম সিরাজুল হক আলমগীর ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হয়। এরপর স্থানীয় সরকার টাঙ্গাইলের উপ-পরিচালক মো: শিহাব রায়হান আসেন।
স্থানীয় সরকার টাঙ্গাইলের উপ-পরিচালক মো: শিহাব রায়হান বলেন, আইনতভাবে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ কোনো গাছ কাটতে চাইলে প্রথমত স্থানীয় সরকারে আবেদন করতে হবে এবং তারপর সেই আবেদন বন কর্মকর্তার কাছে প্রেরণ করা হলে বন কর্মকর্তা কর্তৃক অনুমোদন হওয়ার পর প্রকাশ্য নিলাম আহ্বান করে গাছ কাটার প্রক্রিয়া করতে হয়। এক্ষেত্রে স্থানীয় সরকার বরাবর কোনো আবেদন দেয়া হয়নি, তাই কিছুটা নিয়ম বহির্ভূত হয়েছে, আর এজন্য গাছ কাটা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন তিনি।
ইতিপূর্বে টাঙ্গাইল পৌর মেয়র এস এম সিরাজুল হক আলমগীর জেলা সদর রোড প্রশস্ত করনের সময় টাঙ্গাইল সদর থানা ভূমি অফিসের সামনের শত বছরের প্রাচীন বট গাছ কাটার যৌক্তিকতা তুলে ধরে সেই দেড়শ বছরের প্রাচীন বট গাছ কেটে যাত্রী ছাউনী তৈরি করেন।
তৈরিকৃত সেই যাত্রী ছাউনী বর্তমানে শহরবাসীর কোন কাজেই আসছে না। যাত্রী ছাউনিটি এখন নেশাগ্রস্ত লোক ও ভবঘুরে ও রাতের মোক্ষি রানীদের দখলে।