একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে এলেঙ্গা- জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে দাঁড়িয়ে থাকা একটি লাকড়ি বোঝাই ট্রাকে পিকআপের ধাক্কায় ঘটনাস্থলে একজন সহ দুই গার্মেন্টস কর্মী নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৭ জুন) রাত ৯ টার দিকে ওই মহাসড়কের কালিহাতী পৌরসভার বাগুটিয়া চাটিপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১৫ জন। এদের মধ্যে ৫ জনের অবস্থা গুরুত্বর হওয়ায় টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।
নিহত দুই গার্মেন্টস কর্মী হলেন- জামালপুর জেলার ইসলামপুর উপজেলার মাইজবাড়ীচর গ্রামের আব্দুল হকের স্ত্রী নিশি (২০) ও তার মা নাসিমা বেগম (৪৫)।
নিহত নাসিমার ছেলে বিপ্লব জানান, তাঁরা সবাই আশুলিয়া বেরিবাঁধ এলাকায় একটি গার্মেন্টসে কাজ করত। ঈদের ছুটিতে বাইপাইল থেকে একটি পিকআপ যোগে তিনি সহ তার মা, ভাই, ভাবী, খালা ও খালু মিলে বাড়ি ফিরতেছিল। পথিমধ্যে এলেঙ্গা-জামালপুর মহাসড়কের কালিহাতী উপজেলার চাটিপাড়া এলাকায় পৌঁছলে সড়কের পাশে বাঁকাভাবে দাঁড়িয়ে থাকা একটি লাকড়ি বোঝাই ট্রাকে ধাক্কা দেয়। এসময় সাথে সাথেই আমার ভাবী নিশি মারা যায়।
তিনি আরও জানান, ওই পিকআপে আমরা প্রায় ২০ জনের মতো যাত্রী ছিলাম। পরে এখানকার লোকজন আহতদের উদ্ধার করে কালিহাতী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে আমার মা মারা যায়।
কালিহাতী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. এলিন আরাফাত অনিক জানান, এই সড়ক দুর্ঘটনায় ১৫ জন রোগী আহতবস্থায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসে। এদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা গুরুত্বর হওয়ায় তাদেরকে টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে এবং নাসিমা নামের এক নারীর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ায় হাসপাতালে মারা গেছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ছুটি দেওয়া হয়েছে।
এবিষয়ে এলেঙ্গা পুলিশ ফাঁড়ির সাব-ইন্সপেক্টর সাকিব জানান, কালিহাতী উপজেলার বাগুটিয়া চাটিপাড়া এলাকায় মহাসড়কের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা একটি লাকড়ি বোঝাই ট্রাকে ঢাকা বাইপাইল থেকে ছেড়ে আসা একটি যাত্রীবাহী পিকআপ দ্রুত এবং বেপরোয়া গতিতে এসে সজোরে ধাক্কা দেয়। এসময় ঘটনাস্থলেই একজন ও কালিহাতী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন মোট দুইজন পিকআপের যাত্রী নিহত হয়। এ ঘটনায় ট্রাক ও পিকআপ জব্দ করে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, লাশ দুটি আইনগত ব্যবস্থা শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের সখীপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নাঈম আহমেদ (২৫) নামের এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছে। সোমবার(২৬ জুন) দুপুরে উপজেলার বোয়ালী পেট্রোল পাম্পের সামনে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।
নিহত নাঈম বোয়ালী কলেজ পাড়ার রফিকুল ইসলামের ছেলে। স্থানীয় ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার দুপুর ১ টার দিকে বন্ধুর সাথে বোয়ালী পেট্রোল পাম্পে তেল আনতে যায়। টাঙ্গাইলগামী একটি সিএনজি পেছন দিক থেকে মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয়।
মোটরসাইকেলের পেছনে বসে থাকা নাঈম রাস্তায় ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজের রেফার্ড করা হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে বিকেল চারটায় তার মৃত্যু হয়।
নাঈমের মৃত্যুতে পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে আরেকজনকে বাঁচাতে গিয়ে চলন্ত ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে সজিব হোসেন (২০) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ সময় আরও তিন যাত্রী আহত হয়েছেন।
সোমবার (২৬ জুন) রাতে মির্জাপুর স্টেশনের পূর্ব গেটের কাছে বাওয়ার কুমারজানি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত সজিব হোসেন নওগাঁ সদর উপজেলার রাইজুর গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে।
আহত একজনের পরিচয় জানা গেছে। তিনি হলেন একই জেলার বদলগাছি উপজেলার ওলাবাজার গ্রামের এনামুল হকের ছেলে রেমন হোসেন (২৬)।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনটি রাত ১২টার দিকে মির্জাপুর স্টেশনের পূর্ব গেটের কাছে বাওয়ার কুমারজানি নামক স্থানে পৌঁছায়। এ সময় রেললাইনের ওপর দিয়ে টানানো ডিস লাইনের তারে আটকে ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে যান যাত্রী সজিব ও রেমন হোসেন। সজিব ঘটনাস্থলে মারা যান। রেমন গুরুতর আহত হন। তাকে উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করেন। ডিস লাইনের তারে আটকে আরও দুই যাত্রী আহত হলেও তারা নিচে পড়েননি। তাদেরকে টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
দুর্ঘটনায় আহত রেমন হোসেন বলেন, গাজীপুর স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক কারখানায় চাকরি করি। ট্রেনের ছাদে গাদাগাদি করে বসে ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাচ্ছিলাম। মির্জাপুর রেল স্টেশনের কাছে আসার পর একজন লোক পড়ে যাওয়ার সময় আমার পা টেনে ধরেন। তখন আমরা দুজনই নিচে পড়ে যাই। লোকটি ওখানে মারা গেলেও আমি আল্লাহর রহমতে বেঁচে আছি।
মির্জাপুর স্টেশনের গেটম্যান শান্ত ইসলাম বলেন, দিনগত রাত ১২টার দিকে আহত লোকটি আমার কাছে এসে দুর্ঘটনার খবর দেন। পরে ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে তারা এসে আহত ব্যক্তিকে কুমুদিনী হাসপাতালে নিয়ে যান। খবর পেয়ে টাঙ্গাইল রেলওয়ে পুলিশ সকালে এসে নিহতের মরদেহটি উদ্ধার করে।
মির্জাপুর রেলস্টেশনের মাস্টার কামরুল হাসান বলেন, ঢাকা থেকে লালমনিরহাটগামী লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনটি মির্জাপুর স্টেশনে আসার আগেই দুর্ঘটনাটি ঘটে। টাঙ্গাইল রেলওয়ে পুলিশ সকালে মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে গেছে।
টাঙ্গাইল রেলওয়ে পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আলী আকবার বলেন, নিহতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে বাইক আরোহী দুই ছাত্রলীগ কর্মী নিহত হয়েছে।
রোববার (২৫ জুন) সকাল ১১টার দিকে উপজেলার বাজিতপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হচ্ছেন- উপজেলার পাচনখালী গ্রামের মিজানুর রহমানের ছেলে রিফাত (১৪) ও মৃত আয়নাল হকের ছেলে অন্তর আলী (১৬)। তারা উপজেলার বীরতারা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কর্মী।
ধনবাড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জসিম উদ্দিন জানান, রিফাত ও অন্তর আলী মোটরসাইকেলে করে বাজিতপুর এলাকা দিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে সড়কের পাশে থাকা মেহগনি গাছের সঙ্গে মোটরসাইকেল সজোরে ধাক্কা লাগে।
তিনি আরো জানান,এতে ঘটনাস্থলেই তারা নিহত হয়। পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে নিহতের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের সখীপুরে ট্রাকচাপায় হারুন দেওয়ান (৩৫) নামের এক সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক নিহত হয়েছে।
রোববার(২৫ জুন) ভোরে পৌর শহরের মুখতার ফোয়ারা চত্বরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা ট্রাকসহ ট্রাকের চালক জাহিদ হাসানকে (৩০) আটক করে থানায় সোপর্দ করেন। এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সখীপুর থানার উপ-পরিদর্শক নজরুল ইসলাম।
নিহত অটোরিকশাচালক হারুন দেওয়ান বোয়ালী দক্ষিণপাড়া গ্রামের সোমেদ আলীর ছেলে।
ট্রাকচালক জাহিদ হাসান কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার নওদা খাদিমপুর গ্রামের মৃত আনোয়ার হোসেনের ছেলে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রোববার ভোরে সখীপুর মুখতার ফোয়ারা চত্বরে নিজের সিএনজিচালিত অটোরিকশার কাছে চালক হারুন দেওয়ান দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় ঢাকা থেকে সাগরদীঘিগামী দ্রুত গতির একটি ট্রাক হারুনকে চাপা দেয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
সখীপুর থানার উপপরিদর্শক নজরুল ইসলাম জানান, ট্রাক ও চালককে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের গোপালপুর ট্রেনে কাটা পড়ে স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২২ জুন) দুপুরে উপজেলার ঝাওয়াইল ইউনিয়নের মোহাইল গ্রামে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে।
গোপালপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মোশারফ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহতরা হলেন- উপজেলার রাজগোলাবাড়ী গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে মোঃ আরজু ( ৫০ ) ও তার স্ত্রী সম্পা বেগম (৪৫ ) ।
ঝাওয়াইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান জানান, দুপুরে স্বামী-স্ত্রী দু’জনে মোহাইল গ্রামে যুগীরগোপা নামের একটি দরগায় শিন্নি দিতে যান।সেখান থেকে রেল লাইন দিয়ে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় তারা রেল সেতু পার হওয়ার সময় চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ভূঞাপুরগামী ৩৭ নম্বর মেইল ট্রেনের নিচে কাটা পড়েন।এতে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়।
তিনি আরোও জানান, খবর পেয়ে নিহতদের লাশ স্বজনরা নিয়ে যায়।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের নাগরপুরে গাছ কাটতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মো. তারা মিয়া (২৮) নামের এক শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুইজন।
বুধবার (২১ জুন) বিকালে নাগরপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের চরকাঠুরী এলাকায় এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।
নিহত তারা মিয়া উপজেলার কাঁচপাই গ্রামের আফছার শেখের ছেলে।
জানা যায়, বুধবার বিকাল সাড়ে ৫ টার দিকে পল্লী বিদ্যুতের লাইন চালু থাকা অবস্থায় কাঠ ব্যবসায়ী রফিক চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক দিয়ে গাছ কাটতে ছিলেন। হঠাৎ করেই বিদ্যুৎদের তারের ওপর গাছের ঢাল পড়ে সাথে সাথেই শরীর বিদ্যুতায়িত হয়ে ঘটনা স্থলেই মারা যায় তারা মিয়া। গাছের সাথে ঝুলে থাকে তার লাশ। পরে ফায়ার সার্ভিসের লোক এসে নিহতের লাশ নিচে নামিয়ে আনেন। আহত অপর দুইজনকে নাগরপুর হাসপাতালে চিৎকিসার জন্য পাঠানো হয়। আহত ব্যক্তিদের নাম ঠিকানা জানা যায়নি।
টাঙ্গাইল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নাগরপুর জোনাল অফিসের কর্মকর্তা মোহাম্মদ মেশবাহুল হক জানান, গাছ কাটার বিষয়ে আমাদের অবহিত করা হয়নি।
নাগরপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন অফিসার মো. মেহেদী হাসান বলেন, বিকেল ৫টার দিকে বিদ্যুৎস্পৃষ্টের সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে নিহতের লাশ গাছ থেকে নিচে নামিয়ে আনা হয়।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের বাসাইলে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় সাজেদা বেগম (৪৫) নামে এক নারী নিহত হয়েছেন।
বুধবার (২১ জুন ) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের নলগাইরা বাজারে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত সাজেদা বেগম বাসাইলের কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের পূর্ব পৌলি গ্রামের জামাল মিয়ার স্ত্রী।
স্থানীয়রা জানান, নলগাইরা বাজারের রাস্তার এক পাশে মহিলাটি দাঁড়িয়ে ছিলেন। বাসাইল হতে পাথরঘাটাগামী একটি মোটরসাইকেল মহিলাটিকে ধাক্কা দিলে মহিলাটি রাস্তার পাশে ছিটকে পড়ে যায়। স্থানীয়রা মহিলাকে উদ্ধার করে বাসাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. রমেশ জানান, দুর্ঘটনার পর মহিলাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। ইসিজি পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হই হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলে ফসলের মাঠ (চক) থেকে গরু আনতে গিয়ে বাড়ি ফেরার পথে বজ্রপাতে ফজলুল হক (৫০) নামের এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। এতে ফজলুল হকের শরীরের বিভিন্ন অংশ ভষ্মিভুত হয়ে যায়।
বুধবার (২১ জুন) দুপুর আড়াইটার দিকে গোপালপুর উপজেলার নগদাশিমলা ইউনিয়নের বাইশকাইল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ফজলুল হক ওই গ্রামের জহুর আলীর ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোপালপুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোশারফ হোসেন।
তিনি জানান, ফজলুল হক দুপুরে মাঠ থেকে গরু নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। এসময় প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছিল। হঠাৎ বজ্রপাতের কবলে পড়েন তিনি। এতে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়। পরে খবর পেয়ে তার মরদেহ স্বজনরা বাড়ি নিয়ে গেছে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় আবির হোসেন (১৪) নামে ট্রাক চালকের সহকারী এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে।
রোববার (১১ জুন) ভোরে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের উপজেলার দেওহাটা বেঙ্গল কারখানার সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত কিশোর আবির হোসেন নাটোরের বাসমারা এলাকার খোকন মিয়ার ছেলে।
সে বাবার সঙ্গে ট্রাকে সহকারী হিসেবে কাজ করতো। বাবা খোকন মিয়া ট্রাকচালক।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, শনিবার রাতে বাবার সঙ্গে মালভর্তি ট্রাক নিয়ে ঢাকা থেকে নাটোরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে আবির হোসেন। রোববার ভোররাতে মহাসড়কের দেওহাটা বেঙ্গল কারখানার সামনে পৌঁছালে সামনে থাকা অজ্ঞাতপরিচয় একটি যানের পেছনে ট্রাকটি ধাক্কা দেয়। এতে ট্রাকে বাবার পাশে থাকা আবির ঘটনাস্থলেই মারা যায়। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ ও ট্রাকটি উদ্ধার করে। এ ঘটনায় বাবা খোকন মিয়া সুস্থ আছেন।
গোড়াই হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম জানান, আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের মধুপুরে মোটরসাইকেল ও ব্যাটারি চালিত অটোভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে ভ্যান চালক নিহত হয়েছে।
শনিবার (১০ জুন) রাতে উপজেলার টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কের রক্তিপাড়া তারা ফিলিং স্টেশনের সামনে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত ভ্যান চালকের নাম আ. সোবহান (৭০)। তিনি উপজেলার আলোকদিয়া ইউনিয়নের রক্তিপাড়া গ্রামের মৃত কাইঞ্চা শেখের ছেলে।
এই ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক ও অপর মোটরসাইকেল আরোহী গুরুতর আহত হয়েছে।
গুরুতর আহতরা হলেন, মোটরসাইকেল চালক উপজেলার কাকরাইদ গ্রামের মোঃ আশরাফুল ইসলামের ছেলে মোঃ বিপ্লব(২২) ও মোটরসাইকেল আরোহী ঘাটাইল উপজেলার টিলা বাজার গ্রামের মোছাঃ আনজুম (২০)
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শনিবার রাত ৯ টার দিকে ভ্যানচালক সোবাহান ভ্যান নিয়ে রক্তিপাড়া নিজ বাড়ির দিকে যাচ্ছিল। এসময় অপরদিক থেকে আসা একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে ভ্যানটির মুখোমুখি সংর্ঘষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ভ্যানচালক সোবাহান নিহত হয়।
এসময় স্থানীয়রা মোটরসাইকেল চালক ও আরোহীকে গুরুত্বর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে কত্যর্বরত চিকিৎসক আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
মধুপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মুরাদ হোসেন জানান, রাত ৯টার দিকে রক্তিপাড়া এলাকায় একটি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই ভ্যান চালক মারা যায়। এ ঘটনায় আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আনা হয়। পরে তাদের অবস্থার অবনতি হলে তাৎক্ষনিকভাবে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
পরবর্তী আইনগত কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
একতার কণ্ঠঃ মা–বাবা মোটরসাইকেল কিনে দিতে রাজি ছিলেন না। কিন্তু কিশোর সাব্বির আলম (১৭) নাছোড়বান্দা। ছেলের জেদে বাধ্য হয়ে মোটরসাইকেল কিনে দেন বাবা। এরপর ছয় মাসও যায়নি। শখের সেই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনাতেই প্রাণ গেল সাব্বির আলম ও তাঁর বন্ধু হামিদের (১৭)। ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় সাব্বিরের মা–বাবা। হামিদের বাড়িতেও চলছে মাতম।
সাব্বিরদের বাড়ি টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার টেপিকুশারিয়া গ্রামে। সে ঘাটাইল জিবিজি সরকারি কলেজের উচ্চমাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তার বাবা মো. সুরুজ্জামান পেশায় রংমিস্ত্রি। মা গৃহিণী। সাব্বিরের বন্ধু হামিদ পার্শ্ববর্তী মানিকপুর গ্রামের রমজান আলীর ছেলে। সে ছনখোলা স্কুল অ্যান্ড কলেজের উচ্চমাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
সাব্বিরের বাবা মো. সুরুজ্জামান কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘ছেলেরে শখ পূরণ করতে মোটরসাইকেল কিইনা দিলাম, সেই মোটরসাইকেলেই তাঁর জীবন গেল।’
প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, গত রোববার(৪ জুন) সকালে সাব্বির তাঁর বন্ধু হামিদ ও সাদিককে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে ঘুরতে বের হয়। তারা মধুপুরের রাবারবাগান এলাকায় ঘুরে বাড়ির দিকে ফিরছিল। পথে মধুপুরের মহিষমারা ইউনিয়নের হাজিবাড়ি মোড়ে পৌঁছালে মোটরসাইকেলটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে ঘটনাস্থলে সাব্বির ও হামিদ নিহত হয়। অপর বন্ধু সাদিক আহত হয়। তবে সে শঙ্কামুক্ত।
মধুপুর থানায় আইনি প্রক্রিয়া শেষে রোববার সন্ধ্যায় সাব্বিরের লাশ টেপিকুশারিয়ায় তাদের গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হয়। হামিদের লাশ নেওয়া হয় মানিকপুরের গ্রামের বাড়িতে। স্থানীয় ইউপি সদস্য রোকিবুল ইসলাম জানান, এ সময় উভয়ের বাড়িতে স্বজনদের কান্নার রোল পড়ে। উভয়ের বাড়িতে করুণ দৃশ্যের অবতারণা হয়। গ্রামের মানুষ তাদের লাশ দেখতে ভিড় করে। সন্ধ্যার পর জানাজা শেষে নিজ নিজ গ্রামে তাদের দাফন করা হয়।
নিহত সাব্বিরের চাচা নুরুল ইসলাম বলেন, সাব্বির ছিল মা–বাবার বড় সন্তান। তার সাত বছর বয়সী আরেক ভাই রয়েছে। নিহত হামিদের ছোট এক বোন ও এক ভাই রয়েছে। ছোট ভাইটি মানসিক প্রতিবন্ধী।
স্থানীয় লোকজন বলছেন, ঘাটাইল ও মধুপুর এলাকায় কিশোর মোটরসাইকেল ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। বেপরোয়াভাবে মোটরসাইকেল চালাতে গিয়ে তারা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। এসব নিয়ন্ত্রণে পুলিশের কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
ঘাটাইল থানা সূত্র জানায়, সাব্বির, হামিদ ছাড়াও গত ১৯ মাসে ঘাটাইলে অন্তত ১০ জন কিশোর-যুবক মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে। তারা সবাই বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ঘাটাইল উপজেলার গুণগ্রামে দ্রুতগামী মোটরসাইকেলের সঙ্গে অজ্ঞাত একটি গাড়ির ধাক্কা লাগে। এতে ওই মোটরসাইকেল আরোহী সোনা মিয়া (২০), শামীম (২২) ও আলমগীর (৩০) ঘটনাস্থলেই নিহত হন। তাঁরা ঘাটাইলে একটি ওয়ার্কশপের শ্রমিক ছিলেন।
২০২২ সালের ১২ ডিসেম্বর একই সড়কের ঘাটাইলের বানিয়াপাড়া এলাকায় দ্রুতগামী মোটরসাইকেলের সঙ্গে ট্রাকের ধাক্কা লাগে। এতে মোটরসাইকেলের আরোহী সাকিম হাসান (১৭) ও সুমন (১৬) ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। তাঁরা দুজনেই ঘাটাইল গণ উচ্চবিদ্যালয় থেকে চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। ২০২১ সালের ৮ নভেম্বর ঘাটাইলের ধলাপাড়া চেয়ারম্যানবাড়ির মোড়ে দ্রুতগামী মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে তিনজন স্কুলছাত্র ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। তারা হচ্ছে শরীফ (১৬) আবু বক্কর (১৭) ও সাইম (১৬)।
এ ছাড়া প্রতিনিয়ত ঘটছে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা। যেসব দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটে না, তার রেকর্ড থানা পর্যন্ত আসে না বলে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে।
পুলিশ বিভাগের একটি সূত্র জানায়, ঘাটাইলে অন্যান্য উপজেলার তুলনায় বেশি মোটরসাইকেল চললেও এখানে ট্রাফিক বিভাগের সার্জেন্টের পদে কোনো কর্মকর্তা নেই। ট্রাফিক বিভাগ একজন শহর উপপরিদর্শক (টিএসআই) ও তিনজন ট্রাফিক কনস্টেবল দিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করে। তাদের কার্যক্রম উপজেলা সদরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে।
এ ছাড়া প্রতিনিয়ত ঘটছে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা। যেসব দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটে না, তার রেকর্ড থানা পর্যন্ত আসে না বলে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে।
সরকারি মাওলানা মোহাম্মদ আলী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শামসুল হুদা বলেন, অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। স্কুল–কলেজপড়ুয়া সন্তানদের মোটরসাইকেল ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করতে হবে। সেই সঙ্গে প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে হবে।