একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের মধুপুরে উৎসাহ উদ্দীপনায় গারোদের ওয়ানগালা উৎসব পালন করা হয়েছে । সাংসারেক কমিউনিটি বাংলাদেশ নামের একটি গারো সংগঠন এ কর্মসূচির আয়োজন করে। দেশি-বিদেশি অতিথি ছাড়াও বিভিন্ন ধর্ম বর্ণের অসংখ্য লোক সমাগমে মুখরিত হযে ওঠে এই উৎসব।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর)সকালে উপজেলার আমলীতলা ফুটবল মাঠে দিনব্যাপী আ.বিমা ওয়ানগালার বর্ণিল কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধক ছিলেন ময়মনসিংহ-১ (হালুয়াঘাট) আসনের সংসদ সদস্য জুয়েল আরেং।
পরে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন আয়োজক প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ওয়ারি নকরেক মারাক।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন, ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন আরিফ, মধুপুর উপজেলা আওয়ালীগের সহসভাপতি ইয়াকুব আলী, মধুপুর উপজেলা পরিষদের নারী ভাইস চেয়ারম্যান যষ্ঠিনা নকরেক, ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম, ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার এসাসিয়েশনের সভাপতি উইলিয়াম দাজেল, বিভিন্ন আদিবাসি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ।
এর আগে দিন শুরু হতেই মাঠের এক প্রান্তের সাজানো মঞ্চে খামাল (পুরোহিত) জলে মন্ত্র পড়ে ফুঁ দিয়ে জলকে পবিত্র করেন এবং ওই জল ভক্তদের উদ্দেশ্যে সিঞ্চন করে বলেন, এই পবিত্র জলের সংস্পর্শে যারা আসবে তারা যেন পবিত্র হয়ে উঠে, গ্রিক্কা, বিসাদিমদিমা, চাম্বিল মেসা, নকগাখা।
মধুপুর বনাঞ্চলের গারোদের সর্ববৃহত সামাজিক অনুষ্ঠান এই ওয়ানগালার আয়োজনের বিশেষ আকর্ষণ ছিল ভারতের মেঘালয়ের ডা সুরাকা তুরা ব্যান্ড দলের সংগীত পরিবেশন।
এছাড়াও সংগীত পরিবেশন করে সবুজ মাজি ,যাদু রিছিল ও ঢাকা কালচারাল গ্রুপের শিল্পীরা।
উৎসব উপলক্ষে মধুপুরের মেট্রো হসপিটালের সৌজন্যে একই মাঠে হেল্থ ক্যাম্প এ দিনব্যাপি দেয়া হবে ফ্রি স্বাস্থ্য সেবা।
প্রকাশ,ওয়ানগালা (ইংরেজি: Wangala) উত্তর-পূর্ব ভারতের মেঘালয় অঙ্গরাজ্য ও বাংলাদেশে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলে বসবাসকারী গারো জাতির লোকদের প্রধান ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব। এটি ওয়ান্ন নামেও পরিচিত। প্রতি বছর সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর মাসে গারো পাহাড়ে এই উৎপব পালিত হয়।
আদিকাল থেকেই গারোদের বিশ্বাস, মানুষের জীবন ও জীবিকার জন্য তার প্রাকৃতিক যা কিছু সম্পদ সবই দেবতার সৃষ্টি এবং দান। দেবতা তাতারা পৃথিবী, সালজং পার্থিব ফসলাদি এবং সুষিমি রোগ নিরাময়কারী ও ঐশ্বর্য প্রদানকারী।
একতার কণ্ঠঃ চিকিৎসা বিদ্যায় নেই কোন পড়াশোনা। তবুও তিনি চিকিৎসক। তার ভিজিটিং কার্ডে লিখেছেন চিকিৎসা বিদ্যার নানা ডিগ্রির লম্বা লাইন। তার চিকিৎসাপত্রের প্যাডে নিজেকে মেডিসিন ও শিশু বিশেষজ্ঞ হিসাবে নাম ছাপিয়েছে। তিনি ডিগ্রি লেখেছেন এমবিবিএস ঢাকা। পিজিটি শিশু। সিসিডি বারডেম। এফসিপিএস মেডিসিন। এ ডিগ্রি ও বিদ্যার পরিচয়ে দীর্ঘদিন যাবত চিকিৎসা প্রদানের নামে রোগীদের সাথে প্রতারণা করে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিলেন মাসুদ আহমেদ নামের এক যুবক। তিনি টাঙ্গাইলের মধুপুরে শাহজালাল ফার্মেসী ও ডায়াগনাষ্টিক সেন্টারে রোগী দেখতেন।
মধুপুর-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গেইটের সামনে অবস্থিত শাহজালাল ফার্মেসী ও ডায়াগনাষ্টিক সেন্টারে তিনি রোগীদের চিকিৎসাপত্রে রোগীদের বিভিন্ন পরীক্ষা দিলে রোগীরা অন্যান্য ক্লিনিকে পরীক্ষা করাতে গেলে স্থানীয় ক্লিনিকের লোকজনের সন্দেহের সৃষ্টি হয়। স্থানীয়দের সন্দেহ ঘনিভূত হলে স্থানীয়রা প্রশসানকে গোপনে সংবাদ দিলে বুধবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে নির্বাহী ম্যাজিস্টেট সহকারী কমিশনার (ভুমি) জাকির হোসাইন, ১০০ শয্যা বিশিষ্ট মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাইদুর রহমান পুলিশসহ শাহজালাল ফার্মেসী ও ডায়গনাষ্টিক সেন্টারে গিয়ে তার ডাক্তারি পড়াশোনার কোন সনদপত্র দেখাতে না পাড়ায় তাকে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ১ লক্ষ টাকা ও দুই মাসের কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ক্লিনিকের মালিককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
এ মাসুদ আহমেদ বরিশালের মুলাদি উপজেলার বানীমর্দান গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে।
জানা যায়, মাসুদ আহমেদ বেশ কিছুদিন ধরে মধুপুরের শাহজালাল ও ডায়াগনাষ্টিক সেন্টারে চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন। ডাক্তারি বিদ্যায় পড়াশোনা না করেই রোগীদের আকৃষ্ট করতে ডিগ্রি লিখেছেন এমবিবিএস ঢাকা। পিজিটি শিশু। সিসিডি বারডেম। এফসিপিএস মেডিসিন। নিজের চিকিৎসাপত্রের প্যাডে মেডিসিন ও শিশু বিশেষজ্ঞ লিখে চটকদার প্রচারনার মাধ্যমে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছে। তার বিভিন্ন পরীক্ষার কাগজপত্র অন্যান্য ক্লিনিকের নিয়ে গেলে স্থানীয় ক্লিনিকে কর্মরতদের সন্দেহের সৃষ্টি হয়। তারপর বিষয়টি স্থানীয় চিকিৎসকদের জানালে গোপনে তারা খোজখবর দিতে থাকে। খোজখবর নিয়ে জানতে পারেন তার কোন ডাক্তারি পড়াশোনার সনদ নেই। পরে বিষয়টি নির্বাহী ম্যাজিস্টেট সহকারী কমিশনার (ভুমি)কে অবগত করলে তিনি বুধবার দুপুরে সরজমিনে গিয়ে মাসুদ আহমদের নিকট তার ডাক্তরি বিদ্যার সনদপত্র দেখাতে বললে নানা অযুহাত খুঁজতে থাকেন। সনদপত্র তার স্ত্রী নিয়ে চলে গেছে বলে মাসুদ জানায়। এ সময় মাসুদ আহমেদ এক এক সময় এক এক মেডিকেলে পড়াশোনার কথা জানান। এ সব তথ্য স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়।
১০০ শয্যা বিশিষ্ট মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ সাইদুর রহমান জানান, মধুপুর উপজেলা হাসপাতালের একাধিক কর্মকর্তা, কর্মচারী সন্দেহভাজন এফসিপিএস ডিগ্রিধারী একজন ডাক্তার শাহজালাল ডায়গানাষ্টিক সেন্টারে প্যাকটিস করেন বলে জানায়। বুধবার দুপুর ১২ টার সময় স্যানিটারি ইন্সপেক্টরসহ তিনি ঐ ক্লিনিকে অভিযানে যান। এ সময় তিনি ডাক্তার মাসুদ আহমেদ নামে একজনকে ঐ ক্লিনিকের চেম্বারে দেখতে পায়। এ সময় মাসুদ আহমেদ এক প্রশ্নের জবাবে জানায় সে ঢাকা মেডিকেল থেকে এমবিবিএস ও এফসিপিএস ডিগ্রি নিয়েছে। পরবর্তীতে জানা গেলো তিনি আদৌ কোন মেডিকেলে পড়াশোনা করেনি। বিষয়টি তিনি মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ফোন করে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করার কথা জানালে নির্বাহী ম্যাজিস্টেট সহকারী কমিশনার (ভুমি) সনদবিহীন ডাক্তার মাসুদ আহমেদকে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা করেন।
এ ব্যাপারে নির্বাহী ম্যাজিস্টেট জাকির হোসাইন এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, মাসুদ আহমেদ মেডিকেলে পড়াশোনা করেনি। ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা ও দুই মাসের কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। এ সময় শাহজালাল ডায়গানাষ্টিক মালিককেও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের মধুপুরে ট্রাকের পেছনে চলন্ত মাইক্রোবাসের ধাক্কায় দুই পুলিশ সদস্যসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো দুইজন। সোমবার (২৪ অক্টোবর) রাত ৮টার দিকে উপজেলার মধুপুর-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) সকালে নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নিহতরা হলেন, জামালপুর সদরের নারায়নপুর পুলিশ ফাড়ির সদস্য নুরুল ইসলাম ও সোহেল রানা। অপর নিহত হলেন ধর্ষণ মামলার আসামি লালন (২৪)। লালন জামালপুর সদরের গজারহাটা গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে।
মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি ) মাজহারুল আমিন জানান, ধর্ষণ মামলার আসামিকে মেডিকেল পরীক্ষা শেষে মাইক্রোবাসে ঢাকা থেকে জামালপুরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। ফেরার পথে গোলাবাড়ি এলাকায় একটি ট্রাকের পিছনে মাইক্রোবাসটি ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুই পুলিশ সদস্য এবং ধর্ষণ মামলার আসামির মৃত্যু হয়।
তিনি আরো জানান, মঙ্গলবার সকালে নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে পুলিশ সদস্যদের মরদেহ তাদের ইউনিটে পাঠানো হবে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার মাগন্তিনগর গ্রামে মৌমাছির কামড়ে তানভীর হাসান (২৫) নামে এক নববিবাহিত যুবকের মৃত্যু হয়েছে ।
শুক্রবার (২১ অক্টোবর)সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।বেরীবাইদ ইউপি চেয়ারম্যান জুলহাস উদ্দিন মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তানভীর হাসান মধুপুর উপজেলার বেরীবাইদ ইউনিয়নের মাগুন্তিনগর গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে।
তানভীরের হাসানের মামা সোলায়মান সেলিম জানান, বৃহস্পতিবার(২০ অক্টোবর) সকালে তানভীরের বাবা আব্দুল খালেক বাড়ি থেকে মুদির দোকানে যাচ্ছিলেন। বাড়ির অদূরে মৌমাছির ঝাঁক তাঁকে আক্রমণ করে। এ সময় তার চিৎকার শুনে বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধারে দৌড়ে আসে বড় ছেলে তানভীর হাসান। মাটিতে লুটিয়ে পড়া বাবাকে উদ্ধারের চেষ্টা চালাতেই মৌমাছির ঝাঁক তাঁর ওপর আক্রমণ চালায়। সে খালি গায়ে থাকায় মুহূর্তের মধ্যেই পুরো শরীরে পালাক্রমে মৌমাছি কামড়াতে থাকে। মৌমাছির আক্রমণ থেকে বাঁচতে তানভীর দিগ্বিদিক ছুটতে থাকে। মৌমাছির দলও তার শরীরে দফায় দফায় কামড়াতে থাকে। একপর্যায়ে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে চিৎকার করতে থাকে। এ সময় আশপাশের লোকজন আগুনের ধোঁয়া তৈরি করে মৌমাছি তাড়িয়ে তানভীরকে উদ্ধার করে। পরে তানভীরকে দ্রুত মধুপুর উপজেলা ১০০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়।
সোলায়মান সেলিম আরও জানান, সেখানে অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
সেখানে অবস্থায় আরো অবনতি হওয়ায় বৃহস্পতিবার রাতেই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সন্ধ্যায় তার মৃত্যু হয়।
প্রকাশ, তানভীর সরকারি সা’দত কলেজ থেকে চলতি বছর শিক্ষাজীবন শেষ করেছেন। এ বছরের ১৩ অক্টোবর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি।
তার এই অকাল মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের মধুপুরে মসজিদের ওয়াকফ্কৃত জমি নিয়ে বিরোধের জেরে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদকসহ দু’জনকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে।
শুক্রবার(১৪ অক্টোবর) দুপুরে মধুপুর উপজেলার আলোকদিয়া ইউনিয়নের লুচিয়ানগর গ্রামে জুমার নামাজের পরপরই এই হামলার ঘটনাটি ঘটে।
আহত মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক আঃ বারী খান বর্তমানে মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।
এ ঘটনায় আহত সাধারণ সম্পাদক আঃ বারী খানের ভাই আব্দুর রাজ্জাক খান মধুপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও লিখিত অভিযোগের বিবরণ থেকে জানা যায়, একটি মহল মধুপুর উপজেলার আলোকদিয়া ইউনিয়নের লুচিয়ানগরবাড়ী দক্ষিণপাড়া জামে মসজিদের উন্নয়নমূলক কাজসহ মসজিদের জমির দলিল সংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদকসহ কমিটির সাথে বিরোধ সৃষ্টি করে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে সাধারণ সম্পাদক ও তার পরিবারকে হুমকি দিয়ে আসছে।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার দুপুর আনুমানিক দুইটার সময় জুমার নামাজ শেষে মসজিদের জমির দলিল ও উন্নয়নমূলক কাজ নিয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে প্রতিপক্ষরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। এ সময় একই গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে শাহীন আলম (৩০), আঃ গফুরের ছেলে শামছুল হক (৪০), মৃত দারোগ আলীর ছেলে মজিবুর রহমান (৬০) ও আঃ গফুর মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক আঃ বারী ও আঃ রাজ্জাককে এলোপাথারী কিলঘুষি মেরে শরীর জখম করে ।
লিখিত অভিযোগ থেকে আরো জানা যায়, এক পর্যায়ে মসজিদ কমিটির সম্পাদক আঃ বারীকে ইটের আঘাতে রক্তাক্ত করা হয়। এতে সে মাথায় ও ঠোটে আঘাত পেলে তাকে মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
এ ব্যাপারে মসজিদ কমিটির সহ-সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান জানান, জুমার নামাজ শেষে মসজিদের জমির দলিল সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। জমির রের্কড নিয়ে সমস্যা ও বিরোধ ছিল। এ নিয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে মসজিদ কমিটির সম্পাদক প্রতিপক্ষের মারপিটে আহত হয় বলে তিনি জানান।
মসজিদের কোষাধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম জানান, তার বাবাকেও এ সময় পিটিয়ে আহত করা হয়েছে । তার বাবার হাতে আঘাত পেয়েছে।
আলোকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাইদ খান সিদ্দিক বলেন, এ ঘটনা যতদূর শুনেছি জায়গা জমি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে ঘটেছে। তবে তিনি পুরো বিষয়টি জানেন না বলে জানান।
মধুপুর থানার এস আই নুরুল আমিন জানান, তিনি ঘটনার স্থলে গিয়েছিলেন। মসজিদের জমি নিয়ে বিরোধ। ঘটনার আগের দিন দু’পক্ষের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। পরের দিন শুক্রবার জুমার নামাজ শেষ হতে না হতেই এ ঘটনা ঘটে বলে তিনি জানান।
তিনি আরো জানান,এ ঘটনায় আহত আঃ বারী খানের ভাই আঃ রাজ্জাক খান মধুপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের মধুপুরে ইয়াকুব আলী (২২) নামে এক চালককে খুন করে তার অটোরিকশা ছিনিয়ে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
গলায় রশি বাঁধা অবস্থায় মধুপুরের পীরগাছা রাবার বাগান এলাকার ভবানীটেকি বাজারের পাশে একটি ড্রেনে দুর্বৃত্তরা তার মরদেহ ফেলে রেখে যায়।
সোমবার (৩ অক্টোবর) রাতে পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে চালকের লাশ উদ্ধার করে।
নিহত ইয়াকুব আলী পাশের ধনবাড়ী উপজেলার ভাইঘাট জমশেদপুর গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে।
পরিবারের লোকজন এসে ইয়াকুবের লাশ শনাক্ত করেন। পারিবারিক সূত্র জানায়, রোববার (২ অক্টোবর) সকালে ইয়াকুব তার অটোরিকশা নিয়ে বের হয়ে নিখোঁজ হন।
রাতের কোনো একসময় দুর্বৃত্তরা তার অটোরিকশা ভাড়ায় নিয়ে ওই এলাকায় গিয়ে ছিনিয়ে নেওয়ার সময় খুন করে পালিয়ে গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল ও সুজন জানান, সোমবার বিকালে রাবার বাগানের ড্রেনের বৃষ্টির পানিতে গলায় রশি লাগানো অবস্থায় একটি লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন তারা।
মধুপুর থানার এসআই ফরহাদ হোসেন জানান, লাশটি উপুড় হয়ে পড়ে ছিল। সিআইডির বিশেষজ্ঞ টিমের পর্যবেক্ষণের পর লাশ উদ্ধার করে রাতেই থানায় আনা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি মর্গে পাঠানো হয়েছে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের মধুপুরে লাইসেন্স বিহীন সার বিক্রি ও মজুদের দায়ে ছয়টি দোকানকে এক লাখ ২৬ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমান আদালত।
শনিবার(২৭ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার জলছত্র ও পঁচিশ মাইল বাজারে মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীমা ইয়াসমীন ও সহকারী কমিশনার(ভূমি) জাকির হোসাইনের নেতৃত্বে আলাদা দুটি ভ্রাম্যমান আদালত ওই জরিমানা করেন।
জানা যায়, মধুপুর উপজেলার জলছত্র বাজারে সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাকির হোসাইন ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে লাইসেন্স বিহীন সার বিক্রি ও মজুদের দায়ে স্থানীয় রায়হানের সারের দোকানে পাঁচ হাজার টাকা, রহমতুল্লাহর দোকানে তিন হাজার টাকা, আমিনুল ইসলাম মিন্টুর দোকানে পাঁচ হাজার টাকা, আমিনুল ইসলামের দোকানে তিন হাজার টাকা জরিমানা করেছেন।
এদিকে, মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীমা ইয়াসমীনের নেতৃত্বাধীন ভ্রাম্যমান আদালত পঁচিশ মাইল বাজারে অভিযান চালিয়ে লাইসেন্স বিহীন সার বিক্রি ও মজুদের অপরাধে স্থানীয় ফজলুল হকের সারের দোকানে এক লাখ টাকা ও আয়েশা এণ্টারপ্রাইজের আলী আকবর খানকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন।
এ সময় মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন রাসেল, অরণখোলা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম সহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বিপুল সংখ্যক পুলিশ উপস্থিত ছিলেন।
এ প্রসঙ্গে মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীমা ইয়াসমীন জানান, মধুপুরের জলছত্র ও পঁচিশ মাইল বাজারে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে নিবন্ধন বিহীন সার বিক্রি, মজুদ, মূল্য তালিকা সাটানো না থাকা সহ বিভিন্ন অপরাধে জরিমানা করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরণের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের মধুপুরে ধর্ষণ মামলায় অরণখোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন নকরেককে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে তিনি ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে পাঁচ বছর ধরে এক তরুণীকে ধর্ষণ করে আসছেন।
বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) মামুনকে গ্রেপ্তারের পর আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুর রহমানের আদালতে ভুক্তভোগীর জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে।
এর আগে, বুধবার (২৪ আগষ্ট)ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে মধুপর থানায় মামলা করেন। এতে আসামি করা হয় উপজেলার অরণখোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন নকরেককে। রাতেই আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পুলিশ ও ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, মামুন নকরেকের সঙ্গে ওই তরুণীর সঙ্গে পাঁচ বছর আগে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে অজান্তেই সেই দৃশ্য ধারণ করেন মামুন। এরপর থেকে ভিডিও প্রকাশ করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে পাঁচ বছর ধরে ওই নারীকে ধর্ষণ করে আসছেন তিনি। পরে ওই নারী অন্তঃসত্তা হয়ে পড়লে তাকে হত্যা এবং ভিডিও প্রকাশ করার হুমকি দেন মামুন।
সম্প্রতি মেয়ের শরীরের গড়ন দেখে সন্দেহ হয় ভুক্তভোগীর মায়ের। এরপর বিষয়টি জানার জন্য মেয়ের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন মা।
মেয়েটি মায়ের চাপে বাধ্য হয়ে হত্যার হুমকি উপেক্ষা করে মুখ খুলেন।
ভুক্তভোগীর মা জানান, অনেক কষ্টে দিনমজুরি করে টাকা উপার্জন করে মেয়েকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করার চেষ্টা করছি। বর্তমানে মেয়েটি অনার্সের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তার শরীরের গড়নে পরিবর্তন দেখে মেয়েকে নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করলে মেয়েটি মুখ খোলে। বর্তমানে মেয়েটি ছয় মাসের অন্তঃসত্তা। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়ভাবে অনেকেই মীমাংসার চেষ্টা করেছে। এরপর আইনের দ্বারস্থ হন তিনি।
ভুক্তভোগী ওই তরুণী বলেন, ‘মামুন পাঁচ বছর আগে আমাকে বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ডেকে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে একদিন আমাদের বাড়িতে কেউ ছিল না। ওই দিন সে এসে আমাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছে এবং গোপনে ভিডিও ধারণ করেছে। পরে ওই ভিডিও দেখিয়ে আমাকে ব্ল্যাকমেইল করে। ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। এই ভাবে জিম্মি করে আমাকে মাঝে মধ্যেই ধর্ষণ করত। কাউকে জানালে আমাকে হত্যা করবে বলেও হুমকি দিত মামুন।
এ বিষয়ে অরণখোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফিলিপ মৃ জানান, মামুন নকরেক একই ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে দায়িত্বে আছেন। তিনি আগে দিনমজুর থাকলেও বর্তমানে তিনি নানা সামাজিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকেন। তার বিরুদ্ধে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ শুনেছি। সত্যতা জানি না।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মধুপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শফিকুল ইসলাম জানান,তরুণী ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার মামুন নকরেককে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। মামুন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন। তার মোবাইল ফোনটি জব্দ করা হয়েছে। ভুক্তভোগী নারীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
একতার কণ্ঠঃ কখনও র্যাবের সিও আবার কখনও সরকারি কর্মকর্তার পরিচয়দানকারী মোস্তাফিজুর রহমান রাতুল নামে এক প্রতারককে টাঙ্গাইলের মধুপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
শনিবার (২০ আগস্ট) রাতে টাঙ্গাইলর মধুপুর সদর উপজেলার মৌচাক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।টাঙ্গাইল র্যাব ১২ সিপিসি ৩ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
গ্রেপ্তারকৃত মোস্তাফিজুর ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলার রান্দিলা ধলিয়া গ্রামের মো. আবুল হোসেনের ছেলে।
গ্রেফতারের সময় মোস্তাফিজুরের কাছ থেকে ১টি ওয়াকিটকি সেট ও চার্জার, ৩টি মোবাইল, জনতা ব্যাংকের ২টি চেক, ২টি ভিকটিমদের (চাকরি দেওয়ার জন্য) বায়োডাটা, ৩টি মামলার এজাহারের ফটোকপি (তদন্ত অফিসার), কাস্টমস অফিসারের ছাড়পত্র লেখা সংযুক্ত ২টি মোটরসাইকেলের নিলামের ভুয়া ফটোকপি ১টি, খন্দকার রাতুল নামে আবাসিক প্রকল্পের ব্যানারের ছবি ১টি এবং ভিকটিমদের দেওয়া বিভিন্ন ডকুমেন্ট উদ্ধার করা হয়।
র্যাব-১২ এর তিন নম্বর কোম্পানি কমান্ডার মেজর মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান জানান, মোস্তাফিজুর নিজেকে কখনও র্যাবের কর্মকর্তা আবার কখনও সরকারি বড় কর্মকর্তা পরিচয়ে বিভিন্ন জনের সঙ্গে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নিতেন। গত এক বছরে তার একটি ব্যাংক একাউন্টে ৯৬ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মোস্তাফিজুর রহমান রাতুল নিজেকে প্রতারণার সঙ্গে সম্পৃক্ততার বিষয়টি স্বীকার করেছে। এমনকি তার নামে ২০০৭ সালে ময়মনসিংহ সদর থানায় ১টি প্রতারণার মামলাও রয়েছে। প্রতারণার ঘটনায় বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান র্যাব কমান্ডার।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের মধুপুরে গভীর রাতে চলন্ত বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার মূলহোতা রতন হোসেনের (২১) বাড়ি টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার কুড়ালিয়া ইউনিয়নের ধলপুর গ্রামে। তারা দুই ভাই। তার মা-বাবার মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়েছে অনেক আগে।
বাবা মজিবর রহমানের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর তার মা বাবুল নামে আরেকজনকে বিয়ে করেন। পরে তারা দুই ভাই ঢাকায় চলে যান। ঢাকায় গিয়ে রতন জড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে। তবে তার বাবা মজিবর রহমানের বাড়ি একই উপজেলার আলোকদিয়া এলাকায়।
স্থানীয়রা জানান, ডাকাত দলের মূলহোতা রতন হোসেন ঢাকায় থাকার সুবাদে মাঝে মধ্যে তার মায়ের বাড়ি ধলপুর আসতেন। তবে তাদের সম্পর্কে এলাকাবাসী কিছুই জানত না। তারাও এলাকায় গিয়ে কিছু দিনের জন্য থেকে আবার ঢাকায় চলে যেত। রতন এখন পর্যন্ত বিয়ে করেননি বলে জানে এলাকাবাসী। এই বয়সে সে এতো বড় ঘটনা ঘটাতে পারে সেটা ভাবা যায় না। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরই তার মাসহ বাড়ির সবাই এলাকা থেকে পালিয়েছেন।
মধুপুর উপজেলার কুড়ালিয়া ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের সদস্য ও ধলপুর গ্রামের বাসিন্দা হেলাল উদ্দিন জানান, রতন ও তার ভাই আগের পক্ষের মজিবর রহমানের ছেলে। তার মা বেলী বেগম মজিবরের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর বাবুল নামে একজনকে বিয়ে করে ধলপুর এলাকায় থাকেন।
তিনি আরো জানান, পরের ঘরে বেলীর একটি মেয়ে রয়েছে। তবে রতন ও তার ভাই এলাকায় থাকে না। তারা ঢাকায় থাকে, মাঝে মধ্যে এলাকায় আসে। এর মধ্যে গত তিন মাসে রতন ধলপুর এসে ভোটার হয়েছে। এখনো তার আইডি কার্ড আসেনি। সে আমাদের এলাকাতেই ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনার মূল আসামি এটা ভাবা যায় না। এই ঘটনা শুনে এলাকার মানুষজনও হতবাক হয়েছে। তাদের বাড়ির লোকজন সকালেই বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে বলে জেনেছি।
এদিকে চলন্ত বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী রতন হোসেনসহ ডাকাত দলের ১০ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১। রোববার (৭ আগস্ট) ঢাকা, গাজীপুর, টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোমবার (৮ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
একতার কণ্ঠঃ: টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। এই অভিযোগে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে মধুপুর থানায় মামলা করেছেন বাসের এক যাত্রী।
মধুপুর থানায় বুধবার(৩ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে এই মামলা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাজহারুল আমিন।
তিনি জানান, কুষ্টিয়া থেকে ছেড়ে আসা ঈগল পরিবহনের বাসে মঙ্গলবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটেছে বলে যাত্রীরা অভিযোগ করেছেন। ২৪ থেকে ২৫ জন যাত্রী ছিলেন তাতে।
যাত্রীদের বরাতে ওসি বলেন, ‘বাসটি সিরাজগঞ্জের কাছাকাছি দিবারাত্রি হোটেলে রাতের খাবারের জন্য বিরতি দেয়। রাত দেড়টার দিকে আবার যাত্রা শুরু করে। পথে কাঁধে ব্যাগ বহনকরা ১০ থেকে ১২ জন তরুণ ওঠেন।
‘বাসটি বঙ্গবন্ধু সেতু পার হওয়ার পর ওই তরুণরা অস্ত্রের মুখে একে একে সব যাত্রীদের বেঁধে ফেলে। কয়েক মিনিটের মধ্যে সবার কাছ থেকে মোবাইল ফোন, টাকা ও গয়না লুট করে নেয়। এরপর এক নারী যাত্রীকে ধর্ষণ করে।’
ওসি অভিযোগের বরাতে আরও জানান, বাসটি বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে প্রায় তিন ঘণ্টা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখে ওই দলটি। পরে পথ বদলে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ সড়কের মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া জামে মসজিদের পাশে বালির ডিবিতে বাসটি উল্টিয়ে তারা পালিয়ে যায়।
খবর পেয়ে ঈগল পরিবহনের ব্যবস্থাপক আয়নাল হোসেন থানায় আসেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের চালক, হেলপার ও সুপারভাইজারদের বেঁধে রেখে যাত্রীদের কাছে যা যা ছিল সব নিয়ে গেছে ডাকাতরা।’
ওসি মোহাম্মদ মাজহারুল আমিন আরো জানান, ধর্ষণের অভিযোগ করা নারীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হবে। বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।
একতার কণ্ঠঃ কুষ্টিয়া থেকে যাত্রী নিয়ে চট্টগ্রাম যাচ্ছিল বাসটি। বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমপাড়ে পৌঁছালে এতে ১০-১২ জন যাত্রী ওঠেন। যাত্রীবেশে ওঠা এই যাত্রীরা বাসটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বাকি যাত্রীদের জিম্মি করে ফেলে। হাত-মুখ ও চোখ বেঁধে অস্ত্রের মুখে টানা তিন ঘণ্টা জিম্মি করে রাখা হয় যাত্রীদের। এই পুরো সময় বাসটি চলন্ত অবস্থায় ছিল। এর মধ্যেই চলে ডাকাতি ও ধর্ষণ। মধুপুরের কাছে এসে বাসটি দুর্ঘটনার শিকার হলে স্থানীয়রা এসে যাত্রীদের উদ্ধার করেন।
বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমপাড় থেকে ছিনতাই করা বাসের যাত্রীদের সর্বস্ব লুটের পর নারী যাত্রীদের পালাক্রমে ধর্ষণের এ ঘটনা ঘটেছে বুধবার (৩ আগস্ট)ভোরে। আন্তজেলা ডাকাত দলের সদস্যদের এই ভয়াবহ কাণ্ডের শিকার হয়েছেন কুষ্টিয়া-চট্টগ্রাম চলাচলকারী ঈগল পরিবহনের যাত্রীরা।
বাস যাত্রীদের কাছ থেকে জানা যায়, মঙ্গলবার(২ আগস্ট) কুষ্টিয়া থেকে ঈগল পরিবহনের একটি বাস অন্তত ২৫ জন যাত্রী নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। বাসটি বঙ্গবন্ধু সেতু পার হলে যাত্রীবেশী ডাকাতেরা অস্ত্রের মুখে ঘুমন্ত যাত্রীদের হাত-মুখ ও চোখ বেঁধে জিম্মি করে। এর পর যাত্রীদের কাছে থাকা মোবাইল, টাকা, স্বর্ণালংকার লুট করে নেয়। পরে ডাকাত দলের সদস্যেরা গাড়িতে থাকা নারী যাত্রীদের ধর্ষণ করে বলে জানান একাধিক যাত্রী।
টানা তিন ঘণ্টা যাত্রীদের ওপর চালানো নির্যাতনের পর টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া নামক স্থানে এসে বাসটির গতি থামিয়ে ডাকাত দল নেমে যায়। মুহূর্তের মধ্যেই চোখ-মুখ ও হাত বাঁধা যাত্রীদের নিয়ে বাসটি রাস্তার পাশের বালুর ঢিবিতে কাত হয়ে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়। স্থানীয়রা এগিয়ে এসে তাঁদের উদ্ধার করেন।
কুষ্টিয়া থেকে ছেড়ে আসা বাসটিতে নাটোরের বড়াই গ্রামের বাসিন্দা ফল ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান যাত্রী হন রাত ১০টায়। তিনি নাটোরের তরমুজ চত্বর থেকে বাসে ওঠেন। তিনি আমড়া, কাঁঠাল ও তাল ঢাকায় বিক্রি করার জন্য নিয়ে যাচ্ছিলেন।
ঈগল পরিবহনে অনেক দিন ধরে নিয়মিত যাতায়াত করা এই ভুক্তভোগী যাত্রী জানান, ‘আমরা বাসে উঠে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। আমাদের বাসটি সিরাজগঞ্জের কাছাকাছি “দিবারাত্রি হোটেলে” রাতের খাবারের জন্য বিরতি দেয়। বাসের অনেকেই ওই হোটেলে খাবার খান। আমিও ওই বাসের সুপারভাইজার রাব্বি ও সহযোগী দুলালের সাথে বসে খাবার খেয়েছি। আগে যে চালক বাস চালাতেন, সেই চালক ছিলেন না। কড্ডার মোড়ে আসার পর গেঞ্জি, শার্ট পরা ১০-১২ জন যাত্রী ওঠেন। তাঁদের প্রত্যেকেরই পিঠে ব্যাগ ছিল। তাঁরা বাসের খালি সিটগুলোতে বসে পড়েন। বাসটি বঙ্গবন্ধু সেতু পার হওয়ার পর যাত্রীবেশে ওঠা এই ডাকাত দলের সদস্যেরা অন্য ঘুমন্ত যাত্রীদের অস্ত্রের মুখে একে একে বেঁধে ফেলে। একই সঙ্গে প্রত্যেক যাত্রীর চোখ ও মুখ বেঁধে জিম্মি করে বাসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় তারা। এমনকি শিশুদেরও একই কায়দায় বেঁধে রাখে তারা। পরে সব যাত্রীর কাছ থেকে মোবাইল, টাকা, গয়না লুট করে নেয়। তার পর নারী যাত্রীদের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালায়।’
হাবিবুর রহমান জানান ‘আমার পাশে বসা নারীকে চার দফায় ধর্ষণ করা হয়েছে বলে আমি অনুধাবন করতে পেরেছি। আমরা অসহায় ছিলাম। হাত, মুখ, চোখ বাঁধা ছিল। কিছুই করতে পারিনি। টানা তিন ঘণ্টা আমরা ওই বাসটিতে জিম্মি ছিলাম। বাসটি কোথা থেকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে, আমরা কিছুই জানি না। দুর্ঘটনায় শিকার হওয়ার পর আমরা জানতে পারি, টাঙ্গাইলের মধুপুরের রক্তিপাড়া এলাকায় আছি।’
তিনি আরো জানান,স্থানীয় বাসিন্দারা আমাদের উদ্ধার করেছেন। রক্তিপাড়া জামে মসজিদের ইমাম আমাকে নাশতাও করিয়েছেন।’
এদিকে খবর পেয়ে কুষ্টিয়া থেকে মধুপুরে আসেন ঈগল পরিবহনের ব্যবস্থাপক আয়নাল হোসেন। গাড়িটির চালক ও সহযোগীদের বরাত দিয়ে তিনি জানান, ‘মির্জাপুরের পাকুল্লা এলাকার একটি ফাঁকা মাঠে বাসটি ঘুরিয়ে টাঙ্গাইলের দিকে নিয়ে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে বাসটিকে ময়মনসিংহের মহাসড়কের মধুপুরের দিকে নেয় ডাকাতেরা।’
বাসের নারী যাত্রী কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানার তারাগুনিয়া গ্রামের শিল্পী বেগম জানান ‘আমি আমার অসুস্থ মেয়েকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছিলাম। আমাদের সবাইরে হাত, মুখ, চোখ বাইন্দা ডাকাতরা সব লুট কইরা নিছে। আমার স্বামী পিয়ার আলিকে ছুরি দিয়ে আঘাত করছে। আমার কাছ থিকা ৩০ হাজার টাকা নিয়া গেছে।’ ওই বাসে থাকা অন্য নারী যাত্রীরা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে জানান তিনি।
বাসটিতে করে বেসরকারি চাকরিজীবী নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা আব্দুর রশিদ নাটোর থেকে বাড়ি যাচ্ছিলেন অসুস্থ মাকে দেখার জন্য। সঙ্গে ছিল বেতনের ২২ হাজার ৮০০ টাকা। এর মধ্যে ১০০ টাকা রেখে বাকি পুরো টাকাই ডাকাতেরা নিয়ে গেছে বলে জানান তিনি।
সংবাদ পেয়ে মধুপুর থানা-পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। গাড়িতে থাকা দেশীয় অস্ত্র উদ্ধারের কথা স্বীকার করেছেন মধুপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) এনামুল হক।
বুধবার বিকেল ৫টায় ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ডিবি পুলিশের একটি দল তদন্তকাজ চালাচ্ছে। পুলিশের সহযোগিতায় একদল উদ্ধারকর্মী বাসটি উদ্ধার করছেন। টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে থানায় এসে বাসযাত্রী ও সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। এ সময় ময়মনসিংহ থেকে আসা ডিএনএ পরীক্ষাগারের কর্মীদের থানায় অবস্থান করতে দেখা গেছে।
এ বিষয়ে মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাজহারুল অমিন বলেন, ডাকাতদল যাত্রীদের মালামাল লুটের পর নারীযাত্রীকে ধর্ষণ করেছে। ভুক্তভোগীকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় এক যাত্রী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।
ওসি আরও জানান, জড়িতদের গ্রেপ্তারের জোর চেষ্টা চলছে। বাস চালক ও হেলপারকেও পিটিয়ে আহত করে বেঁধে রেখে যাত্রীদের সর্বস্ব লুট করে তারা।
পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সারের আর্থিক সহায়তা ছিনতাইয়ের শিকার যাত্রীদের প্রত্যেকের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।