টাঙ্গাইলে পরকীয়া প্রেমি‌কের সহায়তায় স্বামী‌কে হত্যা


০৮:৪১ পিএম, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩
টাঙ্গাইলে পরকীয়া প্রেমি‌কের সহায়তায় স্বামী‌কে হত্যা - Ekotar Kantho
নিহত নাঈম হোসেন ও স্ত্রী রেশমি খাতুন

একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে বেড়া‌নোর কথা ব‌লে পরকীয়া প্রেমি‌কের সহায়তায় স্বামী‌কে হত‌্যার পর মর‌দেহ গু‌ম করার জন‌্য বালু চাপা‌ দি‌য়ে‌ছে স্ত্রী। প‌রে স্ত্রীর দেওয়া ত‌থ্যের ভি‌ত্তি‌তে স্বামীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় প্রেমিক মাসুদকে গ্রেপ্তার করা হয়।

নিহতের নাম নাঈম হোসেন (২০)। সে উপজেলার ফলদা ইউনিয়নের মাইজবাড়ি গ্রামের মো. শফিকুল ইসলামের ছেলে।

বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে গ্রেপ্তারকৃতদের টাঙ্গাইল জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে প্রেরণ করা হয়। পরে বিকেলে আদালতে তোলা হলে স্ত্রী রেশমি খাতুন ও প্রেমিক মাসুদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।

এরআগে মঙ্গলবার (২৬ ডি‌সেম্বর) রা‌তে জামালপুর জেলার স‌রিষাবা‌ড়ি উপ‌জেলার চর ডাকাইতাবান্দা এলাকা থে‌কে স্বামীর মর‌দেহ উদ্ধার ক‌রে পুলিশ। পরে ওই রাতেই নিহত নাঈমের বাবা রেশমি খাতুন, তার প্রেমিক মাসুদসহ অজ্ঞাত কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। হত‌্যার ঘটনায় পরকীয়া প্রেমিক মাসুদ ও স্ত্রী রেশ‌মি খাতু‌নকে গ্রেপ্তার ক‌রে‌ছে পু‌লিশ।

গ্রেপ্তারকৃত মাসুদ উপজেলার অর্জুনা ইউনিয়‌নের চরভরুয়া গ্রা‌মের আব্দুল হাইয়ের ছেলে এবং নিহতের স্ত্রী রে‌শ‌মি খাতুন একই ইউনিয়‌নের রামাইল গ্রা‌মের আব্দুর রাজ্জা‌কের মে‌য়ে।

জানা গেছে, নাঈম ও রেশ‌মি গেল প্রায় তিনমাস আগে প্রেম ক‌রে প‌রিবা‌রের অম‌তে বি‌য়ে ক‌রেন। এর‌প্রেক্ষি‌তে গত ১৯ ডি‌সেম্বর স্ত্রী রেশ‌মি ফোন করে নাঈমকে শশুরবাড়িতে যেতে বলে এবং নাঈমকে বিকাশের মাধ্যমে ৫০০ টাকা পাঠিয়ে দেয়। পরে নাঈম তার মার কাছ থেকে আরও কিছু টাকা নিয়ে রামাইলে শশুর বা‌ড়ি‌তে যায়। প‌রে রেশ‌মি নাঈম‌কে নি‌য়ে বিকালে ঘুর‌তে বের হয়। এরপর রা‌তে রেশমি বাবার বা‌ড়ি গি‌য়ে জানায় তার স্বামী নাঈম চ‌লে গে‌ছে। এরপর থে‌কে নাঈমের খোঁজ পাওয়া যা‌চ্ছিল না।

গ্রেপ্তারকৃত রেশ‌মির বরাত দি‌য়ে পু‌লিশ জা‌নি‌য়ে‌ছে, রেশ‌মি পরকীয়ায় আশক্ত ছিল। নাঈমকে প্রেম করে পালিয়ে বিয়ে করেছিল রেশমি। পরে পুরোনো প্রেমিকের কথায় স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনা করে রেশমি। প‌রিকল্পনা অনুযায়ী স্বামী নাঈম‌কে নি‌য়ে চরাঞ্চ‌লের বি‌ভিন্ন জায়গায় ঘুর‌তে যায়। এরপর স‌রিষাবা‌ড়ি সিমান্ত এলাকায় একটি চরে গি‌য়ে প্রেমি‌ক ও কয়েকজনের সহায়তায় নাঈমকে প্রথমে গলায় গামছা পেছিয়ে পানিতে চুবিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর মরদেহ গুম করার জন্য বালু চাপা দেওয়া হয়। কাজ শেষ করে রেশ‌মি বাবার বা‌ড়ি‌তে চ‌লে যায়।

ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আহসান উল্লাহ জানান, ঘটনা‌টি খুবই মর্মান্তিক। স্বামীকে বেড়া‌নোর কথা ব‌লে প‌রিক‌ল্পিতভা‌বে হত‌্যা ক‌রে পরকীয়া প্রেমি‌ক ও তার বন্ধুদের সহায়তায়। প‌রে তার মর‌দেহ গুম করার জন‌্য বালু চাপা দি‌য়ে দেয়। প‌রে রেশ‌মি‌কে আট‌কের পর জিজ্ঞাসাবাদ কর‌লে সে হত‌্যা‌র কথা স্বীকার ক‌রে। তার দেয়া ত‌থ্যের ভি‌ত্তি‌তে মর‌দেহ উদ্ধার করা হয়।

তিনি আরও জানান, বিকালে নিহতের স্ত্রী ও তার পরকীয়া প্রেমিককে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে। সেখানে তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।


নিউজটি শেয়ার করুন

কপিরাইট © ২০২২ একতার কণ্ঠ এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি ।