আরমান কবীরঃ টাঙ্গাইলের কালিহাতীর এলেঙ্গায় অবস্থিত জনপ্রিয় বিনোদন কেন্দ্র ‘এলেঙ্গা রিসোর্টের’ বকেয়া ভাড়ার কারণে সিলগালা করেছে প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে কালিহাতী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সায়েদা খানম লিজার নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে রিসোর্টটির কার্যক্রম বন্ধ করে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।
জানা গেছে, এলেঙ্গা রিসোর্টটি দীর্ঘদিন ধরে সেতু কর্তৃপক্ষের মালিকানাধীন জমি ইজারা নিয়ে পরিচালিত হচ্ছিল। কিন্তু দীর্ঘ কয়েক মাস ভাড়া পরিশোধ না করায় রিসোর্টটির বিরুদ্ধে বড় ধরনের অডিট আপত্তি ওঠে। একাধিকবার নোটিশ দেওয়ার পরও রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ বকেয়া পরিশোধে কোনো উদ্যোগ নেয়নি।
সেতু বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আহসানুল কবীর পাভেল বলেন, “রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ প্রায় ১ কোটি ২৫ লাখ টাকার ভাড়া বকেয়া রেখেছে। আমাদের স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে বারবার নোটিশ দেওয়ার পরও তারা কোনো সাড়া দেয়নি। অডিট আপত্তির ভিত্তিতে সদর দপ্তরের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে আজ রিসোর্টটি সিলগালা করা হয়েছে।”
কালিহাতী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সায়েদা খানম লিজা বলেন, “এলেঙ্গা রিসোর্টটি মূলত বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের মালিকানাধীন জমিতে প্রতিষ্ঠিত। কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য রিসোর্ট পরিচালনার উদ্দেশ্যে জমিটি ইজারা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন ধরে প্রায় ১ কোটি ২৫ লাখ টাকার বকেয়া ইজারার অর্থ পরিশোধ না করায় সেতু কর্তৃপক্ষ একাধিকবার চিঠি ও নোটিশ প্রদান করলেও তারা তাতে সাড়া দেয়নি।
বকেয়া অর্থ পরিশোধ না করায় সেতু কর্তৃপক্ষের অডিট আপত্তি এবং আনুষ্ঠানিক আবেদনের ভিত্তিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় রিসোর্টটির কার্যক্রম বন্ধ করে সেটি সিলগালা করা হয়েছে। পরবর্তীতে মালিকানা অনুযায়ী সেতু কর্তৃপক্ষ তাদের নিজস্ব জায়গা দখল বুঝে নেয়।”
অন্যদিকে, রিসোর্টে কর্মরত শ্রমিকরা জানান, প্রতিষ্ঠানটিতে প্রায় ৫৪ জন কর্মী কাজ করেন এবং তাদের ছয় মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। এক কর্মচারী বলেন, “আমরা কেউই জানতাম না রিসোর্ট বন্ধ হবে। এখন হাতে কোনো টাকা-পয়সা নেই। মালিক বিদেশে থাকেন, আমাদের বেতন কে দেবে বুঝতে পারছি না।”
স্থানীয়রা জানান, এলেঙ্গা উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার হওয়ায় এখানে প্রতিদিন অসংখ্য পর্যটক ও যাত্রী অবস্থান করেন। ফলে এলেঙ্গা রিসোর্টটি ছিল একটি পরিচিত ও জনপ্রিয় প্রতিষ্ঠান। তবে বকেয়া পরিশোধ না করায় রিসোর্ট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কর্মচারী ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে।