একতার কণ্ঠঃ প্রেগন্যান্সি জীবনে অনেক ক্ষেত্রেই হঠাৎ করে আসে। কিংবা অনেক সময় পরিকল্পনা করে সন্তান নেওয়ারও ইচ্ছে থাকে। এ সময় সবাই চিন্তা করেন ডায়াবেটিস কীভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখবেন, থাইরয়েড কীভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখবেন। হার্টের সমস্যা থাকলে নিয়ন্ত্রণে রাখবেন। ওই সময় গর্ভবতী মায়ের জন্য দাঁতের যত্নও খুবই জরুরি।
এ ব্যাপারে ঢাকা ডেন্টাল কলেজের (বিডিএস, এমএস, অর্থোডন্টিক্স) ডা. ফারিয়া তাবাসসুম তন্বী জানিয়েছেন বিস্তারিত তথ্য।
তিনি বলেন, কেউ যদি সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা করেন, আপনারা একজন ডেন্টিস্টকে দাঁত দেখিয়ে নেবেন। কারণ, প্রেগন্যান্সিতে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তৈরি হয়।
অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায়, প্রেগন্যান্সিতে অনেক বেশি দাঁত ব্যথা হয়। অনেকের ক্ষেত্রে হয়তো আগে কম ছিল, প্রেগন্যান্সিতে বাড়ে।
প্রেগন্যান্সিতে রক্ত চলাচল বাড়ে। হরমোনের কার্যক্ষমতা বাড়ে। দাঁতের মাড়িতে রক্ত চলাচল বাড়ে। অনেকের ক্ষেত্রে মাড়ি দিয়ে রক্ত বের হয়। অনেক মা প্রেগন্যান্সির সময় রাতে দুধ খেয়ে ঠিকমতো কুলি না করে ঘুমিয়ে পড়েন।
এতে দাঁতের গোড়ার দিক থেকে আস্তে আস্তে নষ্ট হতে শুরু করে। দাঁতের বাইরের আবরণ নষ্ট হতে শুরু করে। অনেকের এমনটা হয়- বাচ্চা হওয়ার কিছুদিন আগে বা কিছুদিন পরে তীব্র ব্যথা নিয়ে আসেন আমাদের কাছে।
এজন্যই আমরা বলবো- প্রেগন্যান্সির আগেই একজন ডেন্টাল সার্জনকে দিয়ে একটা রেগুলার চেকআপ করিয়ে নেবেন। সাধারণত আমাদের বছরে দুইবার ডেন্টাল ফলোআপে থাকা দরকার। ফলে দাঁতের যে সমস্যাটি তৈরি হওয়ার তা অল্পতেই ঠিক হয়ে যায়। যেমন- স্কেলিং করিয়ে রাখতে পারেন। কোনো দাঁতে যদি ছোটখাটো গর্ত থাকে, ফিলিং করিয়ে নিতে পারেন।
এছাড়াও প্রেগন্যান্সিতে অনেক সময় মায়েরা ঠিকমতো দাঁত ব্রাশ করতে চান না। অনেক বেশি বমি হয় এসময়। এছাড়াও অ্যাসিডিটি বাড়ে। এ অবস্থার কারণে দাঁতের অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকে।
প্রেগন্যান্সির প্রথম তিন মাস এবং শেষের তিন মাস চাইলেও দাঁত ফেলা যায় না। চাইলেও যেকোনো ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া যায় না। চাইলেও যেকোনো ধরনের ব্যথার ওষুধ খাওয়া যায় না। কেননা দাঁতের ব্যথা তীব্র ব্যথা হয়। শুধু প্যারাসিটামল খেলে ব্যথা যায় না। চিকিৎসকরা বেশি কোনো ওষুধ দিতে পারেন না।
অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায়, ব্যথা হচ্ছে। তখন আমাদের জিজ্ঞেস করেন, কী ওষুধ খাবেন। আবার অনেকেই জিজ্ঞেস না করে ওষুধ খান। দয়া করে এই ভুল কাজটি করবেন না। এক্ষেত্রে যদি আপনার কোনো ব্যথার ওষুধ বা অ্যান্টিবায়োটিক খেতে হয়, অবশ্যই আপনার যে গাইনি চিকিৎসকের কাছে ফলোআপ করাচ্ছেন, তার পরামর্শ নিতে হবে।
সংবাদ সূত্র-যুগান্তর অনলাইন