একতার কণ্ঠঃ দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে টাঙ্গাইলের বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা সোসাইটি ফর সোসাল সার্ভিস (এসএসএস)।
প্রাথমিকভাবে বন্যাদুর্গত মানুষের জন্য সংস্থাটি ৬ কোটি টাকার প্রাথমিক তহবিল নিয়ে বন্যার্তদের সহায়তার জন্য কাজ শুরু করেছে। প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ১ দিনের বেতন ১ কোটি টাকার চেক অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে প্রদান করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এসএসএস’র কর্মকর্তারা।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে টাঙ্গাইল শহরের ময়মনসিংহ রোডে অবস্থিত এসএসএস’র ফাউন্ডেশন অফিসে সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির সিনিয়র পরিচালক (ঋণ) সন্তোষ চন্দ্র পাল এই সব তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ভয়াবহ বন্যার কবলে দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। বিশেষ করে ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর ও আশপাশের জেলার বেশিরভাগ এলাকা এখন বন্যার পানির নিচে। এসব এলাকার এসএসএসের ১৫৩ টি শাখার ১০৭ টি শাখার প্রায় দেড় লক্ষাধিক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত। পাশাপাশি সংস্থার উদ্বৃত্ত তহবিল থেকে ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অতিরিক্ত পাঁচ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। বরাদ্দকৃত টাকার মধ্যে দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে বন্যার্তদের ত্রাণ সহায়তার জন্য চাল, ডাল, চিড়া, আলু, তেল, খেজুর, লবণ, চিনি, গ্যাস লাইট, মোমবাতি, ওরস্যালাইন, গুঁড়া দুধ, বিস্কুটের প্রাথমিকভাবে ১লক্ষ প্যাকেট বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণ হিসেবে প্রদানের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এছাড়া বন্যা কবলিত এলাকায় জনগণের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে সংস্থায় কর্মরত মেডিকেল অ্যাসিস্টেন্টদের মাধ্যমে ২০টি মেডিক্যাল ক্যাম্প আয়োজন ও বিনামূল্যে ওষুধ প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ইতিমধ্যে, লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসন স্থানীয়ভাবে ত্রাণ কার্যক্রম সমন্বয়ের জন্য সদর উপজেলায় এসএসএস-কে দায়িত্ব প্রদান করেছে।
তিনি আরও জানান, ত্রাণ কার্যক্রমের পাশাপাশি বন্যাদুর্গত এলাকায় সংস্থার সমিতিভুক্ত সদস্যদের চাহিদা অনুযায়ী পুনর্বাসনের কৃষি, মৎস্য, প্রাণিসম্পদ, ঘর মেরামত, ওয়াটার, স্যানিটেশন প্রভৃতি বিষয়ের জন্য সংস্থা সাড়ে তিন কোটি টাকা অনুদান প্রদানের জন্য অর্থ বরাদ্দ করেছে। এছাড়া চলমান ক্ষুদ্র অর্থায়ন ঋণের পাশাপাশি দুর্যোগ কাটিয়ে ওঠার জন্য অত্যন্ত সহজশর্তে ৩০ কোটি টাকা দুর্যোগকালীন/সাহস ঋণ প্রদানের পরিকল্পনা রয়েছে সংস্থাটির।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এসএসএসের যুগ্ম পরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম খান, উপ পরিচালক এসএম ইয়াহিয়া, সহকারি পরিচালক শামছুল আরেফীন ও ফয়সাল আহমেদ, টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি জাফর আহমেদ, সহ-সভাপতি কাজী জাকেরুল মওলা প্রমুখ।
পরে সংবাদ সম্মেলন শেষে উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের তাদের প্রাণ কার্যক্রম ঘুরিয়ে দেখানো হয়। এসময় সরেজমিন দেখা যায়, এসএসএস ভবনের কর্মকর্তার-কর্মচারীগণ শুকনা খাবারসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য প্যাকেটজাত কাজে নিয়োজিত রয়েছে। এরমধ্যে পাঁচ কেজি চাল, তিন কেজি আলু, এক কেজি ডাল, এক লিটার তেল, চিনি, চিড়া, লবন, বিষ্কুট, খেজুর, শিশুদের জন্য গুড়া দুধ, খাবার স্যালাইন, মোমবাতি ও লাইটার রয়েছে। পরে তা বিতরণের জন্য ট্রাকে তুলে বন্যা উপদ্রুত জেলা গুলোর উদ্দেশ্যে পাঠানো হচ্ছে।
একতার কন্ঠঃ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলছেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে গিয়ে দিল্লিতে বসে ষড়যন্ত্র করছে। সে বাংলাদেশে আসার স্বপ্ন দেখছে, তার স্বপ্ন দেখতে হবে না। শেখ হাসিনা পৃথিবীর যেই প্রান্তেই ষড়যন্ত্র করুক না কেন, তার বিচার বাংলাদেশের আদালতে হবে। নয়তো আন্তর্জাতিক আদালতে হবে। তাকে বিচারের সম্মুখিন করতেই হবে, করব ইনশাআল্লাহ।
সোমবার (২৬ আগস্ট) বিকেলে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিতে নিহত শহীদ ফিরোজ তালুকদার পলাশের পরিবারের খোঁজ-খবর ও কবর জিয়ারত করতে এসে উপজেলা ও পৌর বিএনপির উদ্যোগে ভূঞাপুর বাসস্ট্যান্ড চত্বরে আয়োজিত এক পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বললেন।
সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশের বিচার বিভাগকে ঢেলে সাজাতে হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শহীদদের দাবি ছিল- বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ ও অসম্প্রদায়িক স্বাধীন সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্র। যেখানে আইনের সুশাসন থাকবে সমান, অধিকার সমন্বত থাকবে। আমরা আইনের সুশান প্রতিষ্ঠাতা করব। যে বিচারক বাংলাদেশের প্রকৃত বিচারক হবে, দক্ষ, সৎ, আইনের সুশাসন কায়েম করবে এবং ন্যায় বিচারক হবে।
তিনি বলেন, যদি তা না হয়-আমি বলব কুলাঙ্গার খায়রুল ও কালো মানিকের মতো অবস্থা হবে, যদি আইনের সুশাসন ব্যবস্থা না করেন। যদি দলের বিচারক হন, যা হবার তাই হবে। প্রধান বিচারপতি পদত্যাগ করার সময় পাননি। সেই অবস্থা হবে এবং আমরা তাদেরকে আইনের আওতায় আনব। যারা বিচার বিভাগকে ধ্বংস করেছেন, তারা শুনে রাখুন, কেউ বিচারের আওতা থেকে বাদ যাবেন না।
সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিম্ন আদালতে পাঁচ বছরের সাজা দিয়ে হাইকোর্টে বর্ধিত করে দশ বছরের সাজা দিয়েছেন। আজকে সারাদেশের মানুষ এবং এই অন্তবর্তী সরকার চিঠি লেখার সময় পায়নি। খালেদা জিয়া মুক্ত। এই রকম বিপ্লব সাধণের মধ্যে দিয়ে আমরা জনগণের বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আন্দোলনে শহীদদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করব। যাতে কেউ যেন দেশকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে।
টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর-গোপালপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক উপমন্ত্রী এডভোকেট আব্দুস সালাম পিন্টুর মুক্তির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তিনি আমার সহকর্মী। বাংলাদেশের একজন উপমন্ত্রী ছিলেন। সে নির্যাতিত, দীর্ঘ এক যুগের বেশি সময় ধরে কারাভোগ করছে। আমি ভূঞাপুরের মাটিতে পা রাখার সাথে সাথে শ্লোগানে দাবি উঠে সালাম পিন্টুর মুক্তি চাই, সালাম পিন্টুর মুক্তি চাইতে হবে না। কিছুদিনের মধ্যেই তিনি মুক্ত হবে।
বিএনপির প্রচার সম্পাদক ও যুবদলের সাবেক সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুরর সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এডভোকেট ওবায়দুল হক নাছির, টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীন, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট ফরহাদ ইকবাল, সাবেক সদস্য সচিব মাহমুদুল হক ছানু, উপজেলা বিএনপি সভাপতি এডভোকেট গোলাম মোস্তফা প্রমুখ।
একতার কণ্ঠঃ ঢাকায় আনসারদের আন্দোলনের কর্মসূচিতে সচিবালয় ঘেরাও ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে টাঙ্গাইলে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন টাঙ্গাইল জেলা শাখার সদস্যরা।
সোমবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সামনে ঘণ্টাব্যাপী এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।মানববন্ধনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
এসময় তারা বলেন, একটি কুচক্রী মহল দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়। রবিবার (২৫ আগস্ট) রাতে আনসার সদস্য কর্তৃক ঢাকায় সচিবালয় ও ছাত্রদের ওপর হামলার ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। অন্যথায় আগামীতে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।
পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা শহরে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে আনসার ক্যাম্পের সামনে যায়। পরে সেখান থেকে মিছিলটি লৌহজং নদী দখল পরিদর্শন করে।
একতার কণ্ঠঃ ফেনী-নোয়াখালী ও কুমিল্লাসহ দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় কয়েকটি জেলায় চলমান ভয়াবহ বন্যায় দুর্গতদের পাশে দাঁড়িয়েছে টাঙ্গাইলের ‘মানুষের কল্যাণে মানুষ ফাউন্ডেশন’।
সংস্থাটির সাধারণ সম্পাদক নাফিসা তাবাসসুম খানের নেতৃত্বে ৬ জনের একটি টিম রবিবার (২৫ আগস্ট) বন্যা দুর্গত এলাকায় গিয়েছেন। বন্যার্তদের মাঝে তারা ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করছেন।
ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান পারুল মাহবুব খান জানান, দেশের যেকোনো দুর্যোগ মুহূর্তে ‘মানুষের কল্যাণে মানুষ ফাউন্ডেশন’ মানুষের পাশে দাঁড়ায়। এর আগেও বিভিন্নও সময় বন্যাসহ বিভিন্ন দুর্যোগে সংস্থাটি দুর্গতদের নানাভাবে সহযোগিতা করেছে। আমরা আমাদের সাধ্য মতো কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি আরও জানান, বিত্তবানরা যদি এগিয়ে আসে তাহলে আরও সুন্দরভাবে বন্যাকবলিত মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারবো।
একতার কণ্ঠঃ দেশের দারিদ্র্য বিমোচন ও নারীর ক্ষমতায়নে ক্ষুদ্রঋণের ভূমিকা অপরিসীম। বর্তমানে দেশে সাত শতর বেশি প্রতিষ্ঠান এ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত। ক্ষুদ্রঋণের অগ্রযাত্রা ও প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকাণ্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন। এ বিষয়ে বুরো বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক ও চেয়ার, এনজিও ফেডারেশন জাকির হোসেনের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন প্রথম আলোর প্রতীক বর্ধন।
প্রথম আলো: ক্ষুদ্রঋণ বাংলাদেশের দারিদ্র্য বিমোচনে বড় ভূমিকা পালন করেছে। গত ৫৩ বছরে এনজিওগুলোর ভূমিকা কীভাবে দেখছেন?
জাকির হোসেন: ৫৩ বছরে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। ১৯৭০ সালে দেশে মাথাপিছু আয় ছিল ১০০ মার্কিন ডলার আর বর্তমানে প্রায় ২ হাজার ৮০০ মার্কিন ডলার। উপার্জন বরাবরই উৎপাদনের সঙ্গে সম্পর্কিত আর এই উৎপাদন ও উপার্জনপ্রক্রিয়ার বিকাশে শুধু সরকার নয়, সরকারের অংশীদার হিসেবে এনজিও-এমএফআই (ক্ষুদ্র ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান) খাত নিভৃতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে। এ খাত স্বাধীনতা-পরবর্তী দরিদ্র ও হতদরিদ্র-অধ্যুষিত বাংলাদেশে প্রাথমিকভাবে দারিদ্র্য নিরসন ও আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির দিকে বেশি নজর দিয়েছে। পরবর্তীকালে দেশে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যায়ে ক্ষুদ্র শিল্পের বিকাশ ঘটিয়ে অর্থনৈতিক বৈচিত্র্য নিশ্চিত করেছে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতেও এনিজওগুলোর ভূমিকা পালন করছে। আমাদের এই খাতের মাধ্যমে সাড়ে তিন কোটি মানুষের মধ্যে প্রায় পৌনে তিন লাখ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে।
প্রথম আলো: কয়েক বছর ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে দারিদ্র্য পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে এনজিওগুলোর কী ভূমিকা রাখতে পারে?
জাকির হোসেন: বিগত দশকগুলোয় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক যে উন্নয়ন ঘটেছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে, ২০৩৩ সাল নাগাদ আমরা বিশ্বের ২৪তম বৃহত্তম অর্থনীতির স্বীকৃতি অর্জন করতে সক্ষম হব। তবে এ দুই সময়ের মধ্যবর্তী ভূরাজনৈতিক ও প্রাকৃতিক ঘটনাগুলোর প্রভাবের কথাও আমাদের বিবেচনায় রাখতে হবে। এ ধরনের সংঘাত-সংঘর্ষ কিংবা দুর্যোগ গভীরভাবে দেশীয় অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির জন্য অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার পাশাপাশি এগুলোও দায়ী। তবে আমাদের দেশীয় অব্যবস্থাপনা থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নেওয়ার সুযোগ নেই।
প্রথম আলো: কয়েক বছর ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে দারিদ্র্য পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে এনজিওগুলোর কী ভূমিকা রাখতে পারে?
জাকির হোসেন: বিগত দশকগুলোয় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক যে উন্নয়ন ঘটেছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে, ২০৩৩ সাল নাগাদ আমরা বিশ্বের ২৪তম বৃহত্তম অর্থনীতির স্বীকৃতি অর্জন করতে সক্ষম হব। তবে এ দুই সময়ের মধ্যবর্তী ভূরাজনৈতিক ও প্রাকৃতিক ঘটনাগুলোর প্রভাবের কথাও আমাদের বিবেচনায় রাখতে হবে। এ ধরনের সংঘাত-সংঘর্ষ কিংবা দুর্যোগ গভীরভাবে দেশীয় অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির জন্য অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার পাশাপাশি এগুলোও দায়ী। তবে আমাদের দেশীয় অব্যবস্থাপনা থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নেওয়ার সুযোগ নেই।
প্রথম আলো: শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের টেকসই উন্নয়নে এনজিওগুলো অনেক দিন ধরে কাজ করছে। এ খাতে নতুন আর কী কী করার আছে বলে মনে করেন।
জাকির হোসেন: আপনি ঠিকই বলেছেন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে দীর্ঘদিন ধরেই এনজিও-এমএফআইগুলো কাজ করে যাচ্ছে। তবে এ দুই খাতে আমাদের কাজগুলো প্রাথমিক ও মাঠপর্যায়ের। সম্প্রতি দু-একটি এনজিও বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজসহ হাসপাতাল স্থাপন করে সাধারণ মানুষকে সেবা দিচ্ছে, যদিও এর ব্যাপকতা তেমন একটা নয়। সরকারি হাসপাতাল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো যে মান ধরে রাখতে পারেনি, আমরা তা পেরেছি। পাশাপাশি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা পর্যায়ে এনজিও-এমএফআই খাতের অনেকেই মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়ার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। ব্র্যাক, আশা, বুরো বাংলাদেশ, টিএমএসএস—এগুলোর সবারই কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল কিংবা মেডিকেল কলেজ আছে।
প্রথম আলো: ক্ষুদ্রঋণের সেবা ডিজিটালাইজেশনের প্রয়োজনীয়তা বোধ করছেন কি?
জাকির হোসেন: বুরো বাংলাদেশসহ বেশ কয়েকটি এনজিও-এমএফআই এ ক্ষেত্রে অনেক দূর এগিয়েছে। আরও অনেক প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল যাত্রায় সংযুক্ত হওয়ার জন্য কাজ করছে। বুরো বাংলাদেশসহ দেশের শীর্ষ কয়েকটি উন্নয়ন সংস্থা শাখাগুলোয় শতভাগ অটোমেশন সম্পন্ন করে পরিপূর্ণ ডিজিটালাইজেশনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বুরো বাংলাদেশ গ্রাহকদের জন্য ডিজিটাল মাধ্যমে ঋণ ও সঞ্চয় সেবা দেওয়া শুরু করে ২০১৯ সালে।
প্রথম আলো: আপনাদের প্রতিষ্ঠান এ পর্যন্ত কী পরিমাণ ক্ষুদ্রঋণ দিয়েছে? এর কী প্রভাব পড়েছে বলে মনে করছেন?
জাকির হোসেন: আমরা গ্রাহকদের এ পর্যন্ত ৯৪ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়েছি। এই ঋণের অর্থে অনেক মানুষ, যাঁদের অধিকাংশই নারী, নিজেদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন, কেউ উদ্যোক্তা হয়ে উঠেছেন, কেউ তাঁর সন্তানকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলেছেন, কেউ কেউ বংশানুক্রমিক পেশা সচল রেখেছেন, কেউবা ছোট ব্যবসা বড় করেছেন। পরিবারে সচ্ছলতা এসেছে। তাঁরা অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন এবং অনেক মানুষকে উদ্যোক্তা হওয়ার সাহস জুগিয়েছেন। সমাজে এর প্রভাব বিপুল। ক্ষুদ্র ও মাঝারি পরিসরে তাঁরা অর্থনীতিতে যে অবদান রাখছেন, তার উৎসে আছে বুরো বাংলাদেশের ঋণসহায়তা।
জাকির হোসেন
প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক, বুরো বাংলাদেশ
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহাদাত হুসেইনের বদলির আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে উপজেলা পরিষদে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (২৫ আগস্ট) সকালে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তালা ঝুলিয়ে দেওয়ায় উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা পরিষদের দৈনন্দিন কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে।
জানা গেছে, কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হুসেইনের বদলির আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা রবিবার সকালে উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসনের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এতে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা পরিষদের কোন কর্মকর্তা কার্যালয়ে প্রবেশ করতে পারেননি। এদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্থানীয় বিভিন্ন স্কুল-কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে সমবেত হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকে।
এ সময় কালিহাতীর ইউএনও শাহাদাত হুসেইনের বদলির আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থী রাসেল, আল আমিন, সাব্বির, রাশেদুল, রিফাত, আশরাফুল, কবির, হৃদয়, শাওন, হাবিব, সাজিদ প্রমুখ হ্যান্ড মাইকে নানাবিধ স্লোগান দেন ও বক্তব্য রাখেন।
তারা দাবি করেন, কালিহাতীর ইউএনও একজন কর্মমুখি-শিক্ষাবান্ধব ও ন্যায়-নীতিবান ভালো মানুষ। তার বদলির আদেশ তারা মানেন না। তার বদলির আদেশ প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
কালিহাতী উপজেলা সমাজসেবা অফিসার শহিদুজ্জামান মাহমুদ, কৃষি অফিসার ফারহানা মামুন, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শিল্পী দে, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. সেহাব উদ্দিন, হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মো. লিয়াকত হোসেন, পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন সহ অন্যান্য কর্মকর্তারা জানান, বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। শিক্ষার্থীরা উপজেলা প্রশাসনের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ায় তারা স্ব স্ব কার্যালয়ে ঢুকতে পারছেন না। এতে দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত হচ্ছে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিফাত বিন সাদেক জানান, ভাগ্যক্রমে তাঁর কার্যালয়টি উপজেলা কমপ্লেক্সের বাইরে থাকায় তিনি তালাবদ্ধের আওতায় পড়েননি। তবে উপজেলা প্রশাসনের মূল ফটকে তালা দেওয়ায় প্রতিদিনের কাজ ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়টি নিয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছেন।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. কায়ছারুল ইসলাম জানান, ইউএনও’র বদলির বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের। তিনি সার্বক্ষণিক কালিহাতীর উদ্ভুত পরিস্থিতির খোঁজখবর নিচ্ছেন এবং তা যথাযথভাবে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করছেন।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সন্ধ্যায় কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হুসেইনের বদলির আদেশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে শিক্ষার্থীরা মশাল মিছিল নিয়ে বিক্ষোভ করতে করতে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করেন। পরদিন শুক্রবার (২৩ আগস্ট) একই দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। এদিন শিক্ষার্থীরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইউএনও’র বদলির আদেশ প্রত্যাহার না করা হলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার হুশিয়ারী দেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের সিনিয়র সচিব সাগুফতা হক স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বদলি করে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নির্বাহী অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
একতার কণ্ঠঃ ভারতীয় আগ্রাসানের প্রতিবাদে টাঙ্গাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। মিছিলে আন্দোলনকারীরা মাথায় জাতীয় পতাকা বেঁধে বিভিন্ন শ্লোগান দেয়।
শুক্রবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে টাঙ্গাইল শহরের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের করা হয়। মিছিলটি শহরের গুরত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সামনে এসে শেষ হয়। এতে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক এবি যুবায়ের ও মোসাদ্দেক।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী কামরুল ইসলাম, আল আমিন, মনিরুল ইসলাম, আল আমিন সিয়াম প্রমুখ।
আন্দোলনকারীরা জানান, সম্প্রতি কোন রকম নোটিশ ছাড়াই ভারত সরকার কর্তৃক গম্বুর ও গজলডোবা বাঁধ খুলে দেওয়ায় বাংলাদেশে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়। ইতিমধ্যেই নোয়াখালী, ফেনী, সিলেট, চট্টগ্রামসহ ১২ জেলার বিভিন্ন অঞ্চল বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। ভারতের এমন আগ্রাসন মেনে নেয়ার মতো নয়। ভারত যদি তাদের নীতি থেকে সরে না আসে ভারতীয় পণ্য বয়কটসহ তাদের সেভেন সিস্টার্সকে শান্তিতে থাকতে না দেওয়ার হুশিয়ারি দেন আন্দোলনকারীরা।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলে সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক ও বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল হক টিটুসহ ৫৬ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।
সোমবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) লোকমান হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শিক্ষার্থী-জনতার আন্দোলনে টাঙ্গাইল শহরে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. মারুফের মা মোরশেদা বেগম বাদী হয়ে রবিবার (১৮ আগস্ট) রাতে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশত্যাগের পর টাঙ্গাইল শহরে বিজয় মিছিল বের করা হয়। ওই মিছিলে শাহীন স্কুল এন্ড কলেজের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মারুফ মিয়া অংশগ্রহণ করে। মিছিলটি শহরের মদের ঘর মোড় এলাকায় গেলে আসামিরা বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে হামলা করে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
এসময় শহরের শহীন স্কুলের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মারুফ প্রাণ বাঁচাতে শহরের সিটি ব্যাংকের দ্বিতীয়তলায় গিয়ে আশ্রয় নিলে সেখানে গিয়ে আসামিরা গুলি করলে সে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়ে। পরে তাকে মিছিলের শিক্ষার্থীরা উদ্ধার করে টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মারুফ হত্যা মামলার প্রধান আসামি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এসএম সিরাজুল ইসলাম আলমগীর, টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর-গোপালপুর) আসনের সংসদ সদস্য ছোট মনির, তার ভাই শহর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা বাস কোচ মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিব গোলাম কিবরিয়া বড় মনির, সাবেক বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, সাবেক এমপি হাসান ইমান খান সোহেল হাজারী, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুজ্জামান সোহেল, টাঙ্গাইল সদর আসনের সাবেক এমপি ছানোয়ার হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও সাবেক এমপি জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আশরাফুজ্জামান স্মৃতি, মির্জাপুর আসনের সাবেক এমপি খান আহম্মেদ শুভ, টাঙ্গাইল পৌরসভার কাউন্সিলর আতিকুর রহমান মোর্শেদ, সাবেক পৌরসভার মেয়র জামিলুর রহমান মিরন, টাঙ্গাইলের বিবেকানন্দ স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি আনন্দ মোহন দে, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এডভোকেট মামুনুর রশীদ মামুন, জেলা যুবলীগের সভাপতি মাসুদ পারভেজ, সাধারণ সম্পাদক আবু সাইম বিপ্লব, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান, সাধারন সম্পাদক ইলিয়াস হোসেনসহ ৫৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) লোকমান হোসেন জানান, স্কুল শিক্ষার্থী মারুফের মা বাদী হয়ে সাবেক এমপি মন্ত্রীসহ ৫৬ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে বঙ্গবন্ধু টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অধ্যক্ষ মো. বখতিয়ার হোসেন পারিবারিক ও ব্যক্তিগত সমস্যার কারণ দেখিয়ে অধ্যক্ষের (অতিরিক্ত দায়িত্ব) পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন।
রবিবার (১৮ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টায় শিক্ষার্থীরা তাঁর কার্যালয়ে গেলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে বস্ত্র অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করে একটি কপি শিক্ষার্থীদের প্রদান করেন তিনি।
পদত্যাগী বিটেক অধ্যক্ষ মো. বখতিয়ার হোসেন জানান, ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সমস্যায় পদত্যাগ করেছি। সোমবার (১৯ আগস্ট) স্বশরীরে বস্ত্র অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মহদোয়ের নিকট পদত্যাগপত্রটি দাখিল করবো।
জানা যায়, তাঁর বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের নানা অভিযোগ ছিলো। অভিযোগগুলো হলো, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-ছাত্রীদের সহায়তা না করা, আন্দোলনে বিভিন্নভাবে বাধা প্রদান করা।
ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তাা না করে জোরপূর্বক হল ত্যাগে বাধ্য করা। দায়িত্ব গ্রহনের পর বাজেট থাকার পরও আবাসিক হল, ৬ দফা চত্বর, একাডেমিক ভবন, সাবস্টেশন, সোলার, জেনারেটর ইত্যাদির কোন ধরনের উন্নয়ন কাজ না করা।
প্রতি বছর ২টি মিল পরিদর্শন আবশ্যক থাকার পরও এখন পর্যন্ত কোনও ব্যাচের মিল পরিদর্শন করাতে পারেননি ও এ খাতের সকল টাকা কুক্ষিগত করে রাখা। দায়িত্ব গ্রহণের পূর্ববর্তী বছরে বুটেক্সের সকল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজসমূহের মধ্যে ফলাফলে ১ম হলেও পরবর্তী সময়ে সেশনজট, ফলাফল বিপর্যয় এবং নিয়মিত ইয়ারলস স্বাভাবিক হয়ে দাড়ালেও তা নিরসনে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহনের ব্যর্থতা।
ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক খাতে শিক্ষার্থী ও সরকার থেকে প্রাপ্ত টাকার যথাযথ ব্যবহার না করা এবং হিসাব জানতে চাইলে পরোক্ষভাবে ইয়ারলসের হুমকি দেওয়া। প্রিন্সিপালের অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে কথা বললেই গোপন সিন্ডিকেটের মাধ্যমে একাডেমিক ও মানসিকভাবে হয়রানি এবং ব্যক্তিগত প্রতিহিংসায়ও ইয়ারলসের পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষকদের কম নম্বর প্রদানে বাধ্য করা। ক্যাম্পাস ও ছাত্রীহলের নিরাপত্তা প্রদানে ব্যর্থতা।
ইতঃপূর্বে ছাত্রী হলে চুরির ঘটনার সুষ্ঠু সমাধানে ব্যর্থতা। ল্যাবগুলোর অচলতা নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থতা। কোনও প্রয়োজনে শিক্ষার্থীদের সাক্ষাতের অনুমতি প্রদান না করা।
একতার কণ্ঠঃ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সময় টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের গোড়াই এলাকায় গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থী মো. ইমন (১৯) মারা গেছেন।
রবিবার (১৮ আগস্ট) সকাল ৮টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
ইমনের বন্ধু মো. সাইফুল বলেন, ইমন গোপালপুর উপজেলার হেমনগর ইউনিয়নে ছাত্র অধিকার পরিষদের সমন্বয়ক ছিলেন। গত ৪ আগস্ট বিকেলে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের গোড়াইতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ইমন গুলিবিদ্ধ হন।
পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে তার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার সকাল পৌনে ৮টার দিকে আইসিইউর ১০ নম্বর বেডে তার মৃত্যু হয়।
তিনি আরও জানান, ইমন টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর উপজেলার হেমনগর গ্রামের মো. জুলহাস মিয়ার ছেলে। চার ভাই-বোনের মধ্যে ইমন সবার বড় ছিলো।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে অবগত করা হয়েছে।
একতার কণ্ঠঃ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে টাঙ্গাইলে পুলিশের গুলিতে নিহত মারুফ মিয়ার পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করে সমবেদনা প্রকাশ করেছে জেলা প্রশাসন।
বুধবার (১৪ আগষ্ট)বেলা ১১টায় পৌর শহরের সাবালিয়া এলাকায় মারুফের পরিবারের লোকজনের সাথে সাক্ষাৎ করেন জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন এবং সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা।
মারুফের পরিবারের পক্ষ থেকে তার হত্যার বিচার দাবি ও শহরের কুমুদিনী কলেজ গেট থেকে ঘারিন্দা রেল স্টেশন সড়কটি মারুফের নামে করার দাবি জানানো হয়।
এসময় জেলা প্রশাসক কায়ছারুল ইসলাম সমবেদনা প্রকাশ করে মারুফের মা-বোনকে শান্তনা দেন।
এছাড়াও পরিবারের নিরাপত্তা দেয়াসহ সহযোগিতার আশ্বাস দেন তারা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রশাসক কায়ছারুল ইসলাম, পুলিশ সুপার গোলাম সবুর, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরফুদ্দীন, সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন শাওন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসান বিন মুহাম্মাদ আলী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী আব্দুল নুর তুষার, আল আমিন, ইফফাত রাইসা নূহা, তাওহীদা ইসলাম স্বপ্নীল প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, ৫ আগস্ট (সোমবার) বিকেলে শিক্ষার্থীদের মিছিল নিয়ে শহরের প্রধান সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় টাঙ্গাইল সদর থানা এলাকায় পুলিশের সাথে সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশের গুলিতে মারুফ নিহত হন।
পরদিন টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় ঈদগাঁ ময়দানে নামাজে জানাজা শেষে মারুফের গ্রামের বাড়ি বাসাইল উপজেলার জশিহাটি গ্রামে দাফন করা হয়।
একতার কণ্ঠঃ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্যে দপ্তর বণ্টন করা হয়েছে।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১ টায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে প্রজ্ঞাপনে সই করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
অন্তবর্র্তী সরকারের উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন দায়িত্ব পেয়েছেন অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের, অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল দায়িত্ব পেয়েছেন আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়ের, আদিলুর রহমান পেয়েছেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের, আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের, হাসান আরিফ স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, তৌহিদ হোসেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, নূরজাহান বেগম স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, ব্রিগেডিয়ার সাখাওয়াত হোসেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়, শারমিন এম মুরশিদ সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়, খালিদ হোসেন ধর্ম মন্ত্রণালয়, ফরিদা হাসান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, নাহিদ ইসলাম ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়।
এছাড়া প্রতিরক্ষা, শিক্ষা, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, সশ্রস্ত্র বাহিনী, তথ্য, রেল, কৃষি, খাদ্য, সড়ক ও পরিবহণ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থাকছে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে।
এসব উপদেষ্টাদের মধ্যে অধিকাংশ রাজনৈতিক ব্যক্তি নন। কিন্তু এসব উপদেষ্টা প্রত্যেকেই তাদের অবস্থানে সুনামের সঙ্গে পরিচিত। চলুন জেনে নেই নতুন সরকারে থাকা উপদেষ্টাদের পরিচয়।
সালেহউদ্দিন আহমেদ
সালেহউদ্দিন আহমেদ শিক্ষকতা দিয়ে কর্মজীবন শুরু করে পরে হন সরকারি আমলা। দেশ বিদেশে অর্থনীতির পরামর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৫ সালের ১ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হন তিনি, দায়িত্ব পালন করেন ২০০৯ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত। গভর্নর হওয়ার আগে ১৯৯৬ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রায়ত্ত পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন সালেহউদ্দিন।
তিনি মহাপরিচালক (ডিরেক্টর জেনারেল-ডিজি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বাংলাদেশ একাডেমি অব রুরাল ডেভেলপমেন্ট (বার্ড) এর। দীর্ঘদিন ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অফিসের এনজিও অ্যাফেয়ার্স ব্যুরোর মহাপরিচালক পদেও। গত কয়েক বছর ধরে বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছিলেন তিনি।
ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকে ১৯৬৩ সালে এসএসসি এবং ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৬৫ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি পাস করার পর ১৯৬৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে বিএ অনার্স ও পরের বছরের মাস্টার্স পরীক্ষা পাস করে সেই বিভাগেই অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন ১৯৭০ সালে। কিছু সময় শিক্ষকতা করে পরে সালেহউদ্দিন সিভিল সার্ভিস অব পাকিস্তান (সিএসপি) ক্যাডার কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন।
১৯৭৮ সালে কানাডার হ্যামিল্টন শহরের ‘ম্যাকমাস্টার ইউনিভার্সিটি’ থেকে অর্থনীতির উপর পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। সালেহউদ্দিনের জন্ম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার শ্রীরামপুর (দরিশ্রীরামপুর) গ্রামে।
এএফ হাসান আরিফ
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের অ্যাটর্নি জেনারেল এএফ হাসান আরিফ বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী।
তিনি ১৯৪১ সালে কলকাতায় জন্ম নেন। কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং এলএলবি ডিগ্রি পাস করেন।
১৯৬৭ সালে কলকাতা হাই কোর্টে আইনজীবী হিসেবে নথিভুক্ত হওয়ার পর তিনি সে সময়ের পূর্ব পাকিস্তানে চলে আসেন। ১৯৭০ সালে ঢাকা হাই কোর্টে আইনজীবী হিসেবে নথিভুক্ত হন। তিনি ‘এএফ হাসান আরিফ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস’ চেম্বারের প্রধান।
সেনাশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আসলে ১৯৮২ সালের এপ্রিল থেকে ১৯৮৫ সালের অগাস্ট পর্যন্ত সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল; ১৯৮৫ সালের অগাস্ট থেকে ১৯৯৬ সালের মার্চ পর্যন্ত ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবং বিএনপি জামায়াত-জোট সরকারের আমলে ২০০১ সালের অক্টোবর থেকে ২০০৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেন।
হাসান আরিফ ২০০৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০০৯ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল আরবিট্রেশন সেন্টারের একজন প্যানেল সদস্য।
মো. তৌহিদ হোসেন
সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. তৌহিদ হোসেনের জন্ম ১৯৫৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারি। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিভাগে স্নাতকোত্তর শেষ করার পর ১৯৮১ সালে বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিসে যোগ দেন। ১৯৯৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০০০ সালে ফেব্রুয়ারি এবং ২০০৯ সালের জুলাই মাস থেকে ২০১২ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত দুই মেয়াদে ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমির প্রিন্সিপাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এই কূটনীতিক।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০১ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার ছিলেন। ২০০৬ সালে ১৭ ডিসেম্বর থেকে ২০০৯ সালের ৮ জুলাই পর্যন্ত তিনি পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১২ সালের জুনে তাকে দক্ষিণ আফ্রিকার হাইকমিশনার করা হয়।
আদিলুর রহমান খান
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আদিলুর রহমান খান ১৯৬১ সালের ২ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মানবাধিকার সংস্থা ‘অধিকার’ এর প্রতিষ্ঠাতা। আদিলুর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করে ‘ভ্রিজ ইউনিভার্সিটি ব্রাসেলস’ থেকে একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। সুপ্রিম কোর্টের আইন পেশায় থাকার সময় ১৯৯৪ সালে তিনি মানবাধিকার সংস্থা ‘অধিকার’ প্রতিষ্ঠা করেন।
২০০১ সালের নির্বাচনের পর বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের তাকে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ দেয়। ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি তিনি পদত্যাগ করেন।
২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলামের শাপলা চত্বরে বিক্ষোভের সময় নেতা-কর্মীরা অপসারণের অভিযানে নিহতের সংখ্যা সম্পর্কে ‘বিভ্রান্তি ছড়ানোর’ অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। ২০১৩ সালের ১০ অগাস্ট গোয়েন্দা পুলিশ তাকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে আটক কর। এই মামলায় আদিলুর ও তার সংগঠনের কর্মকর্তা নাসিরুদ্দিন এলানের দুই বছরের সাজা হয়।
২০১৪ সালে তিনি রবার্ট এফ. কেনেডি হিউম্যান রাইটস অ্যাওয়ার্ড জিতেছেন। একই বছর তিনি মানবাধিকারের জন্য গোয়াংজু পুরস্কারও জিতেছিলেন; এই পুরস্কারটি কোরিয়া এবং বিদেশে ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা প্রতিষ্ঠানকে স্বীকৃতি দেয় যারা তাদের কাজের মাধ্যমে মানবাধিকার, গণতন্ত্র এবং শান্তির প্রচার ও অগ্রগতিতে অবদান রাখেন।
আসিফ নজরুল
লেখক, রাজনীতি-বিশ্লেষক ও কলামিস্ট অধ্যাপক আসিফ নজরুল পড়াশুনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে। ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে তিনি তার পিএইচডি সম্পন্ন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদানের আগে ১৯৯১ সালে সাপ্তাহিক পত্রিকা বিচিত্রায় কাজ করেছেন তিনি। কিছুদিন তিনি ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবেও কাজ করেছেন।
১৯৬৬ সালের ১২ জানুয়ারি জন্ম নেওয়া আসিফ নজরুল আইন, সংবিধান ও মানবাধিকার বিষয়ে কয়েকটি বই লিখেছেন। কিছু নন-ফিকশনও লিখেছেন তিনি। ২০১১ সাল থেকে ছয় বছর মানবাধিকার সংগঠন ‘সাউথ এশিয়ান ফর হিউম্যান রাইটস’-এর ব্যুরো সদস্য ছিলেন আসিফ নজরুল। ১৯৯২ সালে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির হয়ে গণতদন্ত কমিশনের সঙ্গে কাজ করেছিলেন তিনি। তবে পরে সেই কমিটির সঙ্গে তার দূরত্ব তৈরি হয়।
এম সাখাওয়াত হোসেন
এম সাখাওয়াত হোসেন বাংলাদেশের সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল। ১৯৬৬ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশনড লাভ করেন তিনি। পরে দেশ স্বাধীন হলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ২০০৭ সালে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনে তিনি কমিশনার নিযুক্ত হন, দায়িত্ব পালন করেন ২০১২ সাল পর্যন্ত।
আ ফ ম খালিদ হাসান
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক নায়েবে আমির ও সুন্নি দেওবন্দি ইসলামি পণ্ডিত আ ফ ম খালিদ হাসান। ১৯৫৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম জেলার অন্তর্গত সাতকানিয়া উপজেলার মাদার্শা ইউনিয়নে জন্ম নেওয়া এই ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব চরমোনাইয়ের পীরের নেতৃত্বাধীন দল ইসলামী আন্দোলনের শিক্ষা উপদেষ্টা ও মাসিক আত তাওহীদের সম্পাদক।
তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে তার শিক্ষা জীবন শেষ করেন। ২০০৬ সালে ‘হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর খুতবা: একটি সামাজিক-সাংস্কৃতিক গবেষণা’ বিষয়ে উপর পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
নারী প্রতিনিধিরা
ফরিদা আখতার
ফরিদা আখতারের জন্ম চট্টগ্রাম জেলার চন্দনাইশ থানার হারলা গ্রামে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে পড়াশোনা করেছেন তিনি। বর্তমানে কাজ করছেন আর্থসামাজিক গবেষণার নানা ক্ষেত্রে। বিশেষ করে বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র মানুষের অবস্থা জানা এবং পরিবর্তনের জন্য নীতিনির্ধারণী গবেষণা ও লেখালেখিই তার কাজের প্রধান জায়গা।
নারী উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, কৃষি, মৎস্যসম্পদ, তাঁত শিল্প, গার্মেন্টস শিল্প ও শ্রমিক, জনসংখ্যা এবং অন্যান্য উন্নয়নমূলক বিষয়ে তিন দশক ধরে কাজ করেছেন।
বাংলাদেশের নারী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে জড়িত সম্মিলিত নারী সমাজের সদস্য তিনি। উন্নয়ন বিকল্পের নীতিনির্ধারণী গবেষণার (উবিনীগ) নির্বাহী পরিচালকও ফরিদা। লেখক ও কলামিস্ট হিসেবেও তার পরিচিতি আছে।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের জন্ম ১৯৬৮ সালের ১৫ জানুয়ারি ঢাকার ধানমন্ডিতে। তার পৈত্রিক বাড়ি হবিগঞ্জে। ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও হলিক্রস কলেজের পড়াশুনা শেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন। পাস করার পর তিনি ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতিতে (বেলা) যোগ দেন। ১৯৯৭ সালে বেলার প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব নেন।
জাহাজভাঙা শিল্পের মাধ্যমে পরিবেশ বিপর্যয় রোধ, শ্রমিকদের নিরাপত্তা, জলাশয় ভরাট করে আবাসন তৈরি, পাহাড় কাটা, বন ধ্বংস, পলিথিনের যথেচ্ছ ব্যবহার রোধ, চিড়িং ঘেরের মাধ্যমে পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধে কাজ করে গেছেন রিজওয়ানা। পরিবেশ রক্ষা ও সামাজিক কাজের জন্য অবদানের জন্য বেশকিছু দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
পরিবেশ বিষয়ক সচেতনতা তৈরির কারণে ২০০৭ সালে পরিবেশ পুরস্কার, পরের বছর নেপালভিত্তিক ক্রিয়েটিভ স্টেটমেন্টস অ্যান্ড সাউথ এশিয়া পার্টনারশিপ ‘সিলেব্রেটিং ওমেনহুড অ্যাওয়ার্ড’, ২০০৯ সালে গোল্ডম্যান পরিবেশ পুরস্কার, ওই বছরই টাইম সাময়িকীর ‘হিরোজ অফ এনভায়রনমেন্ট’, ২০১২ সালে ম্যাগসেসে পুরস্কার পান রিজওয়ানা।
নূরজাহান বেগম
নূরজাহান বেগম ২০১০ সালে গ্রামীণ ডিস্ট্রিবিউশনের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। তিনি নোবেল বিজয়ী প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ব্যবস্থাপনা পরিচালক অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছ থেকে এই দায়িত্ব পেয়েছিলেন।
নুরজাহান বেগম গ্রামীণ পরিবারের একটি অলাভজনক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ শিক্ষার ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৭৬ সালে যখন গ্রামীণ ব্যাংকের প্রকল্প শুরু হয়, তখন তিনি ইউনূসের প্রথম সারির সহযোগীদের একজন ছিলেন।
তিনি অনেক দেশে ক্ষুদ্র ঋণ প্রকল্পের পরামর্শদাতা, প্রশিক্ষক এবং মূল্যায়নকারী হিসাবে কাজ করেছেন। তিনি ওয়ার্ল্ড সামিট মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোলস অ্যাওয়ার্ড ২০০৯ এবং ভিশন অ্যাওয়ার্ড ২০০৯-এ ভূষিত হন।
নুরজাহান ২০০৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে ‘ফরচুন মোস্ট পাওয়ারফুল উইমেন’ সামিটে অংশ নেন। একই বছর স্পেনের ভ্যালেন্সিয়ায় ফাউন্ডেশন ফর জাস্টিস পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতি হন।
শারমিন মুরশিদ
সমাজকর্মী শারমিন মুরশিদ বেসরকারি সংস্থা ব্রতীর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী হিসাবেও কাজ করে এই সংস্থা। তিনি একটি খ্যাতনামা পরিবারের সদস্য। তার বাবা খান সারওয়ার মুরশিদ ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। তিনি আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে সোচ্চার ছিলেন। তার মা নূরজাহান মুরশিদ ১৯৫৪ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্টের প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনেও তিনি আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় কলকাতায় বাংলাদেশের প্রথম সরকারের দূত হিসেবে কাজ করেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুজন
নাহিদ ইসলাম
উপদেষ্টাদের মধ্যে আছেন কোটা সংস্কার ও সরকার পতনের ডাক দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের একজন নাহিদ ইসলাম। নাহিদ ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ (শিক্ষাবর্ষ-২০১৬-১৭) থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। এর আগে তিনি সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন।
নাহিদ ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেনের নেতৃত্ব গঠিত গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব। ২০২৩ সালের অক্টোবরে আত্মপ্রকাশের সময় বলা হয়েছিল, এটি ‘রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তিমুক্ত স্বতন্ত্র একটি ছাত্র সংগঠন’।
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের একজন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। আসিফ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞান বিভাগ (শিক্ষাবর্ষ- ২০১৭-১৮) থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাস করেছেন তিনি। আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও কলেজটির বিএনসিসি ক্লাবের প্লাটুন সার্জেন্ট আসিফের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায়। গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির সদস্য সচিব আসিফ।
অনুপস্থিত তিনজন
ফারুক-ই-আজম
ফারুক-ই-আজম মুক্তিযুদ্ধের একজন বীর। সাহসী এই যোদ্ধা বীর প্রতীক খেতাবও পেয়েছেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের বছরে উচ্চমাধ্যমিক পাস করা ফারুক সে সময় খুলনায় ছিলেন। পরে অনেক বাধাবিপত্তি পেরিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে চট্টগ্রামে পৌঁছান। তিনি সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতের হরিণা ইয়ুথ ক্যাম্পে আশ্রয় নেন ৬ মে। পরে নৌবাহিনীর জন্য মুক্তিযোদ্ধা রিক্রুট করা হবে শুনলে তিনি সেখানে যোগ দেন।
মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র সমন্বিত যুদ্ধাভিযান ছিল ‘অপারেশন জ্যাকপট’। এ অভিযানের মধ্য দিয়ে সারা দেশে একই সময়ে সব বন্দরে একযোগে আক্রমণ চালানো হয়েছিল। সে জন্য এই আক্রমণের জন্য ২০ সদস্যের তিনটি দল নির্বাচন করা হয়। একটি দল তখন চট্টগ্রামে এসে পৌঁছাতে পারেনি। অন্য যে দুটি দলের ৩৭ জন সদস্য অংশ নেন তার ছিলেন অধিনায়ক এ ডব্লিউ চৌধুরী এবং উপ-অধিনায়ক ছিলেন ফারুক-ই-আজম।
১৯৭১ সালের ১৬ অগাস্ট প্রথম প্রহরে দেশের দুইটি সমুদ্রবন্দর—চট্টগ্রাম ও মোংলা, এবং দুইটি নদী বন্দর – চাঁদপুর ও নারায়ণগঞ্জে একযোগে একই নামে পরিচালিত অপারেশনগুলো চালানো হয়েছিল।
অপারেশন জ্যাকপট ছিল একটি আত্মঘাতী অভিযান। এই অভিযানে পাকিস্তান ও আরও কয়েকটি দেশ থেকে আসা অস্ত্র, খাদ্য ও তেলবাহী ২৬টি জাহাজ ডুবিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এ অভিযানে অংশগ্রহণকারী কোনো গেরিলা শত্রুপক্ষের হাতে ধরা পড়েননি।
সুপ্রদীপ চাকমা
সুপ্রদীপ চাকমার জন্ম ১৯৬১ সালে খাগড়াছড়ির কমলছড়িতে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ছাত্র ছিলেন। ১৯৮৫ সালে সপ্তম বিসিএসের মাধ্যমে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন তিনি।
পররাষ্ট্র ক্যাডারের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সাবেক এই রাষ্ট্রদূত পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
মেক্সিকো ও ভিয়েতনামে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বও পালন করেছেন। রাবাত, ব্রাসেলস, আঙ্কারা এবং কলম্বোতে বাংলাদেশ মিশনেও তিনি বিভিন্ন পদে কাজ করেছেন।
বিধান রঞ্জন রায়
বিধান রঞ্জন রায় একজন মানসিক চিকিৎসক ও মনরোগ বিশেষজ্ঞ । তিনি জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সাবেক অধ্যাপক ও পরিচালক। মনোরোগ বিজ্ঞানে এমবিবিএস, ডিপিএম, ও এমফিল ডিগ্রি নেওয়া এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মনোরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধানও ছিলেন। বর্তমানে তিনি ময়মনসিংহের ইউনিয়ন স্পেশালাইজড হাসপাতালে কাজ করছেন।