একতার কণ্ঠঃ সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে আলু, পেঁয়াজ ও ডিম বিক্রি এবং মূল্য তালিকা না থাকায় টাঙ্গাইলে ৭টি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানকে অর্থদণ্ড করা হয়েছে। জাতীয় ভোক্তা অধিকারের প্রশাসনিক ব্যবস্থায় অর্থদণ্ডপ্রাপ্ত দোকানগুলো হচ্ছে- মেসার্স আলম ট্রেডার্স, আলী আজম ট্রেডার্স, মেসার্স বেল্লাল হোটেল ও একটি নাম বিহীন ডিমের দোকান।
শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিনব্যাপি টাঙ্গাইল পৌর শহরের পার্ক বাজারের পাইকারী দোকানে অভিযান চালিয়ে ৪টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এবং একই বাজারে দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খায়রুল ইসলাম অভিযান চালিয়ে ৩ টি দোকানে জরিমানা করেন।
টাঙ্গাইলের জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শিকদার শাহীনুর আলম জানান, সরকার ডিম, আলু ও পেঁয়াজের দাম নির্ধারিত করে দেওয়ার ঘোষণা এখনও মাঠ পর্যায়ে কার্যকর হয়নি। তবে, ডিমের দাম সরকার নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। বাজার তদারকির ফলে বেশিরভাগ দোকানে পণ্যের মূল্য তালিকা ঝুলানো হয়েছে।
তিনি আরও জানান, শনিবার শহরের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার পার্ক বাজারের পাইকারী দোকানে তদারকিমূলক অভিযানে প্রশাসনিক ব্যবস্থায় ৪টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়। এ সময়ে সিনিয়র কৃষি বিপনন কমকর্তার কার্যালয়ের প্রতিনিধি ফারুক আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। অভিযানে জেলা পুলিশ সহযোগিতা করে।
অপরদিকে, শহরের পার্ক বাজারে বেশি দামে আলু, পেঁয়াজ ও ডিম বিক্রি করায় শনিবার দুপুরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খায়রুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে ৩ জন ব্যবসায়ীকে ৩ হাজার ৫শত টাকা জরিমানা করেছেন।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলায় কবির হোসেন নামে এক ব্যক্তির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার(১৬ সেপ্টেম্বর) ভোরে উপজেলার সংগ্রামপুর ইউনিয়নের চৈথট্ট বটতলী বাজারে একটি ভ্যান চার্জ দেওয়ার গ্যারেজ থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত কবির উপজেলার সংগ্রামপুর ইউনিয়নের ধুপা খাগরাটা গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে। সে পেশায় একজন ভ্যানচালক।
এ নিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় টাঙ্গাইলের পৃথক পৃথক স্থান থেকে চারটি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতিও প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।
ঘাটাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ লোকমান হোসেন জানান জানান, একটি ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর বিস্তারিত জানা যাবে। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটি আত্মহত্যা।
এদিকে শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) জেলার ভুঞাপুরে প্রবাসীর স্ত্রী’র মরদেহ ঘরের বক্স খাটের ভিতর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনার পর স্বামী মোস্তাক পালিয়েছে। উদ্ধার হওয়া প্রবাসীর স্ত্রী মুনিয়া ইসলাম (৩২) গোপালপুর উপজেলার নলীন এলাকার নুরুল ইসলাম খানের মেয়ে এবং একই উপজেলার বাগুয়াটা গ্রামের আজমত আলীর ছেলে ব্রুনাই প্রবাসী মোস্তাকের স্ত্রী।
একই দিন ভূঞাপুরে ঘর থেকে সুলতানা সুরাইয়া(৬৫) নামের এক বৃদ্ধার গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সুলতানা সুরাইয়া ইংরেজি দৈনিক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকার নিউজ এডিটর আবু সায়েম আকন্দের মা এবং পশ্চিম ভূঞাপুর এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিম আকন্দের স্ত্রী। বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাতে পৌরসভার পশ্চিশ ভূঞাপুর এলাকার নিজ বাড়ি থেকে ওই বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার করা হয়।
ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আহসান উল্লাহ বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে- একদিন আগে তাকে হত্যা করে ফেলে রেখে গেছে দৃষ্কৃতিকারীরা। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়া জানান, জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে পৌরসভায় জমি বুঝে পাওয়ার জন্য একটি আবেদন করে খাইরুল। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে শুক্রবার সকালে তিনিসহ পৌরসভার সার্ভেয়ারসহ দায়িত্বপ্রাপ্তরা জমি পরিমাপ করতে যান। এ সময় কিছু বুঝে ওঠার আগেই মোতালেব নামের এক ব্যক্তির নেতৃত্বে পৌরসভার লোকজনদের উপর হামলা করে এবং মরিচের গুড়া ছিটিয়ে দেয়। এ সময় হামলাকারিরা খায়রুলকে ছুরিকাঘাত করলে তার পেট পুরোটা কেটে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলায় কবির হোসেন (২৭) নামে এক অটোভ্যান চালকের রহস্য জনক মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর)ভোর ৭ টায় উপজেলার সংগ্রামপুর ইউনিয়নের চৈথট্ট বটতলী বাজারে একটি ভ্যান চার্জ দেওয়ার গ্যারেজ থেকে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি )মোহাম্মদ লোকমান হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত কবির উপজেলার সংগ্রামপুর ইউনিয়নের ধুপা খাগরাটা গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে। সে পেশায় একজন অটোভ্যান চালক। তার দুটি পিকআপ গাড়িও আছে।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, কবির সহ আরোও তিন অটোভ্যান চালক মিলে স্থানীয় চৈথট্ট বটতলী বাজারে একটি গ্যারেজে প্রতিরাতে ভ্যান চার্জ দেন। ঐ চারজন চালকের মধ্যে একজন করে ভ্যানচালক ঐ গ্যারেজে প্রতিরাতে পাহারায় থাকতেন। শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর)রাতে পাহারার পালা ছিল কবিরের। রাতে ভ্যান চার্জ দিয়ে গ্যারেজে ছিলেন কবির ।
ঐ গ্যারেজের একজন ভ্যান চালক জাবির হোসেন মুরগির ট্রিপ দেওয়ার জন্য রাতে বাহিরে ছিলেন। পরে শনিবার দিবাগত রাত ৪ টায় ভ্যান চার্জ দেওয়ার জন্য ঐ গ্যারেজে গেলে কবিরের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান তিনি। পরে কবিরের পরিবার কে খবর দিলে তারা পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে লাশ থানায় নিয়ে যায়।
এ ঘাটাইল ঘাটাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ লোকমান হোসেন জানান , একটি ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও জানান,ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর বিস্তারিত জানা যাবে। তবে প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটি আত্মহত্যা ।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে মুনিয়া ইসলাম (৩২) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে ভূঞাপুর থানা পুলিশ।
শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে ভূঞাপুর পৌর শহরের ঘাটান্দি গ্রামের গণেশ মোড় নামক এলাকায় জহুরুল ইসলামের পাঁচ তলার বাসার তিন তলায় একটি ভাড়া বাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
মুনিয়া পাশ্ববর্তী গোপালপুর উপজেলার নলিন বাজারের নুরল ইসলামের মেয়ে এবং তার স্বামী মোস্তাক আহমেদ একই উপজেলার বাগুয়াটা গ্রামের আজমত আলীর ছেলে। তাদের দাম্পত্য জীবনে আল মাসুদ (১০) এবং নবীন (৪) বছরের দুইটি ছেলে সন্তান রয়েছে। তারা গণেশ মোড় এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতো। এ ঘটনায় আল মাসুদ ও নবীনের প্রবাস ফেরত বাবা মোস্তাক আহমেদ পলাতক রয়েছেন।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মোস্তাক আহমেদ ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে ব্রুনাই থেকে দেশে ফিরেন। তারপর থেকেই বিভিন্ন সময়ে তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ হতো। দুই ছেলের একজন তার খালার বাসায় ছিল।
বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাতে এক রুমে ছেলেকে ঘুমিয়ে রেখে অন্য রুমে স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করার পর মরদেহ বক্স খাটের নিচে রেখে শুক্রবার ভোরে বাসার মুল দরজায় তালা ঝুলিয়ে দিয়ে পালিয়েছে মোস্তাক। সকালে ছেলেটা ঘুম থেকে উঠে ডাকচিৎকার করলেও আশপাশের কেউ কোন ভাড়াটিয়া এগিয়ে যায়নি। পরে বাসার কেয়ারটেকার বাসার দরজা খুলে দেয়।
এদিকে, মুনিয়া ইসলামের খোঁজ না পেয়ে বাসার বিভিন্ন রুমে খোঁজাখুঁজি করতে থাকে স্বজনরা। একপর্যায়ে ছোট ছেলের বক্স খাটের নিচে দেখতে বলে। পরে বক্সখাটের পাতাটন খুলে মুনিয়ার মরদেহ দেখতে পায়। স্বজনদের ধারণা, মোস্তাক তার স্ত্রী মুনিয়া ইসলামকে গলা টিপে বা শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে।
মুনিয়া ইসলামের ভাই আমিনুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পারিবারিক ঝামেলা চলছিল স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে। পরে বড় বোন নাসরিন আক্তার কয়েকদিন আগে দুইজনকে বুঝিয়ে মিমাংসা করে দিয়েছিল। এরপর আর কিছু জানি না। সন্ধ্যায় খবর পেলাম বোনের মরদেহ বাসার বক্স খাটের নিচে রেখে দেওয়া হয়েছে। ওর স্বামী মোস্তাক পালিয়েছে। বোনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মরদেহ বক্স খাটের নিচে রেখে পালিয়েছে ঘাতক মোস্তাক। তার শাস্তি চাই।
এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আহসান উল্লাহ্ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, মরদেহের সুরতহাল শেষে মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। মুনিয়া ইসলামের স্বামী মোস্তাক আহমেদ ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে। এনিয়ে তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলে জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে শালিশি বৈঠকে খায়রুল ইসলাম (৪২) নামের এক যুবকের ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর,সকালে টাঙ্গাইল পৌর এলাকার কোদালিয়ায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত খায়রুল সদর উপজেলার করটিয়া ইউনিয়নের নগর জালফৈ এলাকার মো.জিন্নত আলীর ছেলে।
টাঙ্গাইল পৌরসভার মহিলা কাউন্সিলর মোছাম্মৎ বিউটি বেগম জানান, জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে পৌরসভায় জমি বুঝে পাওয়ার জন্য একটি আবেদন করেন খায়রুল ইসলাম । ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে শুক্রবার সকালে পৌরসভার লোকজন জমি মাপতে গিয়ে দুইপক্ষ নিয়ে শালিসি বৈঠক বসে।
তিনি আরও জানান, শালিসি বৈঠকে হঠাৎ কিছু বুঝে উঠার আগেই মোতালেব নামের এক ব্যক্তির নেতৃত্বে পৌরসভার লোকজনদের উপর হামলা করে এবং মরিচের গুড়া ছিটিয়ে দেয়। একপর্যায়ে হামলাকারিরা অভিযোগকারী খায়রুল ইসলামকে ছুরিকাঘাত করে। পরে আহত অবস্থায় খায়রুলকে উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ প্রসঙ্গে টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মুহাম্মদ আবু ছালাম (পিপিএম) জানান, এ ঘটনায় ডলি খানম নামের এক নারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার হাত কেটে যাওয়ায় তাকে পুলিশ পাহারায় টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।লাশ ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।
তিনি আরও জানান, এ ব্যাপারে এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তবে পুলিশি কার্যক্রম অব্যাহত আছে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে ঘর থেকে সুলতানা সুরাইয়া (৬৫) নামের এক বৃদ্ধার গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শুকবার (১৫ সেপ্টেম্বর) উদ্ধার হওয়া মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করেছে পুলিশ।
সুলতানা সুরাইয়া ইংরেজি দৈনিক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকার নিউজ এডিটর আবু সায়েম আকন্দের মা ও পশ্চিম ভুঞাপুর এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিম আকন্দের স্ত্রী।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দিবাগত মধ্যরাতে পৌরসভার পশ্চিশ ভূঞাপুর এলাকার নিজ বাড়ি থেকে ওই বৃদ্ধার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয়রা জানায়, পশ্চিম ভূঞাপুর এলাকায় একাই বসবাস করতেন হত্যাকাণ্ডের শিকার নারী সুলতানা সুরাইয়া। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রতিবেশি ও পরিবারের সদস্যরা ব্যবহৃত ফোন বন্ধ পেয়ে বাড়িতে গিয়ে ঘরের লাইট জ্বালানো ও ফ্যানের শব্দে সন্দেহ হওয়ায় গেট টপকে ঘরে উঁকি দেয়। এ সময় ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকা তার গলাকাটা নিথর মরদেহ দেখতে পায়।
নিহতের ছেলে ও দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের নিউজ এডিটর আবু সায়েম আকন্দ বলেন, মা একাই থাকতেন বাড়িতে। কারোর সাথে কোন শত্রুতা নেই। মাদকাসক্তরা চুরি করতে এসে এমন ঘটনা ঘটাতে পারে। ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে জড়িতদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।
ভুঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান উল্লাহ জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে একদিন আগে তাকে হত্যা করে ফেলে রেখে গেছে দৃষ্কৃতিকারীরা। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। তদন্ত চলছে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের সখীপুরে বনের ভেতর আমগাছে ঝুলন্ত অবস্থায় নাসিমা খাতুন (৬২) নামে এক বৃদ্ধার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার কাকড়াজান ইউনিয়নের মহানন্দপুর এলাকা থেকে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে।
নিহত বৃদ্ধা ওই এলাকার আবুল হোসেনের স্ত্রী।
পুলিশ জানায়, বুধবার সকালে বাড়ির পাশে বনের ভেতর একটি আম গাছে নাসিমা খাতুনের ঝুলন্ত মরদেহ পাওয়া যায়। স্থানীয়দের খবরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, দীর্ঘদিনের অসুস্থতা ও পারিবারিক কলহের কারণে ওই বৃদ্ধা আত্মহত্যা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম বলেন, এ ঘটনায় সখীপুর থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে তিন যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার(১১ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে সদর উপজেলার করটিয়া চরপাড়া হাটবাইপাস এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- সদর উপজেলার গালা ইউনিয়নের কান্দিলা গ্রামের আব্দুল খলিল দেওয়ানের ছেলে ইয়াছিন দেওয়ান (৩৮), শহরের কোদালিয়া এলাকার আব্দুল জলিলের ছেলে মো. রনি আহমেদ (৩৯) ও ভূঞাপুর উপজেলার টেপিবাড়ি গ্রামের আব্দুল আজিজ ফনির ছেলে মো. শুভ মিয়া (২৯)।
টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়া জানান, গ্রেপ্তারকৃত ইয়াছিন দেওয়ানের বিরুদ্ধে চুরি ও ছিনতাইসহ মোট তিনটি, রনি আহমেদের বিরুদ্ধে ছিনতাই ও মাদকসহ পাঁচটি এবং মো. শুভ মিয়ার বিরুদ্ধে একটি ডাকাতির প্রস্তুতির মামলা রয়েছে।
তিনি আরও জানান,মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাদের টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলে ছিনতাই হওয়া মোটরসাইকেলসহ তিন ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেছে টাঙ্গাইল সদর থানা পুলিশ। সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে টাঙ্গাইল শহরের মুসলিম পাড়া (আবহাওয়া অফিস) থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাদের টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, টাঙ্গাইল শহরের পার দিঘুলীয়া এলাকার কালাচান মিয়ার ছেলে রাসেল গোপা (৩৫), আকুরটাকুর পাড়া এলাকার শামছুল হকের ছেলে জনি (২৩) ও দক্ষিণ কলেজপাড়া এলাকার মৃত স্বপন মিয়ার ছেলে ফেরদৌস হাসান পাপ্পু (২০)।
পুলিশ জানায়, শহরের বেড়াডোমা এলাকার ভাড়াটিয়া জুয়েল মিয়ার কাছ থেকে গত ২৩ আগস্ট সন্ধ্যায় প্যাড়াডাইসপাড়া এলাকার ব্রীজের পাশ থেকে তার মোটরসাইকেলটি তিন ছিনতাইকারীরা দেশীয় অস্ত্র দেখিয়ে ছিনতাই করে। পরে সোমবার জুয়েলের মা জবেদা বেগম বাদি হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে সোমবার দিবাগত রাতে শহরের আবহাওয়া অফিসের পাশ থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়া জানান, মামলার পর পরই আসামীদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত রাসেল গোপার বিরুদ্ধে ডাকাতির প্রস্তুতি, চুরি ও মাদকসহ মোট সাতটি মামলা রয়েছে। এছাড়াও জনির বিরুদ্ধে ডাকাতির প্রস্তুতি, চুরিসহ দুইটি এবং ফেরদৌস হাসান পাপ্পুর বিরুদ্ধে একটি মাদক মামলা রয়েছে।
একতার কণ্ঠঃ সখীপুর উপজেলার দাড়িয়াপুর গ্রামের রঞ্জু মিয়া ও রুপা আক্তারের দুই সন্তানকে ১৭ দিনের ব্যবধানে হারিয়ে পাগলপ্রায় এই দম্পতি। ১৭ দিন আগে তাদের ৫ মাস বয়সী ছেলে রিদওয়ান নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার শোক কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই অপহরণের শিকার হয় তাদের বড় মেয়ে সামিয়া (৯)। দুর্বৃত্তরা ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অডিও বার্তা পাঠানোর দুই দিন পর সামিয়ার গলাকাটা লাশ বাড়ির পাশেই মাটি খুঁড়ে পাওয়া যায়। শোকের ছায়া নেমে এসেছে সারা গ্রাম জুড়েই।
শুক্রবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে দাড়িয়াপুর গ্রামের এক বনের পাশের নালা থেকে মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করা সামিয়া দাড়িয়াপুর (উত্তর) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
সরেজমিনে দেখা যায়, রঞ্জু মিয়ার বাড়িতে অসংখ্য মানুষ ভিড় জমিয়েছে। গ্রামের বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ তাদের প্রতি সমবেদনা জানাতে এসেছেন। ময়নাতদন্ত শেষে শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যার আগে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গ থেকে সামিয়ার লাশ বাড়িতে আনার পর লোকজনের ভিড় আরও বেড়ে যায়।
রঞ্জু মিয়া কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, সবাই আমাকে সান্ত্বনা দিচ্ছে। কিন্তু আমি তো সান্ত্বনা নিতে পারছি না। আমি তো শান্ত হতে পারছি না। আমার কোলে তো আর তারা ফিরে আসবে না। কারা সামিয়াকে অপহরণ করে হত্যা করতে পারে, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এলাকায় মাদকসেবী বেড়ে গেছে। আমার ধারণা, মাদকসেবীরাই আমার মেয়েকে বনের ভেতর ধরে নিয়ে খুন করেছে। যারা আমার মেয়েকে খুন করেছে, তাদের আমি শাস্তি চাই।
দাড়িয়াপুর গ্রামের বাসিন্দা স্কুলশিক্ষক মোজাম্মেল হক বলেন, এমন ঘটনায় এলাকা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সবার এক কথা, এলাকার মাদকসেবীরাই এমন ন্যক্কারজনক ও লোমহর্ষক ঘটনা ঘটিয়েছে। দাড়িয়াপুর উত্তরপাড়া এলাকায় পাকা রাস্তা নেই। কাঁচা রাস্তায় কাদা থাকায় এ গ্রামে পুলিশ আসতে পারে না। চারপাশে বনজঙ্গল। এ পাড়া যেন মাদকসেবীদের অভয়ারণ্য।
সামিয়ার মা-বাবাকে সান্ত্বনা জানাতে স্থানীয় সংসদ সদস্য এডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম (ভিপি জোয়াহের এমপি) শনিবার সন্ধ্যায় ২০-২৫ জন নেতা-কর্মী নিয়ে দাড়িয়াপুরের খোলাঘাটায় আসেন। সেখান থেকে সামিয়াদের বাড়ি পর্যন্ত আধা কিলোমিটার রাস্তায় কাঁদা থাকায় সংসদ সদস্য আর যেতে পারেননি। পরে নিহত সামিয়ার বাবা-মাকে খোলাঘাটায় ডেকে এনে সেখানে তাদেরকে সমবেদনা জানান সংসদ সদস্য। তিনি সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তার করার সময় বেঁধে দেন।
এর আগে দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আলমও সামিয়ার বাড়িতে গিয়ে রঞ্জু-রুপা দম্পতিকে সমবেদনা জানান বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র জানায়, রঞ্জু মিয়া এক যুগেরও বেশি সময় কুয়েতে প্রবাসজীবন কাটিয়ে করোনার সময় দেশে ফেরেন। চার ছেলেমেয়েকে নিয়ে তার ছিল সুখের সংসার। গত বুধবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে সামিয়া বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে প্রাইভেট পড়তে যায়। পড়া শেষে সহপাঠীদের সঙ্গে সে বাড়ি ফিরছিল। পথে একটি দোকানে সহপাঠীরা কেনাকাটা করতে দাঁড়ালে সামিয়া একাই বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়। এদিকে বাড়ি ফিরতে বিলম্ব হওয়ায় মা রুপা আক্তার শিক্ষককে ফোন দিয়ে জানতে পারেন, তার মেয়ে অনেক আগেই বাড়ি চলে গেছে।
পরে মেয়েকে খুঁজতে বের হলে বাড়ির কাছাকাছি একটি স্থানে মেয়ের ব্যবহৃত জুতা পড়ে থাকতে দেখেন রুপা আক্তার। এর কিছুক্ষণ পর রঞ্জু মিয়ার মুঠোফোনে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে ইমোতে একটি অডিও বার্তা দেয় দুর্বৃত্তরা। ওই অডিও বার্তা পাওয়ার ৪৮ ঘণ্টা পর পুলিশ বাড়ির ৪০০ গজ দূর থেকে একটি গহীন বনের পাশে মাটি খুঁড়ে সামিয়ার লাশ উদ্ধার করে।
দাড়িয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সোহেল রানা বলেন, এই ওয়ার্ডে চিহ্নিত ৫০ জন মাদকসেবী রয়েছে। এর মধ্যে ছয়জন মাদক ব্যবসায়ী। তাদের একটি তালিকা পুলিশকে আগেই দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনার পরও পুলিশকে ১০ থেকে ১২ জন মাদকসেবীর নাম দেওয়া হয়েছে। শনিবার বিকেলে পুলিশ ইনভেস্টিগেশন অব ব্যুরো (পিবিআই) তদন্তে এসে তিনজন মাদকসেবীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে টাঙ্গাইল নিয়ে গেছে।
সখীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সালাউদ্দিন জানান, ধারণা করা হচ্ছে, দুর্বৃত্তরা মেয়েটিকে হত্যা করার পর বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে একটি অডিও বার্তা দেয়। এত অল্প সময়ে লাশ এমনভাবে পচে যাওয়ার কথা নয়। উদ্ধার হওয়া গলাকাটা, এক চোখ উপড়ে ফেলা লাশের ধরন দেখে পুলিশ বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে ভাবছে। মাদকসেবীদের নজরে রেখে তদন্ত চলছে। অপরাধীরা শিগগিরই ধরা পড়বে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের (এলডিডিপি) অধীনে দেশি মুরগির ঘর নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেওয়া টাকা উপকারভোগীদের নানা ধরণের ভয়-ভীতি দেখিয়ে নিজে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুকুমার চন্দ্র দাসের বিরুদ্ধে। প্রকল্পের মুরগির ঘর নির্মাণের কাজ চলতি বছরের জুন মাসে শেষ করার কথা থাকলেও এখনো পুরোপুরিভাবে কাজ শুরু করা হয়নি।
রবিবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে এলডিডিপি প্রকল্পের আওতায় উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে কোনো ঘর পাওয়া যায়নি। তবে, প্রকল্পের উপজেলার ফলদা ইউনিয়নের মাদারিয়া এলাকায় তারাকান্দি-ভূঞাপুর আঞ্চলিক সড়কের ওপর মাদারিয়া দেশি মুরগির দল নামে একটি সাইনবোর্ড দেখা যায়। এছাড়া দু’একজন নারী খামারির বাড়িতে সিমেন্টের খুঁটি রাখলেও তা নিম্নমানের। সেগুলো স্থাপন করার আগেই কিছু খুঁটি ভেঙে গেছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের (এলডিডিপি) দেশি মুরগির ঘর নির্মাণের জন্য উপজেলার ৬৭ জন নারী খামারিকে জনপ্রতি ২০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়। এছাড়াও একই প্রকল্পে ভেড়া পালনের জন্য ঘর নির্মাণে ২৮ জনকে টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।
এদিকে, সেই বরাদ্দের টাকা গত জুন মাসের আগেই খামারিদের নিজ ব্যাংক হিসাব নম্বরে জমা করা হয়। প্রকল্পের শর্তে বলা হয়, নির্ধারিত নিয়মে খামারিদের মুরগির ঘর করে নিতে হবে। এজন্য বরাদ্দকৃত অর্থের অতিরিক্ত ব্যয় হলে সংশ্লিষ্ট পিজি সদস্য (খামারি) উক্ত খরচ নিজে বহন করতে সম্মত থাকবেন। পরে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে খামারিদের কাছ থেকে শর্তযুক্ত করে স্ট্যাম্পের মাধ্যমে লিখিত রাখা হয়।
উপজেলার মাদারিয়া গ্রামের পিজি সদস্যরা বলেন, মুরগির ঘর করার জন্য ২০ হাজার টাকা দিয়েছিল অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে। পরে সেই টাকার জন্য কৃষি ব্যাংকে ১ হাজার ১০০ টাকা খরচ করে অ্যাকাউন্ট করেছি। টাকা তুলে আনা হয়েছিল ঘর করার জন্য। কিন্তু উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নিজেই ঘর করে দেবেন বলে টাকা ফেরত দিতে চাপ দেন। পরে প্রকল্পের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার ভয় দেখান। চাপ সৃষ্টি করলে টাকা দিয়ে দেওয়া হয়। তিন মাস অতিবাহিত হলেও এখনো তারা ঘরতো দূরের কথা একটা খুঁটিও পাননি মুরগির খামার করার জন্য।
ফলদা মদনবাড়ী এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নারী পিজি সদস্যরা বলেন, পিজি সদস্যদের অফিসে ডেকে নিয়ে অশ্লীল ভাষায় কথাবার্তা বলেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সুকুমার দাস। এছাড়া মামলার ভয় ও তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার কথা বলে টাকা দিতে চাপ দেন। তিন মাস অতিবাহিত হয়েছে। অথচ এই তিন মাসে মুরগিগুলো অনেক বড় হতো। এখন ঘর পাব কিনা জানি না।
মাদারিয়া দেশি মুরগির দল সমিতির সভাপতি জাহানারা বেগম বলেন, টাকা তোলার জন্য প্রাণিসম্পদ থেকে চেক দেওয়া হয়। পরে টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করি ঘর করার জন্য। কিন্তু আমাদের ঘর করতে দেওয়া হয়নি। প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নিজেই ঘর করার জন্য টাকা ফেরত নিয়েছেন। সমিতির একজনও ঘর পাননি।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের ফলদা ইউনিয়নের মাঠকর্মী আব্দুল কাদের বলেন, ফলদা ইউনিয়নে ৩৮ জন সদস্য রয়েছেন। ঘর নির্মাণের জন্য তাদের চেক দেওয়া হয়। কিন্তু পরবর্তীতে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নিজে ঘর করে দেওয়ার কথা বলে টাকা ফেরত চেয়েছেন। সদস্যরাও টাকা ফেরত দিয়েছেন। তবে ঘর নির্মাণ প্রকল্পের কমিটির একজন সদস্য হলেও এই বিষয়ে আমাকে কিছুই বলা হয়নি। ঘর করে দেবে কিনা, কবে করবে সেটা জানি না।
এলডিডিপির অধীনে দেশি মুরগির ঘর নির্মাণের জন্য বরাদ্দকৃত নিজে নেওয়া ও কাজে অনিয়মের বিষয়টি অস্বীকার করে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুকুমার চন্দ্র দাস বলেন, কোনো সদস্যের টাকা আমি নেইনি। ঘর করার আসবাবপত্র প্রকল্প এলাকায় চলে গেছে।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. রানা মিয়া বলেন, প্রকল্পের মাধ্যমে ঘর নির্মাণের টাকা কর্মকর্তার কাছে রাখার নিয়ম নেই। ঘর করার নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। ঘর নির্মাণে কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতি হয়ে থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলে ভুল চিকিৎসায় মনোরঞ্জন দাস ( ৪৫) নামে এক রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শহরের নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থিত সোনিয়া নাসিং হোমে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
নিহত মনোরঞ্জন দাস ( ৪৫) দেলদুয়ার উপজেলার আটিয়া ইউনিয়নের পিরোজপুর গ্রামের সোরা দাসের ছেলে।
জানা গেছে, মনোরঞ্জন দাস গত ৪ দিন যাবত জ্বরে ভুগছিলেন। শনিবার সকালে চিকিৎসার জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে আনা হয়। সেখানে এক দালালের মাধ্যমে উন্নত চিকিৎসার জন্য সোনিয়া নাসিং হোমে রোগীকে ভর্তি করেন স্বজনরা। নিয়ম অনুযায়ী ইসিজি ও ডায়বেটিস টেষ্ট করানো হয়। রোগীর শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে কর্তব্যরত আবাসিক চিকিৎসক মো. মনিরুল ইসলাম রোগীকে ইনজেকশক পুশ করেন। ইনজেকশক দেওয়ার পরপরই রোগীর শ্বাসকষ্ট আরো বেড়ে যায় ও অবস্থার অবনতি ঘটে। পরে ডাক্তার এক্সরে করার জন্য রোগীকে এক্সরে রুমে নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।
রোগীর শ্যালক বৃন্দাবন ও ভাতিজা জয় দাস বলেন, নিহত মনোরঞ্জনকে প্রথমে টাঙ্গাইল জেলারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন তারা। সেখানে ডাক্তার আসতে দেরি হওয়ায় এক দালালের মাধ্যমে সোনিয়া নাসিং হোমে নিয়ে যান। ক্লিনিকের কর্তব্যরত আবাসিক ডাক্তার মো. মনিরুল ইসলামের তত্বাবধানে চিকিৎসা শুরু হয়। ডাক্তার ইনজেকশন পুশ করার পরপরই রোগীর শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। শ্বাসকরষ্টের বিষয়টি ডাক্তারকে জানালে রোগীকে এক্সরে করার জন্য রুমে নেন, সেখানে মনোরঞ্জনের মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পরে তার প্রেসকিপশনে ঢাকায় রেফার্ড লিখে দেন ডাক্তার।
তারা আরও বলেন, মেডিক্যাল অফিসার মনিরুল ইসলামের ভুল চিকিৎসায় তার বোন জামাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। এর প্রতিবাদ করায় নাসিং হোমের কর্মচারিরা আমাদের উপর চড়াও হয়। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চান তারা।
সোনিয়া নাসিং হোমের ম্যানেজার বাবুল সরকার বলেন, গত চারদিন যাবত জ্বর থাকায় রোগীর প্রেসার কমে যায়। একারনেই তার মৃত্যু হয়েছে। এখানে ভুল চিকিৎসার জন্য মৃত্যু হয়েছে, এটা সঠিক নয়। রোগীর স্বজনদের উপর চড়াও হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন তিনি।
এ বিষয়ে সোনিয়া নাসিং হোমের মেডিক্যাল অফিসার ডা. মনিরুল ইসলাম জানান, রোগীকে মুমুর্ষ অবস্থায় ক্লিনিকে আনা হয়। রোগীর প্রেসার কমে যাওয়ায় তাকে ঢাকায় রেফার্ড করি। রেফার্ড করার পর মৃত্যু হলে আমি কি করবো।