টাঙ্গাইলে ৯৪ বছর বয়সেও মিলেনি বয়স্ক ভাতা


০৮:১৬ পিএম, ১১ মে ২০২৩
টাঙ্গাইলে ৯৪ বছর বয়সেও মিলেনি বয়স্ক ভাতা - Ekotar Kantho
বৃদ্ধা মরনী রাজবংশী

একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার সদর ইউনিয়নের মিরিকপুর গ্রামের মৃত মুছিরাম রাজবংশীর স্ত্রী মরনী রাজবংশীর ৯৪ বছর বয়সেও কপালে জুটেনি বয়স্ক ভাতার কার্ড। তার আক্ষেপ আর কত বছর বয়স হলে মিলবে বয়স্ক ভাতার কার্ড।

কান্নাজড়িত কন্ঠে মরনী রাজবংশী বলেন, এখন আর চোখে তেমন দেখতে পাই না, বয়স তো আর কম হলো না। শরীর আর চলতেই চায়না। শুয়ে বসেই দিন কাটে। কখন যেনো মৃত্যুর ডাক এসে যায়। শুনেছি প্রধানমন্ত্রী নাকি বয়স্কদের ভাতার ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু আমারতো অনেক বয়স হয়েছে, এখন পর্যন্ত কোন ভাতার কার্ড পাইনি। কত জনপ্রতিনিধির দ্বারে দ্বারে গেছি আমাকে কার্ড করে দেয়নি। আশপাশের অনেকেই ভাতার টাকা পাইছে। কিন্তু আমি পাই নাই! বৃদ্ধা মরনী রাজবংশীর প্রশ্ন ‘আর কত বয়স হলে ভাতার কার্ড পাব আমি’ ?

বয়সের ভারে নুয়ে পড়া মরনী ঠিকমতো চলাফেরা করতে পারেন না। চোখের দৃষ্টিও ঝাঁপসা হয়ে গেছে। দিনের বেশিরভাগ সময় কাটে বিছানায় শুয়ে। স্বামী বেঁচে থাকা অবস্থায় কোনো মতে চলতো তাদের টানাটানির সংসার। স্বামীর মৃত্যুর পর সন্তানরাও অভাবের তাড়নায় মায়ের খোঁজখবর নিতে পারেনা।

সপ্তাহে মাত্র ৩’শ টাকা দরকার তার ঔষুধ কেনার জন্য। সেটাও জোটাতে পারেন না তিনি। ফলে প্রয়োজনীয় ঔষুধ না খেয়েই বেঁচে থাকতে হচ্ছে তাকে।একটু সচ্ছলতার জন্য বয়স্ক ভাতার কার্ডের জন্য বেশ কয়েক বছর ধরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির দ্বারে দ্বারে ঘুরলেও কেবলই মিলেছে শুধুই আশ্বাস।

সরেজমিনে মিরিকপুর গিয়ে দেখা যায়, জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী, ১৯২৯ সালে ১০ আগস্ট জন্ম মরনী রাজবংশীর। এতে তার বয়স এখন ৯৪ বছর। তার তিন ছেলে ও তিন মেয়ে সন্তানের মধ্যে সবার বিয়ে হয়ে গেছে। দুই ছেলের মৃত্যু হয়েছে অনেক আগেই। স্বামীর রেখে যাওয়া সামান্য জায়গার ওপর টিনের ছাপড়া ঘরে বসবাস করেন মরনী রাজবংশী ।

কান্নাজড়িত কন্ঠে মরনী রাজবংশী বলেন, এখন আর চোখে তেমন দেখতে পাই না, বয়স তো আর কম হলো না। শরীর আর চলতেই চায়না। শুয়ে বসেই দিন কাটে। কখন যেনো মৃত্যুর ডাক এসে যায়। শুনেছি প্রধানমন্ত্রী নাকি বয়স্কদের ভাতার ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু আমারতো অনেক বয়স হয়েছে, এখন পর্যন্ত কোন ভাতার কার্ড পাইনি। কত জনপ্রতিনিধির দ্বারে দ্বারে গেছি আমাকে কার্ড করে দেয়নি। আশপাশের অনেকেই ভাতার টাকা পাইছে। কিন্তু আমি পাই নাই! বৃদ্ধা মরনী রাজবংশীর প্রশ্ন ‘আর কত বয়স হলে ভাতার কার্ড পাব আমি’ ?

এ প্রসঙ্গে,বাসাইল সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহেল জানান, বাসাইল সদর ইউনিয়নটি নবগঠিত। গত বছরের ২৪ জুলাই আমি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহন করেছি। দায়িত্ব গ্রহনের পর এই ইউনিয়নে বয়স্কদের জন্য কোন বয়স্ক ভাতার কার্ড বরাদ্দ হয়নি। তবে মরনী রাজবংশীকে ভিজিএফ’র চাল বরাদ্দসহ ব্যক্তিগতভাবে বিভিন্ন সহযোগিতা করা হচ্ছে। ইউনিয়নের বয়স্কদের জন্য বরাদ্দ এলেই প্রথমে তাকে দেওয়া হবে।

বাসাইল উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা নূরে-ই-লায়লা জানান, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। দ্রুতই মরনী রাজবংশীর খোঁজ-খবর নিয়ে তার কার্ড করে দেওয়া হবে।

বাসাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) পাপিয়া আক্তার জানান, বিষয়টি আমার জানা ছিলোনা। যত দ্রুত সম্ভব স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে তাকে বয়স্ক ভাতার ব্যবস্থা করা হবে।


খবরটি শেয়ার করুন

কপিরাইট © ২০২২ একতার কণ্ঠ এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি ।