একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলে সহপাঠী সুমাইয়া হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন টাঙ্গাইলের কালিহাতীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
রোববার (৭ নভেম্বর) দুপুরে শামসুল হক কলেজ মোড় এলাকায় আয়োজিত মানববন্ধনে এলেঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয় ছাড়াও শামসুল হক কলেজ, লুৎফর রহমান মতিন কলেজ, এলেঙ্গা বিএম কলেজ, জিতেন্দ্রবালা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আড়াইহাজার শিক্ষক, শিক্ষার্থী অংশ নেন।
এসময় বক্তব্য দেন- এলেঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মোল্লা, সরকারি শামসুল হক কলেজের অধ্যক্ষ আনোয়ারুল কবীর, লুৎফর রহমান মতিন মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম, এলেঙ্গা বিএম কলেজের অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম, এলেঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমুল করিম তালুকদার, জিতেন্দ্রবালা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রদান শিক্ষক গোবিন্দ চন্দ্র সাহা ও নিহত সুমাইয়ার চাচা ফিরোজ মিয়া প্রমুখ।
একাধিক ছাত্রী বলেন, এ হত্যাকাণ্ডে যারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যারা জড়িত, তাদের চিহ্নিত করতে হবে। এছাড়া তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। অপরদিকে নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ, ইভটিজিং মুক্ত শিক্ষাঙ্গন এবং রাস্তাঘাটে মেয়েদের নিরাপত্তার দাবি জানান তারা।
নিহত সুমাইয়ার চাচা ফিরোজ মিয়া জানান, এ হত্যাকাণ্ড একা ঘটানো সম্ভব হয়নি। পুলিশ এ ঘটনায় কয়েকজনকে আটকও করেছিল। আমরা মামলা করার পরও তাদের আদালতে পাঠায়নি। প্রভাবশালী মহলের ইন্ধনে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাদেরও বিচার দাবি করছি। আমরা ধারণা করছি এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা জড়িত।
এলেঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির সভাপতি আনোয়ার হোসেন মোল্লা জানান, এলেঙ্গা ক্লাব থেকে কিশোর গ্যাংয়ের সৃষ্টি। এ কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা সুমাইয়াকে হত্যা করেছে। কিশোর গ্যাং তৈরিতে যারা অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করেছে তাদেরও বিচার চাই। যে ছুরি দিয়ে সুমাইয়াকে হত্যা করা হয়েছে সেই ছুরি হাতে নিয়ে ৭২ ঘণ্টা আগে কিশোর গ্যাংয়ের প্রধান মনির টিকটক করেছে। ভিডিওটি প্রশাসনের সব গোয়েন্দা সংস্থার হাতে আছে। এছাড়াও ওই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা হয়েছে। এলেঙ্গা শিক্ষা নগরীকে যারা অরক্ষিত বানাতে চায়, সেই হত্যাকারীদের ফাঁসি দাবি করছি। এই ফাঁসির মধ্য দিয়ে এলেঙ্গা আবার শান্তির নগরীতে পরিণত হবে।
এ বিষয়ে কালিহাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা আজিজুর রহমান জানান, মামলাটি তদন্তাধীন। তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে মনির ছাড়া হত্যাকাণ্ডে কিংবা পরিকল্পনায় আর কেউ জড়িত থাকলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২৭ অক্টোবর সকালে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গার কলেজ পাড়া এলাকার খোকনের নির্মাণাধীন বাড়ির নীচতলার সিঁড়িকোঠা থেকে সুমাইয়ার মরদেহ ও আহত অবস্থায় মনিরকে উদ্ধার করা হয়। নিহত সুমাইয়া কালিহাতী পালিমা গ্রামের ফেরদৌস আলমের মেয়ে। পরদিন সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় মনিরের মৃত্যু হয়। বৃহস্পতিবার ভোরে ফেরদৌস আলম বাদী হয়ে মনিরকে আসামি থানায় মামলা করেন।