কারাগারে মায়ের মৃত্যু, বিচারের দাবি তিন সন্তানের


১২:১৩ পিএম, ১ জুন ২০২২
কারাগারে মায়ের মৃত্যু, বিচারের দাবি তিন সন্তানের - Ekotar Kantho

একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইল কারাগারে সুচিকিৎসার অভাবে নাদীয়া জাহান শেলী নামে এক নারী কয়েদীর মৃত্যুর অভিযোগ তুলেছেন পরিবারের সদস্যরা। এ ঘটনায় জেল সুপার মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন ও ডেপুটি জেলারসহ অজ্ঞাতনামা অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন মৃতের স্বামী মো. মিনহাজ উদ্দিন।

মঙ্গলবার (৩১ মে) সন্ধ্যায় টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবে আসামিদের বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেন ওই কয়েদীর পরিবার।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ওই নারীর মেয়ে সোনালী আক্তার বলেন, তার মা নাদীয়া জাহান শেলী ডায়াবেটিক ও কিডনি রোগে আক্রান্ত ছিলেন। জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সখীপুর আমলী আদালতে চলমান সি.আর ৩১১/২০২১ এর মামলায় তিনি ছিলেন ২নং আসামি। ৪ এপ্রিল অসুস্থ অবস্থায় তার মা অন্য একটি মামলায় সখীপুর আমলি আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিন প্রার্থনা করেন। জামিনের জন্য আদালতে শারীরিক অসুস্থতার সকল প্রতিবেদন (রিপোর্ট) দাখিল করার পরও বিচারক তাকে কারাগারে পাঠান। নাদীয়া জাহান শেলী অসুস্থ হওয়ায় তার সুচিকিৎসার জন্য জেল সুপারকে নির্দেশ দেন বিচারক।

20230826-141431

কিন্তু জেল সুপার মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন ও ডেপুটি জেলারসহ অজ্ঞাতনামা অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তার চিকিৎসার সু ব্যবস্থা না করে আদালতের নির্দেশ অমান্য করে তাকে সাধারণ কয়েদী হিসেবে জেনারেল ওয়ার্ডে রাখেন। চিকিৎসা না পেয়ে তিনি কারাগারে খুবই কষ্ট করেছেন। অবশেষে গত ৮ এপ্রিল রাতে তিনি (শেলী) চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুবরণ করেন।

সোনালী আরও জানান, ১৯ এপ্রিল তার বাবা মিনহাজ উদ্দিন বাদী হয়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট টাঙ্গাইল সদর থানা আমলী আদালতে বাংলাদেশ দণ্ডবিধি আইনের ১০৪(খ)/১০৯ ধারায় মামলা করেন। বিচারক এই অবহেলিত হত্যা মামলার বিষয়ে তার আদেশে উল্লেখ করেন ‘আসামিগণ উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারী হওয়ায় এবং অভিযোগের গভীরতা বিবেচনায় মামলার ঘটনার বিষয়ে পুলিশ বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা দ্বারা তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন হলে ন্যায় বিচার নিশ্চিত হবে বলে আদালত মনে করেন।’ সার্বিক পর্যালোচনায় টাঙ্গাইল পুলিশ সুপারকে মামলার ঘটনার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ পূর্বক তদন্ত করে প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন।

সংবাদ সম্মেলনে তার পাঁচ বছরের যমজ দুই ভাই হাসান ও হোসাইন উপস্থিত ছিল।

সোনালী আক্তার বলেন, আমার মা খুব অসুস্থ ছিলেন। তারপরও জেল সুপার তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেননি। জেল সুপার আদালতের নির্দেশকে অমান্য করেছেন। আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করি।

এ বিষয়ে জেলা সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, কারাগারের দুজন চিকিৎসক নাদীয়া জাহান শেলীর সুচিকিৎসার দায়িত্বে ছিলেন। কারাগারে তাকে সুচিকিৎসাই দেওয়া হয়েছে। তিনি মারা যাওয়ার পর সকল প্রকার আইনি পক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মরদেহ নেওয়ার সময় তাদের কোনো অভিযোগ ছিলো না। এরপরও তারা চিকিৎসার অভাবে ওই কয়েদীর মৃত্যু হয়েছে দাবি করে আমাদের বিরুদ্ধে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট টাঙ্গাইল সদর থানা আমলি আদালতে বাংলাদেশ দণ্ডবিধি আইনের ১০৪(খ)/১০৯ ধারায় মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলার বিষয়ে পুলিশ সুপার নিজেই তদন্ত করছেন।


পাঠকের মতামত

-মন্তব্য সমূহ পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

নিউজটি শেয়ার করুন

কপিরাইট © ২০২২ একতার কণ্ঠ এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি ।