একতার কণ্ঠঃ আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে টাঙ্গাইলের ৮টি আসনে এখন পর্যন্ত ৫৮ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করছেন। ইতোমধ্যে ২ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্র জানায়, মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) বিকেল পর্যন্ত টাঙ্গাইলের ৮টি সংসদীয় আসনের বিপরীতে ৫৮টি মনোনয়নপত্র বিক্রি হয়েছে। আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম), জাসদ, বাংলাদেশ বিকল্পধারা, বাংলাদেশের ওয়ার্কাস পার্টি, বাংলাদেশ কংগ্রেস, জাকের পার্টি, বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল মনোনীত প্রার্থী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে তাদের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। একই সাথে ২ জন মনোনয়নপত্র জমাও দিয়েছেন।
সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মতিয়ুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মনোনয়নপত্র সংগ্রহকারীরা হলেন- টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসনে ড. আব্দুর রাজ্জাক (আওয়ামী লীগ), মোহাম্মদ আলী (জাতীয় পার্টি), রফিকুল ইসলাম (জাকের পার্টি)।
টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনে তানভীর হাসান ছোট মনির (আওয়ামী লীগ), খন্দকার মশিউজ্জামান রোমেল (স্বতন্ত্র ), ইউনুছ ইসলাম তালুকদার (স্বতন্ত্র), মাসুদুল হক মাসুদ (স্বতন্ত্র), এমরান হক চৌধুরী (স্বতন্ত্র) হুমায়ুন কবির তালুকদার (জাতীয় পার্টি) ও এনামুল হক মনজু (জাকের পার্টি)।
টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনে অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান (আওয়ামী লীগ), বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম (কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ), জাকির হোসেন (বিএনএম), আমানুর রহমান খান রানা (স্বতন্ত্র), ফরিদা রহমান খান (স্বতন্ত্র), সাখাওয়াত খান সৈকত (বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল) ও আব্দুল আজিজ খান (জাকের পার্টি)।
টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে মোজহারুল ইসলাম তালুকদার ঠান্ডু (আওয়ামী লীগ), আবদুল লতিফ সিদ্দিকী (স্বতন্ত্র), মুরাদ সিদ্দিকী (স্বতন্ত্র), ইঞ্জিনিয়ার লিয়াকত আলী (জাতীয় পার্টি), সারওয়াত সিরাজ (স্বতন্ত্র), মোন্তাজ আলী (জাকের পার্টি)।
টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে অ্যাডভোকেট মামুনুর রশিদ মামুন (আওয়ামী লীগ), মুরাদ সিদ্দিকী (স্বতন্ত্র), জামিলুর রহমান মিরন (স্বতন্ত্র), ছানোয়ার হোসেন (স্বতন্ত্র), খন্দকার আহসান হাবিব (স্বতন্ত্র), মোজাম্মেল হক (জাতীয় পার্টি), তৌহিদুর রহমান চাকলাদার (বিএনএম), মেহেরনিগার হোসেন তন্ময় (স্বতন্ত্র), শরিফুজ্জামান খান (তৃণমূল বিএনপি) ও দুলাল মিয়া (জাকের পার্টি)।
টাঙ্গাইল-৬ (নাগরপুর-দেলদুয়ার) আসনে আহসানুল ইসলাম টিটু (আওয়ামী লীগ), মুহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম (স্বতন্ত্র), তোফায়ের আহমেদ (স্বতন্ত্র), সৈয়দ মাহমুদুল ইলাহ (স্বতন্ত্র), খন্দকার ওয়াহিদ মুরাদ (স্বতন্ত্র), আব্দুল হাফেজ বিলাস (স্বতন্ত্র), জাকিরুল ইসলাম উইলিয়াম (স্বতন্ত্র), তারেক শামস খান (স্বতন্ত্র), রাকিব হোসেন (স্বতন্ত্র), মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন (বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন) ও আব্দুল করিম (বিএসপি)।
টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনে খান আহমেদ শুভ (আওয়ামী লীগ), মোশারফ হোসেন (স্বতন্ত্র), গোলাম নওজব চৌধুরী (বাংলাদেশের ওয়ার্কাস পার্টি), রূপা রায় চৌধুরী (বাংলাদেশ কংগ্রেস), রাফিউর রহমান খান ইউসুফজাই (স্বতন্ত্র), মীর এনায়েত হোসেন মন্টু (স্বতন্ত্র), জহিরুল ইসলাম জহির (জাতীয় পার্টি), মোক্তার হোসেন (জাকের পার্টি), আরমান হোসেন তালুকদার (কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ) ও মঞ্জুর রহমান মজনু (জাসদ)।
টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর-বাসাইল) আসনে অনুপম শাহজাহান জয় (আওয়ামী লীগ), আবুল হাসেম (বাংলাদেশ বিকল্পধারা), বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম (কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ) ও আব্দুল জলিল (জাকের পার্টি)।
একতার কণ্ঠঃ প্রধানমন্ত্রীর অধীনে নির্বাচনে যাইনি, যাচ্ছি না। নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন হবে এটা স্বত:সিদ্ধ কথা। বিএনপি এখন দেশের কথা ভাবছে না। তারা আন্তর্জাতিক ক্ষমতা দ্বারা সরকারে যেতে চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম।
বুধবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনে সখীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। পরে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ভোট কেন্দ্রে ভোটার না এলে নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। আর প্রচুর পরিমান ভোটার এলে গ্রহনযোগ্যতা পাবে। কোন দল এলো আর কোন দল এলো না এটা আমার কাছে বড় কথা না। বড় কথা হচ্ছে সরকারি প্রভাব মুক্ত স্বত:স্ফুর্ত নির্বাচন হলো কি না। ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোট কেন্দ্রে এসে তাদের ইচ্ছেমত প্রার্থীদের ভোট দিতে পারলো কি না এটাই হচ্ছে আমার কাছে বড় কথা। দেশের আজকে অস্থিতিশীল অবস্থা। এখান থেকে পরিত্রাণ পাওয়া দরকার।
এসময় কৃষক শ্রমীক জনতা লীগের জেলা ও উপজেলা শাখার নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলে দশম শ্রেনীর এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। সেই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বুধবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক মাহবুবুর রহমান এ রায় দেন। ধর্ষণের ফলে জন্ম নেওয়া শিশুর ভরণপোষণ রাষ্ট্র বহন করবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।
দন্ডিত যুবক শহীদুল ইসলাম খোকন (২৩)। তিনি টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার শেখ শিমুল গ্রামের আব্দুল আলিমের ছেলে।
টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আলী আহমেদ জানান, ভিকটিম ঘাটাইল উপজেলার স্থানীয় একটি মাদ্রাসার ১০ম শ্রেনির শিক্ষার্থী। দন্ডিত শহীদুল ইসলাম খোকন ভিকটিমের প্রতিবেশি চাচাতো ভাই। সেই সুযোগে খোকন ভিকটিমের বাড়িতে ও মাদ্রাসায় যাওয়া আসার পথে তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিতো। পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ওঠে। সেই সর্ম্পকের সূত্র ধরে ২০২১ সালের ১ অক্টোবর বিয়ের আশ্বাস দিয়ে খোকন নিজের বাড়িতে নিয়ে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে।
তিনি জানান, এরপর সুযোগ পেলেই দন্ডিত খোকন ওই মাদ্রাসা ছাত্রীকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। এতে ওই ছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। পরে বিষয়টি ছাত্রীর পরিবারের লোকজন জানতে পারলে স্থানীয়ভাবে বিচার সালিসের ব্যবস্থা করা হয়। তখন খোকন তাকে বিয়ে করবে এবং ওই অনাগত সন্তানকে স্বীকৃতি দিবে বলে স্বীকার করে। পরবর্তীতে খোকন মাদ্রাসা ছাত্রীকে বিয়ে না করে পালিয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, পরে ওই ছাত্রীর মামা ছানোয়ার হোসেন বাদী হয়ে ২০২২ সালের ২০মে ঘাটাইল থানায় শহীদুল ইসলাম খোকনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করতে গেলে থানা পুলিশ মামলা না নেওয়ায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে মামলা দায়ের করেন। পরে ওই ছাত্রী পুত্রসন্তান জন্ম দেন। ডিএনএ পরীক্ষায় আসামি খোকন ওই শিশুর জৈবিক পিতা বলে প্রমানিত হয়। তদন্ত শেষে এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে প্রতিবেদনপত্র জমা দেন। পরে এই মামলায় নয়জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বুধবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (১) ধারায় শহীদুল ইসলাম খোকনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয় বিচারক।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আলী আহমেদ। সহযোগিতা করেন সহকারি সরকারি কৌঁসুলি আব্দুর রহিম ও মোহাম্মদ আব্দুল কুদ্দুস। এ মামলায় আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন ইলিয়াস খান পারভেজ।
একতার কণ্ঠঃ নবম দফায় বিএনপি’র হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি শুরুর আগে টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলায় মহাসড়কের পাশে রাখা বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে বাসটির অধিকাংশ পুড়ে গেলেও কোনো হতাহত হয়নি।
সোমবার(২৭ নভেম্বর )রাত সাড়ে ১১টা দিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের ডুবাইল ইউনিয়নের নাটিয়াপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে দেলদুয়ার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)মোস্তাফিজুর রহমান জানান।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে তিনি জানান, বাসটি টাঙ্গাইল বাসস্ট্যান্ড থেকে মির্জাপুর ও সখিপুর রোডে যাতায়াত করে থাকে। মাঝে মাঝে মির্জাপুরের বিভিন্ন গার্মেন্টসের কর্মীদেরও নিয়ে আসা যাওয়া করে বাসটি।
তিনি আরও জানান,সোমবার পোশাক কর্মীদের নামিয়ে বাসটি নাটিয়াপাড়া মহাসড়কের পাশে দাঁড় করিয়ে রাখাছিল। পরে হঠাৎ রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাসে ভিতরে ঘুমিয়ে থাকা হেলপার বাবলু মিয়া আগুন দেখতে পান।”
তার চিৎকারে আশেপাশে থাকা মানুষরা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে তারা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
বাসের হেলপার বাবলু মিয়া বলেন, “মহাসড়কের পাশে বাস দাঁড় করিয়ে রেখে আমি ঘুমিয়ে যাই। কিছুক্ষণ পরে দেখি বাসের পিছনে আগুন।”
দেলদুয়ার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার রাসেল মিয়া বলেন, “স্থানীয়রা সংবাদ দিলে আমরা ১৫ মিনিটের মধ্যে এসে বাসটির আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। বাসে শুধু হেলপার ছিলেন, তিনি আগুন দেখেই বের হয়ে আসেন তাই কোনো হতাহত নেই।”তবে বাসের ভেতর অনেকাংশই পুড়ে গেছে বলে জানান তিনি।
ওসি মোস্তাফিজুর বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে, নাশকতা সৃষ্টির জন্য বাসটিতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। আলামত সংগ্রহ করা হচ্ছে। তদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইল পৌর শহরে পুকুরের পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে । রবিবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইল পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের কাগমারা পন্ডিত পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- ওই এলাকার মো. ওয়াহাব মিয়ার মেয়ে ওয়াছেনা আক্তার(৫) ও মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে রিহান মিয়া (৪)। তারা সম্পর্কে খালাতো ভাই-বোন।
এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টাঙ্গাইল পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুল ইসলাম সরকার।
তিনি বলেন, নিহত ওই দুই শিশু সকালে উঠানে খেলা করছিল। এক পর্যায়ে তারা পরিবারের সদস্যদের অগোচরে বাড়ির পাশে পুকুরে পড়ে যায়। তাদের বাড়ির সদস্যরা খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে পুকুরে ভাসমান অবস্থায় তাদের দেখতে পায়। পরে তাদের উদ্ধার টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বাদ আছর তাদের নামাজে জানাযা শেষে কাগমারা কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল পুলিশফাঁড়ির ইনচার্জ আতিকুর রহমান ভূইয়া জানান, হাসাতালে ওই শিশু দুইটি নিয়ে আসলেও মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয়েই পরিবারের লোকজন মরদেহ দুটি নিয়ে গেছেন।
টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুস ছালাম মিয়া জানান, বিষয়টি আমি জেনেছি। এব্যপারে থানায় কেও অভিযোগ করেননি।
একতার কণ্ঠঃ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে টাঙ্গাইলের আটটি সংসদীয় আসনে নৌকার প্রার্থীদের নামের তালিকা প্রকাশ করেছে আওয়ামী লীগ। এতে চারটিতে পুরাতন ও চারটি নতুন মুখ রয়েছে।
রবিবার (২৬ নভেম্বর) বিকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের চূড়ান্ত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। এবার জেলার ৮টি আসনের মধ্যে চারটি আসনে বর্তমান এমপিদের কপাল পুড়েছে। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার গোপনে চূড়ান্ত জরিপ শেষে শেখ হাসিনা টাঙ্গাইলের তালিকা তৈরি করেন।
এবার যারা আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন, তারা হলেন টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসনে বর্তমান সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি টানা পঞ্চম বারের মতো দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। বিগত ২০০১ সালে ড. আব্দুর রাজ্জাক এই আসনে বিজয়ী হওয়ার পর থেকে আসনটি আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছে।
টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর-গোপালপুর) আসনে বর্তমান এমপি তানভীর হাসান ছোট মনির দ্বিতীয়বারের মতো দলের মনোনয়ন পেয়েছেন। তিনি টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক।
টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের বর্তমান এমপি আতাউর রহমান খান। তিনি এবার দলীয় মনোনয়ন পাননি। মনোনয়ন পেয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের মহাসচিব ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান।
টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনের বর্তমান এমপি হাছান ইমাম খান সোহেল হাজারী। এবার তিনি দলীয় মনোনয়ন পাননি। মনোনয়ন পেয়েছেন কালিহাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোজহারুল ইসলাম তালুকদার ঠান্ডু।
টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনের বর্তমান এমপি ছানোয়ার হোসেন। তিনি এবার দলীয় মনোনয়ন পাননি। এবার আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মামুনুর রশিদ মামুন।
টাঙ্গাইল-৬ (নাগরপুর-দেলদুয়ার) আসনের বর্তমান এমপি আহসানুল ইসলাম টিটু। তিনি তৃতীয় বারের মতো আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। তিনি টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) এ আসনের বর্তমান এমপি খান আহমেদ শুভ। তিনি দ্বিতীয় বারের মতো আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) এ আসনের বর্তমান এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের। তিনি এবার দলীয় মনোনয়ন পাননি। এ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন সখীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি অনুপম শাজাহান জয়।
একতার কণ্ঠঃ আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তিকে ২০ নভেম্বর দেওয়া জামিন বাতিল করে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
তথ্য গোপন করে জামিন নেওয়ার বিষয়টি নজরে আসায় রবিবার (২৬ নভেম্বর) বিকালে বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
তিনি জানান, গত ২৩ আগস্ট বিচারিক আদালতে ছয় মাসের মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলাটি নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। এই অবস্থায় তথ্য গোপন করে ২০ নভেম্বর হাইকোর্টে জামিন পান সহিদুর রহমান। এরপর ২২ নভেম্বর তিনি জামিনে মুক্তি পান। বিষয়টি নজরে আসায় মামলাটি আবার হাইকোর্ট বিভাগের কার্যতালিকায় আসে। রবিবার আসামি সহিদুর রহমান খান মুক্তিকে গত ২০ নভেম্বর দেওয়া জামিন বাতিল করে তাকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এছাড়া তথ্য গোপন ও নোটিশ নিয়ে তার আইনজীবী এম এ মুস্তাকিম ও মো. জাকারিয়া হাবিবকে ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করেছেন আদালত।
মুক্তি এ মামলার আসামি টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানার ভাই। তার বাবা আতাউর রহমান খান এ আসনের বর্তমান আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য।
দীর্ঘ ছয় বছর পলাতক থাকার পর ২০২০ সালের ২ ডিসেম্বর সহিদুর রহমান খান মুক্তি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ মরদেহ তার কলেজপাড়ার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার হয়।
এ ঘটনার তিন দিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ২০১৪ সালের আগস্টে গোয়েন্দা পুলিশ আনিসুল ইসলাম রাজা ও মোহাম্মদ আলী নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করে। আদালতে তাদের দেওয়া স্বীকারোক্তিতে হত্যার সঙ্গে তৎকালীন সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা, তার তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার তৎকালীন মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন ও ছাত্রলীগের তৎকালীন কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পার জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে আসে।
এরপর অভিযুক্তরা আত্মগোপনে চলে যান। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে গোয়েন্দা পুলিশ আদালতে তৎকালীন সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান ও তার অপর তিন ভাইসহ ১৪ জনের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। আমানুর রহমান খান রানা ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে আত্মসমর্পণ করেন। প্রায় তিন বছর হাজতবাসের পর তিনি জামিন পেয়ে মুক্ত আছেন।
গত বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি মুক্তিকে জামিন দেন টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজ মাসুদ পারভেজ। পরে ২৮ ফেব্রুয়ারি তার অন্তর্বর্তী জামিন বাতিল করেন।
এরপর তিনি হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। গত বছরের ২৭ এপ্রিল হাইকোর্ট মুক্তিকে জামিন দিয়ে রুল জারি করেন। পরে রাষ্ট্রপক্ষ জামিন স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে। পরদিন ২৮ এপ্রিল হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেন আপিল বিভাগ।
পরে হাইকোর্টে রুল শুনানি হয়। গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর রুল শুনানি শেষে তার জামিন আবেদন খারিজ হয়। এরপর টাঙ্গাইল জেলা জজ আদালতে জামিন আবেদন করেন মুক্তি। একই বছরের ২৪ অক্টোবর তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করা হয়। পরে হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
একতার কণ্ঠঃ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মনোনয়নপত্র তুলেছেন বিএনপি থেকে সদ্য বহিষ্কৃত এডভোকেট খন্দকার আহসান হাবিব।
তিনি ‘স্বতন্ত্র গণতন্ত্র মঞ্চের’ হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে শহরের নিরালা মোড়ে অবস্থিত কিছুক্ষণ হোটেল এন্ড চাইনিজ রেস্টুরেন্টে টাঙ্গাইল জেলায় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, রবিবার (১৯ নভেম্বর) রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে আহসান হাবিব মনোনয়নপত্র তুলেছেন। খন্দকার আহসান হাবিবসহ কয়েকজন ব্যক্তি ‘স্বতন্ত্র গণতন্ত্র মঞ্চের’ ব্যানারে বুধবার (১৫ নভেম্বর) ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে তাঁরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দেন। ওই দিনই বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটি থেকে আহসান হাবিব ও ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলামকে বহিষ্কার করা হয়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খন্দকার আহসান হাবিবের বাড়ি টাঙ্গাইল শহরের বিশ্বাস বেতকা এলাকায়। তিনি ১৯৯৩ সালে টাঙ্গাইল পৌরসভার কাউন্সিলর ছিলেন। ২০০৮ ও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল সদর আসন থেকে বিএনপি’র মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন তিনি।
খন্দকার আহসান হাবিব মতবিনিময় সভায় বলেন, গণতন্ত্র রক্ষা করতে নির্বাচনের বিকল্প নেই। তিনিসহ বিএনপির অন্তত ১৫ জন নেতা ‘স্বতন্ত্র গণতন্ত্র মঞ্চের’ ব্যানারে একত্র হয়েছেন। ‘স্বতন্ত্র গণতন্ত্র মঞ্চ’ কোনো রাজনৈতিক সংগঠন নয়। এ ব্যানারে বিএনপি’র অনেক নেতা নির্বাচনে আসার জন্য প্রস্তুত হয়েছেন। সবাই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
তিনি বলেন, অনেক ক্ষোভ নিয়ে দীর্ঘদিন দল করেছি। এবার স্বতন্ত্র নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে সাধারণ মানুষের কষ্টের শেষ নেই। অবরোধ–হরতালে দেশের মানুষের অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে।
খন্দকার আহসান হাবিব আরও বলেন, আমি মনে করি, একটি স্বচ্ছ নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার পরিবর্তন হওয়া উচিত। অন্য কোনো কিছুর মাধ্যমে ক্ষমতার পরিবর্তন হলে বাংলাদেশের গণতন্ত্র লুণ্ঠিত হবে। আমি কোনো চাপে কিংবা আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করি নাই। টাঙ্গাইলের সাধারণ মানুষ আমার পক্ষে আছে। ফলাফল যা–ই হোক, নির্বাচন করব।
মত বিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন, টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট জাফর আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক কাজী জাকিরুল মাওলা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. নাসির উদ্দিন প্রমুখ।
এছাড়া মতবিনিময় সভায় গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ ও জেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদ হত্যা মামলার আসামি টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তির জামিন স্থগিতের বিষয়ে শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ ও নিয়মতি বেঞ্চে পাঠিয়েছেন চেম্বার জজ আদালত। এ বিষয়ে আগামী সোমবার (২৭ নভেম্বর) শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের চেম্বার জজ আদলত এই আদেশ দেন। আদালতে বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারোয়ার হোসেন বাপ্পী।
এর আগে গত ২০ নভেম্বর হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ থেকে তিনি জামিন পান। জামিন আদেশ কারাগারে পৌঁছালে বুধবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান।
চেম্বার জজ আদালতে বৃহস্পতিবার শুনানির সময় জজ জানতে চান আসামি বের হয়ে গেছেন কি না। রাষ্ট্রপক্ষ জানায়, তিনি বুধবার দুপুরে বের হয়ে গেছেন। পরে চেম্বার জজ বলেন, যেহেতু বের হয়ে গেছেন সোমবার এটি আপিল বিভাগে থাকবে।
এর আগে সহিদুর রহমান খান হাইকোর্টের একটি বেঞ্চে জামিন আবেদন বিচারাধীন থাকার তথ্য গোপন করে আরেকটি বেঞ্চে আবেদন করেছিলেন। গত ১৯ জুলাই করা জামিন আবেদনের ওপর শুনানির সময় বিষয়টি নজরে আনার পর আদালত জামিন আবেদন সরাসরি খারিজ করে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। ওই আদেশের বিরুদ্ধে চেম্বার আদালতে আবেদন করেছিলেন মুক্তি। চেম্বার আদালত আবেদনটি আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠান।
পরে আপিল বিভাগ গত ২৭ আগস্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যা মামলার বিচারকাজ ছয় মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দেন। এর মধ্যে গত ২০ নভেম্বর হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ থেকে সহিদুর রহমান খান মুক্তি জামিন পান। ওই আদেশ কারাগারে পৌঁছালে বুধবার তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।
সহিদুর রহমান এই মামলার অন্য আসামি টাঙ্গাইল-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানার ভাই। তার বাবা আতাউর রহমান খান একই আসনের সংসদ সদস্য। দীর্ঘ ছয় বছর পলাতক থাকার পর ২০২০ সালের ২ ডিসেম্বর সহিদুর রহমান খান আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার তিনদিন পর নিহতের স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে গোয়েন্দা পুলিশ আদালতে তৎকালীন সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান ও তার অন্য তিন ভাইসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলায় পুলিশের হেফাজতে সুমন মিয়া (২৬) নামের এক ট্রাকচালকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (২২ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে থানায় ট্রাকের কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষার সময় ওই ব্যক্তি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। থানা থেকে হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
মৃত সুমন মিয়া ঘাটাইল উপজেলার জামুরিয়া ইউনিয়নের জামুরিয়া গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে।
বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে তাঁর ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর (ইউডি) মামলা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, বুধবার রাত ৮টার দিকে ঘাটাইল পৌরসভার কলেজ মোড় এলাকায় মাটিভর্তি দুটি ট্রাক জব্দ করে পুলিশ। ঘাটাইলের সাগরদিঘি এলাকা থেকে মাটি নিয়ে যাচ্ছিল ট্রাক দুটি। চালকসহ ট্রাক দুটিকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। রাত ১০টার পর জব্দ করা ট্রাকের কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সময় ট্রাকচালক সুমন মিয়া হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে চেয়ার থেকে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। পুলিশ সদস্যরা দ্রুত ঘাটাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘাটাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) শহিদুল ইসলাম জানান, ওই ব্যক্তিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়।
জামুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম খান জানান, খবর পেয়ে তিনি হাসপাতালে গিয়ে সুমনের লাশ দেখতে পান। কী কারণে, কীভাবে তাঁর মৃত্যু হয়েছে, তা ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে।
ঘাটাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) লোকমান হোসাইন জানান, বালুভর্তি দুটি ড্রামট্রাক জব্দ করে থানায় আনার পর কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করার সময় চেয়ারে বসা ট্রাকচালক সুমন মিয়া অসুস্থ বোধ করেন। একপর্যায়ে তিনি চেয়ার থেকে মাটিতে ঢলে পড়েন। দ্রুত তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও জানান, বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে তাঁর ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর (ইউডি) মামলা হয়েছে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে ট্রেনের ধাক্কায় অজ্ঞাত এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (২২ নভেম্বর) বিকালে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব-জামালপুর রেল লাইনের উপজেলার ফলদা ইউনিয়নের আগতেরিল্ল্যা উত্তরপাড়া গ্রামের এই ঘটনা ঘটে।
এখন পর্যন্ত নিহত ওই যুবকের কোন নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।
ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আহসান উল্লাহ্ বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার বিকালে উপজেলার আগতেরিল্ল্যা উত্তরপাড়ায় অবস্থিত একটি রেলওয়ে ব্রিজের কাছে রেললাইন দিয়ে হাঁটছিল ওই অজ্ঞাত যুবক। পথিমধ্যে জামালপুর থেকে ছেড়ে আসা ভূঞাপুরগামী ধলেশ্বরী নামে একটি লোকাল ট্রেনের ধাক্কায় রেললাইনের পাশে ছিটকে পড়ে এবং ঘটনাস্থলে প্রাণ হারায় সে। পরে স্থানীয়রা পুলিশকে বিষয়টি জানায়।
ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আহসান উল্লাহ্ জানান, বুধবার বিকালে আগতেরিল্ল্যা এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় অজ্ঞাত এক যুবকের মৃত্যুর খবর স্থানীয়দের মাধ্যমে জেনে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। তার পরিচয় পাওয়া যায়নি। মরদেহ উদ্ধার করে রেলওয়ে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলে আওয়ামীলীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় উচ্চ আদালত শর্তসাপেক্ষে সোমবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তির ৬ মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেছেন।
বুধবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে তিনি টাঙ্গাইল জেলা কারাগার থেকে মুক্ত হন। টাঙ্গাইলের জেল সুপার মোখলেসুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জামিনে মুক্ত হয়ে সাবেক মেয়র পৌর শহরের কলেজ পাড়ার নিজ বাসভবনে ফিরেছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
টাঙ্গাইলের জেল সুপার জানান,উচ্চ আদালতের জামিন সংক্রান্ত কাগজপত্র বুধবার টাঙ্গাইল কারাগারে পৌঁছলে সকল নিয়ম মেনে দুপুরে তাকে জেল থেকে সাবেক মেয়রকে মুক্তি দেওয়া হয়।এরআগে সোমবার হাইকোর্টের ৯ নম্বর আদালতের বিচারপতি রেজাউল হাসান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ফারুক হত্যা মামলায় টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তির জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
সহিদুর রহমান খান মুক্তির আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ আব্দুল মুনতাকিম জানান, বিচারকদ্বয় টাঙ্গাইলের ফারুক হত্যা মামলায় সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তির ৬ মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেছেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ জুলাই হাইকোর্টের বিচারপতি মো. বদরুজ্জামান ও বিচারপতি এসএম মাসুদ হোসেন দোলনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ তথ্যগোপন করে জামিন আবেদন করায় সহিদুর রহমান খান মুক্তির জামিন আবেদন খারিজ করে দেন। একই সঙ্গে তথ্য গোপন করে জামিন আবেদন করার অভিযোগে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সহিদুর রহমান খান মুক্তি গত এপ্রিলে হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চে জামিন চেয়ে আবেদন দাখিল করেন। এই আবেদন বিচারাধীন থাকা অবস্থায় গত জুন মাসে জামিন চেয়ে আরেকটি আবেদন করেন। জামিন চেয়ে আগে করা আবেদনের তথ্য দ্বিতীয় দফায় করা আবেদনে উল্লেখ না করায় আদালত জামিন না মঞ্জুর করে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সংসদ সদস্য আতাউর রহমান খানের ছেলে।একই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানার ছোট ভাই।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদের গুলিবিদ্ধ লাশ তার কলেজপাড়ার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার হয়। এ ঘটনার ৩ দিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ২০১৪ সালের আগস্টে গোয়েন্দা পুলিশ আনিসুল ইসলাম রাজা ও মোহাম্মদ আলী নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করে। আদালতে এ দুজনের দেওয়া স্বীকারোক্তিতে হত্যার সঙ্গে তৎকালীন সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা, তার তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার তৎকালীন মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন ও ছাত্রলীগের তৎকালীন কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পার জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে আসে। এরপর অভিযুক্তরা আত্মগোপনে চলে যান।
আমানুর রহমান খান রানা ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। প্রায় তিন বছর হাজতবাসের পর তিনি জামিনে মুক্তি পান। অভিযুক্ত সহিদুর রহমান খান মুক্তি দীর্ঘ ছয় বছর পলাতক থাকার পর ২০২০ সালের ২ ডিসেম্বর আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। এরপর দফায় দফায় জামিনের আবেদন করলেও আদালত প্রতিবারই আবেদন নামঞ্জুর করেন। তাদের অন্য দুই ভাই এখনও আত্মগোপনে রয়েছেন।