একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলে যমুনার উন্মত্ততায় দুই দিনের ভাঙনের শিকার হয়ে কালিহাতী উপজেলার ৯২টি পরিবার নিঃস্ব হয়েছে। একই সময়ে জেলার ঝিনাই নদীর ২০ কিলোমিটার এলাকার বাঁকে বাঁকে ভাঙন দেখা দেওয়ায় বাসাইল উপজেলার পাঁচ শতাধিক পরিবার আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। জেলা প্রশাসক ডক্টর মো. আতাউল গনি যমুনায় ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্ত ১৪টি পরিবারকে নগদ অর্থ ও অন্যদের খাদ্য সহায়তা দিয়েছেন।
টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, যমুনায় পানি কমতে থাকায় শুক্রবার (২৩ জুলাই) রাতে কালিহাতী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের ভৈরববাড়ী গ্রামে ভাঙন দেখা দেয়। শুক্রবার রাতের ভাঙনে ১৪টি পরিবারের বাড়ি পুরোপুরি যমুনার পেটে চলে যায়। পরে দফায় দফায় শনিবার (২৪ জুলাই) সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই গ্রামের ৭৮টি পরিবারের বাড়িঘরে ভাঙন শুরু হওয়ায় তড়িঘড়ি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ভাঙন কবলিত শতাধিক পরিবার আত্মীয়দের বাড়ি আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়া স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ ও শতাধিক ঘর বাড়ি ভাঙনের হুমকির মুখের রয়েছে। এদিকে শনিবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুক্রবার রাতে ভাঙনের শিকার পরিবারের মাঝে আর্থিক সহায়তা ও চাল বিতরণ করা হয়েছে।
অপরদিকে, গত এক সপ্তাহে বাসাইল উপজেলা দিয়ে বয়ে যাওয়া যমুনার শাখা ঝিনাই নদীর ২০ কিলোমিটার এলাকার বাঁকে বাঁকে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে ১০-১২টি পরিবারের ভিটাবাড়ি ও বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের কারণে তীরবর্তী অনেকেই বাড়িঘর নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছে। পাঁচ শতাধিক পরিবার ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। বিলপাড়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদের প্রধানমন্ত্রীর উপহার দেওয়া বীর নিবাসটিও ভাঙনের আশঙ্কায় রয়েছে।
টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, যমুনার ভাঙনের শিকার ভৈরববাড়ী গ্রামে জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন প্রতিরোধে কাজ শুরু করা হয়েছে। অপরদিকে, বাসাইল উপজেলায় ঝিনাই নদীর ভাঙন রোধে বিভিন্ন পয়েণ্টে কাজ অব্যাহত রয়েছে। নতুন করে ভাঙন কবলিত পয়েণ্টগুলোতে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও জানান, প্রতি বছর নদী ভাঙন রোধে অস্থায়ী ব্যবস্থায় শুধু টাকার অপচয় হচ্ছে। নদী ভাঙনরোধে স্থায়ী পরিকল্পনা নেওয়া জরুরি। অহেতুক টাকার অপচয় ঠেকাতে ও নদী ভাঙন রোধে স্থায়ী প্রকল্প পাঠানো হয়েছে।
একতার কণ্ঠঃ কঠোর লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে বঙ্গবন্ধু সেতু-ঢাকা মহাসড়ক ফাঁকা। হঠাৎ দু-একটি দূরপাল্লার বাস চলাচল করতে দেখা গেলেও থ্রি হুইলারগুলো রীতিমত মহাসড়ক দখলে রেখেছে। জরুরি পণ্যপরিবহন, ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার চলাচল করতে দেখা গেছে। শনিবার (২৪ জুলাই) কঠোর লকডাউনের দ্বিতীয় দিন বঙ্গবন্ধু সেত-ঢাকা মহাসড়কে টাঙ্গাইলের রাবনা ও আশেকপুর বাইপাসে সকাল ৯টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত এ চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে উত্তরবঙ্গ থেকে যাত্রী নিয়ে শ্যামলী পরিবহনের একটি এসি বাস ঢাকার দিকে এবং মহেড়া পুলিশ ট্রেনিং সেণ্টারের একটি যাত্রীবাহী বাসকে টাঙ্গাইলে প্রবেশ করতে দেখা গেছে। এছাড়া মহাসড়ক হয়ে থ্রি হুইলারে যাত্রীরা টাঙ্গাইলের বিভিন্ন উপজেলাসহ গাজীপুরের চন্দ্রা পর্যন্ত চলাচল করছেন।
মহাসড়কে পরিবহনের অপেক্ষারত নজরুল ইসলাম নামে এক পোশাক শ্রমিক জানান, পাঁচ দিনের ঈদের ছুটিতে বাড়ি এসেছিলেন। তিনি কাজ করেন গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানায়। শনিবার(২৪ জুলাই) রাত থেকে তার ডিউটি শুরু। তাই তিনি বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন। মহাসড়কে বাস নাই, থ্রি হুইলার গুলো ১০০ টাকার ভাড়া দ্বিগুন হাকাচ্ছে।
স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সোনা মিয়া জানান, শনিবার ভোর থেকে মহাসড়কে মাত্র ৪-৫টি বাস চলাচল করতে দেখেছেন। তবে বাসগুলোতে যাত্রী ছিল কিনা- তা তিনি খেয়াল করেন নাই। শুক্রবার(২৩ জুলাই) যে হারে বাস চলছে, শনিবার তা দেখা যাচ্ছেনা।
বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম জানান, সরকারি নির্দেশনায় গণপরিবহন বন্ধ থাকায় মহাসড়ক প্রায় ফাঁকা। এ সড়কে পণ্যপরিবহনে নিয়োজিত বাহন ও কিছু ব্যক্তিগত যানবাহন ছাড়া কোন গাড়ি চলছে না। দূরপাল্লার বাস চলাচল করছে না, এরপরও কোন বাস মহাসড়কে এলে মামলা দেওয়া হচ্ছে।
একতার কণ্ঠঃ কঠোর লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে টাঙ্গাইলে বিভিন্ন দোকান, চায়ের স্টল ও মাস্ক পরিধান না করা, বিনা কারনে ঘর থেকে বের হওয়া ব্যক্তিদের উপর ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। শনিবার(২৪ জুলাই) দিনব্যাপী এই ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন টাঙ্গাইল সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট খায়রুল ইসলাম । এ সময় বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে থেকে ৩৩ হাজার ১০০ টাকা জরিমানা আদায় করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।ওই অভিযানে র্যাব ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট খায়রুল ইসলাম জানান, সর্বাত্মক কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। টাঙ্গাইল পৌর এলাকার কলেজ পাড়ায় অবস্থিত গৌর ঘোঁষ দধি ও মিষ্টান্ন ভান্ডার এর ঘি মেয়াদোত্তীর্ণ ছিল বিধায় বাংলাদেশ ভোক্তা অধিকার আইন ২০০৯ এর ৫৩ ধারায় ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং জব্দকৃত মালামাল ধ্বংস করা হয়েছে। এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এছাড়াও মাইকিং করে লোকজনকে স্বাস্থ্যবিধি পালনে সকলকে সচেতন করা হয়।
একতার কণ্ঠঃ রাত পোহালেই ঈদ। কর্মস্থল ছুটি হওয়ায় নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছে মানুষ। এতে করে মহাসড়কে অতিরিক্ত যানবাহন ও ঘরমুখো মানুষের চাপে বঙ্গবন্ধু সেতু-ঢাকা মহাসড়কে ২৫ কিলোমিটার এলাকায় উত্তরবঙ্গমুখী লেনে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার (২০ জুলাই) ভোর রাত থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার আশেকপুর বাইপাস পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
সকালে মহাসড়কের ঘারিন্দা, রাবনা, বিক্রমহাটি, রসুলপুর, পৌলি ও এলেঙ্গা এলাকায় এমন চিত্র দেখা যায়। মাঝে মাঝে ঢাকামুখী লেনে গাড়ি চললেও উত্তরবঙ্গমুখী গাড়ি আটকে রয়েছে দীর্ঘ সময় ধরে। গণপরিবহন চললেও অনেকেই ঝুঁকি নিয়ে ট্রাকে করে বাড়ি ফিরছেন। এ ছাড়াও ঘরমুখো মানুষদের তেমন স্বাস্থ্যবিধি মানতেও দেখা যায়নি।
যানজটের কারণে চালক ও যাত্রীদের পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তি। বিশেষ করে নারী ও শিশুদের ভোগান্তি চরমে । এছাড়াও গরু নিয়ে উত্তরাঞ্চল থেকে ঢাকা অভিমুখে যাত্রা করা ব্যবসায়ীরা পড়েছেন বেকায়দায়। সড়কেই কেটে যাচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা।
এলেঙ্গা গ্যাস পাম্পে কথা হয় শ্যামলী পরিবহনের চালক মিজানুর রহমানের সাথে। তিনি বলেন, টাঙ্গাইলের চার কিলোমিটার আসতে আমাকে আড়াই ঘণ্টা যাবত বসে থাকতে হচ্ছে।
ট্রাক চালক হায়দার আলী বলেন, সোমবার(১৯ জুলাই) সন্ধা সাড়ে ৭ টায় গাজীপুরের চৌরাস্তা থেকে রওনাহয়েছেন। টাঙ্গাইলের পৌলি পর্যন্ত প্রায় ৬০ কিলোমিটার আসতে ১২ ঘণ্টা লেগেছে তার।
মাইক্রোবাস চালক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, এলেঙ্গাতে পৌনে দুই ঘণ্টা যাবত আটকে আছি। শুনতেছি সেতু পর্যন্ত জ্যাম। খাওয়া নাই, ঘুম নাই— সব মিলে খুব কষ্ট হচ্ছে।
এ বিষয়ে এলেঙ্গা হাইওয়ে অফিসার ইনচার্জ(ওসি) ইয়াসির আরাফাত ও বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থানা ওসি শফিকুল ইসলামের সাথে মোবাইলে একাধিক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাদেরসাথে যোগাযোগ করা যায়নি।
জেলা পুলিশ বিভাগ সূত্র জানায়, ঈদে যানজট নিরসনে মহাসড়কে ৬০৩ জন পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে। এ ছাড়া দুই শতাধিক হাইওয়ে পুলিশও রয়েছে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার আসামি সাবেক পৌর মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তির জামিন আবেদন আবারও নামঞ্জুর করেছেন আদালত।সোমবার (১৯ জুলাই) দুপুরে টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মাসুদ পারভেজ তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত সরকারি কৌশুলী মনিরুল ইসলাম খান জানান, ফারুক হত্যা মামলায় গত বছরের ২ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণের পর আদালত সহিদুর রহমান খান মুক্তির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে আরো নয় বার তার জামিন আবেদন আদালত নামঞ্জুর করেন। বৃহস্পতিবার( ১৫ জুলাই) সহিদুর রহমান খান মুক্তির পক্ষে তার আইনজীবীরা আদালতে জামিন আবেদন করেন। আদালত সোমবার শুনানি শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
সহিদুর রহমান খান মুক্তির পক্ষে আইনজীবি আব্দুল বাকী মিয়া, আরফান আলী মোল্লা, শফিকুল ইসলাম রিপন, আনন্দ মোহন আর্য্য শুনানিতে অংশ নেন। তারা যে কোনো শর্তে মুক্তির জামিন মঞ্জুরের দাবি জানান।
রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত সরকারি কৌশুলী মনিরুল ইসলাম খান, বাদীপক্ষের আইনজীবী আব্দুল গফুর ও রফিকুল ইসলাম জামিন আবেদনের বিরোধিতা করেন।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ লাশ তার কলেজপাড়া বাসার সামনে থেকে উদ্ধার করা হয়। এ হত্যকান্ডের তিনদিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে ২০১৪ সালের আগস্ট মাসে গোয়েন্দা পুলিশ আনিসুল ইসলাম রাজা ও মোহাম্মদ আলী নামের দুইজনকে গ্রেফতার করে। আদালতে দুইজনের দেওয়া স্বীকারোক্তিতে এ হত্যার সঙ্গে তৎকালীন এমপি আমানুর রহমান খান রানা, তার তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার তৎকালীন মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন ও ছাত্রলীগের তৎকালীন কেন্দ্রীয় সহসভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পার জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে আসে। এরপর অভিযুক্তরা আত্মগোপনে চলে যান। আমানুর রহমান খান রানা ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে আত্মসমর্পণ করেন।প্রায় তিন বছর হাজত বাসের পর জামিনে মুক্তি পান।
সহিদুর রহমান খান মুক্তি এ হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাবেক এমপি আমানুর রহমান খান রানার ভাই এবং টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি আতাউর রহমান খানের ছেলে।সহিদুর রহমান খান মুক্তি গত বছরের ২ ডিসেম্বর টাঙ্গাইলের নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। তার অন্য দুই ভাই এখনো পলাতক।
একতার কণ্ঠঃ জমে উঠেছে টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার আটিয়া ইউনিয়নে অবস্থিত ভুরভুরিয়া গরু-ছাগলের হাট। প্রতিবারের মতো এবছরও কোরবানীর পশুর ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকডাকে মুখর হয়ে উঠেছে এই হাট।বাদ যায়নি পাইকার ও দালালদের আনাগোনা।আসন্ন ঈদুল-আজহা উপলক্ষে টাঙ্গাইল জেলায় বেশ কয়েকটি কোরবানীর পশুর হাট বসানোর অনুমোদি দিয়েছে জেলা প্রশাসন। এর মধ্যে ভুরভুরিয়ায় অবস্থিত গরু-ছাগলের হাট অন্যতম ।
শনিবার(১৭ জুলাই) থেকে শুরু হয়েছে এই পশুর হাটটি।চলবে আগামী মঙ্গলবার(২০ জুলাই) ঈদুল-আজহার আগের দিন পর্যন্ত।এ হাটের সাথে টাঙ্গাইল,মানিকগঞ্জ সহ দেশের বিভিন্ন অংশের যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত ভালো।টাঙ্গাইল-নাগরপুর আঞ্চলিক সড়কের পাশে, টাঙ্গাইল সদর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দুরে এই হাটের অবস্থান ।ফলে হাট বসার দ্বিতীয় দিনেই রবিবার(১৮ জুলাই) গরু-ছাগল নিয়ে হাজির জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা সাধারন কৃষক-খামারী। আদরে পালন করা খাসি নিয়ে হাটে হাজির বেশ কয়েকজন গৃহবধু।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভুরভুরিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে প্রায় ২ একর জায়গায় বসেছে গরুর হাট। বিদ্যালয় মাঠের পাশে মাছ বাজারে বসানো হয়েছে ছাগলের হাট। বিদ্যালয় ভবনেই পাইকার ও বিক্রেতাদের থাকার ব্যবস্থা করেছে হাট কতৃপক্ষ। যে কোন মূল্যের গরুর জন্য রওনা(খাজনা) ৫ শত টাকা আর ছাগল-খাসির জন্য ৩ শত টাকা ধার্য করেছেন হাট কতৃপক্ষ। এতে হাটে পশু কিনতে আশা ক্রেতাগণ অত্যন্ত খুশী। ইতিমধ্যে সারি সারি কোরবানীর গরুতে ভরে গেছে হাট প্রাঙ্গন। ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে পশু কেনা নিয়ে দরদাম চলছে। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ট্রাকে করে গরু এনে নামাচ্ছেন খামারীগণ।বেশ একটা উৎসবের আমেজ লক্ষ্য করা যায় হাট জুড়ে। পাশের মাছের বাজারে বসেছে ছাগল-খাশির হাট। এখানে বেশ কয়েকজন গৃহবধু খাসি নিয়ে এসেছেন বেচার জন্য। খাশির হাটও জমজমাট।
টাঙ্গাইল শহরের মুসলিম পাড়া থেকে হাটে গরু কিনতে আসা রাশেদ সিদ্দিকি বলেন,তিনি প্রতি বছর এই হাট থেকে কোরবানীর গরু কেনেন। এবার তিনি দেখতে এসেছেন গরুর দাম কেমন যাচ্ছে। যদি দামে মিলে যায় তবে এখান থেকেই এ বছরও কোরবানীর গরু কিনবেন।
তিনি আরো বলেন, এখানে যে কোন মূল্যের গরুর রওনা(খাজনা) মাত্র ৫ শত টাকা। যোগায়োগ ব্যবস্থাও ভালো। সহজেই গরু কিনে বাড়ী ফেরা যায়। হাট ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত ভালো। করোনা কালে শহরের ভিড় এড়িয়ে তাই আগে ভাগেই তিনি খোলামেলা এই হাটে এসেছেন কোরবানীর গরু কেনার জন্য।
এ ছাড়া পাথরাইল ইউনিয়নের বান্দাবাড়ী গ্রামের তাহেরুল ইসলাম,রেজাঊল করিম ও এনামুল হক পাশের অলোয়া বকুলতলী গ্রামের মোঃ ফজলুল হক, নাগরপুরের ভাররার আব্দুল মান্নান, বাঘিল ইউনিয়নের পাইকমুড়িল গ্রামের কবির খান, কাতুলির চৌবাড়ীয়া গ্রামের রাশেদ দেওয়ান জানান, এখানে অন্যন্য হাটের তুলনায় কোরবানীর পশুর দাম তুলনামূলক ভাবে অনেক কম।যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো, কোন ধরনের উটকো ঝামেলা নেই এই হাটে। তাই প্রতি বছর এই হাটেই আসেন তারা কোরবানীর গরু-ছাগল কিনতে।
গরু বিক্রেতা বান্দাবাড়ী গ্রামের আনোয়ার হোসেন বেপারী, সিলিমপুর ইউনিয়নের বরুহা গ্রামের মোনসের আলী গরু নিয়ে এসেছেন এই হাটে। আশা করছেন, তাদের গরু ভালো দামে বিক্রি হয়ে যাবে। ক্রেতার উপস্থিতি নিয়ে তারা সন্তষ্ট। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি গরু বিক্রি করেছেন তারা।
সিলিমপুর ইউনিয়নের চর পাকুল্ল্যা গ্রামের গৃহবধু হামিদা বেগম তার আদরে লালন-পালন করা খাসি নিয়ে এসেছেন ভুরভুরিয়া হাটে। তিনি তার খাসির দাম চাচ্ছেন ১৬ হাজার টাকা। তার আশা, এই দামেই তিনি খাসিটি বিক্রি করতে পারবেন।
বরুহা গ্রামের মীর শফিকুল ইসলাম জানান, এবছর কোরবানী দেওযান জন্য ১২ হাজার ৭ শত টাকা দিয়ে একটি খাসি কিনেছেন এই হাট থেকে। বাড়ি ফেরার পথে জানালেন, হাটের পরিবেশ ভালো। কোন রকম ঝামেলায় পড়তে হয়নি খাসি কিনতে গিয়ে।
ভুরভুরিয়া হাট পরিচালনা কমিটির সদস্য মোঃ শামিম-আল-মামুন জানান, ২০১১ সালে ভুরভুরিয়া হাটটি জেলা প্রশাসনের অনুমোদি নিয়ে বসানো হয়।হাটের আয়ের টাকা দিয়ে মেজর জেনারেল মাহমুদুল হাসান নিম্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মচারীদের বেতন ভাতা দেওয়া হয়।বিদ্যালয়টি এমপিও ভূক্ত না হওযায় হাটের আয়ের টাকা দিয়েই বিদ্যালয়ের সমস্ত ব্যয় নির্বাহ করা হয়।অন্য কোন খাতে এই হাটের আয়ের টাকা ব্যয় করা হয় না।
উল্লেখ,সরকারি হিসেবে জেলায় কোরবানির জন্য ৮৪ হাজার ২২০টি(গত দুই বছরের অনুপাতে) পশুর চাহিদা রয়েছে। কিন্তু বেসরকারি হিসেবে এর সংখ্যা প্রায় দেড় লাখ। জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানাগেছে, টাঙ্গাইল জেলার ১২টি উপজেলায় ছোট-বড় ৬ শতাধিক গরু মোটাতাজা করণের খামার রয়েছে। খামারগুলোতে ৯৫ হাজার ২০০ কোরবানির গরু বিক্রির জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া জেলার কৃষক পর্যায়ে প্রায় ৫০ হাজার পশু মোটাতাজা করে কোরবানির জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
একতার কণ্ঠঃদেশে লকডাউন শিথিল হওয়ায় মহাসড়কে বেড়েছে পরিবহন চলাচল। এতে দেশের বৃহৎ বঙ্গবন্ধু সেতুতে রেকর্ড পরিমাণ পরিবহন পারাপার হয়েছে। শুক্রবার (১৬ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে শনিবার (১৭ জুলাই) সকাল ৬টা পর্যন্ত সেতু দিয়ে প্রায় ৩৪ হাজার পরিবহন পারাপার হয়েছে। এ সময় টোল আদায় হয়েছে ২ কোটি ৯২ লাখ ৭৪ হাজার ৮০০ টাকা।
সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় বঙ্গবন্ধু সেতুর ওপর দিয়ে বাস, ট্রাক ও অন্যান্য পরিবহন মিলে ৩৩ হাজার ৯১২টি পরিবহন পারাপার হয়েছে। এতে সেতুতে টোল আদায় হয়েছে ২ কোটি ৯২ লাখ ৭৪ হাজার ৮০০ টাকা।
এর মধ্যে সেতুর পূর্বপাড়ে ১৭ হাজার ৫১৩টি পরিবহনের বিপরীতে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৪৬ লাখ ৫ হাজার ১১০ টাকা এবং সেতুর পশ্চিমে ১৬ হাজার ৩৯৯টি পরিবহনের বিপরীতে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৪৬ লাখ ৬৯ হাজার ৬৯০ টাকা।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের বঙ্গবন্ধু সেতুর সাইট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সেতু দিয়ে রেকর্ড পরিমাণ পরিবহন পারাপার হয়েছে। শনিবার(১৭ জুলাই) যে পরিমাণ গণপরিবহন ও ব্যক্তিগত পরিবহন সেতু পারাপার হয়েছে তাতে আগামী ২৪ ঘন্টায় আরও বেশি হবে টোল আদায় হবে।
একতার কণ্ঠঃ ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, করোনাকালে অসহায়, গরীব-দুঃস্থ, খেটে খাওয়া ও কর্মহীন মানুষকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে খাদ্য ও নগদ অর্থসহ মানবিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন তা সারা বিশ্বে এক অনন্য নজির। দেশে খাদ্য নিয়ে কোন হাহাকার নেই। তারপরও এই ঈদুল আযহাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১ কোটির বেশি পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী চান, ঈদের দিনে কোনক্রমেই যাতে দেশের একটি মানুষকেও না খেয়ে থাকতে না হয়।
তিনি বলেন, করোনার সংক্রমণরোধে আরোপিত লকডাউনে শ্রমজীবী ও স্বল্প আয়ের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আয়ের পথ সংকুচিত হয়েছে। অনেক মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনার শুরু থেকেই খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা নিয়ে অব্যাহতভাবে এসব মানুষের পাশে আছেন।
শনিবার (১৭ জুলাই) সকালে তাঁর বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার যদুনাথপুর ইউনিয়নে পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় গরীব অসহায় ব্যক্তি, দুঃস্থ পরিবার ও উপকারভোগীদের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
যদুনাথপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মীর ফিরোজ আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ধনবাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান হারুনার রশিদ হীরা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সামিউল হক, মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীমা ইয়াসমিন, পৌর মেয়র সিদ্দিক হোসেন খান প্রমুখ।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার নগদাশিমলা ইউনিয়নের সৈয়দপুর পূর্বপাড়া গ্রামে করোনা ভাইরাসের কারণে কর্মহীন হয়ে অর্থাভাবে ৪৫ হাজার টাকায় তিন মাস বয়সী নিজের সন্তানকে বিক্রি করার ঘটনা ঘটেছে। এ খবর পেয়ে শিশুটি বিক্রি করার ১৬দিন পর স্থানীয় প্রশাসন শুক্রবার (১৬ জুলাই) সন্ধ্যায় শিশুটিকে উদ্ধার করে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছে।
জানা যায়, গোপালপুর উপজেলার নগদাশিমলা ইউনিয়নের সৈয়দপুর পূর্বপাড়া গ্রামের দিন মজুর শাহ আলম ও রাবেয়া দম্পতির তিন পুত্র সন্তান রয়েছে। দিন মজুর শাহ আলমের উপার্জনে পাঁচজনের সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়ে। এর মধ্যে করোনায় কয়েক মাস ধরে শাহ আলম বেকার। বেকার অবস্থায় তিনি ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। পাওনাদাররা প্রতিদিনই টাকার জন্য তাগিদ দিচ্ছিল। হতাশায় তিনি মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন।
শিশুর মা রাবেয়া জানান, তার স্বামী শাহ আলম পাওনা টাকা পরিশোধ ও সংসারের অভাব-অনটনের কারণে তিন মাস বয়সী শিশু আলহাজকে বাইশকাইল গৈজারপাড়া গ্রামের সবুজ মিয়া ও স্বপ্না দম্পতির কাছে ৪৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন।
গোপালপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মোশাররফ হোসেন জানান, সবুজ ও স্বপ্না দম্পতি নিঃসন্তান। তারা শাহ আলম-রাবেয়া দম্পতির অভাব-অনটনের সুযোগ নিয়ে টাকার বিনিময়ে শিশুটি কিনে নেন। আদালতের অনুমতি নিয়ে দত্তক নেওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু তারা তা করেননি। এ কারণে প্রশাসন সবুজ মিয়ার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে শিশু আলহাজকে উদ্ধার করে মা রাবেয়া বেগমের কোলে তুলে দেয়। মানবিক দিক বিবেচনায় থানায় কোন মামলা নেওয়া হয়নি।
গোপালপুর উপজেলার নির্বাহী অফিসার পারভেজ মল্লিক জানান, ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে দারিদ্রতা। পরিবারটিকে সার্বিকভাবে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। রাবেয়া বেগমকে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে আয়া পদে চাকুরির ব্যবস্থা করা হয়েছে। নগদ অর্থ ও খাদ্য সহায়তাও দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ডক্টর মো. আতাউল গনি জানান, প্রাপ্ত বয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত ওই শিশুর যাবতীয় ভরণপোষণ ও লেখাপড়ার দায়িত্ব প্রশাসনের পক্ষ থেকে বহন করা হবে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলায় শরিফ মিয়া (৩০) নামে এক নির্মাণ শ্রমিককে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে মো. মোন্তাজ মিয়া নামে এক মাদকাসক্ত যুবককে আটক করেছে পুলিশ।বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার এলাসিন ইউনিয়নের মুশুড়িয়া গ্রামে ওই খুনের ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, মুশুড়িয়া গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের নেশাগ্রস্থ ছেলে মো. মোন্তাজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে হাতে দা নিয়ে এলাকায় ঘোরাফেরা করছিলেন। রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি মুশুড়িয়া দক্ষিণপাড়া খেলার মাঠে মো. সোনা মিয়ার ছেলে নির্মাণ শ্রমিক শরিফকে পেয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। এসময় শরিফের গলার বেশিরভাগ অংশই কেটে যায়। এ অবস্থায় দৌড়ে মাঠের পাশে সোমেজ সিকদারের বাড়ির উঠানে গিয়ে পড়ে যান তিনি। সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
সোমেজ সিকদার জানান, রাতে শব্দ পেয়ে ঘুম থেকে জেগে বাইরে এসে দেখেন যে পাশের বাড়ির মোন্তাজ হাতের দা ঘুরাচ্ছেন। বাড়িতে রক্তাক্ত ও নিথর অবস্থায় পড়ে আছেন শরিফ। এসময় তারা চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন এসে জড়ো হন। মোন্তাজ পরে বাড়ি গিয়ে দা হাতে ঘরের ভেতর অবস্থান নেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে গ্রেফতার করে। এ সময় তার দা’য়ের কোপে এক পুলিশ সদস্য আহত হন।
দেলদুয়ার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনিসুর রহমান জানান, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনায় জড়িতকে গ্রেফতার করা হয়। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শুক্রবার(১৬ জুলাই) সকালে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
একতার কণ্ঠঃ দেশের শীর্ষ সন্ত্রাসী সুইডেন আসলাম, বিকাশ, ইমদু, গালকাটা কামাল, হান্নান, লিয়াকত, আগা শামীম, বাস্টার্ড সেলিম, হোয়াইট বাবু, সুব্রত বাইন, কালা জাহাঙ্গীর, পিচ্চি হান্নান ও মুরগী মিলনসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে জাতীয় পুরস্কার পাওয়া আলোচিত পুলিশ বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকরাম হোসাইন (এসি আকরাম) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।শুক্রবার (১৬ জুলাই) সকালে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
তিনি টাঙ্গাইল সদর উপজেলার হুগড়া গ্রামের মরহুম মৌলভী হাবিবুর রহমানের ছেলে। দুপুরে তার ছোট ভাই সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোর্শেদ আলম দুলাল মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মোর্শেদ আলম দুলাল জানান, কয়েক বছর আগে তার কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়। গত ৭ জুলাই তার কিডনিতে সমস্যা হলে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে ওই দিন সন্ধ্যায় নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার তার মৃত্যু হয়।মৃত্যুকালে স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
শুক্রবার বাদ আছর হুগড়া হাবিব কাদের উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নামাজে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
উল্লেখ্য, পুলিশ বাহিনীতে দায়িত্বপালনকালে আকরাম হোসানইন বিপিএম (বার) ও পিপিএম (বার) পদক পেয়েছেন। এ ছাড়াও দেশের চার রাষ্ট্র প্রধান প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, প্রেসিডেন্ট হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ, প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকেও জাতীয় পুরস্কারসহ একাধিক পদক গ্রহণ করেছেন।
১৯৮১ সালের ৫ জানুয়ারি আকরাম হোসাইনকে প্রেসিডেন্ট পুলিশ পদকে (পিপিএম) ভুষিত করেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। ১৯৮২ সালের ২৩ মার্চ আকরাম হোসাইনকে শ্রেষ্ঠ পুলিশ অফিসার হিসেবে জাতীয় পদকে ভূষিত করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শাহ আজিজুর রহমান। ১৯৯২ সালের ৪ জানুয়ারি আকরাম হোসাইনকে প্রেসিডেন্ট পুলিশ পদকে (পিপিএম) ভুষিত করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।
১৯৯৮ সালের ৮ মার্চ আকরাম হোসাইনকে বাংলাদেশ পুলিশ পদকে (বিপিএম) ভূষিত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়াও তিনি জাতীয় স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে সংগঠনের কমিটমেন্ট পদক, জাতীয় মানবাধিকার সাংবাদিক সংস্থার স্বর্ণপদকও লাভ করেন তিনি।
১৯৯৭ সালে সরকার কর্তৃক ধরিয়ে দেয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষিত চার সন্ত্রাসীর মধ্যে ৩ জন সুইডেন আসলাম, জোসেফ ও বিকাশকে গ্রেফতার করেও সুনাম অর্জন করেন। পরবর্তীকালে সরকার ঘোষিত দেশের ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর মধ্যে ১৭ জনকে গ্রেফতার করে দেশে অন্যান্য নজির স্থাপন করেন এসি আকরাম।
একতার কণ্ঠঃটাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে আরও ১১ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। তাদের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৮ জন ও উপসর্গ নিয়ে ৩ জন মারা গেছেন। এদিন জেলায় ৫৬৪টি নমুনা পরীক্ষায় ১৮৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৩৩ দশমিক ১৫ শতাংশ। টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. আবুল ফজল মো. সাহাবুদ্দিন খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, নতুন আক্রান্ত ১৮৭ জনের মধ্যে টাঙ্গাইল সদর উপজেলায় ৮২ জন, মির্জাপুরে ৩৩, মধুপুরে ৩২, ঘাটাইলে ১৫, দেলদুয়ারে ১০, কালিহাতী ও নাগরপুরে চার জন করে, বাসাইল ও ভূঞাপুরে তিন জন করে ও সখীপুর উপজেলায় এক জন রয়েছেন।
জেলায় এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৩৭৩ জন। আক্রান্তদের মধ্যে এ পর্যন্ত সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরেছেন পাঁচ হাজার ৯৭৯ জন। এ পর্যন্ত জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৮৪ জন। জেলার হাসপাতালগুলোতে করোনা রোগী ভর্তি র