একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলে বেড়েছে শীতের তীব্রতা, সেই সাথে উত্তরের কনকনে হিমেল হাওয়ায় জবুথবু হয়ে পড়েছে জেলার জনজীবন। বিশেষ করে জেলার পশ্চিমের চরাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বের পাহাড়ি এলাকায় সবচেয়ে বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে। ফলে নিম্ন-আয়ের মানুষ, গৃহহীন ভাসমান মানুষ ও কৃষকরা সমস্যায় পড়ছে সবচেয়ে বেশি।
টাঙ্গাইল আবহাওয়া অফিসের সূত্রে জানা যায়, জেলায় গত ২৪ ঘন্টায় তাপমাত্রা কমেছে ৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সকল ৯টা জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এই তাপমাত্রার পতন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে জেলা আবহাওয়া অফিস।
জানা গেছে, বুধবার ও বৃহস্পতিবার জেলায় সূর্যের দেখা মেলেনি। সেই সাথে উত্তরের কনকনে হিমেল হাওয়ার কারনে জেলায় প্রচন্ড শীত অনুভূত হচ্ছে। এর ফলে জেলার পশ্চিমের চরাঞ্চলে খুব সকালে কৃষকদের সবজির খেতে গিয়ে সবজি তুলে শহরের বিভিন্ন পাইকারি বাজারে আনতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। এ ছাড়াও জেলার পাহাড়ি এলাকায় ঘন কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ায় কারনে সন্ধ্যার পরে স্থানীয় মানুষ জন প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না
স্থানীয়রা জানায়,শীতের দাপটে গ্রামাঞ্চলের অনেকেই আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টাও করছেন। তীব্র শীত উপেক্ষা করে জীবিকার তাগিদে কাজের সন্ধানে বের হয়েছেন খেটে খাওয়া মানুষগুলো। তাপমাত্রা কমার চেয়েও বেশি অসুবিধা হচ্ছে হিমশীতল বাতাসে। এর পাশাপাশি ঘন কুয়াশা থাকায় বাতাসে তা গায়ে কাঁটার মতো বিঁধতে থাকে। ঘরে ঘরে লেপ-কাঁথা নামানো হয়েছে। তবে গত কয়েকদিন থেকেই শীতের তীব্রতা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার নিদারুণ কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন জেলার নিম্নআয়ের মানুষজন। খড়-কুঠো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে নিম্নে আয়ের মানুষ। সন্ধ্যার পর শহর খালি হয়ে যাচ্ছে। প্রচন্ড শীত থেকে বাঁচতে সন্ধ্যার পর ঘরে থাকছে শহরের মানুষ। যার প্রভাব পড়েছে শহরের ব্যবসা-বাণিজেও।
টাঙ্গাইল শহরের শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে পান-সিগারেট বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন লাইলি বেগম (৭০)। পরিবার-পরিজন বিহীন ভাসমান লাইলি বেগম থাকেন শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে। তিনি জানান, এই শীতে কাঁপছেন তিনি। গায়ের পাতলা চাদরটা তার শীত নিবারণ করতে পারছে না। তার পরও বাধ্য হয়ে এই প্রচন্ড শীতে সকাল থেকে রাত অব্দি পান-সিগারেট বিক্রি করতে হচ্ছে জীবনধারণের প্রয়োজনে। তার আফশোস এই প্রচন্ড শীতে কেউ তাঁকে একটি শীত বস্ত্র দিয়ে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার হুগড়া ইউনিয়নের বাগুনটাল গ্রামের কৃষক শাহাদাত হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার খুব ভোরে তার কপি খেতে গিয়েছিলেন কপি কেটে টাঙ্গাইল পার্ক বাজারে নিয়ে যাওয়া জন্য। প্রচন্ড শীতে কাঁপছে কাঁপতে তার পক্ষে আর সম্ভব হয়নি নদীর পাড়ের তার এই কপি খেতে থাকার। ফলে কপি না কেটেই বাসায় চলে এসেছেন তিনি। এ দিকে নির্দিষ্ট সময়ে কপি না তুললে বাজারে সঠিক দাম পাওয়া যাবে না বলে জানান তিনি। প্রচন্ড শীত তাঁদের জীবন যাপনকে আরও কঠিন করে তুলেছে।
শুকুর আলী টাঙ্গাইল পৌর এলাকায় ব্যাটারি চালিত রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। তার গ্রামের বাড়ি জেলার মধুপুর উপজেলায় হলেও টাঙ্গাইল শহরের পশ্চিম আকুর-টাকুর পাড়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকেন। তিনি জানান, এই প্রচন্ড শীতে শহরে মানুষ-জন বের হয় না। বিশেষ প্রয়োজনে যারা বের হচ্ছেন তারাও শহরে বেশী সময় থাকছে না। ফলে গত ৩ দিনে তার আয়-রোজগার প্রায় অর্ধেক হয়ে গেছে, এ ভাবে চলতে থাকলে আগামী মাসে তার বাড়ি ভাড়া দিতে সমস্যায় পড়তে হবে। এ ছাড়াও এই প্রচন্ড শীতে তার রিক্সা চালাতে সমস্যা হচ্ছে, ফলে সন্ধ্যার পর রিক্সা না চালিয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।
তিনি আরো জানান, কোন সংগঠনের পক্ষ থেকে কোন ধরনের শীতের কাপড় কিম্বা আর্থিক সহযোগিতা পাননি তিনি।
জেলায় অসহায়, দুস্থ ও দরিদ্র মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণের তথ্য জানতে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক শরিফা হকের মুঠো ফোনে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
একতার কণ্ঠঃ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, প্রাকৃতিক বনে কিসের সামাজিক বনায়ন, প্রাকৃতিক বনে বন থাকবে। আপনি যদি সামাজিক বনায়ন করেন, তাহলে চুক্তি স্বাক্ষর করেন উপকারভোগীদের সঙ্গে। এরপর সামাজিক বনায়নের গাছগুলো কেটে উপকারভোগীদের মধ্যে টাকা পয়সা বিতরণ করে দেন। বনবিভাগের প্রাথমিক দায়িত্ব টাকা পয়সা বিতরণ করা না। তাদের দায়িত্ব হচ্ছে প্রাকৃতিক বনকে রক্ষা করা। প্রাকৃতিক বনে আর কোনও সামাজিক বনায়ন হবে না।
বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইল পৌর শহরে ব্যুরো বাংলাদেশ মিলনায়তনে আয়োজিত আন্তর্জাতিক পরিবেশ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিদ্যুৎ অপচয় রোধে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, আপনারা দেখতে পাচ্ছেন দিনের বেলায় সব লাইট বন্ধ করে দিয়েছি। এই বিদ্যুৎ কোথা থেকে উৎপাদন হয়, কীভাবে হয় তা জানতে হবে। আমরা কেন দিনের বেলায় বিদ্যুৎ অপচয় করব। প্রাকৃতিক আলো থাকার পরেও কেন দিনের বেলায় লাইট জ্বালিয়ে প্রোগ্রাম করব।
উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান আরো বলেন, ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদী উদ্ধার করা যাচ্ছে না। নদীর নিচে তিন থেকে চার স্তরের পলিথিন পড়ে আছে। এ কারণে সেখানে ড্রেজিং করা সম্ভব না। তাই আমাদের সবার উচিত পলিথিন ব্যবহার বন্ধ করা।
তিনি বলেন, পরিবেশ রক্ষা করা সবাই দায়িত্ব, কারো একার নয়। ক্ষতিকর প্লাষ্টিক বর্জনের পাশাপাশি প্লাস্ট্রিকের উৎপাদন বন্ধ করতে হবে। নতুন করে কেউ যেন প্লাস্টিক তৈরি ব্যবস্থাপনায় না যায় সে ব্যবস্থা নিতে হবে। প্লাস্ট্রিকের জীবাশ্ম পুড়িয়ে রোধ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ইটভাটার মাটি কোথা থেকে আসে তার সঠিক তথ্য জানানো এবং পোড়ানো ইট নতুন করে পোড়ানো যাবে না। এক্ষেত্রে অনিয়মকারীদের নিবন্ধন বাতিল করা হবে।
ব্যুরো বাংলাদেশের এইচআরডি অ্যান্ড আইসিটি ডিরেক্টর অপারেশনস ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস ফারমিনা হোসেনের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন, টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক শরীফা হক, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. শহীদুল হক, আসপাড়া পরিবেশ উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক লায়ন এম এ রশীদ, রিভারাইন পিপলের মহাসচিব শেখ রোকন, সবুজ পৃথিবীর নির্বাহী পরিচালক সহিদ মাহমুদ প্রমুখ।
একতার কণ্ঠঃ: আমাদের দেশের মাটি ও আবহাওয়া পান চাষ করার উপযোগী। অন্যদিকে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এখন বাণিজ্যিকভাবে পানের চাষাবাদ করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা।
টাঙ্গাইলের নাগরপুরে এই প্রথম পান চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন মো.জহিরুল ইসলাম (৩৫)। সে নাগরপুর উপজেলার মামুদনগর ইউনিয়নের ভাতশালা গ্রামের মৃত সরব আলীর ছেলে।
জহিরুল ইসলামের সাথে কথা বলে জানা যায় , প্রায় সাত বছর পূর্বে রাজশাহীতে তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে সেখানে পান চাষ দেখে অনুপ্রাণিত হন তিনি। পরে আত্মীয়র সহযোগিতায় রাজশাহী থেকে প্রায় ১০ হাজার টাকায় চার হাজার পানের চারা কিনে এনে ২৫ শতাংশ জমিতে পানের বরজ তৈরি করেন। পর পর দুবার বেশির ভাগ চারা নষ্ট হয়ে যায় এবং ফলন ভালো না হওয়ায় বেশ আর্থিক ক্ষতির মধ্যে পড়েন। যার কারণে কিছুটা হতাশ হয়ে পড়েন। তবে হাল ছাড়েননি। রাজশাহীতে কয়েকবার গিয়ে নিজে মাঠে থেকে পান চাষ, যত্ন ও পানগাছ রক্ষার বিষয়ে পানের চাষ করেন এমন কৃষকদের নিকট থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ নেন তিনি। পরে বন্ধুদের সহযোগিতায় আবারো শুরু করেন পান চাষ। অবশেষে সফলতা পান তিনি। খরচ দ্বিগুণ হলেও বাজারে দাম ভালো পাওয়ায় লাভের আশা করছেন তিনি। এরই মধ্যে তার বরজের পান পাতা বড় হয়েছে। বিক্রিও শুরু করেছেন।
তিনি বলেন, ২৫ শতাংশ জমিতে পান চাষে তার মোট খরচ হয়েছে প্রায় ২ লাখ টাকা। প্রতিসপ্তাহে প্রায় ৩ হাজার টাকার পান বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে প্রায় ৬৭ হাজার টাকার পান বিক্রি করেছেন। পান চাষের নিয়ম অনুযায়ী বর্তমানে পানগাছের লতা বাড়তি হলে আবার সে লতাগুলো মাটিতে ঢেকে দিতে হয় এখন সেই প্রস্ততি চলছে। সব ঠিকঠাক থাকলে এ বাগান থেকে প্রতিবছর দেড় লাখ টাকার পান বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি আশা করছেন। জহিরুল ইসলামের অভিযোগ উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সে কোন প্রকার পরামর্শ বা সহযোগিতা পায়না।
যদি সরকারের পক্ষ থেকে এই পান চাষের জন্য কৃষি উপকরণ, কৃষি সহায়তা ঔষধ, সার, কীটনাশক পায় তবে পানের উৎপাদন দিন দিন বৃদ্ধি পাবে বলে আশাবাদী।
চাষ পদ্ধতি নিয়ে জহিরুল ইসলাম জানান, পান চাষের উপযুক্ত সময় বাংলা বৈশাখ মাস। তাই বৈশাখের শুরুতেই উঁচু জমিতে সারিবদ্ধ ভাবে পানের চারা রোপন করা হয়। জমি থেকে পানি সহজেই বের হওয়ার জন্য করা হয় ড্রেনেজ ব্যবস্থা। প্রখর রোদের তাপ থেকে চারা বাঁচাতে বাঁশ ও খড়ের সাহায্যে মাচা দেওয়া হয়। ৬ থেকে ৭ ফুট ওপরে ছাউনি দেওয়া হয়। সপ্তাহে অন্তঃত দু’বার কীটনাশক স্প্রে করতে হয়। পান গাছের প্রধান খাবার খৈল। যা বর্ষাকালে প্রয়োগ করা হয়। ফাল্গুন চৈত্রে খৈল প্রয়োগ করতে হয় না।
নাগরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ইমরান হোসাইন শাকিল জানান, নাগরপুর উপজেলায় পান চাষে জহিরুল ইসলাম একজন সফল উদ্যোক্তা। পান চাষে জহিরুল ইসলামকে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে সকল ধরনের কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে। পান যেহেতু অর্থকরী ফসল তাই কৃষি অফিস থেকে জহিরুল ইসলামসহ যারা পান চাষে এগিয়ে আসবে তাদের সার্বিক সহযোগীতা প্রদানে সচেষ্ট থাকবো।
একতার কন্ঠঃ কয়েক দিন ধরে চলা টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত টাঙ্গাইলের জনজীবন। তবে রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বৃষ্টি গত কয়েক দিনকে ছাড়িয়ে গেছে। এদিন সকাল থেকে চলা অবিরাম বৃষ্টিতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন শহরবাসী। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পরেছে জেলার শ্রমজীবী মানুষেরা। অফিসগামী সাধারণ মানুষ, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগও অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। বৃষ্টির এই ভোগান্তি কবে শেষ হবে, তার দিন গুণছে মানুষ।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি স্থল গভীর নিম্নচাপ হয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এর প্রভাবে দেশজুড়ে চলমান বৃষ্টি আগামী তিন দিনও অব্যাহত থাকতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংস্থাটি জানিয়েছে, স্থল গভীর নিম্নচাপটি গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হতে পারে। পাশাপাশি মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ ভারতের পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, গভীর স্থল নিম্নচাপের কেন্দ্রস্থল ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। সেই সঙ্গে মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় ও উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা পর্যন্ত রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। তবে এই সময়ে সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা পর্যন্ত রংপুর, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, ময়মনসিংহ, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। তবে এই সময়ে সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ৩ ডিগ্রি বৃদ্ধি পেতে পারে।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা পর্যন্ত বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও খুলনা বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে এই সময়েও দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে। তবে সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি বৃদ্ধি পেতে পারে।
বর্ধিত ৫ দিনে আবহাওয়ার অবস্থায় বলা হয়েছে, উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।
একতার কন্ঠঃ টাঙ্গাইল শহরের পাশ দিয়ে বয়ে চলা লৌহজং নদী দখল ও দূষণরোধে করণীয় শীর্ষক দলীয় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার(২১ আগষ্ট )দুপুরে শহরের একটি রেস্তোরায় বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি’ (বেলা) উদ্যোগে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
বিশিষ্ট সমাজকর্মী খন্দকার নাজিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন, সমাজকর্মী জালাল আহমেদ উজ্জল, আরপিডিও’র নির্বাহী পরিচালক রওশনারা লিলি।
এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) বিভাগীয় সমন্বয়কারী গৌতম চন্দ্র চন্দ। আলোচনা সভায় বক্তারা লৌহজং নদী দখল ও দূষণরোধে করনীয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
এসময় বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠনের সদস্য ও সমাজ কর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।
একতার কণ্ঠঃ উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারি বর্ষণে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীতে একদিনে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ৩৩ সেন্টিমিটার। এছাড়াও জেলার ছোট-বড় সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
মঙ্গলবার (০২ জুলাই) সকালে টাঙ্গাইল জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী নূরুল আমিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার সকাল ৬ টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬ টা পর্যন্ত যমুনা নদীর পোড়াবাড়ী পয়েন্টে ৩৩ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এরআগে বিপদসীমার ১০ দশমিক ৩৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল।
টাঙ্গাইল জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী নূরুল আমিন জানান, দু’দিন আগেও টাঙ্গাইলের যমুনা নদীসহ জেলার অন্যান্য নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করে। কিন্তু ফের ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে যমুনাসহ জেলার সব নদীতে পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করছে। তবে, বড় ধরণা বড় ধরণের বন্যার সম্ভাবনা নেই।
এদিকে, যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধির শুরু থেকে ভূঞাপুর উপজেলার গাবসারা, অর্জুনা, গোবিন্দাসী ও নিকরাইল ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে চিতুলিয়াপাড়া, মাটিকাটা ও কোনাবাড়ী এলাকার বেশ কয়েকটি ঘর-বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া চরাঞ্চলের অপরিপক্ক তিল পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়েছে।
একতার কণ্ঠঃ প্রচণ্ড তাপদাহের মধ্যে সাধারণ মানুষকে কিছুটা স্বস্তি দিতে টাঙ্গাইলে বিতরণ করা হয়েছে ছাতা। সেই সঙ্গে দেওয়া হয়েছে সুপেয় পানি ও বিস্কুট। কেন্দ্রীয় যুবলীগের নির্দেশে বুধবার (১ মে) দুপুরে শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড মোড়ে জেলা যুবলীগের উদ্যোগে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।
রোদে সুরক্ষার জন্য ছাতার পাশাপাশি সুপেয় পানি ও বিস্কুট পেয়ে খুশি পথচারীসহ নিম্ন আয়ের মানুষ। এ সময় ভ্যান চালকদের মাঝেও বিতরণ করা হয় ছাতা।
পথচারী বারেক মিয়া বলেন, মে দিবসের জন্য দোকানপাট বন্ধ। বিস্কুট ও পানি পেয়ে খুব উপকার হলো। এরকম কার্যক্রম চলমান থাকলে পথচারী ও ভ্যান চালকরা স্বস্তি পাবে।
জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সাইম তালুকদার বিপ্লব বলেন, কেন্দ্রীয় যুবলীগের নির্দেশে আমরা প্রথমদিনে ৫০ জনের মাঝে ছাতা বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া পথচারী ও নিম্ন আয়ের এক হাজার মানুষকে সুপেয় পানি ও বিস্কুট দেওয়া হয়েছে। যতদিন অসহ্য তাপদাহ থাকবে, এ কার্যক্রম ততদিন চলবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা যুবলীগের সভাপতি মাসুদ পারভেজ, সাধারণ সম্পাদক আবু সাইম তালুকদার বিপ্লব, নুর মোহাম্মদ সিকদার মানিকসহ জেলা ও উপজেলা যুবলীগের নেতাকর্মীরা।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে তীব্র তাপপ্রবাহে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে এক নারীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) রাতে হিট স্ট্রোক করে সালমা বেগম (৫০) নামের ওই নারীর মৃত্যু হয়।
তিনি ভূঞাপুর পৌর শহরের ফকিরপাড়ার চরপাড়া এলাকার অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট সানাউল্লাহর স্ত্রী।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আব্দুস সোবহান মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্বজনরা জানান, শুক্রবার রাতে প্রচণ্ড গরমের কারণে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মাটিতে পড়ে যান সালমা।পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে ভুঞাপুর স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আব্দুস সোবহান জানান, শুক্রবার রাতে সালমা নামে এক বয়স্ক নারীকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়েছিল। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার পূর্বেই তার মৃত্যু হয়। প্রচন্ড গরমে স্টোক জনিত কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।
একতার কণ্ঠঃ প্রচন্ড তাপপ্রবাহে পুড়ছে দেশ। আকাশে মেঘের দেখা নেই বৃষ্টিহীন চরম অস্বস্তিকর এ পরিস্থিতিতে গরম থেকে মুক্তি ও বৃষ্টির জন্য টাঙ্গাইলে খোলা আকাশের নিচে বৃষ্টির জন্য সালাতুল ‘ইস্তিসকার’ নামাজ ও বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকাল ১০টায় টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় ঈদগাহ্ মাঠে এ নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
নামাজে ইমামতি করেন শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের খতিব ও জেলা ইমাম মুয়াজ্জিন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মামুন ঈমান।
নামাজে টাঙ্গাইল পৌর মেয়র এস.এম সিরাজুল হক আলমগীর, সাবেক পৌর মেয়র জামিলুর রহমান মিরন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান খোরশেদ আলমসহ বিভিন্ন স্থান থেকে আগত সহস্রাধিক মুসল্লি অংশ নেয়।
নামাজে অংশ নেওয়া কয়েকজন মুসল্লি জানান, টানা কয়েক দিনের প্রচন্ড তাপদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্রখর রোদের কারণে জীবিকা নির্বাহের তাগিদে বাইরে বের হতে পারছে না অনেক মানুষ। এ কারণে বৃষ্টি চেয়ে আল্লাহর দরবারে দুই রাকাত সালাতুল ‘ইস্তিসকার’ আদায় করা হয়।
উল্লেখ্য, মূলত সালাতুল ‘ইস্তিসকার’ সুন্নতি আমল। এ নামাজ ঈদের নামাজের মতো। নামাজ শেষে খুৎবা পাঠ করা হয়। তারপর দোয়ায় অনাবৃষ্টি ও অসহ্য গরম থেকে মুক্তি এবং মহান আল্লাহর রহমত কামনা করা হয়।
একতার কণ্ঠঃ সপ্তাহব্যাপী তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জেলার শহর ও গ্রামের জনজীবন। এর সাথে অনাবৃষ্টি যোগ হওয়ায় এক প্রকার বাধ্য না হলে ঘর থেকে বের হচ্ছে না জেলা বাসী।
শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) দুপুর ৩টায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে টাঙ্গাইল আবহাওয়া অফিস। এটিই জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বলে নিশ্চিত করেছেন অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক জামাল হোসাইন।
তিনি জানান, শুক্রবার দুপুর ৩টায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। তবে আরও বাড়বে। সন্ধ্যা ৬টায় সর্বশেষ তাপমাত্রা মাপা হবে। আরও দুইদিন এ দাবদাহ অব্যাহত থাকবে বলেও জানান এ আবহাওয়াবিদ।
সরেজমিনে শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে টাঙ্গাইল শহর, দাইন্যা ও হুগড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, বাইরে আসা লোকজন গরম সইতে না পেরে চায়ের দোকান ও গাছপালার নিচে আশ্রয় নিচ্ছে। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষ। চাহিদার তুলনায় কম বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকায় দুর্ভোগ বেড়েছে আরও কয়েক গুণ।
রাস্তাঘাট এক প্রকার জন-মানব শূন্য। প্রখর সূর্যের তাপে রাস্তাঘাটে টেকা দায়। বাতাস এলে তার সাথে আসছে ধুলা-বালি ও গরম বাতাস। কেউ বাড়ি থেকে বের হলেও বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত তাপমাত্রা ও ধুলাবালি থেকে বাঁচতে ছাতা ও মুখে মাক্স ব্যবহার করছে।
হুগড়া ইউনিয়নের বেগুনটাল বাজারে কথা হয় সবজি বিক্রেতা ঈমান আলীর সাথে। তিনি বলেন, প্রচন্ড গরমে বাজারে কোনো ক্রেতা নেই। পেটের দায়ে বাধ্য হয়েই তিনি সবজি নিয়ে বসে আছেন বিক্রির আশায়। গরমের কারণে তার বিক্রি অর্ধেক কমে গেছে।
দাইন্যা ইউনিয়নের বাসাখানপুর বাজারে কথা হয় আখের রস বিক্রেতা মুন্না মিয়ার সাথে। তিনি বলেন, গত কয়েকদিন যাবত তার আখের রস বিক্রি অনেক গুন বেড়েছে। প্রচন্ড গরমে মানুষ বাধ্য হয়েই আখের রস বেশি বেশি খাচ্ছে। বেচা-বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় মুন্নার মুখে তৃপ্তির হাসি।
টাঙ্গাইল শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ্ মাঠে কথা হয় সাহান হাসানের সাথে। তিনি বলেন, আমি বটতলা থেকে মার্কাস মসজিদে নামাজ পড়তে এসেছিলাম। মসজিদের ভিতরেও প্রচন্ড গরম। এছাড়া ঈদগাহ্ মাঠ যেন ধুলা-বালির রাজত্ব। গরম ও ধুলা-বালিতে টাঙ্গাইল শহরে বসবাস করাই দায়। এর সাথে যুক্ত হয়েছে মশা। কবে যে বৃষ্টি হবে একমাত্র আল্লাহ্ পাক ভালো জানেন।
এ অবস্থায় দেশব্যাপী শুক্রবার তিন দিনের জন্য সতর্কতামূলক হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অফিস।
শুক্রবার আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিকের স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ সতর্কতা জারির কথা জানানো হয়।
এতে বলা হয়- দেশের ওপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ আরও তিন দিন অব্যাহত থাকতে পারে। পাশাপাশি তাপমাত্রা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিও বাড়তে পারে বলে জানানো হয়।
এছাড়া সারা দেশে হিট আল্যার্ট জারি থাকলেও কিছু স্থানে বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
অন্যদিকে তাপদাহের চাপে রোগী বেড়েছে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে। গরমে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন শিশু, বৃদ্ধ ও শ্রমজীবীরা।
এমন পরিস্থিতিতে বেশি করে বিশুদ্ধ পানি, খাবার স্যালাইন ও তরল খাদ্য গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন জেলার
সিভিল সার্জন।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলে সোমবার (২২ জানুয়ারি) শীত মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। যা এই মৌসুমের এটাই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
টাঙ্গাইল জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জামাল উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী জেলার তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামায় টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. কায়ছারুল ইসলাম এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) জেলার সকল স্কুল-কলেজ একদিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছেন।
এদিকে, বছরের শুরু থেকেই টাঙ্গাইলের তাপমাত্রার পারদ ধীরে ধীরে কমছে। এর ফলে, শীতের তীব্রতা বেড়েই চলেছে। এর সাথে যুক্ত হয়েছে ঘন কুয়াশার চাদর। ফলে গত সপ্তাহ থেকেই কোন দিন সূর্যের দেখা মিলছে আবার কোনদিন মিলছে না। প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে কেউ বের হচ্ছেন না। আকাশে সূর্য উঁকি দিলেও রোদের তাপমাত্রা অত্যন্ত কম থাকে। প্রত্যান্ত গ্রামের মানুষ খড়ুকুটো ও গাছের গুড়িতে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। সব মিলিয়ে জেলার জনজীবন এক প্রকার বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষ ও ভাসমান জনগোষ্ঠী সবচেয়ে ভোগান্তির শিকার।
শীত প্রসঙ্গে টাঙ্গাইল পৌরসভার পশ্চিম আকুর টাকুর পাড়া এলাকার মো. মাহবুব আলম উজ্জ্বল বলেন, আমি একজন মোবাইল ব্যবসায়ী। গত কয়েকদিনের প্রচন্ড শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে গ্রাহক কম আসায় মোবাইল বিক্রি অনেক কমে গেছে। ফলে শীতের প্রকোপ বাড়ার সাথে সাথে ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
টাঙ্গাইল শহরের আশেকপুর এলাকার মো. এমদাদুল আহমেদ বাচ্চু বলেন, আমি একজন চাকরিজীবী। প্রতিদিন সকাল ৮টায় আমাকে অফিসে যেতে হয়। ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতের কারণে সকাল বেলায় যানবাহন খুব কম থাকায় প্রায়ই অফিসে যেতে বিলম্ব হচ্ছে। এছাড়া বাসার ছোট ছেলে-মেয়েদের স্কুলে যেতেও সমস্যা হচ্ছে।
শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকার সিএনজি চালিত অটোরিকশার চালক লুৎফর রহমান বলেন, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বাইরে আসছেন না। যাত্রী কমে গেছে অনেক। আগে প্রতিদিন ৮শত থেকে ১ হাজার টাকা আয় করতাম। এখন ৫শত টাকার বেশি আয় করা যাচ্ছে না।
টাঙ্গাইল জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জামাল উদ্দিন জানান, কয়েকদিন ধরে টাঙ্গাইলের তাপমাত্রা কমেছে। সোমবার টাঙ্গাইলের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা এ বছরের মধ্যে সর্বোনিম্ন। আরো কয়েক দিন শীত থাকবে।
টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. কায়ছারুল ইসলাম জানান, তাপমাত্রা সর্বনিম্ন থাকায় জেলার সকল স্কুল-কলেজ মঙ্গলবার বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার আবহাওয়া দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। শীত নিবারনের জন্য জেলার গরিব ও ভাসমান মানুষদের মধ্যে দুই দফায় প্রায় ৮০ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।
একতার কণ্ঠঃ জেলার রামগঞ্জ উপজেলার ভাদুর ইউনিয়নের হানুবাইশ গ্রামে ভূকম্পন উৎপন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। কম্পনটি ৫.৬ রিখটার স্কেল মাত্রা ও মাঝারি আকারের ছিল। শনিবার (২ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ ফারজানা সুলতানা এক চিঠিতে বিষয়টি জানিয়েছেন।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সকাল ৯টা ৩৫ মিনিট ৩৩ সেকেন্ডে ৫.৬ রিখটার স্কেলের মাত্রায় মাঝারি আকারের ভূকম্পনটি হয়েছে।
ভাদুর ইউনিয়নের সমেষপুর গ্রামের বাসিন্দা শেখ ফরিদ বলেন, ভূমিকম্পের সময় আমি রামগঞ্জ উপজেলা শহরে ছিলাম। এজন্য কম্পনের বিষয়টি বেশি বুঝতে পারিনি। বাড়িতে এসে শুনেছি৷ আমাদের পুরো বিল্ডিং কেঁপে উঠেছে। এ ধরণের ভূকম্পন আমাদের এলাকায় আর দেখা যায়নি।
উপজেলার লামচর ইউনিয়নের পানপাড়া এলাকার বাসিন্দা আবুল কাশেম বলেন, আমি বাঁশ ঝাড়ের নিচে ছিলাম। হঠাৎ পুরো এলাকা কেঁপে উঠেছে। এমন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে,যেন বাঁশগুলো আমার ওপর ভেঙে পড়ছে। এ ধরণের ভূমিকম্প আর দেখিনি।
রামগঞ্জের ভাদুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাবেদ হোসেন বলেন, আমি শুয়ে ছিলাম। হঠাৎ করে খাট নড়ে উঠছিল। পুরো বিল্ডিংটাই নড়ছিল। এ ধরণের ভূমিকম্প গত কয়েকবছরে দেখিনি। গণমাধ্যম সূত্রে জানতে পেরেছি আমাদের হানুবাইশ গ্রামে ভূকম্পনের উৎপত্তিস্থল। তাৎক্ষণিক স্থানীয় ইউপি সদস্য মামুন হোসেনের সঙ্গে কথা বলেছি। কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবুও খোঁজ নেওয়া হয়েছে।
রামগতি প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যেবক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক সোহরাব হোসেন বলেন, রামগঞ্জে ভূকম্পনের উৎপত্তি হয়েছে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে আমাদেরকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে। রামগতিও ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে।
লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুরাইয়া জাহান বলেন, ভূমিকম্পটি রামগঞ্জ থেকে উৎপত্তি হয়েছে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছে। কোন ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। তবুও রামগঞ্জ ইউএনওসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের খোঁজ নিতে বলা হয়েছে।