একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের মধুপুরে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষে অন্তত ২০জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা টিয়ার গ্যাস ও গুলি ছুড়েন।
এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যানের গাড়ী, অন্তত ২০টি মটরসাইকেল, কাজী ডিজিটাল হাসাপাতাল, উপজেলা চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত কার্যালয় ভাঙ্গচুর করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনকে কেন্দ্র করে শুক্রবার(১৩ জুন ) বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে মধুপুর শহরে পৃথক সমাবেশ পালনকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা হয়।
বিবাদমান দুই গ্রুপের এক পক্ষ স্থানীয় এমপি ও কৃষিমন্ত্রীর অনুসারী এবং আরেক পক্ষ মধুপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সরোয়ার আলম খান আবুর সমর্থক।
জানা যায়, মধুপুর পৌর ও উপজেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে যৌথভাবে দলীয় কার্যালয়ের সামনে মধুপুর বাসস্ট্যান্ডে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর আয়োজন করা হয়।
অপর দিকে, মধুপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খন্দকার শফিউদ্দিন মনি ও সাধারণ সম্পাদক সরোয়ার আলম খান আবু থানা মোড়ের দক্ষিণে পৃথকভাবে কর্মসূচির আয়োজন করে।
এ সভায় যোগদান করতে আসা ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা পথিমধ্যে হামলার শিকার হন। এই ঘটনাকে ঘিরে মধুপুরে উত্তেজনা দেখা দেয়।
আহতরা হলেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও লাউফুলা গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে খলিলুর রহমান (৩২), দামপাড়া গ্রামের মোর্শেদের ছেলে মাসরাফি (২৩), ইদিলপুর গ্রামের আহমেদ আলীর ছেলে ইসমাইল হোসেন (৬০), ভবানটেকী গ্রামের ইউসুফ আলীর ছেলে সোয়াইফ (২০), গাংগাইর গ্রামের খালেদ আহমেদের ছেলে মাসরুর আহমেদ প্রিতম (৩০), দানবাবান্দা গ্রামের আহসান আলীর ছেলে চাঁন মিয়া (৬৫)।
আহতদের মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে । এ ছাড়া ইদিলপুর গ্রামের আহমেদ আলীর ছেলে ইসমাইল হোসেন (৬০) কে ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
মধুপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খলিলুর রহমান জানান, আলোকদিয়া ইউনিয়নের সভাপতি দুলাল হোসেনের নেতৃত্বে মটরসাইকেল ও অটোরিক্সা যোগে মধুপুর বাসস্ট্যান্ডের সমাবেশে আসার সময় থানা মোড়ে কতিপয় ছাত্র ও শ্রমিক নেতা তাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় তার নিকটে থাকা ৬০ হাজার টাকাও ছিনিয়ে নেয় হামলাকারীরা। হামলাকারীরা সকলেই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছরোয়ার আলম খান আবুর নেতৃত্বাধীন কর্মী বলে দাবি করেন তিনি।
এই ঘটনার পর মধুপুর পৌরসভার মেয়র সমর্থিত নেতাকর্মীরা লাঠি-শোঠা নিয়ে এগিয়ে থানা মোড়ের দিকে এগিয়ে আসে। এরই মধ্যে উপজেলা পরিষদ চত্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পন ও সভা শেষে ছরোয়ার আলম খান আবুর নেতৃত্বাধীন মিছিলটি ফিরছিল। থানা মোড়ে মিছিল আসা মাত্রই ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করে । এ সময় সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়। ভাঙ্গচুর করা হয় উপজেলা চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত কার্যালয়, তার ব্যবহৃত সরকারি গাড়ি, অন্তত ২০টি মোটর সাইকেল, কাজী ডিজিটাল হসপিটাল। দুই গ্রুপের ইট পাটকেল নিক্ষেপ, পুলিশের গ্যাস গান ব্যবহারে থানা মোড় রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পার্শ্ববর্তী বাসা বাড়ির লোকজন আতংকিত হয়ে পড়ে। মধুপুরের দোকান পাট মুহুর্তের মধ্যেই বন্ধ হয়ে যায়।
পরিস্থিতি সামাল দিতে পাশ্ববর্তী থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে রাত পৌনে আটটা পর্যন্তও বিক্ষিপ্তভাবে ককটেল বিস্ফোরণের আওয়াজ পাওয়া যায়।
রাত আটটায় মধুপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছরোয়ার আলম খান আবু তার বাসায় সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, পৌর মেয়র সিদ্দিক হোসেন খান, চেয়ারম্যান ইয়াকুব আলীর নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর সমাবেশ করা সম্পূর্ণ সংগঠন বিরোধী। তাদের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন করার এখতিয়ার নেই। তারপরও মেয়রের নেতৃত্বে গাড়ী, মটরসাইকেল, দোকান, হাসপাতাল ভাঙ্গচুর নেতাকর্মীদের পিটিয়ে আহত করার ঘটনা ঘটিয়েছে। সমাবেশে আগত নেতাকর্মীদের উপরে হামলা করে অন্তত ৫০ জনকে তারা আহত করেছে। তারা নিরাপত্তার কথা ভেবে বিভিন্নস্থানে চিকিৎসা গ্রহণ করছেন।
উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সরোয়ার আলম খান আবু আরো বলেন, পৌর মেয়র সিদ্দিক হোসেন খান কৃষি মন্ত্রী ও স্থানীয় এমপি ড. আব্দুর রাজ্জাকের অনুসারী। এ ঘটনায় আমরা থানায় অভিযোগ দিবো।
সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খন্দকার শফিউদ্দিন মনি, সহসভাপতি কাজী আব্দুল মালেকসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
অপরদিকে মধুপুর পৌরসভার মেয়র সিদ্দিক হোসেন খান সাংবাদিকদের জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে সংগঠন বিরোধী কার্যক্রম করার অপরাধে কেন বহিষ্কার করা হবে না মর্মে শোকজ করা হয়েছে। বর্তমানে দলীয় কার্যক্রম করার এখতিয়ার তিনি হারিয়েছেন। তাই উপজেলা আওয়ামী লীগ ও পৌর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এই সমাবেশে আগত নেতাকর্মীদের থানা মোড়ে আবুর কর্মীরা হামলা করে আহত করে। পরে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। আমি বিষয়টি জানতে পেরে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের শান্ত করে ফিরিয়ে নিয়ে আসি।
মধুপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি তদন্ত) মুরাদ হোসেন বলেন, প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালনকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও মারামারি হয়েছে। কোন পক্ষই এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় অভিযোগ করেনি। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলে পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে এ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি উত্তর)। তার হেফাজত থেকে দুটি পুলিশ পোষাক, একটি পুলিশ বেল্ট, একটি পুলিশ রিফ্ল্যাক্টিং বেল্ট ও পাঁচটি ছোরা জব্দ করা হয়।
শুক্রবার (২৩ জুন)বিকেলে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার হওয়া ওই ব্যক্তির নাম মো. সোনাব আলী (৫০)। সে সিরাজগঞ্জ জেলার চৌহালী উপজেলার চরকুরকী গ্রামের মৃত জিলানীর ছেলে।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি উত্তর) অফিসার ইনচার্জ (ওসি)মো. মোশারফ হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি প্রতিরোধ, অবৈধ মাদকদ্রব্য ও অস্ত্র উদ্ধারে বিশেষ অভিযান করা হয়। রাত সোয়া ১০ টার দিকে খবর আসে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কাগমারী কলেজ মোড়ে কিছু ডাকাত পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতির উদ্দেশ্যে পুলিশের নকল পোষাক ও দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র, অন্যান্য মালামালসহ অবস্থান করছে। পরে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে কাগমারী কলেজ মোড় থেকে মো. সোনাব আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি আরো জানান,শুক্রবার এসআই মনির বাদি হয়ে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। শুক্রবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে সোনাব আলীকে কারাগারে পাঠানো হয়।পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি প্রস্তুতির সাথে জড়িত অন্যান্য আসামীদের গ্রেপ্তার করার জন্য পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলে মাদক মামলায় এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই মামলায় একজনকে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও অপর এক যুবককে মামলায় নির্দোষ প্রমাণিত হওয়া বেকসুর খালাম দেন অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মোহাম্মদ মোস্তফা শাহারিয়ার খান।
মঙ্গলবার (২০ জুন) বিকেলে তিনি এই রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার সময় যাবজ্জীবন দণ্ডিত আসামি মো. মিজানুর রহমান (২২) আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এসময় অপর এক আসামি রাসেল মিয়া আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত মিজানুর রহমান জেলার সখীপুর উপজেলার নলুয়া গ্রামের আড়ালিয়াপাড়া গ্রামের ফজলুল করিমের ছেলে।
দুইবছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত একই গ্রামের মৃত আবুল মিয়ার ছেলে রাসেল মিয়া (২৫)। এবং মামলায় খালাস পাওয়া একই উপজেলার যাদবপুর গ্রামের আব্দুর করিমের ছেলে মো. পাভেল মিয়া (২৫)।
টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পিপি খোরশেদ আলম জানান, টাঙ্গাইলের গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ২০১৯ সালের ২ জুন গোপন খবরের ভিত্তিতে সখীপুরের নলুয়া আড়ালিয়াপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে দণ্ডিত মিজানুর রহমানের কাছ থেকে এক হাজার ২পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট ও ১৫০ গ্রাম হিরোইন জব্দ করে। এছাড়া রাসেলের কাছ থেকে একশ পিচ ইয়াবা ও ১০ গ্রাম হিরোইন জব্দ করে।
এ ঘটনায় জেলা ডিবির (উত্তর) উপ-পরিদর্শক নুরুজ্জামান বাদী হয়ে ৫ জনের নামে মামলা দায়ের করে।
পরে সখীপুর থানার এসআই ছবেদ আলী তদন্ত শেষে ২০১৯ সালে ৩১ জুলাই আসামি মিজানুর রহমান, রাসেল মিয়া ও পাভেল মিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দায়ের করেন। মামলার প্রধান আসামি মিজানুর রহমান গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে রায় ঘোষণা পর্যন্ত জেলা কারাগারে রয়েছেন।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলে মাদক মামলায় স্ত্রী লিলি বেগম (৪০) নামে এক নারীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জারিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
অপরদিকে, একই মামলায় স্বামী বকুল সিকদারকে ৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো তিন মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়। আসামিদের অনুপস্থিতিতে এ রায় দেন তিনি।
বৃহস্পতিবার(৮ জুন) দুপুরে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মো. মোস্তফা শাহারিয়ার খান এ রায় দেন।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত লিলি বেগম টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সিংগুরিয়া গ্রামের বকুল সিকদারের স্ত্রী। অপর দণ্ডপ্রাপ্ত বকুল সিকদার একই এলাকার মৃত কালু সিকদারের ছেলে।
টাঙ্গাইলের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) এস আকবর খান জানান, ২০১৫ সালের ২৮ নভেম্বর স্ত্রী লিলি বেগম ও তার স্বামী বকুল সিকদারকে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সিংগুরিয়া এলাকার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। সেই সময় স্ত্রী লিলির কাছ থেকে ৩০ গ্রাম এবং স্বামী বকুলের কাছ থেকে ১৫ গ্রাম হেরোইন জব্দ করা হয়।
তিনি আরোও জানান, এ ঘটনায় ওইদিনই তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের পরিদর্শক মো. মাহবুবুর রহমান বাদি হয়ে ঘাটাইল থানায় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে উপ-পরিদর্শক প্রবীর চন্দ্র সরকার লিপি ও বকুলের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেন।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে ১২ বছর বয়সী এক শিশুকে হত্যার ভয় দেখিয়ে বলাৎকারের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযোগের প্রেক্ষিতে আনোয়ার হোসেন (৪৫) নামে এক সাবেক ইউপি সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৬ জুন) দুপুরে উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের গোবিন্দাসী এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
ভূঞাপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জুম্মান খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেন উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি সদস্য ও কুকাদাইর গ্রামের হাছেন আলী তালুকদারের ছোট ছেলে।
জানা গেছে, গত ২০ মে রাত ১ টায় গোবিন্দাসী টি-রোড এলাকার একটি গরুর খামারে ওই শিশুকে ডেকে নেন অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেন। পরে তাকে হত্যার ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক হাত-মুখ চেপে ধরে বলাৎকার করে। এসময় শিশুটির ডাক-চিৎকার শুনে খামারের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় এক বাক প্রতিবন্ধী এগিয়ে এসে ডাকাডাকি করলে খামারে থাকা অন্য শ্রমিকরা শিশুটিকে উদ্ধার করে। ঘটনাস্থলে আসার আগেই আনোয়ার পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় শিশুটির বাবা বলেন, আমি ঘটনাটি জানতাম না। কয়েক দিন পর জানতে পারলাম আমার ছেলের সাথে আনোয়ার মেম্বার অনৈতিক কাজ করেছে। মঙ্গলবার সকালে ভূঞাপুর থানায় এসে তার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করি। এই নেক্কারজনক ঘটনায় নরপশুর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।
এ ব্যাপারে ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম বলেন, বলাৎকারের শিকার হওয়া শিশুটির বাবা বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তার প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার সকালে গোবিন্দাসী এলাকা থেকে সাবেক ওই ইউপি সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাকে বিকালে টাঙ্গাইল আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলে মাদক বিক্রির দায়ে লিপি বেগম নামে এক নারীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (৩০ মে) টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মোস্তফা শাহরিয়ার খান ওই রায় দেন।
দন্ডিত লিপি আক্তার মির্জাপুর উপজেলার পুষ্টকামুরী সওদাগর পাড়ার তোফাজ্জল হোসেনের স্ত্রী।
আদালতের সরকারি কৌঁশুলী এস আকবর খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কৌঁশুলী এস আকবর খান জানান, ২০২২ সালের ৬ মার্চ টাঙ্গাইল মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মো. আহসান হাবীব ১০০ গ্রাম হেরোইন ও হেরোইন বিক্রির দুই লাখ ১৯ হাজার টাকাসহ লিপি আক্তারকে (৩৬) গ্রেপ্তার করেন। পরে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের পূর্বক তাকে মির্জাপুর থানায় সোপর্দ করা হয়। মঙ্গলবার ওই মামলার রায়ের দিন ধার্য ছিল। আদালত উভয় পক্ষের শুনানী শেষে লিপি আক্তারকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদন্ডের আদেশ দেন।
তিনি জানান, মামলা চলাকালে লিপি আক্তার কারাগার থেকে একাধিকবার জামিন আবেদন করলেও প্রতিবারই আদালত না মঞ্জুর করেন। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও জানান, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলা সাধারণত এত অল্প সময়ে শেষ হয়না। আদালতের সদিচ্ছা ও সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা থাকায় মাত্র এক বছরের মধ্যে মামলার রায় ঘোষণা করা সম্ভব হয়েছে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের বাসাইলে কিশোর গ্যাংয়ের হামলার ঘটনায় আকাশ (১৯) নামের এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার (২৯ মে) দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাসাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান।
গ্রেপ্তারকৃত আকাশ উপজেলার কাজিরাপাড়া গ্রামের মাহফুজের ছেলে। হামলার শিকার আহনাব শাহরিয়ার নাবিল চ্যানেল আইয়ের টাঙ্গাইল প্রতিনিধি ও বাসাইল প্রেসক্লাবের প্রধান উপদেষ্টা মুসলিম উদ্দিন আহমেদের ছেলে।
নাবিল বাসাইল সরকারি গোবিন্দ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে চলমান এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে।
বাসাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলার পর একজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
প্রকাশ, হামলার শিকার নাবিল রোববার (২৮ মে) দুপুরে বাসাইল পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে কৃষিশিক্ষা পরীক্ষা শেষ করে কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে তার নিজ বিদ্যালয় বাসাইল সরকারি গোবিন্দ উচ্চ বিদ্যালয়ের দিকে যাচ্ছিল। এসময় বাসাইল কেন্দ্রীয় কবরস্থানের সামনে পৌঁছালে আগে থেকেই উৎপেতে থাকা ১০-১৫ জনের কিশোর গ্যাংয়ের একটি সংঘবদ্ধ দল নাবিলের পথরোধ করে। একপর্যায়ে কাঠ ও বাঁশের লাঠি দিয়ে নাবিলকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এ সময় নাবিলকে সেখান থেকে অপহরণের উদ্দেশ্যে মোটরসাইলেকে ওঠানোর চেষ্টা করে। নাবিলের ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে কিশোরগ্যাংয়ের সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এ সময় নাবিলের এসএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্রসহ সকল কাগজ ছিনিয়ে নিয়ে যায় তারা। পরে নাবিলকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। নাবিল বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ঘটনায় নাবিলের বাবা মুসলিম উদ্দিন আহমেদ বাদি হয়ে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য আকাশসহ অজ্ঞাত ১০-১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইল শহরের চাঞ্চল্যকর পার্ক বাজারের মাছ ব্যবসায়ী আলী আকবর বাপ্পী(৩৩) হত্যার ঘটনায় ৩ আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে টাঙ্গাইল সদর থানা পুলিশ। এছাড়াও তাদের কাছে থাকা হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছে, টাঙ্গাইল পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পাড় দিঘুলিয়া এলাকার মোঃ নূরু মিয়ার ছেলে মোঃ রাজু আহম্মেদ হাবলু (৩০), একই এলাকার ঝন্টু বেপারীর ছেলে মোঃ খোকন (৩১) ও মৃত শহীদ বেপারীর ছেলে ওলি (৩০)।
শনিবার (২৭ মে) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়া।
ওসি মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়া জানান,ব্যবসায়ী বাপ্পি হত্যাকাণ্ডটি চাঞ্চল্যকর হওয়ায় টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ সোহেল রানার নির্দেশে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হাবিবুর রহমান ও তদন্তকারী অফিসার এসআই (নিঃ) মোরাদুজ্জামান’সহ অন্যান্য অফিসার ফোর্সের অংশগ্রহণে একাধিক টিম ঘটনার পর থেকেই সাড়াশি অভিযান চালাতে থাকে। পৌর এলাকার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গত তিন দিনে আসামিদেরকে গ্রেপ্তার করা হয় ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা উদ্ধার করা হয়। পরে বিজ্ঞ আদালতে গ্রেপ্তারকৃত তিন আসামি স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি (১৬৪) প্রদান করেছে।
তিনি জানান, হত্যাকাণ্ডের পর ব্যবসায়ী বাপ্পির মা আজিমন বেগম (৫৫) মঙ্গলবার (২৩ মে) অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে টাঙ্গাইল সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
তিনি জানান, টাঙ্গাইল শহরের পার্ক বাজারে মাছ বিক্রির দুইটি দোকানের মালিকানাকে কেন্দ্র করে হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে। নিহত বাপ্পি দীর্ঘদিন যাবৎ পার্ক বাজারে খুচরা মাছ ক্রয়-বিক্রয় করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিল। পার্ক বাজারে দুইটি মাছের দোকান আসামি খোকন, ওলি ও নিহত বাপ্পি তিনজনের মধ্যে ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। উক্ত দোকান ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করে আসামী মোঃ রাজু আহম্মেদ হাবলু, খোকন ও ওলি তিনজন মিলে পরিকল্পনা করে, বাপ্পিকে মারপিট করে ভয় দেখিয়ে দুইটি দোকানকে তিন ভাগ করে তারা তিনজন দোকান তিনটি নিয়ে নিবে। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী সোমবার (২২ মে) বিকাল অনুমানিক ৩ থেকে ৪ ঘটিকার মধ্যে শহরের পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কালিপুর এলাকায় খোকনের অটোরিক্সা গ্যারেজে আসামী মোঃ রাজু আহম্মেদ হাবলু, খোকন ও ওলি বসে বাপ্পিকে মেরে ফেলার (হত্যা করার) পরিকল্পনা করে। তাদের পরিকল্পনা মোতাবেক আসামী মোঃ রাজু আহম্মেদ হাবলু নিহত বাপ্পিকে রাত্রী অনুমানিক ১০.৩০ মিনিটে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে দিঘুলিয়া ব্রীজের পশ্চিম-দক্ষিন পার্শ্বে লৌহজং নদীর পাড়ে বটগাছের নিচে আসামী খোকন ও ওলি আসার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে।
তিনি জানান, মেয়েলি বিষয়ে টাকা পয়সা নিয়ে একটি পার্টি আসবে এই লোভ দেখিয়ে নিহত বাপ্পিকে নিয়ে আসামী মোঃ রাজু আহম্মেদ হাবলু সময়ক্ষেপন করতে থাকে। সোমবার (২২ মে) দিনগত রাত আনুমানিক ১.৩০ মিনিটের দিকে আসামী খোকন ও ওলি তাদের হাতে থাকা ধারালো দা-বটি সহ অন্যান্য অস্ত্র নিয়ে নিহত বাপ্পির কাছে এসে প্রথমে আসামী খোকন বাপ্পিকে বসা অবস্থায় পিছন দিক থেকে দা দিয়ে কোপ মারলে বাপ্পি উঠে রাস্তার দিকে দৌড় দেয়। পরে রাস্তার কোনায় বাপ্পি পিছলে পরে যায়, ওই সময় আসামী মোঃ রাজু আহম্মেদ হাবলু, খোকন ও ওলি বাপ্পিকে পিছন থেকে ধাওয়া করে শহীদ মিজানুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান গেটের সামনে দা-বটি‘সহ অন্যান্য ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে মাথা, হাত ও পিঠের বিভিন্নস্থানে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে তারা বিভিন্ন দিকে পালিয়ে যায়।
তিনি আরোও জানান, গ্রেপ্তারকৃত রাজু আহম্মেদ হাবলুকে বৃহস্পতিবার (২৫ মে) আদালতে প্রেরণ করা হয়। এছাড়া ওলি ও খোকনকে শুক্রবার (২৬ মে) আদালতে প্রেরণ করা হয়। এর আগে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক জান্নাত রিপা ওই তিনজনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি (১৬৪) রেকর্ড করেন।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের মধুপুরে পর্নোগ্রাফি ও মাদক সংক্রান্ত অপরাধের দায়ে পৃথক দুইটি অভিযান চালিয়ে চার যুবককে অর্থদণ্ড সহ ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমান আদালত।
এ সময় পর্নোগ্রাফির কাজে ব্যবহ্যত ৬টি ল্যাপটপ, একটি ডেস্কটপ ও ১০ টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
মঙ্গলবার (২৩ মে) সন্ধ্যায় মধুপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শামীমা ইয়াসমীন এবং সহকারী কমিশনার( ভূমি) জাকির হোসাইন পৃথক দুটি ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হচ্ছেন, মধুপুর পৌর এলাকার কাইতকাই গ্রামের মো.শাহজাহান আলীর ছেলে সালমান খান(২২), মধুপুর সদরের ঝন্টু পালের ছেলে অনন্ত পাল(২১), একই এলাকার মেহেদী হাসান ফাহিম(২৩) ও ধনবাড়ী উপজেলার নরিল্যা গ্রামের মো.রফিকুল ইসলামের ছেলে আশিকুর রহমান(২১)।
উপজেলা নির্বাহী অফিস সূত্র জানা যায়, উপজেলার পৌর এলাকার টাঙ্গাইল-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের নয়াপাড়া মসজিদের পাশে সাইফুল ইসলামের বাসা ভাড়া নিয়ে ওই যুবকরা ফ্রিল্যান্সিংয়ের ব্যবসার আড়ালে পর্নোগ্রাফির মতো অপরাধমূলক কাজ করতো। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীমা ইয়াসমীন, সহকারি কমিশনার (ভূমি) জাকির হোসাইনের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে ওই চার যুবকে আটক ও তাদের ব্যবহ্যত ল্যাপটপ, কম্পিউটার, মোবাইল জব্দ করা হয়। এ সময় তাদের অফিস থেকে মাদকও উদ্ধার করা হয়। তাদের ব্যবহিত অফিসটি সিলগালা করা হয়। ভ্রাম্যমান আদালত পর্নোগ্রাফি ও মাদক রাখার অপরাধে তাদের প্রত্যককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা ও ৬ মাসের কারাদণ্ড প্রদান করে। পরে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়।
উল্লেখ্য, উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় বাসা ভাড়া নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে ফ্রিল্যান্সিংয়ের নামে উঠতি বয়সের যুবকরা রাত জেগে ইন্টারনেটের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে। ফ্রিল্যান্সিংয়ের আড়ালে পর্নোগ্রাফির মাধ্যমে লাখ-লাখ টাকা উপার্জনে মেতে উঠে তারা। রাতভর তাদের ছুটাছুটি ও মাদক খেয়ে চিল্লাচিল্লিতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে স্থানীয়ারা। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে ফ্রিল্যান্সিং, মাদক গ্রহন ও পর্নোগ্রাফির। স্থানীয় প্রশাসন এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পৌর এলাকার একটি বাসায় অভিযান চালালে বেড়িয়ে আসে ফ্রিল্যান্সিংয়ের নামে প্রর্ণোগ্রাফির ব্যবসা ও মাদক সেবনের চিত্র।
একতার কণ্ঠঃ ডান হাতে ত্রিশুল ও বাম হাতে ঘটি (কলস) নিয়ে পুলিশের দুই সদস্য সাজাপ্রাপ্ত আসামির বাসায় হাজির।
রবিবার ( ২১ মে) সকালে ভিক্ষু সন্ন্যাসী সেজে আসামিকে গ্রেপ্তার করে মির্জাপুর থানার এস.আই রামকৃষ্ণ। তার সহযোগী হিসেবে ছিলেন, কনস্টেবল মো. দেলোয়ার হোসেন।
গ্রেপ্তারকৃত ওই নারী আসামীর নাম হোসনে আরা। তিনি উপজেলার বাঁশতৈল ইউনিয়নের তেলিপাড়া গ্রামের জাহাঙ্গীরের স্ত্রী বলে জানা গেছে।
এস.আই রামকৃষ্ণ জানান, কোর্টের দুইটি মামলার ৩ মাসের সাজাপ্রাপ্ত (ওয়ারেন্টভুক্ত) আসামি হোসনে আরা। মামলার পর থেকেই পুলিশের ভয়ে বিভিন্নস্থানে রাত্রিযাপন করেন। দিনের বেলায় বাসায় থাকলেও প্যান্ট, শার্ট পরিহিত যেকোনো মানুষের উপস্থিতি টের পেলেই সে আত্মগোপনে চলে যেতো। তাই তাকে গ্রেপ্তারের জন্য বিকল্প পন্থা অবলম্বন করেন, মির্জাপুর থানার এস.আই রামকৃষ্ণ।
তিনি আরোও জানান, রবিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ভিক্ষু সন্ন্যাসী সেজে ওই আসামীর বাসায় হাজির হন পুলিশের দুই সদস্য। পরে তেলিপাড়া বাঁশতৈল ইউনিয়নের আসামীর বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। রবিবার দুপুরে তাকে কোর্টের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বড় মনি’র জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছে টাঙ্গাইলের জেলা ও দায়রা জজ আদালত।
রবিবার (২১ মে) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ শেখ আব্দুল আহাদের আদালত জামিন আবেদনের শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
টাঙ্গাইলের সরকারি কৌশলী (পিপি) এস আকবর খান জানান, কিশোরীর ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামী গোলাম কিবরিয়া বড় মনি উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়েছিলেন। পরবর্তীতে রাষ্ট্র পক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে আপীল বিভাগের চেম্বার জজ বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম হাই কোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করে দুই সপ্তাহের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পনের আদেশ দেন।
তিনি আরোও জানান, সেই আদেশ অনুসারে গোলাম কিবরিয়া বড় মিন ১৫ মে (সোমবার) টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পন করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। রবিবার (২১ মে) মিস কেসের মাধ্যমে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বড় মনির জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। আদালত শুনানি শেষে তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
আসামী পক্ষের জামিন শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী এ কে এম শামীমুল আক্তার, বারের সভাপতি শফিকুল ইসলাম রিপন, সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী মামুনুর রহমান, ব্যারিস্টার গোলাম নবী, বারের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মনসুর আলী খান বিপন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম এমপিসহ অর্ধশত আইনজীবী।
রাষ্ট্রপক্ষে জামিনের বিরোধীতা করেন সরকারি কৌশলী (পিপি) এস আকবার খান, সিনিয়র আইনজীবী মো. আব্দুল করিম মিঞা, বারের সাবেক সভাপতি ফায়কুজ্জামান নাজীবসহ ১৫জন আইনজীবী।
গত ১৫ মে (সোমবার) বড় মনিকে কারাগারে পাঠানোর পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তারপর থেকেই তিনি টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
উল্লেখ্য, গোলাম কিবরিয়া বড় মনি টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনিরের বড় ভাই। তিনি টাঙ্গাইল জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিবসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃত্বে রয়েছেন।
গত ৫ এপ্রিল রাতে টাঙ্গাইল শহরের এক কিশোরী বাদী হয়ে গোলাম কিবরিয়া বড় মনি’র বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।
টাঙ্গাইল মডেল থানায় দায়ের করা মামলায় বলা হয়, জমি নিয়ে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানের জন্য বড় মনি’র স্মরণাপন্ন হন ওই কিশোরী। বড় মনি সমস্যা সমাধান করে দেওয়ার আশ্বাস দেন। গত ১৭ ডিসেম্বর ওই কিশোরীকে শহরের আদালত পাড়ায় বড় মনি’র বাড়ির পাশে একটি ফ্লাটে যেতে বলেন। সেখানে গেলে কিশোরীকে একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়। প্রায় তিন ঘণ্টা পর বড় মনি কক্ষে ঢুকে মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন এবং সে ছবি তুলে রাখেন। ধর্ষণ শেষে কাউকে এ কথা জানাতে নিষেধ করেন এবং কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকি দেন তিনি। তারপর ছবি প্রকাশের ভয় দেখিয়ে প্রায়ই মেয়েটিকে বড় মনি ধর্ষণ করতেন বলেও উল্লেখ করা হয়।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, এ ধর্ষণের কারণে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বড় মনি তাকে গর্ভপাত করার জন্য চাপ দিতে থাকেন। এত রাজি না হওয়ায় গত ২৯ মার্চ রাত ৮টার দিকে বড় মনি মেয়েটিকে আদালত পাড়ায় তার শ্বশুরবাড়িতে তুলে নিয়ে যান। সেখানে গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। তাতে রাজি না হওয়ায় ওই বাসার একটি কক্ষে তালাবদ্ধ করে রাখা হয় মেয়েটিকে। পরে তাকে সেখানে আবার ধর্ষণ করেন বড় মনি। ধর্ষণের পর বড় মনির স্ত্রী তাকে মারপিট করলে মেয়েটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে রাত ৩টার দিকে বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয় তাকে। তারপর থেকে মেয়েটিকে নানা হুমকি দেওয়া হতো। শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ থাকায় মামলা করতে দেরি হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করেছেন বাদী।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইল সদর উপজেলার হুগড়া, কাতুলি, দ্যাইন্যা ও কাকুয়া ইউনিয়ন নিয়ে টাঙ্গাইলের চরাঞ্চল। যমুনা ও ধলেশ্বরী নদী বেষ্টিত হওয়ায় এ অঞ্চলের চরমপন্থী আতঙ্কে দিন কাটতো সাধারণ মানুষের।
একটা সময় টাঙ্গাইলের চরাঞ্চল এলাকাকে বলা হতো ‘রক্তাক্ত জনপদ’। যেখানে খুন, লুট তরাজ, জিম্মি, ও অপহরণ ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। এ সকল এলাকায় কথিত পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টি (এমএল) ও সর্বহারাসহ নানা চরমপন্থী গোষ্ঠীর উত্থান হয় নব্বইয়ের দশক থেকে।
চরাঞ্চলের সাধারণ মানুষের মাঝে স্বস্তি ফেরাতে ২০২০ সাল থেকে কাজ শুরু করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। এর অংশ হিসাবে র্যাবের পক্ষ থেকে চরমপন্থীদের পরিবারের সদস্যদের স্বাভাবিক পেশায় পুনর্বাসিত করার লক্ষ্যে তাদের আর্থিকভাবে স্বচ্ছল করতে নানা কর্মমুখী প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।
বর্তমানে টাঙ্গাইলে ৩০টি সর্বহারা পরিবারের নারী সদস্যদের হস্তশিল্প প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করতে ‘উদয়ের পথে’ নামক একটি পাইলট প্রোগ্রাম চলমান রয়েছে।
আগামীকাল রবিবার (২১ মে) সিরাজগঞ্জ স্টেডিয়ামে র্যাব-১২ এর তত্ত্বাবধানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের নিকট টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, রাজবাড়ী, পাবনা, বগুড়া, কুষ্টিয়া ও মেহেরপুরসহ দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন চরমপন্থী গোষ্ঠীর মোট ৩২৩ জন সদস্য দুই শতাধিক অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করবেন। এদের মধ্যে শুধুমাত্র টাঙ্গাইলের চরমপন্থি রয়েছেন ৭৬ জন।
সদর উপজেলার হুগড়া ইউনিয়নের বেগুনটাল বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম ও শওকত আলী বলেন, একটা সময় ছিল টাঙ্গাইলের চরাঞ্চলের মানুষ দিনের বেলাতেও স্বাভাবিকভাবে ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালনা করতে পারতো না। সর্বহারা সদস্যদের আত্মসমর্পণের খবরে আনন্দের জোয়ারে ভাসছে স্থানীয়রা। এ খবরে স্বস্তি ফিরেছে চরাঞ্চলে।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার হুগড়া ইউনিয়নের বেগুনটাল এলাকার সাবেক সর্বহারা দলের সদস্য বারেক মিয়া বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে আমাদেরকে পুনর্বাসিত করা হয়েছে। এসব দেখেই সর্বহারা দলের অন্য সদস্যরা সম্প্রতি স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে শুরু করেছে। রবিবার (২১ মে) র্যাব-১২ এর নিকট ৭৬ সর্বহারা সদস্য আত্মসমর্পণ করবে বলে জেনেছি।
সর্বহারা দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড লেবু মণ্ডল বলেন, গতকাল রাতেও আমি আতঙ্কে কাটিয়েছি। সর্বহারা দলের সদস্য হওয়ার পর থেকেই ঈদেও ছেলে-মেয়েদের থেকে দূরে থেকেছি। ডজন খানেক মামলা মাথায় নিয়ে ঘুরছি। এ জীবন যে কেমন, কষ্টের তা বলে বোঝানো যাবে না।
সর্বহারা দলের টাঙ্গাইল জেলার কমান্ডার জিয়াউর রহমান বলেন, আমাদেরকে ভুল বুঝিয়ে নেতারা পথভ্রষ্ট পথে নিয়েছিল। মুখে নীতি কথা বললেও কাজে ছিল পুরো উল্টো। সাধারণ মানুষ আমাদেরকে ঘৃণার চোখে দেখত। আমার সন্তানরাও এ জন্য এলাকায় মুখ দেখাতে পারতো না। তাই স্বাভাবিক জীবনে ফিরতেই আমারা ৭৬ সদস্য ৩৬টি অস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ গুলিসহ আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছি।
র্যাব ১২ এর অধিনায়ক (সিও) ও অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মারুফ হোসেন জানান, বিভিন্ন চরমপন্থী দলের নেতা ও সদস্যদের বিভিন্ন ভাবে আর্থিক প্রণোদনার মাধ্যমে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে র্যাব কাজ করে যাচ্ছে। এর অংশ হিসাবে গরুর খামার, পোল্ট্রি ফার্ম, মাছ চাষের ব্যবস্থা, চায়ের দোকান, ভ্যান-রিকশা, সেলাই মেশিন দেওয়ার মাধ্যমে চরমপন্থী সদস্য ও তাদের পরিবারগুলোকে স্বাভাবিক পেশায় স্থানান্তরের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।