টাঙ্গাইলে বিষাক্ত ‘স্পিরিট’ পানে একে একে ৪ জনের মৃত্যু


০৭:৪৮ পিএম, ২৪ মার্চ ২০২৩
টাঙ্গাইলে বিষাক্ত ‘স্পিরিট’ পানে একে একে ৪ জনের মৃত্যু - Ekotar Kantho

একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে বিষাক্ত নেশা জাতীয় ‘স্পিরিট’ পান করে ৪ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আরো দুইজন গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

উপজেলার নারান্দিয়া ইউনিয়নের পালিমা বাজারের জনসেবা হোমিও ফার্মেসী থেকে গত শনিবার( ১৮ মার্চ) রাতে বিষাক্ত ‘স্পিরিট’ পান করায় বিভিন্ন সময়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মৃত্যুবরণ করেন।

এদিকে বিষাক্ত ‘স্পিরিট’ পান করে মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় আতংক ও শোক বিরাজ করছে।


স্থানীয়রা বলেন, শুধু নারান্দিয়া নয় উপজেলার বিভিন্ন এলাকা মাদকে ছেয়ে গেছে। এতে এলাকার যুবসমাজ ধ্বংসের পথে। এ এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।

জানা যায়, শনিবার (১৮ মার্চ) রাতে বিষাক্ত ‘স্পিরিট’ পান করে অসুস্থ হওয়ায় পাঁচ জনকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শনিবার রাত ও রবিবার (১৯ মার্চ) সকালের মধ্যে ৩ জনের মৃত্যু হয়। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে রবিবার রাত ২টার দিকে পালিমা গ্রামের মৃত ছামান আলীর ছেলে ফারুক মিয়া (৩৫) ও সোমবার (২০ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কুচুটি গ্রামের মৃত কোরবান আলীর ছেলে জুলহাস মিয়া (৪২) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কুচুটি গ্রামের মৃত বক্কর আলীর ছেলে আমছের আলী (৫০) নিজ বাড়িতে মারা যান। অন্যদিকে তারাপদ কর্মকার নামের আরেক ব্যক্তি একই দোকানের ‘স্পিরিট’ পান করে সম্প্রতি মারা গেছেন।

এ ঘটনায় অসুস্থরা হচ্ছেন- বিলপালিমা গ্রামের মুক্তার আলীর ছেলে মেহেদী ও কুচুটি গ্রামের জুয়েল। এরমধ্যে মেহেদীকে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে পারিবারিক সূত্রে জানাগেছে। এ ঘটনার পর থেকে পালিমা বাজারের জনসেবা হোমিও ফার্মেসি বন্ধ করে দোকানের মালিক-কর্মচারীরা পলাতক রয়েছেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আতিকুর রহমান জানান, নিহত জুলহাস, আমছের আলী, ফারুকসহ পাঁচজন শনিবার (১৮ মার্চ) রাতে পালিমা বাসস্ট্যান্ডের জনসেবা হোমিও ফার্মেসী থেকে অ্যালকোহল জাতীয় ‘স্পিরিট’ কিনে পান করে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদেরকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুইজন ও বাড়িতে এসে একজন মারা গেছেন। মেহেদী নামে একজনকে ঢাকা একটি হাসপাতালে স্থানান্তর (রেফার্ড) করা হয়েছে। অন্যদিকে তারাপদ কর্মকার নামের আরেক ব্যক্তি ‘স্পিরিট’ পান করে সম্প্রতি মারা গেছেন।

নারান্দিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ তালুকদার জানান, দীর্ঘদিন ধরে পালিমা বাসস্ট্যান্ডের জনসেবা হোমিও ফার্মেসী থেকে অ্যালকোহল জাতীয় ‘স্পিরিট’ বেচাকেনা হচ্ছে। ফার্মেসীতে অবৈধ ‘স্পিরিট’ বিক্রি বন্ধের জন্য জনসেবা ফার্মেসির মালিক সামাদকে আগেও নিষেধ করা হয়েছিল।

তিনি আরো জানান, এলাকার প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় নারান্দিয়া বাজারের ব্যবসায়ী বিবেক মোদক দীর্ঘদিন যাবত মদ ও ‘স্পিরিট’ বিক্রি করে আসছে। মাদক বিক্রির দায়ে এরআগেও তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন।

কালিহাতী থানার নারান্দিয়া বিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত এসআই মিন্টু চন্দ্র ঘোষ জানান, শুক্রবার (২৪ মার্চ) দুপুরে নারান্দিয়া বাজারের কালিমন্দিরের পাশের একটি মুদি দোকান থেকে অবৈধ মদ বিক্রির সময় বিবেক মোদক নামে এক চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোল্লা আজিজুর রহমান জানান, ‘স্পিরিট’ পান করে নিহত হওয়ার ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না। থানায় কেউ অভিযোগও করেন নাই। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


খবরটি শেয়ার করুন

কপিরাইট © ২০২২ একতার কণ্ঠ এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি ।