একতার কণ্ঠ ডেস্কঃ বুড়িগঙ্গা নদী পুনরুদ্ধার(নিউ ধলেশ্বরী-পুংলী-বংশাই-তুরাগ-বুড়িগঙ্গা রিভার সিস্টেম) প্রকল্পের কাজ দীর্ঘ এগার বছরেও শেষ না হওয়ায় প্রতি বছর স্থানীয়দের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। যমুনায় প্রতিদিন ১ থেকে ২ সেণ্টিমিটার করে পানি বাড়ায় প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়া নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জানাগেছে, বিগত ২০১০ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে সম্পন্ন করার নিমিত্তে ৯৪৪ কোটি ৯ লাখ ৭ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়(মূল ডিপিপি অনুযায়ী) ধরে বুড়িগঙ্গা নদী পুনরুদ্ধার প্রকল্পটি গ্রহন করা হয়। পরে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়। দ্বিতীয় বার সময় বর্ধিত করা হলেও প্রকল্পটি অসমাপ্ত থেকে যায়। বাজারমূল্য বেড়ে যাওয়ায় ডিপিপিতে সংশোধনী আনা হয়। সংশোধনীর কারণে প্রকল্পের ব্যয় ১৮১ কোটি ৫০ লাখ ২৬ হাজার টাকা অতিরিক্ত বাড়িয়ে এক হাজার ১২৫ কোটি ৫৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা করা হয় এবং প্রকল্পের মেয়াদ ২০২০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
২০২০ সাল পর্যন্ত প্রকল্পের টাঙ্গাইল অংশের(২০.৫ কি.মি.) নদী খননের কাজ ধলেশ্বরী ও পুংলি নদী এলাকার ১৪.৫ কিলোমিটারে ড্রেজারের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়। এতে টাঙ্গাইল অংশের ৬৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ইতোপূর্বে ড্রেজারের মাধ্যমে নদী খনন করা হলেও পরের বর্ষায় পলি জমে নদী ভরাট হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে আবার নদী খনন করে পলি সরাতে হয়। এ পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ায় আবারও প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত করা হয়েছে। বার বার সময় ও ব্যয় বাড়ানো হলেও প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ায় স্থানীয় পর্যায়ে জনভোগান্তির অবসান ঘটছেনা।
সরকারের অগ্রাধিকার ভিত্তিক অন্যতম বৃহৎ এ প্রকল্প এলাকা পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক এমপি, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবীর বিন আনোয়ার, পাউবো’র প্রধান প্রকৌশলী(ডিজাইন) মো. হারুন অর রশিদ, ময়মনসিংহ অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকেীশলী মো. শাজাহান সিরাজ এবং পওর কেন্দ্রীয় অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক আব্দুল মতিন সরকার সহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা একাধিকবার পরিদর্শন করেছেন, সংশ্লিষ্টদের দ্রুত কাজ শেষ করার পরামর্শ ও নির্দেশনা দিয়েছেন।
সরেজমিনে যমুনা, ধলেশ^রী ও পুংলি নদী তীরবর্তী বিয়ারামারুয়া, বেলটিয়া, হাট আলিপুর, ভৈরববাড়ি, আলিপুর, কুর্শাবেনু, বেনুকুর্শা, গোবিন্দপুর, জোকার চর, সল্লা, মীরহামজানী, আনালিয়াবাড়ী, হাতিয়া, ধলাডেঙ্গর ও এলেঙ্গা এলাকার লোকজন জানায়, পাউবো খননের নামে প্রতি বছর বাংলা ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন ও বিক্রির মহোৎসব চালাচ্ছে। পাউবো নিযুক্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন দিনরাত অবৈধ বাংলা ড্রেজার বসিয়ে নদী থেকে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে। চলতি বছর পাউবো নদী খনন না করলেও বালু খেকোরা অবৈধ বাংলা ড্রেজার দিয়ে নদীতীরে খনন করছে। এতে নদী তীরবর্তী এলাকায় বর্ষা মৌসুমে ভাঙনের আশঙ্কা প্রবলতর হচ্ছে।
তারা জানায়, বর্তমানে যমুনায় ১-২ সেন্টিমিটার করে প্রতিদিন পানি বাড়তে শুরু করেছে। তবে যমুনার এ পানি বৃদ্ধি স্থায়ী নয়, চৈত্র-বৈশাখে আবার পানি কমবে। দ্রুত কাজ না করলে প্রকল্পের ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।
স্থানীয়রা আরও জানায়, পাউবো’র উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনে এসে যমুনায় স্পীডবোট নিয়ে ঘোরাফেরা করেন আর পানির গভীরতা পরিমাপ করেন। এলাকার মানুষের সাথে কোন কথা বলেন না। নদীতীরের মানুষই তাদের সুখ-দুঃখের কথা ভালো বুঝেন। এলাকার মানুষের সাথে কথা বললে তারা স্থানীয় মানুষের অভিব্যক্তি অনুভব করতে পারতেন।
টাঙ্গাইল পাউবো’র উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান জানান, তারা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে সমন্বয় করে দ্রুত কাজ শেষ করার চেষ্টা করছেন। যমুনায় পানি একটু একটু বাড়লেও এটা স্থায়ী নয়, পানি আবার কমে যাবে।
পাউবো কেন্দ্রীয় অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী ও বুড়িগঙ্গা নদী পুনরুদ্ধার প্রকল্পের পরিচালক(পিডি) আব্দুল মতিন সরকার বলেন, পাউবো’র কর্মকর্তাদের তদারকিতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলো যে গতিতে কাজ করছে তাতে চলতি বছরই বুড়িগঙ্গা নদী পুনরুদ্ধার প্রকল্পের কাজ শেষ করা সম্ভব হবে। আগামি বর্ষা মৌসুম থেকে এর সুফল স্থানীয়রা পেতে শুরু করবে।
প্রকাশ, খনন কাজে টাঙ্গাইলের ২০.৫ কিলোমিটারের মধ্যে ধলেশ্বরী ও পুংলি নদীর কুর্শাবেনু, বেনুকুশা, গোবিন্দপুর, জোকার চর, মীরহামজানী, আনালিয়াবাড়ী, ধলাডেঙ্গর ও এলেঙ্গা এলাকার ১৪.৫ কিলোমিটারে ড্রেজারের মাধ্যমে উত্তোলিত ১৬ লাখ ৬ হাজার ২০০ঘনমিটার ড্রেজড বালু টেন্ডারের মাধ্যমে ২০ লাখ ৮৮ হাজার ৬০ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে।
একতার কণ্ঠ ডেস্কঃ বৃহত্তর ময়মনসিংহ রিপোর্টার্স ফোরামের (জিএমআরএফ) সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সিনিয়র রিপোর্টার ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরআউ) সাবেক সাধারণ সম্পাদক কবির আহমেদ খান, সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের সিনিয়র রিপোর্টার রুকনুজ্জামান অঞ্জন ও প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন সাননিউজ২৪এর চিপ রিপোর্টার তারেক সালমান। তারেক সালমান নিজ গ্রাম সদর উপজেলার আনুহলা।
অন্যদিকে কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত হয়েছেন জাগো নিউজের ডেপুটি চিফ রিপোর্টার সিরাজুজ্জামান। এই কমিটি গঠনের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করলো জিএমআরএফ।
সোমবার (২২ মার্চ) রাজধানীর সেগুনবাগিচার একটি রেস্টুরেন্টে জিএমআরএফ’র আত্মপ্রকাশও নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ঢাকায় কর্মরত বৃহত্তর ময়মনসিংহের ছয় জেলা ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, জামালপুর, শেরপুর, নেত্রকোণা ও কিশোরগঞ্জের রিপোর্টারদের নিয়ে এই সংগঠনটি আত্মপ্রকাশ করেছে।
৬১ সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটি ঘোষণা করেন টিভি টুডের এডিটর ইন চিফ মনজুরুল আহসান বুলবুল। এসময় উপস্থিত ছিলেন স্বদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রতন, আজকালের খবরের সম্পাদক ফারুক তালুকদার ও সংবাদ প্রতিদিনের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক রিমন মাহফুজ।
কমিটি ঘোষণার সময় মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, ঢাকাস্থ বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের রিপোর্টারদের এই সংগঠন সবার মধ্যে একটি সৌহাদ্যপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করবে। সংগঠন করার ফলে এ অঞ্চলের রিপোর্টাররা একে অপরের পাশে দাঁড়াতে পারবে। সংগঠনটির মাধ্যমে আঞ্চলিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হবে। দল মতের উর্ধ্বে উঠে বৃহত্তর ময়মনসিংহকে সবার সামনে তুলে ধরতে হবে।
স্বদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রতন বলেন, ঢাকায় বিভিন্ন জেলার রিপোর্টারদের সংগঠন রয়েছে। তাদের অবস্থানও বেশ পোক্ত। কিন্তু বৃহত্তর ময়মসিংহের রিপোর্টাররা পিছিয়ে ছিল। তবে এ সংগঠনের আত্মপ্রকাশের মাধ্যমে সেই শুণ্যতা পূরণ হবে এবং ভবিষ্যতে সংগঠনটি কার্যকর সংগঠনে রূপ নেবে বলে প্রত্যাশা করি।
কমিটির ৬ সহ-সভাপতি হলেন- ইলিয়াস হোসেন (এসএটিভি), রফিক মোহাম্মদ (ইনকিলাব), মনিরুল আলম (নিউ নেশন), সীমান্ত খোকন (এনটিভি), মাসুদ ইবনে আইয়ুব কার্জন (ডিবিসি) ও আবু সাঈদ (বাসস)। যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন-তারেক সালমান (সাননিউজ), শওকত আলী খান লিথো (ডেইলি সান), ওমর ফারুক (কালের কণ্ঠ), জান্নাতুল ফেরদৌসী পান্না (আমাদের নতুন সময়), মাসুদুল হক (ইউএনবি) ও মাজহারুল আনোয়ার খান শিপু (বাসস)। সাংগঠনিক সম্পাদকরা হলেন- শফিকুল ইসলাম (জনতা), আলতাব হোসেন (যায় যায় দিন), নিখিল মানকিন (জনকণ্ঠ), জাহাঙ্গীর কিরণ (মানবকণ্ঠ), মামুন আব্দুল্লাহ (দেশ রূপান্তর) ও এনায়েত হায়দার শাওন (ডেইলি সান)।
দপ্তর সম্পাদক হয়েছেন ঢাকা পোস্টের মাহফুজুল ইসলাম, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক আমাদের সময়ের মুহম্মদ আকবর, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক একাত্তর টিভির জেমসন মাহবুব, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক সারাবাংলার সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট এমদাদুল হক তুহিন, আর্ন্তজাতিক সম্পাদক জনকণ্ঠের ওয়াজেদ হীরা, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক এশিয়ান টিভির রকিবুল ইসলাম মানিক, নারী সম্পাদক জিটিভির রুবিনা ইয়াসমিন (জিটিভি) ও ক্রীড়া সম্পাদক জনকণ্ঠের মিথুন আশরাফ।
কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্যরা হলেন- আজাদ সোলায়মান (জনকণ্ঠ), সাকিলা জেসমিন (চ্যানেল আই), নাজনীন মুন্নী (একাত্তর টিভি), আফজাল বারী (আজকালের খবর), রেজাউল করিম (ফিনান্সিয়াল এক্সেপ্রেস), লাকী আকতার (মোহনা টিভি), মোফাজ্জল হোসেন (ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস), মমিনুল হক আজাদ (সাবেক যুগান্তর), রাজন ভট্টাচার্য (জনকণ্ঠ), ফরহাদ হোসেন (বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড), গোলাম মঈনুদ্দিন (বাসস), সুজন কৈরি (আমাদের অর্থনীতি), আবুল কাশেম (বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড), জুনায়েদ শাহরিয়ার (চ্যানেল-২৪), রাজীব আহমেদ (সমকাল), মশিউর আহমেদ মাসুম (অবজারভার), শারফুল আলম (এটিএন বাংলা), মোহাম্মদ আখতার হোসেন (ভোরের ডাক), মোজাম্মেল হক তুহিন (আজকালের খবর), ফজলুল হক মৃধা (জাগো নিউজ), ইকরাম-উদ-দৌলা (বাংলানিউজ), শওকত পলাশ (বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড), গোলাম মোাস্তফা (জনকণ্ঠ), ইউসুফ আলী (বৈশাখী টিভি), তানভীরুল ইসলাম (ঢাকা পোস্ট), মাহমুদুল হাসান (খোলা কাগজ), ইমরান হাসান মজুমদার (সিটিনিউজ), আবদুল লতিফ রানা (আমার সংবাদ), হাবিবুর রহমান (জনতা), খাদেমুল ইসলাম (বাংলানিউজ), মৃত্তিকা সাহা, নূর মোহাম্মদ (ঢাকা পোস্ট), কামরুর ইসলাম ফকির (সারাবাংলা) ও রকুনুজ্জামান সেলিম ( স্পোর্টস মেইল)।
সংগঠনটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসাবে আছেন টিভি টুডের এডিটর ইন চিফ মনজরুল আহসান বুলবুল। সংগঠনটির উপদেষ্টারা হলেন- রফিকুল ইসলাম রতন (স্বদেশ প্রতিদিন), সুভাষ চন্দ্র বাদল (বাসস), মলয় সাহা (নিউ এইজ), গাফফার মাহমুদ (ইনকিলাব), আব্দুল মান্নান, মজিবুর রহমান (জনকণ্ঠ), কুদ্দুস আফ্রাদ (আনন্দবাজার), ফারুক তালুকদার (আজকালের খবর), সাখাওয়াত হোসেন বাদশা (আমারবার্তা), জাহিদ নেওয়াজ খান জুয়েল (চ্যানেল আই), বায়েজীদ মিল্কী (একাত্তর টিভি), মাসুদ করিম (যুগান্তর), এম এ মজিদ (বৈশাখী টিভি), জুলফিকার আলী মানিক (বৈশাখী টিভি), রিমন মাহফুজ (সংবাদ প্রতিদিন), জিয়াউর রহমান (অর্থসূচক), মঞ্জুরুল বারী নয়ন (ঢাকা প্রতিদিন ), ফখরুল ইসলাম হারুন (প্রথম আলো), বিশ্বজিৎ দত্ত (আমাদেরসময়ডটকম), জীবন ইসলাম (অবজারভার), ফারজানা রুপা (একাত্তর টিভি) ও ফিরোজ মান্না (জনকণ্ঠ)।
একতার কণ্ঠ ডেস্কঃ টাঙ্গাইলের সড়কে ঝড়ল আরো একটি প্রাণ। এবার প্রাণ গেল অলিম্পিক কোম্পানির রিজিওনাল ম্যানেজার মাহমুদুর রহমানের(৫০)।টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কে কালিহাতী পৌরসভার বাগুটিয়া ব্রিজ সংলগ্ন স্থানে রোববার(২১ মার্চ) সকালে ট্রাক চাপায় প্রান হারান তিনি । এ ঘটনায় ঘাতক ট্রাকটিকে আটক করা সম্ভব হলেও চালক পালিয়ে গেছে। নিহত মাহমুদুর রহমান দিনাজপুর জেলার শ্রীবর্দীপুর গ্রামের মৃত শাহজাহান আলীর ছেলে এবং অলিম্পিক কোম্পানীর টাঙ্গাইলের আরএম।
কালিহাতী ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মনজুরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, রোববার সকাল ৯টার দিকে দুর্ঘটনার সংবাদ পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) জহিরুল ইসলাম জানান, এলেঙ্গার দিক থেকে মোটরসাইকেল যোগে অলিম্পিক কোম্পানীর আরএম মাহমুদুর রহমান কালিহাতীর দিকে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে বাগুটিয়া ব্রিজ পাড় হওয়ার সাথে সাথে পেছন থেকে আসা একটি ট্রাক (ঢাকা মেট্রো-ট ২০-৭৪৩৪) ধাক্কা দিলে তিনি সড়কে পড়ে যান। এ সময় ওই ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। ঘাতক ট্রাকটি আটক করা হয়েছে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
একতার কণ্ঠ ডেস্কঃ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ আর নেই। ইন্নানিল্লাহি…রাজিউন। বাংলাদেশ সময় ৬টা ৩০ মিনিটে সিঙ্গাপুর মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাঃস ত্যাগ করেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ (জন্ম: ২৪ মে ১৯৪০) বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তিনি বিএনপির ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম। সাবেক সাংসদ ও অষ্টম জাতীয় সংসদে তিনি আইন ও বিচার বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন।
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ ২৪ মে ১৯৪০ সালে ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির (বর্তমান বাংলাদেশ) নোয়াখালী জেলার কোম্পানিগঞ্জ উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মাওলানা মমতাজ উদ্দিন আহমেদ এবং মা বেগম আম্বিয়া খাতুন। ছয় ভাইবোনের মধ্যে মওদুদ আহমেদ চতুর্থ।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মান পাশ করে বৃটেনের লন্ডনস্থ লিঙ্কন্স ইন থেকে ব্যারিস্টার-এ্যাট-ল’ ডিগ্রি অর্জন করেন। লন্ডনে পড়াশুনা করে তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং হাইকোর্টে ওকালতি শুরু করেন। তিনি ব্লান্ড ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলনে।
একতার কণ্ঠ ডেস্কঃ টাঙ্গাইলের মধুপুরে গৃহবধূ নার্গিসকে ধর্ষণের পর গলা টিপে হত্যা করেন তার সাবেক স্বামী মনিরুজ্জামান। পরে তার লাশ ধান ক্ষেতে ফেলে রেখে পালিয়ে যান পাষন্ড সাবেক স্বামী মনিরুজ্জামান। ঘটনার দেড় বছর পর তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পরে রবিবার আদালতে জবানবন্দিতে মনিরুজ্জামান এ কথা স্বীকার করেন।সোমবার(১৫ মার্চ)পিবিআই টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সিরাজ আমীন বিভিন্ন গণমাধ্যাম কর্মীদের এ তথ্য জানান।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মধুপুর উপজেলার নেকিপাড়া গ্রামের মো. নাসির উদ্দিনের মেয়ে নার্গিস ২০১৯ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নিখোঁজ হন। দুই দিন পর তাদের বাড়ির উত্তর পাশে একটি ধান ক্ষেত থেকে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ১৪ সেপ্টেম্বর তার বাবা অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মধুপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশ প্রথমে মামলাটি তদন্ত করে। পরে এ তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় পিবিআইকে।
পিবিআই তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই ঘটনার সাথে নার্গিসের সাবেক স্বামী মনিরুজ্জামান জড়িত থাকার বিষয়টি চিহ্নিত করে। গত শনিবার মনিরুজ্জামানকে তার বাড়ি ধনবাড়ী উপজেলার কান্দিপুর গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে মনিরুজ্জামান নার্গিসকে ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করেন। আদালতে জবানবন্দি দিতেও রাজি হন। রবিবার টাঙ্গাইল চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে তিনি জবানবন্দি দেন।
পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার সিরাজ আমীন জানান, জবানবন্দিতে মনিরুজ্জামান জানিয়েছেন- তার সাথে নার্গিসের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরে তারা বিয়ে করেন। কিন্তু বিয়ের কিছুদিন পর থেকে তাদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়। ফলে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। মনিরুজ্জামান পরে আবার বিয়ে করেন। দ্বিতীয় বিয়ে করার পরে নার্গিসের সাথে আবার যোগাযোগ হয়। নার্গিস তাকে জানায় আগের স্ত্রীকে তালাক দিলে সে আবার বিয়ে করবে।
নার্গিসের কথা মতো মনিরুজ্জামান দ্বিতীয় স্ত্রীকে তালাক দেন। ঘটনার দিন মনিরুজ্জামান নার্গিসদের বাড়িতে যান। সেখানে তাকে একা পেয়ে এক দফা ধর্ষণ করেন। পরে দ্বিতীয়বার ধর্ষণের চেষ্টা করলে নার্গিস বাধা দেন। তখন নার্গিসের গলা চেপে ধরে ধর্ষণের চেষ্টা শুরু করেন। এক পর্যায়ে নার্গিস মারা যান। পরে ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য নার্গিসের গলায় ওড়না শক্ত করে পেঁচিয়ে লাশ ধান ক্ষেতে ফেলে পালিয়ে যান মনিরুজ্জামান। ঘটনার পর মনিরুজ্জামান এলাকা ছেড়ে চলে যান । সে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে ছিলেন। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় আবার বিয়ে করেন তিনি।
টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আকরামুল ইসলাম মনিরুজ্জামানের জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন। পরে তাকে জেলহাজতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
একতার কণ্ঠ ডেস্কঃ হুইলচেয়ারটি নিবে ভয়েজ কমান্ড। দরকার পড়লে মেডিকেল বেডেও রূপান্তর করা যাবে। এমনই একটি হুইলচেয়ার উদ্ভাবন করেছেন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) একদল গবেষক। কম খরচের এই হুইলচেয়ারটি দেশের প্রথম স্মার্ট হুইলচেয়ার বলে দাবি করছেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও রুয়েটের অর্থায়নে গত বছরের আগস্টে শুরু হওয়া এই প্রকল্পটি শেষ হয়েছে এ বছরের মার্চে। বিষয়টি জানিয়েছেন গবেষক দলপ্রধান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক ড. মাসুদ রানা। রুয়েট গবেষণা ও সম্প্রসারণ দপ্তরের অধীনে পরিচালিত এ গবেষণা প্রকল্পটির পরিচালক ছিলেন তিনি।
অধ্যাপক মাসুদ রানার সঙ্গে গবেষণায় যুক্ত ছিলেন শিক্ষার্থী ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং এমএসসি শিক্ষার্থী সাদমান মাহমুদ খান এবং ম্যাকাট্রোনিকস বিভাগের তৃতীয়বর্ষের শিক্ষার্থী ওয়াসিফ আহমেদ।
অধ্যাপক মাসুদ রানা জানান, দেশের প্রথম এই স্মার্ট হুইলচেয়ারটি মাত্র ৪০ হাজার টাকায় বাজারজাত করা সম্ভব। তাতে অনেকের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকবে। চেয়ারটি ভয়েস কন্ট্রোল। যে কারণে প্যারালাইজড ব্যক্তিদের জন্য ব্যবহারে সমস্যা হবে না। এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যে, ইমার্জেন্সি মেডিকেল বেডে রূপান্তর করা সহজ এটি।
এদিকে ইইজি প্রযুক্তি ব্যবহার করে ব্রেইন ওয়েভ চেয়ারটি নিয়ন্ত্রিত করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন বলেও জানান তিনি। তখন মস্তিষ্কের দ্বারা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে চেয়ারটি। তাতে চেয়ারটি ব্যবহার আরও সহজ হবে বলে জানান অধ্যাপক ড. মাসুদ। এরই মধ্যে চেয়ারটির পেটেন্টের জন্য আবেদন করা হয়েছে।
প্রকল্পটির উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. মাসুদ রানা বলেন, বাংলাদেশে অনেক ডিজাবল মানুষ আছেন যাদের শরীরের অনেক অংশ কাজ করে না। এ কারণে তারা জয়িস্টিক নিয়ন্ত্রিত হুইলচেয়ারগুলো ব্যবহার করতেও সক্ষম নন। তাদের কথা ভেবেই চেয়ারটি তৈরির প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। আমরা সেটি করতে সক্ষম হয়েছি।
একতার কণ্ঠ ডেস্কঃ টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার বাথুলী সাদি গ্রামে রোববার(১৪ মার্চ) সকালে ছোট ভাইয়ের ছুরিকাঘাতে বড় ভাই খুনের ঘটনা ঘটেছে। নিহত আব্দুল মজিদ(৩৩) উপজেলার ওই গ্রামের সেন্টু মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় পুলিশ ছোট ভাই শফিকুল ইসলামকে(৩১) আহত অবস্থায় আটক করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, বাসাইল উপজেলার বাথুলী সাদি গ্রামের সেন্টু মিয়ার পাঁচ ছেলে দীর্ঘদিন ধরে কাপড় তৈরির ব্যবসা করছিলেন। ব্যবসার হিসাব নিয়ে সম্প্রতি তাদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এক পর্যায়ে তা পারিবারিক কলহে রূপ নেয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে রোববার সকালে তাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ছোট ভাই শফিকুল ইসলাম ছুরি দিয়ে তার বড় ভাই আব্দুল মজিদের বুকে আঘাত করেন। গুরুতর আহতাবস্থায় স্বজনরা আব্দুল মজিদকে উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে বাসাইল থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মো. হারুনুর রশিদ বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে রয়েছে। হত্যার ঘটনায় তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
একতার কণ্ঠ ডেস্কঃ বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ইতিহাসে একটি ক্ষুদ্র জায়গায় রয়েছেন বলে মন্তব্য করে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ‘জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেছিলেন; এটি ইতিহাসে সেভাবেই থাকবে। তিনি যুদ্ধের নির্দেশক বা পরিচালক কিছুই ছিলেন না। একটি সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন, এই টুকুই তার পরিচয়। ইতিহাসের মূল নায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।’
মন্ত্রী বলেন- ‘জিয়াউর রহমান আওয়ামী লীগের নেতাদের অনুরোধে স্বাধীনতাপত্রটি প্রথমে নিজের নামে, পরে শেখ মুজিবুর রহমানের নামে পাঠ করেন। তখন সবাই মনে করেছিলেন একজন সামরিক বাহিনীর লোক দিয়ে ঘোষণাপত্রটি পাঠ করালে গুরুত্ব বাড়ে। এ জন্য কৌশলগত কারণে তাকে দিয়ে ঘোষণাপত্রটি পাঠ করানো হয়। যতই বলা হোক, ইতিহাসে স্বাধীনতার ঘোষক বা মূল নেতা হিসেবে তিনি স্থান পাবেন না।’
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘যারা পাকিস্তানে উচ্ছিষ্টভোগী ছিল, পা চাটা কুকুর ছিল, যারা পাকিস্তানের সহায়ক হিসেবে কাজ করেছে, তারাই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করতে চায়। কিন্তু সত্য উদঘাটন হয়েছে। আমাদের এ প্রজন্মও এখন মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানে। মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
তিনি আরও বলেন- ‘১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, পরবর্তীতে ৫৪’র নির্বাচন, ৬২’র স্বৈরাচারী আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬’র স্বায়ত্বশাসন ও স্বাধিকার আন্দোলনের মাধ্যমে ৬ দফা আন্দোলন, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ৭০’র নির্বাচন ও ৭১’র মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে।’
একতার কন্ঠ ডেস্কঃ দেশের কোথাও কোথাও আজ শিলাবৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
সেই সঙ্গে বিক্ষিপ্তভাবে কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে পূর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়।
আবহাওয়ার সার্বিক পর্যবেক্ষণে বলা হয়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ হিমালয়ের পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
রোববার সকাল ৬টা পর্যন্ত নেত্রকোনায় সামান্য ও সিলেটে সর্বোচ্চ ৩০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
সংবাদ সূত্রঃ যুগান্তর অনলাইন নিউজ পোর্টাল
একতার কণ্ঠ ডেস্কঃ দলের ভেতর-বাইরে চাপের মুখে রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তনের আভাস দিচ্ছে বিএনপি। দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গ ত্যাগের চাপ থাকলেও আমলে নেয়নি দলটি। একযুগেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটি এখন কিছুটা আত্মোপলব্ধি করছে বলে জানিয়েছে দলটির নীতিনির্ধারক মহল। তারই অংশ হিসেবে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে বছরব্যাপী কর্মসূচিতে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে না জামায়াতকে।
অথচ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ মহাজোট, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট, ২০ দলীয় জোটের শরিকসহ বিকল্পধারাকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ‘বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যজোট’ গঠনের উদ্যোগের অংশ হিসেবে জামায়াতকে ত্যাগ করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে দলের নীতিনির্ধারক পর্যায়ে আলোচনা চলছে। জোট গঠনের খসড়া রূপরেখাও তৈরির কাজ চলছে।
দলীয় সূত্র জানিয়েছে, অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে ‘ইতিবাচক’ রাজনীতির অংশ হিসেবে এবার স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের পাশাপাশি আগামী ১০ এপ্রিল ‘মুজিবনগর সরকার গঠনে’র দিনসহ বছরব্যাপী সব ঐতিহাসিক দিনকে উদযাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বিএনপি। ইতোমধ্যে ২ মার্চ আ স ম আবদুর রবের পতাকা উত্তোলন দিবস এবং ৩ মার্চ শাজাহান সিরাজ কর্তৃক স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠের দিনটিকে উদযাপনে কর্মসূচি পালন করেছে। কর্মসূচিতে জেএসডির সভাপতি আ স ম রবকেও আমন্ত্রণ করেছে বিএনপি।
এ বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জামায়াতের ইস্যুসহ সব জোট নিয়েই বিএনপির নীতিনির্ধারক পর্যায়ে পুনর্মূল্যায়ন চলছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে দলের হাইকমান্ড জামায়াতকে জোটে রাখা না রাখার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জামায়াত ২০ দলীয় জোটের শরিক হলেও বিএনপির সব দলীয় কর্মসূচিতে তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয় না। জোটের শরিক দলগুলো যার যার মতো করে দলীয় কর্মসূচি পালন করে থাকে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বৃহত্তর ঐক্যজোট গঠন নিয়েও আলোচনা চলছে।
এ প্রসঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল গোলাম পরওয়ারের সঙ্গে গতকাল সন্ধ্যায় যোগাযোগ করলে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি। বিএনপির সূত্র জানিয়েছে, আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ‘বৃহত্তর রাজনৈতিক জোট’ গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি। দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারক ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির একজন সদস্যকে ওই জোটের ‘রূপরেখা’র খসড়া তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে তিনি ওই খসড়া রূপরেখা তৈরি করতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মতামত নিচ্ছেন। ওই জোটে যেসব দলকে টানতে চাচ্ছে, তারা জামায়াত ইস্যুতে কৌশলী ভূমিকা পরিহার করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের শর্ত দিয়েছে। দলগুলোর মধ্যে রয়েছে বাম ও অন্যান্য বড় ইসলামী দল।
সূত্র জানিয়েছে, ওই দলগুলোর বক্তব্য হচ্ছে, বিএনপি জামায়াত ইস্যুতে সিদ্ধান্ত ঝুলিয়ে রেখে বৃহত্তর ঐক্য গড়তে চায়। বিগত ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে এ বিষয়ে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের সময়ও কৌশলী ভূমিকা নিয়েছিল। ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের না জানিয়ে নিবন্ধনহীন জামায়াতকে ঐক্যফ্রন্টের বাইরে রাখলেও শেষ মুহূর্তে ‘ধানের শীষ’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনের সুযোগ করে দিয়েছিল, যা ঐক্যফ্রন্টসহ বিএনপির মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের নেতাকর্মীরা বিষয়টি ভালোভাবে নেননি।
নাম প্রকাশ না করে বৃহত্তর জোটে আসতে আগ্রহী কয়েক নেতা জানান, বিএনপিকে এবার বৃহত্তর ঐক্যজোট গড়তে হলে অবশ্যই জামায়াতের সঙ্গ ছাড়তে হবে। জামায়াতকে সঙ্গে রেখে বিএনপির রাজনৈতিক গুণগত মানোন্নয়ন হবে না। তারা বিষয়টি এখনই নিষ্পত্তি করতে চান। বিএনপিকে এবার আরও কৌশলী ভূমিকা নিলে ক্ষমতার বাইরে থাকার মেয়াদ আরও দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। একই সঙ্গে তারা স্বৈরাচার এরশাদ সরকারবিরোধী তিন জোটের রূপরেখা বা প্রতিশ্রুতি ছিল, তা বাস্তবায়ন না করার বিষয়টিও সামনে স্মরণ করে দিচ্ছেন।
এ বিষয়ে বিএনপির দুই শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন, জামায়াতকে জোট থেকে বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। এখন বৃহত্তর ঐক্য গঠনের কাজ চলছে। ওই প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত পর্যায়ে জামায়াতকে বাদ দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বোঝানো হবে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার তাদের। তারা আশা করেন, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে তারা সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন।
দলীয় সূত্র আরও জানায়, শুধু দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর দাবি নয়, প্রতিবেশী ভারতসহ পশ্চিমা শক্তিশালী দেশগুলোর পক্ষ থেকেও জামায়াতের সঙ্গ ছাড়ার ব্যাপারে দীর্ঘদিন ধরে চাপ অব্যাহত রয়েছে। ২০১২ সালে বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সাত দিনের ভারত সফরের সময়ও জামায়াতের সঙ্গ ছাড়তে অনুরোধ করেছিল দেশটি। তখন খালেদা জিয়ার সঙ্গে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের প্রধান শিব শঙ্কর মেননের একান্ত বৈঠকে জামায়াত ভারতের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে কিছু অভিযোগ তুলে ধরেন। বিশেষ করে পাকিস্তানের জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে কাশ্মীরে বিভিন্ন হামলায় জড়িত বলে অভিযোগ করেন। ওই সময় খালেদা জিয়া অভিযোগের প্রমাণ দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন। প্রমাণিত হলে জামায়াতকে জোটে রাখার বিষয়ে পুনর্বিবেচনা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন।
জানা গেছে, দেশে আসার পর ছয় মাসের মাথায় জামায়াতের ডাকা হরতালের কারণে ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত সাক্ষাৎ বাতিল করেন খালেদা জিয়া। জামায়াতপন্থি বিএনপি নেতাদের পরামর্শে খালেদা জিয়ার ওই সিদ্ধান্ত বিএনপির অনেক ‘বড় ভুল’ হয়েছে বলে মনে করেন দলের অনেক শীর্ষ নেতাও। এমনকি ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে দলের তৃণমূল নেতাদের মতামত নিয়েছিল বিএনপি। তৃণমূল নেতারাও জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার পক্ষে মত দিয়েছেন। ওই মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে কৌশলী ভূমিকা নিয়ে জামায়াত ছাড়াই জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট করেছিল দলটির হাইকমান্ড।
নাম প্রকাশ না করে বিএনপির কয়েকজন নেতা জানান, এখন সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে বিএনপি রাজনৈতিক গুণগতমান উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছে। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও জামায়াত ইস্যুতে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারক ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটিকে এ বিষয়ে আলোচনা করে প্রস্তাবনা তৈরির পরামর্শ দিয়েছেন। বিএনপির সার্বিক রাজনৈতিক গুণগতমান উন্নয়নের জন্য একজন সদস্যকে একটি প্রস্তাবনা তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। ওই নেতা তার প্রস্তাবনায় জামায়াতে ইসলামীকে জোট থেকে বের করে দেওয়ার সুপারিশ করেন। ওই প্রস্তাবের পর সম্প্রতি দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে অধিকাংশ সদস্য জামায়াতের সঙ্গ ছাড়লে বিএনপির ভবিষ্যৎ মঙ্গল হবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। তবে স্থায়ী কমিটির দু’জন সদস্য জামায়াতের ভোটব্যাংকের কথা স্মরণ করে জোট থেকে বাদ দিলে সরকারের ফাঁদে পা দেওয়া হবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।
সূত্র জানিয়েছে, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এখনও তার মতামত দেননি। এটি বিএনপির কৌশল বলে মনে করেন দলটির জামায়াতবিরোধী নেতারা। মির্জা ফখরুল দলের চেয়ারম্যান ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পরামর্শের বাইরে মতামত দেবেন না। তা ছাড়া স্থায়ী কমিটির নেতারা যাই বলুন- শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য দুই শীর্ষ নেতার মতামতই চূড়ান্ত।
২০০৭ সালে ওয়ান-ইলেভেনের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকেই নানা ইস্যুতে জোটের শরিক জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে বিএনপিতে। জামায়াতের যুদ্ধাপরাধী নেতাদের ফাঁসিতে বিএনপির প্রতিক্রিয়া না দেওয়া, ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করে জ্বালাও-পোড়াওয়ের ঘটনার দায়ভার, খালেদা জিয়ার কারাবন্দি হওয়ার পরও জামায়াতের কোনো ভূমিকা না রাখাসহ নানা ইস্যুতে দূরত্ব দিন দিন বাড়ছে। এক যুগের টানাপোড়েনের বিষয়ে দলের নীতিনির্ধারক পর্যায়ে আলোচনার পর দলের হাইকমান্ড কবে নাগাদ জামায়াত ছাড়ার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন- তা নিয়েই এখন আলোচনা চলছে বিএনপির ভেতরে ও বাইরে।
১০ এপ্রিল ‘মুজিবনগর সরকার গঠনে’র দিন ‘দিবস’ হিসেবে পালনের প্রস্তাব করবে :বিএনপির নীতিনির্ধারক সূত্র জানিয়েছে, নানামুখী চাপ ও ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে ইতিবাচক রাজনীতিতে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পরামর্শে ১ মার্চ থেকে বছরব্যাপী বিভিন্ন ঐতিহাসিক দিনগুলোতেও প্রথমবারের মতো নানা কর্মসূচি দিয়ে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই সিদ্ধান্তের আলোকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মহাজোটের শরিক দলগুলোকে দিবসের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ দিবসেও কর্মসূচি রেখেছে দলটি। আগামী ১০ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠনের দিনকে দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একই সঙ্গে বছরব্যাপী অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক দিবসগুলো পালন করবে, যা অতীতে কখনও পালন করেননি।
অবশ্য এ বিষয়ে বিএনপির স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস ও স্বপ্ন নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা। কোন স্বপ্নটি পূরণ হয়েছিল, কোনটি পূরণ হয়নি- তা জানানো। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য, স্বাধীনতার প্রধান আকাঙ্ক্ষা গণতন্ত্র স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও পূরণ হয়নি। আমাদের এ উদ্যোগে নতুন প্রজন্মের যাতে প্রকৃত ইতিহাস পর্যালোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিতে সহজ হয়।
সংবাদ সূত্রঃ- সমকাল আনলাইন নিউজ পোর্টাল
একতার কণ্ঠ ডেক্সঃ বয়স তার ৫০, নাম সুবল রাজবংশী। অনাহার-অর্ধাহারে জীর্ণ শরীর। বয়সের ভারে নয় পুষ্টির অভাবে ন্যূয়ে পড়েছে। জীবনযুদ্ধে পরাজিত সুবল রাজবংশী বর্তমানে নিজ ভূমে পরবাসী। তার বাড়ি টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের সূতানরী গ্রামে।
পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া ৬০ শতক ভূমি ১৫ বছর ধরে গ্রামের প্রভাবশালীরা জবর দখল করে রেখেছে। সুবলের বসতভিটা-জমি নিয়ে গ্রাম্য সালিশ-দরবার হয়েছে বিস্তর, কোন সমাধান হয়নি।
সংখ্যালঘু হওয়ায় প্রভাবশালীদের ভয়ে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে গ্রামে যেতে পারেন না তিনি- যে কোন সময় চাপে ফেলে বাড়ি-জমি লিখে নিতে পারে জবর দখল কারীরা।
কিছুদিন বাস করেছেন মামা চান মোহন রাজবংশীর বাড়িতে। এখন তিনি গাজিপুরের চন্দ্রায় ভাড়া ঝুঁপড়িতে স্ত্রী চিত্রা রাজবংশীকে নিয়ে বাস করছেন এবং কিশোর ছেলে সুকুমার রাজবংশীকে(১১) নিয়ে বিভিন্ন স্থানে দিনমজুরি করে দিন কাটাচ্ছেন। কথা বলতে গিয়ে ছেলের ভবিষ্যত ভাবনায় হামেশাই অশ্রু ঝড়ান সুবল।
সরেজমিনে জানা গেছে, ফতেহপুর ইউনিয়নের ফতেহপুর মৌজার গ্রামের স্বর্গীয় গণেশ রাজবংশীর ছেলে সুবল রাজবংশীরা বংশ পরম্পরায় সূতানরী গ্রামের বাসিন্দা। সুবল রাজবংশী দুই মেয়ে ও এক ছেলের জনক। মেয়ে বিনোদিনী রাজবংশী ও নূপুর রাজবংশীকে অন্য উপজেলায় বিয়ে দিয়েছেন।
১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের সময় স্থানীয় ছালাম খান, মানিক খান, হযরত খান, ফরিদ খান ও ছানু খানের পূর্বপুরুষরা আসাম থেকে এসে সূতানরী গ্রামে বসতি স্থাপন করে।
সুবল রাজবংশীর বিএস-৩২৮ খতিয়ানে ২২৪ নং দাগের ২৪ শতক বসত ভিটা ভাগাভাগি করে বসবাস করছেন একই গ্রামের মৃত মজিদ খানের দুই ছেলে ছালাম খান ও মানিক খান এবং মৃত রুস্তম খানের ছেলে হযরত খান ও মৃত কাশেম খানের ছেলে ফরিদ খান।
একই খতিয়ানের ২২৩ দাগের ১৯ শতাংশ কান্দা ভূমি ছালাম খান ও মানিক খান জবরদখলের মাধ্যমে ভোগ করছেন। ওই খতিয়ানের ৪৫৯ দাগের ১৭ শতাংশ নামা ভূমি মৃত ধলা খানের ছেলে ছানু খানের দখলে রয়েছে। নিজ নামে পৈত্রিক ৬০ শতাংশ বাড়ি-জমির মালিক হলেও সুবল রাজবংশী সংখ্যালঘু হওয়ায় প্রভাবশালীরা তাকে পরিবারসহ সূতানরী গ্রাম থেকে কৌশলে বিতারিত করেছে।
এ বিষয়ে সুবল রাজবংশী ইতোপূর্বে মির্জাপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। ওই জিডির পরিপ্রেক্ষিতে উভয় পক্ষকে মির্জাপুর থানায় তলব করা হয়- সেখানেও বিষয়টির কোন সমাধান হয়নি। সর্বশেষ সুবল রাজবংশী গত ২৫ জানুয়ারি প্রতিকার চেয়ে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।
সূতানরী গ্রামের ব্যবসায়ী আব্দুল লতিফ মিয়া(৬৫), আব্দুল করিম(৭০), নিরঞ্জন রাজবংশী(৫০), নরেশ রাজবংশী(৪০) সহ অনেকেই জানান, সুবল রাজবংশী অত্যন্ত সহজ-সরল প্রকৃতির মানুষ। স্থানীয় নদী ও মুক্ত জলাশয়ে মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তার বাবা-কাকারা তিন ভাই ছিলেন- স্বর্গীয় গণেশ রাজবংশী, স্বর্গীয় জিতেন রাজবংশী ও স্বর্গীয় জিনি রাজবংশী। স্বর্গীয় জিতেন রাজবংশী ও স্বর্গীয় জিনি রাজবংশী স্বাধীনতার আগে তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রি করে ভারতে চলে যান।
কিন্তু স্বর্গীয় গণেশ রাজবংশী তার অংশের সম্পত্তি বিক্রি করেন নাই এবং সুবল রাজবংশী অপ্রাপ্ত বয়স্ক থাকাকালে দেশেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
সুবল রাজবংশী কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, পৈত্রিক ৬০ শতক বসতবাড়ি-জমি থাকা সত্বেও তিনি ভূমি ও ঠিকানাহীন। সংখ্যালঘু হওয়ায় তার সম্পত্তি ছালাম খান ও তার আত্মীয়রা গায়ের জোরে জবরদখল করে নিয়েছে।
বার বার গ্রাম্য সালিশ-বিচারে উপস্থিত হয়ে জমির কাগজপত্র দেখিয়েও তিনি বাড়ির দখল ফিরে পাননি। টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপারের কাছে আবেদন করায় ডিবি এলাকায় গিয়ে তদন্ত করে এসেছে। কিন্তু কোন প্রতিবেদন দেয় নাই। এলাকায় থাকলে জবরদখলকারীরা তাকে মেরে ফেলতে পারে তাই তিনি স্ত্রী, ছেলেকে নিয়ে চন্দ্রায় দিনমজুরি করে কোন রকমে বেঁচে আছেন।
অভিযুক্ত ছালাম খানের অনুপস্থিতিতে তার স্ত্রী বয়োবৃদ্ধ রহিমা খানম জানান, সুবল রাজবংশী বাড়ির কিছু অংশের মালিক। সুবল চাইলে বসবাসের জন্য তারা বাড়ি ছেড়ে দেবেন। তবে সুবল যদি তার জায়গা বিক্রি করতে চায় তারা বাজার মূল্যের চেয়ে বেশি দামে কিনে রাখবেন।
ছালাম খানের ভাতিজা মো. রুবেল খান জানান, তারা কারো সম্পত্তি জবরদখল করেননি। বাড়ি ও জমির দলিল তাদের কাছে রয়েছে। প্রয়োজনে যথাস্থানে উপস্থাপন করা হবে। তবে সুবল যদি জায়গা বিক্রি করতে চায় তারা কিনে নেবেন।
ফতেহপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. মজনু মিয়া জানান, বিষয়টি নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে বার বার সালিশের আয়োজন করা হয়েছে। প্রথম দিকে অভিযুক্ত ছালাম খানরা তাদের কাছে ওই জমির দলিল আছে বলে জানিয়েছে পরে আর কোনদিন সালিশে হাজির হয়নি।
ফতেহপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রৌফ মিয়া জানান, সুবল রাজবংশীর বাড়ি ও জমি নিয়ে একাধিকবার ইউনিয়ন পরিষদে সালিশের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করা হয়েছে। ছালাম খানরা বিষয়টির সমাধান চাইলেও পরে আর সালিশে উপস্থিত হয়নি। মূলত: সাবেক চেয়ারম্যান হুমায়ুন তালুকদারের হস্তক্ষেপে বিষয়টি মিমাংসা করা সম্ভব হয়নি।
টাঙ্গাইল গোয়েন্দা পুলিশের(ডিবি-দক্ষিণ) অফিসার ইনচার্জ আমীর হোসেন জানান, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি পুরোপুরি অবগত নন। তিনি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।