একতার কণ্ঠঃ বন্যার্তদের সহায়তার জন্য অর্থ সংগ্রহে টাঙ্গাইলের চ্যারিটি কনসার্টের আয়োজন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) বিকেলে শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কনসার্টটি শুরু হয় চলে রাত ৯ টা পর্যন্ত।
কনসার্ট ফর ফ্লাড ভিকটিমথ শিরোনামে কনসার্টটির আয়োজন করেছে ‘সরকারি সা’দত কলেজ’। এতে বিনা পারিশ্রমিকে গান পরিবেশন করেছেন স্বনামধন্য কয়েকটি ব্যান্ডদল।
কনসার্ট আয়োজনের বিষয়ে সরকারি সা’দত কলেজের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাব্বির হোসেন, জুয়েল হিমুসহ অনেকেই জানান, বর্তমানে আমাদের দেশ একটি ভয়াবহ সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এই দুর্যোগ পরিস্থিতর জন্য আন্তর্জাতিক মহলে যে ষড়যন্ত্র চলছে তার প্রতি তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা এই সংকট মুহুর্তে যদি কিছু করতে পারি সেটাও গানের মাধ্যমে। যত দ্রুত সম্ভব বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের মুখ্য উদ্দেশ্য। বন্যার্তদের সহযোগিতার জন্যই আমরা সরকারি সা’দত কলেজ একটি কনসার্টের আয়োজন করেছি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, সরকারি সা’দত কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর সুব্রত নন্দীসহ টাঙ্গাইলের সর্বস্তরের সাংস্কৃতিক কর্মীবৃন্দ।
একতার কণ্ঠঃ গত ১৪ জুলাই ‘আড়াই হাজার টাকার সিসিটিভি ক্যামেরা ৩২ হাজারে ক্রয়’ শিরোনামে সমকালে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এই সংবাদের জেরে দৈনিক সমকালের ঘাটাইল প্রতিনিধি ও ঘাটাইল প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুম মিয়াকে হাত-পা ভেঙে ফেলার হুমকি দিয়েছেন ঘাটাইল উপজেলার সাগরদিঘী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. হাবিবুল্লাহ্।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) রাতে থানায় সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টি,আর-সাধারণ ৩য় পর্যায়) কর্মসূচির উন্নয়ন প্রকল্পে সাগরদিঘী ইউনিয়ন পরিষদে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের প্রকল্প দেন চেয়ারম্যান। যার বরাদ্দ দেওয়া হয় ১ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। সমকালের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে বরাদ্দের ওই টাকায় ‘ক্যামপ্রো’ ব্র্যান্ডের মাত্র পাঁচটি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। ঢাকার আইসিটি ভবনের ‘গোল্ডেন সান’ ক্যামেরার দোকানে এই ব্র্যান্ডের সিসি ক্যামেরার দাম যাচাই করে জানা যায় ভালো মানের সিসিটিভি ক্যামেরার দাম ২ হাজার ৪৫০ টাকা। সেই হিসেবে পাঁচটি ক্যামেরার দাম ১২ হাজার ২৫০ টাকা।অথচ এই প্রকল্পে বরাদ্দ ছিল ১ লাখ ৬৪ হাজার টাকা।
চেয়ারম্যান হাবিবুল্লাহ্’র এমন দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশের পর থেকেই সমকাল প্রতিনিধির উপর ক্ষিপ্ত হন তিনি। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে শুরু করে অনেক জায়গায় মানুষের কাছে বলে বেড়ান সমকাল প্রতিনিধিকে সাগরদিঘী এলাকায় যেখানেই পাবে সেখানেই বেঁধে হাত-পা ভেঙে দেওয়া হবে। ২৭ আগস্ট সংবাদ সংগ্রহ সংক্রান্ত কাজে ঘাটাইল প্রেস ক্লাবের সহযোগী সদস্য সৈয়দ মিঠুন ও বিপ্লব হোসেন সাগরদিঘী গেলে তাদের কাছে চেয়ারম্যান বলেন, সমকাল প্রতিনিধি মাসুমকে সাগরদিঘী সময় মত পেলে হাত-পা ভেঙে পঙ্গু করে দেওয়া হবে। তিনি তার বাহিনীকে এ ধরণের ঘটনা ঘটানোর কথা নাকি বলে রেখেছেন। এর আগে গত ২২ আগস্ট ঘাটাইল উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের সামনে চেয়ারম্যান হাবিবুল্লাহ্ ওই অফিসের কর্মচারীদের সমকালে প্রকাশিত সংবাদ মোবাইল ফোনে দেখিয়ে তাদের কাছে বলেন, ‘সাগরদিঘী লোক সেট করা আছে, সমকাল প্রতিনিধি মাসুমকে ওই এলাকায় পাইলে হাত-পা বাইন্দা ছিঁড়া ফেলব।’ চেয়ারম্যানের বলা এই কথাগুলো সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ে। ক্যামেরায় ধারণ করা ওই ভিডিও অডিও সমকালের হাতে সংরক্ষিত আছে।
হুমকি দেওয়ার বিষয়ে সাগরদিঘী ইউপি চেয়ারম্যান মো.হাবিবুল্লাহ্’র সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে ফোনে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান তিনি।
ঘাটাইল প্রেস ক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, দুর্নীতির খবর প্রকাশ করায় সাংবাদিককে হুমকি দেওয়ার বিষয়টি অবশ্যই নেক্কারজনক। প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ দেওয়ার অধিকার সবার আছে। তা না দিয়ে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানাই। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। বিষয়টি আইনগতভাবেই আমরা লড়ব।
সাধারণ ডায়েরীর তদন্ত কর্মকর্তা ঘাটাইল থানার উপপরিদর্শক মো.শহিদুজ্জামান বলেন, সমকাল প্রতিনিধি ও ঘাটাইল প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদককে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
দুর্নীতির খবর প্রকাশ করায় সাংবাদিককে হুমকির বিষয়টি আপনি কিভাবে দেখেন? এমন প্রশ্নে ঘাটাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইরতিজা হাসান বলেন, বিষয়টি আমি অবগত হলাম, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করা হবে। পরবর্তীতে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি বুধবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে অবশেষে জামিনে মুক্তি লাভ করেছেন। দুপুরে জামিন লাভের পর তিনি বিকেলেই টাঙ্গাইল কারাগার থেকে বের হয়ে যান।
আদালত সূত্র জানায়, ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে বন্দি সহিদুর রহমান মুক্তির জামিনের জন্য তার আইনজীবীরা টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিন আবেদন করেন।
তারা জানান, সহিদুর রহমান খান মুক্তি কারাগারে খুব অসুস্থ অবস্থায় আছেন। তার অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাচ্ছে। থাইরওয়েডের সমস্যাসহ আরো অনেক রোগে ভুগছেন। সুচিকিৎসা না পেলে তার মৃত্যু হতে পারে। যে কোন শর্তে মুক্তির জামিন চান আইনজীবীরা। পরে ওই আদালতের বিচারক মো. মাহমুদুল হাসান শুনানি শেষে সহিদুর রহমান খান মুক্তির মামলার আগামী ধার্য তারিখ ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেন। আগামী ধার্য তারিখে কি কি চিকিৎসা গ্রহন করলেন তা আদালতকে জানানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোর্ট ইন্সপেক্টর তানভীর হাসান।
টাঙ্গাইল জেলা কারাগারের জেল সুপার মোকলেছুর রহমান জানান, সহিদুর রহমান খান মুক্তির জামিন মঞ্জুরের কাগজপত্র বিকেল ৩টার দিকে কারাগারে আসে। পরে সাড়ে তিনটার দিকে তিনি কারাগার থেকে বের হয়ে যান।
সহিদুর রহমান খান মুক্তির বাবা আতাউর রহমান খান ও ভাই আমানুর রহমান খান রানা টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসন থেকে নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য। এ মামলায় মুক্তির অপর তিন ভাইও আসামী।
সহিদুর রহমান খান মুক্তির পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, মুক্তি পাওয়ার পর তিনি ঢাকায় চিকিৎসা গ্রহনের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে গেছেন। সেখানে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা গ্রহন করবেন।
২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যা মামলায় সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি বের হয়ে আসে। তারপর সহিদুর রহমান খান মুক্তি আত্মগোপনে চলে যান। দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকার পর ২০২০ সালের ২ ডিসেম্বর আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তার জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠান। পরে ২০২২ সালে ১০ ফেব্রুয়ারি তিনি জামিন পেয়েছিলেন। পরে আদালত জামিত বাতিল করার পর ২৮ ফেব্রুয়ারি আবার কারাগারে যান তিনি। এরপর ২০২৩ সালের ২০ নভেম্বর উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়ে ২২ নভেম্বর কারাগার থেকে মুক্ত হন। পরে আদালত তার জামিন বাতিল করলে পরদিনই আদালতে আত্মসমর্পণের পর কারাগারে যান। এরপর থেকে তিনি কারাগারেই ছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ লাশ তার কলেজপাড়া এলাকার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনার তিনদিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদি হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০১৪ সালের আগস্টে গোয়েন্দা পুলিশ এ হত্যার সাথে জড়িত সন্দেহে আনিসুল ইসলাম রাজা ও মোহাম্মদ আলী নামের দুইজনকে গ্রেপ্তার করে। আদালতে এ দুজনের দেওয়া স্বীকারোক্তিতে এই হত্যার সাথে তৎকালিন সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা এবং তার তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পা জড়িত বলে বের হয়ে আসে। ২০১৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় গোয়েন্দা পুলিশ। এতে সহিদুর হমান খান মুক্তির চার ভাইসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। অতিরিক্ত সরকারি কৌশলী মনিরুল ইসলাম খান জানিয়েছেন মামলাটির শুধু তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি। অন্য সব সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।
একতার কণ্ঠঃ বাংলাদেশ ইট প্রস্ততকারী মালিক সমিতির সভাপতি ফিরোজ হায়দার খান বলেছেন, সারা দেশে ৮ হাজারের উপরে ইটভাটা রয়েছে। এসব ইট ভাটায় প্রায় ৫০ লাখ শ্রমিক কাজ করছেন। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কর্মশক্তি হল ইট ভাটার শ্রমিক। ইট ভাটায় ১ লাখ কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে। এর সাথে বাংলাদেশের উন্নয়ন জড়িত রয়েছে। ইট ছাড়া বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। আমরা এ সরকারকে সহযোগিতা করতে চাই। ইটের বিকল্প এখনো কিছু গড়ে উঠেনি।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে রিপোর্টার’স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
দেশে নতুন করে কোনো লাইসেন্স দেওয়া হবে না অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিবেশ ও পানি উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের এমন বক্তব্যে তিনি বলেন, আমরাও চাই অবৈধ ইটভাট বন্ধ হোক। ইটভাটা করতে না দিলে আমাদের অসুবিধা নেই। আমরা সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী করেছি। কিন্ত আমাদের সঠিক নিদের্শনা দিতে হবে। মুখ দিয়ে বলবেন এগুলো বন্ধ করে দিবো, এটা মগের মুল্লুক নয়। এ ধরনের কথা আমরা কারও কাছ থেকে আশা করিনা। যৌক্তিকভাবে আমাদের বলবেন, আমরা যৌক্তিকভাবে সহযোগিতা করবো।
তিনি আরও বলেন, আমরা পরিবেশ ও পানি উপদেষ্টার সাথে বসে এসব বিষয়ে আলাপ কররো। ২০০১ সালে ড্রাম চিমনি বন্ধ করা হয়। কিন্ত এখনো ড্রাম চিমনি চালু রয়েছে। ২০০৭ সালে আবার ফিক্সড চিমনি করা হয়। কিন্ত ফিক্সড চিমনি পরিবর্তন করে ২০১৩ সালে পরিবেশ বান্ধবের কারণ দেখিয়ে জিকজাক প্রদ্ধতিতে ভাটা করা হয়। এসব পরিবর্তন করতে আমাদের লাখ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। সরকারের কোন সুনির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকার কারণে দেশের জন্য মঙ্গলজনক নয়।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের সখীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে হামলার ঘটনায় থানায় মারধরের মামলা করা হয়েছে। সোমবার (২৬ আগস্ট) রাতে পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক মোর্শেদুল ইসলাম অন্তর বাদী হয়ে সখীপুর থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় টাঙ্গাইল-৮ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অনুপম শাহজাহান জয় ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সাঈদ আজাদসহ ১৬৭ আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া আসামি করা হয়েছে অজ্ঞাত আরও ১৫০ জনকে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের দাবিতে পৌর শহরের সৌখিন মোড় থেকে একটি মিছিল বের হয়। দুপুর ১২টার দিকে মিছিলটি শহরের তালতলা চত্বরে পৌঁছায়। এ সময় পূর্বপরিকল্পিতভাবে এজাহারে উল্লেখিত আসামিরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মিছিলে হামলা করে।
হামলায় আন্দোলনরত বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন। এ ঘটনার ২৩ দিন পর সখীপুর থানায় মামলা হয়। মামলায় সাবেক এমপি-উপজেলা চেয়ারম্যান ছাড়াও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শওকত শিকদার, সাবেক পৌর মেয়র মুক্তিযোদ্ধা আবু হানিফ আজাদসহ উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানদেরও আসামি করা হয়েছে।
সখীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ শাহিনুর রহমান জানান, মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
একতার কণ্ঠঃ দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে টাঙ্গাইলের বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা সোসাইটি ফর সোসাল সার্ভিস (এসএসএস)।
প্রাথমিকভাবে বন্যাদুর্গত মানুষের জন্য সংস্থাটি ৬ কোটি টাকার প্রাথমিক তহবিল নিয়ে বন্যার্তদের সহায়তার জন্য কাজ শুরু করেছে। প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ১ দিনের বেতন ১ কোটি টাকার চেক অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে প্রদান করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এসএসএস’র কর্মকর্তারা।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে টাঙ্গাইল শহরের ময়মনসিংহ রোডে অবস্থিত এসএসএস’র ফাউন্ডেশন অফিসে সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির সিনিয়র পরিচালক (ঋণ) সন্তোষ চন্দ্র পাল এই সব তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ভয়াবহ বন্যার কবলে দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। বিশেষ করে ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর ও আশপাশের জেলার বেশিরভাগ এলাকা এখন বন্যার পানির নিচে। এসব এলাকার এসএসএসের ১৫৩ টি শাখার ১০৭ টি শাখার প্রায় দেড় লক্ষাধিক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত। পাশাপাশি সংস্থার উদ্বৃত্ত তহবিল থেকে ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অতিরিক্ত পাঁচ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। বরাদ্দকৃত টাকার মধ্যে দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে বন্যার্তদের ত্রাণ সহায়তার জন্য চাল, ডাল, চিড়া, আলু, তেল, খেজুর, লবণ, চিনি, গ্যাস লাইট, মোমবাতি, ওরস্যালাইন, গুঁড়া দুধ, বিস্কুটের প্রাথমিকভাবে ১লক্ষ প্যাকেট বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণ হিসেবে প্রদানের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এছাড়া বন্যা কবলিত এলাকায় জনগণের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে সংস্থায় কর্মরত মেডিকেল অ্যাসিস্টেন্টদের মাধ্যমে ২০টি মেডিক্যাল ক্যাম্প আয়োজন ও বিনামূল্যে ওষুধ প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ইতিমধ্যে, লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসন স্থানীয়ভাবে ত্রাণ কার্যক্রম সমন্বয়ের জন্য সদর উপজেলায় এসএসএস-কে দায়িত্ব প্রদান করেছে।
তিনি আরও জানান, ত্রাণ কার্যক্রমের পাশাপাশি বন্যাদুর্গত এলাকায় সংস্থার সমিতিভুক্ত সদস্যদের চাহিদা অনুযায়ী পুনর্বাসনের কৃষি, মৎস্য, প্রাণিসম্পদ, ঘর মেরামত, ওয়াটার, স্যানিটেশন প্রভৃতি বিষয়ের জন্য সংস্থা সাড়ে তিন কোটি টাকা অনুদান প্রদানের জন্য অর্থ বরাদ্দ করেছে। এছাড়া চলমান ক্ষুদ্র অর্থায়ন ঋণের পাশাপাশি দুর্যোগ কাটিয়ে ওঠার জন্য অত্যন্ত সহজশর্তে ৩০ কোটি টাকা দুর্যোগকালীন/সাহস ঋণ প্রদানের পরিকল্পনা রয়েছে সংস্থাটির।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এসএসএসের যুগ্ম পরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম খান, উপ পরিচালক এসএম ইয়াহিয়া, সহকারি পরিচালক শামছুল আরেফীন ও ফয়সাল আহমেদ, টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি জাফর আহমেদ, সহ-সভাপতি কাজী জাকেরুল মওলা প্রমুখ।
পরে সংবাদ সম্মেলন শেষে উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের তাদের প্রাণ কার্যক্রম ঘুরিয়ে দেখানো হয়। এসময় সরেজমিন দেখা যায়, এসএসএস ভবনের কর্মকর্তার-কর্মচারীগণ শুকনা খাবারসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য প্যাকেটজাত কাজে নিয়োজিত রয়েছে। এরমধ্যে পাঁচ কেজি চাল, তিন কেজি আলু, এক কেজি ডাল, এক লিটার তেল, চিনি, চিড়া, লবন, বিষ্কুট, খেজুর, শিশুদের জন্য গুড়া দুধ, খাবার স্যালাইন, মোমবাতি ও লাইটার রয়েছে। পরে তা বিতরণের জন্য ট্রাকে তুলে বন্যা উপদ্রুত জেলা গুলোর উদ্দেশ্যে পাঠানো হচ্ছে।
একতার কন্ঠঃ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলছেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে গিয়ে দিল্লিতে বসে ষড়যন্ত্র করছে। সে বাংলাদেশে আসার স্বপ্ন দেখছে, তার স্বপ্ন দেখতে হবে না। শেখ হাসিনা পৃথিবীর যেই প্রান্তেই ষড়যন্ত্র করুক না কেন, তার বিচার বাংলাদেশের আদালতে হবে। নয়তো আন্তর্জাতিক আদালতে হবে। তাকে বিচারের সম্মুখিন করতেই হবে, করব ইনশাআল্লাহ।
সোমবার (২৬ আগস্ট) বিকেলে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিতে নিহত শহীদ ফিরোজ তালুকদার পলাশের পরিবারের খোঁজ-খবর ও কবর জিয়ারত করতে এসে উপজেলা ও পৌর বিএনপির উদ্যোগে ভূঞাপুর বাসস্ট্যান্ড চত্বরে আয়োজিত এক পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বললেন।
সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশের বিচার বিভাগকে ঢেলে সাজাতে হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শহীদদের দাবি ছিল- বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ ও অসম্প্রদায়িক স্বাধীন সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্র। যেখানে আইনের সুশাসন থাকবে সমান, অধিকার সমন্বত থাকবে। আমরা আইনের সুশান প্রতিষ্ঠাতা করব। যে বিচারক বাংলাদেশের প্রকৃত বিচারক হবে, দক্ষ, সৎ, আইনের সুশাসন কায়েম করবে এবং ন্যায় বিচারক হবে।
তিনি বলেন, যদি তা না হয়-আমি বলব কুলাঙ্গার খায়রুল ও কালো মানিকের মতো অবস্থা হবে, যদি আইনের সুশাসন ব্যবস্থা না করেন। যদি দলের বিচারক হন, যা হবার তাই হবে। প্রধান বিচারপতি পদত্যাগ করার সময় পাননি। সেই অবস্থা হবে এবং আমরা তাদেরকে আইনের আওতায় আনব। যারা বিচার বিভাগকে ধ্বংস করেছেন, তারা শুনে রাখুন, কেউ বিচারের আওতা থেকে বাদ যাবেন না।
সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিম্ন আদালতে পাঁচ বছরের সাজা দিয়ে হাইকোর্টে বর্ধিত করে দশ বছরের সাজা দিয়েছেন। আজকে সারাদেশের মানুষ এবং এই অন্তবর্তী সরকার চিঠি লেখার সময় পায়নি। খালেদা জিয়া মুক্ত। এই রকম বিপ্লব সাধণের মধ্যে দিয়ে আমরা জনগণের বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আন্দোলনে শহীদদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করব। যাতে কেউ যেন দেশকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে।
টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর-গোপালপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক উপমন্ত্রী এডভোকেট আব্দুস সালাম পিন্টুর মুক্তির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তিনি আমার সহকর্মী। বাংলাদেশের একজন উপমন্ত্রী ছিলেন। সে নির্যাতিত, দীর্ঘ এক যুগের বেশি সময় ধরে কারাভোগ করছে। আমি ভূঞাপুরের মাটিতে পা রাখার সাথে সাথে শ্লোগানে দাবি উঠে সালাম পিন্টুর মুক্তি চাই, সালাম পিন্টুর মুক্তি চাইতে হবে না। কিছুদিনের মধ্যেই তিনি মুক্ত হবে।
বিএনপির প্রচার সম্পাদক ও যুবদলের সাবেক সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুরর সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এডভোকেট ওবায়দুল হক নাছির, টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীন, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট ফরহাদ ইকবাল, সাবেক সদস্য সচিব মাহমুদুল হক ছানু, উপজেলা বিএনপি সভাপতি এডভোকেট গোলাম মোস্তফা প্রমুখ।
একতার কণ্ঠঃ ঢাকায় আনসারদের আন্দোলনের কর্মসূচিতে সচিবালয় ঘেরাও ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে টাঙ্গাইলে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন টাঙ্গাইল জেলা শাখার সদস্যরা।
সোমবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সামনে ঘণ্টাব্যাপী এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।মানববন্ধনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
এসময় তারা বলেন, একটি কুচক্রী মহল দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়। রবিবার (২৫ আগস্ট) রাতে আনসার সদস্য কর্তৃক ঢাকায় সচিবালয় ও ছাত্রদের ওপর হামলার ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। অন্যথায় আগামীতে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।
পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা শহরে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে আনসার ক্যাম্পের সামনে যায়। পরে সেখান থেকে মিছিলটি লৌহজং নদী দখল পরিদর্শন করে।
একতার কণ্ঠঃ ফেনী-নোয়াখালী ও কুমিল্লাসহ দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় কয়েকটি জেলায় চলমান ভয়াবহ বন্যায় দুর্গতদের পাশে দাঁড়িয়েছে টাঙ্গাইলের ‘মানুষের কল্যাণে মানুষ ফাউন্ডেশন’।
সংস্থাটির সাধারণ সম্পাদক নাফিসা তাবাসসুম খানের নেতৃত্বে ৬ জনের একটি টিম রবিবার (২৫ আগস্ট) বন্যা দুর্গত এলাকায় গিয়েছেন। বন্যার্তদের মাঝে তারা ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করছেন।
ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান পারুল মাহবুব খান জানান, দেশের যেকোনো দুর্যোগ মুহূর্তে ‘মানুষের কল্যাণে মানুষ ফাউন্ডেশন’ মানুষের পাশে দাঁড়ায়। এর আগেও বিভিন্নও সময় বন্যাসহ বিভিন্ন দুর্যোগে সংস্থাটি দুর্গতদের নানাভাবে সহযোগিতা করেছে। আমরা আমাদের সাধ্য মতো কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি আরও জানান, বিত্তবানরা যদি এগিয়ে আসে তাহলে আরও সুন্দরভাবে বন্যাকবলিত মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারবো।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের কালিহাতিতে ট্রাক চাপায় এক মোটরসাইকেল চালক নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (২৬ আগস্ট) সকাল ৮টার দিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের জোকারচর এলাকার ১৮নম্বর ব্রিজের উপর এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। দুর্ঘটনার কারণে মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ মরদেহ ও দুর্ঘটনা কবলিত মোটরসাইকেলটি ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নিলে যান-চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে।
নিহত ওই মোটরসাইকেল চালকের নাম সাজেদুল ইসলাম (৪৫)। সে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার শাহাপুর এলাকার আতাতুল্লাহ ফকিরের ছেলে। তিনি গাজীপুরের ভাওয়াল গড়ে চাকরি করতেন।
বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থানার এসআই নাজমুল ইসলাম জানান, সোমবার সকালে সাজেদুল মোটরসাইকেল যোগে গাজীপুর থেকে ঈশ্বরদী যাচ্ছিলেন। এসময় ঘটনাস্থলে পৌঁছালে একটি বাস মোটরসাইকেলটিকে চাপা দিলে মোটরসাইকেলটি ব্রিজের উপর পরে যায়। পরে পেছনে থাকা একটি ট্রাক মোটরসাইকেলটির উপর দিয়ে চলে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই সাজেদুলের মৃত্যু হয়।
তিনি আরও জানান, খবর পেয়ে মরদেহ ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থানায় নিয়ে রাখা হয়েছে। নিহতের পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। তারা এলে আইনগত প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ-ঘটনায় বাস ও ট্রাকটিকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
একতার কণ্ঠঃ দেশের দারিদ্র্য বিমোচন ও নারীর ক্ষমতায়নে ক্ষুদ্রঋণের ভূমিকা অপরিসীম। বর্তমানে দেশে সাত শতর বেশি প্রতিষ্ঠান এ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত। ক্ষুদ্রঋণের অগ্রযাত্রা ও প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকাণ্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন। এ বিষয়ে বুরো বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক ও চেয়ার, এনজিও ফেডারেশন জাকির হোসেনের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন প্রথম আলোর প্রতীক বর্ধন।
প্রথম আলো: ক্ষুদ্রঋণ বাংলাদেশের দারিদ্র্য বিমোচনে বড় ভূমিকা পালন করেছে। গত ৫৩ বছরে এনজিওগুলোর ভূমিকা কীভাবে দেখছেন?
জাকির হোসেন: ৫৩ বছরে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। ১৯৭০ সালে দেশে মাথাপিছু আয় ছিল ১০০ মার্কিন ডলার আর বর্তমানে প্রায় ২ হাজার ৮০০ মার্কিন ডলার। উপার্জন বরাবরই উৎপাদনের সঙ্গে সম্পর্কিত আর এই উৎপাদন ও উপার্জনপ্রক্রিয়ার বিকাশে শুধু সরকার নয়, সরকারের অংশীদার হিসেবে এনজিও-এমএফআই (ক্ষুদ্র ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান) খাত নিভৃতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে। এ খাত স্বাধীনতা-পরবর্তী দরিদ্র ও হতদরিদ্র-অধ্যুষিত বাংলাদেশে প্রাথমিকভাবে দারিদ্র্য নিরসন ও আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির দিকে বেশি নজর দিয়েছে। পরবর্তীকালে দেশে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যায়ে ক্ষুদ্র শিল্পের বিকাশ ঘটিয়ে অর্থনৈতিক বৈচিত্র্য নিশ্চিত করেছে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতেও এনিজওগুলোর ভূমিকা পালন করছে। আমাদের এই খাতের মাধ্যমে সাড়ে তিন কোটি মানুষের মধ্যে প্রায় পৌনে তিন লাখ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে।
প্রথম আলো: কয়েক বছর ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে দারিদ্র্য পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে এনজিওগুলোর কী ভূমিকা রাখতে পারে?
জাকির হোসেন: বিগত দশকগুলোয় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক যে উন্নয়ন ঘটেছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে, ২০৩৩ সাল নাগাদ আমরা বিশ্বের ২৪তম বৃহত্তম অর্থনীতির স্বীকৃতি অর্জন করতে সক্ষম হব। তবে এ দুই সময়ের মধ্যবর্তী ভূরাজনৈতিক ও প্রাকৃতিক ঘটনাগুলোর প্রভাবের কথাও আমাদের বিবেচনায় রাখতে হবে। এ ধরনের সংঘাত-সংঘর্ষ কিংবা দুর্যোগ গভীরভাবে দেশীয় অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির জন্য অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার পাশাপাশি এগুলোও দায়ী। তবে আমাদের দেশীয় অব্যবস্থাপনা থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নেওয়ার সুযোগ নেই।
প্রথম আলো: কয়েক বছর ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে দারিদ্র্য পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে এনজিওগুলোর কী ভূমিকা রাখতে পারে?
জাকির হোসেন: বিগত দশকগুলোয় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক যে উন্নয়ন ঘটেছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে, ২০৩৩ সাল নাগাদ আমরা বিশ্বের ২৪তম বৃহত্তম অর্থনীতির স্বীকৃতি অর্জন করতে সক্ষম হব। তবে এ দুই সময়ের মধ্যবর্তী ভূরাজনৈতিক ও প্রাকৃতিক ঘটনাগুলোর প্রভাবের কথাও আমাদের বিবেচনায় রাখতে হবে। এ ধরনের সংঘাত-সংঘর্ষ কিংবা দুর্যোগ গভীরভাবে দেশীয় অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির জন্য অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার পাশাপাশি এগুলোও দায়ী। তবে আমাদের দেশীয় অব্যবস্থাপনা থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নেওয়ার সুযোগ নেই।
প্রথম আলো: শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের টেকসই উন্নয়নে এনজিওগুলো অনেক দিন ধরে কাজ করছে। এ খাতে নতুন আর কী কী করার আছে বলে মনে করেন।
জাকির হোসেন: আপনি ঠিকই বলেছেন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে দীর্ঘদিন ধরেই এনজিও-এমএফআইগুলো কাজ করে যাচ্ছে। তবে এ দুই খাতে আমাদের কাজগুলো প্রাথমিক ও মাঠপর্যায়ের। সম্প্রতি দু-একটি এনজিও বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজসহ হাসপাতাল স্থাপন করে সাধারণ মানুষকে সেবা দিচ্ছে, যদিও এর ব্যাপকতা তেমন একটা নয়। সরকারি হাসপাতাল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো যে মান ধরে রাখতে পারেনি, আমরা তা পেরেছি। পাশাপাশি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা পর্যায়ে এনজিও-এমএফআই খাতের অনেকেই মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়ার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। ব্র্যাক, আশা, বুরো বাংলাদেশ, টিএমএসএস—এগুলোর সবারই কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল কিংবা মেডিকেল কলেজ আছে।
প্রথম আলো: ক্ষুদ্রঋণের সেবা ডিজিটালাইজেশনের প্রয়োজনীয়তা বোধ করছেন কি?
জাকির হোসেন: বুরো বাংলাদেশসহ বেশ কয়েকটি এনজিও-এমএফআই এ ক্ষেত্রে অনেক দূর এগিয়েছে। আরও অনেক প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল যাত্রায় সংযুক্ত হওয়ার জন্য কাজ করছে। বুরো বাংলাদেশসহ দেশের শীর্ষ কয়েকটি উন্নয়ন সংস্থা শাখাগুলোয় শতভাগ অটোমেশন সম্পন্ন করে পরিপূর্ণ ডিজিটালাইজেশনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বুরো বাংলাদেশ গ্রাহকদের জন্য ডিজিটাল মাধ্যমে ঋণ ও সঞ্চয় সেবা দেওয়া শুরু করে ২০১৯ সালে।
প্রথম আলো: আপনাদের প্রতিষ্ঠান এ পর্যন্ত কী পরিমাণ ক্ষুদ্রঋণ দিয়েছে? এর কী প্রভাব পড়েছে বলে মনে করছেন?
জাকির হোসেন: আমরা গ্রাহকদের এ পর্যন্ত ৯৪ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়েছি। এই ঋণের অর্থে অনেক মানুষ, যাঁদের অধিকাংশই নারী, নিজেদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন, কেউ উদ্যোক্তা হয়ে উঠেছেন, কেউ তাঁর সন্তানকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলেছেন, কেউ কেউ বংশানুক্রমিক পেশা সচল রেখেছেন, কেউবা ছোট ব্যবসা বড় করেছেন। পরিবারে সচ্ছলতা এসেছে। তাঁরা অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন এবং অনেক মানুষকে উদ্যোক্তা হওয়ার সাহস জুগিয়েছেন। সমাজে এর প্রভাব বিপুল। ক্ষুদ্র ও মাঝারি পরিসরে তাঁরা অর্থনীতিতে যে অবদান রাখছেন, তার উৎসে আছে বুরো বাংলাদেশের ঋণসহায়তা।
জাকির হোসেন
প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক, বুরো বাংলাদেশ
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহাদাত হুসেইনের বদলির আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে উপজেলা পরিষদে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (২৫ আগস্ট) সকালে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তালা ঝুলিয়ে দেওয়ায় উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা পরিষদের দৈনন্দিন কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে।
জানা গেছে, কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হুসেইনের বদলির আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা রবিবার সকালে উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসনের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এতে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা পরিষদের কোন কর্মকর্তা কার্যালয়ে প্রবেশ করতে পারেননি। এদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্থানীয় বিভিন্ন স্কুল-কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে সমবেত হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকে।
এ সময় কালিহাতীর ইউএনও শাহাদাত হুসেইনের বদলির আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থী রাসেল, আল আমিন, সাব্বির, রাশেদুল, রিফাত, আশরাফুল, কবির, হৃদয়, শাওন, হাবিব, সাজিদ প্রমুখ হ্যান্ড মাইকে নানাবিধ স্লোগান দেন ও বক্তব্য রাখেন।
তারা দাবি করেন, কালিহাতীর ইউএনও একজন কর্মমুখি-শিক্ষাবান্ধব ও ন্যায়-নীতিবান ভালো মানুষ। তার বদলির আদেশ তারা মানেন না। তার বদলির আদেশ প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
কালিহাতী উপজেলা সমাজসেবা অফিসার শহিদুজ্জামান মাহমুদ, কৃষি অফিসার ফারহানা মামুন, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শিল্পী দে, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. সেহাব উদ্দিন, হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মো. লিয়াকত হোসেন, পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন সহ অন্যান্য কর্মকর্তারা জানান, বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। শিক্ষার্থীরা উপজেলা প্রশাসনের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ায় তারা স্ব স্ব কার্যালয়ে ঢুকতে পারছেন না। এতে দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত হচ্ছে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিফাত বিন সাদেক জানান, ভাগ্যক্রমে তাঁর কার্যালয়টি উপজেলা কমপ্লেক্সের বাইরে থাকায় তিনি তালাবদ্ধের আওতায় পড়েননি। তবে উপজেলা প্রশাসনের মূল ফটকে তালা দেওয়ায় প্রতিদিনের কাজ ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়টি নিয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছেন।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. কায়ছারুল ইসলাম জানান, ইউএনও’র বদলির বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের। তিনি সার্বক্ষণিক কালিহাতীর উদ্ভুত পরিস্থিতির খোঁজখবর নিচ্ছেন এবং তা যথাযথভাবে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করছেন।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সন্ধ্যায় কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হুসেইনের বদলির আদেশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে শিক্ষার্থীরা মশাল মিছিল নিয়ে বিক্ষোভ করতে করতে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করেন। পরদিন শুক্রবার (২৩ আগস্ট) একই দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। এদিন শিক্ষার্থীরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইউএনও’র বদলির আদেশ প্রত্যাহার না করা হলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার হুশিয়ারী দেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের সিনিয়র সচিব সাগুফতা হক স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বদলি করে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নির্বাহী অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।