একতার কণ্ঠঃ পারিবারিক কলহের জেরে দুই সন্তানকে হত্যার পর আত্মহত্যার চেষ্টা করেন মা। চিকিৎসারত অবস্থায় পুলিশের কাছে তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার।
রোববার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে টাঙ্গাইলের ভুঞাপুর উপজেলার নিকরাইল ইউনিয়নের ১ নং পূর্ণবাসন এলাকা থেকে দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বর্তমানে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে মা সাহিদা বেগম।
জেলার পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিক কলহের জেরে সাহিদা বেগম তাঁর দুই শিশু সন্তানকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে তিনি নিজে চলন্ত ফ্যানের সঙ্গে কাটা পড়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এ জন্য নিহত দুই শিশুর শরীরের কোন আঘাতের চিহ্ন নেই।’
মোহাম্মদ কায়সার আরও বলেন, ‘সাহিদা বেগম হাসপাতালের পুলিশের কাছে নিজে হত্যা করার ঘটনা স্বীকার করেন। বর্তমানে তিনি পুলিশ পাহারায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। সাহিদা বেগমের স্বামীর তেমন কোনো সম্পদ নেই। সাহিদা বেগমের স্বামীর ভাই ও ভাবি মানসিকভাবে যন্ত্রণা করতো। তাঁদের মধ্যে এক সপ্তাহ আগেও ঝগড়া হয়েছিলো। এর ফলে সাহিদা আশঙ্কা করছিলেন তাঁর ভাই ও ভাবি তাদের সন্তানকে মেরে ফেলবেন। এই আশঙ্কা থেকেই সাহিদা তাঁর দুই ছেলেকে হত্যা করে নিজে আত্মহত্যার চেষ্টা করে।’
এর আগে স্থানীয়রা জানান, রোববার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে ঘরের ভেতরে দুই শিশু মৃত অবস্থায় ও তাদের মা আহত অবস্থায় পড়ে ছিলেন। ঘরের সিলিং ফ্যান পড়ে থাকায় ধারণা করা হয়, শিশুদের ওপর ফ্যান পড়ে মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।
একতার কণ্ঠঃ পবিত্র রমজান মাসের ইফতারির রকমারি উপাদানের মধ্যে মুড়ি অত্যাবশকীয়। মুড়ির চাহিদা সারাবছর ব্যাপী থাকলেও রোজার সময় উৎপাদন এবং বিক্রি বহুগুণে বেড়ে যায়। তাই মুড়ি ব্যবসায়ীরা বছর জুড়ে অপেক্ষায় থাকেন রমজান মাসের জন্য। আবার অনেকে সিজনাল ব্যবসা হিসেবে এই মাসে মুড়ি উৎপাদন এবং বিক্রি করে থাকেন। এখন মুড়ি তৈরির কারিগর ও ব্যবসায়ীদের দম ফেলার ফুসরত নেই।
টাঙ্গাইলসহ দেশের কমপক্ষে ৫ জেলায় মুড়ি সরবরাহ হয় জেলার কালিহাতীর নারান্দিয়া থেকে। এখানকার উৎপাদিত মুড়ির সুনাম বিভিন্নস্থানে। মুড়ি উৎপাদনের সাথে নারান্দিয়ার মানুষ অনেক পূর্বে থেকেই জড়িত। এখানে দুইভাবে মুড়ি উৎপাদিত হয়, হাতে ভেজে ও মেশিনের সাহায্যে। মুড়ি উৎপাদনকারি এলাকাগুলোর মধ্যে টাঙ্গাইল জেলায় নারান্দিয়া শীর্ষে।
আরো পড়ুনঃ ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধুসেতু মহাসড়কে এবার যানজট হওয়ার আশঙ্কা নেই’
মেশিনের সাহায্যে বিপুল পরিমান মুড়ি প্রতিনিয়ত উৎপাদিত হলেও হাতে ভাজা মুড়ির চাহিদা এখনো অপরিবর্তিত রয়েছে। একশ্রেণির মানুষ সর্বদাই হাতেভাজা মুড়ি খেয়ে থাকেন। হাতে ভেজে মুড়ি তৈরি এবং বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন বহু পরিবার। বিশেষ করে মোদক সম্প্রদায়।
কালিহাতী উপজেলার নারান্দিয়া, মাইস্তা, নগরবাড়ী, দৌলতপুর, লুহুরিয়া ও সিংহটিয়াসহ প্রায় পনেরটি গ্রামের কয়েক’শ পরিবার হাতে ভেজে মুড়ি তৈরি করে থাকে। মোদকরা বংশ পরম্পরায় মুড়ি ভাজার কাজ করেন। একজন ব্যক্তি ১ দিনে এক থেকে দেড় মণ চালের মুড়ি ভাজতে পারেন। প্রতি মণ চালে ২২ থেকে ২৩ কেজি মুড়ি হয়। প্রতি কেজি মুড়ি পাইকারি ৭৫/৮০ টাকা এবং খুচরা ৮৫ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। মূলত গ্রামের মহিলারাই হাতে ভেজে গুণগত মানসম্মত মুড়ি তৈরি করেন।
দৌলতপুর গ্রামের কনিকা বর্মন বলেন খড়ি ২০০ টাকা মণ, ধান ১২০০ টাকা মণ। ধান সিদ্ধ করে রোদে শুকানোর পর মেশিনে মাড়াই করে মুড়ি ভাজার জন্যে চাল তৈরি করা হয়। সেই চাল দিয়ে লবণ জলের মিশ্রণে আগুনে তাপ সহ্য করে বিশুদ্ধ মুড়ি ভাজতে অনেক পরিশ্রম হয়। কিন্তু লাভ টিকে না।
হাসি বেগম বলেন আমাদের পরিশ্রমের দাম উঠে না। গরিব মানুষ এই কাজ কইরা অনেক দিন ধরে খাই। সরকারের কাছে আমরা সাহায্য চাই।
মিনতি রানী মোদক ও সুশীল মোদকসহ অনেকে বলেন আমরা বংশ পরম্পরায় এই মুড়ি ভাজা ও ব্যবসার সাথে জড়িত। সব কিছুর দাম বেশি। মুড়ির দাম বাড়ে নাই। দিন শেষে লাভ থাকে না বললেই চলে। সরকার থেকে যদি আমাদের সুদমুক্ত ঋণ দিতো তাহলে আমরা টিকে থাকতে পারতাম।
তারা আরো বলেন লাভ বেশির ভাগই চলে যায় মধ্যসত্বভোগীদের পকেটে। রমজান মাসে দূর-দূরান্ত থেকে পাইকাররা পিকআপ, ভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহনে বস্তা ভর্তি মুড়ি কিনে টাঙ্গাইলের প্রত্যন্ত এলাকায় বিক্রি করেন। যাতায়াত ব্যবস্থা ভাল থাকায় পার্শ্ববর্তী সিরাজগঞ্জ, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও গাজীপুরে নারান্দিয়ার মুড়ি সরবারহ হয়।
এদিকে নারান্দিয়া ইউনিয়নের নগরবাড়ীতে ২টি, দৌলতপুরে ২টি মোট ৪টি মিলে ৫টি মেশিনের সাহায্যে মুড়ি ভাজা হয়। সততা মুড়ির মিলের স্বত্বাধিকারী শংকর চন্দ্র মোদক কালের কণ্ঠকে বলেন, ৫০ কেজি চালের বস্তায় ৪২/৪৩ কেজি মুড়ি হয়। প্রতি কেজি মুড়ি আমরা ৫৫ থেকে ৬০ টাকা দরে পাইকারি বিক্রি করি। পাইকাররা আবার সেই মুড়ি প্রতি কেজি কমপক্ষে ৬৫-৭৫ টাকা দরে খুচরা বিক্রি করেন। রমজান মাসে প্রতিদিন ৫টি মিলে ১৫০ বস্তারও বেশি চালের মুড়ি উৎপাদিত হচ্ছে। প্রায় ৪ লাখ টাকার মেশিনে ভাজা মুড়ি প্রতিদিন কেনাবেচা হয় এই এলাকায়। কিন্তু খরচ বাদে লাভ বেশি টিকে না।
রমজানে প্রায় ৪ লক্ষ টাকার মুড়ি প্রতিদিন মেশিনে ও হাতে ভেজে তৈরি হলেও বছরের অন্য সময়ে অর্ধেকে নেমে আসে। শতাধিক শ্রমিক এবং কয়েক শ পরিবার প্রত্যক্ষভাবে ও বিপুল সংখ্যক মানুষ পরোক্ষভাবে মুড়ি ব্যবসার সাথে জড়িত থেকে তাদের জীবিকা নির্বাহ করেন। ফলে রমজানে কাজের চাপে দম ফেলার সময়টুকু পায়না মুড়ি উৎপাদনকারীরা।
হাতে ভাজা মুড়ি উৎপাদনকারীরা দিনদিন এই কাজ ছেড়ে অন্য পেশায় ধাবিত হচ্ছেন এবং অনেকেই চলে গেছেন। এই পেশাকেই টিকিয়ে রাখতে উৎপাদনকারী এবং ব্যবসায়ীরা সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
কালিহাতীর বাসিন্দা এফবিসিসিআই এর পরিচালক আবু নাসের বলেন, টাঙ্গাইল তথা বাংলাদেশের মধ্যে মুড়ি উৎপাদনের অন্যতম স্থান কালিহাতীর নারান্দিয়া। এখানকার উৎপাদিত লাখ লাখ টাকার মুড়ি সারাদেশে সরবরাহ হচ্ছে। এটি এক প্রকার কুটিরশিল্প। মানুষের চাহিদা পূরণে এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সরকারের যথাযথ উদ্যোগ প্রয়োজন। বিশেষ করে হাতেভাজা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে।
প্রান্তিক পর্যায়ের মুড়ির কারিগররা এ মুড়ি কেনাবেচার একটি নির্দিষ্ট বাজার স্থাপন এবং সরকার থেকে হাতে ভাজা মুড়ি উৎপাদনকারী ব্যক্তি এবং পরিবারগুলোকে বিশেষ ঋণ সুবিধা দেওয়ার দাবি করেছেন।
একতার কণ্ঠঃ রাস্তার কারণে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধুসেতু মহাসড়কে যানজট না হওয়ার কথা জানালেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব নজরুল ইসলাম। শনিবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে গোড়াইয়ে নির্মিত ফ্লাইওভার পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
নজরুল ইসলাম আরো বলেন, ঈদের আগেই ২৫ এপ্রিল ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের টাঙ্গাইলের গোড়াই ফ্লাইওভার ও সিরাজগঞ্জের নকল ব্রিজ যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। যাতে করে ঈদযাত্রায় মহাসড়কে যানজট সহনীয় পর্যায়ে থাকে। যদিও এসব কাজের মেয়াদ এখনো শেষ হয়নি। বিশেষ বিবেচনায় ঈদের আগেই খুলে দেয়া হচ্ছে। এর ফলে এসব অংশে যানজট হওয়ার সম্ভবনা নেই। বিকল্প রাস্তাগুলোতে যদি গাড়িগুলো ডাইভার্ট করে দেয়া যায় তাহলে মহাসড়কে ট্রাফিক চাপ কমবে।
তিনি বলেন, মন্ত্রাণালয়ের পক্ষ থেকে আমাদের একটি সেন্টাল কন্টোল রুম থাকবে। বিভিন্ন পয়েন্টে সিসি ক্যামেরা থাকবে। এছাড়াও মহাসড়কে পুলিশের পক্ষ থেকেও বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পুলিশের সাথেও আমরা কিছু কিছু বিষয় সমন্বয় করছি। ২ বছর করোনার পরিস্থিতির পরে এবার ঘরমুখো মানুষের চাপ বৃদ্ধি পাবে। এ বিষয়টি বিবেচনা করে আমরা প্রস্তত রয়েছি।
এ সময় সড়ক বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী একেএস মনির হোসেন পাঠান, সাসেকের প্রকল্প পরিচালক মো. ইসাক, সাসেক-১ এর অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক নূরে আলম, টাঙ্গাইল সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শহীদুল ইসলামসহ সড়ক বিভাগেরর অন্যন্য কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ঈদ যাত্রায় বিগত সময়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল- মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব পার পর্যন্ত দুই লেন হওয়ায় এই ১৩ কিলোমিটার এলাকায় দীর্ঘ যানজট হয়। এতে চরম ভোগান্তিতে পরেন যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের। ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে উত্তরবঙ্গসহ ২৪ জেলার যানবাহন চলাচল করে। স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতিদিন ১২/১৩ হাজার যানবাহন সেতু পারাপার হয়। ঈদের আগে ৩৫/৪০ হাজার যানবাহন পারাপার হয়। কোন কোন সময় ৪৫ থেকে ৫০ হাজার গাড়িও পারাপার হয়। স্বাভাবিকের চেয়ে অধিক যানবাহন পারাপার হওয়ায় দুই লেনের সড়কে যানজট লেগে যায়।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সাগরদিঘী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে কোচ জাতির ঐতিহাসিক মহাসমাবেশ, র্যালী, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আরো পড়ুনঃ টাঙ্গাইলে ইউপি চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত সহকারি হিসেবে পরিচিত শাকিল ইয়াবাসহ গ্রেফতার
শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে বাংলাদেশ কোচ আদিবাসী সংগঠনের আয়োজনে মহাসমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম।
বাংলাদেশ কোচ আদিবাসী সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সন্ন্যাসী রমেশ কুমার কোচের সভাপতিত্বে মহাসমাবেশে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারন সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত,ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ব বিদ্যালয়ের ক্রীড়া প্রশিক্ষক বিভাগের পরিচালক ড. মো. আবুল কালাম আজাদ, মনিন্দ্র কুমার কোচ, বাংলাদেশ কোচ আদিবাসী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কোচ রুবেল মন্ডল, বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রমোদ চন্দ্র কোচ, কোচ গৌরাঙ্গ ঠাকুর, লিটন সরকার সুশান্ত, গোপাল চন্দ্র কোচ,আল্পনা রাণী কোচসহ কোচ আদিবাসী নারী-পুরুষ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে একটি শোভাযাত্রা বের হয়ে সাগরদিঘী বাজার প্রদক্ষিন করে।সমাবেশ থেকে কোচ আদিবাসীদের উন্নয়নে ১২ দফা দাবী তুলে ধরা হয়। দাবীগুলো হলো, সম্ভ্রমহীনা নারীদের পুর্ণবাসনসহ সার্বিক দায়িত্ব রাষ্ট্রকে নিতে হবে । জন্ম থেকে প্রাপ্ত বয়স পর্যস্ত আদিবাসী ছেলে-মেয়েদের সকল দায় দায়িত্ব রাষ্ট্রকে নিতে হবে ।
ডিজিটাল কোচ কালচার একাডেমী প্রতিষ্ঠান গঠন করতে হবে । কোচ জাতীর ছাত্র – ছাত্রীদের সরকারী খরচে বিদেশে উচ্চ শিক্ষা লাভের সুযোগ দান করতে হবে। আদিবাসীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় আদিবাসী এলাকা গুলোতে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করতে হবে । আদিবাসীদের আদিবাসী নামে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে ।
সংখ্যালঘু আদিবাসী মুক্তিযোদ্ধাদের গেজেটে আর্ন্তভূক্ত ও স্বীকৃতি দিতে হবে । আদিবাসীদের সুরক্ষায় আদিবাসী আধিকার আইন প্রণয়ন করতে হবে । ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাজেটে আদিবাসীদের জন্য সকল মন্ত্রনালয়ে সম বরাদ্ধ দিতে হবে ।
সমতল আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি মন্ত্রনালয় ও ভূমি কমিশনসহ ভূমি থেকে জোড় পূর্বক উচ্ছেদ বন্ধ করতে হবে । রাজবংশীসহ বাদ পড়া আদিবাসীদের গেজেটে অর্ন্তভূক্ত করতে হবে । জাতীয় সংসদে আদিবাসীদের সংরক্ষিত আসন দিতে হবে । মধুপুরে আদিবাসী এলাকায় লেক খনন বন্ধ করতে হবে ।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, লাঠিবারি খেলা ও আলোচনা সভাসহ নানা কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) সকালে টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শহরের শহীদ স্মৃতি পৌরউদ্যান থেকে একটি মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয় ।
আরো পড়ুনঃ টাঙ্গাইলে প্রবাসী স্বামীর সঙ্গে অভিমান করে গৃহবধূর আত্মহত্যা
শোভাযাত্রাটি শহরের গুরত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে গিয়ে শেষ হয়। পরে শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনির সভাপতিত্বে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান খান ফারুক, পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার, টাঙ্গাইল পৌর মেয়র এস.এম সিরাজুল হক আলমগীর, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান আনছারী, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্মসাধারণ সম্পাদক খন্দকার আশরাফউজ্জামান স্মৃতি, টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি জাফর আহমেদ প্রমুখ।
এই সকল কর্মসূচিতে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, সাংস্কৃতিক এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ সহ সর্বস্তরের নারী পুরুষ অংশগ্রহণ করে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইল কারাগারে নাদিরা জাহান শেলী (৪০) নামে এক হাজতির মৃত্যু হয়েছে। শনিবার ( ৯ এপ্রিল) ভোর রাতে কারাগারে তাঁর মৃত্যু হয়।
আরো পড়ুনঃ টাঙ্গাইলে ট্রেনে কাটা পড়ে কলেজছাত্রের মৃত্যু
তিনি সখীপুর পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মিনহাজের স্ত্রী। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টাঙ্গাইল জেল সুপার মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন।
জেল সুপার জানান, ‘গত সোমবার ৪২০ ধারায় প্রতারণা মামলায় সখীপুর থানা থেকে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। শুক্রবার (৮ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত শেলী সুস্থ ছিলেন। রাত ৩টার সময় সবাই সাহরি খাওয়ার সময় ঘুম থেকে উঠলে তাঁর আশপাশের লোকজন শেলীকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পায়। পরে তাঁকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।’
জেল সুপার মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন আরও জানান, ‘ধারণা করা হচ্ছে-শেলী ঘুমের মধ্যে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাঁর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’
একতার কণ্ঠঃ পাপ-শাপ মোচনে ভোরে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীতে মহাষ্টমীতে স্নান করতে পূণ্যার্থীদের ঢল নেমেছে। মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে দেশবাসীর জন্য শান্তি কামনায় প্রার্থনা করেছেন সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ ভক্ত ও পূণ্যার্থীরা।
আরো পড়ুনঃ ইউএনওর বিরুদ্ধে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ
করোনার ভয়াবহতা কাটিয়ে শনিবার (৯ এপ্রিল) সকালে প্রতিবারের মতো এবারো যমুনা নদীর পাড়ে ৩০০ বছরের পুরোনো শ্রী শ্রী কালী মন্দিরে পূণ্যস্নান উৎসব এবং মেলার আয়োজন করেছেন উপজেলার খানুরবাড়ী, কষ্টাপাড়া, ভালকুটিয়া ও গোবিন্দাসী গ্রামের সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
মেলায় মিষ্টি জাতীয় খাবার, বাশঁ-বেতের আসবাবপত্র, মাটির তৈরি খেলনা, পুতুল, ঘোড়া, ট্রাক গাড়ি, হাড়ি-পাতিল, মাছের দোকান, চিড়া-মুড়ি, দইসহ দোকানিরা তাদের পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ভোর থেকেই পূণ্যস্নানে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর ছাড়াও গোপালপুর, কালিহাতী, ঘাটাইলসহ সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলার নানা বয়সী হাজারো ভক্ত ও পূণ্যার্থীরা যমুনা নদীর পাড়ে আসছেন।
এ সময় তারা সৃষ্টিকর্তার কাছে বিভিন্ন মানত ও দেশবাসীর জন্য শান্তি কামনায় প্রার্থনা করেন। সব মিলিয়ে আনন্দ উৎসবে মেতেছে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
স্নান করতে আসা ভূঞাপুর ইবরাহীম খাঁ সরকারি কলেজের সাবেক প্রভাষক সুহাষ চন্দ্র সরকার বলেন, ‘যমুনায় স্নান তীর্থস্থানে পরিণত হয়েছে। এখানে পুণ্যার্থীরা স্নান করছে তাদের মনবাসনা পুরণের জন্য।’
সাধন দাস, রঞ্জিত কর্মকর্তা, সুবীরসহ অনেকেই জানান, নদীর পাড়ে নতুন জলে পূণ্যস্নান করেছি ও পূজা দিয়েছেন। মহাষ্টমীতে এখানে স্থানীয় লোকজনসহ দূর-দূরান্ত থেকে অনেক মানুষ মেলা দেখতে আসেন।
পূণ্যস্নান ও মেলার আয়োজক কমিটির সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ ঘোষ বলেন, টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকার সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা পাপ মোচনের আশায় যমুনা নদীতে স্নান করতে এসেছেন। প্রশাসনের সহযোগিতায় স্নান উৎসব সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের এক কলেজছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে বাসাইলের সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মনজুর হোসেনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই কলেজছাত্রী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ গত ৩ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
আরো পড়ুনঃ টাঙ্গাইলে বালুরঘাটে ট্রাক কেড় নিল কিশোর হেলপারের প্রাণ
বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব ) সোহানা নাসরিনের অফিস কক্ষে ডেকে ওই কলেজছাত্রীর কাছে ঘটনার বিস্তারিত তথ্য নেওয়া হয়।
অভিযুক্ত মো. মনজুর হোসেন বর্তমানে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন।
লিখিত অভিযোগে জানা যায়, ২০২১ সালে তৎকালীন বাসাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মনজুর হোসেনের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় হয় ওই কলেজছাত্রীর। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রথমে ইউএনও সরকারি বাসভবনে নিয়ে ওই কলেজছাত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। এরপর ওই কলেজছাত্রীর অন্যত্র বিয়ে ঠিক হলে মনজুর সেই বিয়ে বন্ধ করে তাকে বাড়ি থেকে চলে আসতে বলেন। এরপর ওই ছাত্রীকে নিয়ে ইউএনও টাঙ্গাইল কুমুদিনী সরকারি কলেজ সংলগ্ন পাওয়ার হাউস এলাকায় পরিচয় গোপন করে স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে সেখানে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন।
সেখানে তারা দুই মাস সংসার করেন। পরে ওই ছাত্রী বিয়ে করার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। ইউএনও মনজুর হোসেন ভারতে গিয়ে তাকে বিয়ে করবে বলে জানান। এরপর জোবায়েত নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে ওই ছাত্রীর ভারতে যাওয়ার জন্য মেডিকেল ভিসা করানো হয়। এরপর গত ২৪ সেপ্টেম্বর আনুমানিক রাত ১০টার দিকে বাসাইলের সহকারী কমিশনারের (ভূমি ) সরকারি গাড়িতে জোবায়েত হোসেন ও চালক বুলবুল হোসেনসহ দুইজন আনসার সদস্য মিলে বেনাপোল গিয়ে সেখানকার বর্ডার পার হয়ে কলকাতা এয়ারপোর্ট হয়ে হায়দরাবাদ বিমানবন্দরে নামেন।
আরো পড়ুনঃ টাঙ্গাইলে গৃহবধুকে গণধর্ষণের অভিযোগ
বিমানবন্দরের কাছে একটা বাসা ভাড়া নিয়ে সেখানে দুইজন বসবাস করে চিকিৎসা নিতে থাকেন। একপর্যায়ে ওই ছাত্রী ইউএনওর মোবাইলের মাধ্যমে বিয়ে হওয়া ও তার ঘরে সন্তান থাকার বিষয়টি জানতে পারেন। পরে বাংলাদেশে আসার পর জোবায়েত ওই ছাত্রীর মোবাইল জোরপূর্বক নিয়ে অন্তরঙ্গ ভিডিও ও চ্যাটিং মেসেজ ডিলিট করে দেন। ইউএনও ঘটনাগুলো কাউকে না বলতে ওই ছাত্রীকে অনুরোধ করেন, অন্যথায় তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। এরপরও পরবর্তীতে ওই ছাত্রীর সঙ্গে ঢাকার ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে দেখা করে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে সংসার করার কথা বলেন ইউএনও।
এদিকে প্রতারণা করে ধর্ষণ এবং স্ত্রীর মর্যাদা না দেওয়ায় ইউএনও মনজুর হোসেনের শাস্তি চেয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন ওই কলেজছাত্রী।
ওই কলেজছাত্রী বলেন, ইউএনও মনজুর হোসেনের সঙ্গে ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয়। পরে তিনি বিয়ের প্রলোভনে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করেন। তিনি শুধু আমাকে ব্যবহারই করেছেন, সামাজিকভাবে স্ত্রীর মর্যাদা দেননি। বিষয়টি নিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
বাসাইল উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী অলিদ ইসলাম বলেন, সাবেক ইউএনও মনজুর হোসেন মোবাইলে ওই মেয়েটির বিষয়ে জানান। মেয়েটি নাকি তার বিরুদ্ধে জনপ্রশাসনে মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দিয়েছে। পরে মেয়েটির সঙ্গে একজন চেয়ারম্যানের মাধ্যমে কথা বলি। তখন মেয়েটি বিষয়টি আইনগতভাবে লড়ছেন বলে জানায়।
অভিযোগ অস্বীকার করে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনজুর হোসেন বলেন, অভিযোগটি সম্পন্ন ভিত্তিহীন। এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব ) সোহানা নাসরিন জানান, ওই ইউএনওর বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের মধুপুর বনে প্রভাবশালীদের কালোথাবা পড়েছে।রাজনৈতিক অঙ্গণে বিভিন্ন দলের মধ্যে হানাহানি থাকলেও বন দখলে সবাই একে অপরের ভাই ভাই। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, ব্যবসায়ী, আইনজীবী, দলিল লেখক, এনজিও, সমাজকর্মি গৃহিনীসহ দখলে বাদ যায়নি কেউ। বেশিরভাগ সরকারি দলের লোকজন অবৈধভাবে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে জবরদখল করে কলা, আনারস ড্রাগন ,লেবু চাষ করে করে লাভবান হচ্ছে।
এছাড়াও কোথাও কোথাও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, করাতকল, বাজার ও বাড়িঘর তুলে দিব্য বসবাস করছে। বনবিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অবহেলা, উদাসীনতা এবং অনৈতিক সুবিধা নিয়ে জবরদখল কারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ারও অনেক অভিযোগ রয়েছে।এছাড়া বনের গাছ চুরি অব্যাহত থাকায় পরিবেশ ও জীব-বৈচিত্র্য পড়েছে হুমকির মুখে। বনে শাল-গজারী না থাকায় দেখা দিয়েছে বন্যপ্রাণীদের খাদ্য সঙ্কট, ঐতিহ্য হারাচ্ছে মধুপুর গড়ের শালবন।
আরো পড়ুনঃ টাঙ্গাইলে ইভটিজিংয়ের অভিযোগে যুবকের কারাদণ্ড
টাঙ্গাইল বিভাগীয় বন কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, জেলার পাঁচটি উপজেলা মধুপুর, মির্জাপুর, সখিপুর, ঘাটাইল ও কালিহাতী উপজেলায় মোট বনভুমি রয়েছে প্রায় এক লাখ ২২ হাজার ৮৭৭ একর। এর মধ্যে ৫৮ হাজার ২০৬ দশমিক ২৮ একর জমি অবৈধ দখলদারদের দখলে চলে গেছে। গত কয়েক বছরে ২০ হাজার ১০৮ একর জমি উদ্ধার করলেও ৩৮ হাজার ছয়শ ৬৬ দশমিক ১৯ একর জমি এখনও উদ্ধার করতে পারেনি বনবিভাগ। প্রায় ২২ হাজার একশ জন লোক এই বনভুমি দখল করে আছে। এদিকে শুধু মধুপুরে বনভুমির পরিমান ৪৫ হাজার ৫৬৫ দশমিক ১৮ একর। এর মধ্যে সংরক্ষিত ১১ হাজার ৬৭১ দশমিক ২১ একর ও সংরক্ষিতের বাইরে বন বিভাগের জমির পরিমান ৩৩ হাজার ৮৯৩ দশমিক ৯৭ একর। যার মধ্যে অবৈধ দখলে রয়েছে ১৫ হাজার ৩৭৯ দশমিক ১৪ একর জমি। এর বেশিরভাগ জমি সরকারি দলের প্রভাবশালী নেতা ও নৃতাত্বিক গোষ্টির নেতারা দখল করে রেখেছেন।
বনের জায়গায় গড়ে ওঠা স’মিল
এছাড়াও বনের কর্মকর্তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে জেলার সংঘবদ্ধ গাছ চোররা প্রতিনিয়ত বন থেকে গাছ চুরি করছে। ফলে বঞ্চিত হচ্ছে সামজিক বনায়নের অংশিদাররা। সরকার বঞ্চিত হচ্ছে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব আয় থেকে।
অনুসন্ধান এবং বনবিভাগের বনভুমি জবরদখল ও উদ্ধার সংক্রান্ত প্রতিবেদনের তথ্য ঘেটে জানা গেছে, সংরক্ষিত বনের মধুপুরের জামগাছার গ্রামের প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা আইজউদ্দিন মন্ডল দোখলা রেঞ্জের চাদপুর বিটের ফুলবাগচালা মৌজার তিনশ একর জমি জবরদখল করে রেখেছেন। হাগড়াকুড়ি গ্রামের বিএনপি নেতা সাদেক আলী দোখলা রেঞ্জের চাঁদপুর বিটের জোরামগাছা মৌজার ২০ একর, থানারবাইদের স্থানীয় নৃগোষ্ঠির নেতা রাগেন্দ্র নকরেক দোখলা বিটের পীরগাছা মৌজার দুইশ ৫০ একর, বাঘাডোবার আওয়ামী লীগ নেতা নস্কর মেম্বার ফুলবাগচালা মৌজার দুইশ একর, জামাল উদ্দিন একশ একর, চুনিয়ার বাবুল মৃ অরনখোলা মৌজার ৭০ একর, চুনিয়ার টমাস নকরেক অরনখোলা মৌজার ৫৫ একর, বাঘাডোবার আওয়ামী লীগ নেতা ময়নাল মেম্বার ফুলবাগচালা মৌজার ৫৩ একর, সুরেনটালের আওয়ামী লীগ নেতা রেফাজ উদ্দিন ফুলবাগচালা মৌজার ৫২ একর, সুরেনটালের আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল আজিদ ফুলবাগচালা মৌজার ৪০ একর, সুরেনটাল গ্রামের প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মজিদ ফুলবাগচালা মৌজার ৩৫ একর, শোলাকুড়ি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও মধুপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং বন ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ইয়াকুব আলী অরণখোলা মৌজার ৩৫ একর, কাইল্যা কুড়ি গ্রামের নৃ গোষ্টির নেতা প্রীতিনাশ নকরেক অরনখোলা মৌজার ৩০ একর, টাঙ্গাইল জেলা কৃষকদলের সহ-সভাপতি আমলীতলা গ্রামের লস্কর মেম্বার জাউস রেঞ্জের গাছাবাড়ি বিটের ১৬ একর, হাগড়াকুড়ি গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা ওহাব সরকার জোরামগাছা মৌজার ১৫ একর, হাগড়াকুড়ির আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল হামিদ ২০ একর, আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল করিম ২০ একর, অরণখোলার জাউস রেঞ্জের গাছাবাড়ি বিটের প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা হযরত আলী ৮১ একর, গাছাবাড়ির চানমাহমুদ ছানা ৫১ একর, টেলকি শাখার ট্রাক ড্রাইভার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সাধুপাড়ার প্রশান্ত মানকিন লহরিয়া বিটের প্রায় ৫০ একর , মধুপুরের কলাচাষি সংগঠনের সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা গেছুয়াগ্রামের আব্দুর রহিম বেরিবাদ বিটের ৩৪ দশমিক ৫০ একর, মাগন্তিনগরের বিজিত টিটো ৩০ দশমিক ১০ একর, অরণখোলা ইউনিয়নের মেম্বার ও ৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি গাছাবাড়ির মজিবর রহমান ২৯ দশমিক ৫০ একর জমি দখল করে রেখেছেন। তিনি মধুপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সরোয়ার আলম খান আবুর আত্মীয় পরিচয় দিয়ে জমি দখলে নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়াও চুনিয়ার মোতালেব হোসেন ৯ দশমিক ৭৫ একর জমি জবরদখল করে রেখেছেন। অরণখোলা সদরবিটের প্রায় ৫ একর জমি দখল করে রেখেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস ছালাম, নুরু মিয়া, আব্দুল খালেক, কাদের, মুক্তার হোসেন ফকির, আক্তার হোসেন ফকির, আছকের আলী, আজিজুল হক শহিদ ও আব্দুর রহিম মিয়া।
অপরদিকে, সংরক্ষিত বনভুমির বাইরেও অন্যান্য শ্রেনিভুক্ত মধুপুর রেঞ্জের চাড়ালজানি বিটের চুনিয়া মৌজায় বেসরকারি সংস্থা বুরে্যা বাংলাদেশ ৬ দশমিক ৮৫ একর, কাকরাইদের ইয়রুন নেছা ৩০ একর, প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতার ভাগ্নে গাছাবাড়ির সরাফত আলী ২ দশমিক ৩০ একর, সোহরাব আলী ২ দশমিক ৩০ একর, কাঠ ব্যবসায়ী আব্দুল কাদের মিয়া ৩ একর, দিগলবাইদের ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম ২ দশমিক ৯ একর, জাঙ্গালিয়ার ব্যবসায়ী আজিজ খাঁ প্রায় ৯ একর, দলিল লেখক নুরু মিয়ার প্রায় ১২ একর মাগন্তিনগরের বাদশা মিয়া প্রায় ২০ একর, নয়াপাড়া গ্রামের আফতাবউদ্দিন প্রায় ৫ একর জমি জবর দখল করে রেখেছেন।
সরেজমিন ঘুরে, বনবিভাগ ও স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মোটের বাজারের ছামান আলী নামে এক ব্যক্তি বন বিভাগের জমি কার্টিজ মুলে ক্রয় করে মাটি ভরাট করে জমি দখল করেছেন। শুধু ছামান আলী নয় প্রভাবশালী অনেকেই বন বিভাগের জমি এভাবে দখল করে নিচ্ছে। কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবে স্থানীয় প্রভাবশালীরা বসতি নির্মাণ করে বনের জমিকে নিজের বলে দাবি করে থাকে। দখলদারদের কেউ কেউ বন বিভাগের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করেন। বন বিভাগের জায়গা দখল করে ভুয়া দলিল ও কাগজপত্র তৈরি করে অন্যের কাছে বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে । আবার দখলদাররা আইনি ঝামেলা এড়াতে কৌশলে জমি খোলা স্ট্যাম্পে বিক্রি করে দেন। বনবিভাগও জমি উদ্ধার করতে হাজার হাজার মামলা করেছেন। কিন্ত কাজের কোন কাজ কিছুই হয়নি । এছাড়া উচ্ছেদ অভিযানও করতে পারেনি। তবে কয়েকজন দখলদার দাবি করেন, সংরক্ষিত বনের বাইরে ৪ ও ৬ ধারার জমি সিএস পর্চামূলে তারাই মালিক। এসএ ও আরএসে মালিক বনবিভাগ। যখন সরকার রায় পাবে তখন তারা বন বিভাগের জমি ছেড়ে দিবে।
মহিষমারা হামের বাজারের মহর আলী জানান, তার সামাজিক বনায়নের প্লট থেকে সম্প্রতি গাছ চুরি হয়। স্থানীয় সিএফডব্লিউ শামছুল হক এ গাছ কেটে নিয়েছে। শামছুল হকের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, গাছগুলো সামাজিক বনায়নের নয়। সদ্য বিদায়ী মহিষমারা বিট কর্মকর্তা আওলাদ হোসেন জানান, মোটের বাজার এলাকার গাছ চুরির ঘটনায় ওমর ফারুকের নামে মামলা হয়েছে। এখন সিএফডব্লিউওরা তাদেরকে সহযোগিতা করে। কিভাবে জমি ও বন উদ্ধার হবে এ প্রশ্ন তারও।
শোলাকুড়ি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও মধুপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং স্থানীয় বন ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ইয়াকুব আলী বলেন, ওই জমির মধ্যে কিছু জমি তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি। তবে বেশ কিছু জমি বনবিভাগ সামাজিক বনায়ন করেছে। সব জমি সামাজিক বনায়ন করলে তাদের কোন আপত্তি থাকবে না।
অরণখোলা ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান বলেন, বনবিভাগ ওই জমি ১০ বছরের জন্য তাকে প্লট করে দিয়েছেন। তার সেই দলিলও রয়েছে।
এদিকে বনভূমি জবরদখল ও সামাজিক বনায়নের গাছ চুরি অব্যাহত রয়েছে। বন এলাকার ১০ কিলোমিটারের মধ্যে স’মিল স্থাপনের বিধান না থাকলেও বন বিভাগের গুটিকয়েক কর্মকর্তাদের অনৈতিক সুবিধা দিয়ে অনুমোদনহীনভাবে চলছে স’মিল। এসব মিলে দিনরাত চলছে বনের কাঠ চিরাই। চুরি হচ্ছে বনের গাছ। বন বিভাগের নজরদারির অভাবে বিভিন্ন প্লটের গাছ কেটে নেয়া হচ্ছে।
হাজীপাড়া এলাকার খোরশেদ আলম জানান, ওমর ফারুক মহিষমারা বিটের বনায়ন ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক। সামাজিক বনায়ন ব্যবস্থাপনা কমিটির দায়িত্বে থেকেও অবাধে গাছ কেটে সামাজিক বনায়ন উজার করছেন। মহিষমারা বিটের বনায়ন ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, অংশীদারি খোরশেদ আলম আসবাবপত্র বানানোর জন্য তার কাছে গাছ চেয়েছিল বিধায় গাছ কাটা হয়েছে। গাছ চাইলেই আপনি সরকারী গাছ কাটতে পারেন কিনা? এমন প্রশ্নের কোন জবাব দেননি। ফারুক আওয়ামীলীগের নেতা হওয়ায় তার বিরুদ্ধে স্থানীয়রা মুখ খুলতে সাহস পায় না। তার বিরুদ্ধে একাধিক বন মামলাও রয়েছে।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সাজ্জাদুজ্জামান জানান, জবরদখল মুক্ত করতে কর্মকর্তাদের সদিচ্ছার অভাব নেই ।ইতোমধ্যে বনের জবরদখলকৃত জমির তালিকা মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে। সরকারে সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
জেলা প্রশাসক ড. মোঃ আতাউল গনি সম্প্রতি মধুপুরে সামাজিক বনায়ন কর্মসুচি উদ্বোধন করতে গিয়ে বনের জবরদখলকৃত এক ব্যক্তির লেবু বাগান দেখে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, বনের জমি এভাবে দখল থাকতে পারে না। দখলকারী যতবড় প্রভাবশালী লোকই হোক না কেন তাদের উচ্ছেদ করে বনের জীব বৈচিত্র্য ও পরিবেশ রক্ষা করা হবে। ইতিমধ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি থেকে জেলা প্রশাসকদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। সেখানে অবৈধ দখলে থাকা বনভুমি উদ্ধারে একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরী এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ,বাজার ও ব্যক্তি পর্যায়ে জমি উদ্ধারে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তাই জবরদখলকারীদের দ্রুত উচ্ছেদ করা হবে।
প্রতিবেদকঃ মো. আরমান কবীর সৈকত
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলে দুই ট্রাকে বহনকারী বিপুল পরিমান গজারী কাঠসহ ট্রাকের চালক ও হেলপারকে গ্রেপ্তার করেছে বন বিভাগ। বুধবার( ৩০ মার্চ) ভোরে সাগরদিঘী-হাটুভাঙ্গা গোড়াই সড়কের বোয়ালী ও মির্জাপুর-কামালপুর সড়কের কামালপুর এলাকায় টহলকালে গজারি কাঠ ও দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছে, ঘাটাইলের সাগরদিঘী গ্রামের মৃত আ. কাদেরের ছেলে ট্রাক চালক মো. সেলিম ও ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার আনুহাতি গ্রামের সিদ্দিকের ছেলে ট্রাকের হেলপার মো. জুলহাস।
আরো পড়ুনঃ টাঙ্গাইলে বিএনপি’র গণ অনশন কর্মসুচী পালন
টাঙ্গাইল সদর রেঞ্জার মো. এমরান আলী জানান, ভোর রাত ৩ টায় মির্জাপুর-কামালপুর সড়কের উয়ার্সী এলাকায় টহলকালে গজারী বল্লী ভর্তি একটি ট্রাক (ঢাকা মেট্রো- ট-১৫-৪৯২৭) থামাতে বললে চালক ট্রাকটি না থামিয়ে চলে যায়। পরে ওই ট্রাকের পিছু নিলে ট্রাকটি কামালপুর এলাকায় রাস্তার উপর রেখে চালক ও হেলপার পালিয়ে যায়। পরে ওই ট্রাক থেকে ২১০ টি গজারী বল্লী জব্দ করা হয়। এ সব গজারী বল্লীর কোন বৈধ কাগজপত্র ও কাঠের গায়ে কোন বৈধ হাতুড়ীর চিহ্ন নেই।
তিনি আরো জানান, অপর দিকে ভোর ৬ টায় বোয়ালী এলাকায় অপর একটি ট্রাককে (ঢাকা মেট্রো ট-২০-৮২৬৬) থামানোর সংকেত দেয়া হয়। ট্রাকটি না থামিয়ে চালক সামনের দিকে অগ্রসর হয়। পরে ট্রাকের পিছু নিয়ে ট্রাকটির গতি রোধ করে থামানো হয়। পরে ওই ট্রাকে থাকা ৬৫ টুকরা গজারি কাঠের কোন কাগজপত্র না থাকায় চালক ও হেলপারকে আটক করা হয়। এছাড়াও কাঠ গুলো জব্দ করা হয়। পরে তাদের বিরুদ্ধে বন আইনে মামলা করে বুধবার (৩০ মার্চ) দুপুরে আদালতে প্রেরণ করা হয়।
একতার কণ্ঠঃ মাস শেষে সাত দিনের মধ্যে বেতন পরিশোধ করার বিধান রেখে ‘গণমাধ্যম কর্মী (চাকরির শর্তাবলি) বিল-২০২২’ সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে। বিলে বলা হয়েছে, কোনো গণমাধ্যমকর্মীর বেতনকাল এক মাসের অধিক হবে না। পরবর্তী মাসের সাত কর্মদিনের মধ্যে বেতন পরিশোধ করতে হবে।
সোমবার (২৮ মার্চ) তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বিলটি সংসদে উত্থাপন করলে তা ৬০ দিনের মধ্যে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
এই বিলে বলা হয়েছে, প্রতি পাঁচ বছর পর পর গণমাধ্যমকর্মীদের ন্যূনতম ওয়েজ বোর্ড গঠন হবে। ওয়েজ বোর্ড সংবাদপত্র, সংবাদ সংস্থা, বেসরকারি টেলিভিশন, বেতার ও নিবন্ধিত অনলাইন মাধ্যমের জন্য প্রয়োজনে পৃথক পৃথক বেতন কাঠামো নির্ধারণ করবে। আগে শুধু সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার জন্য এই ওয়েজ বোর্ড গঠন করা হতো।
তিন বছর পর পর ১৫ দিনের শ্রান্তি বিনোদন ছুটির কথাও বিলে বলা হয়েছে বিলে।
বিলে বলা আছে, গণমাধ্যমে পূর্ণকালীন কর্মরত সাংবাদিক, কর্মচারী এবং নিবন্ধিত সংবাদপত্রের মালিকানাধীন ছাপাখানাসহ নিবন্ধিত অনলাইন গণমাধ্যমে বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত কর্মীদের ‘গণমাধ্যমকর্মী’ বলা হবে। গণমাধ্যমকর্মীদের তিনটি বিভাগ করা হয়েছে এই বিলে। সেগুলো হলো- অস্থায়ী বা সাময়িক, শিক্ষানবিশ এবং স্থায়ী।
বিলে বলা হয়েছে, গণমাধ্যমকর্মীকে সপ্তাহে অন্যূন ৪৮ ঘণ্টা কাজ করতে হবে। এর বেশি কাজ করাতে চাইলে অধিকাল (ওভার টাইম) ভাতা দিতে হবে।
আগে গণমাধ্যম কর্মীরা চলতেন ‘দ্য নিউজ পেপার এমপ্লয়িজ (চাকরির শর্তাবলী) আইন- ১৯৭৪’ এর আওতায়। এর সঙ্গে শ্রম আইনের কিছু বিষয় সাংঘর্ষিক হচ্ছিল।
পরে সাংবাদিকদের শ্রম আইনের আওতায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং তাদের শ্রমিক হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়।
এই বিল পাস হলে গণমাধ্যমকর্মীরা আর শ্রমিক থাকবেন না, তাদের গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে অভিহিত করা হবে।
দ্য নিউজ পেপার এমপ্লয়িজ (চাকরির শর্তাবলী) আইনে সাংবাদিক, প্রেস শ্রমিক ও প্রেস কর্মচারীদের চাকরির শর্ত, আর্থিক বিষয় ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নির্ধারণ করা ছিল।
সরকার ওই আইনকে রহিত করে সব শ্রমিকের জন্য ২০০৬ সালে ‘শ্রম আইন’ প্রণয়ন করে; যাতে সংবাদপত্রের সাংবাদিক, প্রেস শ্রমিক ও প্রেস কর্মচারীদের বিষয়গুলোও অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
২০১৮ সালে বিলটির নীতিগত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। প্রস্তাবিত এই আইনে বলা হয়েছে, একজন গণমাধ্যমকর্মী বছরে ১৫ দিন নৈমিত্তিক ছুটি পাবেন। এছাড়া প্রতি ১১ দিনে একদিন অর্জিত ছুটি অর্জন করবেন। এই ছুটি ভোগ না করলে তা জমা থাকবে এবং চাকরি শেষে সর্বোচ্চ ১০০ দিন নগদায়নের সুবিধা পাবেন।
চিকিৎসকের প্রত্যয়ন সাপেক্ষে একজন গণমাধ্যমকর্মী চাকরির মেয়াদের অন্যূন ১৮ ভাগের এক ভাগ অংশ সময় পূর্ণ বেতনে অসুস্থজনিত ছুটি পাবেন।
বিলে বলা আছে, কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে একজন গণমাধ্যমকর্মী পূর্ণ বেতনে এককালীন বা একাধিকবার অনূর্ধ্ব ১০ দিন পর্যন্ত উৎসব ছুটি ভোগ করতে পারবেন। উৎসবের দিনে কাজ করালে প্রতি কার্যদিনের জন্য দুই দিনের মূল বেতন বা দুই দিনের বিকল্প ছুটি মঞ্জুর করতে হবে।
একবছর চাকরি করার পর ভবিষ্যৎ তহবিলে কর্মী ও মালিকের আট থেকে ১০ শতাংশ চাঁদার কথা বিলে বলা হয়েছে।
বিলে প্রতি প্রতিষ্ঠানে গণমাধ্যমকর্মী ও মালিকের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য ‘গণমাধ্যমকর্মী কল্যাণ সমিতি’ গঠন করার বিধান রাখা হয়েছে।
প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, সরকার এক বা একাধিক বিভাগীয় এলাকার জন্য গণমাধ্যম আদালত স্থাপন করতে পারবে।
এই আদালতের একজন চেয়ারম্যান এবং দুই সদস্য থাকবে। কর্মরত জেলা জজদের মধ্যে একজন চেয়ারম্যান হবেন। দুই সদস্যের একজন গণমাধ্যম মালিক ও আরেকজন গণমাধ্যমকর্মী হবেন।
প্রস্তাবিত আইনে বলা আছে, গণমাধ্যম আদালত ফৌজদারি কার্যবিধিতে বর্ণিত সংক্ষিপ্ত বিচার পদ্ধতিতে অনুসরণ করবে। প্রথম শ্রেণির জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের ওপর ন্যস্ত সকল ক্ষমতা গণমাধ্যম আদালতেরও থাকবে।
বিলে গণমাধ্যম আপিল আদালতেরও বিধান রাখা হয়েছে। এর চেয়ারম্যান হবেন হাইকোর্ট বিভাগে কর্মরত বা অবসরপ্রাপ্ত একজন বিচারক বা অতিরিক্ত বিচারক হবেন। চেয়ারম্যানকে পরামর্শ দেওয়ার জন্য সরকার এক বা একাধিক সদস্য নিয়োগ করতে পারবেন বলে বিলে বিধান রাখা হয়েছে। সদস্যরা হবেন তিন বছর কর্মরত আছেন বা ছিলেন এমন জেলা জজদের মধ্য থেকে।
বিলে বলা হয়েছে, গণমাধ্যম আদালতের আদেশ পালন করতে অস্বীকার করলে বা ব্যর্থ হলে তিন মাসের জেল বা অনূর্ধ্ব পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা হবে।
কোনো গণমাধ্যম মালিক নারী কর্মীকে প্রসূতি কল্যাণ সুবিধা না দিলে সেই মালিককে ২৫ হাজার টাকা দণ্ড দেওয়া হবে বলে বিলে বলা হয়েছে।
ন্যূনতম বেতন হারের কম বেতন দিলে এক বছরের জেল বা পাঁচ বছরের জেলের বিধান রাখা হয়েছে। কোনো গণমাধ্যমকর্মী আদালতে মিথ্যা বিবৃতি দিলে তার ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে তিন মাসের জেল হবে।
গণমাধ্যম মালিক মিথ্যা বিবৃতি হলে অনূর্ধ্ব পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা তিন মাসের কারাদণ্ড হবে। মালিকের পক্ষ থেকে অন্যায় আচরণ হলে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ছয় মাসের জেল হবে।
বিলে বলা হয়েছে, এক বছর চাকরিরত অবস্থায় কোনো গণমাধ্যমকর্মী মারা গেলে মৃতের মনোনীত ব্যক্তি বা তার উত্তরাধিকারীকে কর্মীর প্রত্যেক পূর্ণ বছর বা ছয় মাসের অধিক সময় চাকরির জন্য ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৩০ দিনের এবং কর্মরত বা কর্মকালীন দুর্ঘটনার কারণে ৪৫ দিনের বেতন প্রদান করতে হবে।
বিলে বলা হয়েছে, কোনো গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান অতিরিক্ত কর্মী ছাঁটাই করতে চাইলে সরকারকে দ্রুত লিখিতভাবে জানাতে হবে। ছাঁটাই করতে হলে কর্মীকে এক মাসের লিখিত নোটিশ দিতে হবে অথবা এক মাসের মূল বেতন দিতে হবে। এছাড়া ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রতি বছর চাকরির জন্য ৩০ দিনের মূল বেতন দিতে হবে।
কোনো স্থায়ী কর্মী ৩০ দিনের নোটিশ এবং অস্থায়ী কর্মী ১৫ দিনের নোটিশ দিয়ে চাকরিতে ইস্তফা দিতে পারবে।
একতার কণ্ঠঃ বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) টাঙ্গাইল সার্কেলের আয়োজনে পেশাজীবী গাড়ি চালকদের দক্ষতা ও সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। টাঙ্গাইল শিশু একাডেমি মিলনায়তনে সোমবার (২৮ মার্চ) দিন ব্যাপী ওই প্রশিক্ষন অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার এর প্রতিনিধি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল ইমরান।
আরো পড়ুনঃ টাঙ্গাইলে কালচার অফিসার রেদওয়ানা’র হত্যাকারীর ফাঁসি দাবী
বিআরটিএ টাঙ্গাইল সার্কেলের সহকারী পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মো. আলতাব হোসেন এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শরিফুল ইসলাম ও সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. আহসান হাবিব চৌধুরি (বিপিএম)।
প্রশিক্ষনে প্রথম পর্বে পরিবেশ সংরক্ষণ, শব্দদূষণ, যানবাহনের ধূমপান সংশ্লিষ্ট বিধি নিষেধ সম্পর্কে আলোচনা ওপরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও প্রাথমিক চিকিৎসা বিষয়ে আলোচনা করেন সিভিল সার্জন এর প্রতিনিধি ডাঃ শিমু দেবনাথ।
এর পর, ট্রাফিক সাইন সিগন্যাল ও রোড মার্কিং সম্পর্কে ধারণা প্রদান ও গাড়ি চালানোর নিয়মাবলী নিয়ে আলোচনা করেন বিআরটিএ টাঙ্গাইলের মোটরযান পরিদর্শক বশির উদ্দিন আহমেদ ও নাফিজা টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারের পরিচালক নাদিম আহমেদ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন লৌহজং ট্রেনিং স্কুলের পরিচালক মাসুদুল হক। এরপর অতিথিদের ফুল ও ক্রেস্ট দিয়ে বরণ করে নেয়া হয়।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী মো. রাশেদ খান মেনন (রাসেল)।
প্রশিক্ষন কর্মশালায় বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস’সহ বিভিন্ন যানবাহনের ১৬১ জন পেশাদর চালক অংশ নেয়। চালকদের ট্রাফিক আইন, দুর্ঘটনার পর প্রাথমিক চিকিৎসা, সচেতনতা, দায়িত্ব কর্তব্য ও দক্ষতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। সেইসাথে নিরাপদ সড়কের গুরুত্ব সড়ক দুর্ঘটনার কারণ ও প্রতিকার নিয়ে আলোচনা করা হয়।
এছাড়াও ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়ন এবং গাড়ির ফিটনেস নবায়ন সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। প্রশিক্ষণ শেষে অংশগ্রহণকারী পেশাদার গাড়িচালকদের মাঝে সনদপত্র বিতরণ করা হয়।