একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলে শিক্ষকের বেতের আঘাতে এক মাদরাসাছাত্রের শরীরে পচন ধরেছে। এ নিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। ওই ছাত্রের নাম মো. ইব্রাহিম (৮)। সে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া ইউনিয়নের ক্ষুদিরামপুর গ্রামের রিকশাচালক আমিনুল ইসলামের ছেলে। অভিযুক্ত শিক্ষক তানজিম ময়মনসিংহের মো. বাবুল মিয়ার ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ওই মাদরাসায় শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আমিনুল তার ছেলেকে শহরের ঢাকা ক্লিনিকের চিকিৎসক শিশুবিশেষজ্ঞ ডা. আকমলের প্রতিষ্ঠিত মীরের বেতকা (উত্তরপাড়া) মাদরাসাতুল কুরআন আল কারীম মাদরাসায় আবাসিকে পড়তে দেন। হঠাৎ করেই গত সপ্তাহে মাদরাসা থেকে আমিনুলকে ফোন করে জানানো হয় তার ছেলে অসুস্থ। মাদরাসার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন তাকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য জন্যও। একপর্যায়ে আমিনুল তার ছেলেকে শুক্রবার বাড়ি নিয়ে যায়। বাড়িতে যাওয়ার পর ছেলেকে গোসল করানোর সময় তিনি ইব্রাহিমের শরীরে ক্ষত দেখতে পান। এ সময় তার ছেলে তাকে শিক্ষক মো. তানজিম তাকে বেত দিয়ে আঘাত করেছেন বলে জানায়। এ ঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে মাদরাসাছাত্রের পরিবার কর্তৃপক্ষের কাছে উক্ত বিষয়টি অভিযোগ করেন। একপর্যায়ে পরিবারের লোকজন মাদরাসার প্রিন্সিপাল মো. আবদুল্লাহ আল মামুনকে ওই আঘাতের চিহ্ন দেখান। সে সময় ওই ক্ষতস্থান থেকে রক্ত এবং পানি বের হচ্ছিল।
এ বিষয়ে ওই মাদরাসাছাত্র মো. ইব্রাহিম বলেন, গত এক মাস আগে মাদরাসার শিক্ষক মো. তানজিম তাকে নীম গাছের ডাল দিয়ে পেটান। সে সময় এই পেটানোর কথা বাবা-মাকে না জানানোর জন্য ভয়ভীতিও দেখান ওই শিক্ষক। এই বলেই কান্নায় ভেঙে পড়ে ইব্রাহিম।
এ বিষয়ে শিক্ষক তানজিম বলেন, কথা না শোনার কারণে ইব্রাহিমকে পেটানো হয়েছিল। তবে এমনটা হবে তা আগে বুঝতে পারিনি। তবে পরিবারের কাউকে বিষয়টি জানাতে ইব্রাহিমকে মানা করেছেন বলে তিনি স্বীকার করেন।
ইব্রাহিমের মা রোজিনা বেগম বলেন, তার ছেলেকে যেভাবে পেটানো হয়েছে, ঠিক সেভাবে ওই শিক্ষককে পেটালে তিনি শান্তি পাবেন এই বলেই তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য ওয়াছেরুর রহমান নেছার বলেন, তিনি বিষয়টি জেনেছেন। এর আগেও বেশ কয়েকবার ওই মাদরাসায় অনৈতিক কাজের জন্য সালিশ বৈঠক হয়েছে। তবে এ ঘটনার জন্য তিনি জড়িত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
এ বিষয়ে ওই মাদরাসায় প্রিন্সিপাল মো. আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, সবার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা চলছে।