আরমান কবীরঃ টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলা সদরে ডাকাতির ঘটনায় মামলা দায়ের করায় প্রকাশ্যে হামলা ও ক্রমাগত হুমকীতে বাদি ও তার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
এ কারণে অবিলম্বে ডাকাতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে রবিবার (৯ মার্চ) দুপুরে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের অডিটরিয়ামে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বাদী বিএনপি নেত্রী জাহানারা আক্তার।
টাঙ্গাইল জেলা জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সহ-সভাপতি জাহানারা আক্তার সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় তার নাগরপুর উপজেলা সদরের বাড়িতে ডাকাতি সংঘটিত হয়। ডাকাতরা তাকে ও তার ছোট ছেলে জাহিদ হাসানকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মারপিট ও নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নিয়ে যায়। এ বিষয়ে নাগরপুর থানায় মামলা (নং-২, তাং-১/০৩/২০২৫) দায়ের করেন। এদিন তিনি ও তার বড় ছেলে সিরাজ আল মাসুদ ছোট ছেলে জাহিদ হাসানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় যেতে বাড়ি থেকে বের হলেই ৫ থেকে ৬ জনের একদল লোক দেশিয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে তাদের উপর হামলা করে। এ সময় তার বড় ছেলে সিরাজ আল মাসুদ হামলা প্রতিহত করতে গেলে অন্যরা পালিয়ে গেলেও স্থানীয়দের সহযোগিতায় রনক (১৯) নামে একজনকে আটকে ফেলেন। পরে তাকে থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
নাগরপুর উপজেলা জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভানেত্রী জাহানারা আক্তার বলেন, রনককে পুলিশে সোপর্দ করার পর থেকে ডাকাতরা নানা পরিচয়ে নানাভাবে (ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, মোবাইল) হুমকী-ধমকি দিতে থাকে। ইতোমধ্যে থানা পুলিশ উপজেলার সহবতপুর ইউনিয়নের বাবনাপাড়া গ্রামের কিরন মিয়ার ছেলে ফাহাতকে (২০) গ্রেপ্তার করে। এতে ডাকাতরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে হুমকী-ধমকি দিয়ে অতিষ্ঠ করে ফেলেছে। থানা পুলিশকে বিষয়টি অবগত করা হলেও তারা কার্যত বাস্তব কোন পদক্ষেপ নেয়নি।
তিনি জানান, মামলার প্রধান আসামি এসএম মহিউদ্দিন মাহমুদ ওরফে মোহন (তিনটি মামলার আসামি) প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার না করায় তিনি নিজে এবং অন্যদের সহযোগিতায় গুলি করে মেরে লাশ গুম করাসহ নানা হুমকী-ধমকি দিচ্ছেন। তাদের ক্রমাগত হুমকীতে ভীত হয়ে তিনি ও তার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এ বিষয়ে পুলিশের অধিক কর্মতৎপরতার পাশাপাশি প্রধান আসামিসহ অন্যদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে তার সঙ্গে জেলা জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভানেত্রী নিলুফার ইয়াসমিন, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রক্সি মেহেদী, দেলদুয়ার উপজেলা মহিলা দলের সভানেত্রী রেবেকা পারভিনসহ পরিবারের সদস্য ও দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি সাহাবউদ্দিন মানিক, সাধারণ সম্পাদক কাজী জাকেরুল মওলাসহ জেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিণ্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
আরমান কবীরঃ ছাত্র প্রতিনিধি ও সমন্বয়ক পরিচয়ে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলামের ৬ তলা বিশিষ্ট একটি ভবন দখল করে ১৭ জন মানসিক ভারসাম্যহীন রোগীকে আবাসনের চেষ্টা করেছেন মারইয়াম মুকাদ্দাস মিষ্টি। এ ঘটনায় শনিবার (৮ মার্চ) রাতে মুচলেকার মাধ্যমে ক্ষমা চেয়ে ছাড়া পান তিনি।
রবিবার (৯ মার্চ) দুপুরে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট রুহুল আমিন শরিফ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে শনিবার (৮ মার্চ) রাতে বাড়ি দখলের খবর পেয়ে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. রুহুল আমিন শরিফের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী যৌথভাবে এ অভিযান পরিচালনা করে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বাসাটি দখলমুক্ত করতে সক্ষম হন।
মুচলেকায় মারইয়াম মুকাদ্দাস মিষ্টি বলেন, আমি আইনি অধিকার ব্যতিরেকে অন্যের ব্যক্তিগত বাড়িতে মানসিক ভারসাম্যহীন ১৭ জন নারী-পুরুষকে আবাসনের চেষ্টা করে অপরাধ করেছি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমার পোস্টের কারণে ক্ষেত্র বিশেষে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হয়েছে তার দায় আমার ওপর বর্তায়। আমি আমার নেতিবাচক ও বে-আইনি কৃতকর্মের জন্য মানবিক বিবেচনায় ক্ষমাপ্রার্থী। ভবিষ্যতে সামাজিক অস্থিরতা তৈরি হয় এমন ফেসবুক পোস্ট করা এবং ব্যক্তিগত বা সরকারি সম্পদ দখল বা ভাঙচুর করাসহ অন্য কোনো প্রকার অপরাধে লিপ্ত হব না। আমি প্রদত্ত মুচলেকা ভঙ্গ করলে প্রচলিত আইনে আমার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিলে তার বিপরীতে আমার কোনো আপত্তি গ্রহণযোগ্য হবে না।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. রুহুল আমিন শরিফ বলেন, মারইয়াম মুকাদ্দাস মিষ্টি নামে এক নারী সাবেক সংসদ সদস্যের বাসাটি অবৈধভাবে দখল করে মানসিক ভারসাম্যহীন ১৭ জন নারী-পুরুষকে আবাসনের চেষ্টা করে। পরে তাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে নেওয়া হয়। বাড়িটি কয়েক ঘন্টার মধ্যে অবৈধ দখলমুক্ত করা হয় এবং মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিদের উদ্ধার করা হয়। তাদেরকে সরকারের ব্যবস্থাপনায় স্থায়ীভাবে পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, অভিযুক্ত নারী এ ধরণের কর্মকাণ্ড করে অপরাধ করেছেন মর্মে মুচলেকা দিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের অপরাধ করবেন না মর্মে প্রত্যয়ন দেন। মুচলেকায় তার স্বামীসহ মোট ৫ জন সাক্ষী স্বাক্ষর করেন। বিশ্ব নারী দিবস ও আত্মশুদ্ধির মাস রমজান বিবেচনায় ভুল শুধরে নেওয়ার একটি সুযোগ দিতে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এরূপ পোস্ট করলে এবং সরকারি বা বেসরকারি সম্পদ ভাঙচুর বা দখলসহ অন্য কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত হলে আইনগভাবে অধিকতর কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অপরদিকে, জেলার বেশ কয়েকজন ছাত্র প্রতিনিধি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ঘটনার বিষয়ে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেন। তারা মিষ্টির কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই বলে বিবৃতি প্রদান করে। পাশাপাশি চাঁদাবাজি ও অবৈধ দখলের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানান তারা।
এদিকে, ঘটনাস্থল শহরের ছোট কালিবাড়ীর এলাকাবাসী জবরদখলের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন এবং ভবিষ্যতে এই ধরণের কর্মকাণ্ড ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিহত করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
আরমান কবীরঃ টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) জোয়াহেরুল ইসলামের বাড়ি দখল করে ‘পাগলের আশ্রম’ চালু করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক পরিচয়ধারী এক তরুণী।
শনিবার (৮ মার্চ) দুপুরে প্রায় ২৫ জন ছিন্নমূল মানসিক প্রতিবন্ধীকে নিয়ে এই আশ্রম চালু করেন তিনি।
ওই তরুণীর নাম মারইয়াম মুকাদ্দাস ওরফে মিষ্টি। তিনি নিজেকে আল মুকাদ্দাস ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সংগঠক হিসেবে পরিচয় দেন। তিনি বলেন, বাসাইল উপজেলার ফুলকি ইউনিয়নের যশিহাটি গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মাজহারুল ইসলামের মেয়ে তিনি। স্নাতক করেছেন ঢাকার শান্তা মারিয়াম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ে। কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত নন বলে দাবি করেন তিনি।
শনিবার দুপুর ১২টার দিকে জোয়াহেরুল ইসলামের শহরের ছোট কালিবাড়ী এলাকার বাড়িটি দখলের সময় সেখানে সাবেক এই সংসদ সদস্যের পরিবারের কেউ উপস্থিত ছিলেন না।
বেলা তিনটার দিকে শহরের ছোট কালিবাড়ী এলাকায় জোয়াহেরুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ছয়তলা ভবনের নিচতলায় বিভিন্ন বয়সের ১১ জন মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষ অবস্থান করছেন। আরও লোকজন ছিলেন ভবনটির তৃতীয় তলায়। সেখানে অবস্থান করছিলেন মারইয়াম মুকাদ্দাস নামের ওই তরুণী। এসময় তিনি বলেন, তার এই আশ্রম সদর উপজেলার খেজুরতলা এলাকায় ছিল। শনিবার দুপুরে জোয়াহেরুল ইসলামের বাড়িতে এটি স্থানান্তর করা হলো। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ নেতারা জনগণের টাকা লুটপাট করে বাড়িঘরসহ এসব সম্পদ করেছিলেন। তাই এগুলো এখন জনকল্যাণে ব্যবহার করা হবে।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ৬ ফেব্রুয়ারি মারইয়াম মুকাদ্দাসের নেতৃত্বে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান খান, সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম, সাবেক পৌর মেয়র জামিলুর রহমানের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
দুই দিন আগে মারইয়াম মুকাদ্দাস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে লিখেছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলামের বাসা পাগলের আশ্রম, প্রয়াত সভাপতি ফজলুর রহমান খানের বাসা প্রতিবন্ধীদের আশ্রম, সাবেক এমপি তানভীর হাসান ওরফে ছোট মনিরের বাসা অ্যানিমেল শেল্টার, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুজ্জামান সোহেলের বাসা বৃদ্ধাশ্রম, সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের বাসা এতিমখানা এবং আওয়ামী লীগ অফিস পাবলিক টয়লেট করা হবে। সেখানে তিনি আরও লিখেছিলেন, ‘আরও নাম সাজেস্ট করুন, তথ্য দিন। একেক করে সমাজের ও টাঙ্গাইলের উন্নয়নের কাজে লাগুক আওয়ামী লীগের অবৈধ সম্পদ।’
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জোয়াহেরুল ইসলাম আত্মগোপনে চলে গেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে দুটি হত্যাসহ অর্ধ ডজন মামলা আছে। তাঁর বাড়ি দখলের বিষয়ে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাঁকে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে তাঁর মেয়ে জাকিয়া ইসলাম বলেন, ঘটনার সময় তাঁদের বাড়িতে কেউ ছিলেন না। তাঁদের পরিবারের প্রায় সবার নামেই মামলা থাকায় বাড়িতে থাকছেন না। তিনি আরও বলেন, ‘দেশে আইন নেই, প্রশাসন নেই, তাই এমন অরাজকতা হচ্ছে।’
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের টাঙ্গাইল শাখার সদস্যসচিব আবু আহমেদ শেরশাহ বলেন, ‘মারইয়াম মুকাদ্দাস বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটিতে নেই। ওনার কোনো কর্মের দায় আমরা নেব না। আন্দোলনের সময় অনেকেই সক্রিয় ছিল।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের টাঙ্গাইল শাখার আহ্বায়ক আলামিন তাঁর ফেসবুকে ওয়ালে লিখেছেন, মিষ্টি আপুর বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের বিষয়ে আমি অবগত নই; এবং আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি, আমার সহযোদ্ধারাও অবগত নন। তাঁর কর্মকাণ্ডের প্রতি আমার কোনো ধরনের সমর্থন নেই।
টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভীর আহম্মেদ বলেন, এ বিষয়ে তাঁর কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। তিনি লোকমুখে শুনেছেন।
আরমান কবীরঃ টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে হামলা-মামলা, নির্যাতন ও হয়রানীর অভিযোগ করেছেন সংখ্যালঘু পরিবারের এক নারী।
শনিবার (৮ মার্চ) দুপুরে শহরের একটি চাইনিজ রেস্তোরায় সাংবাদিক সম্মেলনে উর্মিতা সাহা কলি নামের এক নারী অভিযোগ করেন, হামলা-মামলা থেকে রেহাই পেতে স্বামীকে তালাক দেয়ার পরেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেননা তিনি।
লিখিত বক্তব্যে উর্মিতা সাহা কলি জানান, টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে প্রায় ১৪ বছর আগে সোনারতরী নামের একটি এনজি’র কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১৪ সালে তার স্বামী পিন্টু দে সেখানে কর্মী হিসেবে যোগদান করেন। মির্জাপুরের সাবেক সংসদ সদস্য খান আহমেদ শুভ’র ঘনিষ্ট ও আশির্বাদপুষ্ট মো. জাহাঙ্গীর আলম হলেন এই সংস্থার নির্বাহী পরিচালক। সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু গত প্রায় এক বছর আগে গ্রাহকদের সঞ্চয়ের প্রায় চার কোটি টাকা সংস্থার একাউন্ট থেকে উধাও হয়ে যায়। এ ঘটনায় আমার স্বামী পিন্টু দের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের মামলা করেন জাহাঙ্গীর আলম।
তিনি জানান, অর্থ লোপাটের বিষয়টি আগেই জানতে পেরে তার স্বামী পিন্টু দে লোপাটের বিষয়ে জাহাঙ্গীর আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সব কিছুই এমপি সাহেব অবগত আছেন। আপনারা মনোযোগ দিয়ে কাজ করুন। এর কিছুদিন পর জানতে পারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে পিন্টু দের নামে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার পর থেকেই পিন্টু বাড়ি ছাড়া হন। তাকে না পেয়ে জাহাঙ্গীর আলমের লোকজন আমার বাড়িতে এসে হুমকি ধামকি দেয়।
তিনি আরও জানান, এসময় তারা আসবাবপত্র ভাংচুর এবং এক পর্যায়ে আমার ১২ বছরের একমাত্র মেয়ে উপমা দে কে অপহরণের চেষ্টাও করে। এ ঘটনার পর এলাকার লোকজন আমাকে নানা ভাবে ভয়ভীতি দেখায়। আমার নামেও মামলা হবে এমন কথাও বলেন অনেকে। এ অবস্থায় কোন কুল কিনারা না পেয়ে আমি স্বামীকে তালাক দেই। কিন্তু তাতেও আমি রেহাই পাইনি। জাহাঙ্গীর আলমের এনজিওর কিছু গ্রাহক ও ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী দিয়ে আমার বাড়িতে মাঝেমধ্যেই হামলা চালায়। বাড়ির কাছে মন্দিরসহ বিভিন্ন স্থানে লাগানো সিসি ক্যামেরা ভেঙ্গে ফেলে। এবং আমাকে মারধর করে। এক পর্যায়ে আমি হামলা ও ভাঙচুরের মামলা দায়ের করি। কিন্তু তাতেও কোন লাভ হয়নি। এরপর আমি থানায় দুইটি সাধারন ডায়েরি করি।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও জানান, প্রায় চার কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় ছয়মাস আত্মগোপনে থাকার পর পিন্টু দে উচ্চ আদালত থেকে জামিন পায়। উচ্চ আদালতের নির্দেশ মোতাকেব গত ১৫ দিন আগে নিন্ম আদালতে হাজির হতে গেলে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা পিন্টুকে আদালত চত্বর থেকে তুলে নিতে চেষ্টা করে। কিন্তু আশপাশের লোকজনের বাঁধার মুখে তারা ব্যর্থ হয়। মামলায় পিন্টু দে কারাগারে রয়েছে। অজ্ঞাত স্থান থেকে জাহাঙ্গীর আলম ও সাবেক সংসদ সদস্যের সন্ত্রাসীরা আমাকে প্রতিনিয়ত হুমকি ধামকি দিচ্ছে। ফলে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি ।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী উর্মিতা সাহা কলি প্রভাবশালীদের হামলা-মামলা, নির্যাতন ও হয়রানীর হাত থেকে রক্ষা পেতে গণমাধ্যম কর্মীদের সহায়তা কামনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে জেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরমান কবীরঃ টাঙ্গাইলে অপহরণের পর বিকাশের মাধ্যমে চাঁদা দাবির অভিযোগে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (৭ মার্চ) দুপুরে তাদের টাঙ্গাইল আদালতে পাঠানো হয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) রাতে শহরের থানাপাড়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এসময় মোমিনুল ইসলাম (৩৩) নামে অপহৃত একজনকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ব্রাহ্মণ কুলিয়া এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে আল আমিন তালুকদার (৩২) ও দেলদুয়ার উপজেলার ডুবাইল গ্রামের মিজান মিয়ার ছেলে কুতুব উদ্দিন রনি (২৮)।
পুলিশ জানায়, অপহৃত মোমিনুল ইসলাম দীর্ঘদিন যাবত একটি ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় কর্মকর্তা হিসেবে টাঙ্গাইল শহরের রেজিস্ট্রি পাড়ায় কর্মরত ছিলেন। এ সুবাদে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে রিয়া মনি নামে এক নারীর সঙ্গে পরিচয় হয় তার। বুধবার (৫ মার্চ) রাতে রিয়া মনি মোমিনুলকে শহরের শান্তিকুঞ্জ মোড়ে ডেকে আনেন। পরে তার সঙ্গে থাকা দুইজন মোমিনুলকে জোরপূর্বক শহরের থানাপাড়ার একটি ফ্ল্যাটে নিয়ে আটকে রেখে মারধর করে। একপর্যায়ে অপহরণকারীরা দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।
পরবর্তীতে তারা বাড়ি থেকে নগদ টাকা নিয়ে আসার জন্য চাপ দেয় পরিবারকে। অপহরণকারীরা মোমিনুল ইসলামের সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে বলে বাড়িতে ফোন করে বিকাশের মাধ্যমে ২০ হাজার টাকা দিতে বলে। পরে মোমিনুলের বাবা মোহাম্মদ আলী প্রথমে বিকাশে পাঁচ হাজার টাকা দেন। পরে তার স্ত্রী বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) বিকাশের মাধ্যমে আরও ১০ হাজার টাকা দেন। বাকি টাকার জন্য তারা মোমিনুল ইসলামকে মারধর ও নির্যাতন করে। এভাবে বিকাশের মাধ্যমে ৪০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। বাকি টাকা দিতে হুমকি দেয় অপহরণকারীরা। বিষয়টি পরিবারের লোকজন পুলিশকে জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মোমিনুল ইসলামকে উদ্ধার করে। এসময় দুইজনকে আটক করা হয়। অন্যরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানবীর আহমেদ জানান, এ ঘটনায় মোমিনুল ইসলাম রাতে বাদি হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। গ্রেপ্তারকৃতদের শুক্রবার দুপুরে টাঙ্গাইল আদালতে পাঠানো হয়েছে। জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
আরমান কবীরঃ টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে দেবরের দায়ের কোপে ভাবি খুন হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্তের মা-বাবা ও চাচাসহ ৬ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ৪ জনকে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বুধবার (৫ মার্চ) বিকেলে উপজেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়নের ইচাইল গ্রামের ভাদিলাপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার ইচাইল গ্রামের ভাদিলাপাড়ার নিমাই সরকারের ছেলে মোটরসাইকেল মেকানিক আনন্দ সরকার বুধবার বিকেলে বাড়ি গিয়ে চাচাতো ভাই রঞ্জিত সরকারের স্ত্রী রাজেশ্বরী সরকারের (৩৬) কাছে দা চান। দা পাওয়ার পর হঠাৎ আনন্দ সরকার বৌদি রাজেশ্বরীকে মাথায় কোপাতে থাকেন। এক পর্যায়ে বাবা নিমাই সরকার, মা মিষ্টি সরকার, চাচা দুলাল সরকার, আরেক বৌদি দিপা সরকার, সুমা সরকার এবং প্রতিবেশী দিগেন সরকারকে কুপিয়ে আহত করা হয়। এদের মধ্যে নিমাই সরকার ও সুমা সরকার বাদে ৪ জনকে কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন আনন্দ সরকারকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। রাজেশ্বরী সরকারের ১৭ বছরের একটি কন্যা ও ৭ মাসের একটি ছেলে রয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আনন্দ সরকার বলেন, আমার মোটরসাইকেলের কিকার ঠিক করতে বৌদির কাছে দা চেয়েছিলাম। দা হাতে নেওয়ার পর মাথায় চক্কর মারে। এরপর কী হইছে আমি জানি না।
মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোশারফ হোসেন জানান, ঘটনার পর আনন্দ সরকারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সুরতহাল শেষে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
সাহান হাসানঃ টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ৯৪ বোতল ফেন্সিডিলসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার (৩ মার্চ) রাতে উপজেলার উয়ার্শী ইউনিয়নের সাফর্তা বৈরাম খানের লেবু বাগান থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, উপজেলার সাফর্তা গ্রামের সেলিম খানের ছেলে মো. রাকিব খান (২৪) ও লালমনিহার জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার পাখাতি গ্রামের মৃত মান্নান মিয়ার ছেলে মো. বাদশা মিয়া (৩৭)।
মির্জাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হাফিজুর রহমান জানান, মাদক বিক্রির গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাতে বৈরাম খানের লেবু বাগানে অভিযান চালায় তারা। এসময় পুলিশকে দেখে গ্রেপ্তার বাদশা মিয়া ও রাকিব খান দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের ধরে ফেলে।
তিনি আরও জানান, বাজারের ব্যাগে ভর্তি ৯৪ বোতল ফেন্সিডিলসহ তাদের হাতেনাতে আটক করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মির্জাপুর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোশারফ হোসেন জানান, মঙ্গলবার গ্রেপ্তারকৃতদের টাঙ্গাইল আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
আরমান কবীরঃ টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার শোলাকুড়ায় সালিশী বৈঠকে পক্ষপাতিত্বের জেরে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে মাইকে ঘোষণা দিয়ে তিন গ্রামবাসী সংঘর্ষে জড়িয়েছে। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সংঘর্ষের সময় স্থানীয় শোলাকুড়া বাজারের ১৮ থেকে ২০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (৩ মার্চ) দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত কয়েক দফায় সংঘর্ষ চলাকালে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়কে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আহতদের উদ্ধার করে কালিহাতী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা যায়, গত শুক্রবার বাংড়া ইউনিয়নের ‘পীরসাব’ বাড়িতে একই ইউনিয়নের মুলিয়া এবং সাকরাইল গ্রামের লোকজনদের সাথে কথা-কাটাকাটি হয়। এ নিয়ে দুই গ্রামের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। বিষয়টি মীমাংসা করতে সোমবার দুপুরে মুলিয়া গ্রামে একটি সালিশী বৈঠকের আয়োজন করা হয়।
ওই সালিশে উপজেলা বিএনপি’র সাবেক আহ্বায়ক শুকুর মাহমুদ বিরোধ মিটিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব নেন।
বৈঠক চলাকালে উপজেলা বিএনপি’র সাবেক আহ্বায়ক শুকুর মাহমুদের পক্ষপাতিত্বমূলক কথার জের ধরে পুনরায় দুই গ্রামবাসীর মধ্যে কথা-কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষে বিএনপি নেতা শুকুর মাহমুদ গুরুতর আহত হন।
আহত হওয়ার খবর তার নিজ গ্রাম সহদেবপুর পৌঁছালে তারাও এসে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এরপর ত্রিমুখী সংঘর্ষে সালিশী বৈঠকে আসা স্থানীয় বিএনপি’র অন্তত ১৫ নেতাকর্মী গুরুতর আহত হন। এ ছাড়া কয়েক ব্যক্তি সামান্য আহত হন। এ সময় শোলাকুড়া বাজারে হামলা চালিয়ে ১৮ থেকে ২০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর এবং দোকানগুলোতে লুটপাট চালানো হয়।
এদিন দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কের তিনদিকে তিন গ্রামবাসী অবস্থান নিয়ে দফায় দফায় ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে।
এসময় ওই মহাসড়কে সকল প্রকার যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সংঘর্ষ চলাকালে বিএনপি নেতাসহ উভয়পক্ষের অন্তত ১৫ থেকে ২০ জন আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়েন্ত্রণে আনে।
এ প্রসঙ্গে কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম ভূঁইয়া জানান, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় তিন গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে থানায় কেউ কোনো অভিযোগ দাখিল করেনি।
আরমান কবীরঃ টাঙ্গাইলের বাসাইলে রাতের আঁধারে গোয়ালঘর থেকে তিনটি গরু চুরির পর জবাই করে মাংস ভাগ করে নিয়ে গেছে চোরেরা।
শনিবার (১ মার্চ) দিবাগত রাতে বাসাইল পৌরসভার কাটাখালীপাড়া এলাকায় এমন ঘটনা ঘটে। বিষয়টি রবিবার (২ মার্চ) সকালে জানাজানি হলে স্থানীয়রা চোরদের এমন কাণ্ডে হতভম্ব হন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শনিবার দিবাগত রাতে বাসাইল পৌরসভার কাটাখালীপাড়া এলাকার আতিকুর রহমান খান রুবেল, ফজলু খান ও গফুর খানের গোয়ালঘর থেকে তিনটি গরু চুরি হয়। পরে সেহরির সময় বিষয়টি টের পান গরুর মালিকরা। সকালে বাসাইল-টাঙ্গাইল আঞ্চলিক সড়কের বাসাইল পশ্চিমপাড়া কবরস্থানের পাশে গরুর ভূরি ও হাড় দেখতে পান স্থানীয়রা। খবরটি তাৎক্ষণিক এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। পরে খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে গরুর রশি দেখে মালিকরা শনাক্ত করেন। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন গরুর মালিকরা। তিনটি গরুর আনুমানিক মূল্য প্রায় তিন লাখ টাকা বলে জানা গেছে।
গরুর মালিক ফজলু খান বলেন, পাশের বাড়িতে গরু চুরি হয়েছে শুনতে পাই। পরে আমার গোয়ালঘরে গিয়ে দেখি সেখানে গরু নেই। পরে অনেক খোঁজাখুঁজি করি। পরে সকালে বাসাইল পশ্চিমপাড়া কবরস্থানের পাশে গিয়ে দেখতে পাই গরু জবাই করে মাংস নিয়ে গেছে চোরেরা।
বাসাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জালাল উদ্দিন বলেন, গরু চুরির পর চোরেরা মাংস ভাগ করে নিয়ে গেছে এমন ঘটনা এই প্রথম শুনলাম। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।
এদিকে, বাসাইল উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মাঝেমধ্যেই গরু চুরির ঘটনা ঘটছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের আরও তৎপর হওয়ার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
আরমান কবীরঃ গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্র্রীয় কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
শনিবার (১ মার্চ) সকালে র্যাব-১৪, সিপিসি-৩ টাঙ্গাইল ক্যাম্পের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া অফিসার) জুয়েল চাকমা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এতথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার গোলচত্বর সংলগ্ন পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার মৃত্যুদন্ডের সাজাপ্রাপ্ত আসামির নাম শাহাদাত হোসেন (৪০)। তিনি টাঙ্গাইল সদর উপজেলার চৌবাড়িয়া গ্রামের ওমর আলীর ছেলে। ২০০২ সালে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যা মামলায় বিচারক তার মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। এর পর থেকে তিনি কারাগারে ছিলেন।
র্যাব জানায়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পতনের সময় দেশের আইন-শৃঙ্খলার নাজুক পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে অন্যান্য বন্দীদের সাথে কয়েদী শাহাদাত হোসেন পালিয়ে যায়।
এ ঘটনাটি সারাদেশে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে পলাতক আসামি শাহাদাত হোসেনকে গ্রেপ্তারে র্যাব-১৪, সিপিসি-৩ টাঙ্গাইল ক্যাম্প গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে এবং আসামির অবস্থান শনাক্তের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করে। পরে দীর্ঘ সাত মাসের অব্যাহত চেষ্টার পর র্যাবের টাঙ্গাইল ক্যাম্পের একটি দল অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃত আসামির বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাকে টাঙ্গাইল সদর থানায় হস্তান্তর করেছে র্যাব।
আরমান কবীরঃ টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলায় ডাকাতদের কবলে পড়েছে শিক্ষা সফরের চারটি স্কুলবাস। মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ভোরে উপজেলার ঘাটাইল-সাগরদীঘি আঞ্চলিক সড়কের লক্ষণের বাধা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ডাকাতরা বাস থেকে নগদ টাকা, স্বর্ণ ও স্মার্টফোন লুট করেছে। এ নিয়ে গত ১০ দিনে এই সড়কে তিনটি ডাকাতির ঘটনা ঘটল।
জানা যায়, ময়মনসিংহ বিভাগের ফুলবাড়িয়া উপজেলার সোয়াইতপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মঙ্গলবার ভোরে চারটি বাস নিয়ে ওই স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবক শিক্ষা সফরের জন্য রওনা দেন নাটোরের গ্রীনভ্যালি পার্কের উদ্দেশে। ভোর সাড়ে ৪টার দিকে বাস চারটি ঘাটাইল উপজেলার ঘাটাইল-সাগরদীঘি আঞ্চলিক সড়কের সাগরদীঘি ইউনিয়নের লক্ষণের বাধা এলাকায় পৌঁছালে তারা ডাকাত দলের কবলে পড়েন। এ সময় সামনের বাসে ছিলেন ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ খলিলুর রহমান। হঠাৎ তিনিসহ অন্যরা খেয়াল করেন সড়কের মাঝ বরাবর গাছের গুঁড়ি। তিনি বুঝে ফেলেন এই কাজ ডাকাতদের। সতর্ক করেন সবাইকে। বন্ধ করে দেওয়া হয় গাড়ির জানালা ও গেট। কিছু বুঝে উঠার আগেই ১০-১২ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আঘাত শুরু করে গাড়িতে। ডাকাতরা পেছনের গাড়ি থেকে তাদের মালামাল লুট করা শুরু করে। এরই মধ্যে তিনি ফোন করেন ৯৯৯ নম্বরে। অল্প সময়ের মধ্যে পুলিশ যায় ঘটনাস্থলে। ততক্ষণে তিনটি গাড়ির যাত্রীদের থেকে মালামাল লুট করা শেষ হয়ে যায়।
সোয়াইতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ খলিলুর রহমান বলেন, ডাকাতরা নগদ টাকা নিয়ে গেছে দেড় লাখ। স্বর্ণ দেড় ভরি। স্মার্টফোন ১০টা। এ ঘটনায় মারধরের শিকার হয়েছেন ওই বিদ্যালয়ের কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর সাখাওয়াত হোসাইন রবিন ও অভিভাবক শহিদুল্লাহ তালুকদার।
সাখাওয়াত হোসাইন রবিন বলেন, আমি ছিলাম দুই নম্বর গাড়িতে। ওই গাড়িতে ছিল শুধু ছাত্রী। ডাকাতরা আমার কাছে থেকে মোবাইল নেওয়ার পর যখন ছাত্রীদের দিকে যাচ্ছিল তখন আমি বাধা দেই। এর ফলে তারা আমাকে দায়ের উল্টো পিঠ দিয়ে আঘাত করে।
ডাকাতদের অস্ত্র ও ভয়ঙ্কর রূপ দেখে গাড়িতে জ্ঞান হারান কৃষি বিষয়ক শিক্ষক আবুল কালাম।
সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী সিনথিয়া আক্তার জানায়, ভয়ে সে অনেক কেঁদেছে। এখনও তার ভয় দূর হয়নি।
ডাকাতির ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে স্থানীয় ইউপি সদস্য লিয়াকত হোসেন বলেন, মাঝে মধ্যেই ওইস্থানে (লক্ষণের বাধা) ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
ঘাটাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রকিবুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার ভোরে ঘাটাইল-সাগরদীঘি সড়কে গাছ ফেলে শিক্ষা সফরে যাওয়ার পথে চারটি স্কুলবাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। যতটুকু জানতে পেরেছি সাতটি মোবাইল ও দুই হাজার ৭০০ টাকা নিয়েছে ডাকাতরা। আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এলাকার লোকদের নিয়ে বৈঠক করেছি। এ ঘটনায় কেউ অভিযোগ দেয়নি।
আরমান কবীরঃ অপারেশন ডেভিল হান্টের অভিযান চালিয়ে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে মো. ইসমাইল হোসেন ওরফে ইকো মিঞা (৩৬) নামে এক যুবলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে ভূঞাপুর থানা পুলিশ।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে টাঙ্গাইল সদর থানার মাধ্যমে টাঙ্গাইল আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ভূঞাপুর থানা পুলিশ।
এর আগে, সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা পৌর শহরের ফসলান্দী এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত ইকো মিঞা উপজেলার অর্জুনা ইউনিয়নের শুশুয়া গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে। তিনি উপজেলার অর্জুনা ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক।
এ ব্যাপারে ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) একেএম রেজাউল করিম বলেন, ইকো মিঞার বিরুদ্ধে টাঙ্গাইল সদর থানায় নাশকতার মামলা থাকায় ডেভিল হান্টের অভিযানে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে টাঙ্গাইল সদর থানায় সোপর্দ করলে টাঙ্গাইল থানা পুলিশ আদালতে তাকে প্রেরণ করে।