/ হোম / মধুপুর
মধুপুরে সফল ভাবে পার্পেল পটেটোর আবাদ - Ekotar Kantho

মধুপুরে সফল ভাবে পার্পেল পটেটোর আবাদ

একতার কন্ঠঃ মন মাতানো ফ্লেভারের কফি, সুমিষ্ট ড্রাগন, ভিটামিন সি সমৃদ্ধ মাল্টার পর এবার পুষ্টিকর পার্পেল পটেটো চাষে সফলতা দেখিয়েছেন এক অদম্য কৃষক। এ কৃষকের নাম সানোয়ার হোসেন। বাড়ি টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার মহিষমারা গ্রামে।

গ্রাজুয়েশনের পর সানোয়ার শিক্ষকতা শুরু করেন। কিন্তু বছর না ঘুরতেই সেটি ছেড়ে বাপ-দাদার জীবিকা কৃষিকেই জীবিকা হিসেবে বেছে নেন। পারিবারিকভাবে পাহাড়ি লাল মাটির ছয় একর জমিতে বরাবরই আনারস আবাদ হয়। সেটির পাশাপাশি নতুন করে চার একরে মাল্টা, এক একরে ড্রাগন, তিন একরে কফি, বাতাবি লেবু, অ্যারাবিয়ান খেজুর ও পেঁপের আবাদ যোগ করেন তিনি। গতবার এক কৃষিবিদের মাধ্যমে আমেরিকান জাতের পার্পেল পটেটো বা বেগুনি আলুর কন্দ সংগ্রহ করেন। সেটি লাগান এক একর জমিতে। শতাংশে ফলন পেয়েছেন দুই মণ। কেজিতে বিক্রি ১০০ টাকা দরে। আকর্ষণীয় রং আর ব্যতিক্রম স্বাদের দরুন বেচাবিক্রিতে কোনো সমস্যা হয়নি। সানোয়ার জানান, রাসায়নিক সার ও কীটনাশক নয়, নিরাপদ ও জৈব কৃষিকে অগ্রাধিকার দিয়ে আনারসসহ বৈচিত্রময় ফল ও ফসল আবাদ করেন তিনি। বাড়িতে রয়েছে গরুর খামার। সেটির গোবরে তৈরি হয় কম্পোস্ট সার।

পার্পেল চাষ সম্পর্কে জানান, মধুপুরের পাহাড়ি এলাকায় শ্রাবণ-ভাদ্রে মাসে বাগান থেকে আনারস তোলার পর এমনিতেই চার মাস জমি পতিত থাকে। সেই জমিতে মধ্যবর্তী ফসল হিসেবে সহজেই পার্পেল আবাদ সম্ভব। খরা প্রতিরোধক হওয়ায় সেচ এমনকি সারও লাগে না। পোকামাকড়ের উপদ্রব তো নেই-ই। আলু তোলার পর জমিতে লতানো গাছ গবাদিপশুর উত্তম খাবার হিসেবে বিবেচিত হয়।

একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত পুষ্টিবিদ ড. আবু রায়হান জানান, বিশ্বে ৪০০ রকমের মিষ্টি আলুর মধ্যে জাপানি এবং আমেরিকান জাতের বেগুনি আলু বা পার্পেল পটেটো সবচেয়ে পুষ্টি সমৃদ্ধ। আঁশ সমৃদ্ধ এ আলুতে প্রচুর শর্করা ছাড়াও পটাশিয়াম, ভিটামিন এ বি সি বিটা ক্যারোটিন এবং প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এটি কোষের ক্ষয়রোধ এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।সনাতন রীতিতে খাওয়া ছাড়াও ভেজিটেবল, স্যুপ এবং সালাদের সঙ্গেও এটি চলে।

মধুপুর উপজেলার মহিষমারা ব্লকের উপসহকারী কৃষি অফিসার এরশাদ আলী জানান, দোআঁশ ও বেলে দোআঁশ মাটি পার্পেলসহ যে কোনো মিষ্টি আলু চাষের উপযোগী। সেপ্টেম্বর-অক্টোবর কন্দ বা চারা লাগানোর উপযুক্ত সময়। আগে নদীতীরের পলি মাটিতে এর আবাদ হতো। এখন সানোয়ার হোসেনের মতো খামারিরা মধুপুরের লাল মাটিতে লাভজনক ফসলের তালিকায় পার্পেলকে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। খামারের একই জমিতে পর্যায়ক্রমিকভাবে ফল ও ফসল আবাদ করে তিনি তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। পুষ্টিকর পার্পেল এলাকায় সাড়া ফেলেছে।

মধুপুর উপজেলা কৃষি অফিসার মাহমুদুল হাসান জানান, মধুপুর গড়ে প্রায় ৫০ একরে মিষ্টি আলুর আবাদ হয়। তবে পার্পেল জাতের আবাদ এবারই প্রথম। মধ্যবর্তী বা একক ফসল হিসেবে পার্পেলের বানিজ্যিক চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। শতভাগ বিশুদ্ধ খাবার হিসেবে বিদেশে রফতানির সুযোগও রয়েছে। চাষিদের আবাদে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। এজন্য ‘কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্প’ নেওয়া হয়েছে। হাতে-কলমে শিক্ষার জন্য প্রদর্শনী প্লটও করা হয়েছে। পার্পেল ছাড়াও বারী উদ্ভাবিত দুটি উফসি জাতকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।

সর্বশেষ আপডেটঃ ২৪. মে ২০২১ ০১:২৫:এএম ৩ বছর আগে
মধুপুরে মার্কেটগুলোতে উপচে পড়া ভিড় - Ekotar Kantho

মধুপুরে মার্কেটগুলোতে উপচে পড়া ভিড়

একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের মধুপুরে কোভিড-১৯ ভীতি উপেক্ষা করে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপনের লক্ষ্যে কেনাকাটায় মহাব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন মধুপুরবাসী। সরকারের কঠোর বিধিনিষেধ জারির পরও মধুপুররবাসীর মধ্যে যেন কোনো ধরনের করোনা ভীতি নেই। এই সংকটকালেও নিশ্চিন্তে ঈদের কেনাকাটা করছেন তারা।

টাঙ্গাইলের মধুপুরে বিভিন্ন বয়সী মানুষ তাদের পছন্দের জিনিসপত্র কিনতে এক মার্কেট থেকে অন্য মার্কেটে ছুটছেন। প্রতিটি মার্কেটেই ক্রেতাদের জনসমাগম চোখে পড়ার মতো। এক্ষেত্রে তাদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বা স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো তাড়না চোখে পড়েনি। কিছু কিছু মার্কেটে পা ফেলার জায়গাও পাওয়া খুবই মুশকিল হয়ে পড়েছে।

মধুপুরের পাইলট সুপার মার্কেট, সরকার মার্কেটসহ অন্যান্য মার্কেটগুলোতেও একজনের সঙ্গে আরেকজনের গা ঘেঁষে ঘেঁষে চলতে দেখা গেছে। এমনকি অভিভাবকদের সঙ্গে ঈদ শপিংয়ে মার্কেটে আসা শিশুদেরকেও মাস্ক পড়তে দেখা যায়নি।

মার্কেটগুলোতে উপচে পড়া ভীড় দেখা গেলেও বেচাকেনার পরিমাণ চাহিদার তুলনায় খুবই কম বলে দাবি করেছেন বিক্রেতারা। বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ক্রেতাদের ভীড় অনেক বেশি। কিন্তু বেচা-বিক্রি অনেক কম। যে পরিমাণ জনসমাগম রয়েছে সবাই যদি একটি করে জিনিসও কিনতেন তাহলে আমাদের দোকানের জিনিসপত্র অনেক কমে যেত। কেনাকাটা হচ্ছে কম, অধিকাংশই শুধু জিনিসপত্র দেখছেন।

সরেজমিনে মধুপুরের বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, শপিংমল ও দোকানপাট খুলে দেয়ার সঙ্গে সঙ্গেই একপ্রকার হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন ক্রেতারা। কেউ নিজস্ব গাড়ি হাঁকিয়ে যাচ্ছেন মার্কেটে। কেউ যাচ্ছেন অটোরিকশা কিংবা রিকশায়। তবে এখন আর কোনো চিন্তা-ভাবনা নেই মানুষের মধ্যে। স্বাস্থ্যবিধি কেউ কেউ মানছেন আর কেউ বা মানছেন না, যারা মানছেন না তাদেরকে বাধ্য করাররও যেন কেউ নেই।

মধুপুরের সরকার মার্কেটের কয়েকজন ক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদের শপিং করতে এসেছেন তারা। করোনার মধ্যেও তো ঈদ করতে হবে। এ কারণেই কিছু কেনাকাটা করতে এসেছেন। তবে এক দোকান থেকে অন্য দোকানে ঘোরাঘুরি কম করছেন, পছন্দ হলেই কিনে নিচ্ছেন পছন্দের পোশাক বলে তারা জানান। করোনা সংক্রমণের মধ্যেও অনেকে শপিংমলগুলোতে ঘুরতে বেরিয়েছেন। দেখছেন নতুন কী কী কাপড়-চোপড় কিংবা জিনিসপত্র এসেছে। এতে করেও লোকজনদের ভিড় বাড়ছে।

মধুপুরের সাথী মোড়ের ফুটপাতের কাপড় বিক্রেতাদের সাথে কথা বললে তারা জানান, গত কদিনে লকডাউনে অনেক টাকার ক্ষতি হয়েছে। মাত্র কয়েকদিন বসতে পারছি। তবে আজ ক্রেতা অনেক। বিক্রিও মোটামুটি আগের দিনের তুলনায় ভালোই হচ্ছে।

সর্বশেষ আপডেটঃ ০২. জুলাই ২০২৪ ০৫:০৯:পিএম ৩ বছর আগে
সরকারের নানামুখী উদ্যোগে ধান উৎপাদন প্রতি বছর বাড়ছে :: কৃষিমন্ত্রী - Ekotar Kantho

সরকারের নানামুখী উদ্যোগে ধান উৎপাদন প্রতি বছর বাড়ছে :: কৃষিমন্ত্রী

একতার কণ্ঠঃ আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেছেন, এবছর সারা দেশে আনন্দমুখর পরিবেশে বোরো ধান কাটা চলছে।সরকারের নানামুখী উদ্যোগ ও ভর্তুকি দেওয়ার ফলে ধানসহ অন্যান্য ফসলের উৎপাদন প্রতি বছর বাড়ছে। বিশেষ করে চার দফায় সারের দাম কমানো বর্তমান সরকারের যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত।

ইতোমধ্যে হাওরের প্রায় শতভাগ ধান কাটা শেষ হয়েছে। প্রতি বছর হাওর এলাকায় আগাম বন্যায় ধান তলিয়ে যায়- এবার সে আশঙ্কা নেই। আশা করা যায় সারাদেশে সফলভাবে ধান কাটা শেষ করা যাবে।মন্ত্রী বলেন, এখন দেশে বোরো মৌসুমে সবচেয়ে বেশি ধান হয়। এক সময় এ মৌসুমে তেমন কোন ধান হত না।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার কৃষিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সেচ ব্যবস্থার সম্প্রসারণ, সেচের মূল্য হ্রাস, সারের দাম নিয়ন্ত্রণ, বীজ, কীটনাশকসহ অন্যান্য কৃষি উপকরণ সহজলভ্যকরণ এবং নতুন নতুন উন্নত জাতের ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনের ফলেই এটা সম্ভব হয়েছে।

কৃষিমন্ত্রী শুক্রবার(৭ মে) বিকালে টাঙ্গাইলের মধুপুরে ব্রাহ্মণবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন মাঠে মধুপুর কৃষক লীগ আয়োজিত “ধান কাটা উৎসব” অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

মধুপুর উপজেলা কৃষক লীগের আহ্বায়ক এসএম মঈনুল ইসামের সভাপতিত্বে ধান কাটা উৎসবে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, টাঙ্গাইল জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও মধুপুর উপজেলা আ’লীগের সভাপতি খন্দকার শফিউদ্দিন মনি, মধুপুর উপজেলাপরিষদের চেয়ারম্যান সরোয়ার আলম খান আবু, পৌর মেয়র সিদ্দিক হোসেন খান, বাংলাদেশ কৃষক লীগের সহ-সভাপতি রেজাউল করিম হিরণ, জেলা কৃষক লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জহিরুল ইসলাম মাস্টার, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শামস উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মোশারফ হোসেন আকন্দ, মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান, মো. শহিদুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, আনিছুর রহমান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চলনায় করেন, মধুপুর উপজেলা কৃষক লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক মহসীনুল কবীর।

সর্বশেষ আপডেটঃ ০৮. মে ২০২১ ০৩:৫৭:এএম ৩ বছর আগে
মধুপুরে আনারস বাগান থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার - Ekotar Kantho

মধুপুরে আনারস বাগান থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার

একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার একটি আনারস বাগান থেকে অজ্ঞাত  ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে মধুপুর থানা পুলিশ। মঙ্গলবার (৪ মে) রাতে  উপজেলার শোলাকুড়ী ইউনিয়নের কুড়ালিয়া গাজীর ভিটার আনারস বাগান থেকে ওই ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়।

মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিক কামাল বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পেয়ে আনারস বাগান থেকে গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় ওই অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে,কয়েকদিন আগে তাকে হত্যা করে আনারস বাগানে ফেলে রাখা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, বুধবার (৫ মে) সুরতহাল শেষে নিহতের লাশ  ময়না তদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। নিহতের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি।এ ব্যাপারে মধুপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সর্বশেষ আপডেটঃ ০৬. মে ২০২১ ০৩:০৪:এএম ৩ বছর আগে
টাঙ্গাইলে পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু - Ekotar Kantho

টাঙ্গাইলে পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু

একাতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের মধুপুরে পানিতে ডুবে  দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। রবিবার (২ মে) সন্ধায় মধুপুর উপজেলার মির্জাবাড়ী ইউনিয়নের ভবানীটেকী লেংরা বাজার এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।

পানিতে ডুবে মৃত্যুবরণকারী শিশুরা হলোঃ ভবানীটেকী লেংরা বাজার এলাকায় সেলিম রানার মেয়ে সাফা মনি (৬) এবং জামাল উদ্দিনের ছেলে হোসাইন (৫)। শিশুদুটি সম্পর্কে চাচাতো  ভাই-বোন।

স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, নিহতরা ভবানীটেকী লেংরা বাজার এলাকার একটি পুকুরে গোসল করতে নেমেছিল। একপর্যায়ে তারা পানিতে ডুবে যায়। এরপরে স্থানীয় এক ব্যক্তি ওই পুকুরে গরুকে গোসল করাতে গেলে প্রথমে তিনি হোসাইনকে  মৃত অবস্থায়  ভেসে থাকতে দেখেন। এরপর হোসাইনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

অন্যদিকে, অপর শিশু সাফা মনিকে না পেয়ে পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। পরে স্থানীয়রা সন্ধ্যায় ওই পুকুরে নেমে সাফা মনি’র মরদেহ উদ্ধার করেন।

মির্জাবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাজাহান তালুকদার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এটি খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। গভীর শোক ও সমবেদনা জানাচ্ছি। ইতোমধ্যেই নিহত দুইজনের মরদেহ দাফন করা হয়েছে।

সর্বশেষ আপডেটঃ ০৪. মে ২০২১ ০২:৪২:এএম ৩ বছর আগে
মধুপুরে কেজিপ্রতি ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে  তরমুজ, বাজার মনিটরিংয়ের দাবি - Ekotar Kantho

মধুপুরে কেজিপ্রতি ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে তরমুজ, বাজার মনিটরিংয়ের দাবি

একতার কণ্ঠ ডেস্কঃ তরমুজ কেবল খেতেই সুস্বাদু নয়, শরীর-স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো। এতে চর্বি নেই। প্রচুর ভিটামিন এ, বি৬, সি, পটাশিয়াম, লাইকোপেন ও সিট্রুলিনের মতো উপাদান থাকে।মৌসুমী রসালো ফল তরমুজ এখন টাঙ্গাইলের মধুপুরে কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা তাদের ইচ্ছামতো দাম হাকিয়ে তরমুজ বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ জানিয়েছেন ক্রেতা ও জন সাধারণ। নিম্ন আয়ের মানুষের এবছরের তরমুজের স্বাদই নিতে খুবই হিমশিম খাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

রমজান মাস এলেই বাঙালীদের প্রতিটি পরিবারেই ইফতারে থাকে তরমুজসহ হরেক রকমের মৌসুমী ফলের সমাহার। কিন্তু এবছর সেই তরমুজের দাম এখন আকাশ ছোঁয়া। তবে দাম বৃদ্ধির কারনে অনেক রোজাদারসহ নিম্ন আয়ের মানুষ আজও তরমুজের স্বাদ নিতে পারেনি। গেল বছর মধুপুরের সর্বত্রই তরমুজের ছড়াছড়ি এবং পিচ হিসেবে বিক্রি হতে দেখা গেছে। কিন্তু এবার চিত্রটা ভিন্ন! চলতি মৌসুমে বাজারে পর্যাপ্ত তরমুজের দেখা গেলেও এ বছর তরমুজ কেজিতে বিক্রি হচ্ছে এবং তাও কেজিপ্রতি আবার ৫০ থেকে ৬০ টাকায়।

শনিবার (২৪ এপ্রিল) মধুপুরের মোটের বাজার হাট এবং শুক্রবার জলছত্র বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কেজি দরে তরমুজ বিক্রি হচ্ছে। অনেক ক্রেতা এসে বিক্রেতার সাথে দাম নিয়ে রীতিমতো বিবাদে জড়িয়ে পড়ছেন। আবার অনেক ক্রেতা যেহেতু কেজিতে বিক্রি হচ্ছে তাই কেটে ১ কেজি তরমুজ চাচ্ছেন দোকানির কাছে। এ নিয়েও চলছে বাক বিতন্ডতা।

অটোচালক ফরিদ, হীরা মিয়া, আসাদুজ্জামান আসাদ সহ আরও অনেকেই বলেন, লকডাউন চলছে। ভয় নিয়ে সড়কে আসি, দিন শেষে যা আয় হচ্ছে কোনো রকমে পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে আছি। এই রোজগারে এ বছর তরমুজ খাওয়া সম্ভব হবে না।

বাজারে আসা রোজাদারসহ নানা শ্রেনী পেশার মানুষের প্রশ্ন তরমুজ কেজিতে বিক্রি হওয়ার কারন কি? যে তরমুজ গত বছরও মানুষ পিচ হিসেবে কিনেছে, সেই তরমুজ এ বছর কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। তবে কেজিতে যদি ১৫/২০ টাকা হতো তাহলে সাধ্যের মধ্যে থাকতো ; অথচ ৫০/৬০ টাকা কেজি দরে তরমুজ বিক্রি হতে দেখা গেছে। ভোক্তাদের প্রশ্ন এই টাকা কি প্রকৃতপক্ষে ওই চাষি, যে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে তরমুজ উৎপাদন করেছে তার পকেটে যাচ্ছে নাকি অন্য কারও পকেটে? কৃষকের তরমুজের ক্ষেত থেকে শুরু করে বাজারে বিক্রেতা পর্যন্ত যারা ভোক্তার পকেট খালি করে চলেছে তাদের খুজে বের করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তারা।

বাজারের কয়েকজন খুচরা ব্যবসায়ী জানান, বড় ব্যবসায়ীরা তরমুজ পাইকারী বাজার হতে শ’ হিসেবে কিনে তা কেজিতে বিক্রি করছেন। আমরাও কেজিতে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি। বাজার মনিটরিং করলে কেজি কাহিনী উন্মোচন হবে বলে তারা মনে করছেন।

সর্বশেষ আপডেটঃ ২৬. এপ্রিল ২০২১ ১২:৩৬:এএম ৩ বছর আগে
টাঙ্গাইলে ৪৪০ পিস ইয়াবাসহ নারী মাদক কারবারী  গ্রেপ্তার - Ekotar Kantho

টাঙ্গাইলে ৪৪০ পিস ইয়াবাসহ নারী মাদক কারবারী গ্রেপ্তার

একতার কণ্ঠ ডেস্কঃ  টাঙ্গাইলের মধুপুরে ৪৪০ পিস  ইয়াবা সহ তাছলিমা বেগম (৩৬) নামে এক  নারী মাদক কারবারীকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।
শনিবার (১০ এপ্রিল) সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-১২, সিপিসি-৩, টাঙ্গাইল এর ভারপ্রাপ্ত কোম্পানী কমান্ডার সহকারী পুলিশ সুপার এরশাদুর রহমান এর নেতৃত্বে একটি দল মধুপুরের  বোয়ালী আদালত পাড়া গ্রামে অভিযান পরিচালনা করে ওই নারীকে আটক করে। এসময় ৪৪০ পিস ইয়াবাসহ (যার আনুমানিক মূল্য ১,৩২,০০০ টাকা) তাকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয় ।
 র‌্যাব জানায়, গ্রেপ্তারকৃত তাছলিমা বেগম মধুপুর উপজেলার বোয়ালী আদালতপাড়া গ্রামের আলমগীর হোসেনের স্ত্রী।
 এ প্রসঙ্গে র‌্যাব-১২, সিপিসি-৩, টাঙ্গাইল এর ভারপ্রাপ্ত কোম্পানী কমান্ডার সহকারী পুলিশ সুপার এরশাদুর রহমান  জানান, আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ মাদকদ্রব্য ইয়াবা অবৈধভাবে সংগ্রহ পূর্বক টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর থানাসহ অন্যান্য থানা এলাকায় বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে সরবরাহ করে আসছেন।
 তিনি আরো জানান ,আটককৃত আসামী টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর থানা এলাকাসহ আশেপাশের থানা এলাকাগুলোতেও বিভিন্ন মাদক সেবীদের নিকট তাদের চাহিদা অনুযায়ী মাদক দ্রব্য ইয়াবা সরবরাহ এবং যুবকদের মাদক সেবনে উদ্বুদ্ধ করে আসছেন।
 আসামীর বিরুদ্ধে  মধুপুর থানায় একটি মাদক মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সর্বশেষ আপডেটঃ ১০. এপ্রিল ২০২১ ১১:৫৫:পিএম ৪ বছর আগে
মধুপুরে অপহরণের ৭ দিনেও সন্ধান মেলেনি আদিবাসী সৃষ্টি বর্মনের - Ekotar Kantho

মধুপুরে অপহরণের ৭ দিনেও সন্ধান মেলেনি আদিবাসী সৃষ্টি বর্মনের

 একতার কণ্ঠ ডেস্কঃ মধুুপুরে আদিবাসী কোচ সম্প্রদায়ের  সপ্তম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত এক কিশোরীকে অপহরণের ৭ দিন অতিবাহিত হলেও তার কোন সন্ধান মেলেনি। অপহৃতা সৃষ্টি বর্মন’র বাবা রাম চন্দ্র বর্মন বাদী হয়ে মধুপুর থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন।

জানা যায়, গত ৩১ মার্চ রাতে সুবকচনা গ্রামের হাতেম আলীর ছেলে আবদুল মান্নান (২১) সৃষ্টি বর্মনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরদিন সকালে অপহৃতা কিশোরীর বাবা থানায় গিয়ে আবদুল মান্নান সহ ৫ জনকে আসামী করে মধুপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে।

রহস্যজনক কারণে পুলিশ ঘটনার ৪ দিন পর রোববার (৪ এপ্রিল) রাতে মামলাটি রেকর্ড করেন। সাতদিনেও সৃষ্টি বর্মন উদ্ধার না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছে মেয়েটির পরিবার।

স্থানীয় পীরগাছা সেন্ট পৌলস উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ওই কিশোরীকে স্কুলে যাওয়া-আসার পথে উত্যক্ত করত মান্নান।  এছাড়া অপহরণের হুমকিও দিত । এ বিষয়ে মেয়েটি নিজেই মধুপুর থানায় দুই মাস আগে একটি সাধারন ডাইরী করেছিল। বুধবার রাতে মেয়েটি নিখোঁজ হওয়ার পর অনেক খোঁজাখুঁজি করেও না পেয়ে পরিবারের সদস্যরা মান্নানের বাড়ি যান। তবে সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি।

মধুপুর কোচ আদিবাসী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক গৌরাঙ্গ বর্মণ অনতিবিলম্বে অপহৃতা কিশোরীকে উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন। টাঙ্গাইল জেলা কোচ আদিবাসী ইউনিয়নের সভাপতি রতন কুমার বর্মণ বলেন, অপহরণের এ ঘটনা দুঃখজনক। মেয়েটিকে দ্রুত উদ্ধার করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানান তিনি।

ফুলবাগচালা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বেনু জানান, ওই যুবক আগে থেকেই মেয়েটিকে উত্যক্ত করত। দুই মাস আগে  থানায় আমার উপস্থিতিতে ভূক্তভোগি ওই কিশোরী জিডি করেছিল।

মধুপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তারিক কামাল বলেন,  ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। অভিযুক্ত মান্নানকে গ্রেফতার ও অপহৃত কিশোরীকে উদ্ধারে চেষ্টা চলছে।

সর্বশেষ আপডেটঃ ০৭. এপ্রিল ২০২১ ০৯:২৯:পিএম ৪ বছর আগে
টাঙ্গাইলে দেড় বছর পর গৃহবধূ নার্গিস হত্যার রহস্য উন্মোচন - Ekotar Kantho

টাঙ্গাইলে দেড় বছর পর গৃহবধূ নার্গিস হত্যার রহস্য উন্মোচন

একতার কণ্ঠ ডেস্কঃ টাঙ্গাইলের মধুপুরে গৃহবধূ নার্গিসকে ধর্ষণের পর গলা টিপে হত্যা করেন  তার সাবেক স্বামী মনিরুজ্জামান। পরে তার লাশ ধান ক্ষেতে ফেলে রেখে পালিয়ে যান পাষন্ড সাবেক স্বামী  মনিরুজ্জামান। ঘটনার দেড় বছর পর তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পরে রবিবার আদালতে জবানবন্দিতে মনিরুজ্জামান এ কথা স্বীকার করেন।সোমবার(১৫ মার্চ)পিবিআই টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সিরাজ আমীন বিভিন্ন  গণমাধ্যাম কর্মীদের এ তথ্য জানান।

মামলা সূত্রে জানা যায়, মধুপুর উপজেলার নেকিপাড়া গ্রামের মো. নাসির উদ্দিনের মেয়ে নার্গিস ২০১৯ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নিখোঁজ হন। দুই দিন পর তাদের বাড়ির উত্তর পাশে একটি ধান ক্ষেত থেকে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ১৪ সেপ্টেম্বর তার বাবা অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মধুপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশ প্রথমে মামলাটি তদন্ত করে। পরে এ তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় পিবিআইকে।

পিবিআই তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই ঘটনার সাথে নার্গিসের সাবেক স্বামী মনিরুজ্জামান জড়িত থাকার বিষয়টি চিহ্নিত করে। গত শনিবার মনিরুজ্জামানকে তার বাড়ি ধনবাড়ী উপজেলার কান্দিপুর গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে মনিরুজ্জামান নার্গিসকে ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করেন। আদালতে জবানবন্দি দিতেও রাজি হন। রবিবার টাঙ্গাইল চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে তিনি জবানবন্দি দেন।

পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার সিরাজ আমীন জানান, জবানবন্দিতে মনিরুজ্জামান জানিয়েছেন- তার সাথে নার্গিসের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরে তারা বিয়ে করেন। কিন্তু বিয়ের কিছুদিন পর থেকে তাদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়। ফলে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। মনিরুজ্জামান পরে আবার বিয়ে করেন। দ্বিতীয় বিয়ে করার পরে নার্গিসের সাথে আবার যোগাযোগ হয়। নার্গিস তাকে জানায় আগের স্ত্রীকে তালাক দিলে সে আবার বিয়ে করবে।

নার্গিসের কথা মতো মনিরুজ্জামান দ্বিতীয় স্ত্রীকে তালাক দেন। ঘটনার দিন মনিরুজ্জামান নার্গিসদের বাড়িতে যান। সেখানে তাকে একা পেয়ে এক দফা ধর্ষণ করেন। পরে দ্বিতীয়বার ধর্ষণের চেষ্টা করলে নার্গিস বাধা দেন। তখন নার্গিসের গলা চেপে ধরে ধর্ষণের চেষ্টা শুরু করেন। এক পর্যায়ে নার্গিস মারা যান। পরে ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য নার্গিসের গলায় ওড়না শক্ত করে পেঁচিয়ে লাশ ধান ক্ষেতে ফেলে পালিয়ে যান মনিরুজ্জামান। ঘটনার পর মনিরুজ্জামান এলাকা ছেড়ে চলে যান । সে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে ছিলেন। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় আবার বিয়ে করেন তিনি।

টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আকরামুল ইসলাম মনিরুজ্জামানের জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন। পরে তাকে জেলহাজতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

সর্বশেষ আপডেটঃ ১৬. মার্চ ২০২১ ০৩:৫১:এএম ৪ বছর আগে
“গারো রাজা” পরেশ চন্দ্র মৃ এর ২৩ তম মৃত্যু বার্ষিকী পালিত - Ekotar Kantho

“গারো রাজা” পরেশ চন্দ্র মৃ এর ২৩ তম মৃত্যু বার্ষিকী পালিত

 
 একতার কণ্ঠ ডেস্কঃ টাঙ্গাইলের মধুপুরের চুনিয়া গ্রামে পিতা রায়চান নকরেক এবং মাতা দেঙা মৃ-এর কোলে ১৯২৯ খ্রীষ্টাব্দে পরেশ চন্দ্র মৃ এর শুভ আগমন ঘটে। মধুপুরের আদিবাসীদের বর্তমান ও ভবিষৎ প্রজন্মের চেতনাতে জাগ্রত করে তোলার ক্ষেত্রে তাঁর সীমাহীন অবদানের জন্য এলাকাবাসী এই কিংবদন্তি মহাপুরুষ পরেশ চন্দ্র মৃ-কে আবিমানি “গারো রাজা” উপাধি প্রদান করেন।
 রবিবার (৭ ই মার্চ) স্বর্গীয় আবিমানি গারো রাজা পরেশ চন্দ্র মৃ ২৩ তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের আয়োজনে  স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।
এই অনুষ্ঠানে জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি ইউজিন নকরেক এর সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন মিঃ অজয় এ মৃ ( সহ সভাপতি বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম), মিঃ রিচার্ড বিপ্লব সিমসাং ( সিনিয়র সহ সভাপতি, জয়েনশাহী) ফাদার লরেন্স রিবেরিও সি.এস.সি ( পাল পৌরহিত পীরগাছা ধর্মপল্লী, জন জেত্রা ( সভাপতি, বাগাছাস, কেন্দ্রীয় কমিটি), মিঃ এপ্রিল পৌল মৃ ( প্রধান শিক্ষক, ভূটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়), মিঃ অরুন এ মৃ (প্রধান শিক্ষক, পীরগাছা সেন্ট পৌলস হাইস্কুল) মিঃ গৌরাঙ্গ বর্মন ( সাধারণ সম্পাদক, কোচ আদিবাসী সংগঠন, মধুপুর শাখা) মিঃ নিউটন মাজি ( সভাপতি, বাগাছাস মধুপুর শাখা) পরিবারের পক্ষে বক্তব্য রাখেন মুকুল দারু সঞ্চলনা করেন মিঠুন হাগিদক ( সভাপতি, আজিয়া)।
স্মরণসভা, প্রার্থনা ও আলোচনার মাধ্যমে পালিত হলো আ.বিমানি গারো রাজা ও জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা অবিসংবাদিত নেতা স্বর্গীয় পরেশ চন্দ্র মৃ এর ২৩ তম মৃত্যু বার্ষিকী। মৃত্যুবার্ষিকীতে বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা তার কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ও স্মরণ  করেন। তিনি ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দের ৭ মার্চ হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
১৯৬২ সনে প্রথমে শুধু চুনিয়া গ্রামের আদিবাসী পরিবার উচ্ছেদের পায়তারা করেছিল। পরেশ বাবুর নেতৃত্বে আদিবাসীদের প্রতিবাদ জোড়ালো হওয়ায় তারা এই নেতাকে পার্কের নির্ধারিত এলাকার বাইরে বা টাঙ্গাইল শহরে রাজকীয় বাড়ী অথবা ক্ষতিপূরণবাবদ তাঁর চাহিদা অনুসারে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরেশ চন্দ্র মৃ জাতির অস্থিত্বকে টিকিয়ে রাখার স্বার্থে সকল প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে উলটো জনগণকে সংগঠিত করতে থাকেন। তিনি তখনই ঘোষণা দেন, “এই গ্রাম এবং এই বন ছেড়ে আমরা কোথাও যাবো না। আমরা বনের সন্তান, বন ছাড়া আমরা বাঁচতে পারবো না”।
এছাড়াও ১৯৬৭ সালে তখনকার পূর্ব পাকিস্তানের গর্ভনর মোনায়েম খাঁনের আদিবাসীদের উচ্ছেদ এবং পুনর্বাসনের ঘোষনা, ১৯৬৮ সনে পুনরায় চুনিয়া গ্রাম উচ্ছেদ ও ক্ষতিপূরণ প্রদানের নোটিশ করা হয়েছিল। ১৯৭২ সনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর  মন্ত্রীপরিষদ নিয়ে সদ্য স্বাধীনতা প্রাপ্ত বাংলাদেশের সংবিধান রচনা করার উদ্দেশে দোখলায় আসেন। তখনও শেখ মুজিব নিজেই ঘোষনা দিয়েছিলেন  আদিবাসী গ্রাম উচ্ছেদ হবেনা বলে।
অবশেষে ১৯৮০ সালে জিয়ার সামরিক শাসন আমলে সামরিক আইন অনুযায়ী আবার উচ্ছেদের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সবক্ষেত্রেই দৃঢ় মনোবলের অধিকারী বাবু পরেশ চন্দ্র মৃ এলাকার লোকজনদের সংগঠিত করে সরকারের বিভিন্ন দফতরে প্রতিবাদ লিপি পেশ করে সৎসাহস দেখিয়েছেন, সফল হয়েছেন। একারণেই তিনি গারো নেতা, একারণেই তিনি আবিমানি ‘গারো রাজা’।

সর্বশেষ আপডেটঃ ০৮. মার্চ ২০২১ ০৩:০৭:এএম ৪ বছর আগে
টাঙ্গাইলের আদিবাসী গারোদের মাতৃভাষা ‘আচিক’ বিলুপ্ত প্রায় - Ekotar Kantho

টাঙ্গাইলের আদিবাসী গারোদের মাতৃভাষা ‘আচিক’ বিলুপ্ত প্রায়

একতার কণ্ঠ ডেস্কঃ  টাঙ্গাইলের পাহাড়িয়াঞ্চল মধুপুর, ঘাটাইল ও সখীপুর এলাকার আদিবাসী গারো সম্প্রদায়ের মাতৃভাষা ‘আচিক’ কালের গর্ভে বিলুপ্ত প্রায়। আচিকের লেখ্য রূপ ইতোমধ্যে বিলুপ্ত ও গারোদের মুখে মুখে এ ভাষা অল্প বিস্তর টিকে আছে। মাতৃভাষা আচিক রক্ষার জন্য সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগের দাবি জানিয়েছে আদিবাসী নেতারা। একই সাথে এ ভাষা রক্ষায় গারো শিশুদের মাতৃভাষায়(আচিক) প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা গ্রহনেরও দাবি জানিয়েছেন তারা।

মধুপুরের আদিবাসী গারোদের সাথে কথা বলে জানা যায়, একদা এতদাঞ্চলের গারো সম্প্রদায়ের মানুষ মাতৃভাষা ‘আচিক’ ভাষা ছাড়া অন্য কোন ভাষা জানতেন না বা ব্যবহার করতেন না। সময়ের বিবর্তণে জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে বা লেখাপড়া করতে প্রকৃতির সন্তান গারোরা আশপাশের বাঙালি প্রধান এলাকায় এসেছেন বা বাঙালিরা পাহাড়ে ব্যবসার জন্য তাদের কাছাকাছি গেছেন। আদিবাসী এলাকার বনভূমিতে বাঙালিরা বসতি স্থাপন করেছে। এভাবে এক সময় নিজ এলাকায়ই আদিবাসী গারোরা সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছে। এখন গারো শিক্ষার্থীদের স্কুলে বাংলা মাধ্যমেই লেখাপড়া করতে হয়। কর্মজীবনে অফিস-আদালতসহ সব কাজেই তাদের বাংলা ব্যবহার করতে হয়। ফলে তাদের মাতৃভাষার চর্চা কমে যায়।

জানা যায়, বাংলাদেশের টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, সিলেট, শেরপুর, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, ঢাকা ও গাজীপুর জেলায় গারো সম্প্রদায়ের বসবাস। এছাড়া ভারতের মেঘালয়, আসামের কামরূপ, গোয়ালপাড়া ও কারবি আংলং জেলায় গারোরা বসবাস করে থাকে।

আদিবসী গারোরা ভাষা অনুযায়ী বোডো মঙ্গোলীয় ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত। জাতিগত পরিচয়ের ক্ষেত্রে অধিকাংশ গারোই তাদেরকে মান্দি বলে পরিচয় দেন। গারোদের ভাষায় ‘মান্দি’ শব্দের অর্থ ‘মানুষ’। গারো ভাষা লাতিন লিপিতে লেখা হয়। গারোদের মাতৃভাষায় ‘আচিক’ শব্দের অর্থ ‘পাহাড়’।

আদিবাসী গারোদের বাসবাস সাধারণত পহাড়িয়াঞ্চলে। গোত্রভেদে গারোদের মধ্যে পৃথক পৃথক উপভাষার প্রচলন রযয়েছে। ‘আচিক’ উপভাষাটি বাংলাদেশের টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, শেরপুর, নেত্রকোণা এবং ভারতের মেঘালয় অঙ্গরাজ্যে বসবাসরত গারোদের ‘মাতৃভাষা’।
অন্যান্য উপভাষার মধ্যে রয়েছে- আবেং, আওয়ে, চিসাক, দাক্কা, গাঞ্চিং, কামরূপ, মাতচি।

এ ব-দ্বীপে আদিবাসী গারোদের মধ্যে ‘আবেং’ উপভাষাটিও প্রচলিত। এই উপভাষার সাথে কোচ ভাষার মিল রয়েছে। বাংলাদেশের গারোরা আবেং উপভাষায় কথা বললেও আচিক উপভাষায় লিখে থাকে।

আদিবাসী প্রবীণ নেতারা জানান, গারোদের সমাজে মাতৃতান্ত্রিক পরিবার প্রথা প্রচলিত। অতীতে গারোরা সবাই তাদের নিজস্ব ধর্ম পালন করত। তাদের আদি ধর্মের নাম ‘’সাংসারেক’। ১৮৬২ সালে এতদাঞ্চলের গারোরা খ্রিষ্টীয় ধর্ম গ্রহন করা শুরু করে। ধর্ম প্রচারে বন এলাকায় মিশনারীদের আগমনে বর্তমানে শতকরা ৯৮ ভাগ গারোরাই খ্রিষ্টীয় ধর্মাবলম্বী। খ্রিষ্টীয় ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার পর তাদের সামাজিক নিয়ম-কানুন ও আচার-অনুষ্ঠানে অনেক পরিবর্তন এসেছে এবং খ্রিষ্টীয় ধর্মের আচারাদির প্রভাব পড়েছে।

মধুপুরের আদিবাসী নেতাদের মতে, বাংলাদেশে প্রায় সোয়া লাখ গারো সম্প্রদায়ের মানুষ রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৩০ হাজার মধুপুর গড়াঞ্চলে বসবাস করে। দুই বা তিন দশক আগেও গারোরা মাতৃ ভাষা ছাড়া অন্য কোন ভাষা জানত না। এখন মধুপুর গড়াঞ্চলের স্কুল পড়–য়া শিশুদের অধিকাংশই তাদের মাতৃভাষা ‘আচিক’ ভালভাবে জানেনা। কেউ কেউ নিজ বাড়িতে মা-বাবার মুখে শুনে এ ভাষা সম্পর্কে কিছুটা বুঝতে শিখলেও তারা আচিক ভাষায় অনর্গল উত্তর দিতে পারে না। বাংলা ও ইংরেজি ভাষার আধিক্যে তাদের মধ্যে ‘আচিক’ ভাষার চর্চাও কমে গেছে।

মধুপুরের আদিবাসী নেতা অজয় এ মৃ জানান, ‘আচিক’ ভাষার লিখিত কোন বর্ণমালা নেই। কথিত আছে- দুর্ভিক্ষপীড়িত তিব্বত অঞ্চল ত্যাগ করে গারোরা যখন ভারতীয় উপমহাদেশে আসছিলেন, তখন যার কাছে পশুর চামড়ায় লিখিত আচিক ভাষার পুঁথি-পুস্তকাদি ছিল, সেই ব্যক্তি পথে ক্ষুধার জ্বালা সহ্য করতে না পেরে সব পুঁথি-পুস্তক সেদ্ধ করে খেয়ে ফেলেন।

তিনি সম্পূর্ণ ব্যাপারটি গোপন রাখেন। এ উপমহাদেশে প্রবেশের পর নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা এবং স্থায়ী বাসযোগ্য স্থান নির্বাচনের জন্য দীর্ঘদিন প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যে যুদ্ধবিগ্রহ করে অভিজ্ঞ গারোরা প্রাণ হারান। এ উপমহাদেশে আগমন ও বসতি স্থাপনের দীর্ঘদিন পরে পুঁথি-পুস্তক হারানোর ঘটনাটি প্রকাশ পায়। কিন্তু ততদিনে গারো বর্ণমালা বিস্মৃতির অতল গর্ভে বিলুপ্ত হয়ে যায়। ফলে আচিক ভাষার বর্ণমালা চিরতরে হারিয়ে যায়। তবে গারোদের মুখে মুখে আচিক ভাষার প্রচলন এখনও কোন কোন গারো পরিবারে রয়েছে।

মধুপুরের আচিক মিচিক সোসাইটির সভাপতি সুলেখা দ্রুং জানান, বাংলাদেশের গারো সম্প্রদায় তাদের মাতৃভাষা আচিককে টিকিয়ে রাখতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে রোমান বর্ণমালার আদলে নির্মিত আচিক ভাষার বর্ণমালার প্রচলনের চেষ্টা চলছে। ভারতে ইতোমধ্যে রোমান বর্ণমালার আদলে গারো সম্প্রদায়ের আচিক ভাষা সংরক্ষণের কাজ শুরু হয়েছে। মধুপুরেও শিশুদের রোমান অক্ষর দিয়ে আচিক ভাষার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য প্রাথমিকভাবে গারো অধ্যুষিত কয়েকটি স্কুলে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে এ ব্যবস্থা নেই। তিনি পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত সব স্কুলে আদিবাসীদের নিজস্ব ভাষায় পড়ানোর দাবি জানান।

আদিবাসীদের সংগঠন ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের মধুপুর শাখার কর্মকর্তারা জানান, মাতৃভাষা ধরে রাখার জন্য তারা নিজেরা বাড়িতে সব সময় আচিক ভাষায় কথা বলে থাকেন। তবু তাদের ভাষা রক্ষা করা যাচ্ছে না। বাংলার সঙ্গে ক্রমেই আচিক ভাষা মিশে যাচ্ছে।

জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি ইউজিন নকরেক জানান, তাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে ২০০৮ সালে গড়াঞ্চলে ১২টি স্কুল চালু করা হয়েছিল- যেখানে গারো শিশুদের আচিক ভাষায় শিক্ষা দেওয়া হত। কয়েক বছর চলার পর দাতা সংস্থার অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় স্কুলগুলো বন্ধ হয়ে যায়। তিনি আদিবাসী শিশুদের মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা করার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান।

তিনি আরও জানান, ২০১০ সালে জাতীয় শিক্ষা নীতিমালায় শিশুদের তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত মাতৃভাষায় শিক্ষা ব্যবস্থা চালুর কথা বলা হয়েছে। কিন্তু তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছেনা। গারো শিশুদের জন্য মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। না হলে আগামি প্রজন্ম মাতৃভাষা কী ছিল তাই জানতে পারবে না।

সর্বশেষ আপডেটঃ ২৭. ফেব্রুয়ারী ২০২১ ০২:৪৬:এএম ৪ বছর আগে
কপিরাইট © ২০২২ একতার কণ্ঠ এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি ।